তেঁতুলের বিচির পাউডার খাওয়ার নিয়ম ও এর গোপন উপকারিতা জানুন

তেঁতুল খেতে অনেকে পছন্দ করে তবে তেঁতুলের বিচির পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকে জানেনা। তাই এটা খেলে শরীরে অনেক উপকার হয়। চলুন, তেতুলের বিচির পাউডার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
আপনার শরীরের যদি চর্বি বা ওজন কমাতে চান, সে ক্ষেত্রে তেতুল খেতে পারেন। কারণ এর মাঝে প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাই তেঁতুলের বিচির পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃতেঁতুলের বিচির পাউডার খাওয়ার নিয়ম ও এর গোপন উপকারিতা জানুন

তেঁতুলের বিচির পাউডার খাওয়ার নিয়ম

তেতুলের বিচির অনেক উপকারিতা রয়েছে, তবে তেঁতুলের বিচির পাউডার খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী পরিমাণ মতো খেতে হবে। তাহলেই শরীরের জন্য উপকার পাওয়া যাবে, নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

তেতুলের বিচি বিভিন্নভাবে খাওয়া যেতে পারে, তবে রাত্রিতে এক গ্লাস পানির মধ্যে দুই চামচ তেতুলের বীচের পাউডার মিশিয়ে ভিজিয়ে রাখবেন। এরপর সকালবেলা মধু দিয়ে মিক্স করে খেতে পারেন, এভাবে আবার সকালবেলা ভিজিয়ে রেখে রাত্রিতে খেতে পারেন।

এভাবে খেলে আপনি উপকার পাবেন, তাছাড়া এক গ্লাস দুধের মধ্যে এক চামচ তেতুলের বীজ পাউডার মিক্সড করে খেলে শরীরে অনেক ধরনের রোগ ব্যাধি থাকলে সেটা দূর হয়ে যাবে।

তেঁতুল বিচি খাওয়ার নিয়ম হলো রাত্রিতে এক চামচ তেতুলের বীজ পাউডার হাফ গ্লাস পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন। এরপরে সকালবেলা শুধুমাত্র পানিটুকুই খেয়ে নিবেন।

আর নিচে জমানো যে জিনিসগুলো রয়েছে সেগুলো ফেলে দিতে হবে। এভাবে সকাল-বিকালে যদি আপনি খেতে পারেন, তাহলে অনেক উপকার পাবেন। তবে একজন চিকিৎসকের মাধ্যমেও পরামর্শ নিতে পারেন।
অনেকে এমনি খেতে পারে না সে ক্ষেত্রে এই পাউডারের সাথে মধু এবং দুধ মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে অনেক সুস্বাদু হবে এবং তিনটি প্রাকৃতিক জিনিস হিসেবে শরীরে কাজ করবে। তেতুলের বীজ আপনি আরো বিভিন্নভাবে খেতে পারেন।

সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপকার করবে যদি আপনি সকালবেলা ব্যায়াম করতে যান। এক ঘন্টা দ্রুত হাঁটতে পারেন তারপর ২৫ গ্রামের মতো তেঁতুল বীজের গুড়া খেতে পারেন। 

তাহলে আপনার হার্ট এ ব্লক হবে না, তবে একটা জিনিস মনে রাখবেন তেতুল সাধারণত ভরা পেটে খেলে সবচেয়ে উপকার বেশি পাওয়া যায় এবং ভরা পেটে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তবে অতিরিক্ত খাওয়ার চেষ্টা করবেন না, সে ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো খাবেন, তাহলে শরীরে উপকার হবে।

তেঁতুল বিচি খাওয়ার গোপন উপকারিতা

তেঁতুল বিচির অনেক উপকারিতা রয়েছে, যদিও আমরা এটা ফেলে দেই। তাই তেঁতুল বিচি খাওয়ার গোপন উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আর এটা ফেলে দিবেন না। চলুন জেনে নেওয়া যাক,

আমরা সাধারণত তেতুলের আচার খেতেই পছন্দ করে থাকি। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীরা এ তেতুলের আচার খেতে বেশি পছন্দ করে থাকে। তাছাড়া আরো অন্যান্য ফল মেখে খাওয়ার জন্য এই তেঁতুল ব্যবহার করে থাকি। তবে তেঁতুলের বিচির অনেক গোপন উপকারিতা রয়েছে চলন জানা যাক।

বাংলাদেশের পাটকলে ও কাপড়ের মিলে সুতার রং করার জন্য এই তেতুলের বীজ ব্যবহার করে থাকে। এ তেঁতুলের বীজ ব্যবহার করার কারণে সুতার রং টেকসই হয়।

আমরা যে মশার কয়েল ব্যবহার করে থাকি এটা তৈরি করার জন্য কাঁচামাল হিসাবে এই তেতুলের বীজ ব্যবহার করে থাকে।

তেতুলের বিচি বিভিন্ন ঔষধ তৈরি করতে হয় ব্যবহৃত হয় বিশেষ করে ইউনানী হোমিও, এলোপ্যাথি আয়ুর্বেদিক এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরি করার কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

শুষ্ক চোখের যে চিকিৎসা করা হয় ড্রপের মাধ্যমে আর এই ড্রপ তৈরি করা হয় এই তেঁতুলের বীজ দিয়ে।

পাকস্থলীর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা লিভারের বিভিন্ন ধরনের গোলযোগাযোগ দূর করতে সাহায্য করে থাকে। এই তেঁতুলের বীজ গর্ভকালীন যে বমি হয়ে থাকে ও মাথা ঘুরানোর সমস্যার জন্য তেতুলের বীজের শরবত খেলে এর সমাধান পাবেন।

তেতুলের বীজ গরম পানিতে ফুটানোর পর এক ধরনের আঠা তৈরি করা যায়, যা দিয়ে ছবি আঁকার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে।

তেতুলের বীজের মধ্যে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকার কারণে এটা মস্তিষ্ক অতি তাড়াতাড়ি শক্তিশালী করতে পারে।

তেতুলের বিচির অপকারিতা

তেতুলের বিচি এর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি তেতুলের বিচির অপকারিতা আছে। নিম্নে এর অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

আপনি যদি তেঁতুল বেশি খেয়ে ফেলেন সেই ক্ষেত্রে প্রেশার কমে যেতে পারে, তাই অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না এতে ক্ষতি হবে।

যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তারা অতিরিক্ত খাবেন না, এতে এলার্জি বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন ফুসকুড়ি উঠতে পারে, চুলকানি, বমি হওয়া শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া এই ধরনের সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।

অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়ার কারণে শরীরের রক্ত বৃদ্ধি পেতে পারে, এতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তেঁতুল খেলে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে, তাই গ্লুকোজের মাত্রা কমে গেলে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অতিরিক্ত তেতুল যদি খেয়ে ফেলেন সেই ক্ষেত্রে আপনার ওজন কমতে থাকবে। শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই পরিমাণ মতো খাবেন।

তেতুলের মধ্যে টারটারিক অ্যাসিড রয়েছে যার কারণে দাঁত নষ্ট হতে পারে এবং দাঁতের গোড়ালি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।

কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ রয়েছে যেগুলো খেলে যা রক্তপাত এমনি বৃদ্ধি পেতে পারে, সেই সকল ওষুধের সাথে যদি আপনি অতিরিক্ত তেঁতুল খেয়ে ফেলেন, তাহলে রক্তপাত দ্রুত বৃদ্ধি হতে পারে। তাই অতিরিক্ত খাবেন না, কারণ তেতুলের বিচির অপকারিতা রয়েছে।

অতিরিক্ত তেতুল খাওয়ার কারণে শরীরের পিত্তথলিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং এই পিত্তথলিতে পরবর্তীতে পাথরও হতে পারে।

বেশি তেঁতুল খেলে জন্ডিস দেখা দিতে পারে, তাছাড়া তেতুলের মধ্যে থাকে এসিটিক অ্যাসিড যা খাওয়ার কারণে শরীরে অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অতিরিক্ত তেতুল খেলে রক্তের সিরাম গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে নিয়ে আসে, যার কারণে হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে। এজন্য পুষ্টিবিদরা বলেছেন ১০ গ্রাম খেতে হবে। এর বেশি খাওয়া যাবেনা এতে ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তেঁতুলের শরবতের উপকারিতা

অনেকে সরাসরি তেঁতুল খেতে পারে না, তাই তারা শরবত খেতে পারেন। কেননা তেঁতুলের শরবতের উপকারিতা রয়েছে, নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

তেতুলের রসের মধ্যে হাইড্রোক্সিসিট্রিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে, এর কারণে পেটে চর্বি জমতে পারে। তাছাড়া রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে তেতুল পরিমাণ মতো খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে। এজন্য যাদের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না, তারা পরিমাণ মতো এই তেঁতুল খেতে পারেন।
ছবি
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে তেতুল বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের কাজ করে থাকে। যা রক্তের চাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। 

যার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে, তবে বেশি খাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে তেঁতুলের বিচির পাউডার খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খাবেন, তাহলে রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

আপনার যদি পেটের চর্বি হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে তেতুল পুদিনা পাতা মিক্স করে শরবত খেলে চর্বি কমে যাবে। তেঁতুল পুদিনা পাতার শরবত খাওয়া নিয়ম হলো;

তেতুলের কাঁথ এক চামচ নিবেন, আধা চামচ চিনি নিবেন, বিট লবণ পরিমাণ মতো, পুদিনা পাতা সাত আট টা, জিরা গুড়া ও পানি পরিমাণ মতো এবং কয়েকটি বরফের টুকরা নিতে পারেন।
এরপরে ভালো করে পরিষ্কার করে নিবেন, তারপর কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন এরপর হাত দিয়ে চটকিয়ে ছেঁকে নিবেন।

এরপর পুদিনা পাতাগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে বিট লবণ চিনি মিশানোর পর বেলেন্ডার করে নেবেন। তারপর খেতে পারেন আপনার তবে এভাবে খেতে যদি কষ্ট হয় সে ক্ষেত্রে আপনি তেতুলের বিচির পাউডার খেতে পারেন।

আরো একটি পদ্ধতিতে তেতুলের শরবত বানাতে পারেন, প্রথমত শুকনা মরিচ নিয়ে কড়াই ভিতরে দিবেন এরপর নাড়াচাড়া দিবেন। এর মধ্যে জিরা ও দিতে পারেন এরপর সুন্দর করে ভেজে নিবেন। যখন এগুলো রঙ পরিবর্তন হয়ে যাবে তখন গরম থাকতেই নামিয়ে ফেলবেন এবং একটি বয়ামের মধ্যে রেখে দিবেন, মুখ বন্ধ করে দেবেন।

তারপর কিছুক্ষন তেতুল ভিজিয়ে রাখার পরে তেতুলের দানা ও ময়লা গুলো সুন্দর করে পরিষ্কার করে নেবেন। তারপর পরিমাণ মতো পানি ও সকল উপাদানগুলো মিক্স করে পরিমাণ মতো বোতলের মধ্যে ঢেলে দিবেন।

এরপরে ফ্রিজে রেখে দিবেন, বরফ কুচি ও লেবুর টুকরা দিয়ে পুদিনা পাতার সাথে মিক্স করে ঠান্ডা টক ঝাল মিষ্টি শরবত খেতে পারেন। এভাবে খেলে তেঁতুলের শরবতের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ পাবেন।

তেতুলের বিচির পাউডার উপকারিতা

তেতুলের বিচি ফেলে না দিয়ে এটা পাউডার বানিয়ে খেতে পারেন। কারণ তেতুলের বিচির পাউডার উপকারিতা রয়েছে, নিম্ন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চান তারা তেতুলের পাউডার নিয়মিত খেতে পারেন। কারণ এর মধ্যে থাকে টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক এসিড, তাছাড়া পটাশিয়াম থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও আরো অনেক উপকার করে থাকে, কেননা তেতুলের বিচির পাউডার উপকারিতা রয়েছে।

যাদের পেপটিক আলচারের মতো সমস্যা রয়েছে এবং পেটের মধ্যে ক্ষুদ্রান্তে ঘা হয়, এই ধরনের সমস্যা যারা ভুগতেছেন। তাদের ক্ষেত্রে তেতুলের বীজের পাউডার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে যদি কেউ নিয়মিত ভাবে এটা খেতে পারে তাহলে তার পেপটিক আলচার দূর হয়ে যাবে।

তেতুল বীজের পাউডার যদি নিয়মিত খেতে পারেন, তাহলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে। তাছাড়া এর মধ্যে এক ধরনের থাকে এনজাইম থাকে যা চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, তাই আপনি তেঁতুলের বিচি নিয়ম অনুযায়ী খেতে পারেন। তাহলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে তেতুলের পাউডার অনেক উপকার করে থাকে, কারণ এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা কিডনি ফেইলর ও ক্যান্সার এর ক্ষেত্রে অনেক উপকার করে থাকে।

সর্দি কাশি যাদের ঘন ঘন হয়ে থাকে, তারা এই তেতুল পাউডার খেতে পারেন। কারণ এর মাঝে যে উপাদানটা রয়েছে তা সর্দি কাশি সারাতে সাহায্য করে। এর মাঝে ভিটামিন সি রয়েছে যা শরীরে ইমিউনিটি বাড়াতে পারে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে তাই নিয়মিতভাবে এটা খেতে পারেন।

যাদের দীর্ঘদিন যাবত ধূমপান ও মধ্য পান করার কারণে লিভারের ক্ষতি হয়ে গেছে বা যকৃতির সমস্যা দেখা দিয়েছে। তারা নিয়মিতভাবে তেতুলের বিচির পাউডার খেতে পারেন, এছাড়াও যারা লিভারকে ভালো রাখতে চান সে ক্ষেত্রেও নিয়মিত ভাবে খেতে পারেন।

কারণ এর মাঝে যে পুষ্টি উপাদানটা রয়েছে তা লিভার ড্যামেজ থেকে রক্ষা করতে পারে, তাই অতিরিক্ত খাওয়া যাবেনা খাওয়া যাবে না। 

ওজন কমাতে তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম

যারা ওজন কমাতে চান তারা তেঁতুল খেতে পারেন, তবে ওজন কমাতে তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। তাহলেই উপকার পাবেন, নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

তেতুলের মধ্যে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড থাকার কারণে এটা আয়রন বৃদ্ধি করতে পারে, যার শরীরের কোষে পৌঁছে দেয়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পেতে পারে।

তেতুলের মধ্যে এক ধরনের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকার কারণে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অনেক উপকার করে থাকে।

গ্রীষ্মের সময় কম বেশি অনেকের বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে, সে ক্ষেত্রে এক কাপ পানির মধ্যে তেতুল ভিজিয়ে রেখে সামান্য লবন চিনি, গুড় মিশিয়ে খেলে বদহজমের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আপনার গ্যাসের সমস্যা সেটা থেকেও মুক্তি পেতে পারেন, তবে অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। এটা আরো ক্ষতি হতে পারে।

তেতুলের মধ্যে আরো বিশেষ কিছু উপাদান থাকার কারণে আপনার শরীরের ওজন কমাতে পারবেন। তারপর ঠান্ডা সর্দি কাশি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, এছাড়া এর সাথে যদি সামান্য গোলমরিচ গরম পানির সাথে মিক্স করে খেতে পারেন। এক্ষেত্রে সর্দি কাশির দারুন কাজ করে থাকে, তাছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

কারণ এর মাঝে থাকে ভিটামিন সি যা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসাবে কাজ করে থাকে। এছাড়াও স্কার্ভি রোগ দূর করতে পারে, এজন্য নিয়মিতভাবে তেতুল খাবেন। তবে পরিমাণ মতো খেতে হবে, তাহলেই আপনি উপকার পাবেন। তাই ওজন কমাতে তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী পরিমাণ মতো খাবেন

তেতুল পাতার উপকারিতা

এতক্ষণ আমরা তেঁতুল নিয়ে আলোচনা করেছি এখন জানবো তেতুল পাতার উপকারিতা, সম্পর্কে চলুন এর উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা যাক।

অনেকে বলে থাকে তেঁতুল খেলে রক্ত নষ্ট হয়ে যায় এবং রক্তশূন্যতা হতে পারে। এ কথাগুলো একদমই অযৌক্তিক এবং আরো অনেকে মনে করে তেঁতুল গাছের অশরীরী কিছু থাকে যার কারণে তেঁতুল খাওয়া যাবেনা। এগুলো ঠিক নয় শুধুই কুসংস্কার ছাড়া কিছুই নয়।
ছবি
তেতুল আমাদের দেহের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, হৃদ রোগীদের জন্য উপকার। এছাড়াও তেঁতুলের উপকারিতা পাশাপাশি তেতুলের পাতারও অনেক গুণ রয়েছে। যা আমাদের শরীরে হাজারো সমস্যা সমাধান করে থাকে। তাই তেতুল পাতার উপকারিতা সম্পর্কে নিম্ন আলোচনা করা হলো,

আপনি যদি তেতুলের পাতা সিদ্ধ করে ওই পানিতে লবণ দিয়ে যদি খেতে পারেন, তাহলে ঠান্ডা কাশি সমস্যা দূর হবে, কারণ তেতুল পাতার উপকারিতা রয়েছে।
যদি তেতুলের পাতার রস খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে কৃমিনাশক ও চোখ উঠা এই রোগ এর ক্ষেত্রে খুবই ভালো কাজ করে থাকে।

তেতুলের পাতা বেটে অল্প গরম করে ক্ষত বা ব্যথা স্থানে যদি লাগাতে পারেন, তাহলে ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।

দীর্ঘদিন আমাশয় যারা ভুগছেন তারা তেতুলের পাতা সিদ্ধ করে ওই পানিটুকু এবং পাঁচফোড়ন মিক্স করে খেতে পারেন। এতে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে আপনার পেটে যত মিউকাস রয়েছে সেগুলো বের করে দিবে এবং শরীরকে দ্রুত সুস্থ করে তুলবে। এটা যদি কেউ না খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে তেতুলের পাউডারও খেতে পারেন।

তেঁতুলের পাতা সিদ্ধ করার পানি যদি ক্ষতস্থানে ধুয়ে দিতে পারেন, তাহলে অতি শীঘ্রই ক্ষতস্থান সেরে যাবে। মুখের মধ্যে যদি কোন ক্ষত থাকে সেক্ষেত্রে তেতুল পাতার সিদ্ধ পানি মুখের মধ্যে পাঁচ মিনিটের মতো রেখে দিবেন। তাহলে দেখবেন ক্ষত সেরে যাবে, এভাবে দুই থেকে তিন দিন আপনি মুখের মধ্যে পানি রেখে এভাবে সেবা চালিয়ে যাবেন, দেখবেন সেরে যাবে।

যাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া করে তারা নিয়মিতভাবে যদি এই তেঁতুলের পাতার রস খেতে পারেন, তাহলে প্রসবের জ্বালাপোড়া কমে যাবে।

শেষ কথাঃ তেঁতুলের বিচির পাউডার খাওয়ার নিয়ম ও এর গোপন উপকারিতা জানুন

পরিশেষে বলা যায় যে তেঁতুল গাছের পাতা, ছাল, বীজ সবকিছুই আমাদের শরীরের জন্য উপকার করে থাকে। তাই তেঁতুলের বিচির পাউডার খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খেতে পারেন। এটা আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার করতে পারে। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগবে এবং উপকারে আসতে পারে। তাই এই পোস্টটি আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪