সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আমরা অনেকেই জানিনা যে সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সবচাইতে বেশি। অথচ আমাদের প্রায় ঘরেই এই হলুদ থাকে, তাই আমরা চেষ্টা করব নিয়মিত খাওয়ার। চলুন, কাঁচা হলুদ খাওয়ার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
অনেকেই কাঁচা বা গুড়া হলুদ এমনি খেতে পারে না, তাই হলুদের সাথে হালকা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীরের জন্য অনেক উপকার হবে। তাই সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃসকালে কাঁচা হলুদ খেলে উপকারিতা পাওয়া যায় এ সম্পর্কে জেনে নিন

সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা হলুদের গুনাগুন অনেক গুণ বেশি, তাই সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত ভাবে সকালবেলা কাঁচা হলুদ খেলে তার শরীরে এর পুষ্টি উপাদান কাজ করতে থাকে। বিশেষ করে হলুদের গুনাগুন হিসেবে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যার কারণে রক্তের শর্করা কমিয়ে নিয়ে আসে, ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

ক্ষত সারায়ঃ কাঁচা হলুদের মধ্যে কারকিউমিন এবং আন্টি ইনফিলামেন্টারি রয়েছে। যা আমাদের শরীরে কোথাও ক্ষত হলে সেটা সারাতে সাহায্য করে। যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয় এজন্য আঘাত পেলে এই হলুদ অনেক কাজ করে থাকে। যার জন্য আপনার ছোট বাচ্চা যদি এ ধরনের কোন সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন, শিশুদেরকেও কাঁচা হলুদ খাওয়ানো যেতে পারে। কেননা চিকিৎসাকরা খাওয়ার পরামর্শ দেন, তাছাড়া ক্ষতস্থানে অল্প পরিমাণ হলুদ যদি লাগিয়ে দিতে পারেন সে ক্ষেত্রেও দ্রুত কাজ করবে।

মাথা যন্ত্রণা কমায়ঃ অনেকের মাথা ব্যথা করে থাকে, মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এক কাপ হলুদ মেশানো দুধ খেতে পারেন। দেখবেন কিছুক্ষণ পর আপনার মাথা ব্যাথা কমে গেছে। কেননা হলুদের মাঝে আছে কারকিউমিন যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং মাথা ব্যথা ও কমাতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়ঃ যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং ঘন ঘন রোগ ব্যাধি হয়ে থাকে, শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তারা নিয়মিতভাবে এক গ্লাস দুধে কয়েক চামচ হলদ মিশিয়ে খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অনেক উপকার করতে পারে আর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং সংক্রমণ গুলোকে প্রতিহত করতে পারে।

ওজন নিয়ন্ত্রণঃ যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে চিন্তিত আছেন তারা নিশ্চিন্তে হলুদ খেতে পারেন। কেননা গবেষণায় দেখা গেছে শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। বিশেষ করে যাদের হজম সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত ভাবে এই হলুদের পানি খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে আছে মেটাবলিজম ওজন হ্রাসের ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে। হলুদের মাঝে যে উপাদান গুলো থাকে বিশেষ করে ফ্যাট সেলকে গলাতে পারে এবং অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলতে পারেন।
প্রদাহ কমাতে পারেঃ আপনার দেহের যদি কোথাও প্রদাহ বাড়তে থাকে তাহলে শরীরের কর্ম ক্ষমতা কমে যায় তাছাড়া মাথাব্যথা এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে, তাই এ ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্য সকালে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন। এজন্য নিয়মিত খেতে পারেন এর মধ্যে প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আন্টিন ইনফ্লামেটরি যেটা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়ঃ শরীরের মধ্যে যদি খারাপ টক্সিন থাকে তা বের করে দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই নিয়মিত ভাবে আপনি হলুদ খেতে পারেন কেননা ব্লাড সেলের ক্ষতির আশঙ্কা কম থাকে।

লিভারের ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে এবং কর্মক্ষম ব্যক্তি রয়েছেন। তারা হলুদ খেতে পারেন কারণ এর মধ্যে যে উপাদানগুলো রয়েছে তা লিভারের কার্যক্ষমতা অনেকটা বাড়িয়ে দিবে। যেকোনো ধরনের লিভারের রোগী হোক না কেন এটা প্রতিরোধ করতে পারবে। যেমন ফ্যাটি লিভারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম রয়েছে।

হাঁচি কাশি কমায়ঃ যাদের ঘন ঘন ঠান্ডা লাগে এবং হাঁচি কাশি হয় তারাই হলুদের গুড়া খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকার কারণে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার প্রতিহত করতে পারে। সর্দি কাশির ক্ষেত্রে সবচাইতে ভালো কাজ করে থাকে এই হলুদ। তাই বাচ্চাদেরকে নিয়মিতভাবে হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে রাতে যখন ঘুমাতে যাবেন তখন এই হলুদের রস অথবা পানি মধু দিয়ে খাওয়াতে পারেন।

ত্বকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়ঃ অনেকের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ব্রণ অথবা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে এই হলুদ খেতে পারেন। কেননা চিকিৎসকরা সাধারণত পরিমাণ বলে দেন এবং চিকিৎসা নিতে বলেন। যারা হলুদের গুঁড়া দুধের সাথে মিশিয়ে খায় তাদের ব্রণ গুলো দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে শীতকালে ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে হলদের গুড়া অনেক ভালো কাজ করে থাকে। এছাড়াও ত্বকে এলার্জি এবং একজিমার মত যে রোগগুলো হয়ে থাকে সেক্ষেত্র হলুদ এবং দুধ অনেক ভালো কাজ করে থাকে।

হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়ঃ যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা হলুদ খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। যার কারণে বদ হজমের আশঙ্কা কমে যাবে। তাই সকাল বেলা একগ্লাস কাঁচা হলুদ মিশ্রিত পানি খেতে পারেন। 

কাঁচা হলুদ খাওয়ার নিয়ম

কাঁচা হলুদ খাওয়ার নিয়ম জেনে হলুদ খেলে শরীরে অনেক উপকার পাবেন কিন্তু যদি নিয়ম ভঙ্গ করে খান বা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন সে ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতি হবে।

সকালবেলা ও রাত্রিতে ২৫০ গ্রাম মিলিগ্রাম হলুদ খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তাই আপনি নিয়মিত ভাবে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন। যদি রাত্রিতে দুধ এবং হলুদ খেতে পারেন তাহলে শরীরে দেখবেন অনেক উপকার পেয়েছেন। অনেক শক্তি পাবেন, আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

কাঁচা হলুদ খাওয়ার অপকারিতা

কাঁচা হলুদের অনেক গুনাগুন রয়েছে এবং শরীরের জন্য অনেক উপকার করে থাকে কিন্তু কাঁচা হলুদ খাওয়ার অপকারিতা আছে। তাই এ সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

শরীর থেকে আয়রন শোষন করে নিতে পারে যদি আপনি অতিরিক্ত কাঁচা হলুদ খেয়ে থাকেন হিমোগ্লোবিনের মাত্র কমে যেতে পারে, তারপর আয়রনের ঘাটতি দেখা দেবে। এর জন্য আপনার শরীর অনেক অসুবিধা হতে পারে। তাই হলুদের মাঝে যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে, তা আপনার শরীরের এই ধরনের সমস্যা সমাধান করতে পারবে।
এই হলুদ শরীরের আয়রন ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য বাধা দিয়ে থাকে। শুধুমাত্র ঘাটতি যে পূরণ করবে তা কিন্তু নয় পাশাপাশি হজমের কাজ করে থাকে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান হয়। এছাড়াও বেশি হলুদ খাওয়া হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ত্বকের সমস্যা হতে পারে, মাথা ঘোরা, আলসার হতে পারে ইত্যাদি।

হলুদের মধ্যে যে উপাদান থাকে সেটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার কিন্তু হলুদ খাওয়া হলুদের সাপ্লিমেন্টলি খেয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে অ্যানিমিয়া হতে পারবে না কিডনি স্টোন ডায়াবেটিস এই ধরনের রোগ আপনার নিকটে আসবে না। যাদের এই উপরোক্ত রোগগুলো রয়েছে তাদের জন্য কাঁচা হলুদ খাওয়ার ক্ষতি রয়েছে।

কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা হলুদ ও মধুর গুণ বেশি রয়েছে। কেননা মধু মিক্সড করে সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে হলুদ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং পাশাপাশি মধু আরও প্রাকৃতিক ঔষধ বলা হয়ে থাকে। সেজন্য দুইটা মিক্সড করে যদি খাওয়ানো যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 
ছবি
ত্বকের সমস্যা, লিভারের সমস্যা, কেটে গেলে বা ছিরে গেলে হলুদের গুনাগুন সবচাইতে বেশি রয়েছে। তাছাড়া হলুদের মধ্যে এমন উপাদান আছে যা গ্যাস্ট্রিক আলসার ইত্যাদি ধরনের সমস্যা যদি থেকে থাকে তাহলে হলুদের মিক্স করে যদি খেতে পারেন। তাহলে অনেক উপকার পাবেন যদি কেউ সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার চিন্তা ভাবনা করেন সে ক্ষেত্রে অনেক উপকার পাবেন। 

তাই চিকিৎসক এবং বৈজ্ঞানিকরা এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন সকাল বেলায় সাধারণত এই কাঁচা হলুদ খেতে বলেন তবে এর কিছু নিয়ম বা পদ্ধতি রয়েছে। এর সাথে কাঁচা হলুদের গুড়া নিবেন এর সাথে ১০০ গ্রামের মধু নিতে পারেন দুটো ভালো করে মিক্সড করবেন। এরপরে আপনি নিয়মিত ভাবে খেলে আপনার শরীরে আন্টি এক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করবে বিশেষ করে জ্বর সর্দি ঠান্ডা কাশি বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধিগুলো থেকে এই মিশ্রণটা খুবই উপকার করে থাকে।

এক থেকে দুই ঘন্টা পর পর খেতে পারেন এতে অনেক উপকার পাবেন। প্রতিদিন দুবার খেলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাবেন তাই চিকিৎসকরা এই বিষয়টি পরামর্শ দিয়েছেন মধু এবং হলুদ একসাথে খেলে এটা একটি অ্যান্টিবায়োটিকের মত কাজ করে থাকে।

কাঁচা হলুদ দিয়ে দুধ খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা হলুদ ও দুধের পুষ্টিগুণ বেশি তাই কাঁচা হলুদ দিয়ে দুধ খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে কিভাবে কাঁচা হলুদ দিয়ে দুধ খেলে উপকার পাওয়া যায়। সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো,

ঘুমের সমস্যা দূর করেঃ যাদের রাত্রিতে ঘুম কম হয় তারা হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করতে পারেন। কেননা হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করলে আপনার মস্তিষ্ক ভালো থাকবে এবং মেধা শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও রাত্রিতে ঘুম ভালো হবে, গবেষণায় দেখা গেছে হলুদ মিশ্রিত দুধ মস্তিষ্ক ভালো রাখতে সহায়তা করে। তাই আপনার যদি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে তাহলে অবশ্যই ঘুমানোর আগে হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করবেন।
ছবি
বয়সের ছাপ দূর করেঃ যারা অল্প বয়সেই বয়সের ছাপ পড়ে যায় তাদের ক্ষেত্রে হলুদ মিশ্রিত দুধ অনেক উপকার করে থাকে। কারণ এর মাঝে যে পুষ্টিগুণ রয়েছে তা খাওয়ার ফলে টক সুন্দর রাখে এবং চামড়া টানটান থাকে এর কারণে বয়সের ছাপ মনে হয় না। এছাড়াও যাদের ত্বকে ব্রণ রয়েছে তারা সরাসরি হলুদের গুঁড়া মুখে লাগাতে পারেন।

এটা আপনার ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকলে সেগুলো সেরে যাবে। তাই হলুদ হরমোনের ভারসাম্য করে এছাড়াও মহিলাদের পিরিয়ডের সময় যে সমস্যাগুলো হয়ে থাকে হলুদ সেটাও হলুদ মিশ্রিত দুধ সেটাও দূর করতে পারে। এছাড়াও আপনার প্রতিনিয়ত সকালে কাঁচা হল যদি খেতে পারেন তাহলে আরো উপকার পাবেন।

ওজন কমাতে পারেঃ যারা বেশি ওজন নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন তারা হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করলে ওজন অনেক কমে যাবে। কেননা হলুদের মাঝে যে পুষ্টি উপাদান আছে তা মেটাবলিজম বৃদ্ধি করতে পারে এর কারণে ওজন কমতে সাহায্য করে। এছাড়াও দুধের মাঝে রয়েছে অনেকগুলো পুষ্টিগণ যা আপনার ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য উপকারিতা করে থাকে পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
হলুদের মাঝে থাকা থার্মোজেনিক যা শরীরে মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এর জন্য ওজন কমতে পারে। তাই যাদের ওজন বেশি তারা রাত্রিতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস হলুদ মিশ্রিত দুধ খেয়ে নিবেন। এটা আপনার আস্তে আস্তে ওজন কমতে থাকবে আপনার চর্বি দূর করতে পারবে তাহলে ওজন কমবে। হলুদের মাঝে রয়েছে ফাইবার যা শরীরের চর্বি ও মেদ কমাতে সাহায্য করে। তাই হলুদ মিশ্রিত দুধ নিয়মিত খেতে পারেন।

মাথা ব্যাথা কমাতে পারেঃ আপনার যদি প্রায় মাথা ব্যথা করে তাহলে সে ক্ষেত্রে একগ্লাস হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করতে পারেন। এতে আপনার যেকোনো ধরনের মাথাব্যথা কমতে পারে। এছাড়াও যাদের আর্থাইটিসের কারণে মাথাব্যথা হয় তারাও এই দুধ হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করতে পারেন। যাদের গ্যাসের প্রবলেম রয়েছে তারা দুধ খেতে পারেন না।

তারা সরাসরি দুধ না খেয়ে হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করলে সে ক্ষেত্রে গ্যাসের সমস্যার সমাধান হবে। বদহজম থেকে দূর করে দেবে এছাড়াও পুষ্টির অভাবে দূর করতে পারবে। যাদের মাংসপেশী নমনীয়তা রয়েছে সেক্ষেত্রে মাংস বেশি বৃদ্ধি করতে পারে।

আঘাতের ব্যথা ও রোগ বালাই দমনঃ অনেকে কোন কারনে আঘাত পেলে সেখানে ফুলে যায় বা ব্যথা হয় এই ধরনের ব্যথা দূর করতে হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধির শরীরে থাকলে হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করার কারণে এই সকল রোগব্যাধির প্রতিরোধ করতে পারে। কেননা এর মাঝে রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যা খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ করতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো কার্য কার্যকারিতা পেতে সকালবেলা হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করবেন।

যেভাবে হলুদ মিশ্রিত দুধ তৈরি করবেনঃ এক টুকরো হলুদ নিবেন এক ইঞ্চি পরিমাণ হতে হবে। এর সাথে ২৫০ মিলি দুধ নিতে পারেন, এছাড়া মধু বা চিনি অথবা যে কোন চিনি জাতীয় মিষ্টি জাতীয় খাবার এর মধ্যে দিতে পারেন এবং এর সাথে অল্প পরিমাণ গোলমরিচ গুঁড়া দিতে পারেন।

একটি পাত্রের মধ্যে হলুদ কূচি গুলো নিয়ে তার সাথে দুধ গরম করে নিবেন এরপর দুধ এবং হলুদ গরম করার পর চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করুন। তারপর হালকা গরম থাকতেই মধু বা চিনি মিশ্রিত করুন। গোলমরিচের গুঁড়া গুলো ছিটিয়ে দিবেন যারা কাঁচা হলুদ খেলে সমস্যা হয় তারা হলুদের গুড়া খেতে পারেন। এতে অনেক উপকার পাবেন তবে খাবারটা এই মিশ্রিত হলুদ মিশ্রিত খাবারটা সকালবেলা খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

কাঁচা হলুদের রস খাওয়ার উপকারিতা

হলুদের রস যদি সকালে খেতে পারেন,তাহলে শরীরের জন্য ভালো। কেননা সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা রয়েছেন। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

হলুদের রস এর পুষ্টিগুণ সবচাইতে বেশি, যদি কেউ নিয়মিত এটা খেতে পারেন। তাহলে স্তন ক্যান্সার প্রোস্টেট ক্যান্সার খাদ্যনালীতে অনেকের ক্যান্সার হয়ে থাকে সেই ধরনের ক্যান্সার গুলোকে দূর করতে সাহায্য করে। কেননা হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই ধরনের রোগব্যাধিকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

তাছাড়া যাদের ত্বকের সৌন্দর্য নিয়ে আসতে চান তারা কাঁচা হলুদ বা হলুদের গুড়া মুখে লাগিয়ে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। সৌন্দর্য ফিরে আসবে কাঁচা হলুদের মাঝে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা অ্যান্টিবায়োটিকের মত কাজ করে থাকে।

যাদের সুগারের সমস্যা রয়েছে তারা এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সকালবেলা হলুদের রস খেতে পারেন। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে এবং রক্ত চলাচল দ্রুত করতে পারে না। যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তারা এই এক চামচ পরিমাণ নিয়মিতভাবে হলুদের রস খেতে পারেন। এতে আপনার রক্ত চলাচল দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং হার্টের সমস্যার সমাধান করবে।

কেননা কাঁচা হলুদ এর রস কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই আপনি নিয়মিত খেতে পারেন কাঁচা হলুদ ফ্যাটি লিভার সহ লিভারের যত সমস্যা রয়েছে এটি আরোগ্য করতে সাহায্য করে। এছাড়া বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে।

হলুদ জল খাওয়ার উপকারিতা

অনেকে খালি হলুদ খেতে পারে না, তাই হলুদ জল খেতে পারেন। কেননা হলুদ জল খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের শরীরে বহুৎ রোগব্যাধির বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে। এছাড়াও শরীরের জন্য উপকার তাছাড়া আমরা তরকারির সুস্বাদু করার জন্য এই হলুদ ব্যবহার করে থাকি। হলুদ প্রায় প্রত্যেক ঘরেই পাওয়া যাবে এজন্য এটা আপনারা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি খেতে পারেন। তাহলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার পাবেন। বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পাবেন। অনেকেই সরাসরি খেতে পারে না গন্ধ লাগে তাই তারা জল মিশ্রিত করে খেতে পারেন।
ছবি
কেননা মৌসুমী ঋতু পরিবর্তনের সহ অনেকে ঠান্ডা এবং সর্দি লেগে থাকে সেক্ষেত্রে অনেক ভালো উপকার করে থাকে। কেননা এর মাঝে এন্টি এক্সিডেন্ট রয়েছে যা এই ধরনের রোগ দমন করতে পারে।

বাত ব্যথা কমায়ঃ অনেকেই বাত ব্যথায় ভুগতে থাকে বিশেষ করে যারা বয়স্ক লোক তারা সাধারণত বাতের ব্যথায় অনেক কষ্ট পেয়ে থাকে, তারা যদি নিয়মিত ভাবে এক চামচ পরিমাণ হলুদের গুড়া ও মিশ্রিত পানি খেতে পারেন। তাহলে এই বাত ব্যথা দূর হবে। এছাড়াও হাঁটুতে ব্যথা বা জয়েন্টে ব্যথা করে থাকে এই ধরনের ব্যাথা দূর করতে হলে অবশ্যই এক গ্লাস পরিমাণ হলুদ মিশ্রিত পানি পান করতে পারেন।

দেখবেন সাথে সাথে কাজ করবে, বিশেষ করে নারীরা এই সমস্যায় বেশি ভূগে থাকে। তারা নিয়মিতভাবে হলুদ মিশ্রিত জল খেতে পারেন। কেননা হলুদের মাঝে যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি উপাদান ও এন্টি ইনফ্লেমেটরি রয়েছে। তা আমাদের জয়েন্টের বা বিভিন্ন ধরনের ব্যথাকে দূর করতে পারে।

তাই চেষ্টা করবেন প্রতিনিয়ত সকালবেলা হলুদ মিশ্রিত পানি খেতে এতে অনেক উপকার পাবেন। তাহলে হলুদের গুরাও মিশ্রিত খেতে পারবেন।
আরো প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়ঃ যারা ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগতে থাকে অল্পতেই ঠান্ডা কাশি জ্বর লেগেই থাকে। তারা যদি এই হলুদ মিশ্রিত পানি খেতে পারেন, তাহলে এই ধরনের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

কারণ হলুদের মাঝে থাকে আন্টি এক্সিডেন্ট এবং এন্ড ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে। বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ হতে রক্ষা করতে পারে।

ত্বকের জন্য উপকারীঃ যাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকে যেমন এলার্জির সমস্যা থাকে। এছাড়াও ব্রণ উঠে থাকে চোখের নিচে হালকা কালো কালো দেখা যেতে পারে ঘুমের সমস্যা হয় এর কারণে এই ধরনের সমস্যাগুলো দেখা যায়।

স্কিন মনে হয় খসখসে এই ধরনের যাদের সমস্যা রয়েছে তারা কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। কেননা এর মাঝে যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে, তা শরীরের এই ত্বকের ভিতরে যাওয়ার পর এই ধরনের সমস্যাগুলো সমাধান করে থাকে।

শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়ঃ আমরা প্রতিনিয়তই বাহিরে কাজে বের হয় এর কারণে দূষিত বাতাসের কারণে আমাদের শরীরের ভিতরে বিষাক্ত পদার্থ গুলো বাসা বাধতে থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর আর এই ধরনের বিষাক্ত পদার্থ গুলো দূর করতে হলে আপনাকে প্রতিদিন এক গ্লাস করে সকালবেলা কাঁচা বা গুড়া হলুদ মিশ্রিত পানি খেতে হবে।

তাহলে দেখবেন অনেক উপকার পাবেন। এটা তৈরি করা খুবই সহজ এক থেকে দুই গ্লাস পরিমাণ পানি ফুটিয়ে দিবেন। এর মধ্যে এক চিমটি পরিমাণ হলুদের গুড়া বা কাঁচা হলুদ এর গুড়া দিতে পারেন। এর পরে হালকা গরম থাকতেই খেতে পারেন। যদি খেতে অসুবিধা হয় তাহলে হালকা মধু অথবা চিনি জাতীয় খাবার মিশিয়ে খেতে পারেন।

লেখকের শেষ মন্তব্য

পরিশেষে বলা যেতে পারে যে কাঁচা হলুদ অথবা গুড়া হলো যেটাই খান না কেন অনেক উপকার রয়েছে। অনেকে সরাসরি খেতে পারেনা। তারা হলুদ মিশ্রিত পানি বা হলুদ মিশ্রিত দুধ অথবা হলুদ মিশ্রিত মধু খেতে পারেন। বিশেষ করে সকালবেলা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কেননা সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টি সবচাইতে বেশি। আজকের এই পোস্টটি থেকে আশা করি অনেকটা উপকৃত হবেন। যদি পোস্টটা ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪