ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে ও করণীয় সম্পর্কে জানুন
ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে খনিজ পদার্থ ও পুষ্টি বের হয়ে যায়। তাই ফল খাওয়া যেতে পারে, এজন্য ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে? সেই ফলগুলো সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, যে সকল ফল খেলে ডায়রিয়ার জন্য উপকার হবে সে সম্পর্কে জানা যাক।
কিছু ফল রয়েছে যেগুলো ডায়রিয়া হলে শরীরের ক্ষতি করবে। এজন্য আমাদের জানা উচিত কোন ফল খেলে ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে উপকার হবে। তাই ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে ও করণীয় সম্পর্কে জানুন
ডায়রিয়া কেন হয়
সাধারণত ডায়রিয়া বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে, তাই আমাদের জানা উচিত কি জন্য ডায়রিয়া হয়। তাই ডায়রিয়া কেন হয়? এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো;
দিনে তিনবার বা তার চেয়ে বেশি ঘনঘন পাতলা পায়খানা হলে মূলত তাকে ডায়রিয়া বলা হয়ে থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া তীব্র আকার ধারণ করলে, চাল ধোয়া পানির মত পায়খানা দেখা যায়। চলুন, জেনে নেওয়া যাক যে সকল কারণে ডায়রিয়া হয়।
ভাইরাসঃ ডায়রিয়া সংক্রমনের জন্য সবচাইতে বেশি দায়ী করা হয় ভাইরাসকে। ভাইরাস গুলোর মধ্যে যেগুলো আছে তা হল; নরোভাইরাস, অ্যাস্ট্রোভাইরাস, এন্টারিক ভাইরাস, হেপাটাইটিস ও সাইটোমেগালো ভাইরাস কে দায়ী করা হয়ে থাকে। রোটা ভাইরাস শিশুদের ডায়রিয়ার জন্য দায়ী করা হয়ে থাকে।
দূষিত পানি নরোভাইরাস, এস্ট্রভাইরাস, হেপাটাইটিস এ ভাইরাস এর জন্য উৎস হয়ে থাকে। নরোভাইরাস পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি এবং তাজা ফলের ভিতরে থাকে, হেপাটাইটিস এ এবং নরো ভাইরাস সংক্রমণ অনুপযুক্ত খাদ্য মাধ্যমে হয়ে থাকে।
ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবীঃ দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে ইকোলাই এর মত প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী সংস্পর্শে আসার কারণে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। দূষিত পানি ছাড়া ইকোলায় কাঁচা বা কম রান্না করা গরুর মাংস, কাঁচা শাক-সবজি এবং পাস্তুরিত দুধের মধ্যে দেখা যায়।
ওষুধ সেবনঃ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আমরা খেয়ে থাকি, যা আমাদের শরীরের ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে এবং পাশাপাশি ভালো ব্যাকটেরিয়া গুলোকে মারার কারণে সাধারণত অন্ত্র ব্যাকটেরিয়ার স্বাভাবিক ভারসাম্য না হওয়ার কারণে শারীরিক অবস্থাকে ডায়রিয়ার দিকে নিয়ে যায়। তাছাড়া এন্টি ক্যান্সার ঔষধ এবং ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত এন্টাসিড ডায়রিয়া কারণ হতে পারে।
ল্যাকটোজ সমস্যাঃ ল্যাকটোজ হলো দুধ এবং দুধের তৈরি যে খাবারগুলো হয়ে থাকে তাদেরকে বুঝানো হয়। যেমন একপ্রকার চিনি কে বুঝানো হয়, যাদের ল্যাকটোজ হজম করতে অসুবিধা হয়ে থাকে তারা দুগ্ধজাত খাবার খেলে ডায়রিয়া হতে পারে। যখন বয়স বেশি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি দেখা যায়। যে এনজাইমটি ল্যাকটিজ হজম করবে এই বয়সে এসে সেটা করতে পারে না।
ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে
ডায়রিয়া হলে যে ফল বা ফলের রস খাওয়া যেতে পারে। তাই ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে? এ সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন, এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
কলাঃ ডায়রিয়া হলে কলা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। শরীর থেকে আমাদের এই সময়ে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় এবং পুষ্টি চলে যায়। আর এই পুষ্টিকে ফিরে আনার জন্য কলা খাওয়া যেতে পারে।
কলা খুবই সহজে হজম হয়, তাই এটা পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়াও কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে যা ডায়রিয়া রোগীর জন্য প্রয়োজন। কারণ ডায়রিয়া হলে পটাশিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়, সে হিসেবে আপনি কলা খেতে পারেন।
ডাবের পানিঃ ডায়রিয়া হলে সাধারণত রোগীদের ঘনঘন পাতলা পায়খানা এবং বমি হয়ে থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণ পানি এবং খনিজ লবণের ঘাটতি হয়ে থাকে। এই ঘাটতি পূরণের জন্য ডাবের পানি অনেক উপকার করে থাকবে।
কেননা এই সময় দেহে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব দেখা যায়। তাই ডাবের পানির মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়ামের, পটাশিয়াম রয়েছে। যা আপনার এই ঘাটতিটা পূরণ করবে।
ডালিমের জুসঃ ডালিম ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, আমাদের অনেকে হয়তো ভুল ধারণা আছে। কিন্তু ডায়রিয়া হলে ডালিমের রস খাওয়া অত্যন্ত জরুরী, নিয়মিত দুই বেলা ডালিমের রস যদি খেতে পারেন।
তাহলে ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে পারবেন, ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার জন্য ছয় থেকে ১২ চা চামচ ডালিমের রস সাথে এক গ্লাস ডাবের পানির মিশিয়ে খেতে পারেন। পাঁচ থেকে ছয় বার খেলে আপনার পাতলা পায়খানা কমে যাবে, এছাড়াও শরীরের জন্য উপকার হবে।
তরমুজের জুসঃ ডায়রিয়া হওয়ার কারণে যেহেতু পানি স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। তাই তরমুজ খাওয়া যেতে পারে খেতে পারেন। কারণ তরমুজের মধ্যে শতকরা ৯২ ভাগ রয়েছে। তাই আমাদের এই পানি অভাব পূরণ করার জন্য তরমুজ খাওয়া যেতে পারে এবং এতে পানির তৃষ্ণা মিটে যাবে।
তরমুজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ, বিটা ক্যারোটিন এবং পটাশিয়াম থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার করে থাকে।
আপেলঃ দৈনিক একটি করে যদি আপেল খেতে পারেন, এতে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান হবে। বিশেষ করে ডায়রিয়া হলে চিকিৎসার ক্ষেত্রে শিশুদেরকে আপেলের রস খাওয়াতে পারেন। এতে ডায়রিয়া অনেকটা কমে যাবে, কারণ এর মধ্যে থাকে ভিটামিন-এ, সি এবং কার্বোহাইড্রেট যা শরীরের শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে।
মিষ্টি আলুঃ মিষ্টি আলুর মধ্যে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি-৬, এগুলো ডায়রিয়া কমাতে এবং শরীরের শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে।
ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না
ডায়রিয়া হলে সাধারণত যে খাবারগুলো আপনার খাওয়া যাবে না। সেগুলো জানা খুবই প্রয়োজন তাই ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না। এ সম্পর্কে চলুন, বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
দুধঃ ডায়রিয়া থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ যদি না হতে পারেন এ পর্যন্ত আপনি দুধের তৈরি খাবার গুলো খাওয়া যাবে না। এতে হজমের সমস্যা করবে এবং পেটে গ্যাস হতে পারে। যেমন পনির, দুধ, মাখন এ জাতীয় খাবার গুলো না খাওয়াই ভালো।
চা বা কফিঃ ক্যাফিন জাতীয় পানীয় ডায়রিয়া হলে খাবেন না। এ সময় যাবা কফি খেলে পেটের জ্বালা যন্ত্রণা বৃদ্ধি পাবে। এতে পেটের ব্যথা হতে পারে, তাই এর পরিবর্তে আপনি আদা চা খাওয়া যেতে পারে।
ঝাল বা তৈলাক্ত খাবারঃ ডায়রিয়া হলে ডুবো তেলে ভাজা বা ঝাল মসলা তার খাবার গুলো খাওয়া যাবে না। কারণ ঝাল বা প্রায় যুক্ত খাবার গুলো পেটের গ্যাস বৃদ্ধি পেতে পারে।
মদ্যপানঃ ডায়রিয়া বা পেটের যেকোনো সমস্যার কারণে মধ্যপান করা যাবে না। কারণ মদ্যপান করলে হজম সমস্যা দেখা দিতে পারে, তাই মদ্যপান থেকে বিরত থাকবেন।
লাল মাংসঃ লাল মাংস বিশেষ করে গরুর মাংস খাওয়ার কারণে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই খাবার খাওয়ার কারণে ফেরেটিনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এবং প্রদাহরোধী উপাদান আছে যা ডাইজেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বাদামঃ বাদামের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে যা আঁশযুক্ত এটা পায়খানা অনেক নরম করতে পারে। এজন্য ডায়রিয়া হলে বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং হজমের সমস্যা হতে পারে।
আইসক্রিমঃ আইসক্রিম যে উপাদান দিয়ে গঠিত তার মধ্যে সাধারণত দুধ এবং ফ্যাট থাকে। আর তাছাড়া চিনি জাতীয় হওয়ার কারণে এজন্য হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ফাস্টফুড খাবারঃ ফাস্টফুড খাবার সাধারণত তৈলাক্ত হয়ে থাকে, এরমধ্যে প্রচুর পরিমাণে তেল, মসলা, ময়দা দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। যার কারণে ময়দা থাকার কারণে পেটের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে, বার্গার, পিৎজা, রোল বিভিন্ন ধরনের চপ এ ধরনের খাবার গুলো খেলে ডায়রিয়া রোগ বৃদ্ধি পাবে।
শুকনো ফলঃ শুকনো খাবার গুলোর মধ্যে সাধারণত ফাইবার থাকে, এটা কোষ্ঠকাঠিন্যর ক্ষেত্রে ভালো উপকার করে থাকে কিন্তু ডায়রিয়া হলে আরো বেশি সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন শুকনো খাবার গুলোর মধ্যে কিসমিস, আলু বোখরা এ ধরনের খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
চিনিযুক্ত খাবারঃ চিনিযুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে যেমন চকলেট, চুইংগাম, ক্যান্ডি জাতীয় খাবার খেলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। পেট ফাপা দিতে পারে এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
ডাল ও বীজঃ ডাল জাতীয় খাবার গুলো খেলে আরো ডায়রিয়া বেশি হতে পারে এবং পেটের গ্যাস হতে পারে, পেট ফাপা দিয়ে থাকে যেমন সিমের বিচি খেলেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শাকসবজিঃ শাক সবজির মধ্যে যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি এগুলো খাবার খাওয়ার কারণে সাধারণত পেটে গ্যাস উৎপাদন হতে পারে এবং ডায়রিয়ার সমস্যারও বৃদ্ধি করতে পারেন। তাই খাবারগুলো যতক্ষণ না পর্যন্ত ডায়রিয়া কমে ততক্ষণ বন্ধ রাখতে হবে।
ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ
বড়দের বা ছোটদের ডায়রিয়া হলে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়। তাই ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলো;
ডায়রিয়ার প্রধান লক্ষণ হল মলত্যাগের প্রচণ্ড চাপ দিবে এবং ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হতে থাকবে। তাছাড়া বমি হতে পারে অথবা বমি বমি ভাব হয়। পেট ব্যথা করতে পারে, এটা চাপ অনুভূত হবে, পেট ফুলে যাওয়া এ ছাড়াও ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে।
ডায়রিয়া গুরুতর অবস্থা যদি হয় সে ক্ষেত্রে পানি শূন্যতা সর্বশেষ পর্যায়ে দেখা যায়। ডায়রিয়ার কারণে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ খনিজ পদার্থ ও পুষ্টি বের হয়ে যায়। যার কারণে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, পানিশূন্যতার লক্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হল; প্রচন্ড ক্লান্তি লাগবে বা দুর্বলতা দেখাবে।
শুকনো শ্লেষমা দেখাবে, হৃদয় স্পন্দন বৃদ্ধি পেতে থাকবে, মাথা ব্যাথা করবে, তৃষ্ণা লাগবে তাছাড়া প্রসাব কমে যাবে এবং মুখ শুষ্ক দেখাবে।
বাচ্চারা ডায়রিয়া এবং পানিশূন্যতার কারণে সংবেদনশীল হয়ে যায়। এ সময় বাচ্চাদের প্রসাব কমে যায়, মুখ শুকায়ে যেতে পারে, মাথাব্যথা হয়ে থাকে, দুর্বল লাগে, কান্নার সময় চোখে পানি দেখা যায় না। চোখ আধা বোঝা হয়ে থাকে বা আধা খোলা থাকে। যেটা ঘুমানোর মতো দেখায়, তন্দ্রা লেগে থাকে, সবসময় বিরক্তিবোধ মনে করে এবং খিটখিটে মেজাজ থাকে।
ডায়রিয়া হলে করণীয়
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে? এখন জানবো ডায়রিয়া হলে কি করতে হবে। চলুন, এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমে অবশ্যই খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে, আধা লিটার পানির মধ্যে একটি পুরো স্যালাইন গুলাতে হবে। শিশুকে বারবার পাতলা পায়খানা হওয়ার পরে সাথে সাথে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। মনে রাখবেন এই স্যালাইনটা অবশ্যই ওর স্যালাইন হতে হবে।
১০ বছরের উপরে অর্থাৎ বড়দের যদি ডায়রিয়া হয়, সেক্ষেত্রে প্রতিবার পায়খানা করার পর এক গ্লাস অর্থাৎ আধা লিটার পানির মাঝে একটি স্যালাইন খাওয়ানো যেতে পারে।
শিশুদের ডায়রিয়া হলে প্রতিবার পাতলা পায়খানা করার পরে, শিশুর যত কেজি ওজন হয় তত চামচ বা তার যতটুকু পায়খানা হয়েছে আনুমানিক করে স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
শিশুর যদি বমি হয় সেই ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে খাওয়াবেন যেমন প্রতি তিন চার মিনিট পর পর এক চামচ করে স্যালাইন খাওয়ানো যেতে পারে।
ছয় মাসের অধিক বয়সী রোগীদের জন্য খাবার স্যালাইন এর পাশাপাশি অন্য খাবারগুলো খাওয়াতে হবে।
প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি বেশি করে তরল জাতীয় খাবার গুলো খাওয়াতে হবে। যেমন ডাবের পানি, চিড়ার পানি এবং স্যুপ খাওয়ানো যেতে পারে।
৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদেরকে প্রতিদিন একটা করে জিঙ্ক ট্যাবলেট পানিতে গুলিয়ে খাওয়ানো লাগবে, ১০ দিন পর্যন্ত খাওয়ানো যাবে।
যদি অবস্থার কোন পরিবর্তন না হয়, সেক্ষেত্রে অর্থাৎ ডায়রিয়া যদি না কমে তাহলে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ করে চলতে হবে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধে করণীয়ঃ ডায়রিয়া হওয়ার যেন না হয় সেই ধরনের প্রতিরোধ করতে হবে। এই জন্য মলত্যাগের পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে এবং স্যানিটারী ল্যাটিন ব্যবহার করা লাগবে।
পায়খানা করার পরে এবং খাওয়ার আগে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। তাছাড়া খাবার তৈরি করা খাবার পরিবেশন করার ক্ষেত্রে হাত সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়াও থালা-বাসন, চামচ বাটি এগুলো ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। অবশ্যই এই কাজগুলো নিরাপদ পানি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদেরকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে, দুধ খাওয়ানো মিস দেওয়া যাবে না।
যে সকল খাবারগুলো সাধারণত মাছি, মশা পড়ে এবং বাসি পচা খাবারগুলো খাওয়া যাবেনা। বাইরের খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা লাগবে, বাইরের শরবত ফলের রস এগুলো খাওয়ানো যাবে না।
রান্না করা খাবার বেশিক্ষণ বাইরে রাখা যাবে না, এতে রোগ জীবাণু ছড়াতে পারে। তাই গরম গরম থাকতে খাবার গুলো খেয়ে নেওয়া ভালো। অবশিষ্ট যে খাবার থাকে সেটা ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দিবেন বা পরবর্তী খাওয়ার সময় আবার গরম করে নিতে হবে।
পরিষ্কার পাত্রের মধ্যে টিউবলের পানি কিংবা ফুটানো পানি রেখে দিতে হবে। পানি ফুটিয়ে জীবানুমুক্ত করার জন্য চুলায় পানি ফুটানো শুরু থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগবে। ফুটানোর জন্য পানি ঠান্ডা হয়ে গেলে মাটির কলস বা কাঁচের যার বা বোতল এর মধ্যে রেখে দিবেন। প্লাস্টিকের বোতলে পানি রাখবেন না।
ডায়রিয়া হলে পানির স্বল্পতা এবং লবণের ঘাটতি হয়। মারাত্মক পানি স্বল্পতা দেখা দিলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে, ডায়রিয়ার স্যালাইন দেওয়া লাগতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাওয়ানো বা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না। অপ্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে, এক্ষেত্রে শিশুদের দিকে বেশি যত্ন নিতে হবে। বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে তাহলে ডায়রিয়া প্রতিরোধ করা যাবে।
আমাদের শেষ মন্তব্য,
পরিশেষে বলা যায় যে ডায়রিয়া হলে আমাদের অনেক খাবার গুলোই এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা এতে আরো ডায়রিয়ার সমস্যার বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য কিছু ফল রয়েছে যেগুলো খেলে আমাদের উপকার হবে, সেগুলো খাওয়া যেতে পারে।
তাই ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি উপকার হবে, পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url