ফেসবুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
অনেকে জানতে চায় ফেসবুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রচনা সম্পর্কে। তাই ফেসবুক যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় সে ক্ষেত্রে আমাদের উপকার হবে, তা না হলে ক্ষতি হবে। চলুন, ফেসবুক কিভাবে আমাদের উপকার করতে পারবে ও ক্ষতি হবে সে সম্পর্কে জানা যাক।
আমরা অধিকাংশ মানুষই ফেসবুক ব্যবহার করে থাকি, বিশেষ করে আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব দের সাথে যোগাযোগ রাখা যায় কিন্তু এটা যদি অপব্যবহার করা হয় ক্ষতি হবে। তাই ফেসবুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রচনা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃফেসবুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ফেসবুক কাকে বলে
ফেসবুক কাকে বলে? ফেসবুক এমন একটি সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট যেখানে আপনি আপনার জ্ঞান, বিচার, ধারণা, ছবি ভিডিও বা ব্যক্তিগত জীবনের দৈনন্দিন ঘটনা সমূহ ফেসবুকের মাধ্যমে অন্যের সাথে শেয়ার করা যাবে এজন্য অবশ্যই আপনাকে একটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
ফেসবুকে একটি জনপ্রিয় এবং বিনামূল্য সামাজিক নেটওয়ার্ক এর নিবন্ধিত ব্যবহারকারীদের প্রোফাইল তৈরি করা যায়। এজন্য তাদের ফটো ভিডিও আপলোড করতে পারবেন, বার্তা পাঠানো যায় এবং তাদের বন্ধু পরিবার সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করার সুবিধা থাকে।
যা কোন প্রকার চার্জ লাগে না, এই সাইটটি ব্যবহার করার মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন। একেবারে বিনামূল্য এটি ব্যবহার করার জন্য প্রায় ৩৭টি ভাষায় ব্যবহার করা যাবে।
ফেসবুকের মতে বর্তমান বিশ্বে নিবন্ধনকারী সংখ্যা বা ব্যবহার করে থাকে ২.৭ বিলিয়নের মত ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং জনপ্রিয়তার পিছনে কারণ হলো এটা খুবই সহজ ভাবে ব্যবহার করা যায়। এটা একটি সামাজিক মিডিয়া পরিষেবা যেখানে তুলনামূলকভাবে মানুষ মনের আদান প্রদান প্রকাশ করতে পারে। ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক পুরানো বন্ধুর খোঁজ খবর নেওয়া যায় এজন্য একটি ভালো সম্পর্ক থাকে।
ফেসবুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রচনা
ফেসবুকে একটি সোশ্যাল মিডিয়া যার মাধ্যমে আমরা সামাজিক যোগাযোগ করতে পারি। তাই ফেসবুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রচনা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো,
ফেসবুকের উপকারিতাঃ আমরা ফেসবুকের সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবো, যার মাধ্যমে ফেসবুকে ভালো কাজ করতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে আমাদের কি উপকার হবে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, ফেসবুকের উপকারিতা বা সুবিধা সমূহ আলোচনা করা হলো,
ব্র্যান্ড এবং ব্যবসার প্রমোশনঃ ফেসবুক আজকাল অনেকেই ব্যবহার করে থাকে, এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কে ব্যবহার করে আপনি ব্যবসা করতে পারবেন এবং আপনার ব্যবসার পণ্যকে প্রমোশন করতে পারবেন। হাজার হাজার ফলোয়ার রয়েছে এবং ব্যবহার করে থাকে। এই ফেসবুককে যদি আপনি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারেন।
তাহলে আপনার পণ্য বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারেন এবং টার্গেট কাস্টমারকে ফলো করতে পারবেন। তাছাড়া ফেসবুক গ্রুপ বা পেজের মাধ্যমে আপনার ব্যান্ড এবং ব্যবসার প্রমোশন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরতে পারবেন। এই ফেসবুক ব্যবহার করার ফলে আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে।
বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়দের সাথে কানেকশনঃ ফেসবুকের সবচাইতে বড় চ্যাটিং প্লাটফর্ম হওয়ার কারণে এখানে বেশিরভাগ মানুষই ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট করে থাকে। অ্যাকাউন্ট যদি থাকে তারা আপনার কোন বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়দের সাথে যদি কানেকশন থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি তাদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দেখতে পারবেন এটা আপনি একসেপ্ট করলে, আপনার বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
ভিডিও সেটিংঃ আপনি ভিডিওর মাধ্যমে কারো সাথে কথা বলতে পারবেন, এজন্য ফেসবুকে ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ ফেসবুকে বিনা মূল্যে ভিডিও, চ্যাটিং করা যায়। ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে আপনারা যেসব বন্ধু-বান্ধব আছে।
তারা যদি ফোন নাম্বার ব্যতীত আপনার সাথে যোগাযোগ করতে চায় সেটাও করা যেতে পারে। এছাড়া ভিডিও চ্যাটিং করতে পারবেন, এখানে সহজ ভাবে ভিডিও কল করে তাদের সাথে কথা বলা যাবে এবং আপনার সমস্ত আত্মীয়দের সাথে গ্রুপ তৈরি করেও একত্র কথা বলা যাবে।
ছবি ও ভিডিও আপলোডঃ ফেসবুকে আপনার নিজের বর্তমান ছবি অতীতের ছবি গুরুত্বপূর্ণ এবং বিভিন্ন ধরনের ভিডিও আপলোড করা যেতে পারে। যেসব ছবি ও ভিডিওগুলি আপনার সমস্ত ফেসবুক বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করা যাবে, আপনার কোনো ছবি বা ভিডিও ভালো লাগলে সেই সমস্ত ভিডিও গুলো আপনার ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে আপলোড করে দিবেন এবং আপনার বন্ধু-বান্ধবরা সেটা দেখতে পারবে।
জনপ্রিয় ব্যক্তি হওয়াঃ আপনি যদি জনপ্রিয় হতে চান সেক্ষেত্রে এই সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার নাম এবং আপনার কাজকর্ম সবই যদি এই ফেসবুকের মাধ্যমে জানাতে চান, এক সময় দেখবেন প্রচুর পরিমাণ আপনার ফলোয়ার হয়ে গেছে। এই ফেসবুককে যদি ব্যবহার করেন বা বিভিন্ন গ্রুপে আপনার ব্যক্তিগত বিষয়ে শেয়ার করেন। সেই ক্ষেত্রে দেখবেন অতি সহজেই ভাইরাল হয়ে গেছেন এবং বিখ্যাত হবেন।
নতুন কিছু শেখাঃ আজকের যুগে নতুন ইনফরমেশন যুক্ত হচ্ছে, এজন্য আপনি রোজ দিন যদি কিছু শিখতে চান। সেক্ষেত্রে আপনি ফেসবুকে ব্যবহার করতে পারেন, বিভিন্ন পত্রিকার বা বিভিন্ন মিডিয়ার সাথে যদি আপনি যুক্ত থাকেন। তাহলে এই সকল গ্রুপের মাধ্যমে আপনি প্রতিদিনের সংবাদও শুনতে পাবেন।
বর্তমানে আর কেউ পত্রিকায় পড়ে না, ফেসবুকের মাধ্যমেই তাৎক্ষণিক সংবাদ পাওয়া যায়। এটা আপনি নতুন কিছু শিখতে পারবেন অথবা ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক কিছু শিক্ষনীয় বিষয় অনেকে প্রচার করে থাকে, এখান থেকে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন।
মেমোরি মনে করিয়ে দেওয়াঃ ফেসবুকে আপনি অতীতে কোন ছবি ছেড়ে থাকে, সেই ছবিগুলো ডেট অনুযায়ী আপনার সম্মুখে পুনরায় উপস্থিত হবে। আবার দেখতে পারবেন একই তারিখে আপনার পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ে যাবে।
ফেসবুকে একইভাবে আপনার প্রত্যেকটি পুরনো ছবি পুনরায় নতুন করে বর্তমান ডেটে আপনার সামনে আসবে এবং সেই ছবিগুলো পুনরায় আবার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করতে পারবেন।
আপডেট খবর এবং ইনফরমেশনঃ ফেসবুকের মাধ্যমে অসংখ্য নিউজের গ্রুপ রয়েছে এবং আরো বিভিন্ন ধরনের গ্রুপ থাকে, আপনি সেই সমস্ত গ্রুপে যোগদান করে প্রতিদিন আপডেট খবর পেতে পারেন এবং নতুন ইনফরমেশন পাবেন।
ফেসবুকে জয়েন হওয়ার পর থেকে আপডেট খবর পাওয়া যাবে এবং টিভির সামনে বসে আর আপনাকে সংবাদ দেখা লাগবেনা। আপনি সময় মত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন করে ফেসবুকে গিয়ে সমস্ত আপডেট খবর এবং ইনফরমেশন নিতে পারবেন।
ফেসবুক ব্যবহারের অপকারিতাঃ ফেসবুক ব্যবহার করার কারণে যেমন উপকারিতা আছে ঠিক তেমনি আবার অপকারিতা আছে। তাই যদি আপনি ফেসবুক ব্যবহার করেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ফেসবুকের অপকারিতা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
সিকিউরিটি এবং প্রাইভেসিঃ ফেসবুকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো একজন ব্যক্তির সিকিউরিটি এবং প্রাইভেসি নষ্ট হয়ে যায়। ফেসবুকে অনেক ধরনের মানুষ থাকে যারা অনেক ব্যক্তির পার্সোনাল ফটো বা ভিডিওগুলো খারাপ কাজের ব্যবহার করতে পারে।
কারো সাথে অনেক ব্যক্তির পার্সোনাল ইনফরমেশন অনেক ব্যক্তির সামনে দেখা যায়। যার কারণে তাদের প্রাইভেসি অনেক সময় নষ্ট হতে পারে, যদি আপনার ব্যক্তিগত ইনফরমেশন নিজের সিকিউরিটি রাখতে চান, সে ক্ষেত্রে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করলে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সময় নষ্টঃ অনেক ব্যক্তি আছে যারা সারাদিন কাজকর্ম বাদ দিয়ে শুধু ফেসবুক চালায়, এর কারণে অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হতে পারে। সঠিক সময় যে কাজটি করা প্রয়োজন, সে কাজটি যদি না করে সারাদিন ফেসবুক চালায়, সে ক্ষেত্রে জীবনের অনেক সময় শুধু নষ্ট হবে। যদি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে ভালো কিছু করতে চান, তাহলে ফেসবুক যতটুকু সম্ভব কম ব্যবহার করতে হবে।
ফেক ফেসবুক প্রোফাইলঃ ফেসবুকে অনেক ফেক প্রোফাইল দেখা যায়, যারা আপনার বন্ধু-বান্ধব দের ছবি নিয়ে নিজেরা একটি প্রোফাইল তৈরি করবে এবং আপনার সাথে কানেকশন তৈরি করবে। আপনি তাকে অরজিনাল হয়তো মনে করবেন।
এতে আপনার ব্যক্তিগত ইনফরমেশন গুলো শেয়ার করে দিবেন। এই ধরনের আইডি থেকে আপনি দূরে থাকবেন, যদি ফেসবুক ব্যবহার করতে চান সে ক্ষেত্রে অরিজিনাল কিনা সেটা যাচাই করা লাগবে। এজন্য আপনার বন্ধুকে সরাসরি ফোনে কল দিয়ে জেনে নিবেন।
লাইক এবং কমেন্ট পাওয়ার ইচ্ছাঃ অনেক ব্যক্তি আছে যারা শুধুমাত্র লাইক এবং কমেন্ট পাওয়ার আশায় ফেসবুকে বেশিরভাগ সময় নতুন নতুন ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করতে থাকে। যার কারণে তাদের মনে সারাদিন ফেসবুক খোলার ইচ্ছা জেগে থাকে। তাদের ভিডিও বা ছবিতে কত লাইক এবং কমেন্ট হলো সেটা সবসময় মনের মাঝে জানার ইচ্ছা থাকে, যা মনোযোগ দিতে পারেনা।
ভার্চুয়াল জগতে প্রবেশ করাঃ ফেসবুক মূলত ভার্চুয়াল দুনিয়া এবং এই দুনিয়ায় যদি কেউ প্রবেশ করে তাহলে আপনার পরিবার-পরিজনের সাথে সময় দেওয়া হবে না। মানুষ তখন ফেসবুককে দুনিয়া মনে করে। যার কারণে প্রকৃত বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের থেকে অনেক দূরে চলে যায়।
স্বাস্থ্য শরীরের ক্ষতিঃ অতিরিক্ত ফেসবুক দেখলে মানসিক চাপ হতে পারে, যার কারণে আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে, সারাদিন ফেসবুক ব্যবহার করলে মাথার উপর চাপ সৃষ্টি হবে। মাথা যন্ত্রণা হতে পারে তাই আপনার স্বাস্থ্যের উপর চিন্তাভাবনা করে আপনাকে ফেসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
ফেসবুক ব্যবহার করার নিয়ম
ফেসবুক চালানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা লাগবে, না হলে আপনার ক্ষতি হতে পারে। তাই ফেসবুক ব্যবহার করার নিয়ম সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হলো।
ফেসবুকে একটি বিশ্ব সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থা করে দেয়, বর্তমানে এই ফেসবুক খারাপভাবেও অনেক ব্যবহার করছে। ফেসবুকের ফেক আইডি দ্বারা যে কোন মানুষকে ব্ল্যাকমেল করা যেতে পারে। একজন ব্যক্তির কাছে মূল অ্যাকাউন্ট থাকার পরেও আবার অনেকের একের অধিক ফেক অ্যাকাউন্ট থাকে।
অনেকে ছেলে মেয়েদের পিকচার দিয়ে তার প্রোফাইল তৈরি করে, নাম লেখে এবং মেয়েদের ছবিগুলো আপলোড করে। এতে অনেক অনেকে মেয়ে মনে করে তাদের সাথে সম্পর্ক করে। একটু বুদ্ধি খাটিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করলে এসব বিরক্ত করার কারণগুলো থেকে রক্ষা পাবেন।
ফেসবুকে কিভাবে আপনি ব্যবহার করবেন তার কিছু কৌশল জানা দরকার। তাহলেই আর অসুবিধা হবে না। চলুন, কিভাবে ফেসবুক চালালে আপনি অসুবিধায় পড়বেন না এবং সুন্দর ভাবে আপনি ফেসবুক চালাতে পারবেন।
বাড়ির ছোট ছেলেমেয়েদের ছবি ফেসবুকে দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। পাবলিক নয় শুধুমাত্র বন্ধু-বান্ধব যেন দেখতে পারে সেরকম ভাবে প্রাইভেসি সেভ করা লাগবে।
ব্যক্তিগত তথ্য ফেসবুকে না ছাড়াই ভালো,বাড়ির ঠিকানা, মোবাইল বা বাড়ির ল্যান্ড লাইন নাম্বার। জন্ম তারিখ এগুলো ফেসবুকে না দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল আপনি দেখতে পারবেন, পাশাপাশি সারা বিশ্বের মানুষও দেখতে পারবে। তাই আপনি যা পোস্ট করবেন সেগুলো লোকজন দেখতে পারবে এবং তাদের সামনে চলে আসবে।
তাই সব সময় কি করছেন কোথায় যাচ্ছেন যাবতীয় তথ্যগুলো ফেসবুকে দিবেন না। গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিলে শুধু আপনার নাম টাইপ করলেই ফেসবুকের মাধ্যমে সবার কাছেই আপনার যাবতীয় তথ্য ফাঁস হতে পারে।
বাড়িতে বা অফিসে নিজের কম্পিউটারে ফেসবুক প্রোফাইল খুলে রেখে দেওয়া ঠিক হবে না। অবশ্যই লগ আউট করতে হবে, আপনার যেকোনো সহকর্মী আপনার একাউন্টে নানান বাজে বাজে ব্যবহার করতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনি কখনোই হয়তো বলতে পারবেন না বা জানতে পারবেন না।
অচেনা প্রোফাইল থেকে পাওয়া ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করা ঠিক হবে না। আপনি যদিও জানেন না যে, আপনাকে যে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। সেকি সুন্দরী মেয়ে বা মিষ্টি দেখতে, এ ধরনের প্রোফাইল পিকচার দেখেই আপনি রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করবেন, এটা বোকামি হবে। আজকে অনেক দুস্কৃতিকারীরা তারা ফেসবুক প্রোফাইল বানিয়ে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
মনে করুন বাড়িতে আপনি একা আছেন, এই ধরনের পোস্টগুলো কখনোই আপলোড করবেন না। কারণ এতে আপনার বিপদ হতে পারে।
ফেসবুক হল সোশ্যাল মিডিয়া, আপনার জীবনের যাবতীয় তথ্য ফেসবুকে দেওয়া যাবে না। আপনার ছোটবেলায় কি কি ঘটনা ঘটেছে, আপনার বড় বেলায় কি হচ্ছে, কোথায় বেড়াতে গেলেন এই জাতীয় পোস্ট না দাওয়াই ভালো।
ছেলে মেয়েদের বয়স কমপক্ষের ১৩ না হলে ফেসবুক প্রোফাইল খোলা যাবে না, এতে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
বাড়ির বা অফিসের কম্পিউটার গুলোকে সবসময় অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করবেন, যাতে অ্যান্টিভাইরাস আপডেট থাকে।
নিজের মোবাইল সহ অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস গুলোকে সিকিওর করে রাখা দরকার। নিজের মোবাইল ফোন অন্যের হাতে দেওয়া যাবে না, ফেসবুক লগইন করে কোন অ্যাপস ব্যবহার করা যাবে না। অবশ্য লগ আউট করা লাগবে, এই কথাগুলো যদি আপনি ফেসবুকে ব্যবহার করতে চান। আপনি যদি সচেতন হন সেই ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো মানবেন, তা না হলে আপনি সমস্যায় পড়তে পারেন।
ফেসবুকের ইতিহাস
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি ফেসবুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রচনা সম্পর্কে, এখন জানবো এর ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো।
২০০৪ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র মার্ক জুকারবার্গ, জাস্টিন, মস্কোভিটজ এবং ক্রিস হিউজেস কয়েকজন বন্ধু মিলে ওয়েবসাইট ডিজাইন করে এবং ছাত্ররা তাকে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে। যেখানে তারা তাদের সমস্ত ছবিগুলো শেয়ার করতে থাকে।
আর এ ওয়েবসাইটের নাম দেওয়া হয় the facebook.com এবং এটি সেই সময় হারবার্ড ক্যাম্পাসে জনপ্রিয় হয়। এরপরে আরো একটা ওয়েবসাইট তৈরি করে যার মূল উদ্দেশ্যই ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত নতুন শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ডিরেক্টরী তৈরি করবে।
তখন এই ওয়েবসাইটের সদস্য পদ শুধুমাত্র হারবার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের তাদের অধীনে থাকে কিন্তু খুবই কম সময় মধ্যেই জনপ্রিয়তা হয়।
কলেজের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা অন্তর্ভুক্ত হয়। একই সাথে ২০১৩ সালের ফেসবুকের মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ১০ লক্ষ এর কাছাকাছি।
ফেসবুকের প্রেস রুম অনুযায়ী এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের ২.৭ বিলিয়নের বেশি লোক ব্যবহার করে থাকে।
ফেসবুক হল ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কোম্পানি এর সদর দপ্তর পালো অল্টো, ক্যালিফোর্নিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থাপিত হয়। মার্ক জুকারবার্গ এর বয়স তখন ২৪ বছর এবং হারবার্ড থেকে ড্রপ আউট, ফোর্বস ম্যাগাজিনে বিশ্বের বিলিয়নেয়ারদের তালিকা ৭৮৫ তম স্থান দখল করে এবং তার সম্পদ ছিল প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার।
শিক্ষার্থীদের উপর ফেসবুকের প্রভাব
ফেসবুক চালানোর কারণে অনেক ছাত্র ছাত্রী ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তাই শিক্ষার্থীদের উপর ফেসবুকের প্রভাব রয়েছে। সে সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। চলন, এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানা যাক।
ফেসবুক একটি অনলাইন প্লাটফর্ম, যেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যতম। সারাবিশ্বের মানুষের সাথে যোগাযোগ করা যায়। খুব সহজেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সম্পর্ক গড়ে তোলা যেতে পারে।
২০০৪ সালে মার্ক জুকারবার্গ এই ফেসবুক চালু করেন। যা খুব দ্রুত গতিতে দেশ-বিদেশে ছড়াতে থাকে। পৃথিবীর প্রতিটি আবিষ্কারের ভালো এবং খারাপ দিক রয়েছে। তবে সেটি সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করবে ব্যবহারকারীদের উপর। প্রতিমাসে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারী অধিকাংশই ছাত্র।
এই ফেসবুক ছাত্র-ছাত্রীদের উপর কিভাবে ক্ষতি করতে পারে এবং প্রভাবিত করতে পারে। সে সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেওয়া যাক,
ভালো প্রভাবঃ সহপাঠীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য এই ফেসবুক ব্যবহার করলে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ভালো একটি সম্পর্ক থাকে অথবা স্যারদের সাথে যদি যুক্ত থাকা যায়। সে ক্ষেত্রে তাদের বক্তব্যগুলো যদি ফেসবুকে ছাড়া হয় সে ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা অনেকটাই উপকৃত হতে পারবে। এক্ষেত্রে ফেসবুক ব্যবহার করলে সুবিধা রয়েছে বা উপকার আছে।
আবার নির্দিষ্ট শ্রেণীর গ্রুপ যদি থাকে সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো একটি গ্রুপ খুলে সেখানে শ্রেণিকক্ষের সকল কিছু বিস্তারিতভাবে সেখানে শেয়ার করা যেতে পারে। এতে তারা বন্ধুবান্ধবগুলো দেখতে পারবে তাহলে অনেকটাই উপকার হবে। কারণ অনেক সময় নোটিশ দিয়ে থাকে হয়তো অনেকে জানে না।
যদি একজন জানে তাহলে গ্রুপে শেয়ার করলে প্রত্যেককে দেখতে পারবে। যদি কেউ পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোন কিছু বুঝতে না পারে তাহলে তারা গ্রুপে যদি নক করে, তাহলে অন্য কেউ যদি বুঝে থাকে সেটা বুঝাতে পারবে। এইদিকে অনেকটাই উপকার করবে এই ফেসবুক গ্রুপ।
ফেসবুক নিয়ে গবেষণাঃ ১০০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৫২% ছাত্রছাত্রী ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ফেসবুক চালিয়ে থাকে। ২৯% প্রতিদিন ৩ ঘন্টা থেকে ৫ ঘন্টার মত ব্যবহার করে এবং ১০% অল্প সময় চালিয়ে থাকে।
পড়াশোনার জন্য আধা ঘন্টার মত সময় ব্যয় করে ৭৫% এবং অন্যরা এক থেকে দুই ঘন্টা ব্যয় করতে পারে।
ছাত্র-ছাত্রীরা সাধারণত ফেসবুক ব্যবহার করে থাকে যে সকল বিষয় তাহল; বন্ধু বান্ধবের সাথে যোগাযোগ করতে ৩০% ব্যবহার করে, ফটো বা ভিডিও প্রকাশ করার জন্য ১১% আর খেলাধুলা বিষয়ে ৫% চ্যাট করে থাকে ২২% এপ্লিকেশন গুলো ব্যবহার করে।
৭% মেসেজিং করে থাকে ১৩% ফ্যাকাল্টির সাথে যোগাযোগ করে ৬% করে। তাহলে দেখতেই পাচ্ছেন এই একটা পারসেন্টেন্স করাতে দেখা গেল শিক্ষার্থীরা ফেসবুক ব্যবহার করে সাধারণত চ্যাট করার এবং গেমস খেলার ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার করে।
জীবনে ফেসবুকের প্রভাবঃ শিক্ষার্থী ৭৮% শিক্ষার্থী নিজেরাই স্বীকার করবে যে তারা অতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহার করে, এতে রেজাল্ট খারাপ হয়েছে। তাছাড়া ছাত্ররা আরো বলে যে ছাত্র জীবনে ফেসবুক খারাপ আসক্তি থাকার কারণে সামাজিক ভাবে অনেকটাই এবং বন্ধুবান্ধবের কাছে আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা করতে পারে না। এই ফেসবুক চালানোর কারণে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
বিজ্ঞানীদের মতে শিক্ষার্থীরা ফেসবুক আসক্তিতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা একপ্রকার আসক্তি হয়ে যাচ্ছে। যখন ফেসবুক না চালাতে পারে তখন তারা একাকী মনে করে, এতে সামাজিক, শারীরিক ভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ সকল সমস্যার সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার ক্ষেত্রেও গ্রেড কমে যায়। শিক্ষার্থীদের মন মানসিকতার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে, তারা সামাজিক মিডিয়া আসক্তি থাকার কারণে পড়াশোনায় আগ্রহ থাকে না।
শেষ কথাঃ ফেসবুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
পরিশেষে বলা যায় যে যদি আপনি ফেসবুক ব্যবহার করতে চান, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে আপনার উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে, এজন্য ফেসবুক চালানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা লাগবে। তাই ফেসবুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রচনা সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে, আশা করি উপকার হবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url