১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য ও ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পিছনে ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তাই লাহোর প্রস্তাবের গুরুত্ব রয়েছে। চলুন, লাহোর প্রস্তাবের গুরুত্ব ও ফলাফল সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ভারতীয় উপমহাদেশকে ভাগ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আর এই লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতেই পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্র গঠিত হয়। তাই লাহোর প্রস্তাবের মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ নিহিত ছিল এই সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য ও ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
লাহোর প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট
১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট এর পিছনে অনেক গুলি কারণ আছে, তা নিম্নে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।
১৯৩৫ সালের ভারত আইনের কার্যকারিতাঃ ব্রিটিশরা যখন এদেশে শাসন কার্য পরিচালনা করেন তখন ভারতীয়রা স্বায়ত্তশাসনের জন্য দাবি করেছিলেন, ভারতীয় জনসাধারণ তারা নিজেদের পূর্ণ স্বাধীনতা লাভের জন্য ব্রিটিশ সরকারের ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের যুক্তরাষ্ট্রীয় অংশ বাদ দেওয়ার জন্য তারা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
যার কারণে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন ১৯৪৭ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ সময়ে নির্বাচন প্রদেশ সমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এজন্য এ নির্বাচনে কংগ্রেস ও মুসলিম লী গ অংশগ্রহণ করেছিল। কংগ্রেস ছয়টি প্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে এবং দুটি প্রদেশ একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।
সাতটি প্রদেশ কংগ্রেস সরকার গঠন করে কিন্তু কোথাও মুসলিম লীগের কোন সদস্য মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। অবিভক্ত বাংলা প্রদেশে কৃষক প্রজা পার্টির নেতা একে ফজলুল হক কংগ্রেসের সাথে কোয়ালিশন করে সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। ফজলুল হক মুসলিম লীগের সাথে কোয়ালিশন করে সরকার গঠন করেছিলেন।
কংগ্রেসের সাম্প্রদায়িক মনোভাবঃ কংগ্রেস শাসন কার্য পরিচালনা করার ক্ষেত্রে মুসলিম লীগ স্বার্থ বিরতি স্বার্থ বিরোধী সাম্প্রদায়িকভাবে তারা শাসন কার্য পরিচালনা করে। আইন আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ আরো যে সকল প্রতিষ্ঠান আছে সকল প্রতিষ্ঠানে কংগ্রেসের যে পতাকা উত্তোলন করা হতো। এছাড়া বন্দেমাতরম জাতীয় সংগীত হিসাবে গাওয়া হতো।
কংগ্রেসের শাসিত প্রদর্শন সময় মুসলমানদের চাকরি ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেওয়া হতো না। তারপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও মুসলমানদেরকে পিছিয়ে রাখা হতো। এই ধরনের বৈষম্যমূলক শাসনব্যবস্থা ছিল বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে মুসলমান জনগণ তারা ঐক্যবদ্ধ সৃষ্টি করে। কংগ্রেস একটি হিন্দু সংগঠন এবং তা ভারতে হিন্দু রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল।
সুতরাং কংগ্রেসের এই ধরনের হিন্দু নীতির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের মুসলমানরা পৃথক হওয়ার জন্য লাহোর প্রস্তাবের গঠন করার জন্য প্রস্তাব দেন বা আলাদা হওয়ার জন্য একটি লাহোর প্রস্তাব গঠনের প্রয়োজনীয়তা মনে করেন।
জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বের ঘোষণাঃ ভারতবর্ষে হিন্দু ও মুসলমান জনগণের মধ্যে একটি বিরোধের সৃষ্টি হয়। যার প্রেক্ষাপটে মুসলিম নেতৃবৃন্দ তারা মনে করেন যে ভবিষ্যতে ভারতের পুরনো প্রতিনিধিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় হিসেবে মুসলমান জনগণের ভাগ্য বা মুসলমান জনগণের সমস্যা হতে পারে।
এজন্য মুসলিম লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্না এই চিন্তা ভাবনা করে দ্বিজাতি তথ্য উপস্থাপনা করেন। তার এই দ্বিজাতি তত্ত্বের তিনি মতামতের ব্যক্ত করেন যে বিশাল আয়তনের দেশ অধীনে ব্রিটিশদের অধীনে দেশটা পরিচালিত হচ্ছিল এবং বহু জাতি বহু ভাষা রয়েছে। তাই তিনি মনে করেন, তিনি বলেছিলেন মুসলমানরা একটি পৃথক জাতি গঠন করলে বা স্বজাতি হিসেবে নিজের আবাস ভুলে থাকলে এবং আবার রুমে থাকা দরকার।
একটি রাষ্ট্রও থাকতে হবে তাছাড়া তিনি আরো মত প্রকাশ করেন। জাতির যেকোনো বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ভারতের মুসলমান একটি পৃথক জাতি হওয়ার অধিকার আছে। মুসলমানদের পৃথক রাষ্ট্র থাকা প্রয়োজন যা পরবর্তীতে লাহোর প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তার এই প্রস্তাবের কারণেই একটি রাষ্ট্র গঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। একটি মুসলিম জাতি গঠন করার জন্য মোহাম্মদ আলী জিন্না যে দ্বিজাতি তথ্য গঠন করার জন্য প্রস্তাব করেছিলেন, তা ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
লাহোর প্রস্তাব কী
এখন আমরা জানবো লাহোর প্রস্তাব কী, আসলে লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমেই দুটি জাতি গঠন হয় সে ক্ষেত্রে মুসলিম ও হিন্দু দুটি জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ পায়। এই লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো,
জিন্নাহর ঘোষণার পর থেকে স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে মুসলমানরা স্বাধীনভাবে আবাসভূমি স্থাপনের চিন্তাভাবনা করে, ভারত উপমহাদেশে একটি স্বাধীন আবাসভূমি স্থাপনের চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল। ভারত উপমহাদেশে একটি সাধারণ মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা অনেক আগে থেকেই মুসলমানদের ছিল আল্লামা ইকবাল চৌধুরী রহমত আলী ও আলীগড়ের অধ্যাপকবৃন্দ এই মতামত পোষণ করেছিলেন।
১৯৩০ সালে স্যার মোহাম্মদ ইকবাল এলাহাবাদ অধিবেশনে তিনি সভাপতি হিসেবে ভাষণ দিয়েছিলেন। পাঞ্জাবের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ সিন্দু বেলুচিস্তান নিয়ে একটি সার্বভৌম মুসলিম রাষ্ট্র গঠন প্রস্তাব করেছিলেন। এই সময়ে বিলেতে প্রবাসী পাঞ্জাবি ছাত্র চৌধুরী রহমত আলী উত্তর ভারতের মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠনের ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন।
তিনি এই রাষ্ট্রের নাম দিয়েছিলেন পাকিস্তান আর এই পাকিস্তান কাশ্মীর ইরান হিন্দু বেলুচিস্তান প্রদেশগুলো নিয়েই গঠিত হয়েছিল। লাহোর প্রস্তাব কী, তাহলো এই নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে পাকিস্তান নামকরণ করেছিলেন মার্চ মাসের লাহোর নিখিল ভারত মুসলিম লীগের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নির্ধারণের জন্য দলীয় অধিবেশন আহ্বান করা হয়।
২৩শে মার্চ অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে লাহোর প্রস্তাব বা পাকিস্তান প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। ২৪ শে মার্চ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছিল, তাই ইতিহাস নামে লাহোর প্রস্তাব নামে পরিচিত।
১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য
ঐতিহাসিকগণ মনে করেন লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে একটি জাতি গঠন করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়। ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
ভৌগোলিক সীমানা নির্ধারণঃ লাহোর প্রস্তাবের বলা হয়েছিল যে ভৌগোলিক এলাকা সঙ্গে যে সকল প্রদেশের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। এই সকল প্রদেশগুলো একাধিক অঞ্চলে গঠন করা হয় গঠন করা হবে। এতে উত্তর-পশ্চিম অপূর্ব ভারতে অবস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোকে গুষ্টিবদ্ধ করে। একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা যায় এবং এই স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রদেশগুলো সাহিত্য শাসিত ও সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকার হয়।
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় বিষয়ে গ্যারান্টিঃ লাহোর প্রস্তাবে বলা হয় যে সকল অঙ্গরাজ্যের সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক শাসন সংক্রান্ত অধিকার রক্ষা করার জন্য ভারতের ভবিষ্যৎ সংবিধানে বিভিন্ন রক্ষাকবচের সুনির্দিষ্ট পন্থা সমূহের উল্লেখ থাকতে হবে।
মুসলমানদের স্বার্থরক্ষাঃ ভারতের যেসব অংশে মুসলমানরা সংখ্যালঘু তাদের এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় গুলো ধর্মীয় সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও শাসন সংক্রান্ত যাবতীয় অধিকার সমূহ সংরক্ষণের নির্দিষ্ট ব্যবস্থা সময়ের কথা শাসনতন্ত্রে উল্লেখ থাকতে হবে।
ক্ষমতা নির্দিষ্টিকরণঃ লাহোর প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছিল যে প্রতিরক্ষা পররাষ্ট্র যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের ক্ষমতা গুলো সংশ্লিষ্ট অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে ব্যস্ত থাকতে হবে।
অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিতকরণঃ ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী সংলগ্ন এলাকার সমূহ পৃথক অঞ্চলের হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।
মুসলমানদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনঃ ভারতের উত্তর পশ্চিমবঙ্গ ভাগের ক্ষেত্রে যে অঞ্চলগুলো তাদের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করতে হবে।
স্বায়ত্তশাসিত ও স্বাধীন অঙ্গরাজ্যঃ এসব স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রদেশ ও অঙ্গরাজ্য করল হবে স্বায়ত্তশাসিত ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।
সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণঃ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাথে পরামর্শ গ্রহণ করে তাদের অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য সংবিধানের পর্যাপ্ত কার্যকর ও ভূমিকা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
মৌল নীতি হিসেবে গ্রহণঃ ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য হলো লাহোর প্রস্তাবের উল্লেখিত বিষয়গুলো দেশের ভবিষ্যৎ সংবিধান পরিকল্পনার ক্ষেত্রে মৌলিক নীতি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া প্রস্তাবের আলোচনায় বলা হয় যে ১৯৪০ সালের এই প্রস্তাবে ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চল সমূহ এক রাষ্ট্র হবে।
নাকি একাধিক রাষ্ট্র হবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট উল্লেখ করা ছিল না। তবে ভাষাগত ভাবে বোঝা যায় যে লাহোর প্রস্তাবের দুটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা দাবি করা হয়। উত্তর-পশ্চিম ভারতের মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ অঞ্চল এবং আরেকটি পূর্ব ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল।
লাহোর প্রস্তাবের গুরুত্ব ও ফলাফল
লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমেই স্বাধীন রাষ্ট্র দুইটা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়, তাই লাহোর প্রস্তাবের গুরুত্ব ও ফলাফল সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তেমনে এ বিশাল আলোচনা করা হলো নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবিঃ লাহোর প্রস্তাব ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম জনসাধারণের সাথে এবং নতুন রাষ্ট্র গঠন করা হয়। নতুন প্রেরণার সৃষ্টি করে স্বতন্ত্র আবাসভূমির আশায় তারা আতঙ্কিত হয়ে উঠেছিল। ফলে মুসলিম কংগ্রেসের রাজনীতির পৃথক রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। এই প্রস্তাব মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক আন্দোলনের সৃষ্টি করে, যা মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে কাজ করেছিল।
হিন্দু মুসলিম দাঙ্গাঃ প্রস্তাব মুসলমানদের মধ্যে ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের জাগ্রত হয়, তারা অনুভব করে যে তাদের আর সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চয়ই তার দরকার নাই কিন্তু হিন্দুরা লাহোর প্রস্তাবকে মেনে নেওয়ার অর্থ হল ভারতকে ব্যবচ্ছেদ করা।
তা হবে একটি পাপ কাজ লাহোর প্রস্তাব মুসলিম লীগ বিরোধী পত্রিকা সমালোচনা চালায় পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবিকে অস্বীকার করে যা পরবর্তীকালে বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা বাঁধে এবং একসময় তার প্রচন্ড রূপ নেয়।
সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দিকনির্দেশনাঃ লাহোর প্রস্তাব মুসলিম লীগকে একটি সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা দিয়েছিল ফলে অতি দ্রুত পাকিস্তান আন্দোলনের বিস্তৃত শুরু হয়। ১৯৪৬ সালে নির্বাচনের ফলাফল এর প্রমাণ পাওয়া যায়। মুসলিম লীগের পক্ষে নির্বাচন ছিল পাকিস্তানের একটা রেফারের নাম তুললো বা নির্ভরযোগ্য একটি নির্বাচন।
জিন্দাবাদ দ্বিজাতি তত্ত্ব ও পাকিস্তান সৃষ্টিঃ ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী জিন্দা হওয়ার দ্বিজাতি তথ্যের মাধ্যমে ভারতের মুসলমানরা অপ্রতিরোধ্য সংগ্রামে লিপ্ত হয়। ফলে অতি দ্রুত পাকিস্তান আন্দোলন যার কারণে ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট সংঘাতের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল হয়েছিল।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনঃ লাহোর প্রস্তাবের ফলে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি রাষ্ট্রবিভক্ত হওয়ায় পরবর্তীতে বিভিন্ন ঘটনার সাথে কার অতিক্রম করে ৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল। সুতরাং লাহোর প্রস্তাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ ছিল এটা বলা যেতে পারে। যার কারণে এই সফলতার পেছনে অবদান লাহোর প্রস্তাবের গুরুত্ব ও ফলাফল রয়েছে।
লাহোর প্রস্তাবের মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ নিহিত ছিল
লাহোর প্রস্তাবের মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ নিহিত ছিল কারণ এই লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে সফলতা অর্জন শুরু হয়। যা পরবর্তীতে আমরা বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের স্বাধীনভাবে বসবাস করি নিম্নের সম্পর্কে বিস্তারিত করা হলো।
লাহোর প্রস্তাবকে যদি আমরা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করি তাহলে এর মধ্যে যে বাংলাদেশের বীজ নিহিত ছিল। এ বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে যাবে লাহোর প্রস্তাবে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নিয়ে একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হবে। লাহোর প্রস্তাবের উদ্যোক্তা গ্রহণ মূলত দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের কথাই চিন্তা করেছিলেন।
কারণ পশ্চিমবঙ্গ দ্বারা বিভক্ত পূর্ব বাংলা ও আসাম এবং সিন্ধু পাঞ্জাব ভেলুসিস্থান ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ নিয়ে অভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভব ছিল না। ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবকে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসিত কথা বলা হয়েছে এবং বাংলাদেশের জন্য হয়েছে। আন্দোলনের ভিত্তিতে পূর্ব বাংলার সকল আন্দোলনে ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবের দিকনির্দেশনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
১৯৫৪ সালের ২১ দফা এবং ১৯৬৬ সালের ৬ দফার কর্মসূচিতে লাহোর প্রস্তাবের সরাসরি উল্লেখ আছে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পূর্ব বাংলার লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসনের দাবি জোরদার হয়ে ওঠে এবং কালক্রমে তার স্বাধীনতা বাংলাদেশের জন্ম দেয়। তাই ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের স্বায়ত্তশাসিত দাবিতে এত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। যে পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্যগুলোকে বহু বচনে বর্ণনা করা হয়েছিল। এটা রাষ্ট্র কথাটি উল্লেখ না করে রাষ্ট্র সমূহ শব্দটির উল্লেখ করা হয় কিন্তু ১৯৪৬ সালের মুসলিম লীগের এক অধিবেশনের রাষ্ট্রীয় অজুহাতে রাষ্ট্রসমূহ শব্দের পরিবর্তে রাষ্ট্র শব্দ প্রয়োগের দন্তগৃহীত হয়।
আবুল হাসেম সহ অনেক নেতা এর বিরোধিতা করেও কার্যকর কোন কিছু করতে পারেনি। ফলে পুরো বাংলা ও আসাম নিয়ে যে স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা অঞ্চলের মুসলিম নেতারা করেছিলেন। তা পাকিস্তান আন্দোলনের তীব্র তীব্রতায় চাপা পড়ে যায় কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টি হলেও স্বায়ত্ত শাসনের দাবি তীব্রতার হয়ে ওঠে এবং কালক্রমে এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। এজন্যই বলা যেতে পারে যে লাহোর প্রস্তাবের মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ নিহিত ছিল।
উপসংহারঃ ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য ও ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
পরিশেষে বলা যায় যে লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে দুটি রাষ্ট্র গঠন হয়েছিল। লাহোর প্রস্তাবের এই বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমেই দুটি রাষ্ট্রের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গঠিত হয়। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র গঠন হয়েছিল, তাই এর গুরুত্ব এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। পোস্টটা যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধার মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url