কুষ্ঠ রোগ হলে কি হয়, এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
অনেকে জানতে চায় যে কুষ্ঠ রোগ হলে কি হয়? কুষ্ঠ রোগ পৃথিবীর একটি অতি প্রাচীন রোগ, সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে উন্নত দেশগুলো থেকে এ রোগ উচ্ছেদ হয়ে গেছে । চলুন, কুষ্ঠ রোগ হলে করণীয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কুষ্ঠ রোগের প্রধান লক্ষণ হলো ত্বকের একাধিক জায়গায় অস্তিত্ব বা মন্তব্য অনুভূতির অভাব ,ক্ষুদ্র জলের ঘাম অনুভূতি, অনুস্রাব্য ও অনাস্থা অনুভুতি ইত্যাদি। যা মূলত ত্বক বা অন্যান্য অংশ ছড়ায়। তাই কুষ্ঠ রোগ হলে কি হয়? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃকুষ্ঠ রোগ হলে কি হয়, এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
কুষ্ঠ রোগ কিভাবে ছড়ায়
কুষ্ঠ রোগের জীবাণু (মাইক্রোব্যাকটেরিয়াম লেপ্রি) একজন সংক্রামক রোগীর হাঁচি, কাশি থেকে বাতাসে মিশে গিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সুস্থ লোকের দেহে প্রবেশ করে। মোট কুষ্ঠ রোগীর ১৫ থেকে ২০ %
আরো পড়ুনঃ চোখের রোগ প্রতিরোধে কি করতে হবে, জেনে নিন
মাত্র সংক্রামক বাকি ৮০ থেকে ৮৫% অসংক্রামক । শতকরা প্রায় ৯৯ ভাগ লোকের এই রোগের বিরুদ্ধে প্রকৃতি প্রদত্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। অন্যান্য সংক্রামক রোগের তুলনায় কুষ্ঠ রোগ সংক্রমণের হার খুবই সামান্য।
কুষ্ঠ রোগ কত প্রকার
চিকিৎসার সুবিধার্থে রোগের চামড়া অসাড় ফ্যাকাসে অথবা অসার লালচে দাগের সংখ্যার ভিত্তিতে কুষ্ঠ রোগীকে দুই শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে
১.মাল্টি ব্যাসিলারি- চামড়া ৬ বা ততো দিক ফ্যাকাশে অথবা লালচে দাগ।
২.পসি ব্যাসিলারি- চামড়ায় ১ থেকে ৫ পর্যন্ত ফ্যাকাশে অথবা লালচে দাগ
কুষ্ঠ রোগ হলে কি হয়, ও তার লক্ষণ
কুষ্ঠ রোগ হলে যে সমস্যাগুলো হয় এবং যে লক্ষণ গুলো দেখা যায়। নিম্নে কুষ্ঠ রোগ হলে কি হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
- চামড়া ফ্যাকাশে বা লালচে দাগ যাতে কোন অনুভূতি থাকে না এবং চুলকায় না
- শরীরের কোন স্থানের প্রান্তিক স্নায়ু মোটা হয়ে যাওয়া
- হাত বা পায়ে অনুভূতির অভাব
- কান, মুখ বা শরীরের অন্য কোন স্থানে গুটি দেখা দেয়
- এছাড়াও আরো অন্যান্য যে সকল লক্ষণ দেখা দিতে পারে তা নিচে দেওয়া হল
- শরীরের কোন অংশের চামড়া মোটা হয়ে যাওয়া
- কান বা কারের লতি মোটা হয়ে যাওয়া
- আপাততঃ কোন কারণ ছাড়া শরীরে কোন অংশে ফুসকা পড়া
- পায়ের তলায় ঘা যেখানে কোনো ব্যথা থাকে না
- আক্রান্ত হাত বা পায়ের মাংস সমূহ অপুষ্ট বা শুকিয়ে যাওয়া
- হাতের বা পায়ের আঙ্গুল বাঁকা হয়ে যাওয়া বা খসে পড়া
- চোখের ভুরু উঠে যাওয়া
- চোখের পাতা পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া
- নাক বসে যাওয়া
- কবজি হতে হাত বা গোড়ালি থেকে পা ঝুলে যাওয়া
- ত্বকের দাগ গুলোর পাশাপাশি কোন পশম গজায় না এবং কোন অনুভূতিও নেই
- স্নায়বিক দুর্বলতা হয়ে পড়ে যাতে হাত-পা অবশ হয়ে যায়
কুষ্ঠ রোগের লক্ষণ গুলো কখনো অনুভূত করা যায় না। আর লক্ষণ দেখাও যায় না এবং এটা ধীরে ধীরে লক্ষণটা প্রকাশিত হতে থাকে, তাই যখন লক্ষণ দেখা দিবে যদি সত্যের চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে ওষুধ খাইলে সে সুস্থ হতে পারে।
কুষ্ঠ রোগীর সেবায় করণীয়
মাঠ পর্যায়ে উপরে উল্লেখিত লক্ষণ গুলোর যেকোনো একটি বা একাধিক লক্ষণ থাকলে, তাকে কুষ্ঠ রোগী হিসেবে সন্দেহ করে, পরীক্ষার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা বক্ষব্যাধিক ক্লিনিক বা কুষ্ঠ হাসপাতাল বা এনজিও ক্লিনিক হাসপাতালে পাঠাতে হবে।
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সমূহঃ কুষ্ঠ রোগ আগে প্রথমে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করতে হবে। কুষ্ঠ রোগ নির্ণয় করার জন্য তার যে স্থানে ক্ষত রয়েছে, সেই ত্বক থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। কুষ্ঠ রোগ ধরা পড়লে অতি তাড়াতাড়ি চিকিৎসা নিতে হবে।কেননা এটা দীর্ঘদিন যাবত অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়।
কুষ্ঠ রোগের সামাজিক মর্যাদাঃ কুষ্ঠ রোগীকে সামাজিকভাবে অবহেলা না করে, তাকে বুঝাতে হবে যে এটা কোন সংক্রমণ রোগ নয়। যে একজনের থেকে আরেকজন ছড়াবে, এতে কেউ তাকে অবহেলা করবেন না। যেহেতু এটা একটি দীর্ঘমেয়াদীর রোগ এবং ধীরে ধীরে চিকিৎসার নিলে সে সুস্থ হয়ে উঠবে। তাই তাকে মানসিক সাপোর্ট দিয়ে যেতে হবে।
রোগীর প্রতি পরিবারের সহানুভূতিঃ কুষ্ঠ রোগের ক্ষতস্থান দেখে কারো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটা থেকে রোগ ছড়াবে নয় বরং তাকে সহযোগিতা করতে হবে এবং সেই ক্ষতস্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখতে হবে।তাই পরিবারের লোকজন যদি তাকে অবহেলা করে তাহলে সে সুস্থ হতে পারবেনা। তাই তার প্রতি সহানুভূতি থাকা একান্ত প্রয়োজন।
রোগীর অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করতে হবেঃ পরিবারের লোকজন তাকে অর্থনৈতিক সমস্যা বা টাকা-পয়সার দরকার হয় সেগুলো তাদের ব্যবস্থা করতে হবে।রোগীকে ঔষধের ব্যবস্থা করতে হবে। ওষুধ খাওয়ানোর জন্য উৎসাহিত করতে হবে এবং সে সুস্থ হবে সেই কথাটা তাকে বলতে হবে। নিয়মিত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ডাক্তারের ফলোআপে নিয়ে যেতে হবে।
রোগীর মানসিক সহযোগিতাঃ রোগী অন্যান্য লোকের মতোই সে যেন চলাফেরা করতে পারে। সে যেন মনে না করে যা আমাকে অবহেলা করতেছে বা আমার এই রোগ সারবে না। এটা মানসিক সমস্যায় যেন না ভোগে, কেননা তাকে মানসিক সাপোর্টটা তার পরিবারকেই প্রথমে দিতে হবে।
কুষ্ঠ রোগীর ব্যাপারে সমাজে সচেতন করতে হবেঃ সমাজের লোককে বোঝাতে হবে যে কুষ্ঠ কোন ছোঁয়াচে রোগ নয় বা সংক্রমণক রোগ নয়।তাই এটা দেখে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।
এই রোগী আমাদেরই কোন প্রতিবেশী অথবা আমাদেরই সন্তান।তাই তার সাথে আমরা যেন খারাপ ব্যবহার না করি এবং তার এই রোগের কারণে তাকে অবহেলা না করি।
কুষ্ঠ রোগের সাথে বৈষম্যহীন ব্যবহার করতে হবেঃ কেননা কুষ্ঠ রোগী আমাদের মতই সে মানুষ তাই তার সাথে কোন বৈষম্য করা যাবে না বা তাকে আলাদা করে দেখা যাবে না। সে আমাদেরই সমাজের মানুষ তাই তাকে আমরা সহযোগিতা করতে পারি এবং বিভিন্নভাবে সাহায্য করবো যাতে সে নিজেকে অবহেলিত না মনে করে।
কুষ্ঠ হাসপাতাল মহাখালী অবস্থিত
বাংলাদেশে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা এবং যত্নের জন্য কিছু বিশেষ হাসপাতাল বা স্থান রয়েছে।
কুষ্ঠ রোগীদের জন্য বাংলাদেশের মধ্যে বিখ্যাত মহাখালী কুষ্ঠ হাসপাতাল। এখানে গেলে আপনি বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন।১৮৯৭ সালে কুষ্ঠ রোগীদের জন্য মহাখালীতে এই হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়। কুষ্ঠ রোগীদের এই কেন্দ্রীয় হাসপাতালটি প্রায় ৫০০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল।এখানে উন্নত মানের
চিকিৎসার জন্য যত যন্ত্রপাতি সকল কিছুই রয়েছে। কুষ্ঠ রোগীদের জন্য এই হাসপাতালটি অনেক উপকার হবে এবং তারা এই রোগ থেকে প্রতিরোধ পাবে এবং যত রকমের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এই হাসপাতাল থেকে কুষ্ঠ রোগীরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবে।
তাই আপনার অথবা আপনার পরিবারের কারো যদি কুষ্ঠ রোগ হয়ে থাকে তাহলে প্রথমে আপনারা এই কেন্দ্রীয় হাসপাতালে গিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে পারেন।
কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরঃ (ন্যাশনাল লিপ্রসি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম) বাংলাদে। কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন অধিদপ্তর, ক্লিনিক রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন জেলা ও শহর অবস্থিত ।এই অধিদপ্তরে সাধারণভাবে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের জন্য নিকটস্থ জেলা হাসপাতালের সাথে সহযোগিতা করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালঃ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রয়োজনে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা পাওয়া যায়। এছাড়াও ঢাকা শহরের অন্যান্য সরকারী বা বেসরকারি হাসপাতালেও এই রোগের চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে
শেরে বাংলা কুষ্ঠ নিউরোলজি হাসপাতাল সাভার ,ঢাকা জেলায় হাসপাতালটি কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা এবং সংশ্লিষ্ট নিউরোলজি সেবা প্রদান করে।
এছাড়াও বাংলাদেশের অনেক জেলা হাসপাতালে সাধারণত এই রোগ সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। কুষ্ঠ রোগের জন্য চিকিৎসা ও যত্নের জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে অবশ্যই যেতে হবে এবং নিকটস্থ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা
বর্তমানে প্রচলিত এমডিটি (MDT) আধুনিক পদ্ধতিতে নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করলে কুষ্ঠ রোগ সম্পূর্ণ সেরে যায়. এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করলে রোগীদের দ্রুত অনুভূতি এবং ত্বকের ক্ষকতগুলো সেরে যাওয়া শুরু করবে। ১২ মাসের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে যায়।তবে যদি জটিল আকার ধারণ করে তাহলে সময় একটু বেশি লাগতে পারে।
MDT টি পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়ার কারণে রোগী দ্রুত সুস্থ হবে কিন্তু নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে তা না হলে রোগী আবার পুনরায় এই রোগটি ফিরে আসতে পারে।
বাংলাদেশের কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসার জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের যত সরকারি হাসপাতাল রয়েছে মেডিকেল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কমিউনিটি ক্লিনিক ইত্যাদি যত স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে তাদের মাধ্যমে আপনি এই কুষ্ঠ রোগর বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন।
তাই আপনার ঘরের পাশে যদি কোন কমিউনিটি ক্লিনিক থাকে তাহলে সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে যোগাযোগ করে এই বিনা মূল্য চিকিৎসাটা নিতে পারেন।
বাংলাদেশের যত কুষ্ঠ রোগী সুস্থ হয়েছে তার বেশিরভাগই চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়েছে। তাই যখনই লক্ষণগুলো বোঝা যাবে অবশ্যই দ্রুতগতিতে চিকিৎসা নিলে বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে যায়।
কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা নেওয়ার সময় নিচের বিষয়গুলো জেনে নিতে হবে
কুষ্ঠ রোগের ওষুধ খাওয়ার জন্য অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করতে হবে
ওষুধ খাওয়া কোনক্রমেই বন্ধ করা যাবে না
ওষুধের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
চিকিৎসার উদ্দেশ্য
- রোগ আরোগ্য করা
- সংক্রামক রোগীকে অসংক্রামক করা
- বিকলাঙ্গতা ও পঙ্গুত্ব রোধ করা
কুষ্ঠ রোগের ঔষধ
- রিফাম পিসিন
- ড্যাপসোন
- ক্লোফাজেমিন
চিকিৎসার সময়কালঃ
মাল্টি ব্যাসিলারি -নিয়মিত এক বছর বা ১২ মাস
পসি ব্যাসিলারি -(২ থেকে ৫ দাগ যুক্ত ) নিয়মিত ছয় মাস
ওষুধ গ্রহণ পদ্ধতিঃ সকল চিকিৎসা কেন্দ্রে বিনামূল্য ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা আছে ।প্রতি মাসে নির্দিষ্ট তারিখে রোগীকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে প্রথম দিনের ঔষধ খেতে হবে এবং বাড়িতে খাওয়ার জন্য ২৭ দিনের ঔষধ সংগ্রহ করতে হবে ।
সম্পূর্ণ নিরাময়ের জন্য একজন পসি ব্যাসিলারি কুষ্ঠ রোগীকে -(২ থেকে ৫ দাগ যুক্ত ) নিয়মিত ৬ মাসে ৬ বার এবং মাল্টি ব্যাসিলারি কুষ্ঠ রোগীকে -১২ মাসে ১২ বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হবে ।যদি উপরোক্ত পদ্ধতিতে ওষুধ সংগ্রহ সম্ভব না হয় ,তবে অন্ততপক্ষে পসি
আরো পড়ুনঃ আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ, সম্পর্কে বিস্তারিত
ব্যাসিলারি রোগীর ক্ষেত্রে নয় মাসে ৬ বার এবং মাল্টি ব্যাসিলারি রোগীর ক্ষেত্রে ১৮ মাসে.১২ বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হবে।
কুষ্ঠ রোগের কারণে শ্রেষ্ঠ বিকলাঙ্গতা চিকিৎসা সম্পন্ন করার পরও থেকে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্লাস্টিক সার্জারির প্রয়োজন হয়, তবে নির্দিষ্ট মেয়াদের চিকিৎসা সম্পন্ন করার রোগীকে সুস্থ বলা হয় ,কারণ তার শরীরে কোন কুষ্ঠ রোগের জীবাণু থাকে না এবং তিনি কোনক্রমে রোগ সংক্রমণের ক্ষমতা রাখেন না।
কুষ্ঠ রোগের সঠিক চিকিৎসা না হলে যা হতে পারেঃ
- হাত বা পায়ে শ্রেষ্ঠ ক্ষতগুলো শুকায় না
- হাত বা পায়ের আঙ্গুল খসে পড়তে পারে
- হাত বা পায়ের আঙ্গুল বাঁকা হয়ে যেতে পারে
- রোগী পঙ্গু হয়ে যেতে পারে
- নাকের অগ্রভাগ বসে যেতে পারে
- চোখ আক্রান্ত হওয়ার ফলে রোগী অন্ধ হয়ে যেতে পারে
- পুরুষ রোগীদের সন্তান উৎপাদন ক্ষমতার লোভ পেতে পারে
কুষ্ঠ রোগের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ
অনেক সময় চিকিৎসা শুরু করার আগে, চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে বা চিকিৎসা পরবর্তীকালে কুষ্ঠ রোগীর বিশেষ ধরনের কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ওষুধের কারণে নয়, রোগের কারণেই এই ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়।
প্রতিক্রিয়ার ফলে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং পরিণতিতে অন্ধত্ব বা বিকলাঙ্গতাও হতে পারে। এ ব্যাপারে রোগীকে পূর্বে সতর্ক করতে হয়, যাতে এরকম কোন প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে রোগী অতিসত্বর কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণ সহকারী অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে।
- ফ্যাকাসে বা লালচে দাগ হঠাৎ ফুলে যাওয়া, লাল ভাব বেড়ে যাওয়া বা ব্যথা হওয়া
- চামড়ায় গুটির আকার বড় হয়ে যাওয়া
- স্নায়ুতে ব্যথা বা স্নায়ু ফুলে যাওয়া
- গায়ে জ্বর ভাব হওয়া
- অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হওয়া ও ফুলে যাওয়া
- গ্রন্থি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
কুষ্ঠ রোগের প্রতিকার
কুষ্ঠ রোগ কোন অভিশাপ বা পাপের ফল নয় এবং এটা কোন বংশগত রোগ নয়, এই রোগ এক ধরনের জীবাণু দ্বারা হয়
- নিয়মিত ওষুধ খেলে কুষ্ঠ রোগ সম্পূর্ণ সেরে যায়
- কষ্ট রোগীকে প্রতি মাসে নিয়মিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এসে ওষুধ খাওয়া বা সংগ্রহের উদ্বুদ্ধ করা
- নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার গুরুত্ব রোগীকে বুঝিয়ে বলা এবং রোগী নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা
- কুষ্ঠ রোগীদের প্রতি সহানুভূতি সম্পন্ন মনোভাব প্রদর্শন বা আচরণ করে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলা ও তার আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করা।
- কুষ্ঠ রোগ সম্বন্ধে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার দূর করার লক্ষ্যে জনগণের সাথে আলোচনা করা। জনগণকে জানানো যে কুষ্ঠ রোগ কোন অভিশাপ বা পাপের ফল নয় এবং এটা কোন বংশগত রোগ নয় ,অন্যান্য রোগের মতই একটি রোগ যা নিয়মিত চিকিৎসায় সম্পন্ন সেরে যায়
- কুষ্ঠ রোগ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান, রোগের লক্ষণ, রোগের বিস্তার রোগের চিকিৎসা না নেওয়ার পরিণতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া
- কুষ্ঠ রোগ সম্পর্কে জানতে হবে, কুষ্ঠ রোগের সংক্রমণ ও চিকিৎসা পদ্ধতির সম্পর্কে জনগণকে সঠিক ধারণা দেওয়াকুষ্ঠ রোগ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনা বাড়ানো যাতে সন্দেহজনক রোগীরা নিজের উদ্যোগে পরীক্ষা বা চিকিৎসা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসেন
- দেশের সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিনামূল্যে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা পাওয়া যায় তা প্রচার করা।
লেখকের শেষ কথা
পরিশেষে বলা যেতে পারে কুষ্ঠরোগ হল একটি মাইক্রোব্যাকটেরিয়া লেপ্রি ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। এর প্রধান লক্ষণ হলো ত্বকের একাধিক জায়গায় অনুভূতির অভাব হয় ,ক্ষুদ্র জলের ঘাম অনুভূতি অনাস্থা অনুভূতির । কুষ্ঠ রোগ হলে কি হয়, আশা করি বুঝতে পেরেছেন। যদি পোস্টটা ভাল লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url