প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা

প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। তবে খালি পেটে কলা খাওয়া যাবে না। এতে আপনার এসিডিটি বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই অন্যান্য খাবারের সাথে কলা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। চলুন, কলা খেলে কি গ্যাস হয় বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে আয়রনের ও ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। আর কলার মাঝে রয়েছে ভিটামিন, আইরন, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম ইত্যাদি। তাই প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃপ্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা খেলে কি ওজন বাড়ে

কলা খেলে কি ওজন বাড়ে, আসলে কলা খেলে ওজন বাড়া বা কমা এটা নির্ভর করবে কলা খাওয়ার উপরে ভিত্তি করে। আপনি যদি কলা খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমাতে চান তাহলে সেভাবে কলা খেতে হবে। আবার যদি ওজন বাড়াতে চান সে ক্ষেত্রেও কলা খাওয়ার নিয়ম বা পদ্ধতি রয়েছে। চলুন কলা খেলে কি ওজন বাড়ে এ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

আপনি যদি ওজন বৃদ্ধি করতে চান সেই ক্ষেত্রে মিল্কশেক হিসাবে কলা খাওয়া যেতে পারে। গরম দুধের মধ্যে কলা মিক্সড করে খেলে ওজন বাড়বে। তাছাড়া আপনি যদি দৈনিক ৮ থেকে ১০ টি কলা অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি থাকেন সেই ক্ষেত্রে আপনার ওজন বাড়বে। তবে যেমন কলা খেলে ওজনও বাড়তে পারে এবং নিয়ম পদ্ধতি হিসেবে খেলে ওজন কমতেও পারে।
একজন সুস্থ মানুষ প্রতিদিন ১ থেকে ২ টি কলা খেলে ক্ষতি হবে না বরং শরীরে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করবে। ওজন বাড়বে না ওজন ঠিক থাকবে। তবে আপনি যদি দুটি কলা খান সেক্ষেত্রে আরো অন্য কোন ফল খাওয়ার প্রয়োজন নেই। কেননা কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি থাকে। তাই কলা খাওয়ার সাথে ওজন বৃদ্ধি বা কমানোর কোন সম্পর্ক নেই।

কলার মধ্যে থাকে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এছাড়াও ভিটামিন, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ফাইবার কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি। যেহেতু কলার মধ্যে শর্করা রয়েছে এটা খাওয়ার পাশাপাশি আপনি অন্যান্য ফল খেতে পারেন। তবে অন্যান্য ফলের চাইতে এর মাঝে শর্করা বেশি।

ডায়াবেটিসে কলা খাওয়া যাবে কি

ডায়াবেটিসে কলা খাওয়া যাবে কি, খাওয়া যাবে তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে পরিমাণ মতো খেতে হবে। কলা সাধারণত সবাই খেতে পছন্দ করে ছোট থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত। কারণ কলা অত্যন্ত মজাদার নরম জাতীয় ফল, যার কারনে শিশু এবং বৃদ্ধরাও খেতে পছন্দ করে। তাছাড়া এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে এবং অনেক পুষ্টি আছে।

যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার। কলা অত্যন্ত মিষ্টি জাতীয় একটি ফল এটা সাধারণত ডায়াবেটিসের রোগীরা খেতে চায় না। কারণ তারা মনে করে যে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাবে কিন্তু চিকিৎসকরা বলেন মিষ্টি থাকলেও সেই মিষ্টিতে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পাবে না বরং শরীরে পুষ্টি বৃদ্ধি পাবে। 

কিন্তু কলা খাওয়া থেকে তখনই বিরত থাকতে হবে যখন কলা বেশি পেকে যাবে, এটা খয়েরী রং হয়ে যাবে সেই ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের রোগীদের কলা খাওয়া সমস্যা হতে পারে। কারণ এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বলছেন যে এই ধরনের কলার ভিতরে শর্করা বেশি বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিসের রোগীদের সমস্যা আর রক্তের শর্করা পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের বিপদ হতে পারে।

তাই ডায়াবেটিসের রোগী নিয়মিতভাবে বা মাঝারি ধরনের একটি কলা খেতে পারবে। তাই আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন এবং আপনার ডায়াবেটিস যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে নিয়মিত সকালে অন্যান্য খাবারের সাথে কলা খেতে পারেন।

আর রক্তের শর্করা যদি ঠিক থাকে সেই ক্ষেত্রে আপনি কলা খেতে পারেন। তবে ডায়াবেটিসের রোগী কাঁচা কলা খেতে পারবে। কেননা কাঁচা কলার মধ্যে যে উপাদান থাকে সেটা শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, পাশাপাশি পেটের সমস্যার উপকার করে থাকে। এতক্ষণে হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে ডায়াবেটিসে কলা খাওয়া যাবে কি, উপরোক্ত নিয়ম ফলো করলে আপনি ডায়াবেটিসের রোগী হলেও কলা খেতে পারবেন।

কলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে

কলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে, তা হলো আমরা অনেকেই মনে করি যে শীতকালে হয়তো কলা খেলে ঠান্ডা লাগবে কিন্তু এটা একদমই ভুল কথা। কলা খেলে কখনো ঠান্ডা লাগে না। তবে ঠান্ডা লাগলে কলা খাওয়া ঠিক নয়। কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আইরন, ভিটামিন বি ইত্যাদি আছে।

তাই অনেকে শীতকালে বাচ্চাদেরকে কলা খেতে দিতে চায় না, মনে করে যে ঠান্ডা লাগবে কিন্তু এটা ভুল ধারণা। কারণ কলা খেলে কখনো ঠান্ডা লাগে না। তবে শীতকালে সাধারণত যারা অ্যাজমার রোগী, এলার্জি রয়েছে, হাঁচি কাশি হতে পারে এই ধরনের রোগীগুলো কলা না খাওয়াই ভালো। কারণ শীতের সময় তারা কলা খেলে সাধারণত সমস্যা হতে পারে।

তবে সবারই যে এই সমস্যা হবে তা কিন্তু নয় যার সমস্যা হবে সেই শুধু কলা খাবেন না। আর যাদের সমস্যা হবে না সে কলা খাবে। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন যে পরিমাণ মতো কলা খেলে তেমন একটা ক্ষতি হবে না। কেননা কলার মধ্যে আছে ভিটামিন সি এটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
তবে যাদের অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে বা ঠান্ডা জনিত সমস্যা থাকে, সেই সকল রোগীরা সাধারণত সন্ধ্যার পর কলা খাবেন না। এতে ক্ষতি হতে পারে বা হাচি-কাশি বেশি হতে পারে। তাই আপনি সকালবেলা অন্যান্য খাবারের সাথে কলা খেতে পারেন এটা অনেক উপকার পাবেন।

এই সকল রোগীদের জন্য আর অনেকে মনে করে সর্দি কাশি হলে কলা একদমই খাওয়া বন্ধ করে দিবে কিন্তু কলার ভিতরে ভিটামিন সি রয়েছে যা সর্দি কাশি সারাতে সাহায্য করে। তাই পরিমাণ মতো এবং নির্দিষ্ট সময়ে কলা খেলে তেমন ক্ষতি হবেনা।

বরঞ্চ ঠান্ডা কাশি সেরে যাবে এছাড়াও শরীরে খনিজ পদার্থ পূরণ করবে। পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরে প্রায় ১০০ ক্যালোরি শক্তি পাবে। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন কলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে, কলা খেলে কখনোই ঠান্ডা লাগে না।

প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা

প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। তাই আপনি চেষ্টা করবেন সকালে খালি পেটে কলা না খেয়ে রুটি অথবা অন্য কোন খাবার এর পাশাপাশি কলা খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরের জন্য উপকার হবে। কেননা খালি পেটে কলা খেলে উপকার চেয়ে ক্ষতি বেশি হতে পারে। কারণ খালি পেটে কলা খেলে শর্করা বৃদ্ধি পাবে।
ছবি
কেননা কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ শর্করা রয়েছে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদের জন্য খুবই উপকার। পুষ্টিবিদরা বলেন যে সকাল বেলা কলা খেতে কোন মানা নেই খেতে পারেন তবে খালি পেটে খাওয়া যাবে না।

কেননা এতে এসিড হতে পারে এবং পেটের গ্যাস হতে পারে, এছাড়াও খালি পেটে কলা খান সেক্ষেত্রে আপনার ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের উপকারিতা নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া খালি পেটে কলা খাওয়ার কারণে আপনার হৃদযন্ত্রে যা এটা আক্রমণ করতে পারে।

তাই সকালে খালি পেটে কলা না খেয়ে আপনি রুটি বা পা রুটি বা অন্যান্য খাবারের সাথে খেতে পারেন, এতে কোন সমস্যা হবে না।

পুষ্টির অভাব দূর করেঃ আপনার শরীরে প্রতিদিনে পুষ্টির প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে ভিটামিন মিনারেল ইত্যাদির প্রয়োজন আছে। তাই আপনি এই ধরনের পুষ্টির সমস্যার সমাধান করার জন্য নিয়মিতভাবে কলা খেতে পারেন। কেননা কলার মধ্যে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। আর অনেক সময় অফিসের কারণে আমরা তাড়াহুড়া করে অনেক খাবার খেতে পারি না।

তাই পুষ্টিকর খাবার এবং সময় বাঁচানোর জন্য কলা এবং পাউরুটি, জেলি দিয়ে খেয়ে যাই। এতে কিন্তু সময় বাচলো এবং পুষ্টির ও সমাধান হলো। সে ক্ষেত্রে আপনি কলা এবং রুটি খেতে পারেন তবে খালি পেটে খাওয়া যাবে না। এছাড়াও কলার মধ্যে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফলেট এবং পটাশিয়াম রয়েছে। যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখবে।

পরিপাকতন্ত্র বা খাদ্য হজমঃ কলার মধ্যে যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেটা আপনার খাদ্য হজম করতে সাহায্য করবে এবং পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখবে। বিশেষ করে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা কলা খেলে তাদের মলত্যাগের সমস্যা হবে না,পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখবে। অনেক সেক্ষেত্রে আপনি প্রতিদিন অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি কলা খেতে পারেন।

শক্তি যোগায়ঃ কলা মিষ্টি জাতীয় ফল এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে শর্করা রয়েছে যা শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এর মধ্যে গ্লুকোজ এবং সুক্রোজ আছে এছাড়াও হজম শক্তিতে কাজ করে থাকে। তাই আপনি প্রতিদিন কলা খেতে পারেন।

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করেঃ কলাতে শর্করা রয়েছে সেটা ডায়াবেটিস রোগীদের তেমন একটা ক্ষতি করে না। এই শর্করাটা নিয়ন্ত্রণ থেকে এবং শরীরে তেমন প্রভাব ফেলে না। তাই আপনি সকালে কলা খেতে পারেন। এতে করে আপনার শর্করা নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

মানসিক চাপ কমায়ঃ কলার মধ্যে যে উপাদান রয়েছে সেটা মানসিক স্ট্রেসটা কমিয়ে দেয়। তাই আপনি নিয়মিতভাবে কলা খেতে পারেন।

শরীরকে বিষমুক্ত করেঃ আমাদের শরীরে যে খারাপ টক্সিন রয়েছে সেটা কলা খাওয়ার কারণে এই টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং এই ফলের মধ্যে প্রক্টিন উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ করে এবং বাধা প্রদান করে।

হার্টকে সুস্থ রাখেঃ কলার মধ্যে আছে পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং হার্টের সমস্যাকে দূর করে রক্ত চলাচল দ্রুত করার কারণে হার্ট ভালো থাকে। তাই আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে হলে সকাল বেলা কলা খেতে পারেন।

অ্যানিমিয়া সমস্যার সমাধানঃ কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আছে আয়রন যা রক্তের ভিতর লোহিত কণিকাকে বৃদ্ধি করে এবং অ্যানিমিয়া সমস্যার সমাধান করে। তাই যাদের অ্যানিমিয়া সমস্যা আছে তারা আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার সাথে কলা খাবেন এতে করে আপনার অ্যানিমিয়া সমস্যার সমাধান হবে।

কলা খেলে কি প্রেসার বাড়ে

এখন আমরা জানবো কলা খেলে কি প্রেসার বাড়ে, তাহলো কলা খেলে আপনার প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। বর্তমানে বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপের রোগী বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। বর্তমানে অল্পবয়সী তরুণদেরও এই উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

তাই নিয়ম তান্ত্রিক জীবন যাপন করা খুবই প্রয়োজন। কেননা উচ্চ রক্তচাপ কখনোই একেবারে সেরে যাবে না। তাই নিয়ন্ত্রক জীবন যাপন করুন সুস্থ থাকুন, এর জন্য কিছু খাবার দাবার আপনাকে মেনে চলতে হবে। তার মধ্যে কিছু খাবার আপনার জন্য উপকারিতা হতে পারে যেমন আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কলা খেতে পারেন।

তাই আপনি প্রতিদিন সকালে অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি পরিমাণ মতো কলা খেতে পারেন। কেননা প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। এতে আপনার প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। কলার মধ্যে পটাশিয়াম থাকে যেটা আমাদের শরীরে সোডিয়ামের প্রভাব কে দূর করতে পারে যার কারণে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

উচ্চ রক্তচাপ এমন একটি রোগ যা আপনার মৃত্যু ডেকে নিয়ে আসতে পারে।এই প্রেসার হঠাৎ করে কিন্তু বৃদ্ধি পায় না যে কোন খাবারের কারণেই বৃদ্ধি পায় এবং অনেক সময় মানুষ স্ট্রোক করে মারা যায়। যদি আপনার শরীরের প্রতি যত্ন না নেন এবং খাদ্য তালিকা নিয়ন্ত্রণ না করেন সেই ক্ষেত্রে প্রেসার বৃদ্ধি পাবে।
তাই প্রতিদিন যদি আপনি কলা খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে অনেক উপকার পাবেন। উচ্চ রক্তচাপ প্রথমে কিন্তু বোঝা যায় না এটা একটি নীরব ঘাতক রোগ যা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেতে থাকে। যদি আপনি অনিয়মিত জীবন যাপন করেন এবং খাদ্য অভ্যাস নিয়ন্ত্রণা না করতে পারলে আপনার বিশাল ধরনের সমস্যা হতে পারে।

তবে একেক জন মানুষের রক্তচাপের মাত্রা একেক রকম হয়ে থাকে এবং খাদ্যের ক্ষেত্রেও এক একজনের উচ্চ রক্তচাপ বাড়ে আবার অনেক জনের নাও বাড়তে পারে। সেজন্য আপনাকে দেখতে হবে কোন খাবার আপনার উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাচ্ছে সেই জিনিসগুলো আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে। তাহলে আপনার জীবন যাপন করতে সুবিধা হবে।

তাই এই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কলা খাওয়ার পাশাপাশি আপনার মানসিক চিন্তা, দুশ্চিন্তা, ঘুম বিশ্রাম শারীরিক ব্যায়াম ইত্যাদি এগুলো করতে হবে। তবে পাকা কলা আপনার স্ট্রোক থেকেও মুক্তি দেয় কেননা রক্ত যদি ব্লক থাকে সে ক্ষেত্রে কলা খাওয়ার কারণে রক্ত চলাচল দ্রুত বৃদ্ধি পায় যার কারণে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

কলা খেলে কি গ্যাস হয়

অনেকেই জানতে চায় যে কলা খেলে কি গ্যাস হয়, হ্যাঁ কলা খেলে গ্যাস হতে পারে। যদি খালি পেটে কলা খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা দিতে পারে এবং গ্যাস হতে পারে। তাই কলা অবশ্যই অন্যান্য খাবারের সাথে খেলে উপকার পাবেন তাছাড়া ক্ষতি হবে। তাই যাদের খাদ্য হজমের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিতভাবে সকাল বেলায় কলা খেতে পারেন অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি।

আর কলার মধ্যে যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেগুলো গ্যাস থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং খাদ্য হজমে সাহায্য করতে পারে। যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে তাদেরও এই সমস্যার সমাধান করে। এক কথায় প্রতিদিন যদি একটি করে কলা খান সে ক্ষেত্রে আপনার পেটের সমস্যা বা গ্যাস্ট্রিকের কোন সমস্যা থাকবে না।

এতে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে যার কারণে পেটের ভিতরে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। তবে কলা বা কোন ফল খাওয়ার নিয়ম হলো ভরা পেটে ফল খেতে হবে। আবার খাবারের সাথে সাথেই ফল খাওয়া যাবে না। খাবারের আধা ঘন্টা পরে ফল খেলে খুবই উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও কলা গ্যাস্ট্রিক এবং যাদের আলসার রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

কারণ কলা একটি নরম জাতীয় ফল যা আলসারের ব্যথাকে দূর করতে পারে এবং বুক জ্বালাপোড়া করলে সেটাও কমাতে পারে। এছাড়াও যদি টক দই সকালবেলা খান সেক্ষেত্রে কলার সাথে মিশিয়ে খেলে আরো উপকার পাবেন। তাই কলা চিড়া দই মিশিয়ে যদি খেতে পারেন অনেক উপকার পাবেন। 

হয়তো এতক্ষণে অনেকেই বুঝতে পেরেছেন যে কলা খেলে কি গ্যাস হয়, আসলে কলা খেলে গ্যাস আরো নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই আপনি কলা খাওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকবেন সাধারণ তো সকালবেলা হালকা খাবারের পাশাপাশি কলা খেতে পারেন এবং বিকেলে কিছু খাবারের পাশাপাশি কলা খেলে অনেক উপকার পাবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন কলা খেলে কি গ্যাস হয় এই বিষয়ে।

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা

একজন গর্ভবতীর মায়ের গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে। নিম্নে এই বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলোঃ

রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ কলার মধ্যে রয়েছে আয়রন এবং ফলেট, ভিটামিন বি একজন গর্ভবতী মায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা একজন গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়, ঘাটতি পূরণ করার জন্য আয়রন, ফলিক এসিড ভিটামিন বি প্রয়োজন পড়ে। এ কলার মধ্যে এই ভিটামিন গুলো রয়েছে।
ছবি
এছাড়া বাচ্চার হাড় গঠন করতে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয় কলার মাঝে ক্যালসিয়াম রয়েছে। তাই একজন গর্ভবতী সকালবেলা অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি একটি অথবা দুটি কলা খাওয়া। কেননা প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। তাই আপনি গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া খুবই দরকার।

বমি বমি ভাব দূর করেঃ একজন গর্ভবতী মা সাধারণত প্রথম তিন মাসে বমি বমি ভাব হয়ে থাকে এবং বমি করে থাকে। যার কারণে যদি কলা খাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে বমি ভাবটা কমিয়ে নিয়ে আসবে। কলার মধ্যে যে উপাদান রয়েছে তা বমি বমি ভাবটা অনেকটা কমিয়ে নিয়ে আসে। তাই আপনি কলা খেতে পারেন।

শিশুর বৃদ্ধিঃ গর্ভাবস্থায় যদি কোন একজন মা নিয়মিত কলা খায় তাহলে এর মাঝে থাকে ফলিক অ্যাসিড যা শিশুর বৃদ্ধি এবং মেধাবিকাশে উন্নতি ঘটায়। তাই আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন সেই ক্ষেত্রে নিয়মিত ভাবে কলা খেতে পারেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করাঃ সাধারণত একজন গর্ভবতী মা আয়রন এবং ফলিক এসিড খাওয়ার কারণে পেটে গ্যাস হয়ে থাকে পেট ফাঁপা দিয়ে থাকে অথবা খাদ্য হজম হতে পারে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। আর এই সমস্যাগুলো দূর করতে নিয়মিত কলা খেতে পারেন।
আর কলার মাঝে থাকা ফাইবার যা অন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান করে থাকে এবং খাদ্যনালী খাদ্য হজমের সহযোগিতা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য নিয়মিত কলা খেতে পারেন।
শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশঃ কলার মধ্যে থাকে ভিটামিন বি এবং ফলিক এসিড আয়রন যার কারণে একটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাতে পারে তাই নিয়মিত কলা খেতে পারেন।

পেট ফাঁপা দেওয়াঃ মায়েদের সাধারণত এই সময় পেট ফাপা দিয়ে থাকে, বদহজম হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে সেই ক্ষেত্রে যদি নিয়মিতভাবে কলা খাওয়া হয়। তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে পেট ফাঁপা দূর হবে।

দ্রুত শক্তি সরবরাহ করেঃ কলার মধ্যে শর্করা থাকার কারণে শক্তি যোগায় বেশি, তাৎক্ষণিকভাবে শরীরকে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের কলা খাওয়া খুবই জরুরী এতে তার শক্তি পাবে এবং দুর্বলতা কেটে উঠবে।

রক্তচাপ বজায় রাখেঃ একজন গর্ভবতী মায়ের এই সময়ে রক্তচাপ কম-বেশি দেখা দিতে পারে। সেজন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কলা খাওয়া খুবই প্রয়োজন। তাই একজন গর্ভবতী মা নিয়মিতভাবে কলা খাবে। ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দিলেও কলা খেতে পারেন। কেননা শর্করার নিয়ন্ত্রণ করতে কলার অবদান গুরুত্বপূর্ণ।

দুর্বলতা দূর করাঃ একজন গর্ভবতী মা প্রথম তিন মাসে সাধারণত বেশি দুর্বল হয়ে থাকে মাথা ঘুরায় ভালো লাগে না, বমি বমি লাগে বমি করতে থাকে এই ধরনের সমস্যাগুলো হয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে আপনি যদি নিয়মিত কলা খান তাহলে কলার মাঝে যে ভিটামিন বি এবং অন্যান্য উপাদান রয়েছে সেগুলো আপনার বমি করা থেকে রক্ষা করবে। এছাড়াও শরীর দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

আমাদের শেষ কথা,

পরিশেষে বলা যেতে পারে যে প্রতিদিন সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও গুরুত্ব রয়েছে। তাই আপনি যদি উপরোক্ত কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে থাকেন। তাহলে অবশ্যই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনার শরীরের জন্য ভালো হবে। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন, তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪