বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে জানুন

বাচ্চারা এই ড্রাগন ফল খেতে খুবই পছন্দ করে, তাছাড়া বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। এই ফলটির মধ্যে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি আছে। চলুন, ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
ড্রাগন ফল আমাদের বাংলাদেশে বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে। কারণ এটা খেতেও সুস্বাদু এবং অতি সহজেই উৎপাদন করা যায়। তাছাড়া এটা শরীরের জন্য অনেক উপকার। তাই বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃবাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে জানুন

ড্রাগন ফল

ড্রাগন ফল যা পিতায়া নামও বলা হয়, এর বৈজ্ঞানিক নাম হল Hylocereus undatus যা ড্রাগন ফল নামে ই বেশি পরিচিতি লাভ করে। ড্রাগন ফল আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল। এখন আমাদের দেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশে ২০০৭ সালে থাইল্যান্ড, ফ্লোরিডা ও ভিয়েতনাম থেকে কিছু ফলের গাছ নিয়ে আসা হয়। ড্রাগন ফলের গাছ, দেখতে ক্যাকটাস গাছ এর মত ধরে নেওয়া হয়। এই গাছের পাতা নাই ড্রাগন ফলের গাছ ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।

বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট কর্তৃক আবিষ্কার করেছে। ড্রাগন ফলের নতুন একটি জাত যার নাম বারি ড্রাগন ফল ১, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দেখা যায়। এই ফলটি আকারে বড় হয় পাকলে খোসার রং লাল হয়।
শ্বাস গাঢ় গোলাপী হয় এবং অনেক রসালো এই ফলের বীজগুলো ছোট ছোট, কালো রঙের হয়ে থাকে। এই ফলের একটি ওজন একটি ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে।

ড্রাগন ফল তিন ধরনের হয়ে থাকে যেমন,

১। লাল ড্রাগন বা পিটাইয়া এই ধরনের হতে পারে, এর খোসার রং লাল হয় ও শাঁস গুলো সাদা হয়ে থাকে। এই প্রজাতির ফলে বেশি দেখা যায়।

২। কোস্টারিকা ড্রাগন ফল দেখা যায় এর খোসা ও শ্বাস দুটোই লাল হয়।

৩। হলুদ রোগের রোগের হলুদ রঙের ড্রাগন ফল দেখা যায়। এই ফলের খোসা হলুদ রঙের হয় ও শ্বাস সাদা রংয়ের দেখা যায়।

বাংলাদেশ উদ্ভাবিত ড্রাগন ফলের জাত তৈরি করেছে তা হল; ১। বারি ড্রাগন ফল ১, বাউ ড্রাগন ফল ১, বাউ ড্রাগন ফল ২, বাউ ড্রাগন ফল ৩

বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা

বাচ্চারা এই ফলটি খেতে পছন্দ করে, তাছাড়া বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

ড্রাগন ফলের মধ্যে ভিটামিন সি রয়েছে। যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারবে এবং ঠান্ডা কাশি থেকে রক্ষা করতে পারবে। তাছাড়া শিশুর যেকোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারবে।

ড্রাগন ফলের মধ্যে ফাইবার রয়েছে যা একটি শিশুর অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারবে। বিশেষ করে পেটের সমস্যা যদি হয়ে থাকে, তাহলে সেটা দূর হবে এবং আপনার শিশুর যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। এক্ষেত্রে ড্রাগন ফল খাওয়াতে পারেন, তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।

ড্রাগন ফলের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে শিশুর রক্তের কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে, তাছাড়া শিশুর শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যালের প্রভাব থেকে রক্ষা করতে পারবে।

তবে এই ড্রাগন ফল শিশুকে অতিরিক্ত খাওয়ানো যাবে না, এতে পেটের সমস্যা হতে পারে। পেট খারাপ হতে পারে ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সঠিক পরিমাণে শিশুকে নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ালে উপকার পাওয়া যাবে।

শিশুদের ড্রাগন ফল খাওয়ানোর ক্ষেত্রে বয়স উপর নির্ভর করে, চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

১ থেকে ৩ বছরের শিশুর ক্ষেত্রে প্রতিদিন আধা কাপ ড্রাগন ফলের জুস খাওয়াতে পারেন।

৪ থেকে ৮ বছরের শিশুর ক্ষেত্রে এক কাপ পরিমাণ ড্রাগন ফল খাওয়াতে পারবেন।

৯ থেকে ১৩ বছরের শিশুর ক্ষেত্রে এক থেকে দুই কাপ পরিমাণ ড্রাগন ফল খাওয়ানো যেতে পারে

উপরোক্ত এই নিয়মে যদি আপনার বাচ্চাকে ড্রাগন ফল খাওয়ান, তাহলে এতে পুষ্টি পাবে এবং অনেক উপকার হবে। তবে অত্যাধিক পরিমাণ খাওয়ানো যাবে না, এতে শিশুর পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই উপরোক্ত নিয়মে অনুযায়ী আপনার বাচ্চাকে ড্রাগন ফল খাওয়াতে পারেন।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম

ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। এখন জানবো ড্রাগন ফল কিভাবে খেতে হয়, চলুনের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ড্রাগন ফলটা প্রথমে চামচ দিয়ে কেটে নিবেন এতে দুই ভাগ হয়ে গেলে এর ভিতর যে নরম অংশ রয়েছে। এরপরে যদি পাকা হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে খোসাটা ছাড়িয়ে নিবেন। তারপর ড্রাগন ফলটা খেতে পারবেন, সরাসরি চামচ দিয়ে তুলে মুখে পুরাটা খেতে পারবেন। এত মজা বেশি লাগবে সুস্বাদু একটি মিষ্টি ফল।

আবার আপেলের মত কেটেও আপনি খেতে পারবেন এবং বিশেষ করে অনেক সুস্বাদু ঠান্ডা হয়ে থাকে। ড্রাগন ফল ফ্রিজে রেখে তারপর কেটে খেতে পারেন, এটা দারুন স্বাদ লাগবে ড্রাগন ফল এর উপর অংশটা খোসাটা যে রয়েছে। সেটা খাওয়া যাবে না এছাড়া নিচের অংশ সুন্দর করে খাওয়া যেতে পারে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার সময় খাদ্য খেলে ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে আপনার শরীরের পরিপাকতন্ত্রের এনজাইম দ্রুত কাজ করতে পারে। তাছাড়া ড্রাগন ফল আপনি খাওয়ার আগে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলবেন।

কারণ ড্রাগন ফল খাওয়ার পরে অন্য কোন খাবার খাওয়ার কারণে, পাকস্থলীতে জমা হতে পারে। এতে আপনার শরীরে ক্ষতিকর এসিড সৃষ্টি হবে যার কারণে আপনার শরীরে ক্ষতি হতে পারে। তাই ড্রাগন ফল খাওয়ার আগে বা পরে কমপক্ষে ৩০ মিনিট মধ্যে কোন খাবার না খাওয়াই ভালো।

আপনি যদি খাওয়া ড্রাগন ফলটা খাওয়ার সাথে সাথে অন্য কোন খাবার খান, সেক্ষেত্রে পেট ব্যাথা হতে পারে এমনকি পাতলা পায়খানা বা পেটের সমস্যা দেয়। হজম সমস্যা দেখা দিতে পারেন, এজন্য খাওয়ার পরপরই এই ড্রাগন ফলটি খাবেন না। তাছাড়া যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা ড্রাগন ফল খাবেন। তবে খাবার ৩০ মিনিট আগে অথবা পরে খেতে পারেন তাহলে শরীরে অনেক উপকার পাবেন।

ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ড্রাগন ফল শরীরের জন্য ভাল কাজ করে থাকে, তাই ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে ড্রাগন ফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ছবি
ড্রাগন ফল ক্যাকটাস ফলের মত দেখতে। এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। এর মধ্যে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা আমাদের হজম ক্ষেত্রে ভালো উপকার করে থাকে।

রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, এছাড়াও ক্যান্সারের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এজন্য বাংলাদেশের ড্রাগন ফলের চাহিদা অনেক রয়েছে এবং বর্তমানে অনেকে চাষাবাদ উৎপাদন করছে।

এই ফলকে দুই ভাগে কাটবেন তারপর চামুচ দিয়ে ভিতরের শাঁস তুলে খেতে পারেন। এছাড়া মিল্কশেক বানিয়ে খেতে পারবেন। এছাড়া আরও বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। চলুন, এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ড্রাগন ফলের মধ্যে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ থাকে, এর মধ্যে ক্যালোরি কম থাকে এবং যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার ও থাকে। একটা ড্রাগণ ফ্রুট মধ্যে ক্যালোরি থাকে ১৩৬, প্রোটিন থাকে ৩ গ্রাম, ফ্যাটের পরিমাণ শুন্য ফাইবারের পরিমাণ ৭ গ্রাম আয়রনের পরিমাণ ৮ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম ১৮ শতাংশ ভিটামিন সি ৯ শতাংশ ভিটামিন ই ৪ শতাংশ রয়েছে।

এই ফলের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, ফ্লাভোনয়েড ফ্যানোলিক এসিড, বিটাসায়ানিন থাকে। এই পদার্থ গুলি আপনার শরীরের কোষগুলিকে ফ্রি রেডিক্যাল এর হাত থেকে প্রতিহত করতে পারে। এছাড়াও এটা ক্যান্সার এবং অকাল বার্ধক্য সমস্যা থেকে দূর করে।

ডায়াবেটিসের যাদের সমস্যা রয়েছে তারা ড্রাগন ফল খেতে পারেন। এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে কারণ এর মাঝে ফাইবার থাকে। যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, নিয়মিত খেলে আপনার রক্তের শর্করা ভারসাম্যতা নিয়ন্ত্রণ করবে।

এই ফলটির মধ্যে ভিটামিন সি থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। তাছাড়া ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারে। কারণ এর মধ্যে ক্যান্সার রোগী ক্যান্সার বিরোধী উপাদান রয়েছে। বিশেষ কোলন ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে পারে, এছাড়াও এটা দীর্ঘস্থায় অ্যালজাইমার ডায়াবেটিস পারকিনসন এই ধরনের রোগ থেকেও রক্ষা করতে পারে।

যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে, তারাই ফলটি খেতে পারেন। এছাড়াও কারণ এর মধ্যে ফাইবার থাকে যা খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এছাড়াও শরীরে ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে, তাছাড়া পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখতে পারে।

এই ড্রাগন ফলটি হার্টের জন্য উপকার করে থাকে, এর মধ্যে কালো বীজ থাকে সেগুলো ওমেগা ৩ এবং ওমেগা ৩, ফ্যাটি এসিড থাকার কারণে হার্টের জন্য ভালো কাজ করে এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ক্ষেত্রে উপকার করে থাকে। তাই ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখবে। এছাড়াও হার্ট ভালো রাখার পাশাপাশি রক্তচাপ ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।

অস্বাস্থ্যকর জীবন যাত্রা চাপ দূষণ, খারাপ অভ্যাসের কারণে অকাল বার্ধক্যের সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য আপনাকে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে। আর ড্রাগন ফলের মধ্যে এই ভিটামিন সি রয়েছে। তাই আপনি আপনার ত্বককে উজ্জ্বল এবং ধরে রাখেন। তিনি জুস খেতে পারেন এতে চুলের উপকারও করে থাকে।

হাড়ের উপকারের জন্য ড্রাগন ফল উপকার করে থাকে প্রায় ১৮% ম্যাগনেসিয়াম আছে এবং হাড়কে শক্তিশালী করতে পারে। হারের সুস্থতা বজায় রাখতে পারে ফলে জয়েন্টের ব্যথা ফ্যাকচার এবং ভেঙ্গে যাওয়া সমস্যা থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে তারা ড্রাগন ফল খেতে পারেন। এরমধ্যে বিটা ক্যারোটিন থাকে এজন্য ফল চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে পারে। যেমন চোখের পানি পড়া ম্যাকুলার, ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে পারে।

ড্রাগন ফলের পুষ্টি উপাদান

এই ফলটির মধ্যে প্রচুর পুষ্টি রয়েছে, তাই ড্রাগন ফলের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

আপনার শরীরে পুষ্টির প্রয়োজনে ড্রাগন ফল খেতে পারেন, এ ছাড়াও এর পাশাপাশি অন্য ধরনের ফল ও শাকসবজি খেতে পারেন। এই ফলটির মধ্যে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে ভরপুর। তাই আপনি এই ফলটি খেতে পারেন, গ্রীষ্মকালীয় এই ফলটি সাদা, লাল মাংস যুক্ত হয়ে থাকে। এছাড়া আরো বিভিন্ন জাতের রয়েছে এর মধ্যে প্রচুর পুষ্টি থাকে। এই ফলটি পরিপক্ক তার উপরে নির্ভর করে পুষ্টির মান।

১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলের মধ্যে কি পরিমান পুষ্টি উপস্থিত থাকে তা বর্ণনা করা হলো; ১০০ গ্রাম সাদা ড্রাগন ফলের মধ্যে ৬০ গ্রাম ক্যালোরি, ১৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ১০ গ্রাম, চিনি দুই গ্রাম ফাইবার ২ গ্রাম প্রোটিন ১ গ্রাম চর্বি থাকে।

১০০ গ্রাম লাল ড্রাগন ফলের মধ্যে ৫০ গ্রাম ক্যালোরি ১০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ২ গ্রাম ফাইবার ১২ গ্রাম চিনি দুই গ্রাম প্রোটিন এবং ১ গ্রাম এর কম চর্বি থাকে।
ড্রাগন ফলের মধ্যে থাকে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ১ ভিটামিন বি ২ এবং আয়রন সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকে।

এছাড়াও ভিটামিন বি ৩, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং খনিজ পদার্থ থাকে। তাছাড়া এর মধ্যে আন্টি এক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিক্যাল নামের ক্ষতিকারক পদার্থ কোষ থেকে রক্ষা করতে পারে।

এছাড়াও এর মধ্যে পলিফেনাল থাকার কারণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্ট্রি ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকে। যার কারণে দীর্ঘস্থায়ী রোগ গুলো কমাতে সাহায্য করে এবং সুস্থতা বজায় রাখে। এছাড়াও পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এর মত ইলেকট্রোলাইট থাকার কারণে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে এবং পেশির কার্যকারিতা বজায় রাখতে পারে।

এই ফলটির মধ্যে ক্যালরি খুবই কম থাকে, যার কারণে এটা গ্রহণ করলে তেমন একটা শরীরের ক্ষতি হয় না। এছাড়াও এই ফলটিকে প্রি-বায়োটিক ফল হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। কারণ এর মধ্যে ফাইবার থাকে যা প্রিবায়োটিক হিসাবে কাজ করতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে পারে।

যার কারণে হজমের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখে, তাই আপনি নিয়মিত ভাবে খেলে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার করবে।

ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক

ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। এখন জানবো এই ফলটি খেলে কি ক্ষতি হয়, নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ড্রাগন ফল খেলে আপনার শরীরে পুষ্টি হবে, এছাড়াও নিয়মিত খাওয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। তবে এটা যদি কেউ নিয়ম মাফিক ছাড়া খেয়ে ফেলে, তাহলে সে ক্ষেত্রে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। সে সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা যায়।

ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে এলার্জির মত সমস্যা হতে পারে, এছাড়াও কিছু ড্রাগন ফল আছে যেগুলোতে এলার্জি বৃদ্ধি পাওয়ার মতো উপাদান রয়েছে। আবার কিছু ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ফলটি খাওয়ার কারণে অনেকের চোখ, মুখ ফুলে যায়। চুলকানি ফুসকুড়ি অনেকের শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এই ফলটি খাওয়ার কারণে শরীরের শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমাদের শরীরের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এছাড়াও অধিক মাত্রায় যদি ড্রাগন ফল খাওয়া হয়, তাহলে কমে যায়। আর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো উপকার হলেও যদি তারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে তাহলে কোন সমস্যা হবে না।

তবে অতিরিক্ত যদি এই ড্রাগন ফল খেয়ে ফেলে তাহলে পেটের সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে পেট ফুলে যায়, হজমের সমস্যা হয় গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এটার উপকার পেতে হলে আপনাকে পরিমিতভাবে খেতে হবে।

ড্রাগন ফল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্ষতি করতে পারে, যদি আপনি ওষুধের সাথে এটা খেয়ে থাকেন বিশেষ করে ডায়াবেটিস এবং কিডনি রোগীদের বা লিভারের সমস্যা এই ধরনের রোগীরা যদি ওষুধ নিয়মিতভাবে খান।

তাদের ক্ষেত্রে এই ড্রাগন ফল না খাওয়াই ভালো, তবে যদি খেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে খাবেন। এছাড়াও ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে অনেকের প্রসব এর রং পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নাই। কারণ এই ড্রাগন ফল খাওয়া বন্ধ করে দিলেই আবার ঠিক হয়ে যাবে।

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা

গর্ভবতী মায়েদের জন্য ফল খাওয়া খুবই জরুরি, তাই গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা রয়েছে। তাই ড্রাগন ফল খেলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি পাওয়া যায়। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
ছবি
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল এটা ভ্রনের জন্য উপকার করে থাকে, বিশেষ করে পুষ্টি বৃদ্ধি পেতে পারেন। এর মধ্যে আছে ভিটামিন খনিজ আন্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে, রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বর্তমান বাংলাদেশের ড্রাগন ফল এর চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেকেই পছন্দ করে থাকে।

বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েরা এটা পছন্দ করে, কারণ এই ফলটি দেখতে লাল রঙের হয়ে থাকে, কাটার পরে দেখতে খুবই সুন্দর লাগে এবং গর্ভবতী মায়েরা এটা বেশি পছন্দ করে থাকে। তাছাড়া অনেকেই আবার মিল্কশেক বানিয়ে খেতে পারে, এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে।

গর্ভবতী নারীরা শরীরের পুষ্টি জন্য বিভিন্ন ধরনের ফল খেয়ে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম ফল হলো ড্রাগন ফল। কারণে এই সময় গর্ভবতী মায়েদের রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে, এজন্য আয়রনের প্রয়োজন যা এই ফলের মধ্যে আছে এবং ভিটামিন বি খুবই দরকার।

এই ফলটির মধ্যে পাওয়া যায় কেননা ভিটামিন বি ফলেট শিশুর জন্মগত ত্রুটি থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় শক্তি যোগাতে সাহায্য করে, তাছাড়া এর মধ্যে ক্যালসিয়াম থাকে, যা ভ্রনের হাড় গঠন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা নারীদের সন্তান এর ক্ষেত্রে ভালো উপকার করে থাকে।
একজন গর্ভবতী মায়ের সাধারণত হজম শক্তি কম থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। আর এই জন্য ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। যা এই ড্রাগন ফলের মধ্যে থাকে এছাড়া ওই ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে ভালো ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন করতে পারে এবং হজম প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করতে পারে এবং পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখে।

গর্ভবতী মায়েদের এই সময়ে সাধারণত ডায়াবেটিসের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য ড্রাগন ফল খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে, কারণ এর মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এজন্য এই ফলটি নিয়মিত যদি খায়, তাহলে রক্তের শর্করার ভারসাম্যতা বজায় রাখতে পারবে।

ড্রাগন ফলের মধ্যে ভিটামিন সি থাকার কারণে গর্ভবতীদের জন্য অনেক উপকার হয়ে থাকে। বিশেষ করে এই সময় তাদের মুখে ঘা হয়ে থাকে, তারপরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এজন্য ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে হবে। তাই আপনি নিয়মিতভাবে ড্রাগন ফল খেতে পারেন।

গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে অনেকের হার্টের সমস্যা থাকতে পারে অথবা ওজন নিয়ে সমস্যা থাকতে পারে। তাছাড়া উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনি নিয়মিতভাবে ড্রাগন ফল খেতে পারেন।

কারণ এর মধ্যে থাকে ওমেগা ৩, ওমেগা ৯ ফ্যাটি এসিড যা আপনার হার্টের সমস্যা কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং পারকিনস রোগ এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।

ড্রাগন ফলের মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম যা প্রায় ১৮% মত থাকে। আর এই ম্যাগনেসিয়াম হাড়কে শক্তিশালী করতে পারে এবং হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখতে পারে। এছাড়াও অনেকের জয়েন্টে ব্যথা করে এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা থাকতে পারে। যা ম্যাগনেসিয়ামের কারণে দূর হতে পারে, তাই আপনি নিয়মিত ভাবে এই ফলটি খেতে পারেন।

লেখকের শেষ কথা

পরিশেষে বলা যেতে পারে যে ড্রাগন ফল একটি সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় বিশেষ করে বাচ্চাদের কাছে। কারণ এটা খুবই নরম এবং মিষ্টি জাতীয় ফল বাচ্চারা খেতে পছন্দ করে। তাই বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। তাই নিয়মিতভাবে এই ফলটি খাওয়া যেতে পারে। যদি পোস্টটি ভাল লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪