কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

কাঁচা হলুদ মুখের উজ্জ্বলতা ও কোমলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে। কেননা কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার উপকারিতা রয়েছে। চলুন, কাঁচা হলুদ মুখে লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
অনেকেই ফর্সা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করে থাকে। যার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে কিন্তু আপনি যদি হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। তাই কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃকাঁচা হলুদ এর উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন

কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার উপকারিতা

হলুদ একটি প্রাকৃতিক ঔষধি গুণ হিসেবে কাজ করে। তাই কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

হলুদ আমরা সাধারণত মসলা হিসেবে খেয়ে থাকি কিন্তু এটা প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। গায়ের রং উজ্জ্বল করা থেকে শুরু করে মুখে ব্রণ র‍্যাশ এলার্জি পোড়া দাগ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে ব্যবহার করে থাকে।

হলুদ প্যাকটি ভিতরে এবং বাইরে উভয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে হলুদের সাথে কোন কিছু মিশিয়ে নিলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাবেন। সপ্তাহে এক থেকে দুইবার এর বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়। যাদের অ্যালার্জি সমস্যা আছে তারা ত্বকে হলুদ ব্যবহার না করায় ভালো।

যাদের শুষ্ক ত্বক তারা হলুদের সাথে কাঁচা দুধ বেসন বা আটা ময়দা মধু লেবু ইত্যাদি করতে পারেন। তাহলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় তাহলে হলুদের সাথে মধুর বদলে টক দই মিশিয়ে নিতে পারেন। আর হলুদ ব্যবহার করার পরই সাথে সাথেই কখনো রোদে বের হবেন না। কেননা এতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, ত্বক পুড়ে যেতে পারে। তাই হলুদ রাত্রিতে ব্যবহার করবেন।

সৌন্দর্য এবং রূপচর্চার ক্ষেত্রে মুখে সাধারণত হলুদ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই হলুদের পুষ্টি উপাদান সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে নারীরা রূপচর্চার দিকে বেশি সতর্কতা থাকে। তাই তারা হলুদ বা কাঁচা হলুদ সবচাইতে বেশি ব্যবহার করে। তবে সে ক্ষেত্রে হলুদের সাথে অন্য কিছু মিক্স করে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

আপনার ত্বকের সাথে অন্য কোন প্রসাধনী ব্যবহার করলে অনেক সময় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে হলুদ একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আপনার ত্বকে ব্যবহার করলে তেমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে না। তবে হলুদ এবং ময়দা মিশিয়ে যদি আপনি মুখে লাগাতে পারেন তাহলে আপনি অনেক উপকার পাবেন।
যাদের অতিরিক্ত তৈলাক্ত মুখ তাদের এভাবে ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর মসৃণ হবে উজ্জ্বল ও ফর্সা হওয়া যাবে। তবে এক্ষেত্রে হলুদ ও ময়দার সাথে সামান্য পরিমাণ পানি মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। এরপর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

অনেকে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য হলুদের সাথে গাজরের রস বেসন জলপাইয়ের তেল মিক্সড করে ত্বকে লাগাতে পারেন, কিছুক্ষণ পর আপনি ধুয়ে ফেলতে পারবেন।

লেবুর রস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর মাঝে এক ধরনের এসিড থাকে। তাই হলুদের সাথে লেবুর রস মিক্স করলে করে ত্বকে ব্যবহার করলে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য হলুদের গুড়া ও লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে আপনি তৈরি করতে পারেন। কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে সবচাইতে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

এরপর হলুদের সাথে মধু মিশ্রণ করে ত্বকে লাগাতে পারেন, এতে ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করতে পারে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করবে। কেননা মধুতে এক ধরনের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা রক্ষা করার মত সক্ষমতা আছে।
হলুদের মধ্যে থাকে এক ধরনের অ্যান্টিসেপটিক ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল পুষ্টি যা ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে।

এছাড়াও কাঁচা হলুদ এর সাথে চন্দনের গুড়া লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন এবং হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে পরবর্তীতে মুখ দিয়ে ফেলতে হবে এতে অনেক উপকার পাবেন।

হলুদ ও নারকেলের তেল দুটোই প্রাকৃতিক উপাদান এর মাঝে আছে অনেক পুষ্টিগুণ। এন্টিফাঙ্গাল থাকার কারণে ত্বককে উজ্জ্বলতা এবং প্রাণবন্ত করে বিশেষ করে নারিকেলের তেল সবচাইতে উপকার বেশি করে থাকে। তার সাথে হলুদ ব্যবহার করলে খুবই উপকার পাওয়া যায়।

অনেকের ত্বকে পোড়া দাগ থাকে আর এই দাগ তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করে থাকে। তাই তারা আজকের পর থেকে হলুদ বাটা মুলতানি মাটি শসার রস ও লেবুর রস মিক্স করে যদি আপনার ত্বকে নিয়মিত ভাবে লাগাতে পারেন। তাহলে আপনার পোড়া দাগ আস্তে আস্তে চলে যাবে।

অনেকের চোখের নিচে কালো দাগ হয়ে যায় ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য হলুদের সাথে জলপাইয়ের তেল মিক্স করে আপনি ব্যবহার করলে আপনার চোখের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে। কেননা হলুদের মাঝে এন্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে ত্বকের এই ধরনের কালো দাগ দূর করতে পারেন।

কাঁচা হলুদ মুখে লাগানোর নিয়ম

ইতিমধ্যে আমরা কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি, এখন এর নিয়ম সম্পর্কে জানবো। কেননা শুধু মুখে হলুদ লাগালেই যে মুখ সৌন্দর্য ফিরে আসবে তা কিন্তু নয়। এর একটা নিয়মের মধ্যে আপনাকে কাজ করতে হবে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে মুখে হলুদ লাগালে ত্বক সৌন্দর্য ফিরে আসবে এবং উজ্জ্বলতা আসবে। কাঁচা হলুদের মধ্যে এমন কিছু গুনাগুন থাকে যার কারণে শক্তিশালী জীবাণুকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। 

তাই মুখে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকতে পারে এবং দাগ ব্রণ কালো দাগ পড়া দাগ ইত্যাদি রকমের সমস্যা থাকলে আপনি হলুদের সাথে আরো অন্য কিছু উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। তবে শুধুমাত্র যদি হলুদ ব্যবহার করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে বেশি হতে পারে এবং চামড়া পুড়েও যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই সাথে অন্য কিছু উপাদান মিক্স করে ব্যবহার করবেন।

সে ক্ষেত্রে প্রথমত নিম পাতা বাটা মুলতানি মাটি, চন্দনের গুঁড়ো, টক দই লেবুর অ্যালোভেরা জেল দুধ অথবা বেসন এ সকল জিনিসগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে সবগুলো একসাথেই ব্যবহার করা যাবে না, এর সাথে নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে হবে। যদি আপনি মুখে ব্যবহার করতে চান তার সাথে হলুদের সাথে লেবুর রস মিক্সড করে দিতে পারেন। এছাড়া আরেকটা উপাদান হলুদের সাথে মিক্স করে দিবেন এভাবে নিয়মিত ভাবে কিছুদিন দিলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা দ্বিগুণ করার জন্য অনেকেই কাঁচা হলুদের সাথে অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করে থাকে। এতে অনেক উপকার পাওয়া যায়, এছাড়াও গাজর টমেটো রস মিক্স করে ব্যবহার করতে পারেন। কাঁচা হলুদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে মুখে ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই উষ্ণ গরম পানি করে নিবেন মুখ ধোয়ার জন্য।

কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায়

অনেকেই ফর্সা হতে চায় সেক্ষেত্রে হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায় এ সম্পর্কে নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

হলুদ ও দুধঃ হলুদ এবং দুধ দুটোই প্রাকৃতিক উপাদানের মত কাজ করে থাকে। এজন্য যেভাবে আপনি ব্যবহার করতে পারেন, এক চামচ হলুদের গুড়া নিবেন এর সাথে দুই চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে নেবেন, এরপরে সমস্ত এগুলো এই মিশ্রণটি আপনার সমস্ত ঘাড় এবং মুখে লাগিয়ে দিবেন।
ছবি
লাগানো অবস্থায় ১৫ মিনিট অপেক্ষা করবেন। যখন শুকিয়ে যাবে তখন ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এইভাবে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করার ফলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করতে পারবেন।

হলুদ লেবুর রস এবং মধুঃ লেবুর রস এবং মধু ত্বকের জন্য সবচাইতে ভালো কাজ করে থাকে। এজন্য ২ চামচ হলুদের গুড়া নিবেন এক চামচ লেবুর রস এবং এক চামচ মধু মিক্সড করে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি আপনার মুখ ও ঘাড়ে ভালো করে লাগিয়ে নিবেন।

যতক্ষণ না শুকায় ততক্ষণ রেখে দেবেন। এরপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে সুন্দর করে পরিষ্কার করবেন। হলুদের সাথে লেবুর রস এবং মধু ব্যবহার করার কারণে আপনার শরীরের যেকোন দাগ দূর করতে পারবে।
হলুদ এবং লেবুর রসঃ হলুদ এবং লেবুর রস মিশ করার ফলে আপনার শরীরের বা মুখে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। আর এটি ব্যবহার করবেন যেভাবে এক চামচ ময়দার সাথে এক চামচ হলুদ গুঁড়া নিবেন এরপর এক চামচ লেবুর রস এর সাথে আধা চামচ কাঁচা দুধ নিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করুন।

এরপর আপনার ঘাড়ে অথবা মুখে যেখান দিয়ে দাগ রয়েছে সেখানে লাগিয়ে রাখবেন। শুকানোর পর পানি দিয়ে সুন্দর করে ধুয়ে ফেলবেন। এভাবে এই মিশ্রণটি প্রতিদিন ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন। তবে হলুদের ক্ষেত্রে অবশ্যই কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

হলুদ এবং আঙ্গুরঃ একটি পাত্র নিবেন পাত্রের ভিতর দুই চামচ আঙ্গুর রস নিয়ে তার সাথে আধা চামচ হলুদের গুড়া নিবেন, দুই থেকে তিন চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে নিতে পারেন এভাবে মিশ্রণটি তৈরি করে ফেলুন। এই মিশ্রণটি আপনার মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখার পরে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে যদি আপনি ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং দাগ দূর হবে।

টক দই এবং হলুদঃ প্রথম একটি পাত্রে তার মধ্যে তিন চামচ ময়দার সাথে ২ চামচ টক দই এবং ১ চামচ লেবুর রস নিতে পারেন, এক চামচ হলুদের গুড়া এবং এক চামচ মধু নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগিয়ে দিতে পারেন, ২০ মিনিটের মত অপেক্ষা করে এরপরে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটা আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং সৌন্দর্য ফিরে আসবে। 
তবে কাঁচা হলুদের গুনাগুন সবচেয়ে বেশি। সকল মিশ্রনের সাথে কাছে হলুদ ব্যবহার করবেন। তবে এর সাথে অবশ্যই অন্য উপরোক্ত যখন একটি মিশ্রণ ব্যবহার করলেই ভালো ফলাফল পাবেন। শুধু কাঁচা হলুদ মুখে লাগাবেন না, এতে ত্বকের ক্ষতি হবে।

কাঁচা হলুদ দিয়ে রূপচর্চা

রূপচর্চায় কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার উপকারিতা রয়েছে,তাই এই কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে রূপচর্চা করার ক্ষেত্রে অনেক উপকার পাওয়া যায়। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

ত্বকের প্রদাহ কমাতে পারেঃ অনেকের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করার কারণে ত্বক জলে অথবা প্রদাহ করে, সে ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে হলুদ ব্যবহার করলে এই ত্বকের প্রদাহ কমে যাবে। কেননা ত্বকের ভিতর থেকে এই হলুদ কাজ করে থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

তবে সরাসরি একমাস পরিমাণ হলুদ নিবেন হলুদ বাটা নেবেন এর সাথে ১০০ আধা চামচ পরিমাণ অ্যালোভেরা জেল এবং এক চামচ পরিমাণ গোলাপ জল নিতে পারেন।

এরপর মিশ্রণটি ঘন করে তৈরি করতে পারেন, তারপর আপনার যে সকল জায়গায় স্কিনের সমস্যা রয়েছে সেখানে ব্যবহার করতে পারেন। এরপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট ব্যবহার রেখে দেওয়ার পরে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এভাবে আপনি নিয়মিতভাবে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে উপকারিতা পাবেন। যা আপনি নিয়মিত ভাবে ব্যবহার করলে ভালো একটি ফলাফল পাবেন।

ত্বক কমল উজ্জ্বল করেঃ দু চামচ পরিমাণ ময়দা নিতে পারেন এবং এক চামচ হলুদ বাটা নিবেন এর সাথে এক চামচ আমন্ড অয়েল এবং তিন চামচ দুধ মিশিয়ে নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর মুখে লাগাতে পারেন ১৫ মিনিট রাখার পরে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন।

চর্মরোগ সারাতেঃ যাদের চর্মরোগ রয়েছে যেমন খোসপাঁচড়া চুলকানি তাদের জন্য পরিমাণ মতো হলুদ বাটা নিয়ে এর সাথে নিমপাতার রস নিয়ে মিক্স করে আক্রান্ত স্থানে দিতে পারেন। এতে চর্ম রোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে। এছাড়াও যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে তারা এই উপাদানটি খেলে তাদের লিভারের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

ব্রণ দূর করতে কাঁচা হলুদ

কাঁচা হলুদ ব্রণ দূর করতে ভালো কাজ করে, তাই ব্রণ দূর করতে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। কেননা এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে এই বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করতে হলুদ সবচেয়ে ভালো কাজ করে থাকে। তবে এর সাথে লেবু মিশ্রণ করে যদি আপনি মুখে ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আপনার মুখের দাগ সহ মুখের ব্রণ দূর হয়ে যাবে। মুখে লাগানোর পরে ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
হলুদের সাথে লেবুর রস এবং মধু মিক্স করে একটি পেস্ট তৈরি করতে পারেন। ত্বকে যেখানে ব্রণ হয়েছে সেখান থেকে লাগিয়ে দিতে পারেন এরপরে দেখবেন ব্রণ দূর হয়ে গেছে। মিশ্রণটা লাগানোর পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন শুকিয়ে গেলে এরপর পানি দিয়ে সুন্দর করে ধুয়ে ফেলবেন। এটা আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা আসবে এবং ব্রণ দূর হয়ে যাবে।

ব্রণ দূর করতে আরো একটি মিশ্রণ তৈরি করতে পারেন তাহলে মুলতানি মাটি গোলাপ জল এবং হলুদের গুঁড়া মিক্সড করে আপনার ব্রণের স্থানে লাগিয়ে দেবেন। এরপরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে এবং ব্রণ দূর হয়ে যাবে।

কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক

কাঁচা হলুদের ব্যবহার অতি প্রাচীনকাল থেকেই শুরু হয়েছে, কারণ কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার উপকারিতা রয়েছে। তাই এর ফেসপ্যাক তৈরি করে আপনার মুখে লাগালে তখন উজ্জ্বলতা এবং বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর হবে। নিম্নে এ বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

উজ্জ্বল ত্বক অনেকেই পছন্দ করে তাই আপনার ত্বক কোমলতা এবং উজ্জ্বলতা নিয়ে আসতে হলে হলুদের ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য হলুদের বিভিন্ন প্যাক রয়েছে সেগুলো আপনি তৈরি করতে পারেন।
ছবি
প্রথমত আপনি ত্বককে আগে পরিষ্কার করে নিবেন, এরপরে ত্বক পরিষ্কার না করলে শরীরের দূষণ বৃদ্ধি পায়। তাই প্রতিদিন সকালবেলা ফেসওয়াস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করবেন।

হলুদের মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যা ত্বককে উজ্জ্বল এবং প্রদাহমুক্ত করতে সাহায্য করে।

হলুদের সাথে আপনি দুধ মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন এতে ত্বকের ফ্রি রেডিকেল গুলো রয়েছে তা প্রতিরোধ করতে পারে

উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে এই হল এছাড়াও হাইপার পিকমেন্টেশন প্রতিরোধ করতে পারবে এবং ব্রণ ও বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করে। এছাড়া দুধে যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা আলফা হাইড্রক্সি এসিড ত্বকের মৃত কোষগুলোকে এক্সপোর্ট করতে পারে এক্স-৪ কাকের কোমলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে কোমলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে ত্বককে উজ্জ্বল করে।
এক চামচ হলুদের গুড়া ও এক চামচ দুই চামচ দুধ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন এরপর ফ্রিজে কিছুক্ষণ রেখে ঠান্ডা করুন তারপর মুখও ঘাড়ে এই পেজটা লাগিয়ে দিতে পারেন। এরপর পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করবেন মেসেজ করবেন এরপরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন। তবে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

হলুদ এবং কমলার খোসা এর ব্যবহার করতে পারেন এটি আপনি কমলার খোসার রস নিয়ে একটি টেস্ট তৈরি করুন। এই পেসটি আপনার ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ কাটা এবং ক্ষতস্থান শুকাতে সাহায্য করে। এছাড়াও কমলার খোসায় ভিটামিন সি থাকার কারণে বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে এক চামচ পরিমাণ কমলার খোসা গুড়া নিবেন এবং এর সাথে এক চামচ হলুদ ও এক চামচ মধুর রশ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর ত্বক লাগানোর লাগিয়ে রাখুন চার থেকে পাঁচ মিনিট পর ৫ মিনিট মেসেজ করুন মেসেজ করুন এবং দুই মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন।

সে ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রোবায়োটিক দুটা মিক্সড হয়ে আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল করতে পারবে। কেননা হলুদের মাঝে থাকে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এন্টিন ইনফ্লামেটরি উপাদান যা ত্বকের জন্য খুবই উপকার।

এছাড়াওয়ের মাঝে থাকে ক্যালসিয়াম প্রোটিন ভিটামিন ডি যা ত্বকের জন্য খুবই দরকার। এজন্য এক চামচ হল দের গুড়ার সাথে হলুদের সাথে দুই চামচ দই মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন দশ মিনিট অপেক্ষা করার পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।

হলুদ ও অ্যালোভেরা জেল এর ব্যবহার করতে পারেন এই মিশ্রণটি তৈরি করার পর আপনার ব্যবহার করলে মুখের ব্রণ এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে পারবে । এই মিশ্রণটি সাধারণত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে পারে এবং আপনার ত্বককে পুনরুজ্জামিত করবে।

এজন্য এক চামচ হলুদের গুড়া ও এক চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে বেসটি তৈরি করতে পারেন একটি প্যাক তৈরি করুন এবং আপনার ত্বকে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে পারেন। তারপরে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এভাবে কাঁচা হলুদের ব্যবহার আপনার ত্বকের জন্য উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।

উপসংহারঃ কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

পরিশেষে বলা যায় যে কাঁচা হলুদ একটি প্রাকৃতিক উপাদান পুষ্টি উপাদান যা আমাদের ত্বকের জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। তাই এক্ষেত্রে শুধুমাত্র হলুদের ব্যবহার মুখে করা যাবে না, এর সাথে আরও একটি উপাদান উপরোক্ত যে কোন একটি উপাদান মিক্স করে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পেতে পারেন। তাছাড়া শুধু হলুদ ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হবে। আশা করি আজকের এই পোস্টটি থেকে আপনি উপকৃত হবেন। পোস্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪