বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কেন ও শরীরে যে পরিবর্তন হয়

অস্বাভাবিক মৃত্যু গুলোর মধ্যে বিষ খেয়ে মৃত্যু একটা অন্যতম কারণ। বিষ খেয়ে অনেকে আত্মহত্যা করতে চায়। আবার অনেকে অজান্তে বিষপান করে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। তাই বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কেন এ সম্পর্কে সবার জানা প্রয়োজন। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
অভিভাবকের অসতর্কতার কারণে ছোট বাচ্চারা কীটনাশক বিষ খেয়ে ফেলে। তাদের অসাবধানতার কারণে শিশুরা বিষ খাওয়ার পর মারা যায়। তাই বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কেন? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃবিষ খেলে মানুষ মারা যায় কেন ও শরীরে যে পরিবর্তন হয়

বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কেন

অনেক মানুষ আত্মহত্যার জন্য বিষ খায়। কিংবা অন্যকে হত্যার জন্য অনেক ক্ষেত্রে বিষ খাওয়ায়, এর কারণে মৃত্যু ঘটে। আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে, শুধু বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কেন, আরো তো অনেক কারণে মানুষ মারা যায়। হ্যাঁ, আরো অনেক কারণেই মানুষ মারা যায়। তবে বিষ অনেক সহজলভ্য বিষয়, যা হাতের কাছেই পাওয়া যায়।

যার কারণে হয়তো মানুষ বিষ খেয়ে বেশি মারা যায়। কিন্তু এছাড়াও আরো অনেক কারণ রয়েছে যেমন; অনেক সময় ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষক্রিয়া ঘটে থাকে। আবার গ্যাস জাতীয় বিষ শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ভিতরে ঢুকে গেলে মানুষ মারা যায়। সুয়ারেজ, ট্যাংকের বিষাক্ত গ্যাস, গভীর ও অব্যবহৃত কুপের বিষাক্ত গ্যাস ইত্যাদি থেকে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু ঘটে।

আবার অগ্নিকাণ্ডের ফলে বন্ধ করার এক ধরনের বিষাক্ত গ্যাসের তৈরি হয়, যা ওই স্থানে আটকে পড়া লোকের মৃত্যু হতে পারে। যারা কীটনাশক ঔষধ জমিতে দেওয়ার সময় এবং দীর্ঘক্ষণ এই কাজে থাকার কারণে ত্বকের ভিতর এই ওষুধ প্রবেশ করে মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে।

বিষ খেলে মানুষ মারা যায় বিভিন্ন কারণে যেমন রক্তবমি, ডায়রিয়া প্রচুর পরিমাণে পেট ব্যথা হয়ে থাকে। সানানাইড যখন দেহ কোষের মধ্যে শোষণ বন্ধ করে দিয়ে থাকে। আবার কিছু বিষ স্নায়বিক ক্রিয়া বন্ধ করে এর কারণে মস্তিষ্ক থেকে শ্বাস নেওয়ার সংকেত প্রেরিত হতে পারে না।

কিছু বিষ মানুষের পেশি কোষ সম্পন্ন নষ্ট করে দিতে পারে। আবার দেহের রক্তকণিকা ধ্বংস করে দিয়ে অক্সিজেন পরিবহনে বাধা প্রাপ্ত করে। এছাড়াও বিষ এমন কিছু পায়জন থাকে যা মানব দেহকে অস্থির করে তুলতে পারে এবং মৃত্যু ঘটিয়ে থাকে।

যেসব বিষ খেলে মানুষ মারা যায়, সেই বিষ গুলোর বর্ণনা নিচে দেওয়া হল।

  • ইদুর মারার বিষ খেলে
  • যে কোন ওষুধ মাত্রা মাত্রা অধিক সেবন করলে সেটা বিষাক্ত হয়ে যায়
  • কেরোসিন, ডিজেল কিংবা পেট্রোল খেলে
  • আর্সেনিক আক্রান্ত হয়ে মারা যায়
  • ডি,ডি,টি কিংবা অন্য কোন কীটনাশক ওষুধের কারণে
  • ধুতুরার বিষ প্রয়োগ করলে
  • মদ, গাঁজা কিংবা হিরোইন ইত্যাদি মাত্রা অতিরিক্ত সেবন করে
  • উগ্র ক্ষার কিংবা কড়া এসিডের কারণে
  • বিভিন্ন বিষোধক দ্রব্য
  • অতিরিক্ত ধূমপান করলে
  • টিংচার আয়োডিন
উপরোক্ত এই বিষ গুলো সম্পর্কে আপনি হয়তো এতক্ষণ বুঝতে পারছেন যে, এই সব বিষ খেলে মানুষ মারা যায়। তাই আপনি এবং আপনার পরিবারের কেউ যেন এসব পদার্থগুলো না খায় সেদিকে সতর্ক থাকবেন।

ইঁদুরের বিষ খেলে কি মানুষ মারা যায় 

আপনি হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন যে ইঁদুরের বিষ খেলে কি মানুষ মারা যায়? হ্যাঁ, ইঁদুরের বিষ খেলেও মানুষ মারা যায়। ইদুরের বিষ বিভিন্ন ধরনের অনেক দ্রব্য দিয়ে তৈরি হয়। যার কারণে এটা খেলে মানুষ মারা যায়।

ইঁদুরের বিষ খাওয়ার কারণে মানুষ মারা যায় কেন? নিম্নে সে বিষয়ে বর্ণনা করা হল,

বিষের ধরনঃ বিভিন্ন ধরনের বিশেষ বিভিন্ন মাত্রায় বিষক্রিয়া হতে পারে, কিছু বিষ দ্রুত কাজ করে আবার কিছু বিষ ধীরে ধীরে কাজ করে।

বিষ খাওয়ার পরিমাণঃ যত বেশি বিষ খাবে তত মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি হবে।

ব্যক্তির বয়স ও স্বাস্থ্যঃ বয়স এর উপর নির্ভর করে ঝুঁকি। কেননা যে বিষ খেয়েছে তার বয়স যদি খুবই কম হয় যেমন শিশু হয়, বৃদ্ধ হয় এবং বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি হয় তাহলে তার মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি।

চিকিৎসার সুবিধাঃ যে বিষ খেয়েছে তার যদি দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে মৃত্যুর ঝুঁকি তার বেশি থাকে।

ইদুরের বিষ খেলে যে লক্ষণও দেখা দিতে পারে যেমন,
  • বমি বমি ভাব হওয়া
  • বমি হতে পারে
  • পেটে প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে
  • পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হতে পারে
  • মাথা ঘুরাতে পারে
  • দুর্বলতা লাগতে পারে
  • শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে
  • রক্তপাত শুরু হয়
  • জ্বর আসতে পারে
  • অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে
গ্রামের কিছু মানুষ রয়েছে যারা একঘেয়েমিতা করে বলে যে ইদুরের বিষ খেলে কি মানুষ মারা যায়। আসলে তারা এই বিষয়ে জানেনা। কিন্তু আপনার পরিবারের কেউ যদি ইঁদুরের বিষ খেয়ে থাকে তাহলে অতি দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। অতি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবেন তা না হলে রোগী মারা যেতে পারে।

তবে কিছু সতর্কতা রয়েছে তা হলো
  • ইঁদুরের বিষ বাচ্চাদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে
  • যখন আপনি কৃষি ক্ষেত্রে বিষ দিতে যান তাহলে সে ক্ষেত্রে অনেক সতর্কতা থাকতে হবে।
  • ইঁদুরের বিষ খেয়ে থাকলে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে ১০৬০ এই নাম্বারে ফোন করুন।
  • বমি করানোর চেষ্টা করবেন না, গ্রাম অঞ্চলে অনেকেই বিভিন্ন অখাদ্য জিনিস দিয়ে বমি করানোর চেষ্টা করে। এটা মোটেও ঠিক নয়
  • পানি বা দুধ খাওয়াবেন না এটার বিপরীত কাজ করবে।
  • চিকিৎসক যেভাবে পরামর্শ দেন সেভাবে ওষুধ খাওয়াবেন

পেট্রোল খেলে কি হয়

পেট্রোল মারাত্মক বিষক্রিয়া। পেট্রোল যেহেতু বিষ হয়ে যায় তাই মানুষ খেলে মারা যায়।এটা থেকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখবেন যেন তারা এই পেট্রোল খেয়ে না ফেলে। কারণ এটা একটি বিষ জাতীয়, যা খেলে শিশুর মৃত্যু ঘটতে পারে।

অনেকেই জানতে চায় পেট্রোল খেলে কি হয়, তাই বলা যেতে পারে বিষ খেলে যে লক্ষণ গুলো দেখা যায় পেট্রোল খেলেও সেই লক্ষণই দেখা যায়। নিম্নে এ সম্পর্কে সমাধানের বিস্তারিত জেনে নিন।
  • তাৎক্ষণায় চিকিৎসা সহায়তা নিতে হবে
  • বমি করানোর চেষ্টা করবেন না
  • রোগীর মুখ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
  • রোগীকে শান্ত রাখুন সান্ত্বনা দিতে থাকুন
  • যদি রোগীর অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে তার শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
  • পেট্রোল খাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য কোন সতর্কতা বার্তা
  • পেট্রোল শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন শিশুরা ধরতে যেন না পারে
  • পেট্রোলের বোতলে স্পষ্ট করে লেখে রাখুন অথবা লেবেল দিয়ে রাখুন
  • পেট্রোল খাওয়া রোগীর সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকতে হবে
মনে রাখবেন পেট্রোল একটি গুরুতর অবস্থা হতে পারে, ইভেন মৃত্যু ঘটতে পারে তাই দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা দিতে বিভিন্ন নাম্বারে ফোন দিতে পারেন।
আপনি জরুরী কিছু অ্যাম্বুলেন্স অথবা ফায়ার সার্ভিসের নাম্বার কিংবা পুলিশের নাম্বার রাখতে পারেন 

যোগাযোগের জন্য নাম্বার গুলো তে কল করতে পারবেন।
  • জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ১০৯
  • ফায়ার সার্ভিস নাম্বার ১০১
  • পুলিশ এর নাম্বার ৯৯৯
  • অ্যাম্বুলেন্স ১০২ অথবা ৯৯৯ নাম্বারে কল করুন
যদি আপনার পরিবার অথবা প্রতিবেশী পেট্রোল খেয়ে ফেলে, তাহলে অতি দ্রুত উপরোক্ত নাম্বার গুলো তে কল করে সহায়তা নিতে পারেন। বিশেষ করে এম্বুলেন্সকে ফোন দিয়ে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। তাহলে রোগী মৃত্যুর মুখ থেকে অনেকটা বেঁচে যাবে।

কীটনাশক খেলে কি মানুষ মারা যায় 

অনেকেই প্রশ্ন করে কীটনাশক খেলে কি মানুষ মারা যায়। হ্যাঁ, কীটনাশক খেলেও মানুষ মারা যায়। কেননা কীটনাশক এক ধরনের বিষ। আর এই কীটনাশক বিষ খেলে মানুষ মারা যাবে। কীটনাশক সাধারণত কৃষকরা বেশি ব্যবহার করে থাকে। যারা কৃষি কাজ করেন তাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
ছবি
কীটনাশক বিষক্রিয়ার ঝুঁকি যাদের বেশি, নিম্নে বর্ণনা করা হলো;
  • যারা কৃষি কাজ করে কীটনাশক ব্যবহার করেন
  • যারা কীটনাশকের কাছাকাছি কাজ করেন
  • যাদের বাড়িতে কীটনাশক সংরক্ষণ করে রাখা হয়
  • দুর্ঘটনা বসত বা ইচ্ছাকৃতভাবে পান করলে
  • কিভাবে রক্ষা করবেন কীটনাশক বিষক্রিয়া থেকে
  • কীটনাশক ব্যবহার করার সময় সাবধানতা ভাবে কাজ করতে হবে
  • কীটনাশকের নির্দেশাবলী সাবধানে পড়ুন এবং সেটা মেনে চলুন
  • এটা ব্যবহার করার সময় নিজেকে সুরক্ষা রাখতে পোশাক পরিধান করুন বা মাক্স পরিধান করুন
  • বাচ্চাদের নাগালের বাইরে কীটনাশক রাখুন
  • এটা পান করলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত
  • কীটনাশক জাতীয় দ্রব্যাদিতে খেলে মানুষ মারা যায়।
  • দ্রুত রোগীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হবে
  • রোগীকে বমি করানোর চেষ্টা কখনই করবেন না
  • রোগীকে পানি বা দুধ খাওয়াবেন না
  • রোগীর জামা কাপড় খুলে ফেলুন এবং তাকে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
রোগীর শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে তাকে সিপিআর দিতে পারেন। গ্রাম অঞ্চলে অধিকাংশ শিশুরা এই জাতীয় কীটনাশক খেলে মারা যেতে পারে। তাই প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত কীটনাশক গুলো শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।

কোন গাছের পাতা খেলে মানুষ মারা যায়

এতক্ষন আমরা জেনেছি যে, বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হলো গাছের পাতা খেলেও মানুষ মারা যায়। তাহলে চলুন কোন গাছের পাতা খেলে মানুষ মারা যায় জেনে নেওয়া যাক। নিম্নে সেই
বিষয়ে আলোচনা করা হলো;

ম্যানশিনীলঃ এটি বিশ্বের সবচাইতে বিষাক্ত একটি গাছ এর পাতা ছাল এমনকি এর ধূয়া ও মানুষের জন্য অনেক ক্ষতিকর।এর পাতা খেলে তীব্র বমি হতে হতে পারে। ডায়রিয়া ও হতে পারে শ্বাসকষ্ট এবং এ গাছের পাতাও বিষাক্ত তাই এই ধরনের গাছের পাতা খেলে মানুষ মারা যেতে পারে।

ওয়াটার হেমলকঃ ওয়াটার হ্যামলক বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কেন, কারণ উত্তর আমেরিকার সবচাইতে জনপ্রিয় একটি বিষাক্ত গাছ। এর পাতা দেখতে সাদা এবং এটি খেলে শ্বাসকষ্ট এবং ডায়রিয়া পক্ষান্তরে মৃত্যু হতে পারে।

ঝাউ গাছঃ এই গাছের পাতা খেলে ডায়রিয়া বমি এবং হৃদ স্পন্দন বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘুটতে পারে।

ক্যারিবিয়ান চেরিঃ এই গাছের পাতা খেলে ডায়রিয়া বমি এবং অবশেষে মৃত্যু হতে পারে।

নীলকন্ঠঃ এই গাছের পাতা খেলেও অনেক সময় মৃত্যু ঘটতে পারে।

ডেথ ক্যাপঃ এই গাছটা একটু ছত্রাক যা দেখতে অনেকটা মাশরুমের মত। এই গাছটি খেলে তীব্র যন্ত্রণা বমি ডায়রিয়া অবশেষে মৃত্যু ঘটতে পারে।

ইউফোরবিয়াঃ এ ধরনের গাছের পাতা খেলে শরীরের চুলকায় জ্বালাপোড়া করে এবং ফুসকুড়ি হতে পারে, গুরুতর ক্ষেত্রে মৃত্যু হতে পারে।

ওক গাছঃ এই গাছের পাতা খেলে কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং অতিরিক্ত সমস্যা হয়ে গেলে মৃত্যু ঘটতে পারে।

লিলি অফ দ্য ভ্যালিঃ এই গাছের পাতা খেলে হৃদয় স্পন্দন বন্ধ হয়ে গিয়ে মৃত্যু ঘটতে পারে।
যেগুলো খেলে মানুষ মৃত্যুবরণ করতে পারে তাই কোন গাছের পাতা সম্পর্কে আপনার যদি সন্দেহ লাগে তাহলে কখনই সেটা খাবেন না।

উপরোক্ত গাছের পাতাগুলো সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও আরো কোন গাছের পাতা খেলে মানুষ মারা যায়। সেসব গাছের পাতা সম্পর্কে বিভিন্নভাবে মাধ্যমে জানতে পারবেন।

বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা

কোন মানুষ বিষ খেলে তাকে প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দিন। তারপরে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসা জানা থাকলে বিষ খাওয়ার পরেও অনেক সময় রোগী বেঁচে যায়।

চলুন , বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক
  • যদি বিষ খাওয়া রোগীর জ্ঞান থাকে তাহলে বমি করানোর চেষ্টা করতে পারেন, রোগীর গলায় আঙ্গুল দিয়ে বমি করানোর চেষ্টা করতে পারেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে বমি না করানো ভালো।
  • অনেক লবণ মিশিয়ে গরম পানি খাওয়াতে যেতে পারে আবার এত বেশি লবন মিশাবেন না, যার কারনে মৃত্যু হতে পারে।
  • ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম ফেটে তা খাওয়া দিলে অনেকটা বমি করতে পারে
  • কাঁচা সরিষার তেল খাওয়ায় বমি করানো যেতে পারে
  • বমি করানোর সময় খেয়াল করুন বমি ফুসফুস বা শ্বাসনালীতে প্রবেশ করতে না পারে। সেজন্য রোগীর মাথা কিছু নিচের দিকে কাত করে দিন।
তবে যে সব  অবস্থায় বমি করানো যাবে না সেগুলো হল,
রোগী যদি এসিড খেয়ে থাকে তবে রোগীকে প্রচুর পরিমাণে পানি, দুধ, ডিমের সাদা অংশ এগুলো খাওয়ানো যেতে পারে। রোগী যদি সাথে সাথেই বমি করে তখন বিপদ কমে গেছে মনে করতে হবে। কারণ এসিড তখন দ্রবীভূত হতে পারে।
ছবি
রোগী যদি গ্যাস জাতীয় বিষ দ্বারা আক্রান্ত হয় তবে এই গ্যাসের কারণে বিষ হয়ে যায়। আর এই বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো হল; প্রথমে রোগীকে খোলামেলা জায়গায় নিয়ে যাবেন।

রোগীর পরনে দিয়ে বস্ত্র ঢিলা করে দিবেন। শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস দিতে থাকবেন।
অ্যালকালী কিংবা ক্ষার দ্বারা বিস্কক্রিয়া ঘটলে প্রচুর পরিমাণ পানি দুধ এবং টক জাতীয় শরবত যেমন লেবুর শরবত, কমলা রস ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।

কীটনাশক জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করার সময় না খেয়ে মুখে গামছা বেঁধে নেওয়া ভালো। যদি হাতে কিংবা গায়ে ওষুধ লেগেই যায় তবে সাথে সাথে ধুয়ে ফেলতে হবে। কোন মানুষ বিষ খেলে অবশ্যই এই প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো করবেন। তাহলে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।

বিষ খেলে কি করনীয়

একজন মানুষ বিষ খেলে কি করনীয় সে সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। নিম্নে বিষ খেলে কি করবেন সেই বিষয়গুলো  আলোচনা করা হলো
  • রোগীকে পরীক্ষা করে দেখতে হবে সে আসলে বিষ পান করেছে কিনা।
  • তাৎক্ষণিকভাবে মেডিকেলে সাহায্যের ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি কোন নাম্বার থাকে তাহলে অবশ্যই কল করতে হবে অথবা ৩৩৩ এই নাম্বারে কল করে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসতে হবে।
  • বিষ খাওয়ার পর রোগী যখন বমি করে তখন সেই বমি কখনো শিশুর বোতল থাকলে তাতে সংগ্রহ করা যেতে পারে। এতে করে কখন কি কতটুকু বিষ খেয়েছে তা যেন ডাক্তার চিকিৎসার ক্ষেত্রে সুবিধা হয়।
  • রোগী যদি অজ্ঞান যা করণীয় তা হল, রোগীকে উপর করে শুয়ে দিতে হবে এবং মাথা একদিকে ফিরিয়ে রাখুন মাথায় কোন বালিশ ব্যবহার করা যাবে না। যদি বেশি বমি করে জামা কাপড় ভিজিয়ে ফেলে তবে সেগুলো সরিয়ে দিতে পারেন।
  • শ্বাস প্রশ্বাসও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে থাকলে কৃত্রিম পদ্ধতিতে শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে হবে।
  • রোগী ঘুম ঘুম ভাব হলে,তাকে ঘুমাতে দিবেন না।
  • শক হলে তার প্রতিকার করতে হবে।
  • উপযুক্ত নিরোধক পাওয়া গেলে তা প্রয়োগ করা যেতে পারে।
উপরোক্ত এখানে কিছু বিষ খাওয়া রোগীর করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাই এগুলো যদি একজন মানুষ বিষ খাওয়ার পর প্রয়োগ না করেন তাহলে মানুষ মারা যাবে। আসলে বিষ খেলে মানুষ মারা যাওয়ার কারণ হলো;

এই উপরোক্ত বিষয়গুলো একজন বিষ খাওয়া রোগীর জন্য প্রয়োগ না করলে, সে অতি দ্রুত গতিতে মারা যায়।শুধুমাত্র উপরের এ সকল প্রাথমিক চিকিৎসা করেই বসে থাকবেন না, রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। তাছাড়া বিষ খাওয়া রোগীটি মারা যেতে পারে।

শেষ কথাঃ বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কেন ও শরীরে যে পরিবর্তন হয়

পরিশেষে বলা যেতে পারে, অনেক সময় বিষ খাওয়া রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা করলে রোগী মারা যায় না। তবে উপরোক্ত বিষয়গুলো যদি আপনি প্রয়োগ করতে পারেন অর্থাৎ বিষ খাওয়ার রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারেন। তাহলে রোগীটি অনেকটাই সুস্থ বোধ মনে করবে।

তাই বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কেন, আশা করি আমার এই কনটেন্টটা পড়ে বুঝতে পেরেছেন। আমার পোস্টটা যদি পড়ে আপনি একটু উপকৃত হন। তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪