রোদে পোড়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নিন
প্রচুর পরিমাণে রোদের তাপের কারণে ত্বক পুড়ে দাগ হতে পারে। তাই রোদে পোড়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন, রোদে পুড়ে ত্বকে দাগ হয়ে গেলে কি করবেন জেনে নেওয়া যাক।
আমরা কাজের জন্য সাধারণত বাহিরে বের হয় কিন্তু এই সময় যদি আপনি রোদের তাপমাত্রাকে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ না নেন। তাহলে আপনার ত্বক পুড়ে যেতে পারে। তাই রোদে পোড়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃরোদে পোড়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নিন
হাত ও পায়ের রোদে পোড়া দাগ দূর করার উপায়
অনেকে রোদে গেলে হাত ও পা রোদে পুড়ে যায়, তাই হাত ও পায়ের রোদে পোড়া দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো;
আমরা অধিকাংশ মানুষ শুধুমাত্র মুখের যত্ন নিয়ে থাকি কিন্তু আমাদের হাত ও পায়ে যত্ন নিতে ভুলে যাই। দেখা যাচ্ছে আমরা যখন বাহিরে যাই তখন সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মিতে কারণে হাত ও পায়ের অংশে কালো হয়ে যায় এবং খসখসে হতে থাকে।
আপনার মুখের ত্বক যদি সৌন্দর্য থাকে এবং হাত-পা যদি সৌন্দর্য না থাকে। সেক্ষেত্রে মুখের ত্বকের সাথে হাতের বা পায়ের ত্বকের মিল না থাকলে দেখতে খুবই খারাপ লাগে। তাই হাত ও পায়ের যত্ন নিতে হবে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক হাত ও সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির কারণে পায়ে কালো অংশ হয়ে যায়। সেটা আমরা কিভাবে যত্ন করব সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
টমেটোঃ আপনার হাত ও পায়ের ত্বকের কালো দাগ দূর করার জন্য কিটোবেটি দিতে হবে। একটি টমেটো নিতে হবে সেটাকে টুকরো করে কাটবেন, এর উপর একটি চিনি দিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করবেন।
আপনার হাত ও পায়ে যেখানে রোদে পুড়ে গেছে সে জায়গা গুলোতে লাগাতে পারেন। এক্ষেত্রে চিনি এক্সফলিয়েটর হিসেবে ভালো কাজ করে থাকে, তাই এই উপাদানটি মিশ্রণটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন, এতে আপনার দাগ দূর হয়ে যাবে।
এলোভেরা জেলঃ আপনার হাত ও পায়ের রোদে পুড়ে দাগ হয়ে গেছে, সেই স্থানে এলোভেরা থেকে জেল গুলো আলাদা করে আপনার পুরা স্থানে লাগাতে পারেন। এর সাথে আপনি মধু এবং লেবুর রস দিতে পারেন।
হলুদের পেস্টঃ আপনার ত্বকে যদি বিভিন্ন ধরনের দাগের সমস্যা থাকে, সেই ক্ষেত্রে হলুদের পেস্ট বানিয়ে তার সাথে লেবুর রস এবং অল্প একটু কাঁচা দুধ মিক্সড করে এই মিশ্রণটি আপনার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারবেন। যখন শুকিয়ে যাবে তখন ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
টক দইঃ একটি পাত্রের মধ্যে পরিমাণ মতো টক দই নিতে পারেন, এরপরে এর সাথে এক চামচ পরিমাণ কাঁচা হলুদ বেটে এর ভিতর দিয়ে মিক্সড করে নিবেন। এরপর এটা আপনার ত্বকে ২০ মিনিটের মত লাগিয়ে রাখবেন, এর পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ফেলবেন।
অলিভ অয়েলঃ দুই চামচ অলিভ অয়েল নিয়ে তার ভেতর এক চামচ চিনি মিক্সড করে নিবেন। ৩ থেকে ৫ মিনিট আপনার ত্বকে লাগিয়ে রাখবেন, কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে ২দিন ব্যবহার করতে পারেন।
উপরোক্ত এই বিষয়গুলোর পাশাপাশি আপনি যখন বাহিরে যাবেন, সে ক্ষেত্রে কিছু টিপস অনুসরণ করতে হবে তা হলো;
আপনি যখন বাহিরে যাবেন তখন চেষ্টা করবেন, হাত-পা যেন পোশাক দিয়ে ঢাকা থাকে। আর যদি খোলা রাখতে চান, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো মানের সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে, কারণ ত্বককে হাইড্রেট রাখা যাবে না। তাহলে আপনার ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে, চামড়া কুচকে যেতে পারে।
নিয়মিতভাবে এক্সফলিয়েটর ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন, কেননা এতে আপনার রোদে পড়া দাগ অনেকটা কমাতে সাহায্য করবে।
যতবার হাত-পা ধুবেন ততবারই আপনি ভাল কোন মানের ক্রিম অথবা লোশন ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার রোদে পোড়া দাগ অনেকটা কমিয়ে আনবে।
রোদে পোড়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
আমরা কাজের জন্য সাধারণত বাহিরে গিয়ে থাকি, এতে রোদে অনেকের ত্বক পুড়ে যায়। তাই রোদে পোড়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই এই দাগ দূর করা সম্ভব। এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো,
আমরা সবাই দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত থাকি এবং যার যার কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য অবশ্যই বের হতে হবে। গ্রীষ্মকালে ঘরের বাহিরে যাওয়ার কারণে অনেকের ত্বক রোদে পুড়ে দাগ হয়ে যায়। অনেকে বিভিন্ন ধরনের নামিদামি অনেক ক্রিম বা বিভিন্ন ধরনের সাবান ব্যবহার করে থাকে।
এতে ত্বকের আরো অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই ঘরোয়া পদ্ধতি যদি ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে আপনার পড়া দাগ দূর হয়ে যাবে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতি দূর করবেন।
লেবুর রস ও মধুঃ লেবুর মধ্যে ভিটামিন সি আছে, যা রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে থাকে। লেবুর রসের সাথে যদি আপনি মধু মিক্সড করে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগাতে পারেন এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করবেন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন, এতে আপনার রোদে পোড়া কালো দাগ দূর হবে এবং ব্রনেরও কাজ করবে।
মুলতানি মাটি ও গোলাপজলঃ রূপচর্চায় মুলতানি মাটি ব্যবহার করা হয় প্রাচীনকাল থেকেই, এটি ত্বকের ভিতর থেকে পরিষ্কার করে এবং রোদে পড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। গোলাপ জলে আছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি যা আপনার ত্বকের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে পারবে।
তাই মুলতানি মাটির সাথে গোলাপ জলের একটি পেস্ট তৈরি করবেন। মুখে কিছুক্ষণ লাগানোর পর শুকিয়ে গেলে এরপরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
জাফরান ও দুধঃ জাফরানের মধ্যে আছে ক্রোসিন নামক পদার্থ যা ত্বকের মেলানিন উৎপাদন করতে পারে। যার কারণে আপনার ত্বকের ভিতর থেকে প্রদাহ কমাতে পারবে এবং পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করবে।
এর মধ্যে থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি যা ত্বকে যেকোনো জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। সামান্য পরিমাণ জাফরান দুধের মধ্যে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখবেন, মিশ্রণটি আপনার পড়া দাগের উপরে লাগিয়ে রাখবেন, এরপরে ধুয়ে ফেলবেন।
শশা ও তরমুজঃ শসার মধ্যে আছে ভিটামিন সি এবং ক্যাফিক অ্যাসিড, যা রোদে পড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়া তরমুজ মধ্যে আছে ৯০% পানি, যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ত্বকে উজ্জ্বল করে শসা এবং তরমুজ একসঙ্গে ব্যালেন্ডার করে একটি পেস্ট তৈরি করতে পারেন। তারপর মুখে আধা ঘন্টার মত লাগিয়ে রাখবেন, পরবর্তীতে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
এভাবে যদি আপনি ভালো ফলাফল পেতে চান সেই ক্ষেত্রে সপ্তাহে দুই তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন। রোদে পোড়া দাগ দূর করতে এই মিশ্রণটি ভালো কাজ করবে। তবে যে কোন প্যাকে আপনার মুখে লাগানোর আগে অবশ্যই শরীরের অন্য কোন জায়গায় টেস্ট করে নেবেন। যাতে করে এলার্জি আছে কিনা সেটা দেখার জন্য।
পেঁপে ও মধুঃ পেঁপেতে থাকে ব্লিচিং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি ইনফ্লামাটরে এই উপাদান গুলো ত্বকের বিভিন্ন পোড়া দাগ দূর করতে পারবে এবং উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। এছাড়াও ত্বককে নরম করতে সাহায্য করতে পারে।
আধা কাপ পাকা পেঁপে ভালো করে চটকে নিতে হবে, দুই চামচ মধু মিশিয়ে রোদে পড়া দাগের স্থানে লাগাতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
আলুর রসঃ আলু একটি প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট আছে যা ত্বকের উজ্জ্বলতা ঠিক করতে পারবে, পাশাপাশি কালচে দাগ গুলো দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
একটি বড় আলুকে কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে এবং রস বের করতে হবে। এরপরে মুখে বা কালচে দাগের স্থানে লাগিয়ে রাখতে হবে ১০ থেকে ১২ মিনিট পর পানিতে ধুয়ে ফেলবেন।
চালের গুড়া ও দুধঃ চালের গুড়া প্রাকৃতিক স্কার্ব হিসাবে কাজ করবে, এটি মুখে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আনবে। দুধের মধ্যে ল্যাকটিক এসিড থাকার কারণে ত্বকের ভিতর থেকে ময়লা গুলো দূর করতে সাহায্য করবে এবং মরা চামড়াগুলো উঠিয়ে ফেলবে, নতুন সেল তৈরি করতে সাহায্য করবে।
একটি বাটির মধ্যে দুই চামচ পরিমাণ চালের গুড়ার সাথে পরিমাণ মতো দুধ মিশিয়ে তৈরি করতে হবে। এরপর রোদে পড়া জায়গায় ৩০ মিনিটের মত লাগিয়ে রেখে দেবেন, কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে।
রোদে বাহিরে যাওয়ার সময় অবশ্যই আপনাকে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা লাগবে। মনে রাখতে হবে যে বাইরে যাওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট আগে আপনি লোশন বা সানস্ক্রিন টা ব্যবহার করবেন। সাধারণত তিন থেকে চার ঘণ্টার মতো এর কার্যকারিতা থাকে। তাই আপনি চাইলে এরপরে মুখ ধুয়ে ফেলতে পারেন অথবা আবার পুনরায় দিতে পারবেন।
বাইরে থেকে আসার পর ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে মুখ পরিষ্কার করা লাগবে, এরপরে এক টুকরা বরফ টিস্যু দিয়ে পেচিয়ে আপনার আক্রান্ত স্থানগুলোতে সুন্দর করে মুছে নিবেন, দেখবেন অনেকটাই ভালো লাগতে পারে।
ছেলেদের মুখের রোদে পোড়া দাগ দূর করার উপায়
ছেলেরা কাজের ক্ষেত্রে বাহিরে যেতে হয়, তাই তাদের মুখের সাধারণত রোদ লাগার কারণে ত্বক পুড়ে যায়। এজন্য ছেলেদের মুখের রোদে পোড়া দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভালো। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানা যাক।
ত্বককে সূর্যের ইউভিএ রশ্মি থেকে সুরক্ষা পেতে আপনি সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন। রোদে পড়া ত্বকের যতই যত্ন নেন না কেন এটা ব্যবহার না করলে আপনার ক্ষতি হবে। মুখ, ঘাড় ও পায়ে বা শরীরের উন্মুক্ত স্থানগুলোতে সানস্ক্রিন প্রয়োগের সময় অনুসরণ করা লাগবে।
এর কারণে নিশ্চিত হতে হবে আপনার ত্বকের সঠিক ব্যবহার করা হয়েছে কিনা। তাছাড়া আপনি যখন বাইরে যাবেন কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগে এটা লাগাতে হবে এবং দুই থেকে তিন ঘন্টা পর্যন্ত এর কার্যকারিতা থাকে।
এরপর আবার সানস্ক্রিন আপনার পুনরায় প্রয়োগ করা লাগবে। তাই আপনি স্প্রে বা স্টিক ব্যাগে রেখে দিবেন, বাজারে এখন অনেক ভালো মানের সানস্ক্রিন পাওয়া যেতে পারে, সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি ভিটামিন সি জাতীয় সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এটা ত্বকে ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করবে।
রোদে পোড়া ত্বকের যত্ন নেওয়া ও ত্বকের মৃত কোষগুলো দূর করার জন্য ফিজিক্যাল স্ক্রাব ও কেমিক্যাল মধ্যে ভালো মানের গ্লাইকোলিক অ্যাসিড।
যা আপনার ত্বককে সৌন্দর্য এবং মৃত কোষকে অপসারণ করতে পারবে। তাই সপ্তাহে দুইদিন আপনি এটা ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি বাদামী চিনির সাথে খাঁটি মধু মিশিয়ে হাতের আঙ্গুল দিয়ে আলতোভাবে চাপ দিতে হবে, বৃত্তাকার গতিতে মেসেজ করা লাগবে।
নাক ঠোঁটের পাশেও ভালোভাবে স্ক্রাব করা লাগবে, কয়েক মিনিট পর সাধারণত পানিতে ত্বক দিয়ে করা যেতে পারে। তবে যাদের ত্বক সংবেদনশীল বা অতিরিক্ত তারা স্ক্রাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
ত্বকে পুড়ে যে দাগ হয়ে যায় সেটা দূর করার জন্য আপনি অ্যালোভেরা ও যষ্টি মধু ব্যবহার করতে পারেন। এটা পরিমাণ মতো নিয়ে আপনি ১৫ মিনিটের মত আলতোভাবে মেসেজ করা যেতে পারে। তারপর শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার সুতি ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিবেন।
অন্যদিকে যষ্টিমধু অনেকটা উপকার করে থাকে, রোদে পোড়া দাগের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে। তাই এক চামচ পরিমাণ যষ্টি মধুর গুড়া আধা চামচ চন্দনের গুড়া দুই চামচ মধু, ২ চামচ দুধ এটা মিক্সড করে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।
১০ থেকে ১৫ মিনিটের মত মুখে লাগিয়ে রাখবেন, সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল বুঝে আপনি আপনার ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। যার মধ্যে ভিটামিন সি অ্যালোভেরা আছে।
পোড়া ক্ষত শুকানোর ঘরোয়া উপায়
ইতিপূর্বে আমরা আলোচনা করেছি রোদে পোড়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। এখন জানবো যে কোন পোড়া ক্ষত শুকানোর জন্য কিভাবে কি করা যায়। চলুন এ সম্পর্কে জানা যাক,
আগুন দিয়ে আমাদের রান্না করতে হয় এটা একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জীবনের একটি অংশ যা আমাদের রান্না করতে গিয়ে এটা লাগবেই। তাই এই কাজে অনেকেই হাতে ফোসকা পড়ে যায়, আগুন লেগে অনেকটাই পুড়ে যায়।
এছাড়া বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তাই এসব ছোটখাটো পোড়া যেমন ছ্যাকা লাগা ফোসকা পড়া, চামড়া ছিলে যাওয়া এই ধরনের চিকিৎসা আপনি বাড়িতেই করতে পারবেন। এজন্য কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন চলুন জেনে নেওয়া যাক।
লাভেন্ডার অয়েলঃ লাভেন্ডার জীবাণু নাশক হিসেবে কাজ করে থাকে, এর মধ্যে উপস্থিত আছে লিনালাইল এসিটেট ও বেটা ক্যারিওফিলিন যা প্রদাহ কমাতে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে থাকে। দুই থেকে তিন ফোটা লেভেন্ডার অয়েল তুলার সাথে মিশিয়ে আপনার পড়া বা আক্রান্ত স্থানের চারপাশে লাগাতে পারেন। এতে ভালো ফলাফল পেতে তিনবার ব্যবহার করা যেতে পারে।
সরিষা বীজঃ সরিষা বীজের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ এলাইল ও আইসোথিওসায়ানেট আছে। যা আক্রান্ত স্থানে লাগালে ব্যথা কমাতে পারে এবং রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক করবে। এজন্য এক চামচ সরিষার বীজের সাথে হাফ চামচ পানি ভালোমতো ব্লেন্ডার করে নিতে হবে।
পুড়া জায়গায় এই পেজটি ভালো করে লাগতে হবে, কমপক্ষে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন এটা আপনি ভালো ফলাফল পাবেন।
এলোভেরাঃ এলোভেরার মধ্যে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার বিভিন্ন ধরনের প্রধান আমাদের সাহায্য করে থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে, ক্ষত সারাতে ফোচকা কমাতে এবং দাগ সরাতে দাগ দূর করার জন্য ভালো কাজ করে থাকে।
এক চামচ এলোভেরা জেল নিতে হবে এবং ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখতে পারেন। দুই থেকে তিনবার এভাবে ব্যবহার করার কারণে আপনি অনেক উপকার পাবেন।
মধুঃ মধু একটি প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক যার মধ্যে পেয়ে পিএইচ থাকে যা পুড়ে যাওয়া ক্ষতকে সংক্রমিত করতে দেবে না। এটি জ্বালাপোড়া কমাতে এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে দ্রুত ক্ষত সারাতে সাহায্য করতে পারে। এজন্য আপনি দুই চামচ মধু নিতে পারেন, আক্রান্ত স্থানে মেখে দিবেন এভাবে তিন-চারবার ব্যবহার করলে অনেক ভালো ফলাফল পাবেন।
দুই চামচ মধু নিবেন এবং আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করবেন, এভাবে ব্যবহার করলে দুই তিনবার ব্যবহার করার কারণে ফলাফল ভালো হবে।
টি-ব্যাগঃ চা পাতার মাঝে এক প্রকার টনিক অ্যাসিড আছে, যা আপনি পড়া স্থানে লাগালে আপনার ব্যথা কমে যাবে। তাছাড়া ক্ষতস্থানের ব্যথা এবং যন্ত্রণা কমাতে এটা ভালো কাজ করে থাকে। দুই থেকে তিনটি টি-ব্যাগ নিবেন। এরপরে ভেজা একটা আক্রান্ত স্থানে রেখে দিবেন আক্রান্ত স্থলের দিব থেকে ১৫ মিনিট পর এরপর গজ ব্যবহার করতে থাকবেন।
বেকিং সোডাঃ জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য থাকে, বেকিং সোডার মধ্যে যা আপনার ক্ষতস্থানকে সংক্রামিত করতে দেবে না। এটা ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ ধরে রাখবে। যার কারণে পুড়ে যাওয়া স্থান ব্যথা এবং যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করবে।
এজন্য এক চামচ বেকিং সোডা, হাফ চামচ পানির সহ ব্লেন্ডার করে নিতে হবে। সরাসরি ক্ষতস্থানে লাগাতে পারবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দেওয়ার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাহলে দিনে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে পারবেন। দিনে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করবেন।
নারিকেলের তেলঃ নারিকেলের তেল চামড়ার ভিতরে প্রবেশ করতে পারে এবং কোষগুলো জন্মাতে সাহায্য করবে। তাছাড়া ক্ষতস্থানে জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে, এক থেকে দুই চামচ নারিকেলের তেল সরাসরি আপনার ত্বক শুষে নেবে। দিনে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন।
দুধঃ দুধের মধ্যে থাকে জিংক ও প্রোটিন যা আপনার ক্ষতস্থানকে শীতল করতে পারবে, এজন্য ১/৪ এত কাপ ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা দুধ তুলোর মাধ্যমে ক্ষতস্থানে লাগাতে পারেন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এর পরে ধুয়ে ফেলবেন, এতে ব্যথা ও করা অনুভূতি অনেকটা কমে যাবে। দুই ঘন্টা পর পর এটা দিতে পারেন।
ভিনেগারঃ ভিনেগারকে বলা হয় প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক, যার মধ্যে অ্যাসিটিক অ্যাসিড থাকে। যা প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা জন্য ভালো কাজ করে থাকে। ছোটখাটো পুড়ে যায় ক্ষত যদি হয় সেক্ষেত্রে ভিনেগার দিতে পারেন। এজন্য দুই চামচ ভিনেগার ও দুই চামচ পানি মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে তুলা দিয়ে দিতে পারেন। দিনে দুই থেকে তিনবার লাগাতে পারবেন।
রোদে পোড়া ত্বকের যত্ন
রোদে পুড়ে গেলে অনেক সময় দাগ হয়ে যায়, তাই রোদে পোড়া ত্বকের যত্ন নিতে হবে। এজন্য রোদে পোড়া ত্বকের যত্ন নেওয়ার সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন, এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
গ্রীষ্মকালে সাধারণত তাপমাত্রা বেশি থাকে, তাই যখন আপনি বাহিরে যাবেন তখন আপনার ত্বক পুড়ে যেতে পারে। কারণ সূর্যের অতি বেগুনুর রশ্মির কারণে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
রোদে ত্বকের যেসব ক্ষতি করতে পারে চলুন জেনে নেওয়া যাক,
- রোদের কারণে ঘাম বেশি হয়ে থাকে এতে ঘামাচি বা চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- রোদ থেকে সুরক্ষা নেওয়ার জন্য যদি প্রস্তুতি না নেন, তাহলে আপনার ত্বকে একজিমা দেখা দিতে পারে।
- অনেক সময় রোদের কারণে ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
- সূর্য রশ্মি ত্বকে মেলানিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে যাতে ত্বকের রং কালো হয়ে যায়।
- রোদে পুড়ে ত্বকের এ ধরনের ক্ষতি গুলো সাধারণত হতে পারে।
রোদে ত্বক পুড়ে ক্ষত থেকে রক্ষা করার জন্য যে ব্যবস্থাগুলো করতে পারবেন;
রোদ যত থাকে না কেন ঘর থেকে যখন বের হবেন ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে ত্বকের সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে হবে। বাজারে এসপিএফ বা ভালো মানের বিভিন্ন ধরনের সানস্ক্রিন ক্রিম লোশন পাউডার স্প্রে ইত্যাদি প্রসাধনী পাবেন, যা আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ম্যাট ধরনের সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন ও শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে। আর স্বাভাবিক ত্বকের জন্য মিশ্র ত্বকের জন্য তাহলে অল স্কিন টাইপ সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারবেন।
ত্বক সব সময় ঠান্ডা ও পরিষ্কার রাখা লাগবে, তাই প্রতিদিন ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার চেষ্টা করবেন।
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য পানি ভালো কাজ করে থাকবে। তিন থেকে চার লিটার পানি পান করতে পারেন, তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফলের রস খেতে পারেন। যা আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকার।
ঘর থেকে বের হওয়ার আগে কিছু কাজ করতে পারেন যেমন; গোসল করে নিতে পারেন এই সময় প্রচুর ঘাম হয়। তাই দুর্গন্ধ হতে পারে এজন্য পানিতে কয়েক ফোঁটা বেঞ্জয়েন এ্যাসেনশিয়াল ওয়েল মিক্সড করে গোসল করতে পারেন। এতে দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পাবেন, এছাড়াও রোদে ত্বক কালো হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এগুলো আপনি বাজারে বা ওষুধের দোকানগুলোতে পেতে পারেন।
শেষ কথাঃ রোদে পোড়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নিন
পরিশেষে বলা যেতে পারে যে, রোদে যাওয়ার কারণে আপনার ত্বক পুড়ে যেতে পারে। এজন্য আপনি ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না। তাই রোদে পোড়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি উপকার হবে, পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url