১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
মুক্তিযুদ্ধে অনেকে জীবন দিয়েছে যার বিনিময়ে আজকে স্বাধীন বাংলাদেশ কিন্তু ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান সবচাইতে বেশি রয়েছে। চলুন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কারণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
স্বাধীনতার ঘোষণা এর মাধ্যমে এদেশের সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যার কারণেই আজকের এ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। তাই স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে জানতে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান
বাংলাদেশে স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলার পেছনে বঙ্গবন্ধুর অবদান সবচেয়ে বেশি। তাই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
আজকের এই লাল সবুজের সুন্দর এই দেশটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করার পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাঙালি জাতির পিতা বলা হয়ে থাকে, তিনি বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আজকের এই বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের বাংলাদেশের মানুষের কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
কিভাবে নেতৃত্ব দিতে হয় সে পথ তিনি দেখিয়েছিলেন, যে দীর্ঘ সময় সংগ্রামের মাধ্যমে এ দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। তাই প্রথমত মুসলিম লীগের মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান রাজনীতিতে এসেছিলেন, তারপর তিনি হয়ে ওঠেন পূর্ব বাংলার অসম্প্রদায়িক এবং গণতন্ত্রের সকলের প্রিয় নেতা। তিনি পাকিস্তান রাষ্ট্র জন্ম হওয়ার পর থেকেই মুসলিম লীগ থেকে সরে দাঁড়ান এবং নতুন করে তিনি তরুণদের নিয়ে সংগঠন শুরু করেন।
তিনি ভাষা আন্দোলনের সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং জেলেও গিয়েছিলেন, জেলখানায় বন্দি থাকার পরও তিনি ভাষার জন্য জনগণকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। জেলে থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়। যিনি আওয়ামীলীগকে রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।
১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই ছয় দফা কে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা কর্মসূচির বিরুদ্ধে পশ্চিম সামরিক গোষ্ঠীগণ তার বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সাজিয়েছিলেন, যার প্রধান আসামি বঙ্গবন্ধুকে করা হয়। এদেশের মানুষ ৬৯ সালের গণ আন্দোলনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে তারা বাধ্য হয়েছিল।
যার কারণেই বঙ্গবন্ধু নামে তাকে ডাকা হয়, কারণ তোফায়েল আহমেদ তার নাম দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিজয় লাভ করেছিলেন কিন্তু তারপরও তাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। যার কারণে এই নেতা এমন ভাষণ দিয়েছিলেন যে ভাষণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী এদেশের সাধারণ জনগণের উপর হামলা করে হত্যাকাণ্ড শুরু করে।
এই দিন রাত্রিতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই পাকিস্তানি বাহিনীরা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তারপর পশ্চিম পাকিস্তানের লায়লপুর কারাগারে তাকে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ দশ মাস বন্দি করে রেখে দেওয়া হয় কিন্তু এ দেশের জনগণ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব অনুযায়ী সাধারণ জনগণ যুদ্ধ চালিয়ে যায় এবং বঙ্গবন্ধুর নাম পরিচালনা করেই মজিবনগর সরকার গঠন করে। বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি পদ দেওয়া হয়, পাকিস্তানের সরকার স্বাধীনতা ঘোষনার অপরাধে বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী হিসাবে ঘোষণা করে এবং ফাঁসির আদেশ দিয়ে থাকে কিন্তু এ দেশের জনগণ প্রতিবাদ ও আন্দোলন করার কারণে তাকে আর ফাঁসি দিতে পারে না।
১৯৭২ সালের ১০ই মার্চ যখন এ দেশে ফিরে আসেন, তখন এদেশের মানুষ আনন্দ মিছিল করতেছিল এবং এই নেতাকে তারা বরণ করে নেন। তাই মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান সবচেয়ে বেশি ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারা পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিল।
বাঙালি জাতি সংঘটিত হয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েছিল পরবর্তীতে এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং পশ্চিমা শাসকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। পশ্চিমা শাসকগণ তখন চিন্তা করেন যে কিভাবে বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করা যায়। বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর এই স্বাধীনতা অর্জনের অগ্রদূত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান রয়েছে।
স্বাধীনতার ঘোষণা
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে এ দেশের জনগণ তার ডাকে সাড়া দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করেছিলেন। নিম্নে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
২৫ শে মার্চ রাত্রিতে সারা ঢাকা শহর পশ্চিমা পাকিস্তান বাহিনীরা হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছিল। ঐদিন রাত্রিতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সকল নেতার কে সতর্ক থাকতে বলেছিলেন এবং রাত এগারোটার দিকে পাকিস্তানি বাহিনীরা তারা অতর্কিতভাবে নিরস্ত ঘুমন্ত মানুষের উপর আক্রমণ করে। কামান, ভারী মিশিন গান অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং গণহত্যা করে।
এই দিনের রাত্রিকে অপারেশন সার্চলাইট হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তারা পিলখানা ঘাটি করে রাজার বাগ পুলিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ শুরু করেছিল এবং মানুষকে হত্যা করেছিল। পাকিস্তানি বাহিরা আক্রমণ শুরু করে দেয় গভীর রাত্রিতে শিশুদের কে হত্যা করা হয়েছিল, ঘুমন্ত মানুষকেও তারা হত্যা করেছিল, ইতিহাস কাল অধ্যায় হিসাবে পরিচিত।
এই রাত্রিতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধে করতে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন আমি হয়তো তোমাদের মাঝে নাও থাকতে পারি তাই তোমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশের পাকিস্তানি বাহিনীদেরকে সরিয়ে দাও এবং এ দেশকে স্বাধীন করো।
আমাকে হয়তো ওরা মেরেও ফেলতে পারে, তাই সাধারণ জনগণ তার ডাকে সাড়া দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দীর্ঘ নয় মাস পাকিস্তানি বাহিনীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এদের স্বাধীন করেছিল। তাই বলা যেতে পারে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কারণ
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পিছনে অনেক কারণ আছে, তাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কারণ সমূহ নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনে অনেক কারণ আছে, মূলত ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ করার প্রেরণা যোগিয়েছিল। সকল শ্রেণীর মানুষ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছিল, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়।
ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে তাই এ দেশের ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি পোশাক পরিচছদ খাবার দাবার জীবনযাত্রা আচার ব্যবহার এক কথায় সামাজিক যে কারণগুলো রয়েছে সকল কিছুই রক্ষা করার জন্য তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করেছিলেন। এগুলো মূলত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা কর্মসূচি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন।
যেখানে বাঙালি জাতির দাবি গুলো বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করেছিল। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিল। যেখানে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয় লাভ করেছিল কিন্তু তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়নি। যার কারণে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।
পশ্চিম পাকিস্তানের যাবতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা যেমন প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছিল কিন্তু পুরো বাংলার জনগণ তেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। তাদেরকে শিক্ষার দিক থেকে বঞ্চিত করা হয়, এছাড়া কেন্দ্রীয় প্রাদেশিক ও বেসামরিক সামরিক ব্যয় সকল ক্ষেত্রেই বৈষম্য দেখা দেয়।
তাছাড়া সমাজ কল্যাণের ক্ষেত্রেও আইয়ুব সরকার শেষ পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানের ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে দেয়। এজন্য পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান রয়েছে।বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্র ভূমিকা রয়েছে, যেমন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এর কারণে এটি মূলত সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছিল। যা পরবর্তীতে রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপ নেয়।
বাঙ্গালীদের একটাই দাবি ছিল মায়ের ভাষা বাংলা এটা রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। যার কারণে ১৯৪৮ সালের ১৯শে মার্চ তার আন্দোলন করেছিল, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এ দেশে ঢাকায় যখন আসেন তখন রমনা পার্কের রেসকোর্স ময়দানে একটি জনসভায় ঘোষণা করেন যে, উর্দু হবে একমাত্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা কিন্তু এই ঘোষণা পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ।
ছাত্ররা প্রতিবাদ করেছিল যা সাংস্কৃতিক আন্দোলন নামে পরিচিত এবং পরবর্তীতে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয়। ভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল খাজা নাজিমুদ্দিন জিন্নাহর পুনঃ ভিত্তি করেছিল তিনিও বলেছিলেন উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররা তখন সেই সময় প্রতিবাদ করেছিল।
সালাম, বরকত, রফিক জব্বার সহ আরো অনেকেই এই রাষ্ট্রভাষা বাংলার রক্ষা করার জন্য রক্ত দিয়েছিল। ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আজও পর্যন্ত ১৮৮ টি দেশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকে। ভাষা আন্দোলন বাঙালি সমাজকে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে এসেছিল এবং তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছিল।
এর বিনিময়ে সকল ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্য দেশকে স্বাধীন করার জন্য তারা সংগ্রাম করেছিল। আন্দোলনকারীরা ঢাকা শহর ১৯৭১ সালের পাকিস্তানের বাহিনীরা পরবর্তীতে এই বাংলা ভাষা কে রাষ্ট্রীয় ভাষা স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছিল।
সুতরাং ভাষা আন্দোলন সাংস্কৃতিক আন্দোলন হিসেবে পরিচিত বঙ্গবন্ধু এ ভাষা আন্দোলনের কারণে জেলে গিয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলনের পেছনেও তার অবদান রয়েছে।
১৯৪৭ সালের পরে পাকিস্তান রাষ্ট্র জন্ম হওয়ার পর পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক ব্যবধান রয়েছে। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী দুই অঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে পূর্ব পাকিস্তানকে তারা একটি উপনিবেশিক হিসেবে মনে করত।
যার কারণে তারা পাঁচশলা পরিকল্পনা করেছিল যা দুই অঞ্চলের মধ্যে হবে কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ ওই সময়ে সকল জনগণের মাথাপিছু আয় এর বৈষম্য ছিল, পূর্ব পাকিস্তানের সম্পদ থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের পাচার করা হতো।
মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য
বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য রয়েছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
১৯৭১ সালের যে হত্যাযজ্ঞ করা হয়েছিল এর জন্য এদেশের জনগণ দীর্ঘ নয় মাসে এক কোটি মানুষ তাদের জীবন বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। এদেশের গণহত্যা শুরু করেছিল বিশেষ করে পশ্চিমাদের টার্গেট ছিল বাঙালি সেনা পুলিশ প্যারামেলিটারি আনসার ও অন্যান্য প্রশাসনিক ক্ষেত্রে যারা ছিল তাদেরকে হত্যা করা।
তাছাড়া বাঙালি হিন্দু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সমর্থক ছাত্রছাত্রী যারা এই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিল তাদেরকে হত্যা করা টার্গেট ছিল। বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের কে যেমন অধ্যাপক শিক্ষক যারা আছেন তাদেরকে হত্যা করা। পাকিস্তানের সেনারা বেছে বেছে কেবল ঐ সকল যুবকদেরই টার্গেট করেছিল।
যারা এই সময় সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়বে এসব তরুণীদের কে তারা বন্দী করে তুলে নিয়ে গিয়েছিল এবং তাদেরকে হত্যা করেছিল। যা পরবর্তীতে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। ছেলেদের উপর অত্যাচার ও হত্যা করে গুপ্তচার করেছিলেন। তরুণীদেরকে পাওয়া যেত না দেখা যেত তরুণীদের দেহ সাধারণত মাঠে-ঘাটে পাওয়া যেত, নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দিত অথবা কোন আর্মির ক্যাম্পের পাশেই এদের দেখা যেত।
২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করার কারণে পাকিস্তানি বাহিনীরা এই গণহত্যা আরো বেশি করেছিল। তবে এই ঘোষণার পিছনে বাঙ্গালী জাতির আত্মত্যাগ বিসর্জন আন্দোলন সংগ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য ছিল। দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধ সংগ্রাম মৃত্যু লাঞ্চনা বঞ্চনা ইত্যাদির মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বিজয় লাভ করে।
যার কারণে সবুজ লালের মিশ্রণে তৈরি করা এই পতাকা গর্বিত স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভ করা হয়। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ সাধারণ নির্বাচন, ৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ ছয় দফা আন্দোলন সকল প্রকার ক্ষেত্রেই দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করেছিল। যার বিনিময় হয়তো আমরা আজ এই স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি অসহযোগ আন্দোলনের কারণে স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্ক্ষা করেছিল।
স্বাধীনতার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে নিপীড়িত মানুষ ও বঞ্চিত বাঙ্গালিদের কে মুক্তি করার জন্য চেষ্টা করেছিলেন এবং তারা শাসন মুক্ত হয়েছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ডাকে সাড়া দিয়ে সমগ্র জাতি স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান সব চাইতে বেশি ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
পাকিস্তানি বাহিনীর উপর বাঙালি জাতি অত্যাচারিত ও লাঞ্ছিত বঞ্চনা সকল কিছু অপেক্ষা করে, তারা দেশের অর্থ সম্পদ এবং চাকরির সুযোগ সুবিধা ব্যবসা-বাণিজ্য এ সকল কাজকর্মের জন্যই তারা আন্দোলন করেছিলেন। এদেশের মানুষ সাধারণ নাগরিক হিসেবে বসবাস করা তাদের কাছে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
পাকিস্তানের মনে হয় যে তারা আশ্রয় দিয়েছে এরকম ভাবে এদেশের মানুষ বসবাস করতেছিল। এমনকি বাংলা ভাষাও মাতৃভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল গভীর ষড়যন্ত্রে কারণে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তারা উর্ধুকে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু বাঙালি ছাত্ররা সেটার প্রতিবাদ করে সংগ্রাম করার কারণে পরবর্তীতে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃত দিতে পারে নায়।
তারা বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালি যখন বিজয় লাভ করেছিল কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীরা শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি ছিল না। যার কারণে বাঙালিরা বুঝতে পেরেছিল যে তারা বাঙ্গালীদের ক্ষমতা দিতে চায় না, যার কারণে সকল জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়।
৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ ও নির্দেশনার মাধ্যমে বাঙালি ২৬শে মার্ চ স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা দিলে বাঙালি জাতিরা তারা এদেশের দেশকে রক্ষা করার জন্য সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করার পর এ দেশকে স্বাধীন করেছিল।
উপসংহারঃ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
পরিশেষে বলা যায় যে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে উৎসাহিত অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার কথা মনে হলেই বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণে আসবে, কারণ আজকের এই স্বাধীন রাষ্ট্র বসবাস করার পিছনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই এই পোস্টটা যদি আপনার কাছে ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url