ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা এবং নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা গুলো হলো কোষ্ঠকাঠিন্য, দীর্ঘমেয়াদী ডায়রিয়া, পাইলসের সমস্যা ইত্যাদি দূর করে। চলুন, ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ইসবগুলের ভুষির সাথে তকমা দানা মিশিয়ে যদি খেতে পারেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন। তবে এটা ভিজিয়ে খেলে সবচাইতে ভালো উপকার পাওয়া যায়। তাই ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা এবং নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ রয়েছে, ইসবগুলের ভুষি শুধু যে পেটের সমস্যা দূর করে তা কিন্তু নয় এটা আরো অনেক ধরনের উপকার করে থাকে, নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ ইসবগুলের ভুসির মধ্যে ফাইবার বা আঁশ যুক্ত হওয়ার কারণে এটা পেটের ভিতরে গিয়ে পাকস্থলীতে যাওয়ার পর ফুলে ওঠে এবং ভিতরে যত বর্জ্য পদার্থ রয়েছে সেগুলো বাহিরে বের করে দিতে পারে। প্রাকৃতিকভাবে এই ইসবগুলের ভুষি কোষ্ঠকাঠিন্যর ক্ষেত্রে অনেক উপকার করে থাকে।
বিশেষ করে এটি পাকিস্থলীতে গিয়ে মলের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এই জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য যাদের রয়েছে তারা দুই চামচ ইসবগুলের ভুষি এবং এক গ্লাস দুধের সাথে মিক্স করে প্রতিদিন রাত্রিতে খেতে পারেন এবং এর সাথে তোকমা দানা খেতে পারলে আরো ভালো উপকার পাওয়া যায়।
ডায়রিয়া প্রতিরোধঃ ডায়রিয়া কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে হলে করতে, যদি চান তাহলে সেক্ষেত্রে ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন। তবে যাদের ডায়রিয়া হবে তারা ইসবগুল এর সাথে দই মিশিয়ে খেতে পারেন। দই এর মধ্যে থাকে এক ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া, কারণ এর মাঝে প্রোবায়োটিক থাকে।
যা পাকস্থলীতে যদি ইনফেকশন হয় সেটা দূর করতে সাহায্য করে। তাছাড়া ইসবগুলের ভুসি তরল মলকে শক্ত করতেও সাহায্য করে, তাই ডায়রিয়া হলে এসব গুলো ভুষি খেতে পারেন। ডায়রিয়া হলে দুই চামচ ইসবগুলের ভুসি তিন চামচ টাটকা দই মিশিয়ে খেতে পারেন। এভাবে দিনে দুইবার যদি খেতে পারেন তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন।
এসিডিটি প্রতিরোধঃ অধিকাংশ মানুষের এসিডিটি হয়, তাই ইসবগুলের ভুষি যদি আপনি খেতে পারেন তাহলে পাকস্থলীর ভিতরে যে প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে তা এসিডিটি থেকে পাকস্থলীকে সাহায্য করতে পারে। তাছাড়া হজমের ক্ষেত্রে এটা ভালো কাজ করে থাকে। তাই প্রতিদিন ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি আধা গ্লাস পানির মধ্যে মিশে খেতে পারেন। তাই ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ ওজন কমানোর জন্য ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। এটা ভালো ফলাফল পাবেন কারণ এটা খেলে পেটের মধ্যে গিয়ে ফুলে ওঠে যার কারণে অনেক সময় পেট ভরা মনে হয়।
এজন্য ফ্যাটি খাবার গুলো খাওয়ার ইচ্ছা হয় না। তাছাড়া ইসবগুলের ভুসি কোলন পরিষ্কার করতে পারে, পাকস্থলীকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে পারে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
তাই এই হজমশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য আপনি নিয়মিত ভাবে ইসুবগুলের ভুষি খেতে পারেন। এজন্য হালকা গরম পানি মধ্যে দুই চামচ লেবুর রস মিক্স করে খেতে পারেন এবং সকাল বেলাও খালি পেটে খেলে ওজন কমতে পারে। তবে এর সাথে তোকমা দানা ও খেতে পারেন, তাহলে ভালো উপকার পাবেন।
হজম ক্রিয়ার উন্নতি করেঃ ইসবগুলের ভুসির মধ্যে আছে ফাইবার যা পানিতে দ্রবণীয় হওয়ার কারণে এটা অনেক উপকার পাওয়া যায়। এটা পাকস্থলীর মধ্যে খাবার গুলো চলাচল ও বর্জ্য পদার্থ বের করতে পারে। এজন্য হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে হলে আপনি ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। তাছাড়া ইসবগুলের ভুষি মাঠা বা ঘোলের সাথে যদি খেতে পারেন তাহলে আরো উপকার পাওয়া যাবে।
হৃদ রোগ ঝুঁকি কমায়ঃ যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত ভাবে এই খাদ্য আশ যুক্ত খাবার ইসুবগুলের ভুষি খেতে পারেন। কারণ এর মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে কোলেস্টরেলের মাত্রা কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে এবং হৃদরোগ অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এর মধ্যে ক্যালোরি কম থাকে যার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি কম হয়।
ডাক্তাররা সাধারণত হৃদ রোগ প্রতিরোধ করার জন্য খেতে বলেন। কারণ সিরাম কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে নিয়ে আসে, তাছাড়া অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকলেও সেটা সরিয়ে দিতে পারে এবং ধমনীতে ব্লকের সৃষ্টি থেকে রক্ষা করে। এজন্য হাটকে সুস্থ রাখতে হলে নিয়মিত ভাবে সকালে খালি পেটে এইসবগুলোর ভুসি খেতে পারেন।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধঃ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন, এটা পাকস্থলীতে গিয়ে জেলির মত কাজ করে এবং গ্লুকোজের ভাঙ্গন ও শোষণের গতি কে কমিয়ে নিয়ে আসে। যার কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হয়, তাই এটা খাওয়ার নিয়ম হলো দুধ বা পানির সাথে ইসবগুলের ভুসির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন এবং এতে সমস্যা দেখা দিতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
পাইলসের সমস্যা দূর করেঃ যাদের পাইলসের সমস্যা রয়েছে তারা সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যতে ভুগতে থাকেন এবং পায়ুপথে ফাটল এবং পাইলসের মতো বেদনাদায়ক সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিতভাবে ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন। এটা আপনার পেট পরিষ্কার থাকবে মলকে নরম করবে যার কারণে আপনার তেমন একটা কষ্ট হবে না।
পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হবে না, কারণ এই ধরনের ক্ষত সারাতে অনেকটাই সাহায্য করে থাকে। যদি পায়খানার রাস্তায় কোন ক্ষত হয়ে থাকে সেটাও সারাতে অনেক উপকার করে। ২ চামচ ইসবগুলের ভুষি হালকা গরম পানি মধ্যে মিশিয়ে নিয়মিত ভাবে খেতে পারেন, এতে অনেক উপকার পাবেন। এর সাথে তোকমা দানা মিশিও খেতে পারেন এতে আরো অনেক উপকার পাওয়া যায়।
তোকমা খাওয়ার উপকারিতা
তোকমা দানা শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। তাই এর উপকারিতা রয়েছে, নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
শরবত বানানোর ক্ষেত্রে ইসবগুলের ভুষি এবং তোকমা দানা দিলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে এর মাঝে এই তোকমা দানার মধ্যে থাকে ফাইবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আয়রন ম্যাগনেসিয়াম এবং ফ্যাটি অ্যাসিড আছে, যা আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে।
তোকমা দানা দেখতে প্রায় চিয়া বীজের মত খুবই ছোট ছোট এবং অনেকটা কালো হয়ে থাকে। এজন্য এটি খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে ভিজিয়ে রাখা ভালো, তবে দুই ঘণ্টার বেশি ভিজিয়ে রাখা যাবে না। তবে এর উপকারিতা সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
তোকমা দানার ভিতরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া অন্ত্রের স্বাস্থ্য কে সুস্থ রাখে এজন্য তোকমা জানার সাথে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন, তাহলে অনেক ভালো উপকার পাবেন। কেননা ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে।
যদি কেউ শরবত খেতে চান সে ক্ষেত্রে তোকমা দানা দিয়ে শরবত খেতে পারেন, কারণ এটি শরীরের তরল এর মাত্রা পূরণ করবে।
তোকমা দানার মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে এটি কার্ডিওভাস্কুলার রোগ, কোলেক্টরাল ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে এর মধ্যে এন্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে শরীরের রক্তের কোলেস্টেরল কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে ও ওজন কমাতে পারে।
তোকমার ভিতরে এক ধরনের এন্টি ব্যাকটেরিয়াল থাকার কারণে এটা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
যে কোন প্রদাহ বা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে, তোকমা দানার মধ্যে থাকে ভিটামিন কে, এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট মত পুষ্টি আছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করে থাকে।
তোকমা দানার মধ্যে যে পুষ্টি উপাদান থাকে তা যদি পানিতে ভিজানো যায়, সেক্ষেত্রে জেলির মত ফুলে ওঠে ফুলে এবং এটা নিয়মিত খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
রক্তের শর্করা মাত্রা কমানোর জন্য খেতে পারেন রক্ত প্রবাহের চিনির নিঃসরণকে কমাতে হলে এবং গ্লুকোজের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে যদি চান সেই ক্ষেত্রে খেতে পারেন।
তোকমা এর মধ্যে যে পুষ্টি উপাদান আছে তা ত্বকের অকাল পার্থক্য দূর করতে পারে। এটা শরবত বানিয়ে নিয়মিত খেলে ত্বক সুন্দর উজ্জ্বল থাকে।
তোকমা দ্বারা শরবত সাধারণত শীতল হয়ে থাকে এবং যা খেলে মানসিক চাপ এবং চিন্তাভাবনা কমে যায়।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
অনেকে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানেনা নিম্নে ইসবগুলের ভুসি কিভাবে খাবেন তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ইসবগুলের ভুসি রাতে ভিজিয়ে সকালে অনেকেই খেয়ে থাকে এই রীতিনীতি প্রায় বহুত বছর যাবত চলে আসছে কিন্তু এটা কতটা উপকারী অনেকে জানে না এবং অনেকে জানে যেটা শুধু কোষ্ঠকাঠিন্যই দূর করে কিন্তু এটা আরো অনেক উপকার করে থাকে। তবে এটা কিভাবে খাবেন সে নিয়মটা জানা খুবই জরুরী, তা না হলে ক্ষতি হতে পারে।
এজন্য দুই চামচ ইসবগুলের ভুসি এক গ্লাস পানি দিয়ে মিশে প্রতিদিন খেয়ে নিবেন। যাতে করে ভিতরে গিয়ে ফুলে ওঠে এর সাথে চিনি বা মিষ্টি জাতীয় কোন কিছু মিশাবেন না কিন্তু এর জন্য অবশ্যই এক ঘন্টা যাবত ঘন ঘন পানি খাবেন কারণ এটা বাইরে থাকলে যেরকম ফুলে ওঠে ভিতর ফুলে উঠতে পারে। বিধায় বেশি বেশি পানি খেতে হবে, তা না হলে ক্ষতি হবে।
ইসবগুলের ভুষি প্রবায়োটিক হিসেবে কাজ করে থাকে, তাই দুই চামচ ইসবগুলের ভুসি এবং ১৫ মিলি লিটার টক দই নিয়ে মিশিয়ে খেতে পারেন। তারপর এক গ্লাস পানি খেয়ে নিবেন, তাহলে যদি ডায়রিয়ার সমস্যা থাকে। তাহলে সেটা প্রোবায়োটিক হিসাবে কাজ করা শুরু করবে।
যাদের আইবিএস এর সমস্যা রয়েছে, কোষ্ঠকাঠিন্য যাদের হয় তারা ইসবগুলের ভুসি নিয়ম খেতে পারেন। তাছাড়া যাদের এনাল ফিশার পাইলস অর্শ এ ধরনের রোগ আছে তাদের প্রচন্ড পরিমাণ ব্যথা করে। এটা দূর করার জন্য হলেও ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন। তবে ইসবগুলের ভুসির পাশাপাশি যদি তোকমা দানা খেতে পারেন। কারণ ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে।
অনেকের খাদ্যনালী প্রদাহ করতে পারে সে ক্ষেত্রে দুই চামচ ইসবগুলের ভুসির সাথে ঠাণ্ডা পানি খেয়ে নিতে পারেন। এতে আপনার পেটের ভিতরে বা বুকের ভিতর জ্বালাপোড়া করে এবং পেটে গ্যাস হয় এ ধরনের সমস্যা থেকে দূর করতে পারে।
এছাড়াও এটি খাবারের কারণে শর্করা জাতীয় খাবার খেলে তাছাড়া এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। এজন্য ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি হালকা কুসুম গরম পানি এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাবেন এবং অনেকটাই ওজন কমতে পারে। তাই ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম ও পরিমাণমতো খেতে হবে।
যাদের সারা বছরে পেটের মধ্যে বুট বুট শব্দ করে বা পাতলা পায়খানা হয়, তাদের জন্য ৭ থেকে ১০ দিনের বেশি খাওয়া যাবে না এতে ক্ষতি হতে পারে।
তোকমা খাওয়ার নিয়ম
তোকমা দানা খাওয়ার উপকারিতা আছে, তবে তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে তারপর খেলে উপকার বেশি পাবেন। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
- তোকমা দানা প্রতিদিন যদি খেতে পারেন তাহলে উপকার পাওয়া যায়। তবে এটা খাওয়ার নিয়ম হলো পানিতে ভিজিয়ে সকালবেলা খালি পেটে খেতে হবে, তাহলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
- এক থেকে দুই চামচ তোকমা দানা বা পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে হবে এর বেশি খাওয়া যাবে না।
- চিনি দিয়ে খাবেন না, ক্ষতি হতে পারে। চেষ্টা করবেন চিনি ছাড়া খাওয়ার জন্য।
- এটা আপনি নিয়মিতভাবে খেতে পারেন তবে দীর্ঘদিন খাওয়া যাবে না, এতে ক্ষতি হতে পারে। একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ইসবগুলের ভুষি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- দুই চামচ ইসবগুলের ভুসি হালকা কুসুম গরম পানি সাথে মিশিয়ে খাবেন, এর ভিতরে যদি একটু লেবুর রস দিতে পারেন আরো অনেক ভাল উপকার পাবেন। এভাবে নিয়মিত খেলা অনেকটা ওজন কমে যেতে পারে।
তবে এর সঠিক নিয়ম হলো এক গ্লাস পানির মধ্যে সারারাত ভিজিয়ে রেখে তারপরে খেতে পারেন। তবে কখনোই সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা খাবেন না, কারণ এটা ভেজানোর সাথে সাথেই খেয়ে নিতে হয়। তাই যদি ইসবগুলের ভুষির ও তোকমা মিক্সড করে ভিজিয়ে খেতে পারেন। তাহলে আরো অনেক বেশি উপকার পাবেন।
তোকমা দানার জুসঃ এর মতই তোকমা জানার অনেক উপকার রয়েছে এটা একবার পান করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, তোকমা খাওয়ার নিয়ম ও যেভাবে তৈরি করবেন।
- দুই বা তিন চামচ তোকমা দানা নিবেন
- দুই কাপ পরিমাণ ফ্রেশ পানি নিবেন
- একটা পছন্দের মত ফল রস নিবেন এক কাপ ফলের রস নিতে পারেন
- পছন্দ মতো তাজা ফল নিলে সবচাইতে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
- উপরের সকল উপাদান গুলো নিয়ে ভেলেন্ডার করে নিবেন, বেলেন্ডা করার পর পানির সাথে মিশি এর সাথে লেবুর রস দিতে পারেন। আরো সুন্দর ফ্লেভার আসবে এবং মজা লাগবে তবে অনেকেই ইসবগুলের ভুষি তোকমা দানার সাথে খেতে পছন্দ করে। চাইলে আপনি এভাবে খেতে পারেন
- ইসবগুলের ক্ষতিকর দিক
- ইসবগুলের ভুষি যেমন উপকার রয়েছে তেমনি ইসবগুলের ক্ষতিকর দিক আছে। তাই নিয়ম তান্ত্রিক ছাড়া খাওয়া যাবে না এতে ক্ষতি হবে,
অতিরিক্ত যদি ইসবগুলের ভুষি খেয়ে ফেলেন সেক্ষেত্রে ক্ষুধামান্দা অথবা ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে।
ইসবগুলের ভুষি অনেক সময় ওষুধের কার্যকারিতা তার উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে। যার কারণে ওষুধ খাওয়ার দুই ঘন্টা আগে অথবা দুই ঘন্টা পরে এটি খাওয়া যেতে পারে।
তা না হলে ক্ষতি হতে পারে তবে ইসবগুলের ভুসির সাথে যদি তোকমা দিয়ে খেতে পারেন। তাহলে আরো অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
ইসবগুলের ভুসি অনেকক্ষণ যাবৎ ভিজিয়ে রেখে খাওয়াটা ঠিক হবে না, কারণ এর কার্যক্ষমতা অনেকটা কমে যায়, গলায় আটকে যেতে পারে এতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে ইসবগুলের ক্ষতিকর দিক রয়েছে।
তোকমা খাওয়ার অপকারিতা
তোকমা দানা খেলে শরীরের উপকার হয় কিন্তু পরিমাণে বেশি খেয়ে ফেললে শরীরে যেন মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই তোকমা খাওয়ার অপকারিতা রয়েছে। মানুষের শরীরে যখন কোন কিছু নিয়মিত ভাবে খাওয়া হয় সেটা পরিস্থিতি নিজেকে মানিয়ে নিতে হয় কিন্তু যখন অতিরিক্ত খেয়ে ফেলে সেক্ষেত্রে শরীর মেনে নিতে পারে না, এতে অসুবিধা সৃষ্টি হয়।
তাই তোকমা দানা খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে, পরিমাণ এর চেয়ে বেশি খাওয়া যাবে না। এদের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে তাই কি কি ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। নিম্নে আলোচনা করা হলো,
গর্ভবতী নারীর ক্ষতি করেঃ গর্ভবতী নারীদের এই সময় হরমোনের পরিবর্তন হয়, তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এক্ষেত্রে অনেকেই ইসুবগুলের ভুষি খেয়ে থাকে।
তবে কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করবে কিন্তু গর্ভবতী নারীদের সাধারণত এ সময় ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। যার কারণে বেশি ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না, এতে ক্ষতি হতে পারে। তাই এ সময় তোকমা দানার সবচেয়ে বেশি থাকার কারণে না খাওয়াই ভালো, উপকারের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে।
এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারেঃ যদি এলার্জি সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে তোকমা দানা পুরোপুরি না খায় ভালো কারণ কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ এর মধ্যে এলার্জি জন্য যে উপাদানগুলো রয়েছে সেগুলো বিদ্যমান থাকে। তাই অতিরিক্ত খাওয়া যাবেনা, এটা নিয়ন্ত্রক ভাবে খেতে হবে। তা না হলে ক্ষতি হবে। সাথে ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন এতে উপকার পাওয়া যায়।
তবে পরিমাণ মতো খেতে হবে কারণ ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। যেগুলো খাবারে এলার্জি হয় তার মধ্যে তোকমা দানা একটি অন্যতম। তাই এটা থেকে বিরত থাকাই ভালো যাদের এলার্জির সমস্যা আছে। তবে যাদের এলার্জি সমস্যা নাই তারা ইসবগুলের ভুষি ও তকমা একসাথে মিক্স করে খেলে অনেক উপকার পাবেন।
অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারেঃ তোকমা দানার মধ্যে ফ্যাটি এসিড থাকার জন্য মানব শরীরে হৃদরোগ বা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, তবে অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে সুতরাং যাদের রক্ত পাতলা রয়েছে। তারা তোকমা দানা না খায় ভালো যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান বা নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। তবে যদি খেতেই হয় তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খাবেন।
গ্যাস্ট্রিকের সময় সমস্যা বাড়িয়ে দেয়ঃ যাদের প্রচুর পরিমাণে পেটে গ্যাস ঠিক আছে তারা ঠিকমতো না না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, এজন্য আপনি এটা এড়িয়ে চলবেন। কারণ এর মাঝে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই যদি আপনি বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে ক্ষতি হতে পারে, কারণ তোকমা খাওয়ার অপকারিতা রয়েছে।
আমাদের শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় যে ইসবগুলের ভুসির সাথে যদি তোকমা দানা খেতে পারেন। তাহলে শরীরের জন্য অনেক ভালো উপকার পাবেন। কারণ ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে, যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শুরু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়া ইত্যাদি ধরনের কাজ করে থাকে। যদি আপনার কাছে পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url