কোন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় ও ঔষধের নাম সম্পর্কে জানুন
অনেকে জানতে চায় যে কোন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। তাই যে খাবারগুলো খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে, তা জানা খুবই প্রয়োজন। চলুন, কিভাবে খাবারের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য খাবারের পাশাপাশি শারীরিক ব্যায়াম এবং কিছু বদ অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। তাই কোন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় সে সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃকোন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় ও ঔষধের নাম সম্পর্কে জানুন
কোষ্ঠকাঠিন্য
কোষ্ঠকাঠিন্য হলো ১ থেকে ২ দিন পরপর যদি কারো মল ত্যাগের বেগ হয় এবং শুষ্ক কঠিন মল হয়। যা পায়খানা করতে অনেক কষ্ট হয়, চিকিৎসকরা বলে থাকে যদি কেউ পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার না খায়। প্রতি সপ্তাহে প্রায় তিনবার এর কম পায়খানা হয় তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়ে থাকে।
অনেকক্ষণ হলো পায়খানায় বসে আছেন কিন্তু আপনার পায়খানা পরিষ্কার হচ্ছে না এবং পায়খানা অত্যন্ত শক্ত এটাই মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য। এই সমস্যায় সচরাচর অনেকেই ভুগতে থাকে, এক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে শুষ্ক শক্ত কঠিন মল হয়ে থাকে।
যা মল ত্যাগের সময় অত্যন্ত কষ্ট হয়, ব্যথা লাগে জোরে চাপ দিলে পায়খানার রাস্তা ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং অনেক সময় লাগে তারপরে পুরোপুরি মল ত্যাগ হয় না। এরকম মনে হয় মলদ্বারের আশেপাশে প্রচন্ড ব্যথা করে তলপেটে ব্যথা করে সাপোজিটরি বা অন্য কোন ব্যবস্থা নিয়ে মল ত্যাগ করতে হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়
কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার পেছনে বিভিন্ন ধরনের কারণ থাকে। চলুন, কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয় সে সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রায় মানুষেরই দেখা যেতে পারে হয়তো বা কোন এক সময় হয়ে থাকে। সাধারণত পেট ভারী হয়ে থাকে মল ত্যাগের সমস্যা দেখা দেয়। কখনো কখনো মলের সাথে আবার রক্ত আসে, যার কারণে পাইলস, আলসার পেটে ব্যথা এনাল ফিসার ফিস্টুলা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাছাড়া বিশেষজ্ঞরা মনে করে যারা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগেন। তারা স্ট্রক, হার্ট অ্যাটাক করতে পারে। বিভিন্ন কারণে হতে পারে তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কম আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার এটাই মূলত কারণ। তাছাড়া মানসিক চাপ ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধের কারণেও এই সমস্যা হতে পারে। তাই নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো তুলে ধরা হলো,
ব্যথানাশক ওষুধঃ গবেষণায় দেখা গেছে যে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় কারণ হলো ব্যথা নাশক ওষুধ খাওয়া, এসপিরিন এবং ইবুপ্রোপেন এ জাতীয় ওষুধগুলো যদি কেউ বেশি খায় সে ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। যেসব রোগী এই ধরনের ওষুধ নিয়মিত ভাবে খাচ্ছে এবং পরিমাণে বেশি খাচ্ছে তাদের এই সমস্যাগুলো দেখা যাচ্ছে।
হাইপোথাইরয়েডিজমঃ অনেকের থাইরয়েড গ্রন্থির জন্য শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে বুক জ্বালাপোড়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
এলার্জির সমস্যাঃ অনেকের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স এর সমস্যা রয়েছে। যারা দুগ্ধ জাতীয় খাবার খেলেই মলত্যাগের সমস্যা হয় তবে সাধারণত ডায়রিয়া বেশি হয়।
ব্যায়ামের অভ্যাস নেইঃ অনেকেই ব্যায়াম করেনা এবং খাদ্য অভ্যাস নিয়ন্ত্রক ভাবে চলে না, তাদের এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
ভিটামিনঃ আমরা জানি সুস্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিনের প্রয়োজন ভিটামিন খেয়ে থাকে। যদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কারো হয় সে ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তবে কিছু ভিটামিন আছে যেগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার পিছনে কারণ রয়েছে। যেমন ক্যালসিয়াম, আয়রন এই ট্যাবলেট গুলো খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
মল চেপে ধরেঃ অনেকে আছে যারা মলত্যাগ করতে অনেক কষ্ট হয়। যার কারণে চেপে ধরে রাখেন এর কারণে নিয়মিত অভ্যাস না করার কারণেও কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে যেতে পারে।
বিষন্নতাঃ কোষ্ঠকাঠিন্যর আরেকটা কারণ হলো সব সময় বিষন্নতায় থাকা মানসিক সমস্যার কারণে পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা হয় যার কারণে দেখা দেয়।
এন্টাসিডঃ অ্যান্টাসিড বুক জ্বালাপোড়া ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে, যার কারণে অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে তাই এন্টাসিড অতিরিক্ত খাওয়া যাবেনা।
পানি কম খায়ঃ যারা পানি কম খায় তাদের এই ধরনের সমস্যা বেশি হয়, তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হলে গরম পানি পান করতে হবে তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
গর্ভধারণঃ অনেক সময় গর্ভধারণের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে, যদি আপনি কয়েকদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগতে থাকেন। সেই ক্ষেত্রে গর্ভধারণের লক্ষণ বুঝে হতে পারে তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কোন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়
কোন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এ সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার। খাবারের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে আবার খাবারের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
শাকসবজিঃ শাকসবজির মধ্যে থাকে আঁশ, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হলে আশযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। যেমন সবজির মধ্যে লাউ ঝিঙ্গা পেঁপে তাছাড়া আরো অনেক সবজি রয়েছে। এছাড়া শাকের মাঝে কলমি শাক, পালং শাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য ভালো উপকার করে থাকে। তাছাড়া সালাদ হিসেবে খেতে পারেন ও টমেটো অনেক উপকার করে থাকে।
ডালঃ মটরশুঁটির ডাল মধ্যে ফাইবার থাকে এবং আঁশ থাকে ১০০ গ্রাম রান্না করা ডাল দৈনিক প্রয়োজনের ২৬ শতাংশ আঁশ যোগায়। তাই এটা যদি ভুনা করে খেতে পারেন, তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
আঁশযুক্ত ফলঃ নাশপাতিতে আঁশ পরিমাণ ২২ শতাংশ থাকে এবং পানির পরিমাণ প্রচুর থাকে। যা খাদ্য হজমের সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। আঙ্গুর আঁশযুক্ত ফল হওয়ার কারণে এর মধ্যে পানি বেশি থাকে যা কষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
তাছাড়া তরমুজের মাঝে প্রচুর পরিমাণ আঁশযুক্ত থাকে যা প্রায় ৯২ পার্সেন্ট পানির চাহিদা পূরণ করে। যা পেট ঠান্ডা রাখে হজম করতে সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
শুকনো ফলঃ মধ্যে আছে খেজুর ও কিসমিস আঁশযুক্ত প্রতিটা প্রায় ৭ গ্রাম আঁশ এর চাহিদা পূরণ করে।
টক ফলঃ কমলা ও জাম্বুরা খেলে এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার এবং পেকটিন থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
বাদামঃ একবারে যদি ২০ থেকে ৩০ টি বাদাম খেতে পারেন, তাহলে এর ভিতরে প্রচুর আঁশ রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে।
কলাঃ কলার মধ্যে প্রচুর আঁশ থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তাই আপনার সকালের নাস্তায় পাকা কলা খেতে হবে।
আপেলঃ আপেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আশ থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তাই আপেল খাওয়ার সময় খোসা সহ খাবেন এতে আপনার মল নরম হবে।
ইসবগুলের ভুষিঃ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ হলো ইসবগুলের ভুষি। এর ভিতরও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে পায়খানা কে নরম করে এবং মল ত্যাগ করতে সহজ হয়।
যা প্রচুর পরিমাণ পানি শোষণ করতে পারে, তাই সকাল বেলা একগ্লাস পানির মধ্যে দুই চামচ ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেতে পারেন। তারপরে এক ঘন্টা যাবৎ প্রায় এক লিটারের মতো পানি খাবেন।
কারণ এটা পানি শোষণ করে, বেশি পানি যদি না খান তাহলে পেটের ভিতরে সমস্যা হতে পারে। ঘুমানোর আগে ইসবগুলের ভুষি আর খেতে পারেন এতে কোন সমস্যা হবে না। তবে প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে হবে।
তোকমাঃ নিয়মিত তোকমা খেতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার কারণে এর মাঝে প্রচুর পরিমাণ রয়েছে আঁশ রয়েছে। পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন এক ঘন্টার মত তারপরে এটা খেয়ে নিবেন। এর মধ্যে প্রচুর পুষ্টি রয়েছে চাইলে এর সাথে লেবুর শরবত খেতে পারেন এতে আরও উপকার পাবেন।
টক দইঃ টক দইয়ের মাঝে প্রোবায়োটিক থাকে যা খাদ্য হজম করতে পারে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে। এজন্য খাবার পর দুই থেকে তিন সপ্তাহ খেলে অনেক উপকার খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সারা দিনের প্রচুর পানি খেতে হবে। শরীরে পানির শূন্যতা দেখা দিলেই কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে তাহলেই আপনার এই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
যেসব খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ঃ চিপস, ফাস্টফুড জাতীয় খাবার, অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার, গরুর মাংস, গরুর খাসির মাংস খাওয়া যাবে না। হিমায়ত্ব খাবার ও স্নাক্স জাতীয় খাবার প্রক্রিয়াজাত খাবার তেল যুক্ত ভাজাপোড়া খাবার খাবেন না।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি কোন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় কিন্তু এরপরেও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য খাবারের মাধ্যমে দূর না হয়, তাহলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা হিসেবে সিরাপ খাওয়া যেতে পারে। নিম্নে কয়েকটি সিরাপের নাম বলা হলো,
এ্যাভোলাক সিরাপঃ এই সিরাপ ল্যাক্টোজের থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে। এর মাঝে এক ধরনের জোলাপ থাকে, যা শক্ত কোন জিনিসকে নরম করতে পারে। এই সিরাপ জোলাপ থাকার কারণে শরীরের ভিতর প্রবেশ করে পায়খানা কে নরম করে, এ জন্য কিছুক্ষণের মধ্যেই পায়খানা ক্লিয়ার হয়ে যায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
খাওয়ার নিয়মঃ প্রাপ্তবয়স্ক হলে ১৫ মিলি দিনে দুইবার।
শিশু হলে অর্থাৎ পাঁচ থেকে দশ বছর বয়স এর মধ্যে ১০ মিলি দৈনিক দুইবার খেতে হবে।
শিশু পাঁচ বছরের নিচে ৫ মিলি পরিমাণ দিনে দুইবার খাবেন।
শিশু এক বছরের নিচে তারা ২.৫ মিলি পরিমাণ দিনে দুইবার খাওয়া যাবে।
১০০ মিলির দাম ১৪০ টাকার মতো, ২০০ মিলির দাম ২৫০ টাকা হতে পারে।
মিল্ক অব ম্যাগ্নেশিয়াঃ সাধারণত দুধের তৈরি হয়ে থাকে মূলত আমাদের শরীরে এন্টাসিড হিসাবে কাজ করে। এরমধ্যে জোলাপের উপস্থিতি আছে, যার কারণে সিরাপটি খাইলে ৩০ মিনিট থেকে ৬ ঘন্টার মাঝে পায়খানা শুরু হয়ে যাবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
খাওয়ার নিয়মঃ ৪ চামচ কুসুম গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হবে, এই ওষুধটি খাওয়ার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে, মল অনেক নরম হবে। এজন্য বাজার থেকে ওষুধ টা কিনে আপনি খেতে পারেন। সিরাপ খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খাবেন।
প্রাপ্তবয়স্করা সাধারণত ঘুমানোর আগে বা নাস্তা খাওয়ার আগে ১৫ থেকে ৩০ মিলি পরিমাণ খেতে পারেন।
৭.৫ থেকে ১৫ মিলিগ্রাম ঘুমানোর খাওয়ার আগে দিতে হবে।
তিন থেকে সাত বছর বয়সে যারা তারা পাঁচ থেকে দশ মিলি পরিমাণ। মূল্য ১২০ মিলির দাম ৯৫ টাকার মতো।
কোষ্ঠকাঠিন্য সিরাপ খেলে যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হওয়ার জন্য আমরা যে সিরাপ গুলো খেয়ে থাকি এটার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তেমন একটি নেই। তারপরও যে কোন ওষুধ খাওয়ার একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে খেতে হবে।
তবে কারো কারো হয়তো মাথাব্যথা বমি বমি ভাব তন্দ্রা পেটব্যথা ডায়রিয়ার মত সমস্যাগুলো হতে পারে। তবে এটা আবার ওষুধ খাওয়ার পরে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। তবে যদি এটা দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হয় তাহলে একজন চিকিৎসকের নিকট যাবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ট্যাবলেট এর নাম
খাবারের মাধ্যমে চেষ্টা করবেন দূর করার কিন্তু তারপরেও যদি কাজ না হয়, তাহলে কিছু ট্যাবলেট খেতে পারেন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ট্যাবলেট এর নাম সমূহ,
ডুরালাক্স ট্যাবলেটঃ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য সবচেয়ে ব্যবহৃত হয় এই ওষুধটি এবং দ্রুত পায়খানা ক্লিয়ার করতে পারে। একটি ট্যাবলেট এর দাম ১৫ টাকা মাত্র খাবার খাওয়ার পরপরই এই ওষুধটা খেতে পারেন। তবে গর্ভবতী মহিলারা এটা খাওয়া যাবেনা, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।
তবে এই ওষুধটির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে, বমি বমি ভাব, বমি হতে পারে মাথা ঘুরাতে পারে ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। অতিরিক্ত সেবনের কারণে হতে পারে এজন্য বেশি খাওয়া যাবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ খেয়ে নিলে ভালো হবে।
ইজিফিল ট্যাবলেটঃ এই ওষুধটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং পায়খানা ক্লিয়ার করতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ খেতে হবে, এর কিছু প্রতিক্রিয়াও আছে। এই ওষুধগুলোর দাম ৪৫ থেকে ৫০ টাকার মত।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো ওষুধ খাওয়ার পর ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে মাথা ঘুরাতে পারে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। তাই ওষুধটি চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খাবেন। গর্ভবতীরা এই ওষুধটি খাবেন না।
ল্যাক্সাভিন ট্যাবলেটঃ এটা এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে এবং পায়খানা পরিষ্কার করতে পারে। দাম ২০ টাকার মতো, ওষুধটি ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসার পরামর্শ নিবেন।
এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো মাথা ঘুরাতে পারে বমি বমি ভাব পেটব্যথা ডায়রিয়া দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের নিকট যাবেন।
গ্লিসাপ সাপোজিটরিঃ এই সাপোজিটরি পায়ু পথে দিতে হয়, দেওয়ার ১৫ থেকে এক ঘন্টার মধ্যে পায়খানা চাপ দিতে থাকে। এরপরে পায়খানা পরিষ্কার হয়, যার মূল্য ১০ টাকা হতে পারে।
যার কারণে প্রচুর পরিমাণ কোষ্ঠকাঠিন্য যাদের সমস্যা রয়েছে, দুই তিন দিন যাবত কোন পায়খানা হচ্ছে না। সেই ক্ষেত্রে এই সাপোজিটরি ব্যবহার করতে পারেন। তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে করলে ভালো হয়।
হালকা জ্বালাপোড়া করতে পারে পায়ু পথে হালকা জ্বালাপোড়া করতে পারে। তবে গর্ভবতী মহিলারা এটা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। তাহলে সে ক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে করে নিবেন।
লুবিগুট ৮ এম জি ট্যাবলেটঃ এই ওষুধটি পায়খানা ক্লিয়ার করতে সাহায্য করে যার মূল্য ১৪ টাকা করে। এটা আপনি খেতে পারেন তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ খাবেন। এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘুম ঘুম হতে পারে আর মাথা ঘুরাতে পারে রক্তচাপ কমে যেতে পারে।
তাই উপরোক্ত ওষুধগুলো সাধারণত চিকিৎসকরা দিয়ে থাকে সেই জন্য আজকের এই আর্টিকেলটিতে লেখা হয়েছে। তবে আপনারা অবশ্যই একজন চিকিৎসার পরামর্শক্রমে এই ওষুধগুলো খেতে পারেন। তবে গর্ভবতী মহিলারা এই ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি কোন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, এখন জানবো কোষ্ঠকাঠিন্য কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে দূর করা যায়। চলুন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি এখন কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনি পায়খানা পরিষ্কার করতে পারেন এবং সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। এই কোষ্ঠকাঠিন্য হলে মানুষের অনেক কষ্ট হয় এবং ঘন্টার পর ঘন্টা টয়লেটে বসে থাকতে হয়।
এটি একটি অস্বস্তিকর অবস্থা এবং অনেকের পেটে ব্যথা করে। পেট ফাপা দিয়ে থাকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। পায়খানা শক্ত হওয়ার কারণে অনেকের পায়ু পথে কেটে যায় বা চিরে যায় এর জন্য দেখা যায় এনাল ফিসার, পাইলস বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই আগে থেকেই এটা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং খাদ্য অভ্যাস জীবন যাপনের পরিবর্তন করলেই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। আপনার জীবন যাপন ও সুন্দর হবে তাই নিম্নে কিছু বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো,
প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি এবং তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। তার সাথে আশযুক্ত খাবার খেলে আরো ভালো হবে। শাকসবজি গোটা শস্য বেল পেপে ইত্যাদি জাতীয় খাবার গুলো বেশি খাবেন।
তাছাড়া মানসিক টেনশন সবচাইতে বেশি ক্ষতি করে থাকে এটা থেকে দূরে থাকবেন।
আপনার যদি পায়খানার চাপ দেয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পায়খানা করার চেষ্টা করবেন, চেপে রাখার চেষ্টা করবেন না। এতে একটি অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে, পরবর্তীতে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এজন্য নিয়মিত ব্যায়াম করবে এবং হাঁটাচলা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
ইসবগুলের ভুষি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এর সাথে অ্যালোভেরা শরবত বানিয়ে যদি খেতে পারেন এতে কোষ্ঠকাঠিন্য সেরে যাবে।
তাছাড়া কিছু ওষুধ আছে সেগুলো ক্ষতি করতে পারে বিশেষ করে ব্যাথা নাশক ওষুধ, আয়রন ক্যালসিয়াম ইত্যাদি এইগুলো খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এবং ফাস্টফুড জাতীয় খাবারগুলো থেকেও বিরত থাকার চেষ্টা করবেন।
বিশেষ করে চকলেট ভাজাপোড়া লাল মাংস খাসির মাংস, প্রচুর পরিমাণ চিনিযুক্ত খাবার কাঁচা কলা এই ধরনের খাবার গুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।
উপরোক্ত এই বিষয়গুলো মেনে চলার পরও যদি আপনার এই রোগটি না সারে তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। বিশেষ করে গ্যাস্ট্রোলিভারের ডাক্তার দেখাতে পারেন। তারা পেটের সমস্যা নিয়েই কাজ করে থাকে। তাদের পরামর্শক্রমে যদি আপনি চিকিৎসা নেন তাহলে আশা করি সুস্থ হবেন।
আমাদের শেষ কথা,
পরিশেষে বলা যেতে পারে যে কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই একটি কষ্টদায়ক সমস্যা, এই সমস্যা দূর করার জন্য প্রাকৃতিকগত খাবার খাওয়া সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়এই সম্পর্কে উপরে পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এইগুলো যদি আপনি মেনে চলতে পারেন। তাহলে উপকার হবে, আজকের পোস্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url