বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা যেভাবে করবেন তা জেনে নিন
অনেকে বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানে না। তাই তারা অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রাথমিক চিকিৎসা করে থাকে কিন্তু এটা মোটেও ঠিক নয়। চলুন, কেউ বিষ খেলে বা হারপিক খেলে করনীয় কি এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
গ্রামের বাবা মায়েরা অনেক সময় শিশুদেরকে খেয়াল না রাখার কারণে তারা অনেক সময় বিষ জাতীয় জিনিস খেয়ে ফেলে। এতে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। তাই বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃবিষ খাওয়া রোগীর চিকিৎসা যেভাবে করবেন তা জেনে নিন
বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা
যদি কোন মানুষ বিষ খায় সেক্ষেত্রে বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা করলে অনেক সময় বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নিম্নে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
যদি কোন মানুষ বিষ খায় তাহলে প্রথমে চেষ্টা করবেন যদি নিকটবর্তী কোন হাসপাতাল থাকে তাহলে সেখানে নিয়ে যাবেন। তবে বিষ খাওয়া রোগী সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে হবে তা হলো, সে যে বিষ খেয়েছে সেটা কোন ধরনের বিষ সেটা আগে জানতে হবে এবং রোগীর কিছু লক্ষণ দেখা দিবে সেগুলো দেখে বুঝতে হবে সে আসলেই বিষ খেয়েছে কিনা।
প্রথমত তার বমি হবে বমির সাথে পাতলা পায়খানা হতে পারে, মাথা ব্যথা, মাথা ঝিমঝিম করা, ঘুম ঘুম ভাব হওয়া, প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হবে এবং খিচুনি হতে পারে। তাছাড়া রোগী যদি বমি করে সেই বমির গন্ধ দেখে বুঝতে হবে যে কোন ধরনের বিষ খেয়েছে এবং তার জ্ঞান আছে কিনা এ ধরনের সমস্যা থাকলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
বিষ খাওয়া রোগীর যদি দেখেন জ্ঞান আছে কিন্তু শ্বাসকষ্ট হচ্ছে না, তাহলে সে ক্ষেত্রে তাকে একগ্লাস পানি অথবা দুধ খাওয়াতে পারেন। তবে এতে যদি রোগী বমি করে ফেলে তাহলে খাওয়ানো যাবে না।
রোগী যে পাত্র বিষ পান করেছে অথবা যে বস্তু দ্বারা বিষ পান করেছে সেটার মোড়ক বা পাত্র সংগ্রহ করতে হবে। তাছাড়া সে যদি বমি করে থাকে সে বমিটাও সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে হবে।
তারপরে যদি আপনার নিকটে কোন হাসপাতাল থাকে তাহলে সেখানে কার নাম্বার নিয়ে ফোন করে বলতে হবে যে একটি বিষ খাওয়া রোগী হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। তাহলে তারা আগে থেকেই সবকিছু প্রস্তুত করে রাখবে এতে করে সময়টা বেঁচে যাবে।
রোগী যদি অজ্ঞান হয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে অতি দ্রুত তার শ্বাসনালী খোলা রেখে কৃত্রিম শ্বাস দেওয়া শুরু করতে হবে। তাছাড়া যত দ্রুত সম্ভব অবশ্যই এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে।
একটা কথা মনে রাখবেন রোগীকে বমি করানোর চেষ্টা করবেন না, গ্রামাঞ্চলে অনেকেই এই ধরনের কাজ করে থাকে।
যা আদৌ ঠিক নয় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নয়, যা কোন চিকিৎসার মধ্যে পড়ে না। অনেকে পশু পাখির বিষ্ঠা খাওয়ানোর চেষ্টা করে, এটার শরীরে ক্ষতি হতে পারে। কারণ রোগী যদি কেরোসিন পেট্রোল এসিড অথবা ক্ষার জাতীয় জিনিস খেয়ে ফেলে, সেক্ষেত্রে বমি করালে সমস্যা হতে পারে, তাই বমি কড়ানোর চেষ্টা করবেন না।
অনেকে ঘুমের ওষুধ বা বিভিন্ন ধরনের বেশি ওষুধ খাওয়ার কারণে বিষক্রিয়ার মাধ্যমে তার শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে সে ক্ষেত্রে মুখে আঙ্গুল দিয়ে বমি করানো যেতে পারে। তবে না করাই ভালো কারণ এতে শ্বাসকষ্ট হতে পারে এবং নিউমোনিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তবে এই ক্ষেত্রে আঙ্গুল না দিয়ে আপনি এক গ্লাস পানি অথবা মিষ্টি জাতীয় তরল পদার্থ এবং এক চামচ এপসম লবণ খাওয়াতে পারেন। তবে যদি রোগীর জ্ঞান থাকলে করা যাবে কিন্তু রোগী যদি অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে এর সকল কাজ বা বমি করানো চেষ্টা করবেন না। আর একটা কথা মনে রাখবেন রোগীকে ভিনেগার বা লেবুর রস খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না।
অজ্ঞান হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে করণীয়
- বিষ খাওয়া রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে অবশ্যই তার শ্বাসনালী খোলা রাখবেন।
- যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফোন করে ইমারজেন্সি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসবেন।
- প্রয়োজনে শ্বাস দেওয়ার ব্যবস্থা করে নিন রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
- যদি বিষ খাওয়া পাত্রটি সংগ্রহ করে রেখে দিন খেয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত হতে হবে।
- যদি রোগী বমি করে সে ক্ষেত্রে বমি টা রেখে দিতে পারেন কেননা নমুনা পরীক্ষা করতে হবে।
- রোগী পানি কিংবা তরল কোন খাবার দেওয়া যাবে না এতে সমস্যা হতে পারে।
- রোগীকে বমি করানোর চেষ্টা কখনোই করবেন না, কারণ বমি করলে তার মাথাটা একপাশে কাত করে দিবেন এবং বমির থেকে যে জিনিস গুলো বের হয়েছে সেটা যেন মুখ দিয়ে বের হতে পারে সেভাবে শোয়া দিবেন।
- ইমারজেন্সি কোন ব্যবস্থা করতে না পারলে আপনি নিজেই রোগীকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে দিকে রওনা দিবেন।
হারপিক খেলে করনীয় কি
অনেকে জিজ্ঞেস করে যে হারপিক খেলে করনীয় কি, এজন্য যে সকল ব্যবস্থা নিতে হবে নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো।চেষ্টা করবেন প্রথমে রোগীকে কুলি করানোর চেষ্টা করবেন এরপরে মুখের ভিতরে যদি আরো থাকে, তাহলে সেটিকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করবেন এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। মুখে কোন খাবার দেওয়া যাবে না, শুধুমাত্র স্যালাইন ঔষধ খেতে হবে ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত এভাবে খাবে।
তারপরে দেখতে হবে খাদ্যনালী পাকস্থলী ভালো আছে কিনা এরপরে একজন চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেবেন, চিকিৎসক অনুমতি দিলে রোগীকে মুখে খাবার দিবেন। তবে তরল জাতীয় নরম খাবার দিলে ভালো হবে। অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাওয়াবেন। আশা করি প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে হারপিক খেলে করনীয় কি এ সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
রোগী কোনভাবেই কিছু খেতে না চাইলে এন্ডোস্কপি করে খাদ্যনালী একদম সরু যদি দেখায় সেক্ষেত্রে এন্ডোস্কোপি বেলুন দ্বারা ফুলানোর চেষ্টা করা হয় এবং নিয়মিত ভাবে এটা করতে হবে। এরপর পাকস্থলী নিচের দিকে শুরু হয়ে গেলে একটা অপারেশন করে ঠিক করে নিতে হবে। এরপরও যদি রোগীর খাবার খেতে না পারে তবে পেটে নল দিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
তরল খাবার দিতে হবে, তবে এই সব কিছু করার পর সাধারণত সাত মাস পর্যন্ত এভাবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এর মধ্যে বড় ধরনের অপারেশন করা কখনোই সম্ভব না। কেননা খাদ্যনালী ও পাকস্থলী পুরো ছয় মাস থেকে সাত মাস লাগবে অপারেশন করার উপযুক্ত হতে।
খাদ্যনালী পুড়ে গেলে অপারেশন করে কেটে ফেলে দেওয়া যাবে। এরপরে পাকস্থলী জোড়া লাগানো যেতে পারে যদি পুরোটুকু না পড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে অপারেশন করানো যেতে পারে যায়, সে ক্ষেত্রে অন্ত্রে জোড়া লাগানো যাবে। তবে অবশ্যই বিষয়টা জটিল, এর জন্য একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে হবে।
হারপিক জাতীয় এই পদার্থ না খাওয়াই ভালো, কেননা অত্যন্ত ক্ষতি করে থাকে। উপরোক্ত এই বিষয়গুলো প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়েছে মাত্র, তবে আশা করি কেউ এই ধরনের দুর্ঘটনা যেনো না হয় সেদিকে সতর্ক থাকবেন।
কোন ফল খেলে মানুষ মারা যায়
আমরা জানি ফল খেলে শরীরে পুষ্টি বা ভিটামিন পাওয়া যায় কিন্তু কোন ফল খেলে মানুষ মারা যায়। তা অনেকেই জানেনা নিম্নে সেই ফলটির সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
প্রত্যেকটা গাছ অক্সিজেন সরবরাহ করে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে বা প্রাণী জগতকে বেচে রাখে অক্সিজেন প্রদান করে। তবে বিশ্বে এমন কিছু গাছও রয়েছে যা প্রাণী বা মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে। তেমন একটা গাছ পৃথিবী আছে তার নাম হলো ম্যানশিনীল। এই গাছটি বিষাক্ত গাছ নামে অনেকেই জানে আবার অনেকে চেনে না।
তবে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এই গাছটিকে মৃত্যু গাছ হিসাবে নামকরণ করেছেন। এই গাছ পরিবেশের জন্য উপকার হতে পারে কিন্তু মানুষের জন্য এটা ক্ষতিকর বা মৃত্যু ডেকে নিয়ে আসে। রূপকথার গল্পের মত অনেকেই মনে করবে কিন্তু বিজ্ঞানীরা এটা বাস্তবে প্রমাণ করেছে যে এই গাছটি আসলেই প্রাণীকুলকে বা মানুষ ফল খেলে মারা যেতে পারে।
ক্যারিবীয় সাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে এই গাছটি দেখা যায়, এই গাছটির ফল খেলে দেহের ভিতর থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং মানুষ কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়। তাছাড়া এই গাছের পাতা ছাল ফলের মধ্যে এক ধরনের দুধের মত ঘন সাদা আঠা রয়েছে বা রস রয়েছে এই রহস্য যদি দেহের চামড়ার কোথাও লাগে সে ক্ষেত্রে ঘা হয়ে যায় বা ক্ষত হয়ে যায়।
দেখে মনে হবে পুড়ে গেছে তাই এই গাছটি সম্মুখে সাইন বটে লেখা থাকে যেই গাছের নিকটে আসবেন না এবং এই গাছের পাতা ছাল ও ফল খাবেন না বা কোথাও স্পর্শ করবেন না। এটা আপনার ক্ষতি হতে পারে এই গাছের ফল সাধারণত একটি বিষের মত তাই এই গাছের ফল খাওয়া যাবেনা। বিষ খাওয়া রোগীর যেমন প্রাথমিক চিকিৎসা ঠিক তেমনি এই গাছের ফল যদি কেউ খায় সে ক্ষেত্রে বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা যেভাবে করা হবে ঠিক তেমনি করতে হবে।
এই গাছের ফল বা রস পানির সাথে তাড়াতাড়ি মিশে যেতে পারে, এজন্য বৃষ্টির সময় এই গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া ঠিক হবে না। কারণ বৃষ্টির সঙ্গে রস মিশে আপনার শরীরে যদি এসে পড়ে সেই ক্ষেত্রে আপনার শরীরের চামড়া পুড়ে যাওয়ার মত অবস্থা হবে এবং যদি কোন রকমে আপনার চোখে লেগে যায় তাহলে আপনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন।
তাই এই গাছের সংস্পর্শে না যাওয়াই ভালো, এখানে সাইনবোর্ড দিয়ে খুব সুন্দর করে লাগানো লিখে রাখা উচিত। বিশ্বের সবচাইতে বিপদজনক গাছ হিসাবে এই গাছটি চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই এই গাছের সমুদ্রের জল থেকে মাটি ক্ষয় রোধ করতে পারে। অনেকেই জানতে চায় যে কোন ফল খেলে মানুষ মারা যায়, আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে জানতে পেরেছেন।
শিশু কেরোসিন তেল খেলে করনীয়
শিশুরা অনেক সময় বুঝতে না পেরে কেরোসিন তেল খেয়ে ফেলে, এক্ষেত্রে শিশু কেরোসিন তেল খেলে করনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলের শিশুরা এই ধরনের ঘটনাটা বেশি ঘটিয়ে থাকে, কেননা তাদের মা বাবা সব সময় তেমন একটা খোঁজখবর নিতে পারে না। তারা কাজে ব্যস্ত থাকে থাকার কারণে, তবে এ বিষয়ে প্রত্যেক পিতা-মাতার সতর্ক থাকতে হবে। এটা খুবই একটা নিরাপদ জায়গায় আপনাকে রাখতে হবে।
যেভাবে বুঝবেন শিশু কেরাসিন খেয়েছেঃ শিশুর মুখের ভেতর পুড়ে যাওয়ার মত দেখা দিতে পারে। শিশুর শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে নিলে গন্ধ আসতে থাকবে, শিশুর নাক মুখ দেখে কেরাসিন বের হওয়া শুরু হবে এবং নাড়ির গতি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
শিশু যদি কেরোসিন তেল খেয়ে ফেলে তাহলে বিষের মতো কাজ করবে এজন্য চিকিৎসা হলো প্রথমত পাকস্থলী থেকে কেরাসিনর ঘনত্ব বৃদ্ধি না পায়, সেই ক্ষেত্রে শিশুকে দুধ খাওয়ানো যেতে পারে। শিশুর বয়স পাঁচ বছরের বেশি যদি হয় সে ক্ষেত্রে দুই গ্লাস দুধ খেতে দিবেন।
খাবার পরে যদি বমি করে তাহলে ফুসফুসে যেন না ঢুকে যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। যদি যায় তাহলে সেক্ষেত্রে শিশু নিউমোনিয়া হতে পারে, এভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করার পরে অবশ্যই নিকটস্থ ডাক্তারের কাছে দ্রুত যেতে হবে এবং নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য কাজ শুরু করতে হবে।
যে সকল কাজ করবেন নাঃ শিশু যেন কেরোসিন না খায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন, শিশুকে সতর্ক ও খেয়াল রাখতে হবে এবং কেরোসিনের তেল যেন তার হাতের কাছে না থাকে সেভাবে রেখে দিবেন। কেরোসিনের তেল কখনোই আঙ্গুল দিয়ে বা অন্য কেন ভাবে শিশুকে বমি করানোর চেষ্টা করানো যাবে না।
এতে শিশুর গলা ও মুখ পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আক্রান্ত শিশুকে চিত করে কখনোই শোনানোর চেষ্টা করবেন না। এতে ভিতরে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আশা করি শিশু কেরোসিন তেল খেলে করনীয় সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পেয়েছেন।
পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত গাছ
বিষ খেলে মানুষ মারা যায় কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত গাছ রয়েছে যার ফল খেলে মানুষ মারা যেতে পারে নিম্নে সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
ক্যারিবিয়ান এর উপকূলীয় অঞ্চলের মধ্যে আমেরিকায় দক্ষিণ আমেরিকা উত্তর অঞ্চলে এবং দক্ষিণ ফ্লোরিডায় এক ধরনের গাছ আছে যা অন্যন্য গাছের মতোই দেখতে কিন্তু গাছটাতে সবুজ হলদে মিক্স করে এক ধরনের ফল থাকে, যা আপেলের মতো দেখা যায় তবে গাছটির নাম দেওয়া হয়েছে ম্যানচিনিওল যাকে বলা হয় ট্রি অফ ডেথ, যা মৃত গাছ নামে পরিচিত।
এই গাছটা ফল এতটাই বিষাক্ত এবং এই গাছসহ বিষাক্ত এবং এর ফল খেলে মানুষ অতি দ্রুত মারা যায়। শুধু ফলই খেলেই যে মারা যাবে তা কিন্তু এই গাছের পাতা ছ াল রস যা কিছু আছে না কেন সবকিছুই বিষাক্ত এমনকি বাতাসও বিষাক্ত হয়ে থাকে। এজন্য এই গাছটিকে বিপদজনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তার সামনে সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে।
এই গাছের যদি কেউ ভুলক্রমে ফল খেয়ে থাকে তাহলে তার শরীরে বিষ বিষক্রিয়া হয়ে যাবে আর এই বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা হলো প্রথমত কোন হসপিটাল থাকলে অতি দ্রুত নিয়ে যেতে হবে এবং চিকিৎসককে বলতে হবে যে এই গাছের ফল সে খেয়েছিল তাহলে তাদের চিকিৎসা করতে সুবিধা হবে। বাংলাদেশে এই ধরনের গাছ নেই যার কারণে তেমন একটা এই ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
তবে এ থেকে আমাদের শিক্ষার বিষয় হলো আমাদের দেশে এই ধরনের কিছু গাছ থাকতে পারে সেগুলোর ফল অথবা পাতা লতা ইত্যাদি খেলেও ক্ষতি হতে পারে। তাই না জেনে কখনোই কোন গাছের ফল অথবা যেটা আপনি চিনতে পারেন না সেই গাছের সম্পর্কে না জেনে কখনোই ফল পাতা বা ওই গাছের কোন কিছুই খাবেন না।
এই গাছের দুধের মত সাদা এক ধরনের রস থাকে যা অত্যন্ত বিষাক্ত যদি এই গাছের চামড়া কারো শরীরে লাগে তাহলে সে জায়গায় পুড়ে যায় এবং সেটা সারতে অনেক সময় লাগে। এছাড়া ওই গাছের শরীরে যে এই রস বিদ্যমান আছে বা ছাল পাতা কোনটাই আপনি স্পর্শ করবেন না।
তাহলেই নিরাপদ থাকতে পারবেন, এই গাছগুলো অনেক বড় হয়ে থাকে এর উচ্চতা প্রায় পঞ্চাশ ফিটের মত, এই গাছ উপকূলীয় অঞ্চলে সাধারণত জন্ম নেয় বিশেষ করে লোনা পানিতে এগুলো জন্ম বেশি হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশ সমুদ্র অঞ্চলে হয়তোবা দেখা যেতে পারে তবে এখন পর্যন্ত এই ধরনের গাছ বাংলাদেশে দেখা যায়নি।
তবে আমাদের বাংলাদেশে কিছু ধরনের গাছ আছে যেগুলো ক্ষতি হতে পারে, আমেরিকার এক ধরনের গিরগিটি বা গুইসাপ জাতীয় পশু তারা এই ফলের বিষ তারা হজম করতে পারে। সাধারণত উপকূলীয় অঞ্চলেই এই গাছের বেশি দেখা যায় তাছাড়া অন্য কোথাও তেমন একটা দেখা যায় না। আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত গাছ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।
আমাদের শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় যে যদি কোন মানুষ বা প্রাণী বিষ খেয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে বিষ খাওয়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা হলো যদি আপনি নিশ্চিত হতে পারেন, তবে চেষ্টা করবেন দ্রুত নিকটস্থ কোন হাসপাতালে যাওয়ার। তাছাড়া এবং শিশুদেরকে সবসময় সতর্ক রাখবেন তাদের দিকে খেয়াল রাখবেন, যেন তারা কোন ধরনের বিষ খেয়ে না ফেলে। তাহলে বড় বিপদ হতে পারে। যাহোক আজকের পোস্টটা যদি আপনার কাছে ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url