কাঁচা বা পাকা বেলের শরবত খাওয়ার নিয়ম জানুন-বেলের শরবতের উপকারিতা

বেলের শরবত খাওয়ার নিয়ম ও পরিমাণ মত খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার করবে। চলুন, বেলের শরবতের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
কেউ পছন্দ করে পাকা বেল আবার কেউ পছন্দ করে কাঁচা বেল। তবে পাকা বেল শরবত বানানোর ক্ষেত্রে খুবই সুবিধা এবং অনেক উপকার রয়েছে। তাই বেলের শরবত খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃকাঁচা বা পাকা বেলের শরবত খাওয়ার নিয়ম জানুন-বেলের শরবতের উপকারিতা

পাকা বেল খাওয়ার উপকারিতা

বেল সবাই খেয়ে থাকে, পছন্দনীয় একটি ফল। এটা কাঁচা পাকা দুটোই উপকার রয়েছে। তাই পাকা বেলের শরবত খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ সাধারণত মানুষের গ্যাস, পেট ফাঁপা, বদহজম এ ধরনের সমস্যা বেশির ভাগ হয়ে থাকে। এছাড়াও অনেকের বমি বমি লাগে এই ধরনের সমস্যার সমাধান করার জন্য আপনি বেলের শরবত খেতে পারেন। এছাড়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখাতে পারে তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এতে আপনার এই সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

শরীরকে ভালো রাখেঃ শরীরকে ভালো রাখতে হলে অবশ্যই আপনাকে ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে হবে। যা খাবার গুলো শক্তি যোগায়, তাই আপনি বেলের শরবত খেলে প্রচুর পরিমাণে এনার্জি পাবেন। পেশি কে মজবুত করতে হলে বেলের শরবত খাওয়ার যেতে পারে। আপনার যখন শরীর ক্লান্ত লাগবে তখন বেলের শরবত খেয়ে নিবেন এতে আপনার শরীরে শক্তি যোগাবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়েঃ বেল খেলে মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে থাকে। কেননা এর মাঝে আছে ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা করতে পারে। এছাড়াও এটা রক্ত পরিষ্কার করতে পারে, রক্ত সঞ্চালন দ্রুত করতে পারে এবং শরীরের ভিতরে খারাপ টক্সিন যদি থাকে সেগুলো দূর করে শরীরকে পরিষ্কার রাখবে। তাই এই এগুলো দূর করার জন্য প্রতিদিন সকালে বেলের শরবত খেতে পারেন।

কিডনি সুস্থ থাকেঃ সাধারণত ডাক্তারগন বেশি বেশি বেল খেতে বলে কারণ এর মাঝে যে পুষ্টিগুণ আছে তা বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ থেকে মুক্ত রাখে এবং কিডনি সুস্থ থাকে।

আলসারের সমস্যাঃ অনেকেরই গ্যাস্টিক থেকে আলসার হয়ে যায় আর এই আলসার হলে আপনি যে কোন ঝাল জাতীয় খাবার খেতে পারেন না এবং অনেক পেটের মধ্যে জ্বালাপোড়া করতে থাকে। এই ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্য বেলের শরবত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ ডায়াবেটিস রোগীরা মিষ্টি জাতীয় অনেক ফল খেতে পারে না। সে ক্ষেত্রে বেলটা খাওয়া যেতে পারে এতে এক ধরনের পুষ্টি যা রক্তের শর্করা কমাতে পারে। তবে ডায়াবেটিসের রোগী কখনোই শরবত খাবেন না এটি সরাসরি খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করাঃ কোষ্ঠকাঠিন্য যাদের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিতভাবে প্রতিদিন সকালে বেলের শরবত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। কারণ বেলের মধ্যে যে ফাইবার রয়েছে যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পায়খানা নরম করে। এটার কারণে গ্যাস্ট্রিক ও হজমের সমস্যা এবং এসিডিটি সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো করেঃ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। বেল ও বেলের পাতার মাঝে রয়েছে ভিটামিন এ। যা চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে এবং চোখের বিভিন্ন রোগ যেমন গ্লুকোমা দূর করে। এছাড়াও চোখের পুষ্টি ক্ষেত্রে উপকার করে এটা যেমন শরীরের জন্য ভালো কাজ করে তেমনি চোখের জন্য উপকার করে থাকে।

বেলের শরবত খেলে যেমন উপকার পাওয়া যাবে ঠিক তেমনি বেল পাতার রস মধু দিয়ে যদি মিক্সড করে খায়। সেই ক্ষেত্রে চোখের ছানি পড়া অনেক টাই সেরে যায়। তাই নিয়মিত ভাবে চোখের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বেল খাওয়া যেতে পারে।

ঠান্ডার সমস্যা সমাধানঃ যাদের ঘন ঘন ঠান্ডা লাগে তারা যদি এই বেলের শরবত খায় তাহলে তাদের এই ঠান্ডা দূর হয়ে যাবে। কেননা বেলের মধ্যে ভিটামিন সি রয়েছে যা ঠান্ডা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া বেলের পাতার রস খেলেও ঠান্ডা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

ত্বক ভালো থাকেঃ আমাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের ব্রণ উঠে এবং বিভিন্ন ধরনের দাগ থেকে থাকে সেই ক্ষেত্রে বেলের শরবত খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে এবং এই সকল ত্বকের সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে এবং ত্বককে সুন্দর উজ্জ্বল রাখবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ বেলের মধ্যে এন্টি এক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে। যেমন স্তন ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সার ইত্যাদি ক্যান্সার গুলো থেকে প্রতিরোধ করতে পারবে। বিশেষ করে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার ও জরায়ু ক্যান্সারে বেশিরভাগ ভুগতে থাকে। নিয়মিত বেলের শরবত খেলে এই সকল ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারবে।

বেলের মধ্যে বেটা ক্যারোটিন থাকার কারণে মানব দেহের কোষ বৃদ্ধি হতে দেয় না। যার কারণে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে তাই আপনি এই ধরনের ক্যান্সার থেকে প্রতিরোধ করার জন্য বেলের শরবত নিয়মিত খেতে পারেন।

বেলের শরবতের উপকারিতা

আমরা বিভিন্ন ধরনের শরবত খেয়ে থাকি তবে বেলের উপকারিতা সবচাইতে বেশি। তাই আপনি বেলের শরবত নিয়মিতভাবে খেতে পারেন। কেননা বেলের মধ্যে সবচাইতে বেশি পুষ্টি থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই দরকার।

কেননা এর মাঝে যে ফাইবার রয়েছে তা কোষ্ঠকাঠিন্য কে দূর করতে পারে। তাই নিয়মিতভাবে আপনি বেলের শরবত খাবেন এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি এবং খনিজ পদার্থ। ভিটামিন সি সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো করে। তাই বেলের মাঝে ভিটামিন সি রয়েছে এটা খেলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে এবং বিভিন্ন ধরনের সর্দি কাশি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

বেলের ভিতরে যে শাঁস আছে বা পিচ্ছিল আঁকার হয়ে থাকে এটা আমাদের অন্ত্রের জন্য খুবই উপকার। আমাদের পাকস্থলীর জন্য খুবই ভালো কাজ করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। বেলের মধ্যে ভিটামিন এ থাকার কারণে চোখের পুষ্টি ভালো রাখে এবং চোখকে সুস্থ রাখে। অনেকের মলদ্বারের সমস্যা থাকে যেমন পাইলস, এনাল ফিসার এই ধরনের রোগীদের শরবত খেলে পায়খানা পরিষ্কার হবে।

আপনি যদি নিয়মিতভাবে বেলের শরবত খেতে পারেন তবে অবশ্যই এই বেলের শরবত খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে।এটা গ্যাস থেকে আলচার এর মত রোগ থেকে মুক্তি দেয়। কেননা এর মাঝে রয়েছে ফাইবার যা শরীর গ্যাস্ট্রিক আলচার দূর করে। তাই প্রতিদিন আপনি বেলের শরবত খেতে পারেন।

এছাড়াও শরীরে ক্লান্তিকর দূর করতে বা শক্তি যোগাতে আপনি বেলের শরবত খেলে শরীরকে সুন্দর রাখবে। এছাড়াও পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হজম সমস্যা আমাশায়, ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি এই ধরনের দীর্ঘদিন যাবত যাদের এই সমস্যাগুলো থাকে তারা সাধারণত বেলের শরবতের উপকারিতা অনেক পাবেন।

বেলের শরবত খাওয়ার নিয়ম

আপনি যদি শরবত খেতে পছন্দ করেন তাহলে অবশ্যই বেলের শরবত খুবই উপকার হবে। তবে বেলের শরবত খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী ও পরিমাণ মতো খেতে হবে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

বেল সাধারন তো দুপুরের পরে খাওয়াটাই ভালো হয়। কেননা ওই সময় পানির পিপাসা বেশি লাগে এবং শরীরে ক্লান্ত বোধ লাগে সেই ক্ষেত্রে আপনি ক্লান্তি দূর করার জন্য দুপুরের খাওয়ার কিছুক্ষণ পর আপনি বেলের শরবত খেলে মনের সতেজ লাগবে এবং কাজ করতে ভালো এনার্জি পাবেন।
ছবি
এছাড়া আপনি বিকালের দিকে বেলের শরবত খেলে আপনার শরীরে ভালো লাগবে এবং ক্লান্তি দূর হবে শক্তি পাবেন। এই বেল কিন্তু কদবেল নয় এটা হল বড় আকারের যে বেল পাওয়া যায় সেই বেল খেতে হবে। কেননা বেলের মাঝে রয়েছে ভিটামিন এ ও সি। যা আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।

আপনি একটি বেল নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ৫ থেকে ১০ মিনিটের মত। এরপরে ভালো করে কচলাতে থাকুন এতে রসগুলো বের হলে ছাকনি দিয়ে সুন্দর করে ছেকে নিবেন।
ব্লেন্ডার করে নিলে অনেক সুন্দর ফ্লেভার আসবে এরপরে গ্লাসে ঢেলে এর সাথে বেদনা চেরি আর অন্যান্য ফল দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখলে ভালো লাগবে এবং খেতেও ভালো লাগবে মনে হবে লাচ্ছি খাচ্ছি।

সিরাপটার সাথে আপনি বেলের শরবতটা মিক্স করতে পারেন। এতে অনেক সুস্বাদু লাগবে যদি আপনার ডায়াবেটিস না থাকে তাহলে চিনি মিশাবেন আর যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে চিনি দিবেন না। এভাবে খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যাবে এবং সুস্বাদু হবে যদি দেখেন বেল পাকা হয়ে থাকে এবং নরম হয়ে গেছে তাহলে বেলের শরবত বানিয়ে খাওয়াটাই ভালো হবে। আর যদি বেল কাচা থাকে সে ক্ষেত্রে অন্যভাবে খেতে হবে।

তবে বেলের শরবত ১২ ঘণ্টার মধ্যে খেয়ে নিতে হবে এর বেশি সময় পার করলে এটা নষ্ট হয়ে যাবে এবং শরীরে বিভিন্ন ক্ষতি করতে পারে। তাই একবার শরবত খাওয়ার পর ১২ ঘণ্টার মধ্যে আবার খেয়ে নিতে পারেন। আর অবশ্যই পঁচা বা ফাটা বেলের শরবত খাবেন না এতে ক্ষতি হতে পারে। অবশ্যই টাটকা বেলের শরবত খাবেন এতে অনেক উপকার পাবেন।

কাঁচা বেল খাওয়ার নিয়ম

আমরা যখন বেলের শরবত খাব তখন সেই ক্ষেত্রে দেখতে হবে বেলটা পাকা না কাঁচা। কেননা কাঁচা বেল খাওয়ার নিয়ম আলাদা রয়েছে এবং পাকা বেল খাওয়ার নিয়ম ভিন্ন রয়েছে। সেজন্য আপনি চেষ্টা করবেন বেলটি আগে সনাক্ত করা। কেননা পাকা বেল এর শরবত তৈরি করা অত্যন্ত সহজ কিন্তু কাঁচা বেল অনেকটাই কঠিন।

তবে কাঁচা বেল খাওয়ার উপকারিতা সবচাইতে বেশি। প্রথমত আপনি একটি কাঁচা বেল পানির ভিতরে নিয়ে সেটা সিদ্ধ করবেন। এরপরে এটা শরবত বানাতে পারেন। আর শরবত বানানো জন্য প্রথমে আপনি গরম পানির মধ্যে একটি কাঁচা বেল দিয়ে এমনভাবে সিদ্ধ করবেন যেন পাকা বেল এর মত হয়।

এরপর একটি সুন্দর ফ্লেভার আসবে সেদ্ধ বিলটি পানির মধ্যে নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিবেন। এরপরে এর সাথে অন্য কোন শরবত বানাবেন আপনি যদি ঘন ভাবে খেতে চান তাহলে পানি কম দেবেন আর যদি পাতলা করে খেতে চান সে ক্ষেত্রে পানি বেশি দিবেন। এর পরে বেলটি সুন্দর করে মাখিয়ে নিবেন এবং বেলটির আঁশগুলো সুন্দর করে ছাকুনি দিয়ে ছেঁকে নিবেন।

এর পরে দানাগুলো অন্য একটি গ্লাসের মধ্যে রেখে তার ভেতরে যদি আপনার ডায়াবেটিস বা অন্য কোন সমস্যা না থাকে তাহলে চিনি দিয়ে মিক্স করে খেতে পারেন। কেননা এই কাঁচা বেল অনেক উপকার করে থাকে বিশেষ করে যাদের দীর্ঘদিন যাবত পাতলা পায়খানা, ডায়রিয়া, আমাশয় এই ধরনের রোগ থাকে তারা নিয়মিতভাবে এই কাঁচা বেল খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী যদি খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই এই সকল রোগগুলো থেকে মুক্তি পাবেন।

গর্ভাবস্থায় বেল খাওয়ার উপকারিতা

অনেক গর্ভবতী মা তারা শরবত খেতে পছন্দ করে তাই তারা বেলের শরবতটা খেতে পারেন। কেননা গর্ভাবস্থায় বেল খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। অনেকে পাকা বেল এমনি খেতে পছন্দ করে আবার অনেকে শরবত খেতে পছন্দ করেন তো যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা শরবত বানিয়ে না খাওয়াই ভালো।

এতে রক্তের শর্করা বৃদ্ধি পেতে পারে আর গর্ভবতী মায়েরা যদি তার ডায়াবেটিস না থাকে সেই ক্ষেত্রে শরবত বানিয়ে খাওয়ায় ভালো। তবে বেশি খাওয়া যাবে না এতে ক্ষতি হবে। আমরা সাধারণত গর্ভাবস্থায় দেখি আপেল, কমলা মাল্টা এ ধরনের ফলগুলো বেশি খেয়ে থাকি কিন্তু বেল যে কত উপকারী একটি ফল সেটা আমরা অনেকেই জানিনা।

কেননা এর মাঝে রয়েছে ভিটামিন এ, যা আপনার বাচ্চার চোখের সমস্যা দূর করবে। এরপর ভিটামিন সি গর্ভবতির বাচ্চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এছাড়াও আরো অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান আছে। যা একটি শিশুর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে তাই একজন গর্ভবতী মা নিয়মিতভাবে প্রতিদিন এক গ্লাস করে শরবত যদি খায় তাহলে অনেক উপকার পাবে।

এই বেলের শরবত সাধারণত গরমের দিনে মানুষের তৃষ্ণা পেলে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে পেট ঠান্ডা থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় কেননা গর্ভবতী মায়েদের এই সময়ে আয়রন এবং ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে অনেক সময় কষ্ট কাঠিন্য দেখা যায়।

আর এজন্য ফাইবার জাতীয় খাবার দরকার হয় আর এই বেলের মাঝে ফাইবার রয়েছে বিধায় প্রতিদিন যদি একজন গর্ভবতী মা বেলের শরবত খায় তাহলে এই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে এবং তার হজম শক্তি বা খাবারের রুচি ফিরে আসবে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়ের এই সময় প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের প্রয়োজন হয়।

সেই ক্ষেত্রে বেলের মাঝেও অনেক ধরনের ভিটামিন রয়েছে যেমন প্রোটিন আছে শর্করা থায়ামিন ক্যারোটিন আরো অন্যান্য পুষ্টিগুণ রয়েছে যা একজন গর্ভবতী মায়ের খুবই প্রয়োজন। তাই একজন গর্ভবতী মা নিয়মিত ভাবে শরবত খেলে অনেক উপকার পাবেন।

আপনি যদি পাকা বেল খান সেই ক্ষেত্রে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে সেটা সুন্দর করে পানিতে ভিজিয়ে ৫-১০ মিনিট রাখার পরে চিপে নিবেন। রসগুলো বের করার পরে সেটা ছাকুনি দিয়ে ছেঁকে নেবেন, অন্য কোন উপাদান মিক্সড করে খেতে পারেন এতে অনেক উপকার পাবেন।

আর যদি কাঁচা বেল হয় সে ক্ষেত্রে সিদ্ধ করে নিয়ে নরম হলে আপনি সেটা গ্লাসের মধ্যে বা কোন পাত্রের মাঝে নিয়ে সেটার সেকেন্ড এয়ার চিবিয়ে নেওয়ার পরে জিপিএ নিবেন এরপরে সেটা অন্য কিছু দিয়ে মিক্স করে খেলে আপনার শরীরে অনেক উপকার আসবে এবং শক্তি আসবে। তাই গর্ভাবস্থায় বেল খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। তাই আপনি নিয়মিত বেল ও বেলের শরবত খেতে পারেন।

বেল পাতার উপকারিতা

বেল খাওয়া যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি বেল পাতার উপকারিতা রয়েছে। তাই বেলপাতা খাওয়ার নিয়ম গুলো জানা দরকার। কিভাবে বেল পাতা খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে এবং বেল পাতার শরবত তৈরি করতে হয় কিভাবে সেটাও জানা দরকার। চলুন জেনে নেওয়া যাক বেলপাতা সম্পর্কে বিস্তারিত,
ছবি
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ বেলপাতার রস যদি আপনি নিয়মিত খান সে ক্ষেত্রে রক্তের শর্করা বৃদ্ধিটা কমিয়ে নিয়ে আসবে। এতে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের অনেকটাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

তাই ডায়াবেটিস রোগীরা পরামর্শ থাকবে প্রতিনিয়ত বেলপাতার রস খেলে অনেক উপকার পাবেন। সেগুলো সমস্যার সমাধান করে থাকে এবং ফাইবার যুক্ত খাবারের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।

পেটের সমস্যা দূর করেঃ এছাড়াও বেলপাতা আমাশয় জন্য সবচাইতে ভালো কাজ করে থাকে। যদি আপনি নিয়মিতভাবে বেলের পাতার রস খেতে পারেন।

এছাড়াও গ্যাস্ট্রিক, আলসার, ডায়রিয়া ইত্যাদি এই ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুইবার, দুই তিনটা বেলপাতা নিয়ে সেটা ভিজিয়ে রাখার পরে আপনি এটা চিপে নিয়ে রস বের করে ছাকনি দিয়ে ছেকে যদি নিয়মিত খান তাহলে সে ক্ষেত্রে অনেক উপকার পাবেন।
ঘামের দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা করেঃ বেল পাতার মধ্যে যে পুষ্টি উপাদান সেটা ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে পারে আর যাদের শরীরে ঘাম বেশি হলে যদি দুর্গন্ধ হয়। সেক্ষেত্রে নিয়মিতভাবে বেলের পাতার রস খেলে আপনার এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

গর্ভবতীদের জন্য উপকারঃ গর্ভবতীদের এ সময় প্রয়োজন হয় ভিটামিন ক্যালসিয়াম আয়রন ফলিক এসিড ইত্যাদি আর এই পুষ্টি উপাদানগুলো বেল পাতার রসের মাধ্যমে আপনি পেয়ে যাবেন। তাই নিয়মিত ভাবে বেলের শরবত খাবেন ও বেলের পাতার রস খাবেন এবং বেলের শরবত খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

তারুণ্য ধরে রাখেঃ বেল ও বেল এর শরবত খেলে যেমন উপকার পাওয়া যায় ঠিক তেমনি বেল পাতার শরবত বানিয়ে খেলেও সেটাও আপনার তারুণ্য যৌবনকে ধরে রাখবে। আর এর মাঝে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। 

তাই শরীরকে ঠান্ডা এবং শীতল রাখতে হলে প্রতিদিন বা সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন সকাল বেলা বেলের পাতার রস খেলে অনেক উপকার মিলবে। বেল পাতার উপকারিতা রয়েছে অনেক যেমন বেলের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। যেমন ভিটামিন সি'র কারণে স্কার্ভি রোগ হয় মুখে ঘা হয় এই ধরনের রোগ থেকেও আপনি মুক্তি পাবেন যদি নিয়মিত খেতে পারেন।

আমাদের শেষ কথা,

পরিশেষে বলা যেতে পারে যে বেলের শরবত খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে দীর্ঘদিন পাতলা পায়খানা, আমাশয়, ডায়রিয়া ইত্যাদি। তবে বেলের শরবত খাওয়ার নিয়ম ও পরিমান মত খেতে হবে তাহলে আপনি উপকৃত হবেন। তাই পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট পোস্টটি শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪