ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম কি ও করনীয় সম্পর্কে জানুন

পাতলা পায়খানা হলে অনেকে জানতে চায় যে পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম কি, এক্ষেত্রে প্রথমে আপনি ওষুধ না খেয়ে ওরস্যালাইন খাবেন। চলুন, পাতলা পায়খানা হলে যে ওষুধগুলো খাওয়া যাবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
অনেকে পাতলা পায়খানা হলে দোকান থেকে নিজের ইচ্ছামত বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকে। এতে শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম কি, এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম ও করনীয় সম্পর্কে জানুন

পাতলা পায়খানা কেন হয়

পাতলা পায়খানা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তাই পাতলা পায়খানা কেন হয় এ সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি খাবার, শৌচকার্য, ইত্যাদি সমস্যার কারণে পাতলা পায়খানা হতে পারে। এছাড়া আরও বিভিন্ন কারনে হতে পারে সে সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

শারীরিক সমস্যাঃ শারীরিক সমস্যা বলতে অসুস্থতা যেমন জ্বর পেটব্যথা ডায়াবেটিস বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে পাতলা পায়খানা হতে পারে। এর জন্য হয়তোবা অল্প সময়ের জন্য পাতলা পায়খানা হয়।

অল্প পানি পান করাঃ পানি আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপকার করে থাকে এবং পায়খানা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া দরকার। প্রয়োজনের চেয়ে পানি কম খেলে পাতলা পায়খানা হতে পারে। এছাড়াও পায়খানার পরিবর্তন দেখা দিতে পারে এবং পাতলা পায়খানা বৃদ্ধি করতে পারে।
পুরুষ বা মহিলার হরমোনাল পরিবর্তনঃ যে কয়েকটি হরমোন রয়েছে যেমন প্রোস্টাট গ্লাডিন, প্রোস্টাট গ্লান্ট এ ধরনের হরমোন গুলো পাতলা পায়খানা সৃষ্টি করতে পারে এবং এই হরমোন গুলোর জন্য পাতলা পায়খানা হতে পারে।

তাছাড়া খাবারের সমস্যার কারণে সচরাচর পাতলা পায়খানা বেশি হয়ে থাকে, যেমন ভাজাপোড়া খাবার, অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার, দূষিত নোংরা পানি পান করা, ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার কারণে ফুড পয়েজেনিং এর কারণে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করলে সাধারণত পাতলা পায়খানা হতে পারে। এছাড়া পচা বাসি খাবার খেলেও পাতলা পায়খানা হতে পারে।

আবার অনেকের খাদ্য হজম ঠিকমতো হতে পারে না, এজন্য বদহজমের কারণেও পাতলা পায়খানা হতে পারে। আবার কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিকের কারণে পাতলা পায়খানা হয়। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন পরিণত খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করবেন। তাছাড়া শরীরের সকল প্রকার পুষ্টি অভাব পূরণ করবেন, নিয়মিত খাদ্য তালিকা করে খাবার খাবেন।

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা হলে অনেক অসুবিধার সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ খাওয়ানো যেতে পারে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খেতে হবে, এই ক্ষেত্রে সাধারণত চিকিৎসকরা যে ওষুধগুলো লেখা থাকে তা হল নিম্নে উল্লেখ করা হলো,
  • Zox সিরাপ পাতলা পায়খানার জন্য ভালো কাজ করে থাকে
  • Ciprocin সিরাপ খাওয়াতে পারেন
  • Filmet সিরাপ খাওয়ালে ভালো উপকার পাওয়াতে পারেন
  • Amodis সিরাপ আমাশয় বা পাতলা পায়খানার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে
  • Nitanid সিরাপটি ভালো কাজ করে থাকে
বাচ্চাদের এই উপরোক্ত সিরাপ গুলো পাতলা পায়খানার ক্ষেত্রে খাওয়াতে পারেন। তবে পাতলা পায়খানা হলে প্রথমে খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ানো জরুরী তারপরে যদি না কমতে থাকে, সেই ক্ষেত্রে এই সিরাপ গুলো খাওয়াতে পারেন অথবা অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ খাওয়াবেন।

এবং এই ওষুধগুলো খাওয়ানোর পাশাপাশি অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে তবে এই সিরাপ গুলো খাওয়ানোর পূর্বে ওর স্যালাইন এর সাথে অবশ্যই জিং ট্যাবলেটটা খাওয়াতে পারেন।
এতে বাচ্চার মুখে রুচি ফিরে আসবে এবং পুষ্টির ঘাটতি কম হবে কেন গবেষণায় দেখা গেছে জিন ট্যাবলেটটা খাওয়ালে যে পুষ্টির অভাবটা দূর হয় সেটা কিছুটা হলেও কম হবে তাই বাচ্চাকে অবশ্যই খাবার স্যালাইন এর পাশাপাশি জিন ট্যাবলেট জিন সিরাপ জিন সিরাপ খাওয়াতে পারেন অথবা ট্যাবলেটও খাওয়াতে পারেন সেটা।

আর যদি বাচ্চার বয়স ৬ মাসের হয় সে ক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধ অবশ্যই খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি খাওয়ার স্যালাইন দিতে হবে আর যদি বাচ্চার পাতলা পায়খানা হওয়ার কারণে মারাত্মক সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে। শিশুকে ভর্তি করাতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নিতে হবে এবং ওষুধ খাওয়াতে হবে।

যে কোন প্রকার ওষুধ শিশুকে খাওয়ানোর পরবে অবশ্যই একজন এমবিবিএস ডাক্তারের সকল কিছু মানতে হবে। তাহলেই উপকার পাবেন কেননা মনে রাখবেন আর শিশুর পাতলা পায়খানার জন্য প্রথমেই অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া ঠিক হবে না। প্রথম অবস্থায় অবশ্যই স্যালাইন খাওয়াতে হবে এর পাশাপাশি জিং ট্যাবলেট দিতে হবে।

এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে তাছাড়া ছয় মাসের নিচে যদি হয় সেই ক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধ বেশি বেশি খাওয়াতে হবে তাহলেই তার এই পাতলা পায়খানা থেকে সে ফিরে আসতে পারবে। তাছাড়া যদি মারাত্মক আকার ধারণ করা অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে এবং শিশুকে ভর্তি করতে হবে তাহলেই সে সুস্থ হবে।

পেট মোচড় দিয়ে পায়খানা

অনেকের কিছু খাবার খেলেই দেখা যায় টয়লেটে যেতে হয় অর্থাৎ পেট মোচড় দিয়ে পায়খানা হয়। এ ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

এই ধরনের সমস্যা অনেকেরই হয়ে থাকে পেটে খাবার পরলেই দেখা যায় টয়লেটে যাওয়া লাগতে পারে। একটা বড় ধরনের সমস্যা কারণ অনেকের বাইরের খাবার খেলে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খাবার খেলেই তাদের এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার অনেকে মনে করেন যে খাওয়ার পরে হয়তোবা টয়লেট হতে পারে।

এতে মানুষের কারণেও হতে পারে এছাড়াও ভরা পেটের চাপের কারণে ভালোভাবে এই সমস্যাটা দেখা দিতে পারে। আবার শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে এটা হতে পারে, অনেকের আইবিএস প্রবলেম থাকার কারণে এই ধরনের সমস্যাটা বেশিরভাগ হয়ে থাকে। চিকিৎসকরা সাধারণত বলে থাকে খাওয়ার ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে পর শরীরে বর্জ্য পদার্থ বের হতে পারে।

কিন্তু তার আগেই যদি বের হওয়ার চাপ সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পেটের সমস্যা রয়েছে এবং এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে কিছুটা শরীরের সমস্যা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে খাওয়ার পরে যদি পায়খানা চাপ দিয়ে থাকে তাহলে এটা একটি বড় ধরনের সমস্যা।

অনেকের খাবারে এলার্জি থাকতে পারে, গ্যাসের সমস্যা হতে পারে অথবা আইবিএস এর সমস্যা থাকতে পারে। আগের ডায়াবেটিসের কারণেই এই ধরনের সমস্যা হতে পারে আবার অতিরিক্ত ধূমপান বা মধ্যপ্রাণ বা অ্যালকোহল পান করলে এই ধরনের সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।

এক্ষেত্রে মুক্তির উপায় কিঃ যদি ওষুধ ছাড়া এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান সেই ক্ষেত্রে খাবারের ডায়েট করতে হবে। রাস্তার খাবার খাওয়া ঝাল মুড়ি ফুচকা ফাস্টফুড খাওয়া সিঙ্গারা পরোটা এই ধরনের খাবার গুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।

এছাড়াও দুধ এবং জাতীয় খাবার গুলো খাওয়া যাবে না। তাহলে এই সমস্যাগুলো সমাধান করা যাবে এছাড়া পরিমাণ মতো পানি খেতে হবে এবং রাত্রিতে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। এছাড়াও প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করলে আরো ভালো শরীরের খাদ্য হজম করতে সাহায্য করবে

পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম কি

অনেকেই জানতে চায় পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম কি, যদিও সে ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে যে পাতলা পায়খানা হলে সাধারণত ওষুধ না খেয়ে চেষ্টা করবেন ঘরোয়া পদ্ধতিতে খাবার খাওয়া এবং পাশাপাশি ওরস্যালাইন খাওয়া।
ছবি
এতে পানি সল্পতা দূর করতে সাহায্য করবে এজন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ। তাছাড়া এটা খুবই সহজভাবে পাওয়া যায় এবং নিজেও তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। ওরস্যালাইন খেলে আশা করা যায় পাতলা পায়খানা কমে যাবে।

আর পাতলা পায়খানার ওষুধ হিসেবে যদি আপনি ওরস্যালাইন খেয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার শরীরের ক্লান্ত দূর হবে এবং পাতলা পায়খানা অনেকটা কমে যাবে। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে আপনি ওরস্যালাইন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে।

এক্ষেত্রে ওরস্যালাইন খাওয়ার পাশাপাশি আপনি আরো কিছু ওষুধ খেতে পারেন। তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ খাবেন। পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম গুলা নিম্নে দেওয়া হল,

ট্যাবলেট ইমোটিল ২ মিলিগ্রামঃ তবে যাদের ডায়রিয়া হয়ে থাকে, সেই ক্ষেত্রে ইমোটিন খেলে পেট ব্যথা হতে পারে। কারণ ডায়রিয়া হলে তার পেটের ভিতর থেকে খারাপ মল গুলো বের করে দেওয়াই ভালো হবে।

ট্যাবলেট মেট্রিল 400 mg: এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ তবে একেবারে পানির মতো পাতলা পায়খানা হলে সে ক্ষেত্রে খাওয়া যাবে না। এতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, এই ওষুধটি শুধুমাত্র আমাশয়ের ক্ষেত্রে খাওয়া যেতে পারে। তবে ডোজ মেনে খেতে হবে, দিনে তিনটি পাঁচ দিন পর্যন্ত খেতে হবে, তা না হলে এই আমাশয় সারবে নয়।

ট্যাবলেট ফিলমেট ৪০০এমজিঃ এই ওষুধটি আমাশয় এর ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে উপরোক্ত মেট্রিল এর মতই নিয়ম রয়েছে ওই নিয়মেই খাবেন।
ট্যাবলেট ফ্লাজিল ৪০০এমজি
ওরস্যালাইন

উপরোক্ত এই ওষুধগুলো পাতলা পায়খানার ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে থাকে। তবে ঔষুধগুলো আমাশয় এর ক্ষেত্রে ভালো উপকার করে থাকে। পাতলা পায়খানা হলে শুধুমাত্র ওরস্যালাইন বা খাওয়ার স্যালাইন খেলেই যথেষ্ট এর পাশাপাশি আপনি তরল জাতীয় খাবার খেলে উপকার পাবেন। 

তবে ওষুধগুলো বেশ কার্যকরী হলেও আপনি পাতলা পায়খানা দূর করার জন্য ওর স্যালাইন খাবেন আর প্রাথমিক পর্যায়ে যদি না কমে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে যেতে হবে। আর এরপরে চিকিৎসকরা যে ধরনের ওষুধ দিয়ে থাকে সেটা আপনি খাবেন।

পাতলা পায়খানার ঔষধ অ্যান্টিবায়োটিক

 পাতলা পায়খানা হলে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কি খেতে হবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা।

পায়খানা হলে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে ওরস্যালাইনের মাধ্যমে চেষ্টা করবেন সেরে তোলার। কিন্তু যদি মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পাতলা পায়খানার জন্য এন্টিবায়োটিক দিতে হবে। আর এই জন্য আমাদের অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে , চিকিৎসক অবশ্যই রেজিস্টার এমবিবিএস ডাক্তার হতে হবে।

তাছাড়া এন্টিবায়োটিক দোকান থেকে নিয়ে এসে খাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে অবশ্যই শরীরে ক্ষতি হবে এবং এন্টিবায়োটিকের করে না খেলে তাহলে শরীরের ক্ষতি হবে এবং পরবর্তীতে সাধারণ অসুখের ক্ষেত্রেও অ্যান্টিবায়োটিক কাজ যা হোক ভুলেও এন্টিবায়োটিক নিজে নিজে খাবেন না।
অবশ্যই একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রেসক্রিপশন করে তারপরে এন্টিবায়োটিক খাবেন সাধারণত পাতলা পায়খানার জন্য যে অ্যান্টিবায়োটিক গুলো দিয়ে থাকে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো
  • সিপ্রোফ্লক্সাসিন এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক
  • মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট যা আমরা অনেকেই জানিনা যেটা একটি অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট। প্রকৃতপক্ষে এটাও এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট তা করে খেতে হবে ডোজ মেইনটেইন করে খেতে হবে
  • এজিথ্রোমাইসিন এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক
উপরোক্তই অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট গুলো অবশ্যই একজন রেজিস্টার চিকিৎসক এর পরামর্শ খাবেন।

পাতলা পায়খানা হলে করণীয়

এতক্ষণে আমরা পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম কি, সম্পর্কে জেনেছি এখন পাতলা পায়খানা হলে ওষুধ ছাড়া কিভাবে পাতলা পায়খানা দূর করা যায়। চলুন, এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হলে সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে একাই সেরে যায়। এজন্য এর ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হলে সাধারণত পানি স্বল্পতা দেখা যায়। এজন্য এই পানি স্বল্পতা পূরণ করার জন্য অবশ্যই ওরস্যালাইন খেতে দিতে হবে। তা না হলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।

খাবার স্যালাইন খাবেনঃ পাতলা পায়খানা হলে সাধারণত খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। তবে অনেকেই নিয়ম জানে না এটা আরো শরীরে ক্ষতি হতে পারে। তাই খাবার স্যালাইন খাওয়ার নিয়ম হলো এক প্যাকেট খাবার স্যালাইন আধা লিটার পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে হবে। এছাড়া যদি আপনার ঘরে খাবার স্যালাইন না থাকে সে ক্ষেত্রে ঘরোয়া পদ্ধতি খাবার স্যালাইন তৈরি করতে পারেন।

এজন্য অবশ্যই তৈরি করার নিয়ম জেনে নিবেন। তাছাড়া পানি অথবা ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে, কারণ ডাবের পানি খাওয়ার কারণ হলো, ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে পটাশিয়াম বের হয়ে যায়। তাই ডাবের পানি পটাশিয়াম এর চাহিদা পূরণ করতে পারে। আর ভাতের মাড়ের সাথে সামান্য পরিমাণ লবণও দিতে পারেন এতে অনেকটা উপকার পাবেন।

পানি পান করাঃ পাতলা পায়খানা হলে সাধারণত শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি বের হয়ে যায়। এজন্য খনিজ লবণের ঘাটতি দেখা যায় তাই পানি স্বল্পতার পূরণ করার জন্য অবশ্য প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন করে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খেতে হবে। এই পানি পান করার কারণে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের হয়ে যাবে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া দূর হয়ে যাবে।

জিং ট্যাবলেটঃ পাতলা পায়খানা হলে জিং ট্যাবলেট খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা গবেষণায় দেখা গেছে জিং ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে পাতলা পায়খানা কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে। এছাড়াও জিং ট্যাবলেট খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। কেননা পাতলা পায়খানা হলে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। আর এই পুষ্টিকে ধরে রাখতে পারে জিং ট্যাবলেট।

ফলের রসঃ পাতলা পায়খানা হলে শরীরে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয় এবং অনেক ভিটামিন বের হয়ে যায়। যার কারণে শরীর অনেকটা দুর্বল হয় এজন্য চেষ্টা করবেন পরিমাণ মত ফল খাওয়া। তবে ফলের রস খেতে পারেন পানির স্বল্পতা দূর করতে পারবে এবং শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করবে।

লেবুর পানিঃ লেবুর মধ্যে থাকে এন্টি ইনফ্লেমেটরি যা আমাদের পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে অনেকটাই কার্যকারিতা রয়েছে। পাতলা পায়খানা হলে সাধারণত লেবু পানি খাবেন, লেবু থেকে রস বের করে এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানির মধ্যে এক চামচ চিনি এবং এক চামচ পরিমাণ লবণ মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খাবেন। দ্রুত পাতলা পায়খানা দূর হবে আশা করি ভালো ফলাফল পাবেন।

কলাঃ পাতলা পায়খানা ও ডায়রিয়া দূর করার জন্য আপনি কাঁচা কলা পাকা কলা যে কোন একটি খেতে পারেন। এতে অনেক উপকার হবে, পাকা কলার মধ্যে অল্প একটু টক দই নিয়ে বেলেন্ডার করে খেতে পারেন এতে অনেকটাই উপকার পাওয়া যাবে। তাছাড়া কাঁচা কলার সিদ্ধ করে ভর্তা বানিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এটা দ্রুত পাতলা পায়খানা দূর করতে ভালো কাজ করে থাকে। এছাড়া আপনি কোথাও খেতে পারেন এটাও ভালো উপকার পাওয়া যায়।

সরষে বীজঃ সরষে বীজের মাঝে থাকে এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা পাতলা পায়খানা কমাতে সাহায্য করে থাকে। এক বাটি পানির মধ্যে দুই থেকে চার চামচ সরিষা বীজ নিবেন, এক ঘন্টা যাবত ভিজিয়ে রাখতে হবে এরপর আপনি যদি এটা খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে অনেকটাই দ্রুত কাজ করবে।

পাতলা পায়খানা চলাকালীন কিছু সতর্ক থাকতে হবে তা না হলে পরিবারের আবার অনেকেরই হতে পারে তাহলে,ভালো করে হাত দিয়ে নিতে হবে খাবার খাওয়ার পূর্বে। বেশিক্ষণ ক্ষুধার্ত থাকা যাবে না, খাবার সময় মত খেতে হবে, রাতে বেশি সময় ঘুমাতে হবে, শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে।

ধূমপান করা যাবে না, রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, রাতের খাবারের পরে কিছুক্ষণ হাঁটতে হবে। যাতে খাবারটা হজম হয়, এছাড়াও রোগীকে সম্ভব হলে বিশ্রাম নিতে হবে। তাহলে অতিরিক্ত পাতলা পায়খানার কারণে শরীরটা অনেকটা দুর্বলতা কাটিয়ে উঠবে।

গর্ভাবস্থায় পাতলা পায়খানা হলে করণীয়

একজন গর্ভবতী মা পাতলা পায়খানা হলে তার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পাতলা পায়খানা হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ছবি
মেয়েদের গর্ভাবস্থায় সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তাই যে কোন ধরনের রোগ প্রতিরোধ হলে তাদেরকে প্রতিরোধ করা খুবই কঠিন হয়ে যায়। কারণ এই সময়ে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। এজন্য যদি ভিতরে প্রবেশ করে তাহলে সেই ক্ষেত্রে এটাকে প্রতিরোধ করা খুবই কঠিন হয়ে যায়। কারণ তাদেরকে দেওয়া যায় না এজন্য গর্ভাবস্থায় খুবই সতর্ক থাকতে হবে। 

যেন ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা না হয়, ডায়রিয়া বিভিন্ন কারণেই হতে পারে তবে গর্ব অবস্থায় কিছুটা পরিবর্তনের কারণে হতে পারে। এইজন্য পরিপাক তন্ত্রের কার্যকারিতা কিছুটা কমে যায়। গর্ভবতী মায়েদের নিজের এবং গর্ব অবস্থায় শিশুদের পরিমাণ মতো পুষ্টির অভাব পূরণ করতে হবে এবং খাদ্য অভ্যাস ও পরিবর্তন করতে হবে।

গর্ভধারণের পরে মায়েদের ভিটামিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া দরকার এজন্য আয়রন ক্যালসিয়াম জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে এই ওষুধগুলো খেলে অনেক সময় বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেখান থেকে অনেকের ডায়রিয়া ও হতে পারে গর্ভবতী মায়েদের মানসিক টেনশন থাকে বেশি এজন্য অনেকে ডায়রিয়া হতে পারে।
কারো আবার আইবিএস এর প্রবলেম থাকতে পারে সে ক্ষেত্রেও ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। গর্ভবতী হওয়ার এই ধরনের সমস্যাগুলো যদি বেশি দেখা যেতে পারে, তাহলে অবশ্যই এই জীবানু।

ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দূর করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আগে থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং দূষিত খাবারও পানি থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এই দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে সাধারণত খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলো মাধ্যমে আপনার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ডায়রিয়া হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার কারণ এতে শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এজন্য আপনার শরীরে ভিতরে শিশুটার সমস্যা হতে পারে যারা পর্যাপ্ত পরিমাণ খাওয়ার স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও বেশি বেশি পানি গ্রহণ করতে হবে ছাড়াও যদি এতে কাজ না হয় তাহলে গর্ভবতীর শিরায় স্যালাইন দিতে হবে।

রোগীকে স্বাভাবিক খাবার চালিয়ে যেতে হবে স্বাভাবিক খাবারগুলোই দিতে হবে এবং পাশাপাশি দুধ ও আঁশ জাতীয় খাবার গুলো খাওয়া যাবে না। কেননা এগুলো আরো ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা বাড়িয়ে দিতে পারে। এজন্য আপনি যখন ডায়রিয়া সেরে যাবে।

তখন পারবেন আর যে কোন অবস্থাতে আপনি নিজে নিজেই দোকান থেকে কখনোই ফ্লাজিল, সিপ্রোসিন এই ধরনের ওষুধ খাবেন না শরীরে ক্ষতি হবে এবং বাচ্চাও পড়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে এজন্য যদি খুব বেশি সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হবেন। তাহলেই আপনার এই সমস্যার সমাধান পাবেন।

লেখকের শেষ কথা,

পরিশেষে বলা যায় যে, অনেকে পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম কি? এটা না জেনেই ওষুধ খাওয়া শুরু করে। এদের শরীরে ক্ষতি হতে পারে। তাই প্রথমে ট্যাবলেট না খেয়ে চেষ্টা করবেন ওরস্যালাইন খাওয়ার। তবে একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে ওষুধগুলো খেতে পারেন। এই পোস্টটি থেকে যদি উপকার পান তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪