খাবার বড়ি বা পিল খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে, যে সমস্যা গুলো হয়

খাবার বড়ি বা পিল খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে, বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।গর্ভনিরোধের বড়ি সাধারণ মানুষের কাছে খাবার বড়ি হিসেবেই পরিচিত। খাবার বড়ি গর্ভনিরোধের অত্যন্ত নিরাপদ ও কার্যকর পদ্ধতি।
ছবি
২০০৭ সালের ডেমোগ্রাফিক এন্ড হেলথ সার্ভে অনুযায়ী বাংলাদেশে গর্ভনিরোধের পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার শতকরা ৫৫.৮ ভাগ এবং তার মধ্যে খাবার বড়ি ব্যবহারকারীর হার শতকরা ২৮.৫ ভাগ। বাংলাদেশের খাবার বড়ি হল সর্বাধিক ব্যবহৃত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি।

পোস্টসূচিপত্রখাবার বড়ি বা পিল খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে,  অনেক সমস্যা হয়

মায়া বড়ি কি

আসলে মায়া বড়ি কি, এটা হলো একটি জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অস্থায়ী পদ্ধতি এক ধরনের ট্যাবলেট।বর্তমানে যে প্রচলিত খাবার বড়ি রয়েছে তার উপাদান হলো অ্যাস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টরেন হরমোন।মূলত অ্যাস্ট্রোজেন হরমোন এর পরিমাণ এর উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। 
তবে অনেকেই মায়া বড়ি কি এ নামে চেনে না। এই খাবার বড়ি গুলো জন্ম নিয়ন্ত্রণ এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যদি এটা নিয়মিত খাওয়া হয় তাহলে গর্ভধারণ হবে না।

মায়া বড়ি সাধারণত শুক্রাণুকে বাধা দিয়ে থাকে যার কারণে সন্তান হয় না।এ পিল ডিম্বানোর ভিতরে প্রবেশ করতে না পেরে সন্তান জন্মগ্রহণ হয় না। যদি এই বড়ি পিরিয়ড না হলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ ক্রমে প্রেগনেন্সি টেস্ট করবেন।

পিল বা খাবার বড়ি খাওয়ার নিয়ম

পিল বা খাবার বড়ি খাওয়ার নিয়ম গুলো নিম্নে দেওয়া হল,

বাংলাদেশের প্রায় সকল মিশ্র খাবার বড়ি প্যাকেটে ২১ টি সাদা জন্মনিরোধক বড়ি। যার প্রধান উপাদানই হলো হরমোন এবং সাতটি খয়রি বড়ি যা আয়রন বড়ি থাকে। কোন কোন প্যাকেটে বা পাতায় শুধুমাত্র ২১ টি জন্মনিরোধক বড়ি থাকে।

একটি প্যাকেট নমুনা হিসেবে দেখে বুঝে নিতে হবে। যদি আপনার এই খাবার বড়ি খাওয়ার নিয়ম মনে না থাকে তাহলে একজন স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে আপনি প্যাকেটের ভিতরে যে লিফলেট রয়েছে সেটা পড়ে বুঝে নিবেন তাহলে সুবিধা হবে।

প্রথমবার খাওয়ার পরে শুরু করবেন মাসিকের প্রথম দিন অর্থাৎ মাসিকের প্রথম দিন হতে সাদা বড়ি খাওয়া শুরু করতে হবে। তবে মাসিক প্রথম দিন হতে পঞ্চম দিন পর্যন্ত যে কোনদিন থেকেও শুরু করা যাবে।

যে মহিলা গর্ভপাত বা এম আর করেছেন বা যে মহিলার গর্ভপাত হয়েছে তিনি যদি খাবার পরি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে পছন্দ করেন। তবে গর্ভপাত করার দিন থেকে বা পরবর্তী পঞ্চম দিনের মধ্যে বড়ি খাওয়া শুরু করতে পারেন।

আপনি যদি অন্য কোন পদ্ধতি ব্যবহার করতে থাকেন বা করে থাকলে গর্ভবতী নয় নিশ্চিত হয়ে মাসিক চক্রের যে কোন সময় বড়ি খাওয়া শুরু করতে পারেন।

সব সময় প্রথম বড়ি দিয়ে শুরু করতে হবে, বড়ির পাতার দিক নির্দেশনা তীর চিহ্ন অনুসরণ করে প্রথমে হতে ২১ দিনে ২১ টি সাদা বড়ি খেতে হবে।সাদা বড়ি শেষ হয়ে যাবার পর একইভাবে একটি করে সাত দিনে সাতটি খয়রি বড়িখেতে হবে। খোয়ারি বড়ি খাওয়া কালীন সময়ে সাধারণত মাসিক শুরু হয়। মাসিক আরম্ভ হলেও খোয়ারি বড়ি খাওয়া বন্ধ করা যাবে না।

পিল খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে তবুও খোয়ারি বড়ি শেষ হওয়ার পর দিনই থেকে উপরের নিয়ম অনুযায়ী নতুন একটি পাতা থেকে আবার সাদা বড়ি খাওয়া শুরু করবেন।
খাওয়ার পরে পানি দিয়ে গিলে ফেলতে হয়। প্রতিদিন একই সময় বড়ি খাওয়ার অভ্যাস করা ভালো। বড়ি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে রাতের খাবারের পরে বা শোয়ার আগে।

যেসব প্যাকেটে ২১ টি বড়ি থাকে সেক্ষেত্রে বড়ি শেষ হয়ে গেলে মাসিকের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। মাসিক শুরু হলে মাসিকের প্রথম দিন থেকে আবার নতুন প্যাকেটের বড়ি খাওয়া শুরু করতে হবে। যদি মাসিক না হয় এবং আপনি নিশ্চিত থাকেন যেকোন বড়ি খেতে ভুল হয়নি তবে শেষবার খাবার সাত দিন পরে আবার বড়ি খেতে শুরু করবেন।

আপনি যদি নিশ্চিত হন যে আপনি গর্ভবতী নন, তবে প্রয়োজনে যেকোনো দিন থেকে খাওয়া শুরু করতে পারেন। সাত দিন থেকে তাকে কনডম ব্যবহার করতে হবে। এভাবে বড়ি খেতে শুরু করলে পরবর্তী মাসিকের সময় পিছিয়ে যাবে যতদিন না পরিশেষে হয়।
বড়ি খাওয়ার কথা ভুলে গেলে তাহলে পড়ে আবার একটি বড়ি খেয়ে নিবেন এবং ওই দিনের বড়িও খেয়ে নিবেন।

যদি এই খাবার বড়ি খাওয়ার নিয়ম পরপর দুই দিন বড়ি খেতে ভুলে যান তাহলে মনে পড়ার সাথে সাথে দুটি বড়ি খাবেন এবং তারপর দিন নির্দিষ্ট সময় দুটি খাবেন। অবশ্যই স্বামীর সাথে মেলামেশা করতে হলে কনডম ব্যবহার করবেন।

যদি পরপর তিনটি বড়ি খেতে ভুলে যান তবে ওই পাতা থেকে বড়ি আর খাবেন না এবং পরবর্তী মাসিকের আগ পর্যন্ত কনডম ব্যবহার করবেন বা সহবাস থেকে বিরত থাকবেন।

আর যদি দেখেন খাবার বড়ি বা পিল খাওয়ার পর কোন সমস্যা হয়, তাহলে অবশ্যই আপনার বাড়ির পাশে কমিউনিটি ক্লিনিক এর একজন স্বাস্থ্যকর্মী আছেন তার থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।

মায়া বড়ি খেলে কি হয়

মায়া বড়ি বা পিল খাওয়ার ফলাফল নির্ভর করে আপনি কেমন ধরনের মায়া বড়ি খাচ্ছেন।
জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, বা এই মায়া বড়ি খেলে কি হয় তা নিয়ে আলোচনা করা হলো,

কার্যপ্রণালীঃ ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের করতে বাধা দেয়। ওর গ্রীবায় শ্লেষ্মা ঘন করে দেয়। যেন শুক্রাণু প্রবেশ করতে না পারে জরায়ুর যে আস্তরন রয়েছে সেটাকে অনেক পাতলা করে ফেলে যা গর্ভস্থাপনকে বাধা দিতে পারে।

সুবিধাঃ জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ৯৯% কার্যকর করতে পারে। এছাড়া মাসিক নিয়মিত হয়, মাসিক পূর্ববর্তী উপসর্গ গুলো দেখা দেয় তা অনেকটা হ্রাস করে। ডিম্বাশার ভিতরে ক্যান্সার রোধ কমায়,জরায় ক্যান্সারের ৫০% ঝুঁকি কমিয়ে নিয়ে আসে।
অসুবিধা সমূহঃ বমি বমি ভাব হয় অথবা বমি হয়ে যায়, মাথা ব্যথা করে, স্তন ব্যথা করে, ওজন বেড়ে যায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, রক্তপাতের মত অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
রক্তনালীতে রক্ত জমা বাধার ক্ষেত্রে ঝুঁকি হতে পারে।
লিভারের সমস্যা উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

কাদের জন্য উপযুক্তঃ যারা গর্ভধারণ রোধ করতে চায় তাদের জন্য
অর্থাৎ যাদের অনিয়মিত মাসিক চক্র যাদের মাসিক পূর্ব উপসর্গ অনেক বেশি।
অন্যান্য মায়া বড়ি

গর্ভপাতের বড়িঃ গর্ভ অবস্থায় প্রাথমিকভাবে গর্ভপাত হতে পারে শুধুমাত্র ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এটা ব্যবহার করা উচিত নয়। অনেক বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে হতে পারে।

অন্যান্য ওষুধঃ কিছু পিল বা মায়া বড়ি রয়েছে যা হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে পোস্টেড ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে। এই ওষুধগুলো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়।

পিল খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে অনেক সমস্যা

 মায়া বড়ি বা পিল খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে বেশ কিছু কারণ রয়েছে তা হল,

গর্ভধারণঃ পিল বা মায়া বড়ি খাওয়ার পরেও গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেক সময় থাকে। যদি আপনি পিল বড়ি নিয়মিত না খান, মিস করে থাকেন। তাহলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি গ্রাম অঞ্চলে নারীদের। যেদিন স্বামী স্ত্রীর মেলামেশা করে সেই দিন শুধু বড়ি খায় কিন্তু একজন পুরুষের শুক্রাণু প্রায় ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে তাই প্রায় তিন দিন একটানা খেতে হবে কিন্তু তারা শুধুমাত্র একদিন খায় যার কারণে শুক্রাণু মৃত্যু হয় না বিধায় গর্ভধারণ করে ফেলে।

হরমোনের ভারসাম্যহীনতাঃ বড়ি খাওয়ার পর অনেক নারীর হরমোন ভারসাম্যতা হারিয়ে ফেলে, হরমোন বৃদ্ধি পায় যার কারণে পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে।

ওজন বৃদ্ধিঃ পিল বড়ি খাওয়ার ফলে তার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে, যার কারণে অনিয়মিত মাসিক হয়।
স্ট্রেসঃ পিল বড়ি খাওয়ার ফলে স্ট্রেস বৃদ্ধি পেয়ে যায় অনিয়মিত বা দেরিতে মাসিক এরপর প্রভাব ফেলে।

স্তন্যদানঃ যে মায়েরা শিশুকে দুধ পান করান তাদের পিল খেলে পিরিয়ড না হলে চিন্তা করবেন না। অনেকের এক বছর পর্যন্ত মাসিক হয় না। শিশু দুধ খাওয়ার কারণে এই সমস্যা হয়।

ঔষধঃ কিছু কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলো পিরিয়ড না হওয়ার পিছনে কারণ।
গর্ভাশয়ের সমস্যাঃ কিছু নারীর গর্ভাশয়ের সমস্যা থাকে যেটার কারণে পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে।

অকালীন মেনোপজঃ অনেকের ৪০ বছরের আগেই মেনোপজ হয় যা পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার কারণ হতে পারে।

এই সমস্যা হলে যা করা করণীয় হলো
গর্ভ পরীক্ষা করুনঃ আপনার এই বড়ি খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে, তাহলে প্রেগনেন্সি টেস্ট করুন।
চিকিৎসার সাথে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুনঃ যদি দেখেন গর্ভ ধারণা হয় নাই তাহলে একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।

পিল নিয়মিত খানঃ পিরিয়ড যদি নাও হয় তারপরও পিল নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করুনঃ বেশি ওজনের কারণে অনেক সময় মেন্স হতে সমস্যা হয়।
স্ট্রেস কমিয়ে নিয়ে আসুনঃ যদি আপনার মানসিক টেনশন বা স্ট্রেস থাকে, তাহলে সেটা কমাতে হবে। বিভিন্ন ব্যায়ামের মাধ্যমে বিভিন্ন ধ্যান বা প্রার্থনার মাধ্যমে।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেনঃ যদি আপনার তিন মাসের বেশি মাসিক না হয়। যদি দেখেন অতিরিক্ত রক্তপাত হচ্ছে পিরিয়ডের সময় তীব্র ব্যথা শুরু হয়েছে। এছাড়া পিরিয়ড সাথে অন্যান্য লক্ষণ যদি দেখা দেয় যেমন জ্বর আসা, বমি বমি ভাব হওয়া,মাথা ব্যাথা করা এ সকল সমস্যা দেখা দিল অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

পিল খাওয়া বন্ধ করলে কি হয়

হঠাৎ পিল খাওয়া বন্ধ করলে আপনার শরীরে কিছু পরিবর্তন হতে পারে। পরিবর্তনগুলো যদিও সাময়িক হতে পারে কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যাবে হয়ে যেতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা দেখা দেবে দিতে পারে। হঠাৎ করে পিল খাওয়া বন্ধ করলে কি হয়, নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

মাসিকের সমস্যাঃ অনিয়মিত মাসিক বা পিল বন্ধ করার পরও প্রথম কয়েক মাস আপনার হয়তো নিয়মিত হতে পারে।
অতিরিক্ত রক্ত হতে পারে বন্ধ হওয়ার পর মাসিকের অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে।
অনেক ব্যথা করতে পারে তলপেটে অনেক ব্যথা করতে পারে পিল বন্ধ করার ফলে।

মেজাজের পরিবর্তনঃ হঠাৎ করে যদি আপনি পিল খাওয়া বন্ধ করে দেন। তাহলে মেজাজ খিটখিটে হতে পারে, বিরক্ত লাগতে পারে খারাপ লাগতে পারে।

চুল পড়াঃ পিল বন্ধ করার ফলে অনেকের চুল পড়তে পারে।
ত্বকের সমস্যাঃ পিল বন্ধ করার ফলে ব্রণ বা ফুসকুড়ি করতে পারে করতে পারে।

ওজনের পরিবর্তনঃ পিল খাওয়া বন্ধ করে দিলে অনেক মহিলার ওজন বাড়তেও পারে আবার কমতেও পারে।
পিল বন্ধ করার পর দ্রুত গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকে তাই যদি আপনি গর্ভধারণের পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যবহার করা জরুরি হবে।

অন্যান্য যে সমস্যা গুলো হয় তার মধ্যে হল
  • পিল বড়ি খাওয়ার বন্ধ করার পরে অনেকের মাথাব্যথা শুরু হতে পারে।
  • পিল বন্ধ করার ফলে বমি বমি ভাব, বমি হতে পারে।
  • স্তনের সাইজ কিছুটা কমে যেতে পারে।
  • পিল বন্ধ করার আগে ও আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
  • পিল বন্ধ করার পর আপনার শরীরের পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করতে হবে,
  • যদি আপনার কোন সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

মায়া বড়ি কি কাজ করে

আপনি এত প্রশ্ন করতে পারেন যে মায়া বড়ি কি কাজ করে, আসলে মায়া বড়ি অনেকের শরীরে অনেক রকমের কাজ করে। এটা নির্ভর করে আপনার শরীরের ইমুনিটির উপর অথবা অনেক সময় ওষুধের উপরে নির্ভর করে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের এই জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি পাওয়া যায়। আপনার শরীরে যেটা সেটআপ করবে।

সেটা আপনাকেই প্রথমে একটা ভালো মানের টা কিনে খাওয়া শুরু করবেন। যদি দেখেন এটা তো আপনার বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে তাহলে সেটা বাদ দিয়ে আর একটা কিনবেন অথবা একজন চিকিৎসকের পরামর্শ খাওয়া শুরু করবেন।তাহলে আপনার শরীরের সাথে যেটা সেটাপ হয়ে যাবে সেটাই খেয়ে নিবেন।

আসলে মায়া বড়ি কি কাজ করে নিম্নে সে বিষয়ে বর্ণনা করা হলো,
খাবার বড়ি সঠিকভাবে গ্রহণ করলে প্রায় ৯৯.৯ শতাংশ কার্যকারী করে।
প্রজেস্টরেন নির্ভর মিনিপিল শতকরা ৯৭ থেকে ৯৮ ভাগ কার্যকারী প্রতিদিন একটি করে বিরত হীন করতে হয়।

মিনি পিল কার্যকারিতা অপেক্ষাকৃত কম সেজন্য এক বা একাধিক বড়ি খেতে ভুলে গেলে ৪৫ দিন বা তার বেশি সময় ধরে মাসিক বন্ধ থাকলে গ্রহিতাকে গর্ভধারণের ব্যাপারে পরীক্ষা করা উচিত। খাবার বড়ি কার্যকারিতা মূলত নির্ভর করে নিয়মিত এবং সঠিকভাবে গ্রহণ করার পর।

যদি কোন মহিলার পিল খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে তবে পরিবর্তিত অন্য কোন পদ্ধতি ব্যবহার না করে কিংবা কোন প্রতিরোধে মূলক ব্যবস্থা না নিয়ে সহবাস করলে গর্ভসঞ্চার হতে পারে। তাই মাসিক না হলে অবশ্যই পরীক্ষা করে নিতে হবে।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে অথবা বিভিন্ন ব্যক্তিগত কারণে অনেক মহিলা খাবার বড়ি খাওয়া বন্ধ রেখে দেন।জন্মনিয়ন্ত্রণের বিকল্প পদ্ধতির সম্পর্কে সচেতন করে রাখা ভালো।
এটা ডিম্বসফটনে বাধা দেয়

ডিমবাহু নালের স্বাভাবিক নড়াচড়া গতি কমিয়ে দেয় ফলে শুক্রকিটের গতিও কমে যায়। ডিমের কাছে পৌঁছাতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লেগে যায় এবং শুক্র-কিট গুলো দুর্বল হয়ে পড়ে মারা যায়।
জরায়ুর ভিতরে ঝিল্লির বৃদ্ধি রোধ করে ফলে নিষিদ্ধ ডিম্বানো জরায়ুতে গ্রথিত হওয়ার মত কোন পরিবেশ পায় না এবং গ্রথিত হতে পারে না।

মায়া বড়ি বা পিল কেন খায়

মহিলারা পিল কেন খায় তা হল, পিল সাধারণত খেয়ে থাকে জন্মনিয়ন্ত্রণ করার জন্য তবে আরো কিছু এর সুবিধা রয়েছে নিম্নে আলোচনা করা হলো,

সন্তান ধারণ অক্ষম সকল বয়সে মহিলা জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে খাবার বড়ি ব্যবহার করতে পারেন।
এটি একটি অস্থায়ী পদ্ধতি যেকোনো সময় বড়ি ছেড়ে দিয়ে অন্য পদ্ধতি গ্রহণ করা যায় অথবা গর্ভধারণ করা যায়। যার কারণে এই পদ্ধতিটাই বেছে নিয়েছে অধিকাংশ নারী।

সঠিকভাবে বড়ি খেলে এটি অত্যন্ত কার্যকারী ৯৭ থেকে৯৯.৯ভাগ পর্যন্ত কার্যকারী যার কারণেই নারীরা এটা পছন্দ করে।

মাসিক চক্রকে নিয়মিত করে পিল বড়ি খেলে বা খাবার বড়ি খেলে মাসিক হতে থাকে কিন্তু অন্যান্য ব্যবস্থা নিলে অনেক সময় মাসিক নিয়মিত হয় না।

মাসিক সময়কাল ও পরিমান কমায় এবং রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে এর সাথে কিছু লাল বড়ি রয়েছে যেটা খেলে রক্ত বৃদ্ধি পায়।

সহজে পাওয়া যায় এবং এর ব্যবহার বিধিও সহজ যা বাড়ির পাশে কমিউনিটি ক্লিনিক অথবা পরিবার পরিকল্পনা সহকারীদের মাধ্যমে এটা পাওয়া যেতে পারে।

মাসিকের সময় জরায়ুর মচড়ানো, ব্যথা কমায় এন্ডোমেটিওসিস নামক ব্যাধির প্রভাব কমায় এবং এটা 
চিকিৎসার ব্যবহার করা হয়।
স্তনের ফাইব্রোসিস্টিক ব্যাধির সম্ভাবনা কমায়।
ডিম্বাশয়ের সিস্ট ও ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়

যারা এর বাইরে গর্ভধারণের ঝুঁকি কমায়।
জরায়ুর ভেতরের আবরণ বা ঝিল্লির ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
একটানা ব্যবহার করা যায়।

পরবর্তীতে বাচ্চা নিতে চাইলে খাবার বড়ি বন্ধ করার কিছুদিন পরেই সাধারণত গর্ভধারণ হয়ে যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটাই হয়।
মাসিক পূর্ববর্তী উপসর্গ যেমন শরীরের ব্যথা ম্যাচ ম্যাচ ভাব মাথা ব্যথা মন খারাপ হওয়া শরীরে পানির আধিক্য ইত্যাদি কমিয়ে নিয়ে আসে

উপরোক্ত আলোচনা থেকে বলা যেতে পারে যে নিয়মিতভাবে কেউ পিল খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে অবশ্যই শরীরে কোন সমস্যা হয়েছে না হলে সে বাচ্চা কনসেপ্ট করেছে। তাই অতি দ্রুত প্রেগনেন্সি টেস্ট করে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

পিল বা খাবার বড়ি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

প্রতিটা ওষুধের এ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তারপরেও পার্শ্বপ্রতিয়া এর চাইতে যদি উপকার বেশি হয়। তাহলে সেটা খাওয়া যেতে পারে তাই পিল বা খাবার বড়ির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
  • প্রতিদিন খেতে হয় এটা একটি ঝামেলা মনে হয় অনেক সময় ভুলে যায়।যার কারণে গর্ভধারণ করে
  • মাসিক স্রাব অনেক সময় বন্ধ হয়
  • যোনিপথের পিচ্ছিলতা কম হতে পারে
  • বুকের দুধ কম হতে পারে
  • বিমর্ষতা দেখা দিতে পারে।
  • জন্মনিয়ন্ত্রণের খাবার বড়ি ব্যবহারের প্রথম দিকে বিশেষত তিন থেকে চার মাসের মধ্যে ছোটখাটো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে যেমন
  • স্তন স্পর্শ কালে ব্যথার অনুভূতি হতে পারে বেদনা হতে পারে।
  • দুই মাসিকের মধ্যবর্তী সময় ফোটা ফোটা রক্তচাপ হতে পারে।
  • বমি বমি ভাব, মাথা ধরা, মুখে ব্রণ হওয়া, ওজন বৃদ্ধি পায় ইত্যাদি সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে।
  • যে সমস্ত মহিলার মায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশন আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বিদ্যমান থাকে খাবার পিল তাদের জন্য আরো ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • যে সমস্ত মহিলার স্ট্রোক হয়েছে তারা যেমন ধূমপান তামাক পাতা গ্রহণ, উচ্চ রক্তচাপ তাদের খাবারগুলি ব্যবহার তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকে বাড়িয়ে তোলে।
  • শিরার রক্ত জমাট বেধে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তাই অতীতে বা বর্তমানে যাদের এই সমস্যা হয়েছে তারা অ্যাস্ট্রোজেন সমৃদ্ধ বড়ি খেতে পারবেন না।
  • প্রসবের ছয় মাসের মধ্যে যদি শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ পান করান তাদের ক্ষেত্রে এই বড়ি ক্ষতি করবে। সে ক্ষেত্রে আপন বড়ি খাওয়ানো যেতে পারে তাহলে বাচ্চা দুধ পাবে সমস্যা হবে না।
  • প্রসবের চার সপ্তাহের মধ্যে যদি শিশুকে বুকের দুধ পান না করান সে ক্ষেত্রে ক্ষতি হতে পারে।
  • ধূমপায়ী মহিলা যাদের বয়স ৩৫ বছরও উর্ধ্বে ধূমপান বলতে বুঝায় সিগারেট বিড়ি ও তামাক সেবন জাতীয় দ্রব্যাদি যেমন তামাক পাতা, গুল, জর্দা ইত্যাদি এদের জন্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ক্ষতি করতে।
  • হৃদ যন্ত্র ও রক্ত সংবহন নারীর রোগ ব্যাধির একাধিক ঝুঁকি বিদ্যমান রয়েছে যেমন বেশি বয়স ধূমপান তামাক পাতা, জর্দা সেবন,ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ রক্তে উৎস মাত্রা চর্বি থাকে এদের জন্য এই বড়ি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে।
  • স্ট্রোক ব্যাধি পূর্বে কোন সময় স্ট্রোক হয়ে থাকলে।
  • দীর্ঘদিনের জন্য হাঁটাচলা বন্ধ থাকবে এমন কোন পরিস্থিতিতে এই ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে
  • মাইগ্রেনের পূর্বাভাস ছাড়া এবং যেকোনো বয়সে হলে তাদের এই ওষুধের পার্শ্ববর্তী হবে
  • অত্যাধিক বা দীর্ঘায়িত রক্তস্রাব নিয়মিত অথবা নিয়মিতভাবে তাদের জন্য ওষুধ ক্ষতিকর।
  • অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে তাদের এই ওষুধ ক্ষতি করবে পিত্তথলির রোগ রয়েছে তারা ওষুধ সেবন করলে।
  • যক্ষার ওষুধ সেবন করেন এবং খিচুনির ওষুধ ব্যবহার কালীন সময়ে এছাড়া।
  • কিডনি ফেইলের, লিভারের সমস্যা ইত্যাদি রোগীগুলো এভাবে ওষুধ খাওয়া যাবে না।
উপরোক্ত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো দেখা দিতে পারে আবার পিরিয়ড না হলে অনেক সমস্যা হতে পারে। তাই সব সমস্যা সমাধানের জন্য একজন পরামর্শ নিন

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায় যে পিল এটা সহজ পদ্ধতি এবং ভালো একটি পদ্ধতি যেটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকলেও এতে নিয়মিত মাসিক হয় শরীরে তেমন ক্ষতি হয় না। আবার যদি কারো পিল খাওয়ার পর পিরিয়ড না হলে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হবে। আমার পোস্টটি পড়ে যদি একটু উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে পোস্টটি আপনার বন্ধু-বান্ধব এর মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪