সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক ভিসা ফর বাংলাদেশী জন্য কত টাকা লাগে জেনে নিন
অনেকে জানতে চায় সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক ভিসা ফর বাংলাদেশী সম্পর্কে। তাই আপনি যদি বাংলাদেশী হয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার নিয়ম-কানুন জানতে হবে। চলুন, সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক ভিসায় কিভাবে যাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশের লোকজনের নিকট সবচেয়ে প্রিয় একটি দেশ সিঙ্গাপুর। সেখানে অনেকেই কাজ করতে যেতে চায়। এজন্য ওয়ার্ক ভিসা সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন। তাই সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক ভিসা সম্পর্কে জানতে পোস্টে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃসিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বাংলাদেশীদের জন্য কত টাকা লাগে জেনে নিন
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
যেকোনো দেশে যাওয়ার জন্য মানুষ ভিসা করতে হয়। তাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্ক পারমিট হল; যে দেশে আপনি কাজ করতে যাচ্ছেন সেই দেশের অনুমতি নেওয়া। অর্থাৎ সে দেশ আপনাকে কাজের অনুমতি দিবে।
আপনি যদি সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ক পারমিট বিষয়ে যেতে চান সে ক্ষেত্রে এই ওয়ার্ক পারমিট বলতে বুঝায় হল, ওই দেশ আপনাকে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দেবে এবং আপনি যে কাজ করবেন সেই কাজের অনুমতি দেবে। তবে অবশ্যই ভিসার প্রকারভেদের উপর নির্ভর করবে।
সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক ভিসা ফর বাংলাদেশী
সিঙ্গাপুরের যাওয়ার জন্য বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা করতে হবে। তাই সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক ভিসা ফর বাংলাদেশী কিভাবে করা যাবে সে সম্পর্কে নিম্ন আলোচনা করা হলো।
একটি ওয়ার্ক ভিসা যা সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ক পাস নামে পরিচিত হয়ে থাকে। এই ওয়ার্ক পারমিট ওই দেশের নাগরিককে বোঝায়, সে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সিঙ্গাপুরে কাজ করতে অনুমতি পাবে। চাকরি নেওয়ার পদ্ধতি সকল বিদেশি নাগরিকদেরকে ওয়ার্ক পারমিট বা পাস থাকা বাধ্যতামূলক।
সিঙ্গাপুর বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল যত শহর রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম। এই দেশটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র এখানে উদ্যোগ নগর সংস্কৃতি আছে। যা লোকদেরকে কাজের সুযোগ রয়েছে, সারা বিশ্ব থেকে প্রবাসীরা এর আকর্ষণীয় একটি জায়গা।
একটি দেশ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই নগরটি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে অনেকেই শিক্ষার্থীরা আসে এবং চাকরি খোঁজার জন্য অথবা নিজস্ব ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষীদের আকর্ষণ করে থাকে। এশিয়ান রাষ্ট্রটি এমন একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত হয়েছে।
যেখানে উচ্চতর জ্ঞান দক্ষতা সম্পন্ন লোক, বড় বড় কোম্পানি সবাই মিলে কাজ করতে প্রস্তুত থাকে। এখানে অনেকেরই আসা-যাওয়া হয় বিশেষ করে বাংলাদেশের লোকজন সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক ভিসার মাধ্যমে ক্যারিয়ার উন্নতি করতে এ দেশে আসে। তারা কাজের জন্য এই দেশে ওয়ার্ক ভিসা আবেদন করে থাকে।
সিঙ্গাপুরের এই ভিসার বিভিন্ন ধরনের ভাগ রয়েছে তা হলো;
- দক্ষ, অল্প দক্ষ কর্মী সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ কাজের ভিসা দিয়ে থাকে।
- একটি পাস ভিসা দিয়ে থাকে
- প্রশিক্ষণার্থী এবং শিক্ষার্থীরা সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা পাবে।
- পেশাদারা কাজের ভিসা পাবে।
- সিঙ্গাপুর স্বল্প মেয়াদী কাজ পাস দিয়ে থাকে।
সিঙ্গাপুর ভিসা প্রসেসিং
সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য আপনাকে সিঙ্গাপুর ভিসা প্রসেসিং করতে হবে। তাই যেভাবে আপনি এই প্রসেসিং আবেদন করতে পারেন। নিম্নে সেগুলো ভিসা আলোচনা করা হলো,
ভিসার জন্য আবেদন করার পদ্ধতি আপনাকে অবশ্যই সিঙ্গাপুরের ইমিগ্রেশন এন্ড চেকপয়েন্ট অথরিটি এর ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তারপর আপনাকে অনলাইনে আবেদন পত্র জমা দিতে হবে।
আপনি ইচ্ছা করলে কাজটি অফলাইনের মাধ্যমে করতে পারেন। এজন্য আপনাকে বাংলাদেশের অবস্থিত সিঙ্গাপুর দূতাবাসে যোগাযোগ করা প্রয়োজন করা লাগবে।
সিঙ্গাপুর ভিসা কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদনটি যাচাই-বাছাই করবে। এরপর সিঙ্গাপুরের ভিসা প্রসেসিং হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। ভিসার অনুমোদন পেলে পাসপোর্ট একটি স্ট্যাম্প লাগিয়ে দিয়ে দিবে। মনে রাখবেন ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী এর আবেদন পরিবর্তন হবে।
সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে
আপনি যদি সিঙ্গাপুর যেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কত টাকা লাগতে পারে। তাই সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে? সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো,
অনেকেই সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য চিন্তাভাবনা করছেন কিন্তু হয়তো জানেন না সে দেশে যেতে কত টাকা লাগে। এজন্য আপনাকে নির্ভরযোগ্য একটি তথ্য জানতে হবে। এজন্য বাংলাদেশের থেকে শ্রমিক ভিসায় সিঙ্গাপুর যেতে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মত লাগবে।
তবে কাজের প্রশিক্ষণ থাকা প্রয়োজন, আধা দক্ষ শ্রমিক হিসেবে হোটেলের ক্লিনার, কনস্ট্রাকশন এর কাজ মেশিনারিজ এছাড়াও সেবামূলক কাজ ও গৃহকর্মী হিসেবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে পারবেন।
তাই আপনার পছন্দমতে যে কাজের উপর আপনার দক্ষতা রয়েছে সেই কাজের উপর ভিসা করবেন। তাহলে আপনি ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বিভিন্ন এজেন্সি থেকে জেনে নিতে পারবেন।
সিঙ্গাপুর কাজের বেতন
সিঙ্গাপুর একটি উন্নত রাষ্ট্র এখানে কাজের উপর নির্ভর করে বেতন দেওয়া হয়। তাই সিঙ্গাপুর কাজের বেতন কত হতে পারে। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক।
আপনি যদি ভালো এজেন্সির মাধ্যমে যেতে পারেন এবং ভালো কাজের মাধ্যমে যদি চলে যান। সে ক্ষেত্রে আপনার তাড়াতাড়ি কাজ পেতে পারেন। আপনার কাজের বেতন যেটা বলেছে সেটাই পাবেন।
প্রাথমিক অবস্থায় যখন আপনি কাজ করবেন, সে ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বেতন কত টাকা হবে এটা জানা খুবই প্রয়োজন। তাহলে আপনার বেতন সর্বনিম্ন হতে পারে ৪২৯ মার্কিন ডলারের মত।
অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে বেতন কমও দিয়ে থাকে, যদিও প্রতিশ্রুতি দেয় তারপরও আপনার কাজের দক্ষতার উপর নির্ভর করে। আপনার কাজের দক্ষতা যদি ভালো থাকে তাহলে আপনার বেতন বৃদ্ধি হয়ে ৫০০ ডলার বা ১ হাজার ডলারের মত হতে পারে।
সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আপনার কাজের বেতন আরো বাড়তে পারে। তারপরও যদি বিশ্বস্ত মাধ্যম বা এজেন্সি না থাকে, তাহলে আপনার ওই পরিমাণ টাকা নাও পেতে পারেন। তাই যেখানে কাজের ক্ষেত্রে যান না কেন অবশ্যই আপনার মাধ্যমটা শক্তিশালী হতে হবে।
সিঙ্গাপুর যেতে কত বছর বয়স লাগে
আপনি যদি সিঙ্গাপুর যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার বয়সের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। তাই সিঙ্গাপুর যেতে কত বছর বয়স লাগে? অনেকে জিজ্ঞেস করে থাকে। চলুন, সে বিষয়ে আলোচনা করা হোক। নতুন ভাবে যদি ভিসা বা আইপিএ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যাবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার বয়স সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ বছরের মধ্যে হওয়া লাগবে।
সিঙ্গাপুর যেতে কি কি লাগে
সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য আপনার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগতে পারে। তাই সিঙ্গাপুর যেতে কি কি লাগে? এ সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন তা দেওয়া হল;
- সিঙ্গাপুরে যারা অবস্থান করছে তাদের মধ্য থেকে কারো আমন্ত্রণপত্র লাগবে এটা সংগ্রহ করবেন।
- ভিসা ফি ৩০০ সিঙ্গাপুর ডলার লাগবে।
- ফ্লাইটের তারিখ থেকে আরো কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ রয়েছে এরকম একটি পাসপোর্ট প্রয়োজন।
- পাসপোর্টে একটি খালি পাতা রাখতে হবে এটা বাধ্যতামূলক।
- তিন মাসের মধ্যে তুলেছেন এরকম দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হতে হবে। তাছাড়া ছবির সাইজ ২৫ঃ৩৫ মিলিমিটার হতে হবে।
সিঙ্গাপুর ভিসা আবেদন
সিঙ্গাপুরে যাওয়ার জন্য যদি ইচ্ছুক হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর ভিসা আবেদন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই সিঙ্গাপুর ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে ঢাকাস্থ কনস্যুলেটর অনুমোদিত ভিসা এজেন্ট এর মাধ্যমে অনলাইনে আপনি আবেদন করতে পারবেন। এজন্য যা আপনার প্রয়োজন,
ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সিঙ্গাপুরে যাওয়ার তারিখ থেকে কমপক্ষে ৬ মাসের বৈধতা থাকতে হবে এবং একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে।
আবেদনপত্রের এক সেট সম্পূর্ণ ফর্ম থাকতে হবে।
সিঙ্গাপুরের একটি স্থানীয় কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা ইস্যু করতে হবে। সামাজিক ভিজিটরের জন্য যেকোনো নাগরিকের সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা অথবা যার সর্বনিম্ন ২১ বছর স্থানীয় পরিস্থিতি হিসেবে কাজ করে থাকে।
ব্যবসায়িক ডিজিটরের জন্য সিঙ্গাপুরের নিবন্ধিত কোম্পানি বা সংস্থা স্থানীয় পরিচিত হিসাবে কাজ করে থাকে। সেই ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা দ্বারা স্বাক্ষরিত হওয়া লাগবে। আর যার বয়স ২১ বছর অবশ্যই হতে হবে।
একটি সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি থাকতে হবে, যা তিন মাসের মধ্যে তোলা হয়েছে, রঙ্গিন ছবি হতে হবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা থাকতে হবে। সম্পূর্ণ মুখ দেখাতে হবে যেন মুখের বৈশিষ্ট্যটা বোঝা যায়। এছাড়া আবেদনকারী পাসপোর্ট এর বায়োডাটা ফটোকপি থাকতে হবে।
সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এর শর্তাবলী
সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এর শর্তাবলী সম্পর্কে আপনার জানা খুবই প্রয়োজন। তাই নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো,
সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য কিছু শর্তাবলী রয়েছে তা হল;
- আবেদনকারী অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট লাগবে
- আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হওয়া লাগবে
- আবেদনকারী শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষ পারমিট কাজের সুযোগ পেয়ে থাকবেন।
- তাছাড়া সিঙ্গাপুরে কর্মরত বিদেশী কর্মীদের অবশ্যই মেনে চলা লাগবে।
অন্য কোন ব্যবসায় অংশগ্রহণ করা যাবে না, তাদের নিজস্ব ব্যবসা, আপনি নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে পারবেন না।
জনশক্তি মন্ত্রকের অনুমোদন ব্যতীত সিঙ্গাপুরের নাগরিক বা সিঙ্গাপুরের ভিতরে বাইরে স্থায়ী বাসিন্দাকে বিয়ে করা যাবে না।
চাকরির শুরুর দিকে নিয়োগ কর্তা যে ঠিকানায় আপনাকে দেবে সেখানেই থাকতে হবে।
সর্বদা মূল ওয়ার্ক পারমিট আপনার সাথে রাখতে হবে।
লেখকের শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যেতে চান, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক ভিসা ফর বাংলাদেশী এ সম্পর্কে নিয়ম-কানুন জানতে হবে। আশা করি আজকের এই পোস্টটি থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন। পোস্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url