কুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয় বিস্তারিত জেনে নিন
কুয়েতে যাওয়ার জন্য কত টাকা লাগবে এ সম্পর্কে হয়তো অনেকে জানেনা। তাই কুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয়? সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, কুয়েতে যাওয়ার জন্য কত টাকা খরচ হবে সে সম্পর্কে জানা যাক।
প্রতিবছরে অনেকেই কুয়েতে কাজ করার জন্য যায় আবার অনেকে ভ্রমণ করার জন্য যায়। এই ক্ষেত্রে আপনার ভিসা খরচ কত টাকা হতে পারে এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই কুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয়? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃকুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয় বিস্তারিত জেনে নিন
কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
অনেকে কুয়েতে যেতে চায় কিন্তু জানে না কোন কাজের দাম বেশি। তাই কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি? এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক।
অনেকে কুয়েতে যেতে চায় বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে কিন্তু আসলে কোন কাজের চাহিদা বেশি সেটা হয়তো জানেন না। তাই কোন কাজের চাহিদা বেশি সেই কাজের বেতন কত সবকিছু জেনে তারপরে কুয়েতে গেলে আপনার ভালো হবে এবং সেই কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করে যদি যেতে পারেন তাহলে বেশি বেতন পাবেন। চলুন, কোন কাজের চাহিদা বেশি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ইলেকট্রিশিয়ান কাজঃ কুয়েতে ইলেকট্রিশিয়ান কাজ যারা করে তাদের অনেক চাহিদা আছে। বড় বড় বিল্ডিং ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণত ইলেকট্রিশিয়ানের প্রয়োজন হয়। তাই আপনি ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ যদি জানা থাকে তাহলে যেতে পারেন।
কনস্ট্রাকশনের কাজঃ আপনার যদি নির্মাণ কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকে সেই ক্ষেত্রে কুয়েতে যেতে পারেন। কারণ কনস্ট্রাকশনের কাজের অনেক দাম আছে। বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করার ক্ষেত্রে কনস্ট্রাকশনের শ্রমিক প্রয়োজন হয়। তাই এই কাজের চাহিদা রয়েছে।
ড্রাইভিংয়ের কাজঃ আপনার যদি ড্রাইভিং এর কাজ জানা থাকে, তাহলে আপনি এই বিষয়ে যেতে পারেন। কারণ বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিষ্ঠানের মালামাল ডেলিভারি করার জন্য ড্রাইভার এর প্রয়োজন হয়। তাই ড্রাইভিং কাজের অনেক চাহিদা আছে।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারঃ আপনি যদি মেকানিক্যাল কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে কুয়েতে যেতে পারেন। কারণ বিভিন্ন কোম্পানির যন্ত্রপাতি নিরক্ষণ করা মেকানিক্যাল জনিত কাজের জন্য মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর প্রয়োজন হয়। তাই এই কাজের চাহিদা আছে।
রেস্টুরেন্টের কাজঃ এই দেশটিতে অনেক পর্যটক আসে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার জন্য। তাই বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এজন্য রেস্টুরেন্টের ওয়েটার বা কুকার আরো বিভিন্ন ধরনের শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। তাই আপনি ভিসায় যেতে পারেন, কারণ এই কাজের চাহিদা আছে।
ক্লিনারের কাজঃ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অফিস আদালত সকল ক্ষেত্রে ক্লিনারের প্রয়োজন হয়। তাই এই ক্লিনার শ্রমিক হিসাবে তারা নিয়োগ দিয়ে থাকে, চাইলে আপনি এ কাজের জন্য যেতে পারেন, ক্লিনারের প্রয়োজন আছে।
ওয়েল্ডিং এর কাজঃ কনস্ট্রাকশনের কাজের ক্ষেত্রে বিল্ডিং ওয়েল্ডিং করা লাগে সেই ক্ষেত্রে এই কাজেরও চাহিদা অনেক।
আইটি সেবাঃ কুয়েতে ফ্রিল্যান্সিং খাতে অনেক চাহিদা আছে। এখানে ফ্রিল্যান্সিংয়ে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন এ ছাড়া আরো বিভিন্ন আইটি সেক্টরে অনেক চাহিদা রয়েছে।
মেডিক্যাল স্টাফঃ হাসপাতালে রোগীদের দেখাশোনা করার জন্য মেডিকেল স্টাফ ও নার্সদের প্রয়োজন আছে। তাই এই কাজের যদি দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি যেতে পারেন এতে অনেক বেতন পাবেন।
উপরের এই কাজগুলো কুয়েতে অনেক চাহিদা আছে আপনি যদি উপরোক্ত কাজগুলো দক্ষতা অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে কুয়েতে গিয়ে অনেক টাকা বেতনের চাকরি করতে পারবেন। কুয়েতে এই ধরনের কাজের জন্য বেশি বেতন দিয়ে থাকে, তাই বিশেষ করে শ্রমিকদের কুয়েতে অনেক বেতন দেয়।
কুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয়
আপনি যদি কুয়েতে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে কত টাকা লাগবে। তাই কুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয়? এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, কুয়েতে যাওয়ার জন্য কত টাকা খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে জানা যাক।
বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মত। আবার এর থেকে কম বেশি লাগতে পারে, কুয়েতে যাওয়ার জন্য অবশ্যই সরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যাবেন। তাহলে আপনি প্রতারণার শিকার হবেন না।
কারণ সরকারি এজেন্সির মাধ্যমে তুলনামূলক অনেক টাকা কম হয়ে থাকে। আর আপনি যদি দালাল সংস্থার মাধ্যমে যাওয়ার ইচ্ছা করেন, সে ক্ষেত্রে অনেক টাকা বেশি লাগবে। কমপক্ষে আপনার ২ লাখ টাকা বেশি খরচ হবে। তাছাড়া আপনার কোন যদি আত্মীয়-স্বজন থাকে, তাদের মাধ্যমে গেলেও অনেক সুযোগ সুবিধা পাবেন এবং নিশ্চিন্তে যেতে পারেন।
কুয়েতে কাজ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা ক্যাটাগরি আছে, ভিসার দাম সঠিকভাবে বলা কঠিন। তবে অবশ্যই ধারণা করা যাবে যে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার ক্ষেত্রে খরচ হতে পারে ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মত।
বর্তমানে প্রচলিত কাজের ভিসার মধ্যে অন্যতম ভিসা হল কোম্পানির ভিসা। এছাড়াও ড্রাইভিং ভিসা ক্লিনার, রেস্টুরেন্টের ভিসা পাওয়া যাচ্ছে। তবে টুরিস্ট এবং স্টুডেন্ট এর ভিসার দাম খুবই কম।
- স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে খরচ হতে পারে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা।
- আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চান সেই ক্ষেত্রে খরচ ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মত হবে।
- টুরিস্ট ভিসার জন্য খরচ হতে পারে ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা।
কুয়েতে যদি কাজের উদ্দেশ্যে আপনি যেতে চান, এক্ষেত্রে খরচ যা হবে তা বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে থাকে বা পরিবর্তনও হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের খরচ আছে যেমন ভিসা প্রক্রিয়া, বিমান ভাড়া মেডিকেল পরীক্ষা ইত্যাদি। চলুন কত টাকা খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে জানা যাক,
ভিসা প্রক্রিয়া এবং ফিঃ কুয়েতে কাজ করার জন্য কাজের ভিসা দরকার। এই ভিসার বিভিন্ন ধরনের ফি থাকবে, এজেন্সি ফি, প্রসেসিং ফি মোট খরচ হতে পারে ৫০০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকার মত। এছাড়াও এজেন্সির মাধ্যমে কাজ করলে এজেন্সের সার্ভিস ফি দেওয়া লাগবে।
বিমান ভাড়াঃ আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন, তাহলে একমুখী বিমানের টিকিটের খরচ ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মত হবে।
মেডিকেল পরীক্ষাঃ ৮০০০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মত, পরীক্ষা নির্ভর করে ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উপরে পরীক্ষার ধরনের কেমন হবে সেটা।
প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য প্রশাসনিক ফিঃ কুয়েতে যদি যেতে চান, সে ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ নেওয়া লাগবে। বিশেষ করে নিরাপত্তা এবং দক্ষতার জন্য এই প্রশিক্ষণের খরচ হতে পারে। ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকার মত। এছাড়াও অন্যান্য প্রশাসনিক যেমন পাসপোর্ট নবায়ন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ইত্যাদি। এই গুলোর বিষয়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মত খরচ হবে।
অন্যান্য খরচঃ কুয়েতে যখন যাবেন তখন ছোটখাটো আরো খরচ থাকবে, যেমন প্যাকেজ ফি ভ্রমণের প্রস্তুতি এবং প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা খাওয়ার। এছাড়াও এই যাবত খরচ হবে, এভাবে খরচ হবে ২০০০০ থেকে ৩০০০০ টাকার মতো।
অতিরিক্ত সুবিধা ও বোনাসঃ কুয়েতে আপনি বিভিন্ন কাজের সাথে যখন যুক্ত হবেন। তখন আপনি বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও বোনাস পাবেন। তাছাড়া আরো বাসস্থান চিকিৎসা সুবিধা এছাড়াও পরিবহন সুবিধা ছুটি ও বোনাস ইত্যাদি গুলো সুবিধা পাবেন। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করে যা কর্মীদের জন্য একটি বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।
এছাড়াও স্বাস্থ্য বীমা বা ফ্রি মেডিকেল চেকআপ। এই সুযোগগুলো পাওয়া যাবে, কর্মীদের কর্মস্থলে পৌঁছানোর জন্য ফ্রি ট্রান্সপোর্ট এর সুবিধা, অনেক প্রতিষ্ঠান থেকেও খরচ দিয়ে থাকে। অনেক প্রতিষ্ঠান বছরে একবার বোনাস দেবে এবং ছুটির সুযোগ দেয়, যাতে করে কর্মীদের জন্য একটি বড় উৎসাহ পেয়ে থাকে।
কুয়েতে বেতন বৃদ্ধি এবং পদোন্নতির সুযোগ আছে, দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রবাসীরা পদোন্নতি পাবে এবং বেতন বাড়বে। সাধারণত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা উপর ভিত্তি করে বেতন বাড়িয়ে থাকে। প্রবাসীরা যদি নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে, তাহলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব। এছাড়াও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মাধ্যমে কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়।
কুয়েতের সর্বনিম্ন বেতন কত
আপনারা যারা কুয়েতে যেতে চাচ্ছেন, তাদের জানা উচিত কোন কাজের বেতন কি রকম তাই কুয়েতের সর্বনিম্ন বেতন কত? এ সম্পর্কে জানার প্রয়োজন। চলুন বিস্তারিত ভাবে জানা যাক।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে ইউরোপ দেশের কর্মীদের বেতন খুব কম হয়ে থাকে। সর্বনিম্ন বেতন বিভিন্ন কাজের উপর নির্ভর করে, বর্তমানে প্রাইভেট সেক্টরে কুয়েতের সর্বনিম বেতন হলো ২৫০ ডলারের মত। বাংলাদেশি টাকায় পাবেন ২৮ হাজার টাকা।
এই দেশটিতে প্রবাসীদের বেতন অনেক কম দেয়, এদেশের সপ্তাহের সাধারণত ৪৮ ঘন্টা কাজ করতে হয়, প্রতিদিন কাজের মাঝে ১ ঘণ্টা বিরতি পাবেন। কুয়েতে বেতন নির্ভর করবে কাজের উপরে। দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকে, আর কিছু কাজের বেতন অনেক বেশি হবে। আবার কিছু কাজের তুলনামূলক কম হয়ে থাকে, বিশেষ করে ক্লিনারের ভিসায় যারা যাবেন, তাদের বেতন খুবই কম।
আপনার যদি কোন একটি কাজের অভিজ্ঞতা থাকে এবং দক্ষতা থাকে সেক্ষেত্রে কুয়েতে অনেক টাকায় বেতন পাবেন। তবে যদি আপনার উচ্চশিক্ষা গত যোগ্যতা থাকে সেক্ষেত্রে আপনি অনেক টাকায় বেতন পাবেন। তবে কাজের অভিজ্ঞতা লাগবে, চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কাজের কেমন বেতন হবে।
আপনার যদি মোবাইল মেকানিকের কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, সেই কাজটি যদি করেন তাহলে মাসিক বেতন প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকার মত।
আপনার যদি ইলেকট্রিশিয়ান এর কাজ যারা থাকে, সেই ক্ষেত্রে মাসিক বেতন পাবেন ১ লক্ষ ৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।
আপনার যদি গাড়ি মেকানিক্স কাজ জানা থাকে, সেই কাজ যদি বিয়েতে করেন। সেই ক্ষেত্রে বেতন প্রায় ১ লক্ষ থেকে শুরু করে আড়াই লক্ষ টাকার মতো বেতন পাবেন।
আপনার যদি এসি টেকনিশিয়ানের কাজ জানা থাকে, তাহলে আপনার মাসিক বেতন পাবেন প্রায় ১ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মত।
আপনার যদি টেইলার্সের কাজ জানা থাকে সেই ক্ষেত্রে মাসিক বেতন পাবেন ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকার মত।
আপনার যদি ড্রাইভিং এর কাজের প্রতি অভিজ্ঞতা থাকে সেক্ষেত্রের মাসিক বেতন পাবেন ৬৫ থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।
আপনি যদি ক্লিনার এর কাজ করেন সেই ক্ষেত্রে মাসে বেতন পাবেন ৬০ হাজার টাকা।
তাছাড়া কনস্ট্রাকশনের কাজ অর্থাৎ রাজমিস্ত্রি, পাইপ ফিটিং, ওয়েল্ডিং, রড মিস্ত্রির কাজ যদি জানা থাকে, এক্ষেত্রে যদি কাজ করে থাকেন তাহলে প্রতি মাসে বেতন পাবেন ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা।
উপরোক্ত এই কাজ গুলো যদি করেন সে ক্ষেত্রে বেতন বেশি হতে পারে কমবেশি হতে পারে, তাই যাওয়ার আগে এই ধরনের কাজগুলোর একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করে তারপরে কাজ করতে পারেন তাহলে ভালো বেতন পাবেন।
বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কি কি লাগে
ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি কুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয়? এখন জানবো কুয়েত যাওয়ার জন্য কি ডকুমেন্টস লাগে সে সম্পর্কে চলুন নিম্নের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
কুয়েতে যাওয়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগতে পারে, যেগুলো আপনাকে সংগ্রহ করা লাগবে। চলুন, কোন কাগজগুলো লাগতে পারে সে সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
আপনার বৈধ পাসপোর্ট লাগবে কমপক্ষে ৬ মাস বয়স লাগবে এর কম হলে হবে না।
- আপনার জীবন বৃত্তান্ত দেওয়া লাগবে
- ভিসা আবেদনপত্র প্রয়োজন হবে
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে
- আবেদন কারীর মেডিকেল রিপোর্ট জমা দেওয়া লাগবে।
- কাজের অনুমতিপত্র দিতে হবে
- কাজের চুক্তিপত্র প্রয়োজন হবে
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে হবে
- পুলিশ ভেরিফিকেশনের সার্টিফিকেট দেওয়া লাগবে
- শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি থাকে সেই ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট দিয়ে দিবেন।
- কাজের প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট থাকলে দিতে হবে
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র যদি থাকে সেটা দিয়ে দিবেন
- করোনা ভ্যাকসিন এর সার্টিফিকেট দেওয়া লাগবে।
উপরোক্ত এই কাগজগুলো আপনাকে দিতে হবে, তাই আগে থেকেই এই কাগজগুলো সংগ্রহ করবেন। তা না হলে সমস্যা হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত সময় লাগে
অনেকে প্রশ্ন করে থাকে যে বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত সময় লাগে? তাই এটা নির্ভর করবে দূরত্বের উপরে। বাংলাদেশ থেকে যারা কুয়েতে যেতে চাচ্ছেন, তারা যদি ননস্টপ ফ্লাইট যেতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনার সময় লাগবে ৫ ঘন্টা ৪০ মিনিট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৬ ঘন্টা ২০ মিনিটের মতো সময় লাগবে।
এছাড়া যদি আপনি বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে লোকাল বিমানে যান, সে ক্ষেত্রে খরচ হতে পারে বা সময় লাগবে ১১ ঘন্টা ৪০ মিনিট থেকে ১২ ঘন্টা ২০ মিনিটের মত।
কুয়েত যেতে কত বছর বয়স লাগে
মানুষের জীবনে অনেকে জিজ্ঞাসা করে থাকে যে কুয়েত যেতে কত বছর বয়স লাগে? তাই আপনার যদি বয়সের সমস্যা থাকে, সেই ক্ষেত্রে কুয়েতে যাওয়ার জন্য ঝামেলা হতে পারে। তাই চলুন কত বয়স লাগতে পারে সে সম্পর্কে জানা যাক।
তবে টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে বয়সের পুরুষ সীমাবদ্ধতা থাকবে না। এই ক্ষেত্রে তাছাড়া কাজের ভিসা নিয়ে যদি কুয়েতে যেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার সর্বনিম্ন ২১ বছর হওয়া লাগবে এবং সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।
তাছাড়া আপনার বয়স যদি কমবেশি হয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে ভিসা পাবেন না, যদিও কুয়েতের কাজের জন্য সর্বনিম্ন বয়স ধরা হয়েছে ১৮ বছর এক্ষেত্রে ভিজিট ভিসার মাধ্যমে গিয়ে যদি আপনি করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে কাজ করলে অবশ্যই বয়সের শর্ত পূরণ করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে কুয়েত বিমান ভাড়া কত
অনেকে জানতে চায় বিমান ভাড়া সম্পর্কে তাই বাংলাদেশ থেকে কুয়েত বিমান ভাড়া কত? সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, বাংলাদেশ থেকে বিমানে যাওয়ার জন্য কত ভাড়া লাগতে পারে সম্পর্কে জানা যাক। বাংলাদেশ থেকে যদি আপনি কুয়েতে যেতে চান, সেই ক্ষেত্রে বিমান ভাড়া কি পরিমাণ লাগবে, সেটা অবশ্যই জানা প্রয়োজন।
তাছাড়া আপনি প্রতারিত হতে পারেন এজন্য অনেকেই বাংলাদেশ সম্পর্কে হয়তো জানেন না। বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে যাওয়ার জন্য কুয়েত এয়ার এয়ারওয়েজ এই বিমানের মাধ্যমে যদি পেতে চান, এ ক্ষেত্রে আপনার বিমান ভাড়া করবে ১ লক্ষ ১৬ হাজার থেকে ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকার মত লাগবে।
বাংলাদেশ থেকে যদি শ্রীলংকার এয়ারলাইন্সে যান সে ক্ষেত্রে বিমান ভাড়া করবে ৭৮ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।
আপনি যদি ফ্লাইট দুবাই বিমানের মাধ্যমে যেতে চান, সেই ক্ষেত্রে ৩ লক্ষ হাজার থেকে ৭৮ হাজার থেকে ৩ লক্ষ টাকার মত।
আপনি যদি কাতার এয়ারওয়েজ এর মাধ্যমে যেতে চান, সেই ক্ষেত্রে খরচ হবে ৬৫০০০ থেকে ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা।
তুর্কি এয়ারলাইন্স এর মাধ্যমে যদি যান সে ক্ষেত্রে খরচ করবে ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ থেকে আপনি যদি ইন্ডিগো এয়ারওয়েজ এর মাধ্যমে যেতে চান, সেই ক্ষেত্রে খরচ করবে ৭৫ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
আপনি যদি এয়ার এরাবিয়া এই বিমানের মাধ্যমে যান সে ক্ষেত্রে খরচ পড়বে ৯৫০০০ থেকে ২ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা।
আশা করি বিমান ভাড়া সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন, কোন বিমানে কত খরচ হতে পারে। তাই আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করবে।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত
অনেকে কোম্পানি ভিসা যেতে চান তাই কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত? এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাহলে সেখানে কাজ করতে ভালো লাগবে এবং আপনার পরিতৃপ্তি আসবে। চলুন এ সম্পর্কে জানা যাক।
কুয়েতে ভিসার বেতন এর ক্ষেত্রে নির্ধারণ করে থাকে, কোম্পানির বৈশিষ্ট্য শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কুয়েতের অর্থনীতির উপর ভিত্তি করে আপনার বেতন নির্ধারণ করবে। সকল কোম্পানি ভিসার ক্ষেত্রে মাসিক বেতন উল্লেখ করবে। এছাড়াও বেতনের সাথে বছরে ১ থেকে ২ বার বোনাস পাবেন।
তাছাড়া কোম্পানি বেতনের ক্ষেত্রে চাকরির অফার লেটারে উল্লেখ করে দেবে। এক্ষেত্রে কুয়েতের কোম্পানিগুলো স্বাভাবিক বেতন সাধারণত হয়ে থাকে ৩৫০০০ থেকে ৪০০০০ টাকা, হয়তো কম বেশি হবে। তবে কিছু কোম্পানি বেতন নির্ধারণ করে দেড় লক্ষ্ থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো। নিম্নে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো,
আপনি যদি কোম্পানির কাজের ক্ষেত্রে হেলপার হিসেবে কাজ করেন, সেই ক্ষেত্রে মাসে বেতন পাবেন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
কোম্পানির ভিসায় যদি আপনি ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করেন, সেক্ষেত্রে কোম্পানি আপনাকে বেতন দেবে ৪৫ থেকে ৬০ হাজার টাকার মত।
কোম্পানির মাধ্যমে যদি আপনি ইলেকট্রিশিয়ান এর কাজ করার জন্য যান, সেই ক্ষেত্রে বেতন পাবেন ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।
এছাড়া আপনি কুয়েতের কোন কোম্পানির যদি ড্রাইভিং এ কাজে যান সে ক্ষেত্রে বেতন পাবেন ৬০০০০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।
এছাড়াও আপনি যদি মেকানিকের কাজের উপরে যেতে চান তাহলে আপনার বেতন হবে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।
আপনি যদি এসি মেকানিকের কাজ জানেন, সেই কাজের উপর যদি যান সে ক্ষেত্রে বেতন পাবেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।
এছাড়াও কোম্পানির মাধ্যমে যদি আপনি ওয়েল্ডিং এর কাজ করার জন্য যান সে ক্ষেত্রে বেতন পাবেন ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার।
উপরে উল্লেখিত বেতন সম্পর্কে হয়তো কম বেশি হতে পারে। তাই কোম্পানির ভিসায় যদি যান সে ক্ষেত্রে আপনাকে যে বেতন নির্ধারণ করে দেবে, সেই বেতনই পাবেন। এছাড়া আপনি ইনকাম করতে পারবেন না। ওভার টাইম করার সুযোগ নাই। কোম্পানি বেতন নির্ধারণ করে দেবে।
কুয়েত কাজের ভিসা আবেদন করার নিয়ম
যেহেতু বর্তমানে সকল কাজকর্ম অনলাইনে করা হয়। তাই কুয়েতের ভিসার কাজের ক্ষেত্রেও অনলাইন করা হবে। এজন্য কুয়েত কাজের ভিসা আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে আপনার জানা প্রয়োজন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি আবেদন করবেন।
বর্তমানে অনেকেই কুয়েতে যাওয়ার ক্ষেত্রে দালালের ধরে প্রতারিত হয়, এছাড়াও অনেকে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা শিকার হয়। এ থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে ঘরে বসে এই ভিসার আবেদন অনলাইনে মাধ্যমে করতে পারবেন। তাহলে এই ক্ষেত্রে প্রতারণা হবেন না।
এ যুগে সবার হাতেই স্মার্ট ফোন থাকে তাই আপনি ফোনের মাধ্যমেও এই ভিসার অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এজন্য কিভাবে আবেদন করতে হয়, সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক। এজন্য আপনি কুয়েতের ওয়েবসাইটের লিংক প্রবেশ করবেন।
এরপর আপনার সামনে প্রথমে ওয়েব সাইটে আসার পরে সেখানে আবেদন ফরমে অপশন দেখতে পারবেন। ওইখানে ক্লিক করতে হবে, এরপর আপনার যাবতীয় তথ্যগুলো দিয়ে ফর্মটা পূরণ করবেন। আবেদন ফরম পূরণ করার পর অবশ্যই সঠিক তথ্য দিবেন।
কোন মিথ্যা তথ্য দেওয়া যাবে না। ভালোভাবে আবেদন ফরমটা পূরণ করতে হবে। এর পরে আপনি সাবমিট বাটনে ক্লিক করবেন। তাহলে আপনার আবেদন করা শেষ হবে। অনলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কুয়েত ভিসা এম্বাসিতে গিয়ে তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে আবেদন করা যাবে।
শেষ কথাঃ কুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয় বিস্তারিত জেনে নিন
পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি কুয়েতে যাওয়ার ইচ্ছা করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই জানতে হবে কত টাকা খরচ হবে। তাই কুয়েত যেতে কত টাকা খরচ হয়? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি সেখান থেকে জানতে পেরেছেন। তাই পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url