খালি পেটে আনারস খাওয়ার অপকারিতা-দুধ আর আনারস খেলে কি হয়
আনারস এর উপকারিতা রয়েছে কিন্তু খালি পেটে আনারস খাওয়ার অপকারিতা রয়েছে। অনেকেই খালি পেটে ফল খাওয়া শুরু করে, এটা মোটেও ঠিক নয়। চলুন, আনারস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
অনেকেই মনে করে যে দুধ ও আনারস একসাথে খেলে মানুষ মারা যায়। এটা একদমই অবৈজ্ঞানিক কথা এবং কুসংস্কার মূলক কথা। তাই খালি পেটে আনারস খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃখালি পেটে আনারস খাওয়ার অপকারিতা-দুধ আর আনারস খেলে কি হয়
আনারসের উপকারিতা
আনারসের মাঝে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। তাই আনারসের গুরুত্ব অনেক নিম্নে আনারসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
হজমশক্তি বৃদ্ধি করেঃ আপনার যদি হজম শক্তি কম হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আনারস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কারণ আনারসের মাঝে এক ধরনের এনজাইম রয়েছে যেটা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
পুষ্টির অভাব দূর করেঃ আনারসের মধ্যে যে সকল পুষ্টি রয়েছে তা আমাদের শরীরের পুষ্টির ঘাটতি থাকলে সেটা পূরণ করতে সাহায্য করবে। কেননা আনারসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম ইত্যাদি। কেননা আনারসের উপকারিতা রয়েছে। আপনার পুষ্টির অভাব দূর করতে অবশ্যই আনারস খেতে পারেন।
ওজন কমানোঃ আপনার যদি ওজন বেশি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত আনারস খেতে পারেন। কেননা আনারসের মাঝে এক ধরনের ফাইবার থাকে এবং ফ্যাট কম থাকে এর কারণে শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
রক্ত জমাটে বাধা প্রদান করেঃ আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহ যদি বাধাপ্রাপ্ত হয় সেক্ষেত্রে স্ট্রোক করতে পারে। তাই আনারসের মাঝে এক ধরনের এনজাইম রয়েছে সেটা রক্ত জমাটে বাধা প্রদান করতে সাহায্য করে।
যার কারণে রক্ত সুন্দর মত চলাচল করতে পারে এবং হৃদপিন্ডেও রক্ত চলাচল করতে অসুবিধা হয় না। হৃদপিণ্ড আমাদের শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে আর এই হৃদপিণ্ড ভালো থাকলে আমরাও সুস্থ থাকব। তাই আনারস রক্ত গুলো দ্রুত চলাচল করে হৃদপিন্ডে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে।
কৃমিনাশক হিসেবেঃ আপনার যদি কৃমি সমস্যা হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে নিয়মিত ভাবে আনারস খেলে কৃমির উৎপাত থেকে রক্ষা পাবেন। আর এই কৃমির সমস্যা থেকে সমাধান করার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে যদি আপনার পেটে গ্যাস না থাকে বা গ্যাস্ট্রিক না হয় সে ক্ষেত্রে আনারস খেতে পারেন। তাই চেষ্টা করবেন খালি পেটে না খাওয়ার। এটা কৃমি দূর করতে সাহায্য করবে।
দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষাঃ দাঁত কে রক্ষা করতে হলে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। আর আনারসের মধ্যে অনেক ক্যালসিয়াম রয়েছে। তাই আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় আনারস রাখতে পারেন। এতে করে দাঁতের মধ্যে যে জীবাণুগুলো সংক্রমণ করে সেগুলোকে দূর করতে সাহায্য করে এবং দাঁতকে সুন্দর রাখে।
হাড় গঠনেঃ হাড় গঠনে আনারসের উপকারিতা রয়েছে। কেননা আনারসের মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ আর এই ক্যালসিয়াম সাধারণত হাড় গঠনে ভালো কাজ করে থাকে। ম্যাঙ্গানিজ হাড় মজবুত করতে পারে। তাই আপনি নিয়মিতভাবে অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি যদি আনারস খেয়ে থাকেন, তাহলে এই ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়
অনেকেই জানে না গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়, আনারসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। কিন্তু গর্ভবতীর জন্য আনারস খাওয়ার থেকে একটু দূরে থাকতে হয়। কেননা একজন গর্ভবতী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে একটু ঝুঁকিপূর্ণ থেকে যায় বাচ্চা নষ্ট হওয়ার জন্য।
সে ক্ষেত্রে আনারসের মাঝে এক ধরনের আনারসের মধ্যে ব্রমিলিইন থাকার কারণে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কিন্তু পরিমাণে কম খেলে তেমন একটা অসুবিধা হবে না। বাচ্চা নষ্ট হওয়ার জন্য প্রায় ৩০ শতাংশ ব্রমিলিইন প্রয়োজন হয়।
কিন্তু ৩০% হতে হলে প্রায় দশটা আনারস খেতে হবে, একজন গর্ভবতী মা আর কখনোই এত আনারস খেতে পারবে না। তাই তেমন একটা ক্ষতি হবে না। তবে যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে সেই ক্ষেত্রে খালি পেটে আনারস খাওয়ার অপকারিতা হতে পারে।এছাড়া আনারসের প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি থাকার কারণে যে সকল গর্ভবতী মা ওজন বেশি তারা আনারস না খাওয়াই ভালো।
শুধু আনারসের মাঝে ব্রমিলিইন থাকে তা কিন্তু নয় টক জাতীয় খাবার গুলোর মাঝে ব্রোমলিন থাকে তার মধ্যে যেমন মাল্টা, কমলা আঙ্গুর। গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া যাবে কিন্তু পরিমাণ মতো খেতে হবে। আশা করি উপরে আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন যে গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়।
আনারস খেলে কি গ্যাস হয়
এখন আমরা জানবো আনারস খেলে কি গ্যাস হয়, আপনার যদি আগে থেকেই কোন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে কখনোই খালি পেটে আনারস খাবেন না। কেননা এতে এসিডিটি আরো বেড়ে যেতে পারে এবং পেট বদহজম, পাতলা পায়খানার, ডায়রিয়া এবং আমাশয় হতে পারে। এমনকি শুধু আনারস নয় খালি পেটে কোন টক জাতীয় খাবার খাইলেই অ্যাসিডিটি বেড়ে যায়।
আনারসের মাঝে ফ্যাটি এসিড থাকার কারণে বদ হজম হতে পারে। তবে যদি গ্যাসের সমস্যা না থাকে তাহলে আপনি আনাসার খেলে শরীরের জন্য অনেক উপকার। তাই আপনি খালি পেটে আনারস না খেয়ে খাবারের একঘন্টা পরে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
তাই আপনি আনারস কাটার সময় অথবা খাওয়ার সময় খেয়াল করবেন আনারসের মধ্যে যে মাঝখানে একটি সাদা অংশ থাকে সেটা কখনোই খাবে না। এটা খেলে হজম হতে সমস্যা হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। এতক্ষণে হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে আনারস খেলে কি গ্যাস হয়।
খালি পেটে আনারস খাওয়ার অপকারিতা
আনারস খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে কিন্তু যদি আপনার পেটে সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে খালি পেটে আনারস খাওয়ার অপকারিতা রয়েছে। নিম্নে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
নারীর গর্ভপাত ঝুঁকিঃ আনারসের মাঝে এক ধরনের ব্রোমিলিইন উপাদান রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীদের এই ব্রমিলিন গর্ভপাত করতে পারে। তবে কমপক্ষে ৩০% হতে হবে কিন্তু একজন গর্ভবতী মা যতটুকু আনারস খাবে এতে তেমন একটা ক্ষতি হবে না। তবে এই অবস্থায় না খাওয়াই ভালো। আপনার শরীর উপর নির্ভর করবে এবং একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে পরামর্শ করে আনারস খেতে পারেন।
এলার্জির সমস্যাঃ যাদের ত্বকে এলার্জি সমস্যা রয়েছে অথবা শরীরে বিভিন্ন জায়গায় এলার্জি হয়ে থাকে চুলকায় এবং হাঁচি-কাঁশি লেগেই থাকে সেই ক্ষেত্রে আনারস খেলে এলার্জি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই যদি আপনার এলার্জি থেকেই থাকে সে ক্ষেত্রে সপ্তাহে দুই একদিন খেতে পারেন।
ডায়াবেটিস বেড়ে যায়ঃ আনারসের মধ্যে শর্করা বেশি রয়েছে এ ছাড়াও আনারসের সুক্রোজ ও ফ্রুক্টাস আছে। এটা ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর কেননা এটা সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর আপনি আনারস যে খেতে পারবেন না তা নয় সপ্তাহে দুই দিন খেলে তেমন ক্ষতি হবে না।
কাঁচা আনারস ক্ষতিকরঃ কাঁচা আনারস শরীরের জন্য ক্ষতিকর কেননা এটি এক ধরনের বিষাক্ত ক্রিয়া হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও কাঁচা আনারস খাওয়ার কারণে বমি শুরু হতে পারে।
পরিপাকতন্ত্র সমস্যাঃ অনেকের আনারস খাওয়ার কারণে পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা হতে পারে। যেমন পেট ব্যথা, পেট ফাঁপা দেওয়া, পেটে গ্যাস হওয়া, আমাশয়,খাদ্য হজম সমস্যা, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি। তাদের ক্ষেত্রে আনারস না খাওয়াই ভালো। বিশেষ করে খালি পেটে খেলে আরো বেশি ক্ষতি করে।
রক্ত তরল করেঃ আনারস সাধারণত রক্তকে পাতলা করে। তাই আমাদের শরীরে রক্ত জমাট বাধা প্রাপ্ত হলে সেটাকে ভেঙে দেয় এতে রক্ত পাতলা হয়ে যায় এবং রক্ত দ্রুত গতিতে চলাচল করে।
দাঁতের সমস্যা হতে পারেঃ যাদের আগে থেকে দাঁতের গোড়ালিতে শিরশির করে এবং ব্যথা করে তারা আনারস না খাওয়া ভালো। কেননা আনারস খেলে এই ধরনের ব্যথা এবং শিরশির কে আরো বাড়িয়ে দেয়।
দাঁতের ব্যথা বৃদ্ধি পায়ঃ আপনার যদি আগে থেকেই বাতের ব্যথা থাকে, সে ক্ষেত্রে আনারস খেলে আরো বাতের ব্যথা বৃদ্ধি পাবে। কেননা আনারস আপনার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল নালীর মধ্যে গেলে তখন অ্যালকোহল হয়ে যায়। এর কারণে আপনার শরীরের ব্যথা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ বিভিন্ন ধরনের ওষুধের ক্ষেত্রে আনারস ব্যবহৃত করে থাকে। কেননা আনারসের মাঝে এক ধরনের ব্রমলিন থাকে। এছাড়াও যদি আপনি এন্টিবায়োটিক ওষুধ আপনার জন্য ব্যবহার করা প্রয়োজন মনে করেন একজন চিকিৎসক। সেক্ষেত্রে আনারস খেতে নিষেধ করে থাকে কেননা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
কাঁচা আনারস মুখে ও গলায় সমস্যা সৃষ্টি করেঃ আপনি যদি কাঁচা আনারস খান সে ক্ষেত্রে আপনার গলায় এবং মুখের ভিতরে সমস্যা হতে পারে বা চুলকাতে পারে। কারণ এর ভিতরে এক ধরনের এসিড থাকার কারণে এই ধরনের সমস্যা হয়।
অতিরিক্ত অ্যাসিড থাকার কারণেঃ আনারসের মধ্যে এক ধরনের স্যালেসাইটিক এসিড থাকে। যা আপনার পেটের ভিতর গ্যাসের সমস্যার বৃদ্ধি করতে পারে, অতিরিক্ত খাওয়ার পরে অনেকে জ্বরও আসতে পারে। এ ধরনের সমস্যা থাকলে আপনি আনারস খালি পেটে খাবেন না। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
আনারসের ব্রমিলিন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ আনারসের মধ্যে যে ধরনের ব্রমিলিন থাকে তা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতি করতে পারে। আনারস আপনার শরীরের পুষ্টিকে নষ্ট করে দিতে পারে। এছাড়াও চর্মরোগ ও এলার্জির সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
আনারস খাওয়ার নিয়ম
আনারস খাওয়ার নিয়ম হলো, আপনি যদি সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি অথবা আনারসের জুস খান। সেই ক্ষেত্রে আপনার হজম শক্তি এবং পেটের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকলে সেটা সমাধান হয়ে যাবে। এছাড়াও আনারসের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটা আপনার শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ বা আক্রমণ ইত্যাদি থাকলে সেটাও দূর করে দিবে।
আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি শারীরিক ব্যায়াম করেন, ব্যায়াম করার পূর্বে এবং ব্যায়াম করার পরে আনারস খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
অনেকে রাত্রিতে ঘুমানোর পূর্বে আনারস খেয়ে থাকে এটা খাদ্য হজমের সমস্যা হতে পারে। আনারস খাওয়ার নিয়ম হলো, আপনি খাবারের আধা ঘন্টা পূর্বে অথবা খাবার আধা ঘন্টা পরে আনারস খেলে তেমন ক্ষতি করবে না।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আনারস খাবারের প্রায় দুই ঘন্টার পরে খেতে হবে তা না হলে ক্ষতি হতে পারে। আর ডায়াবেটিস রোগীরা খালি পেটেও আনারস খাবেন না। তবে বেশি খাওয়া যাবে না এক অথবা দুই কাপ খাওয়া যেতে পারে।
এছাড়া আনারস খাওয়ার আগে অবশ্য আপনি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন। কেননা আনারসের উপরে যে চামড়াটা রয়েছে সেটা ফেলে দিতে হবে এবং আনারসের মাঝখানে যে সাদা অংশ রয়েছে সেটা না খাওয়াই ভালো। এটা খেলে গ্যাস হতে পারে।
আনারস খেলে কি জ্বর কমে
অনেকেই জানতে চায় যে আনারস খেলে কি জ্বর কমে, সাধারণত জ্বর আসলে মানুষের মুখে রুচি হারিয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে টক জাতীয় খাবার খেলে ভালো লাগে বিশেষ করে আনারস জ্বরের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি আপনি আনারস খেলে জ্বর অনেকটা কম মনে হবে এবং খেতে মন চাইবে।
তাই বলে আনারস খেয়ে যে শুধু সেরে যাবে তা কিন্তু নয়। তবে এটা খালি পেটে খাবেন না। জ্বর একটা উপসর্গ মাত্র এটা কি কারণে হচ্ছে সেটা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একজন চিকিৎসা সিদ্ধান্ত নেবেন কি ওষুধ খাবেন।
সেই ওষুধের পাশাপাশি মুখে রুচির জন্য খেতে মন চায় না সেই জন্য আনারস খেতে পারেন। এটা আপনার জ্বর ঠান্ডা সর্দি কাশি অনেকটাই কমিয়ে নিয়ে আসবে। তাই আপনি জ্বর আসলে সাধারণত আনারসের জুস খেতে পারেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে আনারস খেলে কি জ্বর কমে কিনা।
দুধ আর আনারস খেলে কি হয়
অনেকে জানতে চায় দুধ আর আনারস খেলে কি হয়, দুধ আর আনারস খেলে কি মানুষ মারা যায়। এটা একদমই অবৈজ্ঞানিক কথা কেননা চিকিৎসা শাস্ত্র কোন এ ধরনের কথা নেই। দুধ আর আনারস খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে গ্যাস হতে পারে, বদহজম হতে পারে পাতলা পায়খানা ডায়রিয়া হতে পারে। কিন্তু মানুষ মারা যাবে এ ধরনের কোন কথা আজও পর্যন্ত এর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এটা একটি কুসংস্কার মূলক কথা। দুধ সাধারণত মিষ্টি জাতীয় ফল দিয়ে খাওয়া হয়। যেমন কলা দিয়ে মানুষ দুধ খেয়ে থাকে কিন্তু টক জাতীয় খাবার দেওয়া কখনো দুধ খাওয়া যায় না কেননা দুধটা নষ্ট হয়ে যায় ফেটে যায়। আর এই ধরনের দুধ খেলে সাধারণত পেটের সমস্যা হয়ে থাকে পাতলা পায়খানা বদহজম আমাশয় ইত্যাদি সমস্যা হয়ে থাকে।
এ জাতীয় ফল যার কারণে দুধের সাথে এটা মিশ্রণ হলে দুধ নষ্ট হয়ে যাবে পেটের সমস্যা সৃষ্টি হবে তাই দুধ খাওয়ার দুই থেকে তিন ঘন্টার পরে আনারস খাওয়া যেতে পারে। এতে কোন সমস্যা হবে না অনেকের পেটে ল্যাকটোজ সমস্যা রয়েছে আর এর কারণে দুধে এলার্জি থাকে এবং সমস্যা হতে পারে সে ক্ষেত্রে আনারস এবং দুধ খাওয়া যাবে না। দুধ আর আনারস একসাথে খেলে পেটের সমস্যা হয় এবং শুধু আনারস খালি পেটে খেলেও সমস্যা হয়।
দুধ আর আনারস খেয়ে মানুষ মারা যায় এই ধরনের অবৈজ্ঞানিক কথার উপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক তারা কয়েকটি ইঁদুর নিয়ে এসে তাদেরকে দুধ এবং আনারস একসাথে মিশিয়ে খাওয়ানো হয় কিন্তু তাদের কোন সমস্যা হয়নি মারাও যায়নি কোন পরিবর্তন হয়নি।
এর কারণে বোঝা যায় যে আসলে দুধ এবং আনারস খেলে মানুষ মারা যাবে না বা কোন সমস্যা হবে না। তবে যাদের আগে থেকেই পেটের সমস্যা রয়েছে তাদের হালকা হয়তো পাতলা পায়খানা হতে পারে।
এখন আসা যাক তাহলে দুধ আর আনারস খেয়ে যে মানুষ মারা যায় এই কথাটা কোথা থেকে আসলো সেটা জেনে নেওয়া যাক।
আসলে আনারস ঝোপঝাড়ে বা জঙ্গলে হয়ে থাকে এর কারণে সেখানে সাপও দেখা যেতে পারে। একজন বৃদ্ধ লোক একদিন আনারস তুলতে গেছেন সেখানে যে আনারসটা তুলছেন সেই আনারসটাতে একটি বিষধর সাপ বিষ ঢেলে দিয়েছে এর কারণে আনারস টি বিষাক্ত হয়ে গেছে।
বৃদ্ধ লোকটি সে আনারস টা বাসায় নিয়ে এসে খাওয়ার পর একটু পরে আবার দুধ খেয়েছে কিন্তু লোকটা পরবর্তীতে মারা যায়। আসলে সে দুধ এবং আনারস একসাথে খাওয়ার কারণে মারা যায় নি সে প্রকৃতপক্ষে ওই আনারসের মাঝে বিষাক্ত সাপের বিষ ছিল বিধায় সেই কারণে সে মারা গেছে।
তারপর থেকেই এলাকার লোকজন এই প্রচলনটা শুরু করে যে দুধ আর আনারস খেলে মানুষ মারা যায়। এটা আসলে একটি অবৈজ্ঞানিক এবং কুসংস্কার মূলক কথা যার কারণে এই কথার কোন ভিত্তি নেই। এতক্ষণে হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে দুধ আর আনারস খেলে কি হয়, দুধ আর আনারস একসাথে খেলে তেমন কোন ক্ষতি হবে না।
লেখকের শেষ কথা,
পরিশেষে বলা যায় যে, খালি পেটে আনারস খাওয়ার অপকারিতা রয়েছে। যাদের পেটের সমস্যা নেই তাদের জন্য অনেক উপকার, তবে যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ক্ষতিকর। তাই উপরোক্ত বিষয়গুলো যদি আপনি মেনে চলেন, তাহলে আনারস খাওয়ার উপকারিতা পাবেন। আশা করি আজকের পোস্টটি থেকে আপনি উপকৃত হবেন। যদি পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url