গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন

অধিকাংশ গর্ভবতী মহিলা গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে করণীয় সম্পর্কে তেমন জানেনা। তাই গর্ভবতী মহিলাদের গলা ব্যাথা, ঠান্ডা কাশি হলে প্রথমে ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া চিকিৎসা নেওয়া উচিত। চলুন, গর্ভাবস্থায় কাশি হলে করণীয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
যে সকল গর্ভবতীর এজমা বা হাঁপানি আছে তাদের গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্টের সমস্যা আরো বেশি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে আপনাকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। তাই গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃগর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন

গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে করণীয়

গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে করণীয় সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন। কেননা অনেকের গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা থেকে গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এ জন্য অনেক কষ্ট হয়, তাই গলা ব্যথা হলে কি করতে হবে। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

গলা ব্যাথা হলে সাধারণত যে চিকিৎসা বা ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে যার কোন ক্ষতি হবে না। তা হলো গলার ব্যথা কমাতে বাজার বিভিন্ন ধরনের ড্রপ পাওয়া যায়। গলার স্প্রে বা কাশির সিরাপ দেওয়া যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ করে কাশির সিরাপ খেতে হবে। অনেকের গ্যাস্ট্রিকের কারণে এসিডিটি হয়ে থাকে সেজন্য গলা ব্যথা হয়ে থাকে।

সে ক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করে অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। তবে মনে রাখবেন গর্ভাবস্থায় একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনো ওষুধ খাবেন না। কেননা এটা আপনার বাচ্চার ক্ষতি হবে।

তবে গর্ভাবস্থায় গলা ব্যথা হলে ঘরোয়া উপায়ের চিকিৎসা নেওয়া সবচাইতে ভালো হবে। কেননা এই সময় ওষুধ খাওয়া অনেকটাই সমস্যা হতে পারে। সেজন্য ঘরোয়া উপায় চিকিৎসা নিবেন। নিম্নে ঘরোয়া বিষয়ে চিকিৎসা নিয়ে কিভাবে গলা ব্যথা সারানো যায়। সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

আদা চাঃ আদা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হতে পারে কাশির জন্য অথবা গলা ব্যথার জন্য। এর মধ্যে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান। যা গলা ব্যথা সারাতে কার্যকারী উপকারিতা রয়েছে।

হালকা কুসুম গরম পানি করে তার ভিতরে আদা গুলো টুকরো টুকরো করে যদি গরম করে থেকে নিয়ে পানিটুকু ঠান্ডা করে খেতে পারেন। তাহলে গলা ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।
মধু ও লেবু চাঃ গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে মধু ও লেবু চা খেতে পারেন। মধু এর মাঝে এন্টি এক্সিডেন্ট আছে যা কাশি এবং গলার ব্যথার সমস্যা সমাধান করতে পারবে। এছাড়াও পাশাপাশি যদি আপনি লেবু চা খান।

সে ক্ষেত্রে অনেক ভালো উপকার পাওয়া যাবে। কেননা এটা গলাকে প্রশান্ত রাখবে এবং শ্বাসকষ্ট গলা ব্যথার অনেক উপকার করে থাকে। এজন্য আপনি দিনে দুই থেকে তিনবার খেতে পারেন। এক কাপ উষ্ণ গরম পানি নিবেন তার ভেতরে লেবু এবং মধু মিক্সড করে হালকা তাপমাত্রায় খেতে পারেন। এতে আপনার গলা ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।

লবণ জলের গার্গেলঃ লবন জল গলা ব্যথার জন্য খুবই উপকার করবে। কেননা লবণ বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াকে দমন করতে পারে। তাই আপনি এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানির মাঝে আধা চামচ লবণ মিশিয়ে কুসুম গরম পানি গরগেল করতে পারেন। এতে আপনার গলা ব্যথা কমে যাবে।

স্টিম ইনহেলেশনঃ স্টিম ইনহেলেশন গলা ব্যথার জন্য খুবই উপকার করে থাকে। এটা সাধারণত নাকে জমে থাকা যদি কোন কিছু আটকে থাকে। সেই ক্ষেত্রে পরিষ্কার করার জন্য ভালো উপকার করে। তবে এটা খুবই সতর্কভাবে ব্যবহার করতে হবে। কারণ এটা সমস্যা হতে পারে, তাই এটা নেওয়ার সময় খুবই সতর্ক থাকবেন।

ক্যামোমাইল চাঃ এটা বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা থেকে রক্ষা করে বিশেষ করে গলা ব্যথা ও অনেকটা কমিয়ে নিয়ে আসে। এই সাধারণত ভিক্টোরিয়ার সাথে লড়াই করতে পারে পাশাপাশি গলা ব্যথা সেরে তোলে।

গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে প্রথমত প্রাকৃতিক চিকিৎসা গুলো নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে যদি আপনার রোগ ব্যথাটা প্রশমিত না হয় সেক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের নিকট যাবেন। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

গর্ভাবস্থায় কাশি ও গলা ব্যথা ঘরোয়া চিকিৎসা

গর্ভাবস্থায় কাশি হলে করণীয় হলো প্রথমে আগে আপনাকে প্রাকৃতিক চিকিৎসা গুলো গ্রহণ করতে হবে। কেননা এই সময় ওষুধ না খাওয়াই ভালো। ওষুধ খেলে বাচ্চার উপর প্রভাব পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনি প্রাকৃতিক বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন। নিচে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

আদাঃ গর্ভাবস্থায় কারো যদি কাশি হয় সে ক্ষেত্রে আদা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপকার করে থাকে। কেননা এর মাঝে যে উপাদান রয়েছে তা রক্ত দ্রুত চলাচল করতে পারে। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস থেকে দমন করতে পারে।

ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গুলো কাশি এবং ঠান্ডা উপশম করতে সাহায্য করে। সে ক্ষেত্রে একজন গর্ভবতী বেশি বেশি ভিটামিন সি জাতীয় খাবারগুলো খেলে তার কাশি থেকে মুক্তি পাবে। কেননা ভিটামিন সি যদি শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে সে ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। 

তাই একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা বেশি ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গুলো খাবেন। যেমন কমলা লেবু, মাল্টা স্ট্রবেরি আঙ্গুর তাছাড়াও বিভিন্ন সবজিও খেতে পারেন। যেমন টমেটো, বেল, আলু শাকসবজি ইত্যাদি খেলে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হবে।

পানিঃ গর্ভাবস্থায় যদি কোন নারীর সর্দি কাশি হয় সে ক্ষেত্রে পানির পরিমাণ বেশি খেতে হবে। কারণ শরীরে শুষ্কতা থাকলে আরো কাশি বেশি হতে পারে এবং কফ জমে গেলে তখন হালকা কুসুম গরম পানি খেলে খুবই উপকার পাওয়া যায়।

হলুদঃ হলুদ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কাশির জন্য। এর মধ্যে কারকিমিন নামক একটি পদার্থ রয়েছে যা শক্তিশালী এন্টিইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর কাজ করে থাকে। এছাড়াও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখে। তাই হলুদ আদার মিশিয়ে যদি খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার কাশি অনেক কমে যাবে।

এজন্য আধা চামচ হলুদের গোড়া এবং লবণ দিয়ে গরম পানি করে নিবেন। যদি গর্ব অবস্থায় কাশি এবং গলা ব্যাথা হলে লবণের হলুদ ও লবণের এই মিশ্রণটি দিনে দুই থেকে তিনবার করতে পারেন। এতে আপনার কাশি এবং গলা ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।

পাতি লেবুঃ গর্ভাবস্থায় কাশি হলে করণীয় হলো পাতি লেবু বেশি বেশি খাবেন। পাতিলেবুর মধ্যে থাকে ভিটামিন সি যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং ঠান্ডার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এ ছাড়াও গলা ব্যথা কমিয়ে নিয়ে আসে।

সর্দি-কাশির জন্য এই ক্ষেত্রে লেবুর এবং মধু মিক্সড করে যদি খেতে পারেন। তাহলে আপনার সর্দি কাশি গলা ব্যথা দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও শরীরে রক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে।

রসুনঃ রসুনকে বলা হয় বাঙালির এন্টিবায়োটিক প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। তাই এটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, সর্দি কাশি গলা ব্যথার জন্য ভালো কাজ করে। কেননা এর মধ্যে আছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের জন্য অনেক উপকার করে। 

সর্দি কাশি দূর করে যেসব ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। তাদেরকে প্রতিরোধ করতে পারে এক গবেষণায় দেখা গেছে গর্ব অবস্থায় রসুন কেউ যদি খায়। সে ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হয়। রসুন বুকে কফ জমে থাকলে সেটাও বের করে দিতে পারে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিনঃ যদি আপনি কাশিতে ভুগতে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনাকে বিশ্রাম নিতে হবে। কেননা রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। একজন গর্ভাবস্থায় দিনে দুইবার অন্ততপক্ষে হালকা বিশ্রাম নিতে হবে এবং রাত্রিতে কমপক্ষে ছয় থেকে আট ঘন্টা গভীর ঘুম দিতে হবে।

গরম চিকেন সুপঃ একজন গর্ভবতীর যদি ঠান্ডা কাশি হয় এবং গলা ব্যাথা হলে বাড়িতে গরম চিকেন সুপ তৈরি করে খেতে পারে। এর মধ্যে আদা রসুন গোলমরিচ এগুলো মিক্সড করে যদি তৈরি করা হয় এবং খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে সর্দি কাশি এবং গলা ব্যথা কমে যাবে।

বাষ্প নিনঃ যদি আপনি সর্দি কাশি সমস্যায় ভুগতে থাকেন। সেই ক্ষেত্রে দেখা যায় কফ জমে যায় এবং নাক বন্ধ হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে আপনি গরম পানির বাষ্প নিতে পারেন। এ জন্য ফুটন্ত পানি যখন আপনি নাক দিয়ে ওই পানির বাষ্প আকারে উঠতে থাকবে সেগুলো নাক দিয়ে টেনে নিবেন। এতে করে আপনার নাক বন্ধ হওয়া, গলা ব্যথা এবং সর্দি কাশি কবে যাবে কমে যাবে।

গর্ভাবস্থায় গলা ব্যথার কারণ কি

গর্ভাবস্থায় যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, সেক্ষেত্রে ঠান্ডা লাগতে পারে। আর ঠান্ডা থেকে গলা ব্যথা শুরু হয়। তাই গর্ভাবস্থায় গলা ব্যথার কারণ কি? এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন, চলুন সে সম্পর্কে জানা যাক।
ছবি
সাধারণত ভাইরাল ইনফেকশনের কারণে ঠান্ডা ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং শ্বাস যন্ত্রের ভাইরাস গুলোর কারণেই গলা ব্যাথা হয়ে থাকে। অনেকের কাশি হয় তাছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এটা যে সকল কারণে হয়ে থাকে।

যেমন ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হতে পারে, এলার্জির কারণে দেখা যেতে পারে, আবার অনেকের অ্যাসিড রিফ্লেক্স এর কারনেও গলা ব্যথা হতে পারে। শুষ্ক বায়ু এর কারণে হতে পারে, পরিবেশগত এবং একে অপরের সাথে আলিঙ্গন করলেও দেখা যায়। তার রোগটা ভাইরাল হিসেবে ইনফেকশন করে ঠান্ডা থেকে গলা ব্যাথা হতে পারে।

গ্যাসের কারণে কি গলা ব্যথা হয়

অনেকে প্রশ্ন করে থাকে যে গ্যাসের কারণে কি গলা ব্যথা হয়? সাধারণত এসিড রিফ্লেক্স যখন বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রে গলা ব্যথা হতে পারে। যদিও এটা উপসর্গ হিসেবে দেখা যায় অম্বল। এটা এসিড রিফ্লেক্স থেকে গলা ব্যথা শুরু হয়, তখন একজন ব্যক্তির গলা প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে।

এছাড়াও এর কারণে মাথাব্যথা হতে পারে, এবং বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হতে পারে। তাই বলা যেতে পারে গ্যাসের কারণেও আপনার গলা ব্যথা দেখা দিতে পারে।

গলা ব্যথা কত দিন থাকে

অনেকেই জিজ্ঞেস করে থাকে যে গলা ব্যথা কত দিন থাকে? আসলে এটা নির্ভর করবে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের উপরে। ব্যাকটেরিয়া আপনার শরীরে সংক্রমণ করে তার কারণে উপসর্গ হিসেবে বলা ব্যথা দেখা যায়।
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সঙ্গে আরও বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে যেমন ঠান্ডা লাগা, মাথা ব্যথা করা ইত্যাদি। তবে এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে গলা ব্যথা হতে পারে। সাধারণত চিকিৎসা নিলে বা না নিলেও তিন থেকে সাত দিনের মধ্যেই কমে যাবে।

গর্ভাবস্থায় মায়ের ঠান্ডা লাগলে কি বাচ্চার ঠান্ডা লাগে

অনেক গর্ভবতী জানতে চায় যে গর্ভাবস্থায় মায়ের ঠান্ডা লাগলে কি বাচ্চার ঠান্ডা লাগে, তাহলো গর্ভাবস্থায় যদি আপনার ঠান্ডা লাগে সেটা যদি খুবই বেশি হয় সে ক্ষেত্রে বাচ্চার কিছুটা হলেও ক্ষতি হতে পারে। এতে বাচ্চার শ্বাসকষ্ট নিউমোনিয়া এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তাই গর্ভাবস্থায় অবশ্যই একজন মা সে নিজে চেষ্টা করবে যেন সর্দি ঠান্ডা বা কাশি এই ধরনের সমস্যা না হয়। এজন্য তাকে সতর্ক থাকতে হবে কেননা অনেকেই জিজ্ঞেস করে গর্ভাবস্থায় মায়ের ঠান্ডা লাগলে কি বাচ্চার ঠান্ডা লাগে, হয়তো ঠান্ডা নাও লাগতে পারে।

তবে বেশি সমস্যা হলে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। তবে সামান্য কাশি বা ঠান্ডাতে তেমন একটা ক্ষতি হবে না। তাই অনেক গর্ভবতী মায়ের এমন ঠান্ডা কাশি লাগে যে তার টনসিল এবং গলা ব্যথা শুরু হয়ে যায়। এজন্য গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে প্রথমে প্রাকৃতিকগত চিকিৎসা নেওয়া এর পরে না সারলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কাশি ও গলা হলে যে ঔষধ খাবেন

অনেক গর্ভবতী মহিলা প্রশ্ন করে যে গর্ভাবস্থায় কাশি হলে কি ঔষধ খাব, এক্ষেত্রে পরামর্শ হলো প্রথমত আপনি প্রাকৃতিক চিকিৎসা নেবেন। এটা যদি কাজ না হয় তাহলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। কেননা এই সময় ওষুধ খাওয়া ফলে দেখা যায় বাচ্চার উপর প্রভাব ফেলে। 

একজন গর্ভবতী মহিলা অবশ্যই কাশির সিরাপ যদি খাওয়াই লাগে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে। তাছাড়া তার ভ্রণের ক্ষতি হতে পারে। তবে গর্ভবত মহিলাদের জন্য কিছু সিরাপ নিরাপদ রয়েছে যা চিকিৎসকের পরামর্শ দিয়ে থাকেন নিম্নে সেগুলো বর্ণনা করা হলো,

ক্লোরফেনিরামিনঃ গর্ভবতী এবং শিশুদের যদি ঠান্ডা লাগে কাশি হয় এবং নাক দিয়ে পানি পড়ে সেই ক্ষেত্রে এই ওষুধটা প্রয়োগ করা হয়। এতে তেমন একটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই এবং অনেকটা উপকার করে থাকে।

এই ওষুধটি গর্ভাবস্থায় খুবই নিরাপদ এটা এলার্জি, সর্দি কাশির জন্য খুবই উপকার করে। অনেকে বলে থাকে যে গর্ভাবস্থায় কাশি হলে কি ঔষধ খাব, তাদেরকে তাদের জন্য পরামর্শ হলো এই সিরাপটি খেতে পারেন নিরাপদ রয়েছে।

ডেক্সট্রমেথরফ্যানঃ এই সিরাপটি গর্ভবতীদের উপর প্রয়োগ করে দেখা গেছে তেমন একটা ক্ষতি করে না। ভ্রণের উপর কোন ক্ষতি হয় না, বিধায় ওষুধটি গর্ভবতীদের জন্য ঠান্ডা কাশি সর্দি এবং এলার্জির জন্য ভালো উপকার করে থাকে।

ডিফেনহাইড্রামিনঃ এই সিরাপটি সাধারণত এন্টিহিস্টামিন এর কাজ করে থাকে। যদি কফের সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে এ সিরাপটি গর্ভবতীর জন্য নিরাপদ। এছাড়াও এন্টিহিস্টামিন এর কার্যকলাপের ক্ষেত্রে অনেক ভালো কাজ করে বিশেষ করে এলার্জিজনিত সমস্যা হলে ওষুধটি নিরাপদ হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।

সিউডোফেড্রিনঃ নাক বন্ধ হওয়া এবং সিরাপটি গলা ব্যথা সর্দি কাশি কমাতে কাজ করে এছাড়াও এটা অনেক ভালো উপকার করে থাকে। তবে যে সকল মহিলাদের গর্ভবতী নারীদের বা দুগ্ধ দানকারী মায়েদের মায়েদের গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাস এবং খাওয়া যাবে না।

গর্ভাবস্থায় কাঁশি ও গলা ব্যাথা হলে প্রথমে প্রাকৃতিক চিকিৎসা করার চেষ্টা করবেন। এরপরও যদি কাজ না হয়, তবে এই সিরাপটি ডাক্তারের পরামর্শ খাবেন তবে প্রথম তিন মাসে খাওয়া যাবে না।

গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়

যে সকল গর্ভবতী মায়েদের এজমা বা হাঁপানি রয়েছে তাদের সাধারণত শ্বাসকষ্ট হয়। তাই গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

স্বাভাবিক মানুষের চাইতে সাধারণত গর্ভবতী মহিলাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তাই যদি শ্বাসকষ্ট হয় সে ক্ষেত্রে আরো বেশি কষ্ট দেখা দিতে পারে। এর বিভিন্ন কারণে হতে পারে বিশেষ করে বিভিন্ন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে এই ধরনের সমস্যা হয়। এতে করে একপর্যায়ে দেখা যায় তার গলা ব্যাথা, কাশি মাথাব্যথা জ্বর এগুলো দেখা দিচ্ছে এবং পরবর্তীতে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়।
ছবি
গর্ভবতীর ব্রংকাইটিস যদি দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে কাশি বা জ্বর দেখা দিতে পারে, নাক দিয়ে পানিও আসতে পারে এবং নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ঘটতে পারে। সে ক্ষেত্রে শ্বাসনালী সংক্রমণ হয়ে যেতে পারে এবং গর্ভাবস্থায় নিউমোনিয়া ব্যাকটেরিয়াল ভাইরাল ফাইনাল সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে।

তাই গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় হলো অতি দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তা না হলে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে।
গর্ভবতীর থেকে সেরে যাওয়ার পর আবার নিউমোনিয়া দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে একে ভাইরাল নিউমোনিয়া বলা হয়ে থাকে। আবার অনেকের চিকেন পক্স আক্রান্ত হলে রোগী নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক এর সঙ্গে আরো কিছু যোগ করে খাওয়া দরকার পড়ে।

তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে ৪০ শতাংশ মহিলা গর্ভাবস্থায় কোন পার্থক্য বুঝতে না পেরে, দেখা যায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে এবং নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে।

এ ধরনের সমস্যাগুলো দেখা দেওয়ার পাশাপাশি অনেকের গলা ব্যথা করে। তাই গলা ব্যাথা হলে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাকৃতিক চিকিৎসা নিবেন এবং পরবর্তীতে আপনার এই শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার পাশাপাশি অবশ্যই গলা পাতার চিকিৎসা নিয়ে নিবেন।

শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে করণীয় ও ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

পরিশেষে বলা যায় যে একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভ অবস্থায় সব ধরনের ওষুধ খাওয়া যাবে না। তাই তার খুবই সতর্ক থাকতে হবে যেন ঠান্ডা জ্বর বা কাশি যেন না হয়। সে ক্ষেত্রে অনেকের ঠান্ডা জ্বর হয়ে গলা ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় গলা ব্যাথা হলে করণীয় সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে সেখান থেকে জেনে নিবেন। আজকের পোস্ট থেকে যদি উপকৃত হন, তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪