চিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
চিয়া সিড মধু দিয়ে খেলে অনেক উপকারীতা পাওয়া যায়। তাই চিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খাবেন। তাহলে শরীরে পড়ছি পুষ্টি যোগাবে। চলুন, চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে এর অনেক উপকারিতা পাবেন, কারণ এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম রয়েছে। তাই চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃচিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
চিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম
চিয়া সিড অনেক উপকারিতা রয়েছে, তবে চিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী পরিমান মত খেতে হবে। তাই এর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্ন আলোচনা করা হলো,
চিয়া সিড ভিজিয়ে খেলে সবচেয়ে ভালো উপকার পাওয়া যায়। তাই এক গ্লাস পানি এর মধ্যে এক চামচ চিয়া সিড দিয়ে ভিজিয়ে রেখে দেবেন, এরপর এমনি যদি খেতে না পারেন তাহলে মধু বা মিষ্টি জাতীয় পরিমাণ মতো দিবেন। তবে মধু দিয়ে খেলেই সবচেয়ে ভালো উপকার পাওয়া যায়। সকালে এবং রাত্রিতে খাবেন।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম হলো খালি পেটে সকালে কিংবা রাত্রে ১ থেকে ২ চামচ চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে ৩০ মিনিট পর মধুর সাথে মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন। দেখবেন অনেক উপকার পাবেন, তবে একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন অবশ্যই খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে, তাহলে উপকার পাবেন।
যদি আপনি ওজন কমাতে চান সেই ক্ষেত্রে সকালে ও রাত্রিতে এক গ্লাস পানির সাথে দুই চামচ চিয়া সিড ও দুই চামচ মধু অথবা লেবুর রস মিস করে খেতে পারেন। এতে আপনার ওজন অনেকটাই কমতে পারে।
চিয়া সিড তেমন একটা স্বাদ নেই তাই এর সাথে যদি মধু মিক্সড করে খেতে পারেন। তাহলে মধুর উপকার পাবেন এবং টেস্ট হবে। তাই সাধারণত চিয়া সিড শুকনা কখনোই খাবেন না, কারণ এটা খাওয়ার পর অনেক পানি খেতে হয়, তাছাড়া পেটের ভেতরে সমস্যা হতে পারে।
চিয়া সিড ও মধু খাওয়া ছাড়াও আরো অনেক ভাবে খাওয়া যেতে পারে, যেমন শসার সাথে টক দই ও চিয়া সিড মিক্স করে এর সাথে কোন ফল নিয়ে ব্লেন্ডার করে খেতে পারেন। এতে অনেক সুস্বাদু হবে এবং পুষ্টি পাবেন।
বিভিন্ন ধরনের ড্রিংকস পাওয়া যায় তার সাথে খেতে পারেন অথবা ফলের জুস তারপর শরবত এর সাথে ও চিয়া সিড মিক্সড করে খেতে পারেন। চিয়া সিড দিয়ে সবচাইতে জনপ্রিয় হলো শরবত খাওয়া এটা সবাই খেয়ে থাকে। তবে এর মাঝে যদি মধু দিতে পারেন আরো ভালো টেস্ট হবে।
চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিবিদগণ চিয়া সিড এর গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিকর খাবার হিসেবে মনে করেন, কারণ এর মধ্যে ওমেগা ৩, ফ্যাটি এসিড, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রণ, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি রয়েছে।
চিয়া সিড এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি আছে, এর মধ্যে দুধ খেলে যে ক্যালসিয়াম হয়। চিয়া সিড এ বেশি ক্যালসিয়াম আছে। কমলা খেলে সি পাবেন, তার চিয়া সিড ভিটামিন সি বেশি আছে। পালং শাক খেলে যে ভিটামিন পাওয়া যাবে তার চেয়ে বেশি আয়রন পাওয়া যাবে।
কলা খেলে যে ভিটামিন পাওয়া যাবে বা পটাশিয়াম পাওয়া যাবে। আর এটা খেলে দ্বিগুণ পটাশিয়াম পাবেন মুরগির ডিম প্রোটিন আছে। তার চেয়ে এর মধ্যে তিন গুণ বেশি প্রোটিন পাওয়া যাবে। তাই চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ বেশি রয়েছে, সেই হিসাবে যদি আপনি নিয়মিত খেতে পারেন। তাহলে অনেক উপকার পাবেন, তবে অনেকেই এটা সরাসরি খেতে পারে না।
এর সাথে অন্য খাবারের সাথে মিক্সড করে খেলে ভালো স্বাদ পাওয়া যায় এবং খেতেও পারবে। সে ক্ষেত্রে মধু মধু দিয়ে খেলে সবচাইতে ভালো উপকারিতাও পাওয়া যাবে। মুখে স্বাদ লাগবে তবে চিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী ও পরিমাণ মতো খেতে হবে, তা না হলে ক্ষতি হবে। তাই আপনি প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন খেতে খেলে অনেক উপকার পাবেন।
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
চিয়া সিড এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিগুণ আছে, তাই চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
হৃদপিণ্ড ভালো রাখেঃ চিয়া সিড মধ্যে ওমেগা ৩, ফ্যাটি এসিড থাকার কারণে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং খারাপ কোলেস্টর গুলো দূর করে দেয়। যার কারণে হৃদপিন্ড ভালো থাকে। এছাড়াও যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে সে ক্ষেত্রে এটা খেলে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ চিয়া সিড এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা আমাদের শরীরের রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে পারে। যার কারণে টাইপ-২ ডায়াবেটিস যাদের রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং তাদের ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ওজন কমাতে পারেঃ এর মধ্যে চিয়া সিড এর মধ্যে যে পুষ্টি উপাদান আছে, তা খেলে হজম শক্তি হয়। যার কারণে দীর্ঘক্ষণ পেটের মধ্যে থাকে পেট ভরা মনে হয়, ক্ষুধা কম লাগে। এর ফলে অন্য খাবার না খাওয়ার কারণে ওজন কমতে থাকে। তবে এটা সরাসরি না খেয়ে মধু দিয়ে খেলে আরো বেশি উপকার পাবেন।
হাড় কে মজবুত করেঃ বয়স্ক লোকদের সাধারণত হাঁটু ব্যথা এবং হাড় ক্ষয়ের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই তাদের এ ধরনের সমস্যা হয়, সাধারণত ক্যালসিয়ামের অভাবে। যা চিয়া সিড এর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে। তাই এটা খেলে এ ধরনের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
প্রদাহ কমায়ঃ যাদের সার্বক্ষণ শরীর ব্যথা করে বা বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা করে সে ক্ষেত্রে চিয়া সিড ভিজিয়ে খেতে পারেন। এতে অনেক উপকার পাবেন, কারণ এর মাঝে যে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে তা শরীরের যেকোনো ধরনের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে বাতের ব্যথা গেটে বাদ ইত্যাদি থাকে তারা নিয়মিত ভাবে চিয়া সিড খেতে পারেন। কেননা চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে।
শক্তি বৃদ্ধি করেঃ যারা অল্পতে ক্লান্ত হয়ে যান এবং শরীর দুর্বল শারীরিক পরিশ্রম করতে পারেন না। এতে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয় এজন্য তারা চিয়া সিড বীজ খেতে পারেন এতে আপনার প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পুষ্টি রয়েছে। ভিটামিন বি ইত্যাদি থাকার কারণে আপনার শরীরের শক্তি যোগাবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তারা নিয়মিতভাবে এই চিয়া সিড খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং ঘন ঘন সর্দি ঠান্ডা কাশি জ্বর এই ধরনের সংক্রমণ কে প্রতিহত করতে পারবে। কারণ এর মাঝে এন্টি এক্সিডেন্ট রয়েছে তবে উপকার আছে বলেই পরিমাণের চেয়ে বেশি খাওয়া যাবে না।
চিয়া সিড এর কোন স্বাদ নেই এমনি খাওয়া যায় না তাই অন্য কোন খাবারের সাথে খেলে ভালো স্বাদ পাওয়া যায় এবং উপকারও আসবে।
চিয়া সিড কতক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হয়
চিয়া সিড কখনোই শুকনা খাওয়া যাবেনা ভিজিয়ে খেতে হবে এজন্য চিয়া সিড কতক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হয়। সে সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,কখনোই কাঁচা খাবেন না কারণ এতে ক্ষতি হতে পারে কারণ প্রচুর পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার দেখবেন এটা পানি শোষণ করে বেশি। এজন্য শুকনা খেলে পেটের ভেতর প্রচুর পরিমাণে পানির প্রয়োজন হতে পারে এবং খাদ্যনালীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য এটা পানি হোক দুধ অথবা অন্য কোন খাবারের সাথে ভিজিয়ে খেতে হবে।
পানিতে ভিজালে যে জেল এর মত দেখতে হয় এতে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি গুলো ভেঙ্গে যেতে পারে যা শরীরের জন্য উপকার। এই জন্য চিয়া সিড ভিজিয়ে খেলে পুষ্টি দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং হজম দ্রুত হয়।
দুধ অথবা পানির মধ্যে চিয়া সিড ভিজাতে পারেন এতে তিন ১ঃ৩ এই সময় অনুপাতে পানি অথবা দুধের মধ্যে ভিজাতে পারেন। এক অংশ ১ঃ৩ এভাবেই আপনি দুধ অথবা পানি নিয়ে ভিজাতে পারেন তবে এর চেয়ে বেশি পানি অথবা দুধ নেওয়া যাবে না। পরে মেশানোর মিস করবেন যখন সে ক্ষেত্রে প্রায় ১৫ মিনিটের মতো রেখে দিবেন।
তবেই মিশ্রণটি চামচ দিয়ে একটু নেড়ে দিতে হবে। মিশ্রণটি থকথকে হয়ে গেলে এরপরে এটা খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। এর সাথে ফল বাদাম মিক্সড করে খেলে উপকার পাবেন। তবে যেভাবেই খান না কেন এর সাথে মধু মিক্স করেও খেতে পারেন।
শুধুমাত্র পানিতে অথবা দুধের চিয়া সিড ভিজিয়ে খেলে উপকার পাবেন তেমন একটা নয় এর সাথে উপকার পাবেন তারপর আরও একটি কাজ করতে পারেন সেটা করাইতে চিয়া সিড ভেজে নিলে এবং রোস্টের চিয়া সিড সালাতের সাথে খেলে আরো অনেক উপকার পাবেন।
সুস্বাদু হবে তবে যেভাবেই খান না কেন এদের প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। তা না হলে হজমের সমস্যা হতে পারে এবং চেষ্টা করবেন সকালবেলা নাস্তা খাওয়ার পরে এটি খাওয়ার জন্য তাহলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। আশা করি চিয়া সিড কতক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হয় বুঝতে পেরেছেন।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
চিয়া সিড এর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা আছে। তাই অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
পেট খারাপ হওয়াঃ চিয়া সিড এর মধ্যে ফাইবার থাকে যার কারণে অতিরিক্ত যদি খেয়ে ফেলেন সে ক্ষেত্রে পেট খারাপ হতে পারে ডায়রিয়া সহ বমি করা এরকম অসুবিধা দেখা দিতে পারে।
হজমের সমস্যাঃ চিয়া সিড এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকার কারণে অনেকের পেটে হজম হয় না। সে ক্ষেত্রে যদি আপনি বেশি খান তাহলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে, পেট ফাঁপা দিতে পারে গ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এটা অবশ্যই আপনার নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে, তবে যদি আপনি এমনি খেতে না পারেন সে ক্ষেত্রে মধু দিয়ে খেতে পারেন। তাই চিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে, তা না হলে ক্ষতি হবে।
নিম্ন রক্তচাপের নিয়ন্ত্রণের সমস্যাঃ যাদের প্রেশার লো রয়েছে তারা যদি এই চিয়া সিড খায় তাহলে আরো প্রেশার নেমে যাবে। তাই এক্ষেত্রে চিয়া সিড খেতে হলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে, তা না হলে আপনার শরীরের ক্ষতি হবে।
ওজন কমে যাওয়াঃ যাদের ওজন একেবারেই কম তারা যদি এই চিয়া সিড খায় তাহলে তাদের ক্ষুধা কমে যাবে এবং ওজন কমতে থাকবে। যার কারণে ওজন কমতে থাকবে তাই যারা একেবারেই ওজন কম তারা এই সেড না খাওয়াই ভালো। এটা শরীরের পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেবে এবং সমস্যা হতে পারে।
এলার্জির সমস্যাঃ যাদের আগে থেকেই এলার্জির সমস্যা রয়েছে এবং কোন কিছু খাবারের সমস্যা হলেই এলার্জি হয়। সে সকল লোকেরা যদি চিয়া সিড এর বীজ খায়, এলার্জি আরো বেশি হতে পারে। কারণ চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা রয়েছে। তাই প্রতিক্রিয়া অতি বেশি হলে অবশ্য একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
ওষুধের সাথে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ অনেক সময় চিয়া সিড ওষুধের সাথে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, তাই যারা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকেন। তারা চিয়া সিড খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খাবেন, তা না হলেও ক্ষতি হতে পারে।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
যদি আপনি ওজন কমাতে চান সে ক্ষেত্রে ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং সুস্থ থাকবেন নিম্নে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
চিয়া সিড এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে এবং প্রোটিন থাকার কারণে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এই ক্ষেত্রে যদি আপনি ওজন কমাতে চান তাহলে ২৮ গ্রাম চিয়া সিড ১০ গ্রাম ডায়েটরি ফাইবার থাকে এজন্য আমাদের এটা খাওয়া যেতে পারে।
কারণ আমাদের প্রতিদিন প্রায় ৩৫ পার্সেন্ট চিয়া সিড এর মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে এটা পানির মধ্যে পানি শোষণ করে, জেল এর ন্যায় থকথকে দেখা যায় এবং আঠালো হয় যার কারণে পাকস্থলীতে যাওয়ার পরে বিপাক প্রক্রিয়ার ঘটতে পারে এবং ফলে অনেকক্ষণ যাবত পেটের ভেতরে থাকে এবং ক্ষুধা কম লাগে এজন্য আসতে আসতে ওজন কমতে থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে দ্রবণীয় খাদ্য আঁশ গুলো আমাদের শরীরের মেটাবলিজম বুস্ট করতে পারে। যার কারণে ওজন কমতে থাকে, যাদের অভার ওজন রয়েছে মানে স্বাভাবিকের চাইতে বেশি ওজন রয়েছে তারা এই ডায়েটরি প্ল্যানটা করতে পারেন।
তারা চিয়া সিড খেতে পারেন তবে অনেকে এমনি খেতে চায় না কারণ এর ভিতরে এটার মধ্যে তেমন কোনো স্বাদ গন্ধ নেই এজন্য আপনি শরবত বানিয়ে খেতে পারেন অথবা এর সাথে মধু মিক্স করে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন। তাহলে অনেক উপকার পাবেন, তবে খাবার আগে চিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে তাহলেই উপকার পাবেন।
গবেষণায় দেখা গেছে টাইপ ২ ডায়াবেটিস যাদের রয়েছে তাদের মাঝে ৭৭ জন মানুষ স্থূলকায় ওজন বেশি এই ধরনের ব্যক্তিকে ৬ মাসের চিয়া সিড জাতীয় খাদ্য খাওয়ানো হয়েছিল। পরবর্তী দেখা গেছে তাদের অনেকটাই ওজন কমে গেছে, এজন্য ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে।
তাছাড়া শীতের মধ্যে প্রোটিন আমাদের শরীরের ক্ষুধা নিবারণ করতে পারে এবং অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের চাহিদা থাকে না এর কারণে খাদ্য কম খাওয়া হয় যার কারণে ওজন কমতে থাকে। তাছাড়া আরো গবেষণায় দেখা গেছে যে দুটি দলকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল প্রথম দলকে সাত গ্রাম সে এসে প্রতিদিন টক দের সাথে মিক্সড করে খাওয়ানো হয় এবং দ্বিতীয় দলকে চিয়া সিড ছাড়া শুধু টক দই খাওয়ানো হয়েছিল, কয়েকদিন পর দেখা গেল যে প্রথম দলের লোকদের অনেকটাই ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে।
তবে চিয়া সিড কে ওজন কমাতে সাহায্য করে কিন্তু এটা বৈজ্ঞানিকভাবে এখন পর্যন্ত সেভাবে গবেষণা করা হয়নি। তবে চিয়া সিড এর পাশাপাশি অবশ্যই ক্যালরি সম্পন্ন খাবার খেতে হবে তাহলেই ওজন কমতে সাহায্য করবে।
চিয়া সিড দিয়ে চুলের যত্ন
আপনার চুল যদি সৌন্দর্য নিয়ে আসতে চান সেক্ষেত্রে চিয়া সিড দিয়ে চুলের যত্ন নিতে পারেন নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
অনেকের গ্রীষ্মকালে অত্যন্ত গরমের কারণে চুল অমসৃণ হয়ে যায় এজন্য যেকোনো কিছু ব্যবহার করলেও চুল ভালো হয় না বরংচ আরো দিনে দিনে রুক্ষ হয়ে যায়। এজন্য আজ থেকে শুরু করুন পাঁচ দিন চিয়া সিড ব্যবহার করেন হেয়ার প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করুন।
দেখবেন আপনার চুল সুন্দর্য ফিরে আসবে। কারণ এর মাঝে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এবং খনিজ থাকার কারণে চুলকে পুষ্টি ও মজবুত করতে পারে। তাছাড়া সেটির মধ্যে আছে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড আছে যেটা আপনার চুলের আদ্রতা বজায় রাখতে পারবে এবং চুলকে অনেক সিল্কি করবে।
প্রথম দিন যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ চিয়া সিড এর হেয়ার মাস তৈরি করবেন এবং সেটাই ব্যবহার করবেন তাহলে আপনার চুলে এর জন্য আধা কাপ গরম পানি নিয়ে চিয়া সিড এর মধ্যে দুই চামচ মিশিয়ে নিবেন। তারপর ১৫ মিনিট রেখে দেওয়ার পর আপনার চুলে মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন, হালকা গরম পানি এবং শ্যাম্পু দিয়ে ফেলতে পারো ধুয়ে ফেলবেন।
দ্বিতীয় দিন যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ চুলের মাস্কের পর এর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে এর জন্য দুধ চামচ ২ চামচ ৮৬ টা নিয়ে এর সাথে দুই চামচ নারিকেলের তেল মিক্সড করে ব্লেন্ডার করবেন। এরপর এই মিশ্রণটি চলে লাগাবেন এরপর ১৫ মিনিট রাখার পর গরম হালকা গরম পানি দিয়ে ও শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করুন ধুয়ে পরিষ্কার করুন। এভাবে আপনি চিয়া সিড দিয়ে চুলের যত্ন নিতে পারেন।
তৃতীয় দিন যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ তৃতীয় দিনে আপনার চুল মজবুত করতে চিয়া সিড বীজ নিবেন এরপর দুই চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এবং কয়েক ফোটা পেপার মিন ্ট এসেনশিয়াল মেশিয়ে মিক্সড করে নিবেন তারপর মাথার ত্বকে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে থাকেন করবেন ১৫ মিনিট রাখার পরেই হালকা গরম পানির শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে নিবেন।
চতুর্থ দিনে ব্যবহার করবেনঃ দুই চামচ চিয়া সিড এর সাথে এক চামচ পরিমাণ মধু এবং অলিভ অয়েল তেল মেশিয়ে নিবেন এতে আপনার মাথায় মিশ্রণটা দেওয়ার পরে ৩০ মিনিট রেখে দেবেন। হালকা গরম পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে মাথা পরিষ্কার করে নেবেন। তবে এভাবে যদি আপনি পাঁচ দিন ব্যবহার করতে পারেন।
তাহলে আপনি নিজেই এর ফলাফল দেখতে পারবেন অনেকটাই উপকার পাবেন এবং চুলের গোড়ালি মজবুত করবে চুল কোঁকড়ানো চুল দূর হয়ে যাবে এবং অনেক সিল্কি দেখাবে উজ্জ্বল হবে। তবে চলে যাওয়ার পাশাপাশি চুলে দেওয়ার পাশাপাশি আপনি এটা খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে মধু দিয়ে খেলে ভালো স্বাদ পাবেন। তবে চিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী পরিমাণ মতো খেতে হবে।
উপসংহারঃ চিয়া সিড মধু দিয়ে খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
পরিশেষে বলা যায় যে চিয়া সিড টা অনেক উপকারিতা রয়েছে, তাই এটা যদি আপনারা নিয়ন্ত্রক ভাবে খেতে পারেন শরীরের জন্য অনেক উপকার হবে এবং ত্বকের ও চুলের ও পুষ্টি যোগাবে। তাই এটা খাওয়ার জন্য অবশ্যই নিয়ম মেনে চলতে হবে। তাই অনেকে নেই স্বাদ গন্ধ নেই যার কারণে অনেকে এমনি খেতে পারে না। অন্যান্য খাবারের সাথে খেয়ে থাকে বিশেষ করে শরবত করে বেশি খায়। তাই আপনি যদি না খেতে পারেন মধু দিয়ে খেতে পারেন, তাহলে আপনার শরীরে পুষ্টি গুনাগুন পাবেন আজকের এই পোস্টটা যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url