ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে ও কিভাবে শিখবো জেনে নিন

অনেকে জানতে চায় যে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে? আসলে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আপনার মেধা, আগ্রহ, ধৈর্য এ বিষয়ের প্রতি নির্ভর করবে কতটুকু সময় লাগবে। চলুন, ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য কতটুকু সময় লাগতে পারে সে সম্পর্কে জানা যাক।
ছবি
অনেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চায় কিন্তু তাদের ধৈর্য এবং পরিশ্রম করার মত মন মানসিকতা নেই। তারা অল্প সময়ের মধ্যে শিখতে চায়, যার কারণে সফলতা অর্জন করতে পারে না। তাই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে? সম্পর্কে জানতে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে ও কিভাবে শিখবো জেনে নিন

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

অনেকে প্রশ্ন করে থাকে যে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো? আসলে এটা নির্ভর করবে আপনার জানার আগ্রহের উপরে। তাই আপনি বিভিন্ন অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন। এ সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো,

অনেকেই টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ধরনের কোর্স করে ফ্রিল্যান্সিং শেখে আবার অনেকে অনলাইনে কোর্স করে থাকে। তবে আজকে আলোচনা করব কিভাবে ফ্রি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন, সে সম্পর্কে। চলুন কিভাবে অনলাইনে মাধ্যমে আপনি বিনামূল্যে এই কাজ শিখতে পারেন সে সম্পর্কে জানা যাক। 

ফ্রিল্যান্সিং শেখার আগে আপনাকে মনস্থির করা লাগবে যে, আপনি কোন বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহ। যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে আপনি কোন কাজটি করতে পছন্দ করেন। সেটা আগে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে এবং অনলাইনে বিভিন্ন ইউটিউব এ টিউটোরিয়াল দেখবেন।

যে কাজ টির প্রতি ভালো লাগে সেই কাজটা আপনি আগ্রহের সাথে শিখবেন। তাহলেই আপনি সফলতা অর্জন করবেন, তাছাড়া আপনি অনলাইনের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে ভিডিও টিউটোরিয়াল দেওয়া আছে। যদি আপনি কারো সহযোগিতা ছাড়া এগুলো শিখতে পারেন, তাহলে আপনার আর টাকা দিয়ে টাকা দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হবে না।

এছাড়া আপনি আর একটা কাজ করতে পারেন, আপনার প্রতিবেশী অথবা আপনার কেউ পরিচিত যদি ফ্রিল্যান্সিং শিখে থাকে। তার কাছে গিয়েও সহযোগিতা নিয়ে আপনি বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন।
বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে অনেক তথ্য পাবেন। তাই আপনি এ বিষয়ে যদি শিখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রাথমিক ধারণা নেয়ার জন্য গুগল অথবা ইউটিউবে সার্চ করা লাগবে। প্রথম সপ্তাহে শুধু আপনি সার্চ করবেন এবং বিভিন্ন তথ্য জানবেন। আপনার যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন ভালো লাগে বা ওয়েব ডিজাইন।

ডেভেলপমেন্ট ডিজিটাল মার্কেটিং এই কাজগুলো শিখতে চান, তাহলে ইউটিউবের ভিডিওগুলো দেখতে পারেন। যদি কিছুটা কাজ করতে পারেন তবে পর্যায়ক্রমে আপনি বাকি কোর্সগুলো করতে পারবেন। অনলাইনে প্রয়োজনীয় তথ্য খুজবেন যে বিষয়গুলো আপনার প্রয়োজন হবে।

অনলাইনে সার্চ করার সময় যখন গুরুত্বপূর্ণ কোন তথ্য পান, সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই বুক মার্ক করে রাখবেন অথবা কোথাও সংরক্ষণ করার চেষ্টা করবেন। এজন্য পাঁচ থেকে দশটি ওয়েবসাইট খোজার চেষ্টা করবেন, আপনার নির্বাচিত বিষয়ে যদি কোন তথ্য পান সেগুলো নিয়মিত ভাবে হাল নাগাদ করার চেষ্টা করবেন।

বিভিন্ন ওয়েবসাইটের পাশাপাশি পাঁচ থেকে দশটি ইউটিউব চ্যানেলেও খোঁজ নিতে পারেন, যেখানে আপনি আপনার নির্বাচিত বিষয়টি যদি কোন প্রশিক্ষণের ভিডিও থাকে সেগুলো দেখার চেষ্টা করবেন।

ফেসবুক বা অন্য কোন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আপনার পছন্দের বিষয়ে দুই থেকে পাঁচটি গ্রুপের সঙ্গে নিয়মিত ভাবে যুক্ত হতে পারেন। এতে বর্তমানে কোন ধরনের কাজের চাহিদা আছে সে বিষয়ে ধারণা পেয়ে যাবেন।

অনলাইনের মাধ্যমে প্রায় সব বিষয়েই বিনামূল্যে ভালো কোর্স সম্পর্কে ভিডিও দেওয়া থাকে বা পরামর্শ দেওয়া থাকে। তাই আপনার পছন্দের বিষয়ে দুই থেকে তিনটি কোর্স নিবন্ধন করে প্রশিক্ষণ নেওয়া যেতে পারে।

অনলাইনের মাধ্যমে প্রায় সব বিষয়ে বিনামূল্যে ই-বুক পাওয়া যেতে পারে, সেখানেও আপনি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এই বিষয়টা পছন্দ করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে

অনেকে জানতে চায় যে, ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে? এক্ষেত্রে সময় নির্ভর করবে আপনার কাজের ওপরে। আপনি কতটুকু কাজ করতে আগ্রহী রয়েছে এবং কতটা পরিশ্রমে তার ওপর নির্ভর করবে, কত সময় লাগবে। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো,

ফ্রিল্যান্সিং কাজ শেখার জন্য যে সময়টুকু দেয়ার প্রয়োজন, সেই সময়টুকু যদি আপনি না দেন। তাহলে আপনার বেশি সময় লাগবে। যদি আপনি প্রয়োজন অনুযায়ী চেষ্টা করেন তাহলে খুব দ্রুত সফল হতে পারেন।

আর যদি সময় দিতে না পারেন তাহলে সফলতা পাবেন না। ফ্রিল্যান্সিং শেখার সময় অনেক কষ্ট হতে পারে, যদি আপনি প্রফেশনাল হিসাবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে চান,তাহলে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা লাগবে এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

তাই ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য কতটুকু সময় লাগতে পারে, এই প্রশ্নটা আপনি নিজেকে করে এর উত্তর পেয়ে যাবেন। আশা করি এই বিষয়ে বুঝতে পেরেছেন। আজ পর্যন্ত যত ফ্রিল্যান্সার সফলতা অর্জন করেছে তারা দুটি কাজ ভালোভাবে করেছে এক নাম্বার ধৈর্য ধরতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সর্বোচ্চ যে পরিশ্রম করতে হবে। চলুন দু-একটা বিষয়ে জানা যাক কোন বিষয়ে কতটুকু সময় লাগতে পারে।

ওয়েব ডিজাইন শিখতে কতদিন লাগতে পারেঃ ওয়েব ডিজাইন শেখার জন্য পাঁচ থেকে ছয় মাস বা তার কম বেশি হতে পারে। ওয়েব ডিজাইন শিখতে প্রতিদিন কিছু ঘন্টা সঠিকভাবে টাইম দিতে হবে। যদি আপনি ভালোভাবে বুঝতে শিখতে পারেন তাহলে আপনি এই কয়েক মাসের মধ্যেই ভালো শিখতে পারবেন।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কত সময় লাগেঃ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট মূলত টেক সম্পর্কে অর্থাৎ টেকনোলজি সব বিষয়ে আপডেট থাকা লাগবে। তাই সঠিকভাবে এই বিষয়ে বলা কঠিন যে আপনার কতটুকু সময় লাগবে। আপনার চেষ্টার উপরে নির্ভর করতে পারে যে, আপনি কতটুকু সময় দিচ্ছেন। 

সেই অনুযায়ী আপনার সময় লাগতে পারে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর ক্ষেত্রে একটু কঠিন হলেও কিছুটা সহজ হতে পারে। কারণ আপনি যদি ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে কাজ জানা থাকে, তাহলে অবশ্যই ডেভেলপমেন্ট শিখতে আপনার এক থেকে দুই বছরের মত সময় লাগতে পারে। তবে ভালোভাবে যদি কেউ কাজ শেখে এর চেয়ে কম সময়ে মধ্যে কাজ করতে পারবেন।

SEO শিখতে কতদিন লাগবেঃ এশিয়ার এসইও এর কাজ বেসিক কাজ শেখার জন্য প্রায় এক থেকে দুই মাসের মত সময় লাগবে। আর যদি এতে এক্সপার্ট হতে চান সে ক্ষেত্রে ছয় মাস থেকে এক বছরের মত সময় লাগতে পারে।

এসইও এর জন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কিছু জানার চেষ্টা করতে হবে এবং বোঝার চেষ্টা করবেন। এসইও শেখার জন্য আপনার ততদিনই সময় লাগবে, যতদিন আপনি সঠিকভাবে কোন ওয়েবপেজকে গুগলের পাঁচ নাম্বার মধ্যে যদি না নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে আপনি SEO কাজে কোন কিছুই শেখেননি।

যদিও ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য যে সময় টাকা লাগবে, সেটার নির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই তবে ধারণা করা হয় একজন ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য যদি ধৈর্য এবং পরিশ্রম ধরে নিয়ে কাজ করতে থাকে। তাহলে ৬ থেকে ১ বছরের মধ্যেই কাজ শিখতে পারবে। ১ বছরের মধ্যে যে বিষয়টি নিয়ে আপনি কাজ করবেন আশা করা যায় আপনি এক্সপার্ট হয়ে যাবেন।

ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কি প্রয়োজন

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যে জিনিসগুলো আপনার লাগবে, তা জানা প্রয়োজন। তাই ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কি প্রয়োজন? কারণ যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান, তাহলে যে বিষয়গুলো আপনার দরকার সেগুলো অবশ্যই সংগ্রহ করতে হবে। চলুন, কি প্রয়োজন হতে পারে সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাঃ ফ্রিল্যান্সিং শেখার পূর্বে আপনার নিজেকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যে আপনি কোন বিষয়টি শিখতে আগ্রহ রয়েছে। নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে সবচাইতে বড় ভুলটা করে থাকে। যে বিষয়টা সে কাজ করবে এটা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং তাদের এই ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অনেক সময় ক্যারিয়ারটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

এজন্য আপনার যে কাজটি ভালো লাগবে আপনার মেধায় তাড়াতাড়ি কাজ করবে সেই বিষয়টা নিয়ে আপনাকে ধৈর্য এবং পরিশ্রম সহকারে লেগে থাকলে আপনি সফলতা অর্জন করবেন। তাই আপনাকে আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া লাগবে কোন কাজটি আপনি করতে পারবেন।

কৌশলঃ ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য কিছু কৌশল জানতে হবে, এমন কিছু কাজ আছে যেগুলো শর্টকাটে করা যেতে পারে। আপনি যদি সেই কাজগুলো কৌশল ব্যবহার করে শর্টকাটে করতে পারেন। তাহলে তাড়াতাড়ি আপনি কাজ শিখতে পারবেন।

আর যদি কৌশল ও শর্টকাট না জানেন তাহলে আপনার ওই কাজ শিখতে অনেক সময় লেগে যেতে পারে। তাছাড়া কোন বিষয়ে যদি না জানা থাকে, সেই ক্ষেত্রে কিভাবে গুগল বা ইউটিউব এ সার্চ করে বের করবেন সে জিনিসটা জানতে হবে।

ইংরেজির দক্ষতাঃ আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর সফলতা অর্জন করতে চান, সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ইংরেজিতে দক্ষতা থাকা লাগবে। কারণ ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করতে গিয়ে ইংরেজি যদি না জানতে পারেন, ইংরেজিতে বায়ারের সাথে কথা না বলতে পারেন, সে ক্ষেত্রে কিন্তু কমিউনিকেশনের গ্যাপ রয়ে যাবে।
এতে কাজ পাবেন না, তাহলে বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে। আপনি যদি বায়ারের সাথে ভালোভাবে কথা না বলতে পারেন। তাহলে সে ক্ষেত্রে অর্ডার ক্যানসেল হয়ে যেতে পারে অথবা আপনার প্রোফাইলের মধ্যে খারাপ রেটিং চলে আসতে পারে।

যা আপনার আইডির জন্য অনেক খারাপ হবে। যদি আপনি ইংরেজিতে একটু ভালো না জানেন সে ক্ষেত্রে আগে ইংরেজিটা ভালো করে শিখে নিতে হবে।

এজন্য গুগল ট্রান্সলেটর সাহায্য নিতে পারেন, সাধারণত বায়ারদের সাথে যে কথাগুলো হয় সেগুলো আগে থেকেই আপনি গুগল ট্রান্সলেট এর মাধ্যমে ইংরেজি শিখে নিবেন। তাহলে আপনি বায়ারদের সাথে কথা বলতে সুবিধা হবে।

জ্ঞান ও দক্ষতাঃ ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্ব দেওয়া হয়, আপনি যে স্কিলটা অর্জন করেছেন সেটা সম্পর্কে কতটা দক্ষতা আছে এবং কতটা এই বিষয়ের উপর জ্ঞান আছে, আপনার সৃজনশীলতা আছে এ বিষয়গুলো নির্ভর করে আপনার ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফলতা। যদি আপনি যে বিষয় নিয়ে কাজ করবেন সেটাতে জ্ঞান এবং দক্ষতা কম থাকে।

তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর সফলতা পাবেন না। যদি আপনি যে কাজটি শিখেছেন সেটা ভালো দক্ষতা অর্জন করেন নাই, তাহলে আপনি যদি অর্ডারও পান সেক্ষেত্রে কাজটি যদি ভালোভাবে না করে দিতে পারেন। তাহলে আপনার একাউন্টের উপর ব্যাড রিপোর্ট দেওয়ার কারণে আপনার একাউন্টের ক্ষতি হতে পারে।

কম্পিউটার বা ল্যাপটপঃ ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য অবশ্যই আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থাকা লাগবে। অনলাইনের মধ্যে আপনাকে অনেকেই বলবে মোবাইলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করা যাবে, আসলে মোবাইল দিয়ে প্রফেশনাল ভাবে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় না। এ কথাটা ভালো করে মনে রাখবেন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার থাকা লাগবে। তাহলে আপনি সফলতা অর্জন করবেন।

ইন্টারনেট কানেকশনঃ যদি প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সিং হতে চান, তাহলে আপনার বাসায় ওয়াইফাই কানেকশন দিতে হবে। তাছাড়া মডেম লাগবে, ইন্টারনেট কিনেতে হবে। যখন বিদ্যুৎ চলে যাবে তখন ডাটার মাধ্যমে কাজ করা লাগে।

ধৈর্যঃ ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফলতা হওয়ার জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ধৈর্য এবং পরিশ্রম। যদি আপনি ধৈর্য হারা হয়ে যান তাহলে আর সফলতা অর্জন করতে পারবেন না। এজন্য ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনাকে ধৈর্য ধরে এর পিছনে লেগে থাকতে হবে।

তাহলে আপনি এই সেক্টরে ভালো করতে পারবেন এবং সফলতা অর্জন করতে পারেন। অল্প সময়ের মধ্যেই যদি আপনি ধৈর্য হারা হয়ে যান তাহলে কখনোই আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন না।

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

এতক্ষণ আমরা জেনেছি যে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে? এখন জানবো যে কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে। আসলে এই বিষয়টি নির্ভর করে আপনি কোন কাজটি ভালো জানেন তার উপরে। কারণ প্রত্যেকটা কাজই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো;

ওয়েব ডিজাইনারঃ ফ্রিল্যান্সিং জগতে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওয়েব ডিজাইন। হাজার হাজার ওয়েবসাইট তৈরি করা লাগে, প্রতিটা কোম্পানি অনলাইনে তাদের প্রচারণা করার জন্য নিজস্ব ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে থাকে। এই ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য অবশ্যই একজন ওয়েব ডিজাইনার কে প্রয়োজন হবে।

এজন্যই একজন ওয়েব ডিজাইনের চাহিদা অনেক রয়েছে। আপনি যদি ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে দক্ষ হতে পারেন তাহলে খুব সহজে ফ্রিল্যান্সিং করে অনেক টাকা ইনকাম করা যাবে। তবে এর আগে অবশ্যই আপনার ওয়েব ডিজাইনার কাজ শিখতে হবে একজন দক্ষ ওয়েব ডিজাইনের কাছে থেকে।

গ্রাফিক ডিজাইনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি অত্যন্ত সৃজনশীল কাজ, এই কাজটি সবার মেধা নাও ঢুকতে পারে। এক্ষেত্রে এই কাজটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং অনলাইন, অফলাইনে এর কাজের চাহিদা অনেক। বিভিন্ন কোম্পানি ইন্টারনেটে তাদের ওয়েবসাইট তৈরি করার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটের লোগো তৈরি করার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

সে ক্ষেত্রে একজন গ্রাফিক ডিজাইনার প্রয়োজন হয়, এজন্য আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনার যদি হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কাজের অভাব পড়বে না। তাছাড়া একজন গ্রাফিক ডিজাইনার হিসাবে লোগো তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে।

যেমন বিজনেস কার্ড তৈরি করা, নিউজ লেটার তৈরি করতে পারবে, বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যেতে পারে। তাই একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আপনাকে ফটোশপ এবং ইলস্টেটরের কাজ জানতে হবে এবং দক্ষতা অর্জন করা লাগবে।

অ্যাপস ডেভেলপমেন্টঃ এর কাজের চাহিদা অনেক রয়েছে, বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবসা প্রচারণা করার জন্য নিজস্ব প্রয়োজন হয়। এজন্য তারা অ্যাপস ডেভেলপারদেরকে ভাড়া করে থাকে। অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট এর কাজ শেখার জন্য একটু সময় বেশি লাগে, ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে শিখতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিংঃ সবচেয়ে জনপ্রিয় সেক্টর হল ডিজিটাল মার্কেটিং, ডিজিটাল মার্কেটিংটা অনেক বড় একটি প্লাটফর্ম। কোন পণ্য যদি একটা প্রতিষ্ঠান বিক্রি করতে চায় সেক্ষেত্রে মার্কেটিং এর প্রয়োজন। যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দেওয়া লাগে ফেসবুক instagram, linkdin, twitter এগুলোর মাধ্যমে তাদের পণ্যের উপর বেশি বেশি পোস্ট কমেন্ট শেয়ার ভিডিও এগুলো তৈরি করার কাজ করা যেতে পারে।

এটা পণ্যের বিক্রয় বাড়ানোর জন্যই ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজন হয়। আপনার নিজস্ব যদি কোন পণ্য থাকে বা আপনি নিজেও যদি বিজনেস করতে চান অনলাইনের মাধ্যমে সেক্ষেত্রে আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ জানা থাকতে হবে অথবা একজন ডিজিটাল মার্কেটারকে হায়ার করা লাগবে। তাই এই বিষয়ে যদি আপনি দক্ষতা অর্জন করতে পারেন, তাহলে আপনি অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনঃ এসইও এর কাজ যদি আপনি জানা থাকে সেক্ষেত্রে অনেক ভালো পারফরমেন্স করতে পারবেন। কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট হলো এসইও। এর কাজ হল আপনার কোন ওয়েবসাইট আছে সেটাকে গুগল সার্চে রেঙ্ককে নিয়ে আসতে হবে।

তাই আপনার উদ্দেশ্য থাকতে হবে গুগলে যেন আপনার ওয়েবসাইট এক থেকে পাঁচের মধ্যে থাকে। তাছাড়াও বিভিন্ন ব্লগ ইউটিউব ভিডিও এই ধরনের কাজগুলো মানুষের সম্মুখে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এসইও এক্সপার্ট প্রয়োজন হবে।

কনটেন্ট রাইটিংঃ ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি পার্ট যা দিনে দিনে অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। মার্কেটপ্লেসে এই রাইটারদের লেখালেখির অনেক সুযোগ আছে, যেমন বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটে ব্লগ তারপর বিজনেস প্রোফাইল ভিডিও স্ক্রিপ্ট লেখা অনলাইনে নিউজ পেপার এই ধরনের কাজগুলো লেখালেখির মাধ্যমে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

তাছাড়া আপনি নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট খুলে সেখানে বিভিন্ন ধরনের বিষয় লেখালেখি করে গুগলে রেঙ্ককে এ নিয়ে আসতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আপনি গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমেও ইনকাম করতে পারবেন। তাই এই কাজটিও অনেক চাহিদা রয়েছে এবং গুরুত্ব আছে।

নতুনদের জন্য সহজ কিছু কাজঃ যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ করতে চাচ্ছেন বা শিখতে চাচ্ছেন তাদের জন্য প্রথম অবস্থায় ওয়েব ডিজাইন বা অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর কাজ গুলো করা যেতে পারে।

তাছাড়া এক্ষেত্রে যদি আপনি এগুলো কাজ দিয়ে শুরু করতে পারেন, এছাড়া আপনি নিজে নিজেই আপনাকে বেছে নিতে হবে যে কোন কাজটি করলে আপনি তাড়াতাড়ি ইনকাম করতে পারবেন। নিম্নে এই কাজগুলো খুবই সহজ এবং দ্রুত গতিতে শেখা যায় তা আলোচনা করা হলো;
  • ডাটা এন্ট্রি খুবই সহজ একটি কাজ
  • লিড জেনারেশন এর কাজ শিখতে পারেন
  • কপি এডিটর বা প্রুফ রিডার হিসেবে কাজ করতে পারবেন
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ শিখতে পারেন
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করা যায়।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফল হওয়ার জন্য সবচাইতে মূল মন্ত্র হলো ধৈর্য এবং পরিশ্রম করতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই, কোন কাজে যদি এক্সপার্ট হতে চান সেক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হয়। বর্তমানে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের আসতে চায় কিন্তু তাদের ধৈর্য নাই অল্প সময়ের মধ্যে ইনকাম করতে চায়। 

যার কারণে তাড়াহুড়া করে এবং ধৈর্য ধারণ করে না। এই সকল লোকগুলো সফলতা অর্জন করতে পারে না। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যে কোন একটি বিষয়ে আপনাকে খুবই এক্সপার্ট হতে হবে। এজন্য যত সময় লাগে এবং দক্ষতা অর্জন করতে হয়, পরিশ্রম করতে হয়। সেটা আপনাকে করতে হবে তাহলে আপনি সফলতা পাবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি

ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে অনেক কি টেনশনে থাকে যে এর ভবিষ্যৎ কেমন হবে। তাই ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি? সম্পর্কে জানা প্রয়োজন নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ জানার আগে বর্তমান কি অবস্থা সেটাও জানা প্রয়োজন। তাই ফ্রিল্যান্সিং এর অবস্থা অত্যন্ত ভালো, কারণ বর্তমানে ১.৫৭ বিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার কাজ করছে। তাই এর ভবিষ্যতে বেশি ফ্রিল্যান্সার কাজ করবে এবং ভবিষ্যতে উন্নত লাভ করবে।

বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণরা ফ্রিল্যান্সারকে প্রফেশনাল হিসেবে নিচ্ছে যার কারণে তারা ভালো কিছু করছে এবং বৈদেশিক মুদ্রা ইনকাম করছে। যা দেশের জন্য অনেক উন্নয়ন করবে, তাই তারা যেন একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসাবে দেশে কাজ করছে।
এক কথায় বলতে গেলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সম্ভাবনা খুবই ভালো আগামী দিনগুলোতেও ফ্রিল্যান্সিং আরো ভালো হবে। তাই এই সেক্টরে অনেকের কর্মসংস্থান হবে এবং নতুন নতুন কাজও যুক্ত হবে।

যার কারণে এর ভবিষ্যৎ আরো ভালো দিকে যাবে। ভবিষ্যতের আরো অনেক ফ্রিল্যান্সার হবে এতে দেশের অনেক উন্নত হবে।

সর্বোপরি বলা যায় যে বর্তমানের উপর নির্ভর করে দেখা যাচ্ছে যে ভবিষ্যতে এই সেক্টরের চাহিদা বেশি হবে। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের চাহিদা অনেক বেশি হবে এবং অনেক মেধাবী দক্ষ ফ্রিল্যান্সার গড়ে উঠবে, এতে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন হবে এতে দেশের উন্নয়ন ঘটবে।

ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়

ফ্রিল্যান্সিং থেকে যদি ইনকাম করতে চান তাহলে আপনাকে কিছু কৌশল জানতে হবে। তাই ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়? এ সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করতে হবে ধৈর্য ধারণ করতে হবে তাহলেই সফলতা অর্জন করা যায়।
ছবি
যদি আপনি একটি বিষয়ে ভাল দক্ষতা অর্জন করতে পারেন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। তাহলে বিভিন্ন ধরনের মার্কেটপ্লেস এবং মার্কেটপ্লেসের বাহিরেও কাজ করে আপনি অনেক টাকা ইনকাম করার সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে তবে ফ্রিল্যান্সিং কে কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন এসব সম্পর্কে নির্ধারিত পরিমান বলা যাবে যায় না।

কারণ এটা কাজের উপর নির্ভর করবে যে যত বেশি কাজ করবে সে তত বেশি টাকা ইনকাম করবে এবং আপনার কি পরিমাণ অর্ডার আসে কি পরিমান কাজ করতে পারছেন তার উপর ভিত্তি করেই আপনার কত টাকায আয় এটা নির্ধারণ করা যাবে। তবে সাধারণত একজন ফ্রিল্যান্সার যদি ভালোভাবে পরিশ্রম করে এবং দক্ষতা থাকে তাহলে সে লক্ষ টাকার উপরে ইনকাম করতে পারবে।

একজন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিল্যান্সাররা মাসে প্রায় বাংলাদেশি টাকায় ৫ লক্ষ টাকার মতো ইনকাম করে। তাছাড়া আমাদের বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররাও অনেক টাকা ইনকাম করছে, অনেক বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা মাসে ৩০০ থেকে ৪০০ ডলার এর মত ইনকাম করে থাকে। ইনকাম করার জন্য অবশ্যই আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং তার ধৈর্য ধারণ করা লাগবে।

সমাপনী কথাঃ ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে ও কিভাবে শিখবো জেনে নিন

পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান, সেই ক্ষেত্রে আপনাকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন বিষয়ে আপনি শিখতে আগ্রহ রয়েছে। এজন্য আপনাকে মনস্থির করতে হবে তারপর আপনি ফ্রিল্যান্সিং শেখা চেষ্টা করবেন।

তাই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে? সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি উপকার পাবেন, পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪