বাংলাদেশীদের জন্য মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা খরচ কত জেনে নিন
আপনি যদি মালয়েশিয়ায় ভিজিট ভিসায় যেতে চান সে ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা খরচ কত হবে এবং ভিসার মেয়াদ ইত্যাদি জেনে তারপরে যাবেন। চলুন, আজকের আর্টিকেলটিতে মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ ও টুরিস্ট ভিসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
মালয়েশিয়া যেতে টুরিস্ট ভিসায় যেতে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গেলে আপনার কম খরচ হবে। এজন্য আবেদনের প্রক্রিয়া আপনাকে জানতে হবে। তাই মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা খরচ কত সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আজকের পোস্ট টি ধৈর্য নিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃবাংলাদেশীদের জন্য মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা খরচ কত জেনে নিন
মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা কবে খুলবে
যারা ভ্রমণ পিপাসী মানুষ তারা সাধারণত বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ায়। তাই মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা কবে খুলবে এ প্রশ্ন অনেকে করে থাকেন, তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি লেখা। চলুন, মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা কবে খুলবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
দীর্ঘদিন যাবত মালয়েশিয়ার টুরিস্ট ভিসা বন্ধ ছিল যার কারণে অনেকেই মালয়েশিয়া ভ্রমন করতে পারে নাই। অনেকে কাজের জন্য মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু ভিসা বন্ধ থাকার কারণে তারা যেতে পারে নাই।
তবে এখন মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা সহ অন্যান্য ভিসা চালু করেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মালয়েশিয়ার টুরিস্ট ভিসা সহ অন্যান্য ভিসাও চালু করেছে। তাই আপনারা এখন নিশ্চিন্তে এ দেশে গিয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন।
মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ
আপনি যদি মালয়েশিয়ায় টুরিস্ট ভিসায় যান সে ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ থাকে। সে সম্পর্কে জেনে আপনাকে যেতে হবে। কেননা বাংলাদেশ থেকে টুরিস্ট ভিসা যাওয়ার পর অনেকেই মেয়াদ পার করার পর আরো অন্যান্য কাজ করতে শুরু করে অর্থাৎ টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে সে চাকরি খোঁজে অথবা বিভিন্ন কাজের সন্ধানে বের হয়।
এরকম অনেকেই আছে ইনকাম করার জন্য তারা থেকে যায়। পালিয়ে থাকার কারণে একসময় দেখা যায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। এজন্য মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ কতদিন সেটা আগে জানতে হবে। আপনি যখন টুরিস্ট ভিসাটি হাতে পাবেন তখন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে আপনাকে আবার এদেশে ফেরত আসতে হবে।
একদিন পার হলেই আপনি অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং সেই দেশের ভ্রমণ আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে না।
মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে
মালয়েশিয়ায় অনেকে স্টুডেন্ট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা কেউ কেউ কোম্পানি ভিসা ফ্যাক্টরি ও কাজের ভিসায় যাওয়ার জন্য জানতে চায় যে, মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে, তাদের জন্য আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে জানাবো যে বয়স কত হতে হবে।
আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী বয়স হতে হবে ২২ বছর থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত এর কম বেশি হলে আপনি মালয়েশিয়াতে যেতে পারবেন না। সেটা ভিজিট ভিসা বা অন্য যেকোনো বিষয় হোক না কেন।
তবে কোম্পানি গুলো সাধারণত ২২ থেকে ২৫ বছরের পর্যন্ত সাধারণত বাংলাদেশের লোকজনদেরকে নিয়ে থাকে। আর মালয়েশিয়াতে কৃষি কাজের ভিসার জন্য ১০ থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত তারা লোক নেয়। ইলেকট্রিক্যাল কাজের জন্য ২২ থেকে ২৫ বছর বয়সের লোক গুলোকে তারা কোম্পানিতে নিয়ে নেয়।
তাহলে এতক্ষনে হয়তো আপনি বুঝতে পেরেছেন যে মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে এবং ভিসারও পার্থক্য রয়েছে।
মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা খরচ কত
এখন আমরা জানবো যে বর্তমানে মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা খরচ কত হতে পারে। মালয়েশিয়া একটি পরিবেশগত দিক দিয়ে অনেক সুন্দর একটি রাষ্ট্র এবং ভ্রমণ করার মত সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ মালয়েশিয়াতে ভ্রমণে যায়। মালয়েশিয়ান সরকার সেজন্য বাংলাদেশের লোকজনের জন্য খুবই কম টাকায় ভিজিট ভিসা চালু করে দিয়েছে।
সরকারি নিয়মে মালয়েশিয়া ভিসা প্রসেসিং করতে ৫৮০০ টাকা। তাছাড়া অন্যান্য সকল খরচ দিয়ে মোট ৬০,০০০ টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা খরচ হয়। তবে বর্তমানে মালয়েশিয়ার ভিজিট ভিসা দুই রকমের হয় তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো,
সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসাঃ সাধারণত এই ভিসায় আপনি সর্বোচ্চ ১ বার মালয়েশিয়া যেতে পারবেন। এই ভিসায় সাধারণত লোকজন বেশি যায়।
মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসাঃ এই বিষয়ে মালয়েশিয়াতে ৫ বছরের মধ্যে অনেক কয়েকবার যাওয়া যেতে পারবেন।
প্রত্যেকবার যতবার ভিজিট ভিসায় মালয়েশিয়া যাবেন ততবারই ৩০ দিন থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত আপনি থাকতে পারবেন। আর সে ক্ষেত্রে ভিসা ফি আগের মতই হবে তবে অন্যান্য খরচ বা ব্যক্তিগত কোনো খরচ যদি থাকে সেই ক্ষেত্রে ৬০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা মত খরচ লাগতে পারে।
বাংলাদেশের অনেক ধরনের টুরিস্ট কোম্পানি আছে যারা ভ্রমণ ভিসার জন্য প্যাকেজ দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে তারা ৫০০০০ টাকা থেকে 2 লক্ষ টাকা পর্যন্ত এই কোম্পানিগুলো প্যাকেজ দিয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে তারপরে যাবেন এটা আপনার কম খরচ হবে।
মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা আবেদন
আপনি মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে ভ্রমণ বা ভিজিটে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা আবেদন করতে হবে। এজন্য আপনি বিএমইটি এই ডাটাবেজে রেজিস্টার করে নিবেন।
এরপরে যে কাজের জন্য আপনি দক্ষ আছেন সে কাজ হিসাবেই অনলাইনে ভিসা আবেদন করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার যদি যে সকল এজেন্সি বা সরকারি মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ভিসা প্রসেসিং করে থাকে সেখান থেকেও মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা আবেদন করতে পারেন। বিষয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো,
- মালয়েশিয়া ই ভিসা
- বিএমইটি এর কার্যালয় থেকেই কাজ করতে পারবেন
- এছাড়াও আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমেও আপনি কাজ করতে পারবেন
বিএমইটি এবং আমি প্রবাসী এই অ্যাপের মাধ্যমে যদি আপনি আবেদন সরকারি ভাবে আবেদন করেন সেই ক্ষেত্রে খরচ খুবই কম পাবেন।
মালয়েশিয়া ই-ভিসা আবেদন
আপনি যদি মালয়েশিয়ায় ভিজিট ভিসা যেতে চান সে ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া ই-ভিসা আবেদন এর মাধ্যমে গেলে আপনার খরচ কম হবে। সেই ক্ষেত্রে নিচে লিংক রয়েছে সেই লিংক আপনাকে প্রবেশ করতে হবে। লিংকের ঠিকানা হলো https://www.imi.gov.my/
আপনি উপরের লিঙ্কটাতে প্রবেশ করবেন এবং প্রবেশ করার পর আপনার ভিসার ধরন কি সেই অনুযায়ী আবেদন ফরম ডাউনলোড করবেন। এরপর আবেদন ফরমটি সুন্দর করে ভুল যেন না হয় সেভাবে পূরণ করবেন।
তারপর যখন আবেদন ফরমটি পূরণ করা হয়ে যাবে তখন প্রয়োজনীয় যত ডকুমেন্টস আছে সেগুলো এজেন্সির মাধ্যমে আপনাকে আবেদন করতে হবে।
সে অনুযায়ী আপনাকে ফি প্রদান করে আপনি ভিসা তাদের থেকে নিয়ে নিবেন। তবে বর্তমান মালয়েশিয়ার যাওয়ার জন্য যে সকল ভিসা রয়েছে সকল বিষয় আপনি উপরোক্ত নিয়মে মালয়েশিয়া ই-ভিসা আবেদন করতে পারবেন।
মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা প্রসেসিং
মালয়েশিয়া যেতে হলে ভিজিট ভিসায় যেতে হলে আপনাকে মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা প্রসেসিং জানতে হবে এবং এই প্রসেসিং এর মাধ্যমেই আপনি সকল কিছু আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য কিছু আপনাকে ডকুমেন্ট দিতে হবে এবং ভিজিট ভিসা আবেদন করার জন্য যোগ্যতা রয়েছে সেগুলো আপনাকে থাকতে হবে।
নিম্নে এছাড়াও আপনাকে মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা খরচ কত সে অনুযায়ী টাকা প্রদান করতে হবে। মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা প্রসেসিং এর ক্ষেত্রে যে কাগজপত্র লাগে তা বর্ণনা করা হলো,
- মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ভিজিট ভিসা যাওয়ার জন্য আপনাকে ৬ মাসের মেয়াদের একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- এছাড়াও যিনি আবেদন করবেন তার দুই কপি সাদা পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
- আবেদনকারীর নামে ব্যাংকে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর ব্যাংকে যে টাকা আছে সেটা পরবর্তী তিন মাসের সচ্ছলতার প্রমাণ থাকতে হবে। অবৈধ টাকা হলে হবে না।
- মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ভিজিট ভিসার ফিরতে টিকিটের কপি আপনার কাছে থাকা লাগবে।
- আবেদনকারীর ভিসার সাথে যে জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়েছেন সেই ক্ষেত্রে তার ডকুমেন্টসহ সকল কিছু দিতে হবে।
- আবেদনকারী যদি ব্যবসায়ী হয় সে ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স ইংরেজিতে অনুবাদ করতে হবে এবং তার কপি এবং কোম্পানির প্যাড ও ভিজিটিং কার্ড ইংরেজিতে লেখা এরকম কার্ড নিয়ে যেতে হবে।
- আর আবেদনকারী যদি চাকরিজীবী হন সেই ক্ষেত্রে অফিস থেকে এনওসি পত্র এবং ভিজিটিং কার্ড যদি থাকে সেটা নিতে হবে।
- আর এই ভিসা প্রসেসিং হতে ১০ দিনের মত লাগবে।
যদি আপনি মালয়েশিয়া ভিজিট বিষয়ে যেতে চান সে ক্ষেত্রে যত ডকুমেন্ট রয়েছে সকল কিছু নিয়ে আপনার নিকটে যদি কোন ভিসা কেন্দ্র থাকে সেখানে গিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। উনারা আপনাকে সহযোগিতা করবে।
লেখকের শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় যে যারা মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসায় যেতে চান তাদেরকে উপরোক্ত নিয়ম মেনে যেতে হবে। কি কি কাগজপত্র বা অন্য যে সকল জিনিস প্রয়োজন সকল কিছু প্রস্তুত থাকতে হবে। আজকের এই পোস্টটিতে মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসা খরচ কত? তা আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি যদি টুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়া যান সে ক্ষেত্রে উপকার হবে। যদি আজকের পোস্টে আপনার কাছে ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url