পানিতে ডোবা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা, সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

পানিতে ডোবা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা,সম্পর্কে জানা সবারই প্রয়োজন। কারণ পানিতে পড়ে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের ভিতর পানি যখন ঢুকে যায় তখন পানিতে পড়া ব্যক্তি প্রচুর পরিমাণে পানি খেয়ে ফেলে এবং ৫- ৬ মিনিটের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়ে যায়।
ছবি
বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে সবচাইতে বেশি এই ঘটনা ঘটে থাকে। কারণ গ্রাম অঞ্চলে পুকুর, ডোবা নালা, খাল বিল থাকে। যার কারণে শিশুরা পুকুরে পানিতে পড়ে ডুবে মারা যায়। তাই পানিতে ডোবা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 

পোস্টসূচিপত্রঃপানিতে ডোবা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত

পানিতে ডুবে যাওয়া কারণ 

গ্রাম অঞ্চলের শিশুরা পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণ হলো বাবা-মার অসচেতনতা। তাই কি কারনে শিশুরা পানিতে পড়ে যায় নিম্নে সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো,
  • সাঁতার যদি না জানেন তাহলে অবশ্যই নদী বা গভীর জলাশয়ে নামতে যাবেন না এটাও  পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণ হতে পারে
  • নৌ দুর্ঘটনার কারণেও সাঁতার জানা মানুষ অনেক সময় পানিতে ডুবে মারা যায়।
  • সড়ক দুর্ঘটনা হয়ে যানবাহন যদি পানিতে পড়ে যায় সে ক্ষেত্রেও মানুষ পানিতে মরে মারা যায়।
  • বন্যার পানিতে পড়ে গেলে কিংবা নদী ভাঙ্গনের কারণেও অনেক সময় মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়।
  • জ্বলোচ্ছাস ও ঢেউয়ের কারনে অনেক সময় মানুষ পানিতে পড়ে মারা যায়। এছাড়াও বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের অত্যাধিক ঢেউয়ের কারণে মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়।যেমন বাংলাদেশে ২০০৭ সালে সিডরে অনেক মানুষ মারা গিয়েছিল। অধিকাংশ মানুষ পানিতে পড়ে মারা যায়।
  • যদি আপনি অসতর্ক থাকেন তাহলে আপনার সেসব পানিতে ডুবে যেতে পারে এবং মারাও যেতে পারে। 
পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা গ্রাম অঞ্চলে অহরহ ঘটে থাকে। তবে এর পিছনে কিছু কারণ থাকে নিম্নে সেই কারণগুলো উল্লেখ করা হলো,
প্রাপ্তবয়স্কদের পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণ গুলো আলোচনা করা হলো,

সাঁতার না জানাঃ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অনেকেই সাঁতার জানে না, তারা পানিতে ডুবে অতি সহজে মারা যায়। বিশেষ করে শহর অঞ্চলের মানুষগুলো সাঁতার বেশিরভাগ জানেনা। যার কারণে তারা গ্রাম অঞ্চলে কোথাও পুকুরে আসলে পানিতে পড়লে তারা অতি সহজে ডুবে মারা যায়।

পানিতে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়াঃ অনেকেই পানিতে সাঁতার কাটা অতি বিশ্বাসী মনে করে যে আমি অনেক ভালো সাঁতার জানি। আমি কখনো ডুবে মারা যাবো না, এই ধরনের মানুষগুলো ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো করে থাকে। যার কারণে তারা অনেক সময় পানিতে ডুবে মারা যায়।

মদ খেয়ে পানিতে নামলেঃ মদ খাওয়ার পর পানিতে নামলে মারা যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

প্রাকৃতিক নদী-নালাঃ প্রাকৃতিকগতভাবে যে নদী নালা তৈরি হয়েছে সেগুলোতে মাঝে মাঝে জোয়ার ভাটা হয়ে থাকে আপনি যদি সেই জোয়ার ভাটা সম্পর্কে না জানেন তাহলে অনেক সময় ঘূর্ণি ঝড়ের কবলে পড়ে আপনি মারা যেতে পারেন।

নৌকা বা ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রীঃ ট্রলারে যদি অতিরিক্ত মানুষ নেয়, তাহলে নৌকা ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিপূর্ণ থাকে বেশি।

নৌ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়মঃ নৌ মন্ত্রণালয় করতে কিছু নিয়মকানুন রয়েছে সেগুলো আপনি প্রথমে জেনে নিবেন তা যদি না জানেন তাহলে আপনার পানিতে ডুবে যাওয়ার মারার মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।

অন্যান্য কারণ গুলোর মধ্যে হচ্ছে
ঝড় বৃষ্টির সময় পানিতে নামাঃ যখন ঝড় বৃষ্টি হয় তখন পানিতে মোটেও নামা ঠিক হবে না এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

অসাবধানতা পানিতে পড়ে যাওয়াঃ অনেক সময় মানুষ অসাবধানতা বসতেই হঠাৎ করে পানিতে পড়ে যায় এর কারণও পানিতে ডুবে মানুষ মারা যায়।

অসুস্থ শরীরঃ সাধারণত জেলেরা মাছ ধরার জন্য এবং তাদের জীবিকা উপার্জনের জন্য অনেক সময় অসুস্থ শরীর নিয়েই মাছ ধরতে যায়। এতে বিপদ হতে পারে তাই কখনোই অসুস্থ শরীর নিয়ে পানিতে নামবেন না।

পানিতে ডুবে শিশুদের মৃত্যু কারণগুলো হল
অদেখায় থাকাঃ ১ থেকে ৪ বছর বা ৫ বছর বয়সী শিশুরা বেশিরভাগ পানিতে ডুবে মারা যায়। কারণ তারা অনেক দ্রুত গতিতে হাটে এবং পানিতে পড়ে যায় এতে তার পিতা-মাতা বা তার তত্ত্বাবধানে দায়িত্ব পালন করেন তার অবহেলার কারণে শিশুটি পানিতে পড়ে মারা যায়।

সাঁতার জানতে হবেঃ আপনার বাড়িতে যদি পাঁচ বছরে শিশু থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে সাঁতার শিখাবেন। কেননা পাঁচ বছরের উপরের শিশুদেরকে সাঁতার শেখানো খুবই দরকার। কারণ তারাই বেশিরভাগ পানিতে ডুবে মারা যায়।

জলাশয়ের প্রতি আকর্ষণঃ শিশুরা সাধারণত পানির প্রতি আকর্ষণ থাকে বেশি। তাই তারা পানি ধরতে গিয়ে পুকুরে পড়ে যায়, যার কারণে পানিতে ডুবে মারা যায়।

খেলার সময় দুর্ঘটনাঃ অনেক শিশুর পানিতে খেলতে পছন্দ করে খেলার সময় তার খেলনা হয়তো পানির ভিতরে পড়ে যায়, সেটা তুলতে গিয়েও দুর্ঘটনা ঘটে।

আরো বিভিন্ন কারণেঃ শিশুদের দিকে সবসময় বেশি খেয়াল রাখবেন যেন তারা পানির কাছে না যায় এবং আরেকটা জিনিস খেয়াল রাখবেন তাদের খেলনা যেন পানিতে পড়ে না যায় কেননা খেলা ধরতে গিয়ে অনেক সময় পানিতে পড়ে মারা যায়।

বর্ষাকালে গ্রাম অঞ্চলে প্রায় বন্যা দেখা দেয়, বন্যার পানিতে শিশুরা খেলতে গিয়ে অনেক সময় ডুবে মারা যায়।
সাধারণত আরো অনেক কারণ রয়েছে তার কিছু তুলে ধরা হলো,

জলাশয়ের আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবঃ বাড়ির আশেপাশে যদি ডোবা থাকে বা পুকুর থাকে সেখানে যদি বেড়া না দেওয়া থাকে এবং সাবধান যদি না থাকে তাহলে শিশুরা পানিতে পড়ে যায়। তাই শিশুদের দিকে খুবই সতর্কভাবে নজর দিতে হবে যেন তারা পানিতে না পড়ে যায়।

সতর্ক থাকতে হবেঃ আপনি যদি আপনার শিশুর প্রতি সতর্ক না থাকেন তাহলে বিশাল বিপদের সম্মুখীন হতে হবে তাই আপনার শিশু যেন পানিতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে এবং তাকে কাছে কাছে রাখতে হবে যদি আপনি সময় না পান তাহলে অন্য কারোর মাধ্যমে দায়িত্ব দিয়ে দিতে হবে।

জরুরি প্রস্তুতির অভাবঃ জরুরি অবস্থায় কিভাবে শিশুটিকে বা পানিতে পড়ে যিনি মারা যাচ্ছেন তাকে কি করতে হবে। এই বিষয়ে ধারণা তাদের মাঝে না থাকতে পারে বা প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে।

পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার

বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার বেশি গ্রাম অঞ্চলে। প্রায় প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রায় ৪০ জন শিশু পানিতে পড়ে মারা যায়। এই ৪০ জনের মধ্যে ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যু বেশি  ঘটে। গবেষণায় দেখা গেছে পানিতে পড়ে যত মানুষ মারা গিয়েছে তার মাঝে অধিকাংশ শিশু মারা গেছে।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রকল্প চালু করেছে, যেটা অনেকটাই পানিতে ডোবা শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে নিয়ে আসবে।

পানিতে ডোবা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা 

কথায় বলে যে, যে সব লোক পানিতে ডুবে মারা যায়,তারা হাতের কাছে যাই পায় তাই আঁকড়ে ধরতে চায়। সে যত ক্ষুদ্র খড়কুটোই হোক না কেন সেটাই ধরতে চায়। তাই পানিতে ডোবা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
  • পানিতে ডোবা ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে হলে পারদর্শী লোকের প্রয়োজন। দক্ষ লোকের প্রয়োজন তাছাড়া উদ্ধারকারীর জীবন রক্ষা করাই কঠিন।
  • আপনি যদি উদ্ধার কর্মী হন তাহলে আপনাকে নিজের জীবন রক্ষা করার জন্য জীবন রক্ষাকারী জ্যাকেট পড়ে পানিতে নামতে হবে।
  • উদ্ধারকারীর সাঁতার না জানা থাকলে ব্যক্তিকে ঠেলে ঠেলে তীরের দিকে ফিরে যেতে হবে, তা না হলে ব্যক্তি উদ্ধারকারীকে জড়িয়ে ধরে জড়িয়ে ধরবে,ফলে উদ্ধারকারীর জীবন রক্ষা করাই কঠিন।
  • পানিতে ডুবলে প্রথমে হা করিয়ে জিভ টেনে বের করে আনতে হবে। পরে মুখের মধ্যে থেকে কিংবা নাক থেকে লালা স্লেশমা যা কিছু আছে সব বের করে দিতে হবে।
  • ব্যক্তির শ্বাসনালী ও ফুসফুস সম্পূর্ণভাবে পানিতে পূর্ণ থাকলে সেই পানি বের করে আনতে হবে। প্রথমে ব্যক্তিকে উপর করে শুয়ে দিতে হবে, এরপর পেট ধরে উঁচু করতে হবে যাতে মাথা ও বুক নিচের দিকে দিন, পিঠে আস্তে আস্তে চাপড় দিতে থাকুন, এতে করে পাকস্থলী শ্বাসনালী ও ফুসফুসের পানি বের হয়ে আসবে।
  • রোগীকে তোলার পরে তার শরীরে ভেজা কাপড় খুলে দিয়ে শুকনা কাপড় তাড়াতাড়ি করে পড়াতে হবে
  • এরপর স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস শুরু হওয়ার পূর্বে পর্যন্ত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে হবে।
  • পানি বের হয়ে যাওয়ার পর ব্যক্তিকে গরম চা, দুধ ইত্যাদি খেতে দিতে হবে।
  • প্রয়োজনে ঠান্ডা হলে গরম সেক দেওয়া দরকার।
  • পানিতে ডোবা রোগীর অবস্থা খারাপ হয়, তাহলে অতিসত্বর ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া জরুরী
  • নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কখনোই পানিতে ঝাঁপ দেওয়া যাবেনা। দীর্ঘ কাঠি, বাঁশ গাছের ডাল দড়ি ব্যবহার করে পানিতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে হবে।
  • ডুবে যাওয়া ব্যক্তি কে উদ্ধার করার পর দ্রুত গতিতে তাকে অক্সিজেনের শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়ে যায়।
  • রোগীকে কৃত্রিম ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস দিতে পারেন তার জন্য সিপিআর ব্যবহার করতে পারেন
  • ৩০ বার বুকে চাপ + দুবার মুখে শ্বাস প্রদান করুন।
  • এছাড়া দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে ১০৮ নম্বরে কল দিয়ে এম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা করুন।
  • কিছু সতর্কতা বিষয় রয়েছে যেমন
  • রোগী কে উল্টাপাল্টা করার চেষ্টা কখনোই করবেন না। পেটে জোরেশোরে চাপ দিবেন না
  • মুখে খাবার বা পানি দিবেন না। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে আরো কষ্ট হবে।
  • রোগীর জন্য উৎসাহ দিন এবং শান্তনা  দিতে পারেন।

পানিতে ডোবা প্রতিরোধ 

প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত তার সন্তানের জন্য পানিতে ডোবা প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন।
পাঁচ বছরের কম বয়স যে সকল শিশুদেরকে কখনোই একা ছাড়বেন না, পানিতে যাওয়ার জন্য।

শিশুকে যখন বাড়ির বাইরে নিয়ে যাবেন তখন অবশ্যই তাকে হাত ধরে নিতে হবে। যেন আপনার হাত ছেড়ে অন্যদিকে না যায় এবং অন্যদিকে গেলেই সে হয়তো পানির দিকে চলে যাবে। আর পানির দিকে চলে গেলে পানিতে পড়ে বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। তাই তাকে সবসময় নজরে রাখতে হবে এবং কোন মতেই হাত ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

সাঁতার কাটা শেখানোঃ পানিতে ডোবা প্রতিরোধ করার জন্য প্রথম ধাপ হল, পাঁচ বছরের বেশি বয়সী শিশুদেরকে অবশ্যই সাঁতার কাটানো শিখাতে হবে।

স্কুল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা সাঁতার কাটা বিষয়ে শিশুদেরকে উৎসাহিত করতে হবে এবং কিভাবে সাঁতার কাটতে হয় সেই বিষয়গুলো জানিয়ে দিতে হবে। এটা বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে।

সচেতনতামূলক প্রচারণাঃ শিশুরা পানিতে ডুবে যেন না মারা যায় সেই বিষয়ে কিভাবে পানিতে ডোবা প্রতিরোধ করা যায়। সেজন্য টেলিভিশন রেডিও এবং গণমাধ্যম আরো যে সকল বিষয় রয়েছে সেখানে প্রচার-প্রচারণা করতে হবে।

স্কুল কলেজ ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা মূলক বিভিন্ন বৈঠক করতে হবে। জনসমাবেশ , করে তাদের শিশুরা যেন পানিতে না যায় সেই বিষয়ে সচেতন করতে হবে।

বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলের মা-বাবাকে এই বিষয়গুলো জানাতে হবে যে বাংলাদেশের প্রতিদিন প্রায় ৪০ জনের মত মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। তাই প্রত্যেক অভিভাবকের পানিতে ডোবা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে হবে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে
জলাশয়ের চারিদিকে বেড়া দিনঃ আপনার সন্তান কে পানিতে ডোবা প্রতিরোধ করতে হলে প্রথমে বাড়ির পাশে যদি ডোবা নালা ডোবা থাকে বা পুকুর থাকে তার সামনে দিয়ে বেড়া দেওয়া দরকার যাতে সেখানে শিশুটি না যেতে পারে।

নদী-নালা খাল বিল এর ধারে সাবধানতা চিহ্ন দিতে হবে যাতে করে শিশুরা বুঝতে পারে।
পানিতে নামার সময় নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে পানিতে নামতে হবে।

জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামঃ পানিতে নামার সময় অবশ্যই লাইভ জ্যাকেট ব্যবহার করতে হবে। জীবন রক্ষা কারী সরঞ্জাম গুলো সংগ্রহ রাখতে হবে যেমন লাইফ বয়, দড়ি পানিতে নামার সময় রাখা দরকার। জীবন রক্ষা কারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন।

আইন প্রয়োগ করাঃ পানিতে ডোবা প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন ও সেটার প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে পানিতে নামার ক্ষেত্রে বয়স সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত। মদ্যপান অবস্থায় কখনো পানিতে নামানো যাবে না, নামলে তার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

সরকারি পদক্ষেপ সংস্কার করা 
জলাশয়ের সংস্কারঃ অপ্রয়োজনীয় যেগুলো খাল বিল রয়েছে সেগুলো ভরাট করে দেয়া উচিত। নদী নালা খাল বিলের খনন ও সংস্কার করা দরকার, পানিতে নামার জন্য নিরাপদ স্থান তৈরি করে দেওয়া উচিত।

সচেতনতামূলক প্রচারণাঃ পানিতে ডুবে যেন না যায় সেই জন্য সরকারিভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং গ্রাম অঞ্চলের অভিভাবকদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

মানুষের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারণা করতে হবে
শিশুদেরকে সাঁতার কাটা শেখানোর জন্য প্রত্যেক প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকদের বলা হয়েছে। যাতে করে তারা যেন সুন্দর করে সাঁতার শিখতে পারে এবং সেটা পাশে কোন পুকুর থাকলে তাদেরকে প্র্যাকটিক্যালি সাঁতার কাটানো শিখিয়ে দেওয়া উচিত। তাহলে শিশুরা সুন্দর মত সাঁতার কাটতে পারবে।

জীবন রক্ষাকারীদের প্রশিক্ষণঃ যারা সরকারিভাবে পানিতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তির জীবন রক্ষা করবে এবং জীবন রক্ষাকারীদেরকে সরঞ্জামের ব্যবস্থাও করে দিতে হবে। তারাও তাদেরকে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে যে কিভাবে রোগীকে উদ্ধার করা যায়।

আমাদের শেষ কথা

পরিশেষে বলা যেতে পারে যে বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে অধিকাংশ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। গ্রাম অঞ্চলের বাবা-মায়েরা অসচেতনতার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে বেশি। তাই প্রত্যেকেরই সচেতন হতে হবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে পানিতে ডোবা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা কিভাবে করতে হয় সে বিষয়ে জানতে হবে। তাহলেই এই পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা কমে যাবে। আমার পোস্টটা পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন, তাহলে পোস্টটি আপনার বন্ধু- বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪