কোন কোন খাবার খেলে বুকের দুধ বাড়ে ও বুকের দুধ বৃদ্ধির ট্যাবলেট

আপনি কি জানেন কোন কোন খাবার খেলে বুকের দুধ বাড়ে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য জানা খুবই প্রয়োজন। চলুন, বুকের দুধ বৃদ্ধির ট্যাবলেট ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
অনেক দুগ্ধ দানকারী মায়েরা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি জানেনা, যার কারণে বলে বাচ্চা দুধ খেতে চায় না। তাই বাচ্চা বুকের দুধ খেতে না চাইলে করণীয় সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃকোন কোন খাবার খেলে বুকের দুধ বাড়ে ও বুকের দুধ বৃদ্ধির ট্যাবলেট

কিভাবে বুঝব বাচ্চা বুকের দুধ পাচ্ছে

কিভাবে বুঝব বাচ্চা বুকের দুধ পাচ্ছে তা বোঝার উপায় হল আপনার বাচ্চার ওজন বাড়ছে কিনা। সেদিকে খেয়াল করুন যদি বাচ্চার ওজন বাড়ে তাহলে বাচ্চা বুকের দুধ পাচ্ছে। কিন্তু যদি ওজন না বাড়ে তাহলে বুঝবেন বাচ্চা বুকের দুধ পাচ্ছে না। কেননা জন্মের পর কয়েকদিন বাচ্চার ওজন কমে যায় কিন্তু পরে আবার আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। আর একটা শিশুর দৈনিক ২০ থেকে ৪০ গ্রাম ওজন বাড়ে।

সাধারণত আপনি খেয়াল রাখবেন আপনার শিশু দিনের মাঝে ৭-৮ বার দুধ খাচ্ছে কিনা।

আপনার শিশু যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ খায় তাহলে খাওয়ার পরে একাই ছেড়ে দেবে এবং স্বস্তি বোধ করবে।

আপনার শিশুর দুধ খাওয়ার সময় খেয়াল করবেন ঢোক গেলার শব্দ হচ্ছে কিনা এবং শিশুর ঠোটের কোনায় দুধ জমে আছে কিনা।
আপনি খেয়াল করুন আপনার শিশু দিনে রাতে ৬ থেকে ৮ বার প্রসাব করছে কিনা। যদি করে থাকে তাহলে সে পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ পাচ্ছে। অন্য কোন খাবার দিবেন না এমনকি পানিও দিবেন না এতে ক্ষতি হতে পারে।

আপনার শিশুর বয়স যদি পাঁচ দিন হয় সেই ক্ষেত্রে তার পায়খানা হবে হলদেটে রং এটা খেয়াল করুন যদি হয় তাহলে বাচ্চা ঠিকমতো দুধ পাচ্ছে। একজন মা এগুলো খেয়াল করার পাশাপাশি তাকে পুষ্টিকর খাবার ও খেতে হবে।

সে হিসাবে আপনি মেথির বিভিন্ন ভাবে প্রয়োগ করে খেতে পারেন এতে দুই-তিন দিনের মধ্যেই বাস্তব প্রমাণ পাবেন বুকের দুধ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাচ্চা বুকের দুধ খেতে না চাইলে করণীয়

বাচ্চা বুকের দুধ খেতে না চাইলে করণীয় কি তা নিম্নের বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো,

আপনার বাচ্চাকে সবসময় বুকের সাথে লাগিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন। কেননা বাচ্চা যদি বুকের দুধের গন্ধ বুঝতে পারে তাহলে সে দুধ ঘনঘন খেতে চাইবে।

অনেক সময় শুয়ে থেকে দুধ খাওয়ালে বাচ্চার অনেক সমস্যা হয় এবং সে আর অন্যভাবে খেতে চায় না। তাই আপনি দুধ খাওয়ানোর সময় পজিশন পরিবর্তন করতে পারেন। চেষ্টা করবেন বাচ্চাকে সব সময় বসে দুধ খাওয়ানোর তাহলে তার পেটে গ্যাস হবে না এবং সে দুধ খেতে চাইবে।

ছয় মাসের মধ্যে কখনো অন্য কোন খাবার দেয়ার চেষ্টা করবেন না। তাহলে শিশু আর বুকের দুধ টেনে খাবে না। কেননা একটা শিশুকে যখন তুলে খাওয়ানো হবে তখন সে অনেক আরাম পাবে বিধায় কষ্ট করে বুকের দুধ টানতে যাবে না।

অনেক মায়ের বুকের দুধ শক্ত হয়ে থাকে তাহলে বাচ্চা অনেক সময় চুষতে কষ্ট হয়। তাই আপনি বাজারে বিভিন্ন ধরনের দুধ বের করার যন্ত্র পাওয়া যায়। সেটা দিয়ে বের করতে পারেন তাহলে নরম হলে বাচ্চা খেতে যাবে।

বাচ্চা বুকের দুধ খেতে না চাইলে করণীয় হলো চেষ্টা করবেন বাচ্চাকে জাগনা থাকা অবস্থায় দুধ খাওয়ানোর কিন্তু যদি না খায় তাহলে ঘুমের মাঝে শিশুরা দুধ খেতে পছন্দ করে তাই ঘুমের মাঝেও খাওয়াতে পারেন। কেননা একটা শিশুকে দিনে তিন থেকে চার ঘন্টা পর পর অবশ্যই তাকে দুধ খাওয়াতে হবে।

নবজাতক শিশুরা অনেক ঘুমায় প্রায় ২৪ ঘন্টার মাঝে ১৮ ঘণ্টা ঘুমাতে পারে। এটা নিয়ে টেনশন করার কিছু নাই। এরা ১২ থেকে ১৮ ঘন্টা ঘুমানোর ভালো। তাই আপনি ঘুমের মাঝে দুধ দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

কি খেলে বুকের দুধ শুকিয়ে যায়

অনেক খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে মায়ের বুকের দুধ কমে যায় বা শুকিয়ে যায়। নিম্নে কি খেলে বুকের দুধ শুকিয়ে যায় সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

কফিঃ কফি বা চায়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই বাচ্চার মা যদি প্রতিনিয়ত চা অথবা কফি খেতে থাকে। তাহলে বাচ্চার ভিতরে এই ক্যাফেইন প্রবেশ করে, আর এতে শিশুর অনেক সমস্যা হতে পারে যেমন ঘুমের সমস্যা হতে পারে, পেটে গ্যাস হতে পারে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার ফলে এবং মায়ের বুকের দুধ শুকিয়ে যেতে পারে।

অ্যালকোহল বা মদ পান করাঃ যে সকল দুগ্ধ দানকারী মায়েরা এলকোহল পান করে, তাদের শিশুর মাঝেও এর প্রভাব টা দেখা দেয়। এতে শিশুর অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও একজন মা যদি প্রতিনিয়ত অ্যালকোহল পান করে তাহলে তার শরীরের ২০ থেকে ৩০% বুকের দুধ কমে যাবে। এছাড়া শিশু শুধু দুধ পাবে না, কান্নাকাটি করবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এছাড়া ঘুমের সমস্যা হতে পারে।

অনেক মা জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন ধরনের পিল বড়ি খেয়ে থাকে। যা বাচ্চার মায়ের বুকের দুধ কমে যেতে পারে। তাই কমপক্ষে ৪৫ দিন পর একজন মা পিল বড়ি খাবে, তবে বাজারে বিভিন্ন ধরনের মিনি পিল পাওয়া যায় যেগুলো বুকের দুধ কমে না সে ধরনের পিল খেতে পারেন।
সবচেয়ে ভালো হয় সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক হাসপাতাল থেকে আপন নামের যে বিল বডিটা পাওয়া যায় সেটা খেলে বুকের দুধ কমে না ছয় মাস পর্যন্ত আপন বড়ি খেতে পারেন।এটা বিনামূল্যে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে পাবেন। তাছাড়া সবচেয়ে ভালো হয় দীর্ঘমেয়াদি কোন পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করলে এ ধরনের কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয় যেমন কপাটি, জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন ইত্যাদি।

একজন দুগ্ধদানকারী মা যদি বিভিন্ন কারণে চিন্তিত থাকে তাহলে সে কারণে বুকের দুধ কমতে পারে। কারণ তার ঘুম হবে না বিভিন্ন খাবার হয়তো ঠিকমতো খেতে পারবে না, তাই এ ধরনের চিন্তা ভাবনা করা যাবে না এবং নিয়মিত খাবার খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম দিতে হবে।

অনেক মা পানি খেতে চান না যার কারণে প্রসবের সমস্যা হয়ে থাকে, প্রসাবে জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। তাই একজন মা দিনের মাঝে কমপক্ষে ৭-৮ গ্লাস পানি খাবে। একজন শিশু যখন দুধ খায় তখন কিন্তু পানি বের হয় তারপরে গারো দুধ বের হয়ে আসে।

আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে ঘনঘন দুধ না দেন, তাহলে দুধ আর তেমন বের হবে না এবং কমতে থাকবে। যত বেশি দুধ খাওয়াবেন তত দুধ বৃদ্ধি পাবে। দুধ না খাওয়ালে দুধ শক্ত হয়ে যাবে এবং বাচ্চা মুখে নেয়ার খেতে চাইবেনা।

কোন কোন খাবার খেলে বুকের দুধ বাড়ে

কোন কোন খাবার খেলে বুকের দুধ বাড়ে তার মধ্যে অন্যতম গুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো নিম্ন বর্ণনা করা হলো,

মেথিঃ মেথির মাঝে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা একজন স্তন্যদান কারী মা প্রতিনিয়ত যদি খায় তাহলে এক থেকে দুই দিনের মধ্যেই তার বুকের দুধ বৃদ্ধি পাবে। কেননা এক গবেষণায় চিকিৎসকরা দেখেছেন যে কিছু স্তন্যদান কারী মায়ের উপর এটা প্রয়োগ করার ফলে দেখা গেছে প্রায় আশি পার্সেন্ট মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ছবি
তাই এটা আপনি নিয়মিত খেতে পারেন বিভিন্ন উপায়ে যেমন তরকারি রান্না করার পর তারপর ছিটিয়ে দিতে পারেন অথবা মেথির চা খেতে পারেন। তাছাড়া অনেকেই চায়ের সাথেও খেতে পারেন। আরো বিভিন্ন উপায়ে মেথি খাওয়া যেতে পারে আবার সাপ্লিমেন্ট হিসেবে খেলে বুকের দুধ বাড়ে সেটা হল মেথির এক ধরনের ক্যাপসুল অথবা ট্যাবলেট আপনি খেতে পারেন।

সজনে ডাটাঃ এর গুনাগুন বলা শেষ করা যাবে না। এর মধ্যে থাকে ক্যালসিয়াম ও আয়রন যা বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটার অনেক গুনাগুন রয়েছে তবে মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করার জন্য সাজনা ডাটা খুবই উপকারী। তাই আপনি প্রতিনিয়ত এটা খেতে পারেন।

বিশেষ করে বিভিন্ন উপায় খাওয়া যেতে পারে যেমন ডালের ভিতরে রান্না করে খেলে খুবই মজা লাগে। বর্তমানে সাজনা পাতার গুড়া পাউডার পাওয়া যায় সাপ্লিমেন্ট হিসেবে সেটাও খেতে পারেন অথবা সাজনা পাতার দিয়ে ক্যাপসুল তৈরি করা হয়েছে সেটাও ক্রয় করে আপনি খেতে পারেন।

গাজরঃ গাজরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে যা ফাইটোইস্ট্রোজেন তৈরি করতে সাহায্য করে। আর এই ফাইটোইস্ট্রোজেন মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে পারে। আর ভিটামিন এ মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করার জন্য খুবই দরকার। তাই আপনি গাজর সালাত করে খেতে পারেন, তরকারি রান্না করে খেতে পারেন, ভাজি রান্না করে ইত্যাদি বা বিভিন্ন উপায়ে খেতে পারেন এবং এমনিও কাঁচা হিসেবেও খাওয়া যায়।
ছোলাঃ যা মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করার জন্য খুবই উপকারী কেননা এতে রয়েছে ফাইটোইস্ট্রোজেন তৈরি করতে পারে আর এর ফলেই বুকের দুধ বাড়তে পারে। তাই আপনি ছোলা বিভিন্ন উপায় খেতে পারেন ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন অথবা ভাজি করেও খেতে পারেন।

সবুজ শাকসবজিঃ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে সবুজ শাকসবজির মধ্যে যেমন যত রকমের সবজি আছে যেগুলো দেখতে সবুজ তার মাঝেই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে। যা বুকের দুধ বৃদ্ধি করে।

তার মাঝে বিশেষ করে একজন দুগ্ধ দানকারী মার খাওয়া উচিত সেটা হল লাউ। এর মাঝে যে উপাদানগুলো থাকে তা দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও অনেক শাকসবজি রয়েছে সেগুলো আপনি তরকারি বা বিভিন্ন উপায় খেতে পারেন।

রসুনঃ রসুনের অনেক গুনাগুন রয়েছে। এই রসুন ১ থেকে ২ কোয়া আপনি প্রতিদিন ডাল বা বিভিন্ন খাবারের মধ্যে দিয়ে খেতে পারেন। তাহলে বুকের দুধ অনেক বৃদ্ধি পাবে কেননা রসুন দ্রুত রক্ত চলাচল করতে পারে। তাই এটা বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

পানিঃ পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন দুগ্ধদানকারী মায়ের জন্য, কেননা সে পানি পান করার কারণে বাচ্চাও তার বুকের দুধের মাধ্যমে পানি খেয়ে থাকে। তাই আপনি জীবাণুমুক্ত এবং ফ্রেশ পানি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। দৈনিক ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করবেন। কারণ আপনি যতবার বুকের দুধ বাচ্চাকে খাওয়াবেন ততোবারে পানি খাওয়া আপনার জন্য জরুরী।

পানি খাওয়ার পাশাপাশি আপনি পানি, লেবু দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শরবত বানিয়ে খেতে পারেন। কেননা আপনার শরীর থেকে বাচ্চাকে দুধ দেওয়ার কারণে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়।

বুকের দুধ বৃদ্ধির ট্যাবলেট

আমরা প্রাকৃতিকগত খাবারের চাইতে ওষুধ খেতে বেশি পছন্দ করি। তাই অনেক মা বুকের দুধ বৃদ্ধি ট্যাবলেট খেয়ে থাকে। কিন্তু একজন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ ধরনের ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। তারপরেও নিম্নে কিছু বুকের দুধ বৃদ্ধির ট্যাবলেট এর নাম দেওয়া হল,

মমভিট ট্যাবলেটঃ সাধারণত চিকিৎসকরা বুকের দুধ বৃদ্ধির জন্য প্রকৃতপক্ষে কোন ঔষধ সাজেশন করেন না। প্রাকৃতিকভাবে দুধ বৃদ্ধি করার উপায় গুলো প্রয়োগ করায় উত্তম। তারপরও বাজারে বিভিন্ন রকম বুকের দুধ বৃদ্ধি ট্যাবলেট পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো মমভিট ট্যাবলেট।

এটা সাধারণত দিনে দুইবার খেতে হয় ১০ থেকে ১৫ দিন খেলে মোটামুটি রেজাল্ট পাওয়া যায়। এটা বেক্সিমকো কোম্পানি উৎপাদন করেছে যার দাম ৩ টাকা করে।

ম্যাক্সি মিল্ক ক্যাপসুলঃ স্কয়ার কোম্পানি এটা তৈরি করেছে এই ওষুধটি আপনি দিনে তিনবার খেতে পারেন। এর পার পিসের দাম ১৫ টাকা। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ খেতে হবে। এটা নবজাতক মায়ের হরমোন বৃদ্ধি করে যা বুকের দুধ বৃদ্ধি পায়।

অমিডন ট্যাবলেটঃ এছাড়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্যাবলেট যেটা অমিডন। এটা একটি বমির ট্যাবলেট অথবা পেটে গ্যাসের হিসাবে খাওয়া যেতে পারে দিনে তিনবার কিন্তু সাধারণত চিকিৎসকরা মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধির জন্য অমিডন ট্যাবলেট টা দিয়ে থাকেন।

কেননা মা খেতে পারলে তাহলে তার বুকের দুধ বৃদ্ধি পাবে। সেই হিসেবে এই ওষুধটা ডাক্তাররা দিয়ে থাকেন। এর দাম খুবই কম মাত্র ৩ টাকা পিস। অমিডন ছাড়াও আরো ডন, পেরিডন ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়।

ল্যাক্টো হিল পাউডারঃ প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ল্যাক্টো হিল পাউডার অনেক ভালো উপকার করে থাকে। তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শে এটা আপনি খেতে পারেন।

মায়ের বুকের দুধ সংরক্ষণের উপায়

কর্মজীবী মায়েদের বুকের দুধ সংরক্ষণ করার সবচাইতে জরুরী হয়ে যায়। কেননা তারা তিন চার ঘণ্টা পরপর বাচ্চাকে দুধ দিতে পারে না। তাই নিম্নে মায়ের বুকের দুধ সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

দুধ সংরক্ষণের প্রথম কাজ হল একটি কাচের বোতল সংগ্রহ করতে হবে। এর মাঝে দুধ সংরক্ষণ করতে পারেন ভালোভাবে পরিষ্কার করবেন যেন জীবাণু না থাকে।

ফ্রিজে রাখার সময়ে সাধারণত খেয়াল রাখবেন যেন সাথে মাছ, মাংস না থাকে। তাহলে এটা অনেক সময় গন্ধ হতে পারে। আর ফ্রিজ থেকে বের করে অবশ্যই নরমাল না হওয়া পর্যন্ত বাচ্চাকে খাওয়াবেন না।

ফ্রিজ থেকে একেবারে বরফের মত দুধ বের করে গরম করার পর সেটা আবার পুনরায় আর ফ্রিজে রাখবেন না।

এখন আশি দুধ বের করার পদ্ধতি সম্পর্কে, আপনার হাতটা প্রথমে পরিষ্কার করে জীবাণু মুক্ত করে নিয়ে এরপরে চাপ দিয়ে দুধ বের করুন। এরপরে পরিষ্কার পাত্রের রাখতে পারেন। যদি ফ্রিজে রাখেন তাহলে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত ভালো থাকবে আর যদি ফ্রিজ না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে তিন ঘন্টা পর্যন্ত ভালো থাকবে। আশা করি মায়ের বুকের দুধ সংরক্ষণের উপায় সমূহ বুঝতে পেরেছেন।

কোন পিল খেলে বুকের দুধ কমে না

দুগ্ধ দানকারী মায়েরা অনেক সময় টেনশনে পড়ে যান এবং প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তারা মনে করে শিশুকে দুধ খাওয়ালে হয়তো পিল খাওয়া লাগবে না। এই মনে করে তারা জন্ম নিয়ন্ত্রণ কোন পদ্ধতি ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণ দেখা যাচ্ছে অনেক সময় বাচ্চা কনসেপ্ট হয়। তাই এই ভুলটা কখনোই করবেন না, কোন পিল খেলে বুকের দুধ কমে না নিম্নে সেই সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো,

সাধারণত পিলের ভিতর যে দুইটা উপাদান থাকে, ইস্ট্রোজেন যা মায়ের বুকের দুধ কমিয়ে দেয়। আর প্রোজেস্টরন জাতীয় পিল গুলো খেতে হবে এ ধরনের পিল বাজারে বিক্রি হয়। এছাড়া আপনি সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে "আপন" নামের যে পিলটা পাওয়া যায় সেটা খেলে মায়ের বুকের দুধ কমে না।
এছাড়া আপনি জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন দিতে পারেন কেননা এটা আমাদের গ্রাম অঞ্চলের নারীদের জন্য সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। কারণ তারা বড়ি খেতে ভুলে যায় তাই ইনজেকশন নিলে তাদের জন্য নিরাপদ। এছাড়াও বাচ্চা হওয়ার পর জরায়ুর ভেতর কপারটি ব্যবহার করতে পারেন।

যেটা একটি স্থায়ী পদ্ধতি এছাড়া আরো পরিবার পরিকল্পনার দীর্ঘস্থায়ী পদ্ধতি রয়েছে যেমন ইমপ্লান্ট পদ্ধতি ইত্যাদি। আপনি আপনার বাড়ির পাশে যদি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকে সেখানে গিয়ে স্বাস্থ্য কর্মীর সাথে কথা বলে যে কোন একটি দীর্ঘস্থায় পদ্ধতি ব্যবস্থা নিতে পারেন।

কোন ফল খেলে বুকের দুধ বাড়ে

প্রত্যেক ফল খেলে শরীরে পুষ্টি বাড়ে এবং পুষ্টির কারণে বুকের দুধ বাড়ে নিম্নে কোন ফল খেলে বুকের দুধ বাড়ে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

বেদানাঃ এটি একটি অনেক পুষ্টি সম্পন্ন ফল যা একজন মায়ের আয়রন এর ঘাটতি পূরণ করতে পারে। তাই এছাড়াও মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করবে। তাই আপনি প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে অল্প করে হলেও বেদানা খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
ছবি
বাদামঃ বাদামের মধ্যে এক ধরনের ফ্যাটি এসিড থাকে এবং বাদাম খাওয়ার ফলে অনেক ভিটামিন যুক্ত হয়। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে। তাই একজন দুগ্ধদানকারী মা এক মুঠো বাদাম এমনি প্রতিদিন খেতে পারে এবং পাশাপাশি কাজুবাদাম, কাঠবাদাম এই সকল বাদামগুলো ব্লেন্ডার করে দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে এবং মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করবে।

পেঁপেঃ পেপের মাঝে রয়েছে এক ধরনের এন্জাইম এবং ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি। যা শরীরের জন্য অনেক উপকার এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আপনি পেপে বিভিন্ন উপায়ে খেতে পারেন, জুস বানিয়ে খেতে পারেন, এমনি পাকা পেঁপে কেটে খেতে পারেন।

যদিও গর্ভাস্থায় অনেক সময় নিষেধ করে থাকে কিন্তু বাচ্চা হওয়ার পরে কোন ফল খেলে বুকের দুধ বাড়ে তা হল, পাকা পেঁপে খেলে মায়ের বুকের দুধ বাড়তে পারে। পাকা পেঁপে খেলে শরীর থেকে এক ধরনের অক্সাইটোসিন হরমোন উৎপাদন করতে পারে এবং সেই সাথে বুকের দুধ বৃদ্ধি করে। তাই আপনার বুকের দুধ যদি কম হয়ে থাকে তাহলে নিয়মিতভাবে এই পেপে খেতে পারেন।

আমাদের শেষ কথা

পরিশেষে বলা যেতে পারে যে কোন কোন খাবার খেলে বুকের দুধ বাড়ে তা উপরোক্তা আলোচনা থেকে হয়তো জানতে পেরেছেন। তাই ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে আপনারা যদি প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বুকের দুধ বৃদ্ধি করেন, এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি থেকে একটু হলেও উপকৃত হয়েছেন। যদি পোস্টটা পড়ে ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪