কালোজিরা খেলে কি উপকার হয় ও নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন

অনেকে জানতে চায় যে, কালোজিরা খেলে কি উপকার হয়? আসলে কালোজিরা অনেক উপকার করে থাকে। তবে নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। চলুন, কালোজিরার উপকার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
কালোজিরাকে এক ধরনের ঔষধ বলা হয়ে থাকে। যা প্রাচীন কাল থেকেই এই কালোজিরা বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় এবং অনেক উপকার রয়েছে। তাই কালোজিরা খেলে কি উপকার হয়? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃকালোজিরা খেলে কি উপকার হয় ও নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন

ওজন কমাতে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

কালোজিরা মধ্যে ঔষধি গুনাগুন রয়েছে, তাই এর উপকারিতা অনেক। তবে ওজন কমাতে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে, তাহলেই উপকার পাবেন। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

কালোজিরা সর্দি কাশি এর ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে। অনেকে হয়তো জানেন, তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক। কালোজিরা কিভাবে খেলে আপনার শরীরে উপকার মিলবে।

কয়েকটি কালোজিরা দানা নিয়মিত খেতে পারবেন, এতে মেদ ঝরে যায়। এতে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে। কারণ কালোজিরার মধ্যে আছে এক ধরনের ফাইবার বা আঁশ যা অতিরিক্ত ওজন কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন খাবারের সাথে আপনি একটু কালিজিরা মিক্সড করেও খেতে পারবেন। এতে অনেক স্বাদ পাবেন এবং পুষ্টিগুণ পাবেন।

হালকা গরম পানির মধ্যে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন, এরপর হালকা গরম পানির সাথে কয়েকটি কালোজিরা বীজ মিক্সড করেও খেতে পারবেন এবং শেষে এক চামচ মধু খেতে পারবেন, তাহলে ভালো উপকার পাবেন।
কালোজিরা খাওয়ার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। তার মধ্যে অন্যতম হলো হালকা গরম পানি মধ্যে লেবুর রস মিশানোর পর কালোজিরার গুড়া দিতে পারেন।

লেবুর পানির মধ্যে যুক্ত করতে পারবেন, তবে এক্ষেত্রে বেশি কালোজিরা দেওয়া যাবে না। এতে হজমের সমস্যা হতে পারে, এই পানির মধ্যে এক চামচ মধু মিশিয়ে দিতে পারলে আরো ভালো উপকার পাবেন। এতে মেদ কমে যাবে।

কিছু কালোজিরা একটু বাটির মধ্যে রেখে দিবেন, তারপর লেবুর রস দিবেন কালোজিরা ভিজে গেলে রোদের শুকিয়ে নিতে পারেন। দিনে দুইবার ৮ থেকে ১০টি করে কালোজিরা খাবেন চর্বি কমে যাবে।

যখন কোন সবজি খাবেন বা চাটনি বা সালাদ তৈরি করবেন সেই ক্ষেত্রে পুষ্টিগুণের কথা মাথায় রেখে কয়েকটি কালিজিরা দিতে পারেন। এভাবে প্রাকৃতিক উপায় আপনি ওজন কমাতে পারবেন। তাছাড়া কালোজিরা আরো অনেক বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপকার করে থাকে।

তবে অতিরিক্ত কালোজিরা খাওয়া যাবে না, এতে সমস্যা হতে পারে। আপনার যদি কোন জটিল রোগ না থাকে সে ক্ষেত্রে কালিজিরা খেতে পারবেন। তবে যদি কোন বড় ধরনের রোগ থাকে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খাবেন।

কালোজিরা খেলে কি উপকার হয়

কালোজিরার মধ্যে বিভিন্ন ঔষধি গুণ ও উপকারিতা রয়েছে। তাই কালোজিরা খেলে কি উপকার হয়? এ সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করার জন্য কালোজিরা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে থাইমোকুইনন, নাইজেলিডিন, আলফা হেডারিন নামের বায়োএকটিভ যৌগ গুলো শরীরে ভালো কাজ করে থাকে। 

তাছাড়া এই কালোজিরার মধ্যে ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইবার, আয়রন, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে মানব শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। চলুন, এটা কি উপকার করে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কালোজিরার মধ্যে উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে যে কালোজিরা খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমাতে দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এই কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, কারণ এর মধ্যে যে হাই অ্যান্টি এক্সিডেন্ট থাকে। যা আপনার ক্যান্সারের কোষগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারে।

বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে, এছাড়াও এই ব্যাকটেরিয়া দমন করতে সাহায্য করে।

কালোজিরার মধ্যে সক্রিয় কিছু উপাদান থাকে, যা আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করবে।

নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ার কারণে যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে, তাদের লিভারের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।

যাদের রক্তের শর্করা পরিমাণ কমাতে চান তারা সেই ক্ষেত্রে কালোজিরা খেতে পারেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের রোগী তাদের রক্তের শর্করা কমাতে হবে বা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিয়মিত খেতে পারেন।

কালোজিরার মধ্যে এন্টি ইনফ্লেমেটরি থাকার কারণে নাক বন্ধ হয়ে গেলে অস্বস্তিকর অবস্থা হয় সে ক্ষেত্রে এটি ইনহেলার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে এলার্জির সমস্যা থেকে দূর করবে এবং হাচি কাশি দেওয়ার কারণে আপনার নাক বন্ধ হওয়া সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

কালোজিরার মধ্যে ক্যালসিয়াম থাকে যা আপনার শরীরের হাড় শক্ত করতে পারবে এবং হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করবে, বিশেষ করে গর্ভবতীদের খুবই উপকার হবে।

তাছাড়া যদি আপনার সর্দি-কাশি হয়ে থাকে, সেই ক্ষেত্রে উপকার পেতে আপনি কালোজিরার সাথে তুলসী পাতার রস এবং সামান্য মধু মিক্সড করে যদি খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার ঠান্ডা বা সর্দি কাশি দূর হয়ে যাবে, সাথে শরীরে ব্যথা, জ্বর ইত্যাদি কমে যাবে।

মধু ও কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম

ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি কালোজিরা খেলে কি উপকার হয়? সম্পর্কে জেনেছি। এখন জানবো মধু ও কালোজিরা কিভাবে খেতে হয় এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ছবি
হাজার বছর ধরেই বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে মধু এবং কালোজিরা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা অনেকেই জানে তাই মধুর অনেক স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে। তার সাথে কালোজিরা যদি মিক্সড করে খাওয়া যায়, তাহলে আরো ভালো উপকার করা থাকে।

কালোজিরা তেলের ক্ষেত্রে সবচাইতে ভালো উপকার করে থাকে, এই ক্ষেত্রে তার অন্য যদি ধরে রাখতে চান তাহলে কালোজিরা খেতে পারেন। তাছাড়া আরো বিভিন্ন কাজ করে থাকে এর মধ্যে প্রায় ২১ শতাংশ আমিষ ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল ও চর্বি থাকার কারণে আপনার শরীর অনেক উপকার পাবেন।

প্রায় দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষ খাবারের সাথে কালোজিরা ব্যবহার করে আসছে। কালোজিরা থেকে অনেকে তেল তৈরি করে।

যা আমাদের শরীরে অনেক উপকার হয়। মধু এবং কালোজিরা খেলে যে উপকার গুলো পাওয়া যায়। সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে, নিয়মিতভাবে কালোজিরা খেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ভালো থাকে।

এতে বিভিন্ন জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সকালবেলা কালোজিরা সাথে আপনি মধু মিক্সড করেও খেলে আপনার শরীরে অনেক উপকার পাবেন।

কালোজিরা ও মধু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে ভালো কাজ করে, কালোজিরা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। যার কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে, তাই আপনি কালোজিরা মধু একসাথে মিক্সড করে খেতে পারেন।

কালোজিরা নিম্ন রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে পারে এবং স্বাভাবিক রক্তচাপের মধ্যে বা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসে। পাশাপাশি দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে নিয়ে আসে। এছাড়াও শরীরের রক্তচাপের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। তাই কালোজিরার সাথে আপনি মধু মিক্সড করে খেলে আপনার শরীরে অনেক উপকার পাবেন।

নিয়মিতভাবে কালোজিরা মধু খাওয়ার কারণে নিয়ন্ত্রণ থাকবে বা ঠিকমতো কাজ করবে। এর কারণে আপনার মস্তিষ্ক রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে, যা আমাদের স্মৃতিশক্তি ভালো রাখার জন্য মধু ও কালোজিরা খাওয়া প্রয়োজন।

হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত যাদের সমস্যা রয়েছে তারা কালোজিরা খেতে পারেন। এর সাথে যদি মধু খাওয়া যায় তাহলে আরো উপকার পাবেন। তবে কালোজিরা প্রতিদিন আপনি ভর্তা করে খেলে আপনার শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা অনেকটাই দূর হবে। তাছাড়া কালোজিরা ও মধু একসাথে খেলেও আপনার অনেক উপকার পাবেন।

অনেকের পিঠে ব্যথা করে এতে যদি আপনি কালোজিরা তেল মালিশ করতে পারেন। এটা আপনার পিঠের ব্যথা দূর হয়ে যাবে, তাছাড়া কালোজিরা ও মধু যদি খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রেও আপনার এই পিঠের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করবে।

শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য কালোজিরা ভালো উপকার করে থাকে। নিয়মিতভাবে কালোজিরার সাথে যদি মধু মিক্সড করে খাওয়াতে পারেন। তাহলে আপনার শিশুর দৈহিক ও মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং স্মৃতি ভালো রাখতে পারবে।

প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়

কালোজিরা খেলে উপকার আছে তবে অতিরিক্ত খেলে ক্ষতি হতে পারে। তাই প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়? এ সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

প্রতিদিন যদি আপনি অতিরিক্ত কালোজিরা খান, সেক্ষেত্রে আপনার ত্বক জ্বালাপোড়া করতে পারে। পাকস্থলীর সংকোচন বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথা অস্বস্তি পেট টানটান ভাব।

ডায়রিয়া বুক জ্বালাপোড়া, বমি বমি ভাব গর্ভবতী মহিলার অকাল গর্ভপাতের সমস্যা হতে পারে। যখন কেউ তিন মাস বা তার বেশি সময় অতিরিক্ত কালোজিরা খায় তারা এই সমস্যায় ভুগতে পারে। চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ত্বকে জ্বালাপোড়াঃ যাদের আগে থেকেই এলার্জির সমস্যা রয়েছে, তারা যদি বেশি পরিমাণ কালোজিরা খায়। সে ক্ষেত্রে এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে, এতে অল্প পরিমাণ আপনি ব্যবহার করতে পারেন, অতিরিক্ত ব্যবহার করা যাবে না।

বুকে জ্বালাপোড়াঃ অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে অনেকের পেটে অস্বস্তি অনুভব করতে পারে। যার কারণে বুকে জ্বালাপোড়া হতে পারে, যাদের গ্যাস্ট্রো ইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ আছে তারা কালোজিরা খাওয়ার পরে বুকে জ্বালাপোড়া করতে পারে। তবে কিছু লোকের এলার্জি থাকার কারনেও এই বুকের জ্বালাপোড়া সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কিডনিতে সমস্যাঃ কালোজিরা ভেজে যদি না খান, কাঁচা অবস্থায় খেয়ে থাকেন। সেই ক্ষেত্রে কিডনিতের সমস্যা হতে পারে, এজন্য পরিমাণমতো নিয়ে ভেজে তারপরে খাবেন। এছাড়া শরীরের বাহ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি এটা কিডনিকে ক্ষতি করতে পারে।

ডায়রিয়ার সমস্যাঃ দিনে বা রাত্রিতে খাওয়ার পরে যদি কালোজিরা পানি খেতে পারেন এবং অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন। সেই ক্ষেত্রে অথবা অনেকে যদি তিন মাসের বেশি এটা খায়। তাহলে ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে। তাই অল্প পরিমাণে নিয়মিতভাবে খেতে পারবেন, বেশি করে খাওয়া যাবে না এতে ক্ষতি হবে।

অকাল গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনাঃ সকালে বেশি করে কালোজিরা আর মধু মিক্সড করে যদি খাওয়ানো হয়। গর্ভবতী মহিলা খেয়ে থাকে তাহলে তার অকাল গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হতে পারে।

পেট ব্যথাঃ কালোজিরা বেশি পরিমাণে খাওয়ার কারণে বিশেষ করে কাঁচা কালোজিরা অনেকে চিবিয়ে খেতে পছন্দ করে। এই ক্ষেত্রে এভাবে খাওয়ার কারণে পেটের ব্যথা পেটের ফোলা ভাব, পেটে টান টান অনুভব করা। এছাড়াও পাকস্থলীর সংকোচনের মত সমস্যা, এছাড়াও পাকস্থলীর সমস্যা হতে পারে।

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস

কালোজিরা সম্পর্কে আমাদের নবী করীম সাঃ হাদীসে অনেক জায়গায় বর্ণনা করেছেন। তাই কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

প্রাচীনকাল থেকেই কালোজিরা মানব দেহের বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে আসছে। এজন্যই কালোজিরা কে একটি মসলা হিসেবে ব্যবহার শুরু করা হয় না। এটা আয়ুর্বেদিক কবিরাজ চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

কালোজিরা বীজ থেকে তেল তৈরি হয়ে থাকে। যা আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে। এর মধ্যে আছে ফসফেট, আয়রন এবং ফসফরাস তাছাড়া কালোজিরা বিভিন্ন রোগের থেকে রক্ষা করতে পারে। তাই এই কালোজিরাটির বিষয়ে রাসূল সাঃ প্রশংসা করেছেন।

তিনি বলেন রাসূলু সাঃ বলেছেন, কালোজিরা কে সকল প্রকার রোগের মহা ঔষধ হিসেবে বলেছেন। শুধুমাত্র আসসাম ব্যতীত। এক্ষেত্রে একজন সাহাবী বলেছিলেন আসাম মানে কি? তখন তিনি বললেন মৃত্যু। মুসলিম শরীফ

তাই যেকোন রোগের ক্ষেত্রে নিরাপদ হিসেবে এই কালোজিরা ব্যবহার করা যেতে পারে বা বিভিন্ন চিকিৎসক কবিরাজ গন এই কালোজিরা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
আয়ুর্বেদিক ইউনানী কবিরাজি চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই কালোজিরা ব্যবহার করা হয়। তাই এই সব চিকিৎসার ক্ষেত্রে গবেষণা করে দেখা গেছে তাদের কাছে যে সকল রোগ নিয়ে আসেন। সেই সকল রোগের ক্ষেত্রে এর সঠিক ব্যবহার যদি করা যায়।

তাহলে পরবর্তীতে রোগীর সুস্থ হয়ে যায় কারণ কালোজিরা ব্যবহার একাক রোগের এক এক রকমের হয়ে থাকে। যেমন কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে কালোজিরার তেল ব্যবহার করা ভালো আবার এর মধ্যে রয়েছে যেমন ক্যান্সার বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের হিসাবে এটা কাজ করে থাকে।

যার কারণেই সাহাবায়ে কেরাম কালোজিরা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। খালেদ ইবনে সাদ রাঃ থেকে বর্ণনা করা হয়েছে, তিনি বলেন আমরা যুদ্ধের ক্ষেত্রে বের হলাম আমাদের সাথে গালিব ইবনে আবজার ছিল, তিনি পথের মধ্যে অসুস্থ হয়ে গেল।

এরপর আমরা মদিনায় ফিরে গেলাম তখন তিনি অসুস্থ থাকার কারণে তাকে দেখাশোনা করার জন্য ইবনে আবি আতিক তিনি দেখাশোনা করলেন। তিনি আমাদেরকে বললেন তোমরা এই কালোজিরার সাথে রেখে দাও। এর থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা পিষে ফেলবে, তারপরে এর মধ্যে জয়তুনের কয়েক ফোটা তেল দেবে।

তার নাকের মধ্যে এদিক ওদিকের ছিদ্রগুলো এই ফোঁটা ফোটা করে ভিতরে দিবে। কেননা আয়েশা রাঃ আমাদের নিকট বর্ণনা করছেন যে নবী করীম সাঃ বলতেন এই কালোজিরা সাম ছাড়া সকল প্রকার রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়। আমি বললাম সাম মানে কি? রাসুল সঃ বললেন এর অর্থ মৃত্যু। বুখারী শরীফ

কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়

অনেকে জানতে চায় যে, কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়? চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। কালোজিরা খেলে অনেক উপকার হয় কিন্তু সমস্যাও হতে পারে। যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে বদহজম ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এক্ষেত্রে কালোজিরা পরিমাণ মতো খেতে হবে তবে যাদের বদহজম এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে। তারা কালোজিরা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

বদহজম সাধারণত সবারই হয়ে থাকে কমবেশি হতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের সাধারণত বদহজম দেখা যেতে পারে, এই হজমের সমস্যা দূর করতে হলে কালোজিরা খাওয়া যেতে পারে। তা কিভাবে খাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। আপনি কোন প্রকার ওষুধ ছাড়াই এই কালোজিরা যদি খান তাহলে আপনার বদহজম দূর হয়ে যাবে।

যেভাবে খাবেন তা হল হজমের সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে ১ থেকে ২ চামচ কালোজিরা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপরে সেটা ভালো করে বেটে নিবেন তারপর পানির সাথে মিক্সড করে প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার খাবেন। এভাবে যদি আপনি এক মাস খেতে পারেন, তাহলে আপনি পেটের সমস্যা দূর হবে। সঙ্গে হজম শক্তি দূর হয়ে যাবে।

এসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা দূর করার জন্য কালোজিরা খেতে পারেন। অনেকেই প্রতিনিয়ত ভাজাপোড়া খেতে পছন্দ করে এবং খাবারের অনিয়ম করে ফেলেন সেই ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। এছাড়া অনেকে তৈলাক্ত খাবার খেতে পছন্দ করে, তাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়।

আমাদের অধিকাংশই মানুষ বয়সের ক্ষেত্রেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগতে থাকে। আর আপনার যদি এই ধরনের এসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা হয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত কালিজিরা খেতে পারেন। কেননা কালোজিরা আপনার গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।

কালোজিরা মধ্যে গ্যাস্টিক দূর করার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে। তাহলে কিভাবে কালোজিরা খেলে গ্যাস্ট্রিক থেকে আপনার রক্ষা পাবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এক কাপ দুধের সাথে এক চামচ কালোজিরা তেল মিক্সড করে নেবেন, প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার খেতে পারেন।

এতে ভালো উপকার পাবেন, এছাড়াও আপনি এক এক চামচ কালোজিরা তেল ও এক চামচ মধু মিক্সড করে দিনে দুই থেকে তিনবার খেতে পারেন। তাহলে আপনার সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার যদি এভাবে খান সেক্ষেত্রে আপনার গ্যাসের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

কালোজিরার তেলের উপকারিতা

ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি কালোজিরা খেলে কি উপকার হয়? এ সম্পর্কে এখন জানবো এর তেল উপকারিতা চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
কালোজিরা তেলের অনেক উপকার রয়েছে, কারণ এর মধ্যে থাকে ফ্যাটি এসিড, ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম আয়রণ ম্যাগনেসিয়াম সেলেনিয়াম ভিটামিন এ, ভিটামিন বি টামিন বি ২ ভিটামিন সি ফসফেট লৌহ ফসফরাস কার্বোহাইড্রেট তাছাড়া জীবাণু নাশক আরো পুষ্টিগুণ আছে।

এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ কেরোটিন ও শক্তিশালী হরমোন প্রসব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে প্রতি বিরোধী উপাদান আছে। যা আমাদের শরীরে প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে, এছাড়াও কালোজিরা তেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।

যা গবেষণায় দেখা গেছে রক্তচাপ ও রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও এটা অনেক উপকার করে থাকে।

এছাড়া ওজন কমাতে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে ভালো কাজ করে থাকে। এখন সৌন্দর্যের বিষয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক এই কালোজিরা তেল কি উপকার করে থাকে।
কালোজিরা তেল সরাসরি ত্বক ও চুলে ব্যবহার করা ঠিক হবে না। কারণ এটা অম্লীয় জাতীয়, এতে ত্বক ও চুলের যত্নের ক্ষেত্রে কালোজিরা ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যায়।

চুলের বৃদ্ধির জন্য বা অনেকের কম বয়সে চুল পেকে যায়, সে ক্ষেত্রে কালোজিরার তেল ক্যাস্টর অয়েল ও নারিকেলের তেল একসঙ্গে ভালোভাবে মিক্সড করে নিয়ে তারপরে মাথার ত্বকে, চুলে লাগাতে পারেন। এরপর আধা ঘন্টা রেখে দিবেন, সারারাত রেখে দিল তেমন ক্ষতি হবে না।

সপ্তাহে দুই তিনবার এভাবে একটানা অন্তত দুই থেকে তিন মাস ব্যবহার করতে পারেন অথবা সারা বছর ব্যবহার করতে পারবেন। ত্বকের দাগ ছপ কমাতে কালোজিরা তেল ও কাঠবাদামের তেল সমপরিমাণ নিবেন, এরপরে দুটি তেল একসঙ্গে ভালোভাবে মিক্সড করার পরে ক্রিমের মতো হয়ে যাবে।

ক্রিমের মতো হলে এরপরে এই ক্রিমটা তিনবেলা ব্যবহার করবেন। একবার তৈরি করে বছর ভরাই আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। কাচের কৌটায় ফ্রিজে রাখতে পারবেন, সেটাই বাইরে রাখলে সমস্যা হবে না। তবে ত্বকের দাগ ছপ যদি সেরে যায় সে ক্ষেত্রে এই ক্রিম ব্যবহার করার প্রয়োজন নাই। 

আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় সে ক্ষেত্রে দাগ ছপ খুব বেশি হতে পারে। এই ক্ষেত্রে কাঠবাদাম তেলের দ্বিগুণ দিয়ে ক্রিমটা তৈরি করে নিবেন। এছাড়া ব্রণ দূর করার ক্ষেত্রে কালোজিরার তেল ও মধু নিতে হবে। এই দুইটা মিক্সড করে নিয়ে ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে দিবেন। এরপর ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ধুয়ে ফেলতে হবে। চাইলে আপনি সারারাত লাগিয়ে রেখে সকালবেলা ধূয়ে ফেলতে পারেন।

কালোজিরা তেল ও গ্লিসারেন মিক্সড করে আপনি দিতে পারেন এবং এর সাথে অ্যালোভেরা জেল মিক্সড করে একটি ক্রিম তৈরি করবেন। যেটা আপনার ত্বকে রাত্রিতে লাগাতে পারেন, এতে আপনি সারা বছর ব্যবহার করতে চাইলে কাচের কৌটার মধ্যে রেখে ফ্রিজে রাখবেন। এভাবে আপনি ব্যবহার করলে আপনার ক্রিমটার ক্ষেত্রে ত্বকের বলিরেখা ক্ষেত্রে ভালো কাজ করবে।

আমাদের শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায় যে কালিজিরার গুনাগুন অনেক রয়েছে। কেননা সকলেই এই কালোজিরার প্রশংসা করেছেন। তাই কালোজিরা আপনি নিয়মিত ভাবে খেতে পারেন। আশা কালোজিরা খেলে কি উপকার হয়? এ সম্পর্কে আজকের পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। যা আপনার উপকার হবে, পোস্টে যদি ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪