গায়ের রং ফর্সা করার ক্রিম ত্বকের জন্য ক্ষতিকর
বাংলাদেশের অধিকাংশ নারী গায়ের রং ফর্সা করার ক্রিম ত্বকে ব্যবহার করে থাকে। আর এই ক্রিমের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে ত্বকের অনেক ক্ষতি হয়। চলুন গায়ের রং ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
সাধারণত বংশগত এবং ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে গায়ের রং ফর্সা কিংবা কালো অথবা বাদামী বর্ণের হয়ে থাকে। মানুষের গায়ের রং কখনো ক্রিমের মাধ্যমে ফর্সা করা যায় না। তাই এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কনটেন্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃগায়ের রং ফর্সা করার ক্রিম ত্বক ক্ষতি করে
নিষিদ্ধ রং ফর্সাকারী ক্রিম
বাংলাদেশে নিষিদ্ধ রং ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার করার ফলে ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভৌগোলিক এবং বংশগত কারণে আমাদের দেশের অধিকাংশ নারী ও পুরুষের গায়ের রং হালকা বাদামী বর্ণের জন্য বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। যার কারণে সমাজের কিছু গায়ের রং কালো মেয়েগুলো তারা ফর্সা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহারের প্রতি আকৃষ্ট।
আর তাদের এই সুযোগটা নিয়েই বিভিন্ন কোম্পানি চটকবাজ বিজ্ঞাপন দিয়ে তারা মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বরং সেই সকল ক্রিম দিয়ে ফর্সা তো হচ্ছেই না অপরদিকে এই নিষিদ্ধ রং ফর্সাকারী ক্রিম এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে প্রত্যেকটা ক্রিমের সাথে তার উপাদান বিস্তারিতভাবে দেওয়া রয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিম গুলোর অধিকাংশই উপাদান দেওয়া নাই মোড়কের গায়ে।
এমনকি তাদের উৎপাদন এবং মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ দেওয়া থাকে না। কিন্তু ত্বক সাধারণত মলিন হওয়ার কারণ হলো বিভিন্ন পুষ্টির উপাদান কম থাকার কারণে হতে পারে, রৌদ্রে কাজ করার কারণে হতে পারে, এছাড়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে। ভিটামিন সমৃদ্ধ শাকসবজি, তাজা ফল ও ফলের রস এগুলোর মাধ্যমে ত্বকের লাবণ্যতা ফিরে পাওয়া যাবে।
কিন্তু তথাকথিত কিছু ক্রিম ব্যবহার করার ফলে রং ফর্সা করবে এরকম কোন আজও পৃথিবীতে ক্রিম তৈরি করা হয়নি। শুধু ফর্সা করায় নয় ত্বকের ব্রণ, মেছতার দাগ দূর করার, মেকআপের ফাউন্ডেশন হিসেবে একই ক্রিম ব্যবহার করতে বলা হয়। কিন্তু একটি ক্রিম কিভাবে এতগুলো চর্ম রোগের কাজ করে এটা একজন চিকিৎসকের ধারণার বাইরে চলে যায়।
একটি ক্রিম দিয়ে যদি মেছতা এবং কালো দাগ দূর করার কথা বলা হত তাহলে মেনে নেওয়া যেত কিন্তু ব্রণ, ছুলি সম্পূর্ণ ভিন্ন রোগ। তাই একদল চিকিৎসক বলেছেন রোগের প্যাথিজনিস রোগাক্রান্ত করার প্রক্রিয়া এবং চিকিৎসা আলাদা আলাদা রয়েছে তাই অবৈজ্ঞানিক ভাবে এই ধরনের নিষিদ্ধ রং ফর্সাকারী ক্রিম দ্বারা চিকিৎসা করা কখনই উচিত না। মানুষের শরীরের রং জন্মগত ভাবে নির্ধারিত হয়।
সেই রং কে কোনভাবেই ফর্সা করা সম্ভব নয়। একজন ফর্সা ইউরোপিয়ান সারা জীবন বাংলাদেশে থাকলেও তিনি যেমন বাঙালির মতো বাদামি রঙের হবেন না। তেমনি একজন বাংলাদেশী সারা জীবন ইউরোপে থাকলেও তার রং ইউরোপীয়দের মত ফর্সা করতে পারবেন না। তবে সূর্যালোকের প্রভাবে ত্বকের রং সাময়িকভাবে কিছুটা গারো বর্ণের হয়ে যেতে পারে। তাই সূর্যের আলো এড়িয়ে চলার মাধ্যমে এই ক্ষেত্রে পূর্বের রং ফিরে পাওয়া সম্ভব।
ফর্সা হওয়ার প্রতি এদেশের লোকজন বরাবরই দুর্বল আর এই দুর্বলতাকে পুঁজি করে প্রসাদানি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো রং ফর্সাকার ক্রিম বাজারে ছেড়েছে। একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তিনি বলেছেন এ সকল ক্রিম ব্যবহারের ফলে ত্বকের ক্যান্সার ও লিউকোডার্মা রোগ হয়। তিনি আরো বলেন যুক্তরাষ্ট্রে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে অনেক আগেই।
কিন্তু বাংলাদেশে এখনো অনেক ক্রিম বাজারজাত করা হয় যেগুলো অনেক ক্ষতিকর। তাই এজন্য আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এই ধরনের ক্রিম ব্যবহার করার ফলে দেশের অর্থনৈতিক এবং আপনি নিজেও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
গায়ের রং ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
আপনি যদি ত্বক নিয়ে টেনশনে থাকেন তাহলে ঘরোয়া উপায় প্রয়োগ করতে পারেন। নিম্নে গায়ের রং ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় গুলো বর্ণনা করা হলো,
টমেটোঃ টমেটোর মধ্যে থাকে লাইকোপিন নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে। যা ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ তুলতে সাহায্য করে এবং মৃত কোষ গুলো সরিয়ে দেয়। এতে করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক ফর্সা হতে থাকে।
যাহোক, আপনি দুটি টমেটো নিন এরপরে সেটা ব্লেন্ডার করুন। ব্লেন্ডার করার পর পেস্ট বানিয়ে তার সাথে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগান। ২০ মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত কিছুদিন ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা হতে থাকবে।
লেবুঃ আপনি একটি লেবু নিয়ে সেটাকে কেটে রস বের করুন। দুই চামচ লেবুর রসের সাথে এক চামচ পরিমাণ পানি এবং তার সাথে এক চামচ মধু মিশাতে পারেন। এই মিশ্রণটি নিয়ে আপনার মুখের যেখানে বা ত্বকের যেখানে দাগ রয়েছে সেখানে লাগিয়ে দিন এবং ১০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে। তবে লাগানোর পূর্বে আপনি আগে গলায় অথবা কানে মিশ্রণটি লাগিয়ে দেখেন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় কিনা। যদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাহলে মিশ্রণটি ব্যবহার করবেন না। কেননা লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যা কোন দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং রোদে পোড়া দাগ ও এ লেবুর রস তুলতে সাহায্য করে।
হলুদের ব্যবহারঃ আপনি প্রথমত এক টুকরো কাঁচা হলুদ অথবা এক চামচ গুড়া হলুদ নিন। এরপর এর সাথে ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে যে স্থানে দাগ রয়েছে সেখানে লাগিয়ে দিন। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দুই সপ্তাহ ব্যবহার করতে থাকুন।
আশা করা যায় ভালো ফলাফল পাবেন। কেননা হলুদের মধ্যে আছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি ইনফ্লেমেটরি যা ত্বকের খারাপ জীবাণুগুলো বের করে দিতে সাহায্য করে এবং ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বল করে। এছাড়াও আপনি সকালবেলায় এক টুকরো কাঁচা হলুদ খালি পেটে খেয়ে নিতে পারেন। হলুদ টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
দই ও মধুর ব্যবহারঃ আপনি ২ চামচ দই ও এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এর পর মিশ্রণটি যেখানে দাগ রয়েছে সেখানে লাগান। ১৫ মিনিট রাখার পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল হবে।
কেননা দই ত্বকের মধ্যে ছোট ছোট যে লোম রয়েছে তার নিচে অনেক ময়লা জমে থাকে সেটা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ত্বকের ভিতর থেকেও ময়লা পরিষ্কার করে ফেলে। তাই এই মিশ্রণটি নিয়মিতভাবে ব্যবহার করতে পারেন।
গায়ের রং ফর্সা করার খাবার
আপনার শরীরে যদি পুষ্টি থাকে তাহলে তো সুন্দর থাকবে তাই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। নিম্নে গায়ের রং ফর্সা করার খাবার গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো,
পানিঃ ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কেননা ত্বকে যদি পানি কমে যায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের ব্রণ সহ অনেক সমস্যা হয়। তাই ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে হলে অবশ্যই দিনে ২ লিটার পানি পান করুন।
কলাঃ কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন "এ" । যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে। তাই প্রতিনিয়ত আপনি কলা খেতে পারেন।
গাজরঃ গাজরে থাকে ভিটামিন "এ" । যা ত্বকের ভিতরের টিস্যুগুলোকে জাগিয়ে তোলে এবং ক্ষতিকর সূর্য রশ্মি থেকে রক্ষা করে। তাই আপনি ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন।
শাকসবজিঃ গায়ের রং ফর্সা করার খাবার গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শাকসবজি খাওয়া। কেননা শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। যা আপনার শরীরের উপকারের পাশাপাশি ত্বকের উপকার করতে পারে। তাই রান্না করে খেতে পারেন আবার আপনি কাঁচা যে সবজিগুলো খাওয়া যাবে, সেগুলো খেতে পারেন। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
গ্রিন টিঃ গ্রিন টি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। রূপচর্চার জন্য গ্রিন টি দারুণ কাজ করে। কেননা এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন বি সহ বিভিন্ন ধরনের উপাদান। যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের টক্সিন কে বের করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে পারে। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ, ছাপ ইত্যাদি দূর করে।
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায়
মানুষ কখনোই কালো থেকে একেবারে ফর্সা হতে পারে না তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং খাবারের মাধ্যমে সৌন্দর্য ফিরে আসে। তাই নিম্নে কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো,
পাকা পেঁপেঃ পাকা পেঁপের মধ্যে এক ধরনের এনজাইম রয়েছে। যা ত্বকের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। তাই আপনি এক টুকরা পেঁপে নিয়ে পেস্ট বানিয়ে এর সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করুন। এরপর ১৫ মিনিট মুখে মাখিয়ে নিন। এরপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাবেন।
দুধ ও শুকনা কমলার খোসাঃ আপনার গায়ের রং ফর্সা করার ক্রিম ব্যবহার করার ফলে ত্বকের অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই আপনি ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন তা হলো, ত্বকের কালো দাগ ও ত্বকের নিচে অনেক ময়লা থাকে সেগুলো দূর করতে কমলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন। এতে অনেক উপকারী রয়েছে। তাই আপনি কমলার খোসা ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।
এরপরে তিন থেকে চার চামচ কমলার খোসার গুড়া এর সাথে পরিমাণ মতো দুধ মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করতে থাকুন এতে অনেক উপকার পাবেন। কেননা কমলাতে সাইট্রিক এসিড রয়েছে। তা ত্বকের কালো দাগ দূর করতে পারে এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখতে পারে।
আপনি কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় হিসেবে, এই উপাদান গুলো ব্যবহার করার পাশাপাশি আপনি নিয়মিত গোসল করবেন, রোদে গেলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন, এছাড়াও ময়লা দূর করার জন্য প্রতিদিন দুইবার ফেসওয়াশ মুখ ধুয়ে ফেলবেন।
শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায়
আপনার গায়ের রং যদি শ্যামলা হয়, তাহলে শ্যামলা তার ফর্সা করার উপায় গুলো জেনে নিতে পারেন নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো কিভাবে শ্যামলা ত্বক ফর্সা করা যায়,
কলা ও দুধের মিশ্রণঃ কলা ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। তাই আপনি একটি কলাকে অর্ধেক করে তার সাথে পরিমাণ মত দুধ মিশিয়ে নিন। এমনভাবে মিশ্রণটা করবেন যেন একদম মিশ্রিত হয়ে যায় এবং এরপরে মুখে লাগিয়ে নিন। ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটা ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা করবে।
ডাবের পানিঃ ডাবের পানির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা শরীরের ও ত্বকের জন্য অনেক উপকার। তাই আপনি প্রতিদিন ২ বার করে ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুইতে পারেন। এতে আপনার শ্যামলা বরণ রঙ ফর্সা হতে সাহায্য করবে। কেননা ডাবের পানি মুখের উজ্জ্বলতা এবং কালো দাগ গুলো দূর করতে পারে।
মুলতানি মাটিঃ আপনার শরীরের শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম উপায় হলো মুলতানি মাটি। কেননা মুলতানি মাটি তৈলাক্ত ভাবটা দূর করে। তাই আপনি মুলতানি মাটির সাথে কাচা দুধ এবং হলুদের গুঁড়া মিক্সড করে এরপরে মুখে মাখিয়ে নিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে ঠাণ্ডা পানিতে দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মুখের তৈলাক্ত ভাবটা দূর হয়ে যাবে এবং কাঁচা দুধের মধ্যে যে লেক্টিক এসিড থাকে তা ত্বকের কালো ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
মুখ ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
মুখে ক্রিম দিয়ে ত্বক ক্ষতি না করে আজ থেকে ঘরোয়া উপায় শুরু করুন। নিম্নে মুখ ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো,
আলুর রসঃ আপনার মুখ যদি ঘরোয়া উপায়ে ফর্সা করতে চান। তাহলে প্রথমে দুই তিনটা আলু নিন এরপর সেটা ব্লেন্ডার করে রাতে ঘুমানোর পূর্বে পরিমাণ মতো মুখে লাগিয়ে নিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানিতে দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন। এভাবে সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করুন আশা করা যায় কিছুদিনের মধ্যেই ভালো ফলাফল পাবেন।
নিয়মিত ঘুমঃ অনেকে নিয়মিত ঘুমাতে পারে না। এর কারণে চোখের নিচে কালো দাগ হয়ে যায়। এছাড়া মুখেও বিভিন্ন ধরনের ব্রণ উঠে। এতে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত সৃষ্টি হয়। তাই আপনি গায়ের রং ফর্সা করার ক্রিম ব্যবহার না করে যদি নিয়মিত ঘুমান, তাহলে আপনার মুখ পরিষ্কার এবং ফর্সা দেখাবে। এজন্য আপনাকে প্রতিদিন .৬ থেকে ৮ ঘন্টা গভীর ঘুম দিতে হবে।
পুষ্টিকর খাবারঃ পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে যার কারণে আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব না হলে মুখে কোন ধরনের দাগ উঠবে না এবং উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে। উপরোক্ত খাবার গুলোর মাধ্যমে আপনার মুখ ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম।
এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
অ্যালোভেরা এমন একটি উপাদান যা ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। তাই নিম্নে এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো,
এলোভেরা ও লেবুঃ লেবুতে থাকে ভিটামিন সি যা দাগ দূর করতে অনেক সহযোগিতা করে। তাই আপনি এলোভেরা জেল ও লেবুর মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর হয়ে যাবে। তার জন্য আপনি অ্যালোভেরা জেল পরিমাণ মতো নিন এবং এর সাথে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করুন। এরপরে পাঁচ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখার পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে এবং কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।
টক দই ও এলোভেরাঃ টক দই ও অ্যালোভেরার মিশ্রণটি ত্বকের জন্য অত্যন্ত কার্যকারী। তাই আপনি পরিমাণ মতো অ্যালোভেরা জেল, টক দই দিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করে ১৫ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন।
অনেক মানুষ প্রাকৃতিক এই বিষয়গুলো ব্যবহার করেনা। যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই আপনি নারিকেলের তেলের সাথে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন এবং অ্যালোভেরার সাথে গোলাপজল পরিমাণ মতো মিশিয়ে নিন। ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগানোর পর পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।এভাবে নিয়মিত করলে অনেক উপকার পাবেন।
গায়ের রং ফর্সা করার ক্রিম
আমরা অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ক্রিম ক্রয় করে তাকে লাগায় কিন্তু এটা অত্যন্ত ক্ষতিকর তাই নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
বাংলাদেশে মুখের বা গায়ের রং ফর্সা করার ক্রিম বাজারে পাওয়া যায়। যা অধিকাংশই বিএসটিআই অনুমোদিত না। সেগুলো ক্রিম ডাক্তারদের গবেষণা মতে অধিকাংশই ক্ষতিকর। আপনার ত্বকের যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে প্রথমত একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে চিকিৎসা নিবেন। কেননা একজন চিকিৎসক কখনোই এই সকল ক্রিমগুলো ব্যবহার করতে বলবে না।
তারা দেখবে এটা কোন রোগের কারণে এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী তিনি ঔষধ অথবা যদি মনে করেন যে এই ক্রিমটা অনেক ভালো তাহলে তিনি দিতে পারেন। তখন আপনি এটা ব্যবহার করতে পারেন।
তারা এগুলো দাবি করেছে যে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এর ভিতরে কোন ভেজাল নেই, যার কারণে তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না। তারপরও আপনি একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শের মাধ্যমে ক্রিমটা ব্যবহার করবেন।
আমাদের শেষ কথা
পরিশেষে বলা যেতে পারে যে, গায়ের রং ফর্সা করার ক্রিম ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বকের জন্য বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে। তাই আপনার যদি ত্বকের কোন সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ওষুধ অথবা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। আর যদি সামান্য কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি ঘরোয়া উপায় গুলো প্রয়োগ করতে পারেন কারণ এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। আপনি যদি পোস্টটা পড়ে উপকৃত হন, তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url