মেয়েদের চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো জেনে নিন
অনেকে জানতে চায় যে, মেয়েদের চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো? অনেকে শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকে কিন্তু এর নিয়ম সম্পর্কে জানেনা, সেজন্য ক্ষতি হতে পারে। চলুন, কোন শ্যাম্পু গুলো চুলের জন্য ভালো হবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করার পূর্বে আগে জানতে হবে, আপনার চুলের ধরন কেমন এর উপরই নির্ভর করবে কোন শ্যাম্পু গুলো আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। তাই মেয়েদের চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃমেয়েদের চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো জেনে নিন
চুলে শ্যাম্পু করার নিয়ম
যদি চুলে শ্যাম্পু করতে চান, সে ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী করতে হবে। তাই চুলে শ্যাম্পু করার নিয়ম সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো;
আপনার চুল যদি পরিষ্কার করতে চান, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী শ্যাম্পু দিতে হবে। আপনার চুল যদি ছোট হয় সেক্ষেত্রে শ্যাম্পু করা লাগবে, আবার চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু করা দরকার। চুলে শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ব্যবহার করার জন্য নিয়ম না মানলে, চুলের ক্ষতি হতে পারে।
চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার বাছাই করা লাগবে। কারণ শুষ্ক চুলের জন্য সেই ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করা লাগবে। এজন্য শুষ্ক চুলের জন্য ওমেগা থ্রি যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। স্বাভাবিক চুলের ক্ষেত্রে মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। আপনার যদি কোকড়ানো চুল হয়, সে ক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
শ্যাম্পু ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই আপনার চুল গুলো আচড়ে জট ছাড়াতে হবে। পানি দিয়ে ভালো করে চুল ভিজাতে হবে, যদি ভালোভাবে না ভিজে সেক্ষেত্রে শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না।
যাদের চুল অতিরিক্ত তৈলাক্ত তারা শ্যাম্পুর সাথে সামান্য পরিমাণ বেকিং সোডা মিশাতে পারেন, এতে চুলের গোড়ায় শুষে নিতে পারবে।
একটি বাটির মধ্যে শ্যাম্পুর সাথে সামান্য পরিমাণ পানি মিশাতে হবে, যাতে করে চুলের গোড়ায় সহজভাবে পৌঁছাতে পারে, এতে শ্যাম্পুর ঘনত্ব টা কমে যায় এবং দ্রুত গতিতে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
শ্যাম্পু দেওয়ার পর ১৫ মিনিট যাবত আঙ্গুল দিয়ে মাথার ত্বক মালিশ করা লাগবে, মালিশ করার কারণে রক্ত সঞ্চালন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং চুলের গোড়ালি মজবুত হতে থাকে। ম্যাসাজ করার সময় অল্প পরিমাণ পানি দিয়ে ফেনা তোলা যেতে পারে, জোরে জোরে ঘষে অনেকেই ময়লা তোলার চেষ্টা করে এভাবে ময়লা পরিষ্কার করলে চুলের ক্ষতি হবে।
দ্বিতীয়বার আবার শ্যাম্পু করা লাগবে, তবে এইবার ম্যাসাজ করা প্রয়োজন নেই। যদি দ্বিতীয়বার ম্যাসাজ করেন তাহলে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
পানি দিয়ে ফেনা তোলার পর কন্ডিশনার দিতে হবে, এরপর চুলের আগায় কন্ডিশনার দিবেন। ১৫ মিনিট রাখার পরে আবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুলের ক্ষতি হতে পারে, তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন শ্যাম্পু দিতে পারেন।
মেয়েদের চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো
মেয়েরা প্রায় দিনে তাদের চুল পরিষ্কার করতে হয়, এজন্য শ্যাম্পু ব্যবহার করা লাগে। তাই মেয়েদের চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো? নিম্নে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো;
আমরা অনেকেই জানিনা যে কোন চুলের কোন শ্যাম্পুটা দিতে হবে, চুলের অনেক ক্ষতি হতে পারে তাই চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করা লাগবে।
ঘন চুলেঃ আপনার চুল ঘন সেটা কিভাবে বুঝবেন, তার জন্য আপনার চুলকে একপাশে সেকশন করবেন। এরপরে মাথার স্কাল্প সহজে দেখা যাচ্ছে কিনা এছাড়াও আপনার আঙ্গুল চুলের ভিতর সহজে স্ক্যাল্প যদি সহজে খুঁজে না পান।
সেই ক্ষেত্রে বুঝবেন আপনার চুল অনেক ঘন রয়েছে। এ ধরনের চুলের সাধারণত হাইড্রেটিং ও ময়েশ্চার শ্যাম্পু ব্যবহার করা লাগবে। তবে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ ব্যবহার করলে ভালো হবে।
হারবাল এসেন্স হ্যালো হাইড্রেশন শ্যাম্পুঃ এই শ্যাম্পুর মধ্যে থাকে নারিকেলের নির্যাস যা ঘন চুলকে ময়েশজার ও হাইড্রেশন প্রোভাইড করতে থাকবে।
এই শ্যাম্পু গ্লুটেন, সালফেট সিলিকন ফ্রি আছে এর মধ্যে কোন মিনারেল অয়েল থাকে না। এই শ্যাম্পু ডিপ ক্লিন করতে পারে এবং হাইড্রেশন প্রোভাইড করে থাকে।
এটি চুল পড়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে, তাই এটা প্রতিদিন ব্যবহার করা যেতে পারে। পিএইচ ব্যালেন্স আছে, কালার সেইফ করতে পারে।
ট্রেসেমি বোটানিক কার্ল হাইড্রেশন শ্যাম্পুঃ এই শ্যাম্পুর মধ্যে থাকে, বোটানিকান, হাইড্রেশন, শিয়া, হিবিসকাস, অয়েল যা আপনার ঘন চুলকে আরো বেশি ম্যানেজাবেল করতে পারবেন। তাছাড়া এটা যথেষ্ট পরিমাণ হাইড্রেশন করে থাকে, হাইড্রেশন যা সাধারণত ক্লিন করে এবং এছাড়াও চুলকে সৌন্দর্য ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
সোজা চুলঃ যাদের চুল সাধারণত সোজা হয়ে থাকে, এই ধরনের চুলের জন্য ইনগ্রেডিয়েন্টযুক্ত শ্যাম্পু প্রয়োজন। যাতে করে আপনার চুলকে আরো এক্সট্রা স্মোথিং আপনার চুলকে ময়েশ্চারাইজিং করবে। এতে আপনার চুল কিউটিকল ফিল করতে চুলগুলো সোজা থাকবে। এজন্য যে শ্যাম্পু গুলো আপনি ব্যবহার করতে পারেন, তা নিম্নে দেওয়া হলো;
ডাভ স্ট্রেইট এন্ড সিল্কি শ্যাম্পুঃ এই শ্যাম্পুর মধ্যে থাকে এডভান্স ড্যামেজ কেয়ার ও রিপেয়ার টেকনোলজি। তাছাড়া এর মধ্যে মাইক্রো ময়েশ্চার সিরাম যা আপনার চুলের কিউটিকলে কোন ড্যামেজ যদি থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে রিপেয়ার করতে পারবেন।
চুলকে সোজা করতে পারবে, নারিশ ম্যান প্রোভাইড করবে। এছাড়াও এই শ্যাম্পু আপনার চুলকে স্মোথ করে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসবে, চুলকে হেলদি করতে পারবেন।
সানসিল্ক পারফেক্ট স্ট্রেইট শ্যাম্পুঃ এই শ্যাম্পু স্ট্রেট লক টেকনোলজি এবং সিল্ক প্রোটিন থাকে, যার কারণে আপনার চুলের এলাইমেন্ট ঠিক রাখবে। চুলকে উজ্জ্বল এবং হেলদি দেখাবে।
কোঁকড়ানো চুলঃ যাদের কোঁকড়ানো চুল রয়েছে, তারা সাধারণত যে ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারবেন। এ ধরনের চুলের জন্য আপনাকে ইন্ট্রিগ্রেডিয়েন্ট শ্যাম্পু ব্যবহার করা লাগবে। তাহলে আপনার চুলের ফ্রিজিনেস অর্থাৎ চুলের কোঁকড়ানো গুলো কমে যাবে।
এতে আপনার চুলের জন্য বোটানিক, হাইড্রেশন সম্পর্কে ব্যবহার করা যেতে পারে। এজন্য নিম্নে এ সম্পর্ক গুলো ব্যবহার করে চুল সোজা হবে তা উল্লেখ করা হলো;
ট্রেসেমি কেরাটিন স্মুথ শ্যাম্পুঃ এ শ্যাম্পুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অল্প পরিমাণে সালফেট থাকে, ইনফিউজড কেরাটিন এবং মেরেলা অয়েল থাকার কারণে চুলের ক্যারাটিন রিস্টোর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও চুলকে সুন্দর ও হেলথি রাখতে সাহায্য করবে। চুলের ফ্রিজিনেস কন্ট্রোল করবে, চুলের জট কমাতে সাহায্য করে এবং চুলকে হেলদি ও উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
অয়েলি স্কাল্পঃ স্কাল্পে সাধারণত প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সিবাম প্রোডাকশন হলে স্কাউট সাধারণত তৈলাক্ত হতে পারে। যার কারণে চুল পড়তে পারে চুল আঠালো হয় এবং তৈলাক্ত দেখা যায়। তাছাড়া খুশির সমস্যা ও দেখা দিতে পারে, এই ধরনের চুলের জন্য এলোভেরা এবং হারবাল নির্যাস দিয়ে তৈরি ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই এ ধরনের শ্যাম্পুর নাম গুলো উল্লেখ করা হলো;
জেল অয়েলি স্ক্যাল্প অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পুঃ স্যালিসাইলিক এসিড জেন্টল মেলন থাকার কারণে এটা তৈলাক্ত স্কাল্পের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে এবং ড্যানড্রাফ কমাতে সাহায্য করে। চুলের ড্যামেজ রিপেয়ার করতে পারবে, চুলকে ভালো ক্লিন করতে পারে। তাছাড়া চুল উজ্জ্বল করে করতে পারবে।
হারবাল এসেন্স বি স্ট্রং শ্যাম্পুঃ এই শ্যাম্পুর মধ্যে যে ধরনের উপাদান থাকে, তা সাধারণত কোঁকড়ানো চুলের স্কাল্পের যদি টৈলাক্ত হয়ে থাকে বা খুশকি দেখা যায় অথবা ফিজিনেস হারিয়ে যায়। সেই সাথে আগা ফাটার সমস্যা হতে থাকে, চুলের গোড়া নরম হয় এ ধরনের সমস্যা যদি থাকে তাহলে আপনি শ্যাম্পুটি ব্যবহার করতে পারেন।
এর গুনাগুন হলো; চুলের ড্যামেজ রিপেয়ার করতে পারবে, চুলের গোড়া স্ট্রং করতে পারে এবং চুল পড়া কমে কমাতে পারবে। আর চুলকে সিল্কি ও উজ্জ্বল করতে পারবে। চুলকে অনেকটাই ফ্রিজ ফ্রি করবে এবং ম্যানেজ করতে সাহায্য করবে।
এক্সপেল এলোভেরা শ্যাম্পু ফর স্মুথ শাইনী হেয়ারঃ এর মধ্যে মূলত এলোভেরা জেল থাকে, যা আপনার চুলকে সিল্কি করবে আর নরম করতে পারে এবং চুলকে সৌন্দর্য ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারে। এছাড়াও এই শ্যাম্পু চুলের রুটকে এবং স্কাল্পে নারিশমেন্ট করতে সাহায্য করে। এছাড়াও চুলের ড্যামেজ কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে এবং চুলকে সুস্থ রাখে।
শুষ্ক বা ড্রাই চুলঃ যাদের চুল সাধারনত শুষ্ক থাকে, তাদের সিবাম প্রোডাকশন সাধারণত উৎপাদন হয় না। এতে চুলের শুষ্কতা দেখা দিতে পারে, এজন্য চুলের সিবাম প্রোডাকশন উৎপাদন করা প্রয়োজন। এই ধরনের চুলের জন্য ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু দরকার হবে। যেমন হারবাল এসেন্স হ্যালো হাইড্রেশন শ্যাম্পু,এছাড়াও আরো অনেকগুলো শ্যাম্পু আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
সাধারণ স্ক্যাল্পঃ যাদের সাধারণত স্কাল্প নরমালি হয়ে থাকে, তাদের সাধারণত সেবাম প্রোডাকশন ব্যালেন্স থাকে, এই ধরনের চুলের জন্য খুশকি এবং ফ্রিজিনের কিংবা তৈলাক্ত ভাব না থাকার কারণে এতে চুলের ধরন অনুযায়ী চুলের অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আপনার চুল যদি স্বাভাবিক হয় সে ক্ষেত্রে দি বডি শপ ব্যানানা ট্রুলি নারিশিং শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।
এ শ্যাম্পু সাধারণত চুলকে উপযুক্তভাবে নারিশমেন্ট করতে পারে, এছাড়াও চুলকে ক্লিন করতে পারে, এটি সিলিকন ফ্রি থাকে। এছাড়াও এর ভিতরে ভেজিটেরিয়ান রয়েছে, এর মধ্যে ব্যানানা পাল যা আপনার চুলকে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করবে।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা বলা যেতে পারে যে, আপনার চুলের ধরনের অনুযায়ী এখানে অনেকগুলো শ্যাম্পুর নাম বলা হয়েছে। সেগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারেন, তবে আমি আপনাকে বলছি না যে এগুলোই ব্যবহার করতে হবে।
আপনি অবশ্যই একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তারপরও এই শ্যাম্পু গুলো আপনি ব্যবহার করে দেখতে পারেন, সাধারণত এই শ্যাম্পু গুলো অত্যন্ত ভালো মানের যা অনেকেই ব্যবহার করে উপকার পেয়েছে।
খুশকির জন্য কোন শ্যাম্পু ভালো
যাদের খুশকির সমস্যা রয়েছে, তারা সাধারণত কোন শ্যাম্পু ব্যবহার করবে এটা নিয়ে অনেক সমস্যায় থাকে। তাই খুশকির জন্য কোন শ্যাম্পু ভালো এ সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক।
খুশকি দূর করার ক্ষেত্রে অবশ্যই শ্যাম্পু ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। কারণ এই শ্যাম্পু চুলকে ড্রাই এবং প্রাণহীন করে তুলতে পারে। তাই আপনি চাইলে ঘরোয়া ভাবে এই খুশকি দূর করার চেষ্টা করতে পারেন।
মাথার স্কাল্প শুষ্ক হওয়ার কারণেই সাধারণত খুশকি হতে পারে, তাই প্রতিদিন রাত্রিতে শোয়ার সময় নারিকেলের তেল এবং সাথে এক চিমটি কর্পূর মিশিয়ে নিয়ে আপনারা হাতের তালুতে নিয়ে এটা মাথায় নরমাল শ্যাম্পু দিয়ে সকালবেলা ধুয়ে ফেলবেন। এতে এক মাস ব্যবহার করে দেখতে পারেন আপনার খুশকি সমস্যা দূর হবে।
তাছাড়া আরো একটা বিষয় আপনি ব্যবহার করতে পারেন, একটা মাঝারি আকারের শসা নিবেন আর ছোট করে পাতলা করে কাটবেন। পাতলা কাপড় ছেঁকে নিয়ে রস গুলো বের করে নেবেন। একটা বাটির মধ্যে নিয়ে তিন থেকে চার চামচ লেবুর রস নিবেন।
এরপর ভালো করে মিশাতে হবে, মাথার তালুতে দিবেন এবং বাকি চুলগুলোতে দিয়ে ২০ মিনিট পরে আপনি শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এক্ষেত্রে আশা করা যায় দুই তিন সপ্তাহ আপনি এভাবে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন।
যারা এসব ঝামেলা করতে চান না, তারা কেটোকোনাজল ২% শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণত চিকিৎসকরা এই ধরনের শ্যাম্পু লিখে থাকে, তবে সবচাইতে দরকারী কথা হলো চুলের কালার যাই করুন না কেন মাথার তালু কখনোই অতিরিক্ত শুষ্ক রাখা যাবে না। এতে ভেজা রাখার জন্য অ্যালোভেরা জেল বা নারিকেলের তেল ব্যবহার করতে পারবেন।
বাচ্চাদের খুশকি দূর করার শ্যাম্পু
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি মেয়েদের চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো? চলুন জেনে নেওয়া যাক। বাচ্চাদের খুশকি হলে কোন শ্যাম্পু দিবেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো;
চুলে খুশকি হবে এটাই স্বাভাবিক বিষয় তবে অনেক কিছুর মাথার ত্বকে তুলনামূলক বেশি খুশকি হয়। শিশুর চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু না করার কারণে মাথার ত্বকে জমে থাকে। মরা কোষ যা অপসারিত হতে পারে না, যার কারণে পুরো স্তরে পরিণত হতে থাকে।
যা আমরা খুশকি বলে থাকি, তাছাড়া শিশুর পুষ্টিকর খাবারের চেয়ে যদি বেশি জাঙ্ক ফুড খেয়ে থাকে। তাহলে মাথার চুলকানি বেশি হয় এবং খুশকি হতে পারে। চুলে উপযোগী শ্যাম্পু না দেওয়ার কারণে খুশকি হতে পারে।
আর এই ধরনের খুশকি যদি সমাধান না করা হয়, তাহলে মাথার চুলকানি হতে পারে, চুল পড়া সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। শিশুর চুলকে মুক্ত রাখার জন্য যে ব্যবস্থাগুলো নেওয়া যেতে পারে তা তুলে ধরা হলো;
খুশকি সমস্যা যদি বেড়ে যেতে থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে আপনাকে মেডিকেটেড শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।
শিশু পানি শুন্যতা হলে খুশকির সমস্যা হতে পারে। তাই শিশুকে পর্যাপ্ত পানি এবং ফলের রস পানি জাতীয় খাবার গুলো দিতে হবে। যাতে শরীরে ভারসাম্য ঠিক থাকে, তাহলেই খুশকি অনেকটাই কমে আসবে।
শিশু কি পরিমানে ঘেমে যাচ্ছে সেটা নির্ভর করবে চুলের শ্যাম্পু করার উপরে। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন শিশুর চুলের শ্যাম্পু দিতে হবে। মাথার ত্বকে ঘাম জমতে দেওয়া যাবে না, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শ্যাম্পু করার আগে চিরুনি দিয়ে চুলকে ভালোভাবে ব্রাশ করা যেতে পারে। এতে মাথার ত্বকের মরা কোষগুলো ঝরে যেতে পারে এবং চুল পরিষ্কার হবে।
শিশুর চিরুনি ও তোয়ালে আলাদাভাবে রাখবেন, এতে খুশকির সমস্যা থাকার কারণে জিনিসপত্র আলাদা করে নেওয়া ভালো।
শিশুর খাদ্য তালিকায় সবুজ, শাকসবজি প্রোটিন ও শর্করা জাতীয় খাবার রাখতে হবে, যেন খুশকির সমস্যা দূর হয়ে যায়।
অনেক মাথায় তেল দিতে দেয় না, সে ক্ষেত্রে মাথার ত্বকে অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। এতে খুশকি হতে পারে, তাই সপ্তাহে শিশুকে মাথায় নারিকেলের তেল দিতে পারবেন, এতে মাথার ত্বক মশ্চারাইজ থাকবে এবং খুশকি বৃদ্ধি পাবে না। এতে আপনার শিশুর খুশকি অনেকটাই কমতে থাকবে।
শিশুর চুলের জন্য সাধারণত কোমল শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে, এই কোমল শ্যাম্পু দিতে হবে।
অনেকে ঠান্ডা লাগতে পারে এই জন্য শিশুর মাথার ত্বকে টক দই ব্যবহার করতে চায় না, এতে গোসলের সময় ১০ মিনিট আগে এলোভেরা জেল এবং নিমপাতার রস লেবুর রস ভিনেগার লাগিয়ে শ্যাম্পু দিতে পারেন, এতে অনেকটা চুলকানি দূর হয়ে যাবে।
শিশুর শ্যাম্পু নির্বাচন করার জন্য আপনাকে শিশুর ত্বকের ধরন বয়স এবং ব্যক্তিগত পছন্দ উপর নির্ভর করে, সেই ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো আপনি বিবেচনা করবেন শ্যাম্পু কেনার পূর্বে এগুলো উপাদান আছে কিনা। সেই জন্য শ্যাম্পুর লেভেল গুলো দেখবেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
রাসায়নিক মুক্তঃ যে সকল শ্যাম্পুর মধ্যে সালফেট, প্যারাবেন্স, থেলেট, সুগন্ধি মুক্ত থাকে সেগুলো ব্যবহার করবেন। তাছাড়াও প্রাকৃতিকভাবে উপাদান দিয়ে তৈরি শ্যাম্পু গুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
অশ্রু মুক্তঃ শ্যাম্পু দেওয়ার কারণে চোখ জ্বলতে থাকে, আর গোসলের সময় চোখ সাধারণত জ্বলে থাকে। এই ধরনের উপাদান যদি শ্যাম্পুর ভিতরে থাকে সেই শ্যাম্পুটা ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকতে হবে।
হাইপো অ্যালার্জিনিকঃ যদি আপনার শিশুর সংবেদনশীল ত্বক থাকে অর্থাৎ ত্বকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে শ্যাম্পু নির্বাচনে খেয়াল রাখতে হবে, হাইপো এলার্জেনিক এবং সুগন্ধি ও অন্যান্য উপাদানগুলো আছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
পিএইচ ব্যালেন্সঃ আপনার শিশুর ত্বক এবং মাথার ত্বকের স্বাভাবিক ভারসাম্য আছে কিনা, সেই পিএইচ ব্যালেন্স শ্যাম্পুটা ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।
উপরোক্ত এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে বর্তমানে বাজারে যে জনপ্রিয় শ্যাম্পু গুলো পাওয়া যায়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে যদি নিতে পারেন তাহলে সবচেয়ে ভালো হয় তবে শ্যাম্পুর নাম উল্লেখ করা হলো;
জনসন কোম্পানির বেবি শ্যাম্পু এটা ব্যবহার করা যেতে পারে, ভালো কার্যকারিতা রয়েছে।
এছাড়া আরো অনেক কোম্পানি রয়েছে যেগুলো ভালো মানের ব্র্যান্ড সেগুলো দেখে কিনে নিতে পারেন। শ্যাম্পু সহ শিশুর যেকোনো পণ্য কেনার আগে অবশ্যই লেবেলটা পড়ে নিবেন এবং
উপাদানগুলো পরীক্ষা করে তারপরে আপনি আপনার শিশুর জন্য এটা প্রয়োগ করতে পারেন অথবা একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বলে আপনার শিশুর জন্য উপযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
কোন চুলে কেমন শ্যাম্পু
আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করা লাগবে, তাই কোন চুলে কেমন শ্যাম্পু? এ সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলো;
অনেকে নিয়মিত শ্যাম্পু, তেল ও কন্ডিশনার ব্যবহার করে থাকে। তারপরও চুলের সমস্যা দেখা দিতে পারে, এর কারণ হলো আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। যাদের চুল শুষ্ক রয়েছে তারা স্বাভাবিক চুলের শ্যাম্পু ব্যবহার করলে কখনোই ভালো ফলাফল পাবেন না।
আবার তৈলাক্ত চুলে যদি শুষ্ক ও স্বাভাবিক চুলের শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্র ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে না। এজন্য সঠিক শ্যাম্পু ব্যবহার করা আপনার জন্য প্রয়োজন। এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক,
শুষ্ক চুলেঃ শুষ্ক চুলের জন্য ময়েশ্চারাইজ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে, এতে ভালো ফলাফল পাবেন। শ্যাম্পু কেনার পূর্বে অবশ্যই এর গায়ে যে লেখা থাকে, সেটা পড়ে নিবেন। এর ভিতর দেখবেন ওমেগা থ্রি উপাদানটি আছে কিনা, এছাড়া প্রোটিন সমৃদ্ধ, ড্যামেজ কেয়ার শ্যাম্পু এবং শুষ্ক চুলের জন্য উপকার করে থাকে।
তৈলাক্ত চুলেঃ তৈলাক্ত চুলের জন্য যে শ্যাম্পুর মধ্যে তেল বিহীন উপাদান আছে, সেই শ্যাম্পু বেছে নিতে হবে। তাহলেই আপনার তৈলাক্ত চুলের জন্য উপকার হবে। তাই যে শ্যাম্পু গুলো ড্রাই শ্যাম্পু হিসেবে বাজারে পাওয়া যায় সেগুলো আপনাকে ব্যবহার করতে হবে। আর তৈলাক্ত চুলের সাধারণত সপ্তাহে তিন থেকে চারবার শ্যাম্পু ব্যবহার করা প্রয়োজন।
স্বাভাবিক চুলেঃ যাদের স্বাভাবিক চুল রয়েছে অর্থাৎ চুলের পিএইচ ব্যালেন্স ও সিলিকন, প্যারাবেন ফ্রি মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এই মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন, তাহলেই ভালো ফলাফল পাবেন।
শ্যাম্পু ব্যবহারের আগে চুলগুলো ভালো করে আঁচড়ে নিতে হবে, তা না হলে আপনার শ্যাম্পু করার কারণে চুল পড়ে যেতে পারে।
চুলে যদি জট থাকে সেক্ষেত্রে আগেই জট গুলো ছাড়িয়ে নেওয়া লাগবে।
শ্যাম্পু করার কমপক্ষে এক ঘন্টা আগে চুলে তেল মালিশ করতে হবে, তাহলেই ভালো উপকার পাওয়া যেতে পারে।
শ্যাম্পু করার আগে চুলগুলো ভালো করে ভিজিয়ে নিতে হবে।
অতিরিক্ত শ্যাম্পু করা যাবে না, চুলের স্বাভাবিক তেল যেন নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অতিরিক্ত শ্যাম্পু দেওয়ার কারণে চুল গুলো অনেক সময় রুক্ষ হতে পারে।
আপনি যেদিন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন, অবশ্যই এর পরে কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল গুলো আরো ভালো থাকবে।
পাতলা চুলের জন্য শ্যাম্পু
যাদের পাতলা চুল তারা কোন ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করবে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো,
আপনি যখন শ্যাম্পু কিনবেন সেই ক্ষেত্রে খেয়াল করবেন যে শ্যাম্পু গুলোর মধ্যে ভিটামিন বি-৭, বায়োটিন, হাইড্রোলাইজড কোলাজেন, হাইড্রোলাইজ হুইট, প্রোটিন এছাড়াও প্রোটিন পলিমার যুক্তদের শ্যাম্পু গুলো রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
তাছাড়া যে শ্যাম্পু গুলোর মধ্যে সিলিকন, প্যারাবেন ও সালফেট ফ্রি আছে সেই সম্পর্ক গুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
গরম কালে চুল সাধারণত গরম জল দিয়ে ধুইবেন না, এতে করে অনেক সময় চুল উঠে যেতে পারে। আবার অনেকেই শীতকালের গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলে।
এক্ষেত্রেও না ধোয়াই ভালো এতে চুলের অনেক ক্ষতি হতে পারে। আমাদের স্ক্যাল্পের স্বাভাবিক অয়েল ব্যালেন্স বৃদ্ধি পেতে পারে, যার কারণে চুলগুলো পাতলা হয়ে যেতে পারে এবং চুল পড়ে।
আরো পড়ুনঃ জ্বর ঠোসার দাগ দূর করার উপায় জেনে নিন
অনেকেই শ্যাম্পু দেওয়ার সময় দেখা যায় শরীরের শক্তি দিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে থাকে। এতে করে ঘষার কারনে দেখা যায় চুলের গোড়া আলগা হয়ে যায় এবং চুল পড়ে যেতে পারে। এজন্য শ্যাম্পু যখন দিবেন সে ক্ষেত্রে আঙ্গুলের ডগা দিয়ে আলতোভাবে মালিশ করতে হবে।
যেন স্কাল্পের বেশি ঘোষনা লাগে তাহলে চুল পড়ে যেতে পারে। চাইলে আপনি স্কাল্প ব্রাশ পাওয়া যায় সে ধরনের ব্রাশ দিয়েও ম্যাসাজ করতে পারেন।
শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। যদি ঘন চুল হয় অথবা পাতলা চুল হোক সে ক্ষেত্রে মানুষ অনেকেই ভুল করে থাকে। সেটা হল শ্যাম্পু করার পর চুল ধুয়ে কন্ডিশনার চুলে লাগাবেন।
আরো একটা জিনিস সতর্ক থাকবেন, সেটা হলো সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। প্রতিদিন শ্যাম্পু দিলে চুলের সমস্যা হতে পারে এবং চুল পড়ে যেতে পারে।
শেষ কথাঃ মেয়েদের চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো জেনে নিন
পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করতে চান, সেই ক্ষেত্রে আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু নির্বাচন করতে হবে। তাই মেয়েদের চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url