ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায় জেনে নিন
অনেকে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে চায়, তাই ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়? এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন এবং দক্ষতা অর্জন করতে হবে। চলুন, ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কিভাবে ইনকাম করবেন সে সম্পর্কে জানা যাক।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে ইনকাম করতে হলে আপনাকে একটি বিষয়ে স্ক্রিল অর্জন করতে হবে এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করার মাধ্যমে আপনি ইনকাম করতে পারবেন। তাই ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায় জেনে নিন
ফ্রিল্যান্সিং কি
ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং শব্দটির যদি সহজ ভাবে বলা যায়, তাহলে এমন করে বর্ণনা করা যেতে পারে অনলাইনে এর মাধ্যমে যে ইনকাম করা হয় তাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে থাকি। এক কথায় অনলাইনে যে কাজগুলো পাবেন, সেগুলো যদি করে দিতে পারেন তার বিনিময়ে আপনাকে যে অর্থ দেওয়া হবে মূলত তাকে ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়।
মনে করেন কোন নির্দিষ্ট একটি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে শারীরিকভাবে কাজ না করে, যদি আপনি অনলাইনের মাধ্যমে তার কাজগুলো করে দিতে পারেন, সেক্ষেত্রে আপনার সাথে চুক্তি করে আপনাকে টাকা দেবে। এই শব্দটি অনেক আগে থেকেই প্রচলন আছে। ফ্রিল্যান্সিং মূলত আপনি ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন, এর জন্য আপনাকে অবশ্যই দক্ষতা বা স্কিল অর্জন করতে হবে।
সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এটি একটি স্বাধীন পেশা, চাকরির মত এতে কাজের কোন নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া নেই। আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী আপনি কাজ করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ক্লায়েন্টের সাথে আপনার যোগাযোগ ভালো থাকতে হবে এবং তারাই আপনাকে কাজ দিবে।
আপনাকে সেই কাজগুলো ঘন্টা প্রতি বা একটা প্রাইজ হিসাব করে নিতে হবে। তাছাড়া অনেকে সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতেও ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে থাকে। যারা ফ্রিল্যান্সিং করে তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়ে থাকে।
এটা এক ধরনের ব্যবসার মতোই বলা যেতে পারে। এখানে আপনার স্কিল বা দক্ষতাকে বিক্রি করে ইনকাম করছেন।
এই ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসা করে অনেকেই প্রচুর পরিমাণ টাকা ইনকাম করছে। আপনি যদি সঠিকভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন তাহলে আপনি প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন ধরনের কাজ করার মাধ্যমে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
যেকোনো একটি বিষয় আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আর সেই কাজগুলোর মধ্যে বলা যেতে পারে যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা এন্ট্রি, ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ওয়েব ডিজাইনার ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনাকে কৌশল জানতে হবে। তাই ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়? এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে হবে। তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে পারবেন। এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক,
দক্ষতা ও জ্ঞান নির্ধারণ করাঃ প্রথমে আপনার নিজস্ব দক্ষতা ও জ্ঞান সনাক্ত করা লাগবে। যা ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য আপনি উপযুক্ত কিনা সেটা নিজেই যাচাই করে নিতে হবে। লেখালেখি, অনুবাদ, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা এন্ট্রি বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে। যেগুলো আপনাকে দক্ষতা অর্জন করে ফ্রিল্যান্সিং করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে যোগদানঃ আপনার যদি নিজস্ব দক্ষতা থাকে এবং যে কোন একটি কাজের দক্ষতা যদি অর্জন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম কে ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করতে পারেন। যেমন ফাইবার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডটকম, পিপল পার আওয়ার এ ধরনের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে আপনি কাজ করতে পারেন। এখানে একাউন্ট খুলে ইনকাম করতে পারবেন।
প্রোফাইল তৈরি করাঃ আপনি যেকোন একটি প্লাটফর্মে যদি যোগদান করেন, সেই ক্ষেত্রে একজন ফ্রিল্যান্সারের আকর্ষণীয় তথ্যপূর্ণ প্রোফাইল তৈরি করা লাগবে। প্রোফাইলে অবশ্যই তার দক্ষতা অভিজ্ঞতা এবং কিছু কাজের নমুনা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে হবে।
ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগঃ আপনি যদি কোন প্রজেক্ট পান সেই ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের সাথে স্পষ্ট নিয়মিত যোগাযোগ করতে হবে। কাজের বিবরণ সময়সীমা মূল্য নির্ধারণ এবং কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে ক্লায়েন্টকে অবগত রাখতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করা লাগবে।
নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সরবরাহ করা লাগবেঃ ক্লায়েন্ট যে আপনাকে প্রজেক্টটা দিয়েছে সেটা যে সময়ের মধ্যে দেওয়া হয়েছে সেই অনুযায়ী আপনি কাজ করবেন এবং সেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই জমা দিয়ে দিবেন।
ভালো রিভিউ নিতে হবেঃ ক্লায়েন্ট এর কাছ থেকে সর্বদাই ভালোভাবে রিভিউ নেওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন। এতে আপনার প্রোফাইলের বিশ্বাস্ততা বাড়বে এবং আপনি আরো অনেক কাজ পেতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করার জন্য অনেকটা সময় লাগে, তাই ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং নিয়মিত কাজ করতে হবে। এছাড়া আপনার নিজের দক্ষতা কে বৃদ্ধি করার জন্য নতুন কিছু দক্ষতা শেখার আগ্রহ থাকতে হবে এবং পুরানো দক্ষতা আরো উন্নত করা লাগবে।
যেন বাজার মূল্য আরো বৃদ্ধি পায়, তাছাড়া ক্লায়েন্টের সাথে সবসময় ভালো আচরণ করতে হবে এবং সময় মতো কাজ জমা দিতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং করে যে কাজে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনাকে আগে যে কাজটি করবেন সেটা নির্ধারণ করতে হবে। তাই ফ্রিল্যান্সিং করে যে কাজে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তাই এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার হলো,
ডাটা এনালাইটিক অ্যানালিটিকসঃ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ডাটা এনালিক ট্রিকস এর কাজ অনেক আছে এবং চাহিদা আছে। ফ্রিল্যান্সার ডটকমে ডাটা এনালাইটিসের চাহিদা সম্পন্ন কর্মী অনেক বেড়েছে।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টঃ ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরি আগে থেকেও অনেকে করে থাকে কিন্তু বর্তমানে এটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এইখানে চাহিদা বেড়েছে ৫৫ শতাংশ ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে যারা কাজ করবে।
তাদের নানা রকম কাজে নিয়োগ দাতা কে সহযোগিতা করা লাগে। এছাড়া গ্রাহক সেবা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ব্লগ কস্টিং থেকে শুরু করে। বিভিন্ন ধরনের হিসেবে কাজ করতে হবে, এজন্য নির্দিষ্ট ঘন্টা ভিত্তিতে আয়ের সুযোগ পাবেন।
মাত্র সফট অফিস মাইক্রোসফট অফিসঃ মাইক্রোসফট অফিস দক্ষ কর্মীর অনেক চাহিদা আছে এবং মাইক্রোসফট অফিসেরও অনেক চাহিদা আছে বা বেড়ে চলছে।
সাধারণত টাইপিং বা ডেটা এন্ট্রি কাজগুলো এক্সেল এর কাজের চাইতে অনেকটা কঠিন। এজন্য এই ধরনের কাজ করার জন্য ও সময় বাঁচানোর জন্য তারা এ ধরনের কাজ দিয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে ইউটিউব থেকে আয় করা যায় জেনে নিন
অনেক ক্ষেত্রে ২০ ঘন্টার কাজ এক ঘন্টা কর্মী অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবে। যারা ফ্রিল্যান্সিংকে কাজে চান তারা এই বিষয়টা নিয়ে কাজ করতে পারেন।।
কপি টাইপিংঃ এই কপি টাইপিং এর কাজের অনেক চাহিদা আছে। বিস্তৃত ও এলোমেলো কাজগুলো বা তথ্যগুলো পরিষ্কার তথ্যকপি তৈরি করার জন্য হাতে লেখা বা পোস্টকে সম্পাদনা উপযোগী করার জন্য পোস্টে রূপান্তর করার মত নানা কাজ করা লাগে।
কপি টাইপিং কর্মী দরকার নির্দিষ্ট বাজেটে বা ঘন্টা ভিত্তিকে এই কাজটির সুযোগ পাবেন। যারা দ্রুত নির্ভুল কপি টাইপ করতে পারবেন, তারা এই বিষয় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ট্রান্সক্রিপশনঃ যাদের ভাষা দক্ষতা জ্ঞান রয়েছে, তারা এই ভাষা দক্ষতা, অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে ইনকাম করতে পারবেন। তাই বিষয়টি ভালো ভাবে দক্ষতা অর্জন করবেন,বিশ্বের বিভিন্ন ধরনের ভাষা যদি আত্মস্থ করতে পারেন, তাহলে এ কাজটি করে ইনকাম করা যেতে পারে।
অন্যান্যঃ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অনেকে বই লিখে অনেক টাকা ইনকাম করছে। তাই অনেক কোম্পানির এই ধরনের বই লেখার জন্য নিয়োগ দিয়ে থাকে। যা আপনি লিখে দিতে পারলে ফ্রিল্যান্সিং করে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে কত টাকা আয় করা যায়
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়? এখন জানবো যে মাসে কত টাকা আয় করা যায়? সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো;
দেশ এবং শহর সমাজ বিশ্বের উন্নয়নে পরিবর্তনের সাথে আমাদের কাজের ধরনও পরিবর্তন হচ্ছে। যারা তাদের কাজ এবং ক্যারিয়ারকে উন্নত করতে চাচ্ছে বা স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাচ্ছে। তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় পেশা হতে পারে কিন্তু আসলে এটা একজন ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় কেমন হতে পারে এ ধরনের অনেকই প্রশ্ন করে থাকে।
সত্য বলতে একজন ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় নির্দিষ্ট কোন পরিমাণ হয় না। আলাদা আলাদা হয়ে থাকে এবং পরিবর্তন হতে পারে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনার কাজের দক্ষতা অনুযায়ী আপনার বেতন হবে। অনেকে কনটেন্ট লেখক হয় প্রোগ্রামিং ডিজাইন, কাস্টমার সার্ভিস বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে।
এতে অনেক অর্থ ইনকাম করতে পারবে। তবে একটা কথা মনে রাখবেন একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে আপনি কত টাকা পারিশ্রমিক পাবেন সেটা কিন্তু সম্পূর্ণ আপনার স্কিল বা কৌশলের উপর নির্ভর করবে। আপনি যদি নতুন ফ্রিল্যান্সার হন সে ক্ষেত্রে আপনার কাজের যেমন অভিজ্ঞতা থাকবে না।
পাশাপাশি আপনার প্রমাণিত কোন রেকর্ড থাকবে না, শক্তিশালী পোর্টফলিও নাই, অভিজ্ঞতা নেই সে ক্ষেত্রে আপনার কিন্তু ইনকাম হবে না। ক্লায়েন্টের আকর্ষণও করতে পারবেন না, একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে আপনি শুরুতে খুবই কম টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আরেকটা বিষয় খেয়াল রাখবেন সম্পূর্ণ মাসের মধ্যে আপনি কতগুলো ফ্রিল্যান্সিং কাজ করছেন বা প্রজেক্টে কাজ করছেন তার ওপর নির্ভর করবে আপনার ইনকাম। সম্পূর্ণ মাসের মধ্যে আপনি কতগুলো প্রজেক্ট এর কাজ করলেন তার ওপর নির্ভর করবে আপনার ফ্রিল্যান্সিংয়ের ইনকাম।
অনেক ফ্রিল্যান্সাররা আছে যারা কাজের চাপ কম রাখার জন্য একেবারে সীমিত ফ্রিল্যান্সিং প্রজেক্টগুলো গ্রহণ করে থাকে। আবার অনেকেই আছে যারা ফ্রিল্যান্সিং করে যত টাকা সম্ভব আয় করার উদ্দেশ্যে প্রচুর প্রজেক্ট গুলো কাজ করে থাকে।
এক কথায় আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ এবং আর্থিক লক্ষ্যটির উপর নির্ভর করবে আপনি কত টাকা ইনকাম করবেন। একাধিক গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে একজন প্রতিষ্ঠিত এবং অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার প্রতি মাসে প্রায় ৫০০ থেকে ২০০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে। যাই হোক এটি আপনার অবশ্যই মনে রাখা লাগবে যে ইনকামের পরিমাণটা শুধুমাত্র একটি আইডিয়া।
এটা নির্দিষ্ট কাজের উপর ভিত্তি করে এবং কি পরিমাণ কাজ করবেন তার উপর ভিত্তি করে ইনকাম হবে। সংক্ষেপে বলা যায় ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে ৩০ থেকে ১ লক্ষ টাকা ইনকাম করা যায় বা অনেকেই এরকম ইনকাম করছে।
তবে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হলে আর্থিকভাবে লাভজনক হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও নিজের দক্ষতার উপর নির্ভর করবে। ক্লায়েন্টের সাথে ভালো সম্পর্ক এবং সকল কিছুই নির্ভর করবে তার ইনকামের বিষয়টা।
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে
অনেকে জানতে চায় যে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে? আসলে এটা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক যদি আপনি শিখতে থাকেন, সেই ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করবে কত টাকা লাগতে পারে। তাই নিম্নে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো;
ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য কত টাকা খরচ হতে পারে, এটা জন্য কিছু বিষয় নির্ভর করে প্রথমে বলা যেতে পারে। যদি আপনি সম্পূর্ণ নিজে নিজে ইন্টারনেট থেকে শিখতে চান সে ক্ষেত্রে খরচ খুবই কম হতে পারে। যেমন ইউটিউব ফ্রি অনলাইন রিসোর্চ ব্লগ এবং টিউটোরিয়াল দেখে শেখা যেতে পারে।
কিন্তু এই পদ্ধতি শেখার সময় ইন্টারনেট খরচটা এবং আপনার ডেডিকেশনটা সবচাইতে বড় ইনভেস্ট করা লাগবে। তবে যদি আপনি কোন প্রফেশনাল ভাবে কোর্স করতে চান, সে ক্ষেত্রে খরচ বেশি হবে। কিছু প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সিং কোর্স আছে যা ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকার মত লাগতে পারে। অনেকে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম এর সাহায্যে শিখে থাকে।
যেমন Udemy, Coursera বা Skillshare এ ধরনের অনেক ওয়েবসাইট আছে সেখান থেকে আপনি কোর্স পেতে পারেন। এসব প্লাটফর্মগুলোতে সাধারণত ১৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে অনেক কোর্স পাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া আপনি ট্রেনিং সেন্টার গুলো বা ইনস্টিটিউশন থেকেও কোর্স করতে পারেন, এতে বেশি খরচ হবে।
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কি কি যোগ্যতা লাগে
ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়? এখন জানবো ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কি যোগ্যতা লাগবে, তা আমাদের জানা প্রয়োজন। নিম্নে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো,
আপনি যদি নিজেকে দক্ষ করতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং থেকে ভালো কিছু আশা করবেন না। ফ্রিল্যান্সিং থেকে ইনকাম করতে পারবেন না। আর যদি কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন সে ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা যেতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার ক্ষেত্রে সবচাইতে প্রধান যোগ্যতা হল ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আপনি যদি একদিনেই দক্ষতা অর্জন করে ইনকাম করতে পারেন, তাহলে তো সবাই এই কাজই করত। এজন্য আপনাকে লেগে থাকা লাগবে এবং সঠিক পথে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে তাহলে সাফল্য পাবেন।
ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য যে দক্ষতা গুলো প্রয়োজন; ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি শব্দ যা নির্দিষ্ট কোন দক্ষতা কে বুঝানো হয় না। বিভিন্ন কাজের বিভিন্ন ধরন হয়ে থাকে, ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে প্রথমে যে কোন একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
সব বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করার চেষ্টা করবেন না। এতে কোন একটা বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করাই ভালো হবে। তাহলে সফলতা অর্জন করতে পারবেন, সব থেকে জনপ্রিয় বিষয়গুলো ফ্রিল্যান্সিং এর দক্ষতা অর্জন করা যেতে পারে নিম্নে দেওয়া হল;
ডিজিটাল মার্কেটিংঃ ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন ভাগ আছে যেমন email facebook instagram এ বিষয়গুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য বা ব্র্যান্ডের প্রচারণা করা যেতে পারে। এসইও লিড জেনারেশনের কাজগুলো করা যেতে পারে, এগুলোতে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ যারা বিভিন্ন ডিজাইন করে থাকেন, লোগো, বিজনেস কার্ড টি-শার্ট এই ধরনের ডিজাইন করে বা করতে পছন্দ করে। তাদের মূলত গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজের দক্ষতা অর্জন করাই ভালো হবে।
কন্টেন্ট রাইটিংঃ যারা লেখালেখি করতে পছন্দ করে এবং সুন্দর করে লিখতে পারে। এই ধরনের দক্ষতা অর্জন করার জন্য আপনি করতে পারেন। এজন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা ব্লগের লেখালেখি করা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে ভাষার দিকে দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।
ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টঃ কিছু প্রোগ্রামিং ভাষা যদি জানা থাকে, সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং ডিজাইন করার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করা যেতে পারে।
সফটওয়্যার ডেভেলপারঃ প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করার পরে বিভিন্ন প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার কিংবা মোবাইল অ্যাপ যদি তৈরি করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আপনি অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো এগুলো সবগুলোই ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে জনপ্রিয়। তাছাড়া আরও অসংখ্য ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ আছে, আপনাকে ঠিক করা লাগবে যে কোন বিষয়ে আপনি ভালো দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
এর উপর ভিত্তি করে আপনাকে আস্তে আস্তে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে এবং ভালো প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে। তারপর আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে হবে। তাহলে আপনি ভালো কাজ করতে পারবেন এক কথায় এগুলোই মূলত ফ্রিল্যান্সিং এর যোগ্যতা থাকা লাগবে।
ফ্রিল্যান্সিং কি মোবাইলে করা যায়
অনেকে প্রশ্ন করে থাকে যে ফ্রিল্যান্সিং কি মোবাইলে করা যায়? আসলে প্রফেশনাল ভাবে যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং হতে চান, সে ক্ষেত্রে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন না। তবে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি মোবাইল দিয়ে কাজ করতে পারবেন। পরবর্তীতে আপনাকে এখান থেকে যদি কিছু ইনকাম করতে পারেন।
অবশ্যই প্রফেশনাল হিসাবে ফ্রিল্যান্সার হতে হলে আপনাকে ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার কিনতে হবে। তবে আপনি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন যে কাজগুলো খুবই সহজ এবং কম্পিউটারের প্রয়োজন হয় না। আপনি নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কেনার মত হয়তো এবিলিটি নাও থাকতে পারে।
তবে সব ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার সম্ভব না মোবাইলের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে অবশ্যই সীমাবদ্ধতা আছে, কাজ করার জন্য। সম্পন্ন কাজ করার জন্য মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এখানে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজের জন্য ফোন ব্যবহার করলে কাজ সম্পন্ন করার গতি উৎপাদনশীলতা ব্যবহারযোগ্যতা ও দক্ষতা অনেকটা বৃদ্ধি পাবে না।
কিন্তু আপনি যদি প্রথমে মোবাইলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতে চান সে ক্ষেত্রে এটা করা যেতে পারে। যদি শুরুতে আপনার কাজগুলো ঠিক থাকে তাহলে আপনার কাজের মাত্রা এবং আয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে থাকবে। তখন আপনি মোবাইল ফোন থেকে ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপ কিনতে পারবেন।
এমনকি সফল ডিজিটাল পেশাদার বা ফ্রিল্যান্সাররা সামান্য কিংবা কোনো সংস্থান ছাড়াই তাদের ফ্রিল্যান্সিং জার্নি শুরু করেছে এবং পরবর্তীতে তারা নিজেকে আপডেট করেছে। এমন কিছু কাজ আছে যেগুলো জন্য বড় স্ক্রিন বা high ফিগুরেশনের ডিভাইসের প্রয়োজন হয় না। সে ক্ষেত্রে আপনি মোবাইল দিয়ে কাজগুলো করতে পারেন।
শেষ কথাঃ ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায় জেনে নিন
পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে পারবেন। তাই ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে, আশা করি উপকার হবে। পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url