কিভাবে কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা করলে বেশি লাভবান হবেন জেনে নিন
অনেকে কোয়েল পাখি পালন করতে পছন্দ করে কিন্তু কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা পদ্ধতি জানে না। তাই অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চলুন, কিভাবে কোয়েল পাখির বাসস্থান তৈরি করা যায়, সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কোয়েল পাখির ডিম পুষ্টিগুণ বেশি। তাই শিশুরা কোয়েল পাখির ডিম বেশি পছন্দ করে থাকে। এদের পুষ্টির অভাব পূরণ করার জন্য কোয়েল পাখির ডিম দিতে পারেন। তাই কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃকিভাবে কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা করলে বেশি লাভবান হবেন জেনে নিন
কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা
অনেকেই কোয়েল পাখি লালন পালন করতে পছন্দ করেন কিন্তু কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই। তাই আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে কিভাবে কোয়েল পাখি পালন করলে বেশি লাভবান হওয়া যায়। সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
কোয়েল পাখি পালনঃ কোয়েল পাখি পালন করা খুবই সহজ। হাঁস মুরগির পালন করতে যেমন কষ্ট হয় কোয়েল পাখিতে তেমন কোন কষ্ট নেই। তবে বাসস্থানটা ভালো একটা জায়গা রাখতে হবে যেন আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকে। কোয়েল পাখি পালন করার জন্য সবচাইতে ভালো হল খাচায় লালন পালন করা। তাই খাঁচা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে একটির উপর আরেকটি খাঁচা রেখেও আপনি অল্প জায়গার মধ্যে লালন পালন করতে পারেন।
এর জন্য প্রায় ১৫০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ১০০ সেন্টিমিটার প্রস্থ এবং প্রায় ৪০ সেন্টিমিটার উচ্চতা একটি খাঁচা হলে ৭০ থেকে ১০০ টি কোয়েল পাখি পালন করা যাবে। তবে খেয়াল রাখবেন কোয়েলের খাঁচার জাল গুলোর ফাঁক কম হয়। যাতে করে কোয়েল পাখি মাথা বাহিরে বের করে না দিতে পারে এবং ইঁদুর বিড়াল অন্যান্য জীবজন্তু খেতে না পারে। খাঁচার মধ্যেই পানি এবং খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।
তবে পানিতে ভিজে যেন কোয়েল পাখি অসুস্থ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। কোয়েলের খাঁচা সেখানে রাখবেন যেখানে আলো বাতাস সুন্দরভাবে প্রবেশ করতে পারে। আবার খেয়াল রাখবেন যেন বৃষ্টি বাদলে ভিজে না যায়।
কেননা কোয়েল পাখি যদি ভিজে যায় তাহলে বড় ধরনের রোগ ব্যাধি হতে পারে। বিশেষ করে ঠান্ডা লাগতে পারে। খাবারের পাত্র এবং পানি দেয়ার পাত্র মুরগির মতো দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
যখন বাচ্চা থাকে তখন বিশেষ যত্ন নিতে হবে কেননা এই সময় মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বাচ্চার বয়স ১৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত তাদেরকে তাপমাত্রা ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশেষ করে লাইট লাগাতে হবে কেননা ডিম থেকে ওঠার পর বাচ্চাগুলো উষ্ণতা পায় না। এজন্য তাদের তাপমাত্রার প্রয়োজন রয়েছে এরপর তাদেরকে অনেক ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে।
আবার খেয়াল রাখতে হবে শরীর যেন ঠান্ডা না হয়। তাহলে মারা যেতে পারে সাধারণত বাচ্চা ফুটে গেলে সেগুলো আলাদা খাঁচায় রাখার চেষ্টা করবেন। এজন্য তাদের অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে। মুরগির বাচ্চার যেভাবে যত্ন নেওয়া হয় ঠিক কোয়েলের বাচ্চাকে সেভাবে যত্ন নিতে হবে। তা না হলে বাচ্চা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনি যদি মুরগির বাচ্চা পালন করে থাকেন। সেই ক্ষেত্রে মুরগির ছোট ছোট বাচ্চার ১০০ টি মুরগির জন্য যে স্থানের প্রয়োজন হয়। সেই জায়গাতে প্রায় ১২০০ কোয়েল পাখি পালন করা যেতে পারে। কোয়েল পাখির তেমন একটা রোগব্যাধি হয় না তবে এদের ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা বেশি থাকে। খেয়াল রাখবেন তাদের যেন ঠান্ডা না লাগে তাদের উষ্ণতার মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন।
এছাড়াও তাদের প্রথম দুই সপ্তাহ একটু বেশি খেয়াল রাখতে হবে । এই সময়টা পার হলে মোটামুটি তারা নিরাপদে থাকবে। তবে এদের জন্য তেমন একটা ভ্যাকসিন বা ক্রিমিনাশক ওষুধ লাগে না। তাই তবে বাণিজ্যিকভাবে করতে চাইলে অবশ্যই কোয়েল পাখি চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে হবে। কোয়েল পাখি মোটামুটি অন্যান্য পাখি পালন করার চাইতে অনেক সহজ এবং লাভজনক।
তাছাড়া ডিমের চাহিদা রয়েছে এবং কোয়েল পাখির ডিমের প্রচুর পরিমাণ কোলেস্টেরল পরিমাণ কম থাকে। আমিষের পরিমাণ বেশি থাকে। আর একটা কোয়েল পাখি লালন পালন করতে যে টাকা খরচ হয় মুরগি পালন করতে আরো বেশি টাকা খরচ হয়।
একটা মুরগি লালন পালন করতে যে টাকা খরচ হয়, সেই টাকায় প্রায় ৮ টির মতো কোয়েল পাখি লালন পালন করা যেতে পারে। তাই আপনি যা সাধারণত বাড়িতেই অল্প জায়গার মধ্যে লালন পালন করতে পারবেন।
কোয়েল পাখির রোগ ও চিকিৎসাঃ কোয়েল পাখি পালন করার সময় খেয়াল রাখতে হবে। প্রথম দুই সপ্তাহ এই সময় কোয়েল পাখির সাধারণত নিউমোনিয়া বা ঠান্ডা লেগে থাকে। তাই এই দুই সপ্তাহে তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা রাখতে হবে।
এ রোগের লক্ষণ হলো সাধারণত কোয়েল পাখি বাচ্চাগুলোর খেতে চায় না জিমেতে থাকে। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেয়, চোখগুলো লাল হতে থাকে এবং চোখ দিয়ে পানি বা রস বের হয়। এছাড়াও অনেক মারাও যায়। তবে আক্রান্ত হওয়ার বেশি। এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। তাছাড়া এর জন্য এন্টিবায়োটিক খাওয়াতে হবে, আর ক্যালসিয়াম ট্রফিউনেট পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
কোয়েল ডিজিজ রোগটা সবচাইতে মারাত্মক। কোয়েল পাখির জন্য এই রোগ দেখা দিলে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ রোগে সাধারণত পাতলা পায়খানা শরীর দুর্বল হয়ে যায় খিচুনি হয় এবং খাদ্যনালীতে গা হতে থাকে। এর চিকিৎসার সাধারণত এন্টিবায়োটিক দিতে হবে, যদি কাজ না করে তাহলে খুব দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়াতে শুরু করবেন।
কোয়েল পাখির জাত
কোয়েল পাখি লালন পালন করার পূর্বে আপনাকে কোয়েল পাখির জাত সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা কোন জাতের পাখি বেশি লাভবান হওয়া যাবে এবং অসুস্থ কম হবে ডিম বেশি দিবে সেই সকল জাত আপনাকে নির্ণয় করতে হবে। নিম্নে কয়েকটি জাতের নাম উল্লেখ করা হলো,
লেয়ার কোয়েলঃ মুরগির বাচ্চা যেমন জাত নির্ণয় করা হয় তেমনি কোয়েল পাখিরও কয়েকটি জাত রয়েছে। তার মধ্যে লেয়ার কোয়েল উল্লেখযোগ্য এর মধ্যে রয়েছে ফারাও, ইংলিশ হুয়াই, ম্যানচিরিয়াল গোল্ডেন, ব্রিটিশ রেঞ্জ এগুলো সাধারণত ভালো জাতের।
ব্রয়লার কোয়েলঃ মুরগি লালন পালন করার ক্ষেত্রে যেমন ব্রয়লার রয়েছে ঠিক তেমনি কোয়েল পাখির মাঝে ব্রয়লার কোয়েল পাখি পাওয়া যায়। এই ধরনের কোয়েল পাখির জাত এর মধ্যে আছে আমেরিকান বব হোয়াইট কোয়েল ইন্ডিয়ান হোয়াইট ব্রেস্টেড কয়েল জাত রয়েছে। এই সকল জাতের কোয়েল পাখি গুলো মাংস উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচাইতে ভালো।
কোয়েল পাখি কত দিনে ডিম পাড়ে
অনেকেই জানতে চায় যে কোয়েল পাখি কত দিনে ডিম পাড়ে তাহলো সাধারণত কোয়েল পাখি খুবই অল্প সময়ে ডিম দিয়ে থাকে। এরা ৬ থেকে ৭সপ্তাহ বয়স হলেই অর্থাৎ ৪০ থেকে ৪২ দিনের মধ্যেই ডিম দিয়ে থাকে। এদের ডিম অনেক সুস্বাদু হয় পুষ্টিকর রয়েছে মুরগির ডিমের চাইতে কোয়েল পাখির পুষ্টির গুণ সবচাইতে বেশি।
যদি আপনি ভাল মানের জাত নির্ণয় করতে পারেন সেই ক্ষেত্রে একটি কোয়েল পাখি প্রায় এক বছরে ২৫০ থেকে ৩০০ টি এর মত ডিম দিতে পারে। আর এই প্রত্যেকটা ডিমে আবার বাচ্চা হওয়ার জন্য উপযুক্ত।
সে বাচ্চাগুলো ছয় থেকে সাত সপ্তাহ বয়স হলে তারা আবার ডিম দেওয়া শুরু করে এবং এই পাখির মাংসগুলো খাওয়া যেতে পারে। তবে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যখন বাচ্চার বয়স দুই সপ্তাহের মত তখন কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা এর ক্ষেত্রে খুবই যত্নবান হতে হবে। একটি কোয়েল পাখি তার জীবনকাল প্রায় চার বছরের মত।
তাই এর মধ্যে প্রায় ১২০০ এর মতো ডিম দিতে পারে। একটি কোয়েল পাখির ওজন ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। ডিমের ওজনও ১০ থেকে ১২ গ্রামের মত। কোয়েলের ডিম দেখতে খুবই সুন্দর কারুকার্য করা এদের উপর নীল বেগুণী এবং আছে অনেকেই সৌন্দর্যের কারণে অনেক সময় খেতে মন চায় না। বাচ্চাদের কাছে এই ডিমটা খুবই জনপ্রিয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন কোয়েল পাখি কত দিনে ডিম পাড়ে।
কোয়েল পাখির খাবার
অন্যান্য হাঁস মুরগির চেয়ে সাধারণত কোয়েল পাখি তুলনামূলকভাবে খাবার বেশি খেয়ে থাকে। তাই কোয়েল পাখির খাবার এর ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে এবং যত্নবান হতে হবে। তবে কিছু টেকনিক অবলম্বন করলে খরচ খুবই কম হবে। এর জন্য তেমন একটা কষ্ট করতে হবে না।
বাচ্চা ছোট ছোট বাচ্চা যখন থাকে তখন সে ক্ষেত্রে একটু যত্নবান হতে হবে। এই সময় বাচ্চাদেরকে সুষম খাদ্য খাবার দিতে হবে। খাবার দিলেই যথেষ্ট পরিমাণ খেয়াল রাখতে হবে সাধারণত প্রতি কেজি খাদ্যের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ থাকতে হবে। ২৫০০ থেকে ৩০০০ কিলো ক্যালরি খাবার থাকতে হবে। সেগুলো মধ্যে খাবার নিয়ে আসবেন সেগুলো থেকেও কোয়েল পাখিকে দেওয়া যেতে পারে।
মুরগির খামারে যে খাবার দেওয়া হয় সেটা যদি কোয়েলকে দেওয়া হয় তাহলে অনেক ডিম দেবে। বিশেষ করে লেয়ার মুরগিকে যে খাদ্য দেওয়া হয় অর্থাৎ ভুট্টা ভাঙ্গা এই ধরনের খাবারগুলো দিলে কোয়েল পাখি অতি শীঘ্র ডিম দেওয়া শুরু করে।
দীর্ঘদিন ডিম দিতে থাকে তাই এই খাবার সংগ্রহ করার চেষ্টা করবেন এবং কোয়েল পাখির খাবার গুলো মুরগিকে যেভাবে দিবেন তাহলো বিভিন্ন জায়গায় প্লাস্টিকের খাদ্য সামগ্রী পাওয়া যায়। তার ভিতরে পানির ব্যবস্থা করতে পারেন।
এক কথায় মুরগির খামারে যেভাবে খাদ্য পানির ব্যবস্থা করা হয় ঠিক তেমনি কোয়েল পাখির জন্য ব্যবস্থা করবেন। খাঁচার মধ্যে যদি কোয়েল পাখি লালন পালন সেদিকে খেয়াল রাখবেন কোয়েল পাখির পা যেন আটকে না যায় কেন এটা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ
কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ রয়েছে অনেক। সাধারণত মুরগি ডিমের চাইতে কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টি বেশি এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো,
কোয়েল পাখির ডিমের সাধারণত ক্যালরি প্রায় ১৪ গ্রাম এর মত থাকে, প্রোটিন প্রায় ১.৩ গ্রামের মতো
এছাড়াও এই ডিমের ভিটামিন এ এর বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন আছে। তাছাড়া ফ্যাট আছে ওমেগা ৩ থার্টি এসিড আছে ৪ মিলিগ্রামের মত। ওমেগাছ ৬ ফ্যাটি এসিড ৮৪ মিলিগ্রামের মত কোলেস্টেরল ছিয়াত্তর মিলিগ্রামের মত আছে।
এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ আমিষ খনিজ লবণ থাকে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করতে পারে আয়রন রয়েছে এর মাঝে। কেননা কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি অন্যান্য ডিমের তুলনায়।
কোয়েল পাখির ডিমের অনেক ডিমের উপকারিতা আছে তাই এর পুষ্টিগুলো প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের এই পুষ্টির অভাব পূরণ করার জন্য কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া পারেন। এছাড়াও যদি আপনি কোয়েল পাখি লালন পালন করতে চান , সেই ক্ষেত্রে কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে লালন পালন করলে বেশি লাভবান হবেন।
কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা রয়েছে তেমন কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক রয়েছে। নিম্নে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
এলার্জি সমস্যাঃ অনেকে এ কোয়েল পাখির ডিম খেলে এলার্জির সমস্যা শুরু হয়। যেমন চুলকানি ফুসকুড়ি এবং পেটব্যথা সে ক্ষেত্রে তাদের জন্য কোয়েল পাখির ডিম না খায় ভালো।
উচ্চকলেস্টেরল উৎসব কোলেস্টেরলঃ কোয়েলের পাখির কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে অনেক কোলেস্টেরল থাকে যা একটি ছোট কোয়েল পাখি ডিমের মাঝে ৭৫ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে যেটা আমাদের শরীরের দৈনিক প্রয়োজনের তুলনাই বেশি এজন্য বেশি কোলেস্টেরল থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে, তাই এই ক্ষেত্রে কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক রয়েছে।
এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধঃ অনেক কোয়েল পাখির খামারে সাধারণত ব্যাকটেরিয়াল দমন করার জন্য এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে থাকে আর এই অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে যায়
পরিবেশগত প্রভাবঃ কোয়েল পাখির খামার সাধারণত পরিবেশ গত সমস্যা সমস্যার সমাধান সমস্যা রয়েছে যেমন কিছু খামারগুলোতে এমন ইয়ার অ্যামোনিয়ার ক্ষতিকারক রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয় নির্গত হয় যা আমাদের বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতিকর করে
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার অনেক পুষ্টি রয়েছে তাই কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা অনেক রয়েছে নিম্নে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
কোয়েল পাখির ডিম ও মাংসঃ কোয়েল পাখির ডিমের সাধারণত প্রোটিন, ক্যালোরি থাকে যাওয়া শরীরে আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। তাদের শরীর বেশি হরমোনায়ন তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই আপনি নিয়মিত ভাবে কোয়েল পাখির ডিম ও মাংস খেতে পারেন।
হার্টের জন্য ভালোঃ যারা হার্টের রোগী রয়েছেন সাধারণত কোয়েল পাখি খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে ফ্যাটি এসিড থাকে যা হাটের স্বাস্থ্যকে ভালো করে। কোয়েল পাখির ডিমের চর্বি আমাদের শরীরের জন্য অনেক ভালো যেটা কোলেস্টেরলের মাত্রাকে ইতিবাচকভাবে কাজ করে।
শরীরকে সুস্থ রাখেঃ আমাদের শরীরের সাধারণত বিভিন্ন খাবারে বিষক্রিয়া থাকার কারণে আমরা সেই খাবার গ্রহণ করলে শরীর বিষাক্ত পদার্থের পরিণত হয়। এই বিষাক্ত পদার্থ বের করার জন্য নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খেলে রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা হলো আমাদের শরীরের ভিতরে প্রতিদিন যে রোগের সংক্রমণ ঘটতে থাকে। তা প্রতিরোধ করার জন্য নিয়মিতভাবে কোয়েল পাখির ডিম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
এবং রোগগুলো আক্রমণ করতে পারে না, এছাড়া আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য কোয়েল পাখি ডিম খাওয়া জরুরী। কেননা এর মাঝে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যা আমাদের শরীর স্বাস্থ্য কে সুস্থ রাখে।
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখেঃ যাদের দৃষ্টি শক্তির সমস্যা রয়েছে চোখে ছানি পড়া ভিটামিন এ এর অভাব। এছাড়া চোখ দিয়ে পানি পড়া বা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকতে পারে এজন্য কোয়েল খেতে পারেন। কারণ এর মাঝে ভিটামিন এ এবং অন্যান্য ভিটামিন রয়েছে। যা হার্ট ফুসফুস কিডনি এবং অন্যান্য পত্যঙ্গ ভালো কাজ করে থাকে।
কোয়েল পাখির মাংসের উপকারিতাঃ যারা মাংস খেতে পছন্দ করে বিশেষ করে কবুতরের মাংস তারা কোয়েল পাখির মাংস খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে এবং রান্না করলে প্রায় কবুতরের মাংসের মতই। এটা ভিটামিন ই রয়েছে যা বার্ধক্য কে প্রতিরোধ করতে পারে এবং স্কিনের জন্য বেশ উপকার করে থাকে।
এছাড়াও ক্যালসিয়াম ফসফরাস যা আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। এছাড়া কোয়েলের মাংস সাধারণত পোল্ট্রি মুরগির চাইতে অনেক পুষ্টিগুণ বেশি। তাই আপনি কোয়েল পাখি পালন করতে পারেন এবং পাশাপাশি এর যত্ন নিতে হবে।
কোয়েল পাখির বাসস্থান
আপনি যদি কোয়েল পাখির লালন পালন করতে চান সেই ক্ষেত্রে কোয়েল পাখির বাসস্থান ভালোভাবে নির্মাণ করতে হবে। তাহলেই লালন-পালন করলে আপনি লাভবান হবেন। তাই কিভাবে বাসস্থান তৈরি করবেন সে সম্পর্কে নিম্নে বর্ণনা করা হলো,
কোয়েল পাখি হাঁস মুরগির মতই পালন করা যায় তেমন একটা আলাদা কষ্ট করতে হয় না। তবে অন্যান্য পশু পাখির যেমন বাসার প্রয়োজন ঠিক তেমনি কোয়েল পাখিরও বাসস্থানের দরকার রয়েছে। এজন্য এর বাসস্থান করতে হবে এমন একটি জায়গায় যেখানে আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে।
তাহলেই কোয়েল পাখি গুলো সুস্থ থাকবে। তবে খাঁচায় কোয়েল পাখি লালন-পালন করার সবচাইতে ভালো। কেননা খাঁচার ভিতর লালন পালন করে খুবই কম পরিমাণ জায়গা লাগে এজন্য আপনি খাঁচার ভেতরে লালন পালন করতে পারেন। খাঁচার মধ্যে দুই রকমের খাঁচা রয়েছে যেমন বাঁশের তৈরি খাঁচা আছে আবার লোহা বা ইস্টিল দিয়ে তৈরি করাও খাঁচা পাওয়া যায়।
এক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে খাঁচা যেন বেশি ফাঁকা না হয়। কেননা এর ভিতর দিয়ে কোয়েল পাখির পা আটকে গিয়ে অনেকে পা কেটে যায় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। আরেকটা দিকে খেয়াল যেন মাথা এবং ঠোঁট যেন বের হয়ে না আসে, কেননা এতে ইদুর বিড়াল এবং অন্যান্য পশু খেয়ে ফেলবে এবং পানি খাওয়ার ব্যবস্থা খাদ্য খাবারের ব্যবস্থা আলো বাতাস এর জন্য লাইট এবং ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে।
যেমনটি ব্রয়লার অথবা লেয়ার মুরগি লালন পালন করতে যে ধরনের খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয় ঠিক তেমনি তাদের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়াও এদের অল্প জায়গার মধ্যেই অনেকগুলোই লালন-পালন করা যায়। যদি আপনি ইচ্ছে করেন তাহলে কয়েক তলা বিশিষ্ট খাঁচা নেওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে একটি মুরগির যে জায়গা লাগে সেখানে অনায়াসে ই তিন-চারটা কোয়েল পাখি লালন পালন করা যাবে।
এখন আসি ছোট বাচ্চা গুলো কিভাবে বাসস্থান তৈরি করবেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে কৃত্রিম তাপমাত্রা দিতে হবে কেননা বাচ্চাগুলো ছোট থাকার কারণে তারা উষ্ণতার পায় না। তাই তাদের কৃত্রিম উপায়ে লাইটের ব্যবস্থা করতে হবে যেন তাদের শরীরে তাপমাত্রা থাকে।
তবে তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবে রাখতে হবে অতিরিক্ত হলে আবার বাচ্চার অসুস্থ হয়ে পড়বে। আরো বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে ডিম থেকে যখন ছোট বাচ্চা বেরিয়ে আসে তখন সাধারণত দুই সপ্তাহ মতো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। এজন্য তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার এবং ওষুধের ব্যবস্থা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি কোয়েল পাখি পালন চিকিৎসা না করেন, তাহলে বাচ্চা অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারে।
তাই ছোট অবস্থায় যদি আপনি যত্ন নেন সে ক্ষেত্রে আলাদাভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে সবচাইতে ভালো হবে অনেকে খাচা ছাড়া শুধুমাত্র ফ্লোরে সামান্য বালি দিয়ে তার উপর ধানের তুষ ছিটিয়ে দিয়ে তারপরও লালন পালন করা যেতে পারে। তবে এই ক্ষেত্রে দৌড়াদৌড়ি বেশি করার কারণে ডিম খুবই কম দিয়ে থাকে। তাই খাঁচার মধ্যে লালন পালন করা এসব চাইতে ভালো।
তবে মাটিতে যদি আপনি লালন পালন করতে এক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকে হল অনেক ইঁদুর গর্ত করে কোয়েল পাখি গুলো খেয়ে ফেলে এবং ধ্বংস করে থাকে। এদিকে খেয়াল রাখবেন নিচে অবশ্যই পাকা করে নিতে হবে তার উপরে লালন পালন করলে ইঁদুরের ভয় থেকে বাঁচা যাবে তো আপনি যদি কোয়েল পাখি কোয়েল পাখির বাসস্থান তৈরি করতে চান সেই ক্ষেত্রে দুইটা পদ্ধতিতে করা যেতে পারে এখনো লালন পালন করতে পারেন।
লেখকের শেষ কথা,
পরিশেষে বলা যায় যে কোয়েল পাখি লালন পালন করা খুবই লাভজনক। যদি আপনি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসা করতে চান সে ক্ষেত্রে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এরপরে লালন পালন করবেন। আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়েছেন। যদি পোস্টটি ভাল লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url