গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয় ও যে ফল খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে একজন গর্ভবতীর জানা খুবই প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবার নিরাপদ ও কোন খাবার ক্ষতিকর তা জানতে হবে। চলুন, গর্ভাবস্থায় টক খাওয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
গর্ভাবস্থায় অনেক কিছুই খেতে মন চায় তাই কিছু খাবার খেলে বাচ্চার ক্ষতি হবে, তাই যে খাবারগুলো খেলে বাচ্চা সুস্থ থাকবে, বাচ্চা প্রতিবন্ধী হবে না, বাচ্চার ওজন বাড়বে, সেই সকল খাবার সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃগর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয় ও যে ফল খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার ব্যাপারে অনেক মতামত রয়েছে। গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার জন্য যে সকল বিষয় সমস্যা হতে পারে সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।

এক গবেষণায় তেঁতুল নিয়ে যে উপকার এর কথা বলা হয়েছে। তেতুলের যে উপকার রয়েছে সেই বিষয়ে আলোচনা করা হলো

গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে উপকার রয়েছে, তবে পরিমাণমতো খেতে হবে। কেননা তেতুলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি,যা অনেক সময় এসিড হতে পারে। তবে ভিটামিন সি গর্ভবতীর জন্য অনেক উপকার।
তেঁতুল খেলে হজম শক্তির কাজ করে  এবং যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তারা তেঁতুল খেতে পারেন এতে উপকার পাবেন।

তেতুলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণে তেতুল পরিমাণ মতো খেতে পারবে।
অন্য গবেষণায় বলা হয়েছে তেতুল অতিরিক্ত খেলে ক্ষতি রয়েছে। কি ক্ষতি হয় সেটা আলোচনা করা হল
তেতুলের মধ্যে রয়েছে অক্সলেট এসিড যা গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকর।

তেতুল টক জাতীয় খাবার হওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের পেটের সমস্যা হতে পারে বা পাতলা পায়খানা ডায়রিয়া হতে পারে তবে তেতুল পরিমাণ মত খাওয়া যেতে পারে যদি গর্ভবতীর কোন সমস্যা না হয়। 

গর্ভবতীর জন্য যদি অক্সলেটে এসিড এর সমস্যা না থাকে তাহলে পরিমাণ মতো তেঁতুল খেতে পারবে। যদি পেটের সমস্যা না হয় তাহলে তেতুল খাওয়া যেতে পারে।

তেতুলের বীজ ফেলে খাবেন
তেতুলের শরবত খেতে পারেন
তেতুলের সাথে হালকা চিনি বা মিষ্টি জাতীয়, যদি ডায়াবেটিস না থাকে মিশিয়ে খেতে পারেন

গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়

নিম্নে গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয় তা দেওয়া হল,

পেট ফেপে যাওয়াঃ গর্ভাবস্থায় টক বেশি খেলে পেট ফেপে যেতে পারে, তাই অতিরিক্ত টক খাওয়া যাবেনা।

হজম সমস্যাঃ গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় টক জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ার ফলে হজম শক্তিতে বাধা দিতে পারে। তাই বেশি টক খাওয়া যাবেনা।

দাঁতের ক্ষয়ঃ টক খাবার সাধারণত দাঁতের ইনাল ক্ষয় করে।গর্ভবতী মায়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত টক খাওয়ার ফলে খাওয়ার ফলে দাঁতের ক্ষয় হতে পারে।

অ্যাসিড রিফ্লাক্সঃ টক খাবার গুলোতে সাধারণত এসিড থাকে। গর্ভবতী মায়েদের এমনিতেই গর্ব অবস্থায় পেটে এসিড বেশি থাকে। যদি আরো বেশি টক খায় তাহলে এসিড রিফ্লাক্স হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

ডায়াবেটিস বাড়েঃ একজন গর্ভবতী মায়ের সাধারণত ডায়াবেটিস এমনি বেশি থাকে। তবে জাতীয় খাবার সাধারণত হালকা মিষ্টি থাকে, গর্ভবতী মায়েরা বুঝতে পারে না যে আমার ডায়াবেটিস রয়েছে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস বেশি থাকার কারণে এবং টক মিষ্টি খাওয়ার কারণে আরো ডায়াবেটিস বেড়ে যায় যেটা তার বাচ্চার ক্ষতি করবে।

অপর্যাপ্ত পুষ্টিঃ টক জাতীয় খাবারগুলোতে পুষ্টি কম থাকে কিন্তু গর্ব অবস্থায় গর্ভবতী মার পুষ্টির দরকার বেশি তার শিশুর গর্ভাব শিশুর জন্য। যদি অতিরিক্ত টক খায় তাহলে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে।

খাবারের প্রতি অনীহাঃ অতিরিক্ত টক খেলে সাধারণত পেট ফাঁপা দেয়ার কারণে খাবার প্রতি অনিহা চলে আসে এবং মুখ টক থাকার কারণে অন্য খাবার খেতে ভালো লাগে না।

অস্বস্তিঃ অতিরিক্ত টক খেলে সাধারণত পেট খারাপ হতে পারে, পেট ফুলে থাকতে পারে,ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, হতে পারে।

অতিরিক্ত টক না খেয়ে স্বাভাবিক মত খেলে গর্ব অবস্থায় টক খাওয়ার উপকার রয়েছে ।কেননা এর মধ্যে ভিটামিন সি রয়েছে। তবে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়।
টক জাতীয় খাবারের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা রয়েছে তা হল
  • টক জাতীয় খাবার খাওয়ার পর বেশি পানি খেতে হবে
  • টক জাতীয় খাবার পর ভালো করে ব্রাশ করতে হবে, কারণ দাঁত অনেক সময় টক হয়ে থাকে
  • টক খাওয়ার পরিবর্তে যে খাবারগুলোতে ভিটামিন সি রয়েছে সে সকল শাকসবজি বেশি বেশি খাবেন
উপরোক্ত আলোচনা থেকে হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে, গর্ভাবস্থায় পরিমাণ মতো টক খেলে উপকারও রয়েছে আবার বেশি খেলেও ক্ষতি হতে পারে এবং বড় ধরনের রোগ থাকলে না খাওয়াই ভালো।

গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে নিম্ন গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় তা আলোচনা করা হলো,

হজম সমস্যাঃ গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে হজম সমস্যা হতে পারে কারণ গর্ভবতী মায়ের হরমোন পরিবর্তনের ফলে হজম সমস্যা ধীরগতি হয়। বিধায় বেশি ঝাল খেলে পেট ফুলে থাকা, পেটফাপা,পেট খারাপ হওয়া,ডায়রিয়া হতে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার ফলে হজম সমস্যা হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ সমস্যাঃ গর্ভাবস্থায় সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ অনেকের হতে পারে।যদিও পূর্বে কোন উচ্চ রক্তচাপ না থাকলেও গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য যে খাবারগুলো বেশি ক্ষতি করে। সেগুলোর মধ্যে হল লবণ বেশি খাওয়া,ঝাল বেশি খাওয়া ইত্যাদি। তাই বিষয়গুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।

পানি ধরে রাখাঃ গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়, তা শরীরের ভিতরে পানি ধরে রাখতে পারে।যার কারণে হাত,পা,মুখ শরীর ফুলে যেতে পারে।রক্তের সাথে পানি গুলো মিশে যায়।বিধায় ঝাল কম খাওয়াই ভালো।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসঃ অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।তাই ঝাল কম খাওয়া ভালো।

অস্বস্তি বোধ করাঃ অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ফলে পেটে জ্বালাপোড়া,বুক জ্বালাপোড়া করতে পারে,পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি সমস্যাগুলো হতে পারে।

প্রসবের জটিলতাঃ অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ফলে প্রসব দীর্ঘ সময় লাগতে পারে এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং সিজারের ঝুকি হতে পারে।
কিছু সতর্কতা রয়েছে ঝাল খাওয়ার জন্য

আপনার যদি ঝাল খাওয়ার ফলে অস্বস্তিবোধ মনে হয় তাহলে ঝাল কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন
সকল গর্ভবতী মার যে একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে তা কিন্তু নয় তবে ঝাল কম খায় ভালো।

গর্ভাবস্থায় টক দই খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় টক দই খেলে গর্ভবতী ও গর্ভস্থ শিশুর অনেক উপকার

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ টক দই এর মাঝে থাকে প্রবায়োটিক যা আমাদের শরীরে জন্য ভালো এবং ভালো ব্যাকটেরিয়া গুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার। তাই দই খেলে ভালো ব্যাকটেরিয়া গুলো আমাদের শরীরের জন্য কাজ করে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই গর্ভবতীর যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তাই সে পরিমাণ মতো খেলে উপকার হবে।

ক্যালসিয়ামের উৎসঃ টক দই থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যেতে পারে। টক দই খেলে গর্ভস্থ শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনে সহায়তা করে।

উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে ভালোঃ টক দই এর মাঝে অ্যান্টিএক্সিডেন্ট থাকার কারণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় টক দই খাওয়া ভালো।

আইবিএস সমস্যাঃ গর্ভাবস্থায় সাধারণত পেটের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্য অনেক সময় পাতলা পায়খানা যাকে আইবিএস বলা হয়ে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ার কারণে ভালো ব্যাকটেরিয়া গুলো কাজ করতে থাকে না।

তাই টক দই মাঝে রয়েছে প্রবায়োটিক যা আইবিএস এর জন্য সবচেয়ে ভালো। মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে টক দই

ওজন নিয়ন্ত্রণঃ টক দই চর্বি মেদ কমাতে সাহায্য করে যার কারণে টক দই খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে
টক দই খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা রয়েছে তা হল
অতিরিক্ত টক দই খেলে পেট খারাপ হতে পারে তাই পরিমাণ মতো খাবেন

মিষ্টি দইয়ের চাইতে টক দই সবচাইতে বেশি উপকার তাই মিষ্টি দই কম খাবেন
বাজারের প্রক্রিয়াজাত টক দই এর চাইতে বাসায় তৈরি করা বেশি উপকার
তাই প্রতিদিন ঘরের তৈরি এক কাপ টক দই খেলে গর্ভবতী মায়ের অনেক উপকার হবে

গর্ভাবস্থায় চালতা খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়া ভালো,কেননা চালতা রয়েছে ভিটামিন এ, সি ও ই । যা মায়ের জন্য অনেক উপকার এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করবে।

ভিটামিন এর উৎসঃ চালতা এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ যা গর্ভবতীর ভিটামিন এর উৎস হিসেবে উপকার। ভিটামিন এ গর্ভবতীর দৃষ্টিশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, এছাড়াও ভিটামিন এ গর্ভস্থ ভ্রণ এর মেরুদন্ড, চোখ ও হৃদপিণ্ড এর জন্য উপকার। তাই গর্ভকালীন সময় পরিমাণ মতো চালতা খাওয়া যেতে পারে
ভিটামিন সিঃ চালতার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি যা গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং গর্ভবতীর খারাপ কোষগুলোর প্রতিরোধ করতে পারে এবং গর্ভবতীর শরীরে আয়রন শোষণের ক্ষেত্রেও সাহায্য করে।

ভিটামিন ইঃ ভিটামিন ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা গর্ভবতীর কোষের ক্ষতির রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গর্ভপাত হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা ভিটামিন ই প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ফাইবারঃ গর্ভাবস্থায় সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য বেশি হয়। আর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য ফাইবার জাতীয় খাবার সবচাইতে উপকার করে। আর চালতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকার।

চালতা খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা রয়েছে তা হল
চালতা খাওয়ার সময় অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।কেননা এর সাথে কোন ক্ষতিকর জীবাণু যেন না থাকে, যেটা গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

অতিরিক্ত চালতা খাওয়া যাবেনা পরিমাণ মতো চালতা খেতে হবে। পেটের সমস্যা বা অন্য কোন সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত চালতা খেলে ওজন বেশি হতে পারে।
চালতা খাওয়ার পর যদি কোন সমস্যা হয়, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ

ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়? সম্পর্কে এখন জানবো গর্ভাবস্থায় যেসব কাজ নিষেধ সেগুলো নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

অ্যালকোহলঃ গর্ভবতী মা যদি অ্যালকোহল জাতীয় খাবার পান করেন, তাহলে বাচ্চা গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বেশি। এছাড়াও জন্মগত ত্রুটি, বাচ্চা প্রতিবন্ধী হতে পারে এবং ভ্রণের সবচাইতে বেশি ক্ষতি করে।

ধূমপানঃ ধূমপান সবচাইতে ক্ষতিকর গর্ভস্থ শিশুর জন্য। যদি সেটা গর্ভস্থ শিশুর বাবা ধূমপান করে সেক্ষেত্রেও গর্ভবতী মায়ের ক্ষতি হতে পারে এবং গর্ভস্থ ভ্রণের ক্ষতি হতে পারে এবং গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, অকাল জন্ম হতে পারে ইত্যাদি।

ক্যাফেইন জাতীয় খাবারঃ সবচাইতে ক্ষতি করে বেশি যেমন চা কফি এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। এই ধরনের খাবার যদি গর্ভবতী মা খায় তাহলে শিশুর ক্ষতি হতে পারে। দিনে ২০০ মিলি গ্রামের বেশি ক্যাফেইন খাওয়া উচিত নয়।অর্থাৎ দুই কাপ।

কাঁচা মাংস খাওয়াঃ কাঁচা মাংসে রয়েছে টক্সোপ্লাজমা গন্ডি নামক পরজীবী যা গর্ভপাত হতে পারে, জন্মগত ত্রুটি হতে পারে, গর্ভবতী মা অতি দ্রুত গতিতে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।

অপাস্তারিত দুধঃ দুধ একটি পুষ্টিকর খাবার,যা গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্যালসিয়ামের উপকার করে থাকে কিন্তু দুধ যদি পাস্তুরাইন না করা হয় অর্থাৎ দুধ যদি জাল না দিয়ে খাওয়া হয়, তাহলে এর ভিতরে পাস্তুরাইন থেকে যায়। যেটা সবচাইতে ক্ষতিকর এবং গর্ভস্থ ভ্রূণের ক্ষতিকর। অপস্তারিত দুধে থাকে লিস্টরিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া যা গর্ভপাত করতে পারে।

অতিরিক্ত ভিটামিন এঃ একজন গর্ভবতী মা যদি অতিরিক্ত ভিটামিন এ জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে তাহলে সেটাও গর্ভপাত করতে পারে এবং ভ্রনের বিষক্রিয়া সৃষ্টি করবে।

কিছু ক্ষতিকর মাছঃ মাছের মধ্যে প্রোটিন রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য দরকার কিন্তু কিছু মাছ খেলে গর্ভবতী মায়ের ক্ষতি হতে পারে যেমন পারদ নামক বিষাক্ত উপাদান থাকতে পারে যে মাছের মাঝে। যে মাছের মাঝে পারদ থাকে সেই মাছ খেলে ভ্রনের মস্তিষ্কের বিকাশে ক্ষতি হতে পারে। গর্ভবতী মায়ের জন্য হাঙ্গর মাছ ,রাজা টোনা মাছ, মেকারেল স্প্যানিশ, মেকারেল, তৈলাক্ত মাছ ইত্যাদি খাওয়া ঠিক নয়।

জীবন ধারার মাঝে কিছু কাজ থাকতে পারে যা ক্ষতি কর

ভারী জিনিস তোলাঃ গর্ভবতী মা ভারী জিনিস তুললে তলপেটে চাপ লাগে বেশি, যার কারণে বাচ্চা গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ভারী জিনিস তোলা থেকে বিরত থাকবেন।

অতিরিক্ত ব্যায়ামঃ কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো না। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে সন্তান গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং ভ্রনের ক্ষতি হয়।

সাইক্লিনঃ গর্ব অবস্থায় সাইকেল চালানো যাবে না কেননা সাইকেল চালালে তলপেটে চাপ বেশী লাগে যার কারণে গর্ভপাত হতে পারে।

দূরবর্তী ভ্রমণঃ অনেক দূরবর্তী জায়গায় ভ্রমণ করতে গেলে গর্ভবতী মায়ের গর্ভপাত হতে পারে।

ঘোড়ায় চড়াঃ গর্ভাবস্থায় ঘোড়ায় চললে ঝাকিতে ঝাকিতে তলপেটে চাপ লাগার কারণে গর্ভপাত হতে পারে।
অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করাঃ অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করার ক্ষেত্রেও বাচ্চা গর্ভপাত হতে পারে।

এক্সরে করাঃ গর্ভাবস্থায় এক্সরে করলে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে, তাই খুব প্রয়োজন ছাড়া এক্সরে করা উচিত নয়।

কিছু ওষুধ রয়েছেঃ গর্ভাবস্থায় যে সকল ওষুধ খাওয়া নিষেধ এবং কোন ওষুধই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া যাবে না। ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে গর্ভপাত হতে পারে। তাই অবশ্যই কোনো ওষুধ খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ খেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না

ফল খাওয়া অনেক উপকার কিন্তু গর্ভাবস্থায় কিছু ফল খাওয়া যাবে না যে ফলগুলো খেলে গর্ভবতীর ও গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে।নিম্নে সে সকল ফলের নাম গুলো দেওয়া হল

কাঁচা পেঁপেঃ কাঁচা পেঁপে রয়েছে পেপিন নামক এনজাইম যা গর্ভপাত হতে পারে।

আনারসঃ আনারস রয়েছে ব্রমিলিন নামক এনজাইম যা জরায়ুর সংকোচন হতে পারে।

আঙ্গুরঃ আঙ্গুরে রয়েছে রেসভাড়াটল নামক যৌগ যা গর্ভাবস্থায় জটিল সমস্যা হতে পারে।

কামরাঙ্গাঃ কামরাঙ্গায় রয়েছে অক্সালেট এসিড যা গর্ভবতীর কিডনিতে পাথর হতে পারে।

তরমুজঃ তরমুজ প্রচুর পরিমাণ পানি থাকে যা খেলে ডায়রিয়া বেশি হতে পারে।

স্ট্রবেরিঃ স্ট্রবেরি খেলে এলার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
উপরোক্তই ফল গুলো একজন গর্ভবতী না খাওয়াই ভালো

গর্ভাবস্থায় কি কি শাক খাওয়া যাবে না

শাক একটি পুষ্টিকর খাবার প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে তারপরও গর্ভাবস্থায় যে শাকগুলো খেলে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে নিম্নে সেই শাকগুলোর নাম দেওয়া হল

কাঁচা সবজিঃ কিছু কাঁচা শাকসবজি রয়েছে যেগুলো লিস্টেরিয়া দ্বারা দূষিত হতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার কারণে গর্ভবতীর গর্ভপাত হতে পারে এবং মৃত জন্মের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই কাচা শাকসবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অবশ্যই কাঁচা সবজি খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।

অংকুরিত বীজঃ অঙ্কিত বীজে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া লিস্টঅরিয়া

ক্যাপসিকাম ক্যাপসিকাম রয়েছে সাইকোএক্টিভ যৌগ যা ক্যাপসাইজিসিন থাকার কারণে গর্ভপাত হতে পারে।

মেথিঃ মেথি দ্বারা ঋতু চক্র কে বেশি উদ্দীপ্ত করে যা গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।

লবঙ্গঃ লবঙ্গ গরম এবং শুকনা হওয়ার কারণ গর্ভপাত হতে পারে।

জাফরানঃ জাফরান একটি ব্যয়বহ ুল মসলা জাতীয় যা গর্ভপাত কারণ হতে পারে।

শেষ কথাঃ  গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়,বিস্তারিত জেনে নিন

পরিশেষে বলা যেতে পারে গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে উপরোক্ত বিষয়গুলো থেকে আপনি হয়তো জানতে পেরেছেন। গর্ভবতী মা এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণে সব খাবার খাওয়া ঠিক হবে না এবং কোন খাবার খেলে ক্ষতিকর সেগুলো মেনে চলা উচিত। যদি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হন, তাহলে আপনার বন্ধু এর মাঝে পোস্টটি শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪