বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত, জেনে নিন
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত তা হল, প্রথমত আগে শিশুর অবস্থা দেখতে হবে। যদি গুরুতর অবস্থা হয় তাহলে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে। চলুন, বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করতে হবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
তাই তাড়াতাড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। তবে প্রথমত শিশুকে অক্সিজেনের জন্য নেবুলাইজার মাধ্যমে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। তাই বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত, সম্পর্কে জানতে পোষ্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃবাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত, জেনে নিন
ছোট বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট
ছোট বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট সাধারণত বেশি হয়ে থাকে, কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ার কারণে অতি দ্রুত গতিতে জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি -কাশি হয়ে থাকে। একপর্যায়ে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং যেটা বিপদজনক, তাই বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত নিম্নে দেওয়া হল,
আপনার শিশুটি যদি ৫০ থেকে ৬০ বারের বেশি শ্বাস -প্রশ্বাস নিতে থাকে। তাহলে মনে করবেন শিশুর বিপদজনক শ্বাসকষ্ট হয়েছে। এই শ্বাসকষ্ট নিউমোনিয়ার লক্ষণ।
- শিশু যদি শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার সময় ফেপিয়ে শব্দ করে শ্বাস নিতে থাকে, তাহলে মনে করবেন বাচ্চা শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে
- শিশুটি শ্বাস নেওয়ার সময় তার বুকের পাঁজর গুলো মনে হচ্ছে ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে তাহলে মনে করবেন শ্বাসকষ্ট রয়েছে
- শিশুটি শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় নাকের ছিদ্রগুলো বড় করে প্রসারিত করতে পারে
- শিশুর ঠোট ও নখ নীল হয়ে গেলে মনে করবেন শ্বাসকষ্ট রয়েছে
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট বোঝার উপায়
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট বোঝার উপায় ও কিছু চিহ্ন রয়েছে , একজন মা সাধারণত বাচ্চার শ্বাসকষ্ট টা নির্ণয় করতে পারে ভালোভাবে। তাই একজন মায়ের খেয়াল রাখতে হবে যে বাচ্চার ঠান্ডা বা কাশি হওয়ার কারণে যদি শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, তাহলে খেয়াল রাখতে হবে বুকের নিচে অংশ ভিতরে দেবে যাচ্ছে কিনা। কারণ এটা একটি নিউমোনিয়া লক্ষণ যা বাচ্চার বিপদ সংকেত।
প্রথমে আপনি লক্ষ্য করুন বুকের নিচের অংশ ভিতরে দেবে যাচ্ছে কিনা। যাচাই করার সময় বুক দেবে যাওয়া, শিশুর বুকের নিচের অংশ পুরোপুরি অনাবৃতকরণ যদি কাপড় পরানো থাকে তাহলে সেটা তুলে
দেখুন শ্বাস নেওয়ার সময় যদি বুকের নিচের অংশ ভেতরের দিকে দেবে যায়। তাহলে বুক দেবে যাওয়া লক্ষণটি আছে, স্বাভাবিক অবস্থায় শিশুর শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের নিচে অংশ বাহিরের দিকে বের হয়ে আসে।
পরীক্ষা কালীন সময়েই বুকের নিচের অংশ ভিতরে দেবে যাওয়া থাকলে লক্ষণটি আছে মনে করতে হবে। যদি শুধুমাত্র শিশুর খাওয়া বা কান্না অথবা অস্থির অবস্থায় থাকে বা বুক দেবে যাওয়া যদি এক অবস্থানে থাকে এবং অন্য অবস্থায় না থাকে তাহলে দেবে যাওয়া লক্ষণটি নেই বলে ধরতে হবে।
আপনি যদি নিশ্চিত না হন যে আসলে বুক দেবে যা মনে হচ্ছে না তাহলে দেবে যাওয়া নাই বলে নিশ্চিত করুন। তাহলে বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে থাকুন এবং বাচ্চার যত্ন নিতে থাকুন। কাশি অথবা শ্বাসকষ্ট আক্রান্ত শিশুর বুক দেবে যা একটি বিপদ ছিল।
শান্ত অবস্থায় বুক দেবে যাওয়া অর্থ হচ্ছে শিশুটি মারাত্মক নিউমোনীয়ায় আক্রান্ত এবং তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। কারণ তার বিশেষ চিকিৎসা নিতে হবে, যেমন অক্সিজেন এবং অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে সে নিউমোনিয়া থেকে আরোগ্য লাভ করবে।
শ্বাসের হার গণনা করতে থাকুন
পুরো এক মিনিট শ্বাসের হার গণনা করুন যদি আপনার কাছে ঘড়ি থাকে তাহলে সবচাইতে সুবিধা হয়। শিশু যখন শান্ত থাকে শুধুমাত্র তখনই শ্বাস গণনা করতে হবে। শিশু যদি কাঁদে অস্থির অবস্থায় থাকে তাহলে সেই ক্ষেত্রে সঠিক শ্বাস গণনা হবে না। শিশু কাঁদলে শ্বাসের হার বেড়ে যেতে পারে তাই যখন শিশু শান্ত থাকে তখনই শ্বাস গণনা করতে হবে।
শ্বাসের হার এক মিনিট গণনার জন্য
সেকেন্ডের কাঁটাযুক্ত একটি ঘড়ি বা শব্দযুক্ত টাইমার ব্যবহার করুন
ঘড়িটি এমন জায়গায় রাখুন যেখান থেকে আপনি সেকেন্ডের কাঁটা স্পষ্ট দেখতে পারেন
আপনার শিশুর যে নিউমোনিয়া আছে কিনা তা নির্ণয় করার জন্য আপনি শ্বাস গণনা করতে থাকুন
শ্বাস গণনার সময় শিশুর বুক বা পেটের যে কোন এক জায়গায় ওঠানামা লক্ষ্য করুন, শ্বাস গণনার পুরো সময়টাই ওই নির্দিষ্ট জায়গায় লক্ষ্য রাখুন
এক মিনিট শ্বাস নেওয়ার পর শিশুর শ্বাস স্বাভাবিক বা দ্রুত তা নির্ণয় করুন
- শিশুর বয়স যদি ২ মাস থেকে ১২ মাস পর্যন্ত হয়, শিশুর দ্রুত শ্বাস যদি প্রতি মিনিটে ৫০ বা তার বেশি হয, তাহলে ধরে নিন শিশুর শ্বাসকষ্ট রয়েছে
- ১২ মাস থেকে ৫ বছর পর্যন্ত প্রতি মিনিটের শ্বাস ৪০ বা তার বেশি যদি হয়
কাশি অথবা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত একটি শিশু যদি বুক দেবে যাওয়া থাকে, তাহলে শিশুটি মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। যদি শিশুটির কাশি অথবা শ্বাসকষ্ট এবং বুক দেবে যাওয়া থাকে,তাহলে চিকিৎসার জন্য তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
কাশি অথবা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত একটি শিশুর বুক দেবে যাওয়া যদি না থাকে কিন্তু বয়স অনুযায়ী শান্ত
অবস্থায় দ্রুত শ্বাস থাকে তাহলে শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এই শিশুকে বাড়িতে কোট্রাইমোক্সাজল বড়ি খাওয়াতে থাকুন। বাড়িতে যত্ন নিতে থাকুন আর এই ওষুধটি সংগ্রহ করুন আপনার বাড়ির পাশে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে অথবা কোন সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকেও ওষুধটা পেয়ে যাবেন।
কাশি অথবা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত একটি শিশুর বুক দেবে যাওয়া এবং বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস না থাকে তবে সেটার নিউমোনিয়া নয়। শিশুটি কাশি অথবা সর্দিতে আক্রান্ত।
শিশুর স্বাভাবিক শ্বাস
বয়স অনুযায়ী শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস ভিন্ন হয়ে থাকে নিম্নে দেওয়া হলো
- ০ থেকে ২ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুর স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস হল-৩০ থেকে ৬০ প্রতি মিনিটে
- ২ মাস থেকে ১২ মাস পর্যন্ত শিশুর স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস হল ২৪ থেকে ৩০ প্রতি মিনিটে
- ১২ মাস থেকে ৫ বছর শিশুর শ্বাস প্রশ্বাস হলো ২০ থেকে ২৪ প্রতি মিনিটে
- ৫ বছর থেকে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু স্বাভাবিক শাস হল ১৮ থেকে ২০ প্রতি মিনিটে
তবে শিশুর শ্বাসকষ্ট আছে কিনা সেটা নির্ণয় করার জন্য কিছু শ্রেণীবিভাগ করা যেতে পারে তা হল
শিশুর যদি কাশি থাকে এবং বুকের নিচের অংশ দেবে যায় তাহলে মনে করতে হবে নিউমোনিয়ার লক্ষণ বা মারাত্মক নিউমোনিয়া হয়েছে।
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত হলো শিশুটিকে অবশ্যই জরুরী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যেতে হবে।
এক মিনিট শ্বাস গণনা করুন, এক মিনিট শ্বাস গণনা করার পর যদি দেখেন প্রতি মিনিটে ২ মাস থেকে ১২ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের শ্বাস ৫০ এর বেশি হয় এবং ১২ মাস থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের শ্বাস প্রতি মিনিটে ৪০ বা তার বেশি হয়, তাহলে সেটা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হিসেবে ধরে নিতে হবে। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
আর যদি দেখেন বুক দেবে যাওয়া নেই এবং বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস নেই তাহলে সেটা সর্দি কাশি হিসেবে ধরে নিন, বাড়িতে যত্ন নিতে থাকুন, বাচ্চাকে উষ্ণতার ভিতরে রাখুন এবং তার স্বাভাবিক সেবা যত্ন করুন তাহলে বাচ্চা সুস্থ হয়ে যাবে।
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট কেন হয়
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হওয়ার জন্য অনেক কারণ রয়েছে তার মধ্যে কিছু কারণ গুলো আলোচনা করা হলো
ফুসফুসের সংক্রমণঃ যা জ্বর ঠান্ডা কাশি শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে, যাকে নিউমোনিয়া বলা হয়ে থাকে, সেই ক্ষেত্রে বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে অদ্রি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ব্রঙ্কিলাইটিসঃ ফুসফুসের ছোট ছোট যে শ্বাসনালী রয়েছে সেগুলো সংক্রমিত হয়, যার কারণে কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং ভিতরে বাশির মত শব্দ করতে থাকে।
এজমাঃ শ্বাসনালীতে ব্যথা করে বা প্রদাহ সৃষ্টি করে যার কারণে কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং বুকে ব্যথা করতে থাকে
এছাড়া আরো অন্যান্য কারণ রয়েছে
এলার্জি সমস্যাঃ ধুলোবালি, পোষা প্রাণীর লোম বা খাবারের কারণে অনেক সময় এলার্জি হতে পারে যার জন্য শ্বাসকষ্ট হয়
কিছু এলার্জি রয়েছে যেটার কারণে শ্বাসনালী ফুলে যায় এবং রক্তচাপ কমে যায়
অনেক সময় শ্বাসনালীর সংকীর্ণতা হয়ে যায় কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় বুকে ব্যথা এবং কাশি হতে থাকে
কিছু বস্তুকণা রয়েছে যেগুলো গিলে ফেললেও সমস্যা হয় যেমন খেললা খাবার বা অন্য কোন বস্তু শ্বাসনালীতে আটকে গেলেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে
হৃদপিন্ডের সমস্যাঃ অনেক সময় হৃদপিণ্ড কাজ করে না যার কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে
বাচ্চাদের নিউমোনিয়া কেন হয়
বাচ্চাদের নিউমোনিয়া কেন হয় নিম্নে বর্ণনা করা হলো যেমন
- ব্যাকটেরিয়ার কারণে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জ হতে পারে
- ভাইরাস যা রেস্পিরাটরি রাইনোভাইরাস, এডিনোভাইরাস
- কিছু ছত্রাকের কারণেও হতে পারে
- শ্বাসতন্ত্রে জীবাণু প্রবেশ করে
- হাচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ানো জীবাণু শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ভিতর প্রবেশ করে
জন্মের সময় বা জন্মের পরে অনেক সময় বিভিন্ন জীবাণু সংক্রমণের কারণে ফুসে ফুসে ছড়িয়ে পড়ে
খাবার বা পানি গিলতে গিয়ে প্রবেশ করতে পারে
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে ঘরোয়া চিকিৎসা
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে যদি বিপদজনক না হয় তাহলে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে সেবা করলে বাচ্চা সুস্থ হতে পারে
- বুকের দুধ ছোট বাচ্চাদের জন্য বা নবজাতকের জন্য একমাত্র বুকের দুধ শ্বাসকষ্ট নিরাময় করতে সাহায্য করে। তাই শ্বাসকষ্ট শুরু হলে বাচ্চাকে ঘন ঘন দুধ খাওয়াতে হবে
- বুকের দুধ বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শ্বাসকষ্ট সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে
- বাষ্প গরম পানির ভাবটা যদি শ্বাস নেওয়া যায় তাহলে কিছুটা শ্বাসকষ্ট কমে আসে
- এছাড়াও বাষ্প আকারে নেওয়ার জন্য নেবুলাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে
- বাড়িতে গরম পানির মাধ্যমে বাষ্প তৈরি করে শিশুকে শ্বাস নেওয়া যেতে পারে
- শিশুকে প্রচুর পরিমাণে, তরল জাতীয় খাবার এবং তরল পানি খাওয়াতে হবে
- এছাড়াও ফলের রস, জুস জাতীয় খাবার গুলো খাওয়ালে হালকা শ্বাসনালির শ্বাসকষ্ট টা পাতলা হতে সাহায্য করে
- শিশুর মাথার নিচে বালিশ একটু উঁচু করে দিলে মাথাটা উঁচু করে শোয়া দিলে তাহলে শ্বাসকষ্ট টা কম হবে এবং বাচ্চার শ্বাস নিতে সুবিধা হবে
- পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখতে হবে যেন ধুলাবালি, ধোয়া, ছাড়াও কয়েলের ধোঁয়া বা রাসানিক দ্রব্য ইত্যাদি এছাড়া ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে শ্বাসকষ্ট কম হবে
- পোশাকের ক্ষেত্রে শিশুকে উষ্ণ গরম পোশাক পরিধান করাতে হবে আবার গরমের দিনে অতিরিক্ত পোশাকও পড়ানো যাবে না, যদি ঘেমে যায় শিশু তাহলে আরও বেশি ঠান্ডা লাগতে পারে
- শিশুর শ্বাসকষ্টের অবস্থা সব সময় তদারকি করতে হবে
- যদি শ্বাসকষ্টের অবস্থা বেশি তাহলে দ্রুতগতিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে
- শিশুকে এলার্জি জাতীয় খাবার খাওয়ানো যাবে না
- শিশুকে শিশুর সামনে ধূমপান না করাই ভালো কেননা তার এই ধূয়াতে শ্বাসকষ্ট আরো বৃদ্ধি পাবে
- শিশুর নাক সার্বক্ষণিক পরিষ্কার রাখতে হবে যাতে সে শ্বাস নিতে পারে
তবে মনে রাখতে হবে শিশুর শ্বাসকষ্ট স্বাভাবিকভাবে নেওয়া যাবে না, এটা যদি দ্রুত বৃদ্ধি পায় তাহলে
অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত
বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট গণনা করে যদি দেখা গেল যে সাধারণ শ্বাসকষ্ট যেটা নিউমোনিয়ার লক্ষণ নয় সর্দি-কাশির কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তাহলে সে ক্ষেত্রে বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত তা আলোচনা করা হলো,
- যে শিশুটির কাশি অথবা শ্বাসকষ্ট আছে কিন্তু বয়সের ক্ষেত্রে বুক দেবে যায় নাই তাহলে তার নিউমোনিয়া নেই, এ সকল শিশুকে বাড়িতে যত্ন নিলে শিশুর সুস্থ হয়ে যাবে
- অসুস্থ অবস্থায় শিশুর স্বাভাবিক খাবার চালু রাখতে হবে, আর স্বাভাবিক খাবার চালু রাখবেন। শিশু যদি বুকের দুধ খায় তবে অসুস্থ অবস্থায় শিশুকে আরও বেশি ঘন ঘন দুধ খাওয়াতে হবে
- বাড়িতে যে সকল তরল জাতীয় খাবার আছে শিশু যে পরিমাণ খেতে পারে খেতে দিবেন। কাশি উপশম এই তরল জাতীয় খাবারটা অনেকটা কাজ করবে
- কাশি উপশমের জন্য শিশুকে হালকা গরম চিনি পানি, আদা লেবুর শরবত, তুলসী পাতার রস চা ইত্যাদি দিতে পারেন
- অসুস্থ শিশির নাক বন্ধ থাকলে খাবার খেতে কষ্ট হয় তাই পরিষ্কার শুকনো নরম কাপড় দিয়ে নাক পরিষ্কার করবেন
- বাচ্চাদেরকে শান্ত রাখার চেষ্টা করবেন
- তাদের বসার স্থানটা শুষ্ক যেন হয়
- ঘরের জানালা খুলে দিন যেন আলো বাতাস আসতে পারে
- শিশুদের সবসময় গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে দিবেন
- বেশি বেশি পানি খাওয়াবেন
- শিশুদেরকে নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করানো উচিত
পাঁচ দিনের মধ্যে কাশি না কমলে পুনরায় শিশুকে পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন অথবা কোন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন
নিচের বিষয়গুলো যদি বাচ্চার ভিতরে দেখতে পান তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের হাসপাতালে নিয়ে যান
- শিশু কোন কিছু পান করতে পারে কিনা খেয়াল করুন
- শিশুর অবস্থা অবনতি হচ্ছে কিনা
- দ্রুত শ্বাস নিচ্ছে কিনা খেয়াল করুন
- বুকের নিচের অংশ দেবে যাচ্ছে কিনা খেয়াল করুন
শিশুর নিউমোনিয়ার চিকিৎসা
শিশুর নিউমোনিয়ার চিকিৎসা হলো শ্বাস প্রশ্বাসের হার নির্ণয় করার পর যদি দেখেন তার নিউমোনিয়া হয়েছে তাহলে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা নিতে পারেন
যে শিশুটির কাশি অথবা শ্বাসকষ্ট আছে এবং বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাসও আছে কিন্তু বুকের নিচের অংশ দেবে যাওয়া নেই তার নিউমোনিয়া হয়েছে এই শিশুটির চিকিৎসার জন্য কোট্রাইমোক্সাজল বড়ি
দরকার। বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত, তাহলো কোট্রাইমোক্সাজল বড়ি ছোট শিশুদের জন্য এবং প্রতিদিন সকালে এবং রাতে দুবার মোট পাঁচ দিন শিশুটিকে কোট্রাইমোক্সাজল বড়ি খাওয়াতে হবে।
খাওয়ানোর নিয়ম নিচে দেওয়া হল
- ২ মাসের বেশি থেকে ১২ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদেরকে কোট্রাইমোক্সাজল ট্যাবলেট ২টি দিনে ২বার
- ১২ মাসের বেশি থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য শিশুদের জন্য ৩ টি ট্যাবলেট দিনে দুইবার খাওয়াতে হবে
অথবা আপনার নিকটস্থ যদি কোন কমিউনিটি ক্লিনিক থাকে সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মীর থেকে ওষুধের ডোজটা জেনে নিবেন অথবা কোন চিকিৎসকের থেকে পরামর্শ নিন
মাঝেমধ্যে আপনার কাছে শিশুদের জন্য পেডিয়াটিক কোট্রাইমোক্সাজল ট্যাবলেট নাও থাকতে পারে কিন্তু যদি আপনার বাড়ির পাশে কমিউনিটি ক্লিনিক থাকে সেখানে অবশ্যই এই শিশুদের ট্যাবলেট টা পাওয়া যায়। যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেখান থেকে নিয়ে রাখবেন
তবে এই ওষুধটি খাওয়ার নিয়মটা আপনাকে জানতে হবে, কতটুকু খাওয়াতে হবে কিভাবে খাওয়াতে হবে, কখন খাওয়াতে হবে। কতদিন ধরে খাওয়াতে হবে, এই নিয়ম কানুন গুলো অবশ্যই জানতে হবে। একটা শিশুর ট্যাবলেট খেতে চায় না তারা সাধারণত সিরাপ জাতীয় ওষুধটা খেতেই পছন্দ করে তাই এই
ট্যাবলেটটা কিভাবে খাওয়ানো যায় সেটা আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে।
ট্যাবলেটটি গুড়ো করে পাউডার বানিয়ে শিশুদের খাওয়ানো যায়, তারপরেও গুড়ো করে অল্প করে
মায়ের বুকের দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে অথবা পরিষ্কার খাওয়ার পানি, পায়েশ, কলা অথবা অন্য কোন যে খাবারটি শিশু খায় সে খাবারের সাথে মিশিও খাওয়ানো যেতে পারে। অনেক
উপকার পাবেন এবং নিউমোনিয়া হলে এই ওষুধটা দিয়ে সেরে উঠবে।
তবে শিশুটি যদি ওষুধটি খাওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে বমি করে ফেলে দেয়, তাহলে আবার শিশুকে পুনরায় ওষুধ খাওয়াতে হবে।
ওষুধ মিশানো সব নিয়মকানুন আপনাকে জানতে হবে
যেমন আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসা এই ট্যাবলেটের মাধ্যমে চিকিৎসা হলো পাঁচ দিন
দুইদিন পর শিশুকে আপনাকে খেয়াল করতে হবে অথবা কোন স্বাস্থ্যকর্মের কাছে নিয়ে যেতে হবে
শ্বাসকষ্টের অবস্থা অবস্থার উন্নতি হলে আরো পুরো পাঁচ দিন ওষুধটা খাওয়াতে হবে, সুস্থ হলেও পাঁচ দিন খাওয়াতে হবে।
শ্বাসকষ্টের অবস্থার উন্নতি যদি না হয় শিশুর অবস্থা উন্নতি না হলে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে
আমাদের শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় যে একটি শিশুর জন্মের পর সবচাইতে বিপদজনক সমস্যা হলো শিশুর শ্বাসকষ্ট। তাই বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট হলে কি করা উচিত, তাহলো শিশুকে কোনক্রমেই সর্দি ঠান্ডা কাশি এগুলো যেন না হয়। তাই আশ করি আপনি আজকে আমার এই পোস্ট থেকে নিউমোনিয়া সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণাগুলো জানতে পেরেছেন। যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে পোস্টটি আপনার বন্ধু বান্ধবের মাঝে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url