মহিলাদের জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম ও ইমামতির বিধান জানুন

অনেক মহিলারা জানতে চায় যে মহিলাদের জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে। তাই মহিলারা জামাতে নামাজ পড়তে পারবে, তবে কিছু নিয়ম জানতে হবে। চলুন, মহিলারা জামাতে কিভাবে নামাজ পড়তে পারবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে মসজিদে নারীদের নামাজ পড়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। পর্দা বিষয়ে খুবই সতর্কতা আছে কিন্তু আমাদের বাংলাদেশসহ অনেক মুসলিম দেশে এরকম ব্যবস্থা নেই। তাই মহিলাদের জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃমহিলাদের জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম ও ইমামতির বিধান জানুন

মহিলাদের জুমার নামাজ পড়ার নিয়ম

পুরুষের মত মহিলারা জুমার নামাজ পড়তে পারে কিনা, তাই মহিলাদের জুমার নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা প্রয়োজন নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

জুমার নামাজ সাধারণত পুরুষেরা পড়ে থাকে যা তাদের উপর ফরজ। নারীদের উপর ফরজ না, নারীরা সাধারণত জুমার নামাজের সময় যোহরের নামাজ আদায় করবে। নবী করীম সাঃ হাদিসে বর্ণনা করেছেন।

তারেক ইবনে শিহাব রাঃ বর্ণনা করেন নবী করীম সাঃ বলেছেন জুমার নামাজ প্রত্যেক মুসলমানের উপর জামাতের সাথে আদায় করতে হবে। কারণ এটা ওয়াজিব কিন্তু কিছু ধরনের মানুষের উপর ওয়াজিব না তাদের নামগুলো উল্লেখ করা হলো;
  • ক্রীতদাস দাসীদের উপর
  • নারীদের উপর
  • শিশুদের জন্য
  • রুগ্ন ব্যক্তি যারা অত্যন্ত অসুস্থ (আবু দাউদ ১০৬৭ )
হাদিসের আলোকে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে নারী লোকের উপরে জুমার নামাজ ফরজ করা হয়নি। তারা জুমার নামাজের সময় যোহরের নামাজ পড়বে। তবে যদি কোন নারীর বাড়ির নিকটে মসজিদ থাকে আলাদা ভাবে পর্দার খেলাফ হবে না এরকম নামাজের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে।
এই ধরনের মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে পারবে। যদি স্বামী বা মাহারাম যেমন পিতা ভাই তার সন্তান দাদা চাচা এদের সাথে যদি মসজিদে যায় জুমার দিনে সেক্ষেত্রে পুরুষের সাথে আলাদা ব্যবস্থাপনায় জুমার নামাজ পড়তে পারবে। যদিও নারীদের মসজিদে না যেয়ে বাড়িতে করাই ভালো।

যদি কোন নারী জুমার নামাজ মসজিদে পড়তে যেতে চায় সেক্ষেত্রে পূর্ণ পর্দার সাথে যেতে হবে। পুরুষদের থেকে দূরে থাকা লাগবে আতর সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে না। হাদিস বর্ণনা রয়েছে হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণিত রাসূল সাঃ এরশাদ করেছেন,

তোমরা আল্লাহর বান্দীদের মসজিদে যাওয়ার জন্য নিষেধ করবে না। তবে তারা যেন কোনরকম সাজসজ্জা ও সুগন্ধি ব্যবহার না করে সে অবস্থায় বের না হয়। আবু দাউদ ৫৬৫

মনে রাখার প্রয়োজন যে বাড়িতে শুধু নারীদের দিয়ে আলাদাভাবে জুমার নামাজ অথবা জুমার নামাজ পড়া যাবে না। সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া যায় তারা বলেছে

যদি কোন নারী ইমামের সাথে করে তাহলে তা যোহরের নামাজের জন্য হয়ে যাবে অর্থাৎ পরে তার আর নামাজ পড়তে হবে না। আর যদি একাকী নামাজ পড়ে নেয় তাহলে যোহরের নামাজ পড়তে হবে।

মহিলাদের জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম

মহিলারা কিভাবে জামাতে নামাজ পড়বে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই মহিলাদের জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো।

জামাতে নামাজ পড়লে ফজিলত বেশি পাবেন কিন্তু মহিলারা জামাতে নামাজ পড়তে পারে না। এর কারণে তারা অনেক সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়, নারীদের জামাতে নামাজ পড়া প্রসঙ্গে ইসলামের দিক নির্দেশনাও আছে কিনা সে সম্পর্কে জানা আমাদের প্রয়োজন।

নারীদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়া নিষেধ করা হয়নি বরং নারীরা মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ অনুমতি আছে। তবে হাদিসের স্পষ্ট দিক নির্দেশনাও আছে কিন্তু নারীর জন্য সব সময় পর্দা করে নিরাপত্তার সাথে আলাদা পদ্ধতিতে নামাজ পড়তে হবে এবং সেই ভাবে মসজিদে যেতে হবে।

হযরত ইবনে ওমর রাঃ হতে বর্ণনা করেছেন রাসূল সাঃ বলেছেন, যদি নারীরা মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার জন্য অনুমতি চায় সেক্ষেত্রে তোমরা অনুমতি দিবে। বুখারী ও মুসলিম

এই হাদিসের ব্যাখ্যা হল নামাজ পড়তে যদি কোন নারী মসজিদে নামাজ পড়তে চায়,সে ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া লাগবে। তাই মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য নারীদের ক্ষেত্রে আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের পর্দা নিরাপত্তা করতে হবে যেন কোন ফেতনা সৃষ্টি না হয়।

অনেক নারী মসজিদে না যাওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের যুক্তি উপস্থাপন করে থাকে কিন্তু ইসলামে কোন এই ধরনের মতপার্থক্য বা যুক্তিতে নাই, নারীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারবেন তবে শর্ত হলো মসজিদে পর্দা ও নিরাপত্তা সহ নামাজের ব্যবস্থা করা লাগবে। আর এটি নিশ্চিত হয়ে নারীরা মসজিদে নামাজ পড়তে পারবে।

এমন কিছু দেশ রয়েছে যেগুলোতে সামাজিকতা ও মসজিদের কাঠামোগত অবস্থা আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার কারণে নারীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারে না। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই সাধারণত নারীদের জন্য আলাদা কোন নামাজ পড়ার ব্যবস্থা এবং অজু করার ব্যবস্থা নাই।

এমনকি পর্দা নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখা যায় না, যে কারণে নারীরা মসজিদে নামাজ পড়তে পারে না। তবে আরব দেশগুলোতে নারীরা জামাতে নামাজ পড়তে পারে এবং তাদের সুন্দর নিরাপত্তা আছে। বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশেই।

সাধারণত নারীদের জন্য মসজিদে নামাজ পড়া এখন পর্যন্ত ব্যবস্থা করে তুলতে পারে নাই। যে কারণে নারীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারে না, যেসব অঞ্চলের নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে জামাতে নামাজ পড়তে পারবে।

মনে রাখতে হবে যে নামাজ পড়তে গিয়ে যদি নারীর পর্দা নিরাপত্তা কিংবা ফেতনার আশঙ্কা থাকে সেই ক্ষেত্রে নারীরা ঘরে নামাজ পড়াই ভালো। কারণ বেপর্দা নিরাপত্তা ফেতনা যদি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সে ক্ষেত্রে গুনাহগার হতে হবে বেশি।

যেহেতু মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া সওয়াব বেশি পাওয়া যায়। তাই প্রতিটি সমাজের দায়িত্বশীল লোকদের উচিত পুরুষদের নামাজের ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি নারীদের নামাজের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।

মহিলাদের ইমামতির বিধান

ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি মহিলাদের জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে। এখন জানবো মহিলারা ইমামতি করতে পারবে কিনা। চলুন, নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা যাক।
ছবি
ইসলামের নারীরা এক জায়গায় ইমামতি করতে পারবেন সেখানে অনুমতি আছে, সে নামাজ গুলোর মধ্যে নফল নামাজে তারা ইমামতি করতে পারবে। তার মধ্যে যেমন তারাবির ও তাহাজ্জুদের নামাজ এই সময় নারীরা নারীদের ইমামতি করার অনুমতি আছে।

এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত পোষণ করার উপায় নাই করে নাই। অনেকেই বলছেন এভাবে নামাজ পড়া জায়েজ আছে কারণ আয়েশা রাঃ এবং উম্মে সালমা রাঃ এভাবে তারা মহিলাদের ইমামতিতে নামাজ পড়েছেন। তারা নিজেরাই ইমামতি করতেন। সহি হাদিস
দ্বিতীয়ত, ফরজ নামাজে নারীদের ইমামতি করতে পারবে কিনা নারীরা ফরজ নামাজে নারীদের ইমামতি করতে পারবে। যদি সেখানে নারীরা একত্রিত হয় এবং তারা নামাজ আদায় করতে চায় একজন ইমাম হয়ে সালাত আদায় করতে পারবে। কারণ যা জায়েজ আছে ফরজ নামাজেও জায়েজ আছে।

ইমাম আহমেদ ইবনে রাঃ এ মতামতের একমত হয়েছেন কিন্তু যদি সেখানে পুরুষ থাকে তাহলে পুরুষই ইমামতি করবে। নারী পুরুষের নারী কখনোই পুরুষের ইমামতি করতে পারবে না কোন অবস্থাতেই কোন নারী পুরুষের ইমাম হওয়ার অনুমতি নেই। তবে নারীরা নারীদের ইমাম হওয়ার ইসলামের জায়েজ আছে।

গর্ভাবস্থায় বসে নামাজ পড়ার নিয়ম

একজন মুসলিম নারী গর্ভাবস্থায় নামাজ পড়তে অনেক অসুবিধা হয়। তাই গর্ভাবস্থায় বসে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো,

গর্ভাবস্থায় নারীদের সাধারণত অসুস্থ মানুষ যেভাবে নামাজ পড়ে সেভাবে পড়ার অনুমতি আছে। গর্ভবতী অবস্থায় সিজদা দিতে অনেকেরই কষ্ট হয় সেই ক্ষেত্রে হাত জমিনে রেখে তার উপর সেজদা দিতে পারবে। হাত সামনে রেখে ইশারায় সেজদা দিতে পারবে। ইশারায় সেজদা দেওয়ার সময় সামনে কোন টেবিল বা বালিশ বা অন্য কিছু রাখলে তার ওপর সেজদা করা যাবে না।

হাদিসে আছে জাবের রাঃ হতে বর্ণনা করা হয়েছে রাসূল সাঃ একজন রোগীকে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি তাকে একটি বালিশের উপর সেজদা দিতে দেখলে তিনি বালিশটা সরিয়ে রাখলেন অথবা লোকটি একটি কাঠের টুকরা নিল তার উপর সেজদা দিল,

রাসুল সাঃ সেটাও সরিয়ে ফেললেন এবং বললেন তুমি সক্ষম যদি হও জমিনের উপর সেজদা করবে। তা না হলে ইশারাতে সেজদা করবে, সেজদার উপর থেকে বেশি ঝুঁকে আদায় করা যাবে। সুনানে বাইহাকি

গর্ভবতী নারীরা সাধারণত অসুস্থই হয়ে থাকে বেশি, তাই তারা নামাজ পড়লে অসুস্থদের মতো অর্থাৎ শক্তি সামর্থ্য অনুযায়ী একাধিক বিকল্পের কোন যে কোন একটি ব্যবহার করতে পারবেন। রাসূল সাঃ বলেছেন দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো যদি না পারো তাহলে বসে থেকে পড়তে পারবে, যদি তাও না পারো তাহলে ইশারায় নামাজ পড়বে। বুখারী হাদিস ১০৫০

যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারে না সে ব্যক্তি বসে রুকু সেজদা করতে পারবে, সেরকম সেজদা সামান্য বেশি ঝুঁকে থাকবে তাছাড়া নামাজ শুদ্ধ হবে না। তিরমিজি শরীফ হাদিস নাম্বার ৩৭৬

সিজদা করার জন্য কোন বস্তু উপরে তুলে সে তার উপর সেজদা করার যাবে না। সুনানে কুবরা হাদিস নাম্বার ৩৮১৯

কেউ যদি অসুস্থতার কারণে বসে নামাজ পড়তে না পারে সে ক্ষেত্রে শুয়ে থেকে ইশারাতে নামাজ পড়বে। তার পা কেবলার দিক করে শোয়ানা লাগবে, মাথা সামান্য উপরে তুলে শোয়াতে হবে। যাতে চেহারা কেবলার দিকে থাকে তারপর ইশারায় মাধ্যমে রুকু সেজদা করতে হবে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা

মহিলারা কি জানাজার নামাজ পড়তে পারবে

মৃত ব্যক্তির যারা যা নামাজের সাধারণত পুরস্কার দিয়ে থাকে তবে নারীরা নামাজ পড়তে পারবে কিনা? তাই মহিলারা কি জানাজার নামাজ পড়তে পারবে? সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা কর

জানাজা বিশেষ ধরনের নামাজ যেখানে কোন মুসলিম ব্যক্তি মারা গেলে করা তার জন্য দোয়া করা ও তাকে শেষ বিদায় জানানো। মুসলমানের এটি একটি হক যা জানাজার নামাজে আদায় করতে হবে এবং তাকে দাফন করার কার্যসম্পাদন করা লাগবে।

এক মুসলিমের উপর অপর মুসলমানের পাঁচটি হক আছে; সালাম দিলে সালামের জবাব দিতে হবে, অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া লাগবে এবং তার জানাজার নামাজে যেতে হবে। যদি কোন মুসলমান দাওয়াত দেয় তাহলে সেটা কবুল করতে হবে এবং হাচি দিলে হাচির জবাব দিতে হবে। সহীহ বুখারী শরীফ ১২৪০

মুসলমান মৃত ব্যক্তির, জানাজা পড়া ফরজে কেফায়া বা মুসলমানদের জন্য অবশ্য কর্তব্য কয়েকজন জানাজার নামাজ যদি পড়ে তাহলে সবার পক্ষ থেকেই হয়ে যাবে কিন্তু কেউ যদি না পারে তাহলে সবাই গুনাগার হতে হবে।

জানাজার নামাজ মূলত পুরুষদের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে জানাজার নামাজ যদি মসজিদে বা বাড়িতে হয় সে ক্ষেত্রে পর্দার সহিত নারীরাও এই নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারে।

রাসূল সাঃ বলেছেন নারীরা অন্যান্য নামাজের মত জানাযার নামাজের অংশগ্রহণ করতে পারবে। এতে সহি বর্ণনা আছে যে হযরত আয়েশা রাঃ মসজিদে নববীতে সাদ ইবনে আবি আক্কাস রাঃ এর জানাজার নামাজের উপস্থিত হয়েছিলেন জানাযার আদায় করেছিলেন।

তবে নবী করীম সাঃ নারীদের লাশের অনুসরণ করে হাঁটতে নিষেধ করতে বলেছেন। নারী সাহাবি উম্মে আতিয়ার রাঃ বলেছেন আমাদেরকে লাশের সাথে যাওয়া নিষেধ করেছেন, তবে এটা আমাদের উপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।

সহীহ বুখারী এই কথার ভিত্তিতে বোঝা যায় নারীদের জন্য লাশের সাথে রাস্তায় হাটা অপছন্দনীয় করেছেন রাসূল সাঃ জানাজা নামাজের জন্য লাশের সাথে হাঁটা যদি হাঁটতে চায় সে ক্ষেত্রে জানাজার নামাজ থেকে বিরত থাকতো আলেমদের মতে নারীদের লাশের সাথে হাত হাটা হারাম বা নিষিদ্ধ নয় । 

এটা একটি মাকরুহ উম্মে হাতিয়া রাঃ এর বক্তব্য এর ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবনে হাজার রহমাতুল্লাহ বলেছেন নারীদের জন্য লাশ অনুসরণ করা মাখরুহ হারাম হবে না। ইমাম কুরতুবী রাহমাতুল্লাহ বলেছেন উম্মে আতিয়ার রাঃ এর কথা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে নারীদের লাশ অনুসরণ করা যাবে না। যদি করে তাহলে এটা মাকরুহ হয়ে যাবে যা অপছন্দনীয়।

মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান

মহিলারা মসজিদে নামাজ পড়তে পারবে কিনা সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা,
ছবি
ঘরে থেকে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার বেশি পাওয়া যায় আবার প্রাপ্তবয়স্ক স্বাধীন সুস্থ ও নিরাপদ ব্যক্তির জন্য মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে হবে কিন্তু নারীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারবে কিনা এটা অনেকেই প্রশ্ন করেছেন।

ইসলামে নারীদের নামাজ আদায় হবে কিন্তু নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো মসজিদে আসা যাওয়ার পথে নিরাপত্তা থাকতে হবে আবার মসজিদের ভিতরেও নারীদের পৃথক নামাজ পড়ার জায়গা রাখতে হবে।

নারীদের মসজিদে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে অনেক মতভেদ বা যুক্তি থাকুক না কেন ইসলাম নারীদেরকে মসজিদে নামাজ পড়ার ব্যাপারে কোন বাধা দেয়নি। তবে নামাজ পড়ার কারণে যদি বেপর্দা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেক্ষেত্রে মসজিদে নামাজ না পড়াই ভালো বাড়িতেই তারা পড়ে নিবে।
এই সম্পর্কে হাদিসে বর্ণনা আসছে যে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণনা করা হয়েছে রাসূল সাঃ বলেছেন যদি নারীরা তোমাদের কাছে মসজিদে নামাজ পড়ার অনুমতি চায় তাহলে তোমরা তাদেরকে অনুমতি দিয়ে দিবে। বুখারী মুসলিম শরীফ

তবে বর্তমান সময়ের ক্ষেত্রে এই অনুমতি ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কে চলুন জানা যায় আরব দেশগুলো ছাড়া বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশ আছে যেখানে নারীদের জন্য মসজিদের নামাজ পড়ার তেমন কোন ব্যবস্থা থাকে না। নিরাপত্তা নেই পর্দা খেলাফ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

খুবই কম সংখ্যক মসজিদে নারীদের জন্য আলাদা করা হয়েছে। সেই হিসেবে কোন দেশে কিংবা অঞ্চলে নারীদের জন্য মসজিদে নামাজ ব্যবস্থা যদি থাকে। তবে নিরাপত্তা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারবে।

তবে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে যেসব মসজিদে নারীদের নামাজের আলাদা ব্যবস্থা আছে। সে সকল মসজিদে আসা যাওয়ার পথে নিরাপদ কিনা সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। মসজিদে যাওয়ার কারণে নারী কিংবা পুরুষের মাঝে ফেতনার সম্ভাবনা যদি থাকে।

সেক্ষেত্রে মসজিদে নামাজ না পড়াই ভালো বাড়িতে পড়াই উত্তম। নারীদের মসজিদে নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র সমাজের যদি নিরাপত্তা সবার করা যায় ।তাহলে তারা পরিপূর্ণ পর্দার সাথে মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে নামাজ পড়তে পারবে।

সর্বোপরি কথা হলো প্রতিটি মহল্লায় মসজিদে নির্মাণের সময় নারীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। এটা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য কর্তব্য তবে নারীরা নিরাপদে মসজিদে গিয়ে যদি নামাজ আদায় করে তাহার অনেক বেশি সাওয়াব পাবেন।

লেখকের শেষ মন্তব্য

অবশেষে বলা যায় যে, মহিলারা জামাতে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে ইসলামের শরীয়তের অনুযায়ী চলতে হবে। তাই মহিলাদের জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। ইসলামী শরীয়ত মতে যদি আলাদা ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা থাকে, পর্দার সমস্যা না হয় তাহলে মহিলারাও মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়তে পারবে। পোস্টটি ভালো লাগবে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪