জরায়ু ক্যান্সার এর লক্ষণ, সম্পর্কে বিস্তারিত
জরায়ু ক্যান্সার এর লক্ষণ গুলো সাধারণত দারিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশ গুলোতে বেশি হয়ে থাকে। নারীরা সাধারণত জরায়ু ক্যান্সারের উপসর্গ গুলো বুঝতে পারে না এবং এর গুরুত্ব দেন না। চলুন, জরায়ু ক্যান্সার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জরায়ু ক্যান্সার একটি নীরব ঘাতক রোগ, যার উপসর্গ দেখা দিলেও অনেক সময় রোগী ১০ থেকে ২০ বছর পরেও ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। তাই জরায়ু ক্যান্সার এর লক্ষণ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃজরায়ু ক্যান্সার এর লক্ষণ, সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ভূমিকা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর তথ্য মতে সারা বিশ্বে প্রায় ৬ লাখ নারী প্রতিবছরে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। তার মধ্যে প্রতিবছর প্রায় .৩ লাখের বেশি এই রোগে মারা যায়। যখন জরায়ু ক্যান্সার এর লক্ষণগুলো প্রকাশিত হয় তখন প্রায় ৯০% নারী মারা যায়। বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা এই বিষয়েটি গোপন রাখে, লজ্জার কারণে বলতে চায় না ।জরায়ুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না। যার কারণে একসময় এটা ক্যান্সারের রূপ ধারণ করে।
জরায়ু ক্যান্সার সম্পর্কে জানুন
জরায়ুর মুখের পৃষ্ঠভাগে কোষের বিভিন্ন ধরনের অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড শুরুর মাধ্যমেই জরায়ু ক্যান্সারের সূচনা হয়। এই অস্বাভাবিক কোষ কর্মকান্ড হলো সত্যিকার ক্যান্সার শুরুর পূর্ব অবস্থা অর্থাৎ প্রি ক্যান্সার।যদি সময় মতো সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা না দেওয়া হয় তাহলে এটি পুরোপুরি ক্যান্সারে রূপ নেয়।
জরায়ু ক্যান্সারের কারণ
জরায়ু ক্যান্সারের জন্য হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV)কে দায়ী করা হয়। সাধারণত যৌন কাজের মাধ্যমে অন্যের শরীর থেকে এই ভাইরাস শরীরে ঢুকে। এই ক্যান্সারে আক্রান্তের ঝুঁকিতে যারা থাকে
আরো পড়ুনঃ মেনোপজ হলে কি হয়- মেনোপজ হলে করনীয় কি
তারা তাদের এ ক্যান্সারের লক্ষণগুলো অনেক সময় দেখা যায় না। পরবর্তীতে দেখা যায় তাই কি কারনে ক্যান্সার গুলো হয়ে থাকে সেই কারণ ও জরায়ু ক্যান্সার এর লক্ষণ গুলো যেন আপনার মাঝে না থাকে তাহলে সেটা চিন্তা করতে হবে।
- খুব কম বয়সে যৌন কাজ শুরু করা হলে
- যাদের একের অধিক যৌনসঙ্গ আছে
- বিভিন্ন যৌন রোগে যারা ভুগছে
- ধূমপায়ীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম
- যাদের কম বয়সে বিবাহ হয়
- কম বয়সে বাচ্চা নেয়
- ঘন ঘন বাচ্চা হয় এদের জরায় ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি রয়েছে
- স্বামী যদি অন্য কোন নারীর সাথে মেলামেশা করে এর কারনেও ভাইরাস তার স্ত্রীর ভিতরে ঢুকে যেতে পারে
- দীর্ঘদিন যাবত জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বড়ি খাওয়া
- অতিরিক্ত ওজন অতিরিক্ত ওজনের নারীদের জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি রয়েছে
- প্রথম গর্ভবতী যদি ৩০ বছরের পরে হয় তাহলে তার জরায়ু ক্যান্সারে ঝুকি রয়েছে
- যে সকল নারীর ঘন ঘন গর্ভপাত হয় তাদেরও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে
- পারিবারিক ইতিহাসের কারণেও জরায়ু ক্যান্সার হয়ে থাকে, যদি মা, বোন এদের যদি হয়ে থাকে তাহলে তার হতে পারে।
জরায়ু ক্যান্সার এর লক্ষণ গুলো কি
জরায়ু মুখের ক্যান্সারে যে সমস্ত লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দেয় তা নিম্নে জরায়ু ক্যান্সার এর লক্ষণ গুলো আলোচনা করা হলোঃ
- যুক্তিসঙ্গত কারণ যেমন মাসিক ছাড়াই যোনিপথ থেকে রক্ত বের হওয়া
- দুই মাসিকের মাঝে রক্ত ঝরানো, মাসিক ছাড়াই অতিরিক্ত রক্ত বের হয়
- সঙ্গম এর সময় অথবা অন্য কোন সামান্য আঘাতেই যোনিপথ থেকে রক্ত বের হওয়া
- সঙ্গমের সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া
- যোনিপথ থেকে রক্ত মিশ্রিত তরল পদার্থ বের হওয়া
- সাদা বা হলুদ স্রাব হওয়া
- সাদাস্রাব যখন হয় দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব হওয়া
- মেনোপজ এর পর রক্তপাত হয়
- ওজন কমে যাওয়া
- দুর্বল বা ক্লান্তি বোধ করা
জরায়ু ক্যান্সার পরীক্ষা এর পদ্ধতি
প্রাথমিক অবস্থায় উপরোক্ত লক্ষণ গুলো দেখা দিলে তাহলে অবশ্যই একজন স্বাস্থ্যকর্মী অথবা আপনি যদি গ্রামে বসবাস করে থাকেন, তাহলে বাড়ির পাশেই কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীর
সাথে কথা বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে ভায়া টেস্ট করাবেন।
- ভায়া টেস্ট ছাড়াও আরেকটি টেস্ট রয়েছে সেটা হল PAP test
- PAP test হলো একজন স্ত্রীর রোগ বিশেষজ্ঞ তিনি প্রথমে একটি নরম ছোট ব্রাশ নিয়ে, সেটা জরার মুখ থেকে কোষের নমুনা নেন এবং সেটা পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে দেন।
- নিয়মিতভাবে PAP test এর মাধ্যমে ক্যান্সারের আগাম সর্তকতা পাওয়া যায় এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে এটা প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়াও কম বয়সে যৌন কাজ শুরু না করলে, একের অধিক যৌন সঙ্গম না থাকলে, মদ্যপান ধূমপান ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে।
- জরায়ু পরীক্ষার করার আগে কিছু শর্ত রয়েছে
- প্রত্যেক নারী ৩০ বছর বয়স হতে হবে, তাহলে তারাই কেবল পরীক্ষা করাতে পারবেন। প্রতিদিন বছর এর পর তিন বছর পর পর অবশ্যই জরায়ু পরীক্ষা করাবেন।
- যারা ৪৫ বছর বয়সের উপরে রয়েছে তারা টেস্টের মাধ্যমে যে ফলাফল পেয়ে থাকেন, তারা প্রতি পাঁচ বছর পর পর পেপ টেস্ট করাবেন।
- যারা এইচপিভি ভ্যাকসিন দিয়েছেন, যাদের বয়স ৩০ বছরের উপরে তারাও প্রতি তিন বছর পর পর জরায়ু পরীক্ষা করাবেন
- একজন ক্যান্সারের রোগীর সর্বপ্রথম কাজ হল প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে নেওয়া উপরোক্ত পরীক্ষাগুলো করে নেওয়া, তাহলেই চিকিৎসকের চিকিৎসা দিতে সুবিধা হবে।
- উপরোক্ত টেস্ট গুলো ছাড়াও ডাক্তাররা অনেক সময় আরো বিভিন্ন ভাবে টেস্ট করা থাকেন। সেগুলো হলো ক্লোনোস্কপি, বিকিরণ ক্লোনোস্কপি,বীজ পরীক্ষা করার মাধ্যমে সনাক্ত করে থাকেন।
জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসা
জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসা মূলত দেওয়া হয়, জরায়ু ক্যান্সারের পর্যায় কেমন রয়েছে, কোন পর্যায়ে রয়েছে, এর ধরন কেমন এবং রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে জরায়ু ক্যান্সার চিকিৎসা দেওয়া হয়। নিম্নে জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসার পদ্ধতি গুলো আলোচনা করা হলো
- সার্জারি হলো জরায়ু ক্যান্সারের প্রথম প্রাথমিক চিকিৎসা,সার্জারি করা জরায়ুর স্থান, রোগীর জরায়ু জরায়ুর মুখ এবং জরায়ুর আশেপাশের কোন স্থান এবং অন্যান্য স্থানে টিসুগুলো যদি আক্রান্ত হয় সেগুলো অপসারণ করা। জরায়ু ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে জরায়ুর অভ্যন্তরে ক্যান্সার হয়ে থাকে। যেটা সার্জারি করার মাধ্যমে অপসারণ করা যায়।
- রেডিওথেরাপি হলো ক্যান্সারের কোষ গুলো ধ্বংস করে দেয়, রেডিওথেরাপি জরায়ু ক্যান্সারের অপারেশন করার আগে অথবা পরেও দেওয়া যায়। জরায়ু ক্যান্সারের মধ্য পর্যায়ে হলো জরায়ুর বাইরে যে ক্যান্সার হয়ে থাকে বা আশেপাশে হয়ে থাকে। আর সে সকল ক্যান্সার সার্জারি এবং রেডিও থেরাপির মাধ্যমে অপসারণ করা হয়।
- কেমোথেরাপি হলো ক্যান্সারের কোষ গুলো ধ্বংস করার জন্য এক প্রকার ওষুধের মত কাজ করে। এটা সার্জারি বা রেডিওথেরাপির সাথে দিতে হয়। জরায়ু ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ে বা উন্নত পর্যায়ে যেটা তা হল জরায়ুর একদম বাইরে যেটা কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি ,সার্জারি সবগুলো মিলেই একসাথে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জরায়ু ক্যান্সারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- সার্জারির কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যেমন রক্তপাত হওয়া, সংক্রমণ এবং ব্যথা অনুভব করা
- রেডিও থেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো ক্লান্তি বা দুর্বল বোধ করা, মাথাব্যথা, বমি ভাব, ক্ষুধা মন্দা
- কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো শরীর দুর্বল হওয়া, ক্ষুধা মন্দা, চুল পড়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব ইত্যাদি
জরায়ু ক্যান্সার হলে কত দিন বাঁচে
জরায়ু ক্যান্সার রোগী কত দিন বাঁচবে সেটা নির্ভর করে সার্জারির উপর এবং রোগের ধরণের উপর, রোগীর বয়স, অপারেশনের পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ইতাদের উপর নির্ভর করে সে কত দিন বাঁচবে।
জরায় ক্যান্সারের রোগ প্রায় ৫ বছরের মত বেঁচে থাকার হার নিম্ন রূপ দেওয়া হল
- জরের মুখে ক্যান্সার ৭০ থেকে ৮০%
- জরায়ুর অন্যান্য জায়গায় ক্যান্সার ৬০ থেকে ৭০%
- জরায়ুর সাথে অন্যান্য জায়গার যে সংযোগ রয়েছে সেগুলো ক্যান্সার ৪০ থেকে ৫০%
জরায়ুর ক্যান্সার যদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে, তাহলে অতি তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করা দরকার। কেননা প্রাথমিক পর্যায়ে যদি চিকিৎসা করানো যায়, তাহলে রোগী সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
জরায়ুর ক্যান্সারের রোগী বেঁচে থাকার জন্য, সুস্থ থাকার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তা নিম্নরূপ দেওয়া হল
- জরায়ুর ক্যান্সার রোগী স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়মিতভাবে করতে হবে তাহলে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে রোগটা নির্ণয় করা সহজ হয় এবং চিকিৎসা করতেও সহজ হয়।
- সুন্দর সুস্থ জীবন যাপন করার জন্য, জরায়ু ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ধূমপান, ওজন কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ইত্যাদি কাজগুলো করতে হবে এবং জীবন যাপনের ধরনটা পরিবর্তন করতে হবে।
জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ কত
জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ নির্ভর করে বিভিন্ন কারণের উপর নিম্নে দেওয়া হল- ক্যান্সারের ধরন এবং কোন পর্যায়ে রয়েছে সেটার উপর নির্ভর করে
- চিকিৎসার ধরন ও চিকিৎসার সময়কাল কত সেটার উপর নির্ভর করে
- হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা কেমন রয়েছে এবং কোথায় অবস্থিত এর উপরও নির্ভর করে
- চিকিৎসকের পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে
- ওষুধের কেমন দাম হবে সেটার উপর নির্ভর করে
- বাংলাদেশের জরায়ু ক্যান্সারের সাধারণত চিকিৎসায় খরচ প্রাইভেট ক্লিনিক গুলো তে ৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত।প্রথম থেকে যদি ক্যান্সার ধরা পড়ে তাহলে খরচ কম হবে, আর যদি তার পরবর্তী পর্যায়ে ধরা পড়ে তাহলে খরচ একটু বেশি হবে।
- জরায়ু ক্যান্সারের দুটি পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়
- সার্জারি করা হয়
- কেমোথেরাপি দেওয়া হয়
- সার্জারি হল জরায়ু ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসা যেটাতে জরায়ুর বিভিন্ন স্থানে অথবা অভ্যন্তরে ক্যান্সার হয়ে থাকে। তাহলে সেটা অপসারণ করতে প্রায় .৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয় প্রাইভেট হসপিটালে।
- কেমোথেরাপি হলো সার্জারির পরে দেওয়া হয় যেটা একটা ওষুধের মত কাজ করে।কোষগুলো কোষ গুলো মেরে ফেলে, আর এই কেমোথেরাপি দিতেও প্রায় ৫ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়
জরায়ু ক্যান্সার চিকিৎসা সাধারণ প্রাইভেট হাসপাতালের চাইতে সরকারি হাসপাতালগুলোতে কম খরচ হয়ে থাকে। এছাড়াও জরায়ু ক্যান্সারের রোগীদের কে বিভিন্ন সংস্থা সহযোগিতা করে থাকে এবং বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান বা দাতব্য প্রতিষ্ঠান ঋণ দিয়ে থাকে।
জরায়ু ক্যান্সারের প্রতিরোধ
জরায়ু ক্যান্সার সারা বিশ্বে একটি মারাত্মক রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই যারা ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে নিম্নে দেওয়া হল- জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য প্রথমে ৩০ বছরের উপরের মহিলাদেরকে ভোটার আইডি কার্ড ও মোবাইল নাম্বার সহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মাধ্যমে ভায়া সনাক্তকরণ করতে হবে। এরপর প্রাথমিক পর্যায়ে যদি ধরা পড়ে তাহলে চিকিৎসা করলে সুস্থ হবে
- স্বামী অথবা স্ত্রী যে কেউই একাধিক ব্যক্তির সাথে মেলামেশা করা যাবে না, এটার মাধ্যমেও জরায়ু ক্যান্সার হতে পারে
- বর্তমানে বাংলাদেশ এ কিছু কোম্পানি জরায়ু ক্যান্সারের টিকা বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে। যেটা দুটা ভাগে ভাগ করা হয়েছে ৯ থেকে ১৫ বছর বয়সে মেয়েদেরকে দুইটা ভাবে দুই সময়ে ভাগ করে দেওয়া যেতে পারে।প্রথম ডোজ দেওয়ার পর ৬ মাস পর আবার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয় এবং ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সে নারীরা তিনটি ডোজ হিসাবে টিকা দিতে পারে প্রথম ডোজ দেওয়ার পর এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজ এবং ৬ মাস পর তৃতীয় ডোজ। তবে এই টিকা বা ভ্যাকসিন দিলেই যে সে জরায়ু ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবে তা কিন্তু নয়।তবুও তাকে জরাযয়ু পরীক্ষা করতে হবে তিন বছর পর পর। বিশেষ করে ৩০ বছরের পর তাকে তিন বছর পর পর পরীক্ষা করতে হবে। তবে ভ্যাকসিনটা নিলে জড়ায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইপিআই টিকা কেন্দ্রের সাথে হয়তো বা এই ভ্যাকসিন যোগ করা হবে।
- প্রাথমিক পর্যায়ে জরায় ক্যান্সারের ভাল প্যাপ টেস্ট যে টেস্টের মাধ্যমে জরায়ুর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু কোষ বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা সেটা সনাক্ত করা হয়
জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে আরো কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে
- ধূমপান বর্জন করা
- বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি খাওয়া
- ওজন বেশি থাকলে ওজন কমাতে হবে
- নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে
- দীর্ঘদিন যাবত পিল বড়ি না খাওয়া
- একাধিক যৌন কর্মীর সাথে মেলামেশা না করা
- জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য কনডম ব্যবহারও অনেক খানি জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে
- বাল্যবিবাহ না দেওয়া
- কম বয়সে বাচ্চা না নেওয়া বা বেশি বয়সেও বাচ্চা না নেওয়া
- ঘন ঘন বাচ্চা না নেওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রতিরোধ করলে ক্যান্সার থেকে মুক্ত হওয়া যায়।
আমাদের শেষ কথা
পরিশেষে বলা যেতে পারে জরায়ু ক্যান্সার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে, তার চিকিৎসা করার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে যাবে। তাই জরায়ু ক্যান্সার এর লক্ষণ টা সনাক্ত করাই আমাদের প্রধান কাজ। আপনি যদি প্রাথমিক লক্ষণ দেখতে পান,তাহলে অতিসত্বর এটা পরীক্ষা করার মাধ্যমে চিকিৎসা নিবেন। তাহলে সুস্থ হয়ে যাবেন। আমার এই পোস্টটা পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url