মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি ও কারণ সম্পর্কে জেনে নিন

অনেকে মুখের দুর্গন্ধে ভুগছেন, তাই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি? সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তারা আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। চলুন, কিভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
আমাদের কিছু নিয়ম না জানার কারণে অনেক সময় মুখের দুর্গন্ধ হয়। এই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনার মুখে দুর্গন্ধ দূর হবে। তাই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃমুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি ও কারণ সম্পর্কে জেনে নিন

মুখের দুর্গন্ধের কারণ

অনেকের মুখের দুর্গন্ধ হয়, কি কারনে হতে পারে সে সম্পর্কে হয়তো জানে না। তাই মুখের দুর্গন্ধের কারণ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক।

অনেকের মুখে বাজে গন্ধ হয় যার কারণে মানুষের সাথে কথা বলতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যায়। এক্ষেত্রে বন্ধু-বান্ধব অনেক সময় মুখ ফিরিয়ে নেয়, এমন সমস্যার সমাধান সম্পর্কে কিছু জেনে নেওয়া যাক। বিভিন্ন ডেন্টিস্ট যে কারণগুলো বলে থাকে তা আপনাদের সম্মুখীন উপস্থাপন করছি।
  • খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কারণে হতে পারেন
  • সঠিক পদ্ধতিকে দাঁত পরিচর্যা না করা
  • শারীরিক কিছু রোগ থাকে এবং মুখ ও দন্ত রোগের চিকিৎসা না করার কারনে হতে পারে।
  • দীর্ঘ সময় ধরে না খেয়ে থাকলে মুখের লালা কমে যায় যার কারণে ব্যাকটেরিয়া গুলো বৃদ্ধি পেতে থাকে যার কারণে মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে
মুখের থুথু কমে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়, কারণ থুথু মুখের ব্যাকটেরিয়া প্রজনন করতে পারে না। যার কারণে ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যাওয়ার কারণে গুলো মুখের লালা কমে যায়। সেই ক্ষেত্রে মুখের থুথু কমে গেলে দ্রুত প্রজনন করতে পারে এ কারণে মুখ গন্ধ হতে পারে।

যেসব খাবারের মুখের পানি শূন্যতা তৈরি করতে পারে সেই খাবার গুলো বেশি খেলে মুখের দুর্গন্ধ হবে।
পানি কম খাওয়ার কারণে মুখে দুর্গন্ধ হয়।
নিয়ম মত মুখ ও দাঁতের যত্ন না নিলে মুখের দুর্গন্ধ হয়।
কিছু শারীরিক সমস্যা থাকলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে যেমন পেটের সমস্যা, লিভারের সমস্যা, টনসিল জনিত সমস্যা, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস যাদের আছে তাদের এই সমস্যা দেখা দেয়।
  • মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার কারণে অনেক সময় মুখে দুর্গন্ধ হয়।
  • দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে জিহবা পরিষ্কার না করলে জিহবার উপরে সালফারের প্রলেপ পড়ে, যার কারণে মুখে দুর্গন্ধ দুর্গন্ধ হয়।
  • প্রতিবার খাওয়ার পরে মুখের ভিতরে খাদ্য আবরণ দাঁতের ফাঁকে মাড়ির ভিতর জমে থাকে, যা ডেন্টাল প্লাক সৃষ্টি করতে পারে। এর থেকে প্রদাহ সৃষ্টি হয় এরপরে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।
  • মুখের ভিতরে যেকোনো ধরনের ঘা বা ক্ষত হলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।
  • আঁকাবাঁকা দাঁত থাকার কারণে খাদ্য কণা জিহবার ভিতর অবস্থান করতে পারে, যার কারণে যার কারণে মুখে দুর্গন্ধ হয়।
  • দেহে সাধারণত রোগের কারণে মুখের ভিতর ফাঙ্গাস জাতীয় ঘা হয়, যার কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।
  • মুখের ক্যান্সারের কারণেও মুখে অনেক সময় দুর্গন্ধ হয়।

যেসব রোগের কারণে মুখের দুর্গন্ধ হয় চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক,

  • পেপটিক আলসার বা পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা থাকলে মুখে দুর্গন্ধ হয়।
  • গর্ভাবস্থায় অনেক সময় মুখে দুর্গন্ধ হয়।
  • যারা কিডনি রোগে ভুগছেন তাদের সাধারণত মুখে দুর্গন্ধ হয়।
  • বাত জনিত রোগ রয়েছে যাদের
  • হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের কারণে
  • গলা বা পাকস্থলের ক্যান্সার হওয়ার কারণে
  • এইডস রোগের কারণে হতে পারে
  • যাদের হৃদরোগ রয়েছে
  • মানসিক রোগীদের হতে পারে
  • নাক কান গলা বিষয়ে যাদের রোগ আছে।
উপরোক্ত এই কারণগুলোর জন্য সাধারণত মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে, এছাড়াও আরো অনেক কারণ আছে তাই আপনার যদি এই ধরনের সমস্যাগুলো থাকে তাহলে অতি দ্রুত সমাধান করে নেবেন।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি

অনেকে মুখের দুর্গন্ধ এর কারণে উপায় সম্পর্কে জানতে চায়, তাই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে নিম্নে আলোচনা করা হলো, চলুন জেনে নেওয়া যাক।

তিন বেলা খাওয়ার পর পরিষ্কার বা উন্নত মানের একটি ব্রাশ ও পেস্ট দিয়ে দাঁতের সব অংশে লাগবেন, ভিতরে ও বাহিরে পরিষ্কার করা লাগবে।

খাবার খাওয়ার ৩০ থেকে ৬০ মিনিট অপেক্ষা করবেন, এরপর ব্রাশ করতে হবে। অবশ্যই দুই বেলা ব্রাশ করবেন, খাবারের পরপরই মুখের পিএইচ এসিডিক থাকে। তখন ব্রাশ করার কারণে এনামেল এর ক্ষতি হতে পারে, এর সাথে এন্টি মাইক্রোবিয়াল মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে পারবেন। দিনে অন্তত একবার জিহবা পরিস্কার করবেন।

যেকোনো ধরনের মাউথ ওয়াশ ক্লোরোহেক্সেডিন জাতীয় দুই চামচ মুখে ৩০ সেকেন্ড রেখে দিবেন। এরপর ফেলে দিয়ে আবার অল্প গরম ও লবণ পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে কুলকুচি করতে পারেন। প্রতিদিন দুবার সকালে রাতে খাবারের পর কুলকুচি করা প্রয়োজন।

অবসর সময়ে মুখের ভিতরে একটি লবঙ্গ বা এলাচির দানা রেখে দিবেন, এতে মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।

প্রতিবার খাওয়ার পরে যেমন বিস্কুট ফলমূল জাতীয় খাবার যদি খেয়ে থাকেন, তাহলে দাঁত ব্রাশ করা অথবা কুলকুচি করা লাগবে।

ধূমপান বা তামাক জাত দ্রব্য যেমন জর্দা, পান এগুলো বর্জন করা লাগবে। ধুমপান মুখ গহবরকে অধিক পরিমাণে শুষ্ক করে থাকে। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে লালা ও তৈরি না হওয়ার কারণে দাঁত ও জিহবা এর ভিতর নিকোটিন জমা হয়ে থাকে। এছাড়াও ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল মুখের ভিতর শুষ্কতা করতে পারে এজন্য এসব বর্জন করতে হবে।

যাদের মুখ গহবর অনেক শুষ্ক থাকে তাদের মুখের দুর্গন্ধ বেশি হয়। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া লাগবে এক্ষেত্রে অল্প করে বারে বারে খেতে পারেন।

মুখের লালা নিঃসরণ বাড়াতে চিনি বিহীন লজেন্স বা সুগারলেস চুইংগাম খাওয়া যেতে পারে, এতেও মুখে লালা বৃদ্ধি পাবে।

সজীব নিঃশ্বাসের জন্য টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করবেন, তখন কয়েক ফোঁটা চা পাতার তেল বা পুদিনা পাতার তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অনেক কাজ করে থাকে।

দাঁতের ফাঁকে বা মাড়ির ভেতর অনেক সময় খাদ্য কণা জমে থাকে, যার কারণে পচন ধরে এর জন্য ডেন্টাল ফ্লস টুথ পিকসের সাহায্য খাদ্য কণাগুলো বের করে দিতে পারেন। এই ডেন্টাল ফ্লস বা সুতো এবং জীবাণুমুক্ত শলাকা ব্যবহার করা যেতে পারে।

অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল মাউথ ওয়াশ যেমন ০.২ শতাংশ ক্লোরহেক্সোডিন অথবা ০.৫ % প্রভিডন 

আয়োডিন প্রতিদিন তিনবার দুই চামচ ৩০ সেকেন্ড ধরে প্রতিবার কুলকুচি করে দেখতে পারেন। এতে অনেক উপকার পাবেন।

দৈনিক কম করে হলেও তিন থেকে চার লিটার পানি খাওয়া লাগবে।

রাতে ঘুমানোর সময় নাক দিয়ে নিশ্বাস করার অভ্যাস করতে হবে, মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নিলে মুখে দুর্গন্ধ হয়।

অনেক সময় মাছ খেলে দুর্গন্ধ হতে পারে তাই মাছের উপরে লেবুর রস দিতে পারেন এতে দুর্গন্ধ থাকবে না।

উপরোক্ত নিয়মগুলো যদি আপনি মানতে পারেন তাহলে আশা রাখি আপনার মুখের দুর্গন্ধ থাকবে না। তাই উপরোক্ত নিয়মগুলো একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন, উপকার পাবেন।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার খাবার

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য অনেক সময় খাবার ও খাওয়া লাগতে পারে। তাই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার খাবার গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। তার আগে জানতে হবে কোন খাবারগুলো খেলে আমাদের মুখে দুর্গন্ধ হয়। চলুন, সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
মিষ্টি ও উচ্চ মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারগুলো খেলে মুখে গন্ধ তৈরি করতে পারে। এগুলো সাধারণত দাতে প্লাক তৈরি করতে পারে, এ সম্পর্কে অনেক ডেন্টিস্ট এবং পুষ্টিবিদরা বলেছেন।

মুখের লালা উৎপাদনের পরিমাণ কমে যেতে পারে এই ধরনের খাদ্যের মধ্যে যেমন কফি, কারণ এর মাঝে ক্যাফেইন থাকে যা আমাদের মুখের লালা কমিয়ে দেয়। যে কারণে ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি হওয়া দুর্গন্ধ বৃদ্ধি পেতে থাকে।

রসুন ও পিয়াজ এর মধ্যে থাকে সালফার যা শুধু মুখেই গন্ধ তৈরি করে না বরং খাওয়ার পরে রক্তের সাথে মিশ্রিত হয়। যার কারণে প্রতিবার নিঃশ্বাস ছাড়ার সময় এটা বাজে একটি দুর্গন্ধ আসে।

দুধ ও পনির মুখে দেওয়ার পর ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসে মুখে দুর্গন্ধ তৈরি করতে পারে।

ঝাল ও মসলাদার খাবারগুলো হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে যার কারণে পেটের সমস্যা হলেই মুখে দুর্গন্ধ হবে। এই ধরনের খাবার খেলে পেটে গ্যাস হয় যা উপরের দিকে উঠে আসে এবং মুখে বাজে গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে ঝালের উপাদান হিসেবে ক্যাপসাইসিন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরো বৃদ্ধি করতে পারে।

যদি ঠিকমত হজম না হয় সেই ক্ষেত্রে মাছের প্রোটিন নিঃশ্বাসে বাজে গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে। এটা অনেক নিউট্রিসিয়ানরা বলেছেন। কারণ মাছে থাকা ট্রাইমথাইলামিন এই রাসায়নিক আমাদের মুখের দুর্গন্ধ তৈরি করতে পারে।

যে সকল খাবার খেলে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে সেই খাবারগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ফল ও সবজিঃ যেমন ফলের মধ্যে আপেল গাজর সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল পাওয়া যায়। যা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে, কারণ এসব খাবার গুলো মুখে লালা পরিমাণ বৃদ্ধি করে। যা ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি হওয়া এসিড ও খাবারের কোণাগুলো দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়া লালাতে থাকা খনিজ দাঁতের এনামেল রক্ষা করতে পারবে।

স্ট্রবেরি তরমুজ ও আপেলঃ এগুলো খাওয়ার পর আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করবে, কারণ এই খাবার গুলোর মধ্যে থাকে ম্যালিক এসিড যা দাঁতের দাগ দূর করতে পারবে এবং দাঁতকে উজ্জ্বল করবে এছাড়াও লালার পরিমাণ বৃদ্ধি করবে।

গারো পত্র শাঁকেঃ এর মধ্যে থাকে ক্যালসিয়াম যা ক্ষতিকর এসিডকে দূর করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় ফলিক অ্যাসিড বৃদ্ধি করবে, যা দাঁতের মাড়ির কোষ তৈরি করতে সাহায্য করবে।

ভিটামিন সি যুক্ত খাবারঃ খেতে পারেন যেমন লাল মরিচ ব্রকলি ফুটি কমলা যা আপনার মুখের ব্যাকটেরিয়া বিরুদ্ধে কাজ করবে, এতে আপনার মুখে দুর্গন্ধ হবে না।

আদাঃ ব্যাকটেরিয়ার কারণে মুখে দুর্গন্ধ হয় যা এই আদা খেলে আপনার এই ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে ছয়টি জিনজের অল চেঞ্জের অল উপাদান থাকে যা এনজাইম তৈরি কারি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করবে।

প্রোবায়োটিক খাবারঃ দই এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা আমাদের মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে। কারণ প্রোবায়োটিক মূলত হজম শক্তিতে ভালো কাজ করে থাকে। আর এই হজম শক্তি ভালো থাকলে মুখের দুর্গন্ধ হবে না।

তাছাড়া পুদিনা, ধনিয়া মৌরি লবঙ্গ এগুলো মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে।

গ্রিন টিঃ এর মধ্যে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পলিফেন্স যা মুখের ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন কমিয়ে রাখে। আর প্রদাহরোধী উপাদান থাকায় দাঁতের মাড়ি কে সুস্থ রাখবে।

তাছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া লাগবে এতে আপনার আর্দ্রতা থাকবে, পাশাপাশি পানি মুখের ভিতর লেগে থাকা খাদ্য কণাগুলো পরিষ্কার করে থাকে লালার পরিমাণ বৃদ্ধি করে যে কারণে মুখের দুর্গন্ধ দূর হতে সাহায্য করে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার মাউথ ওয়াশ

এতক্ষণে আমরা জেনেছি মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি? সম্পর্কে। এখন জানবো কিভাবে মাউথ ওয়াশ দিয়ে মুখের দুর্গন্ধ দূর করবেন। তাই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার মাউথ ওয়াশ কিভাবে ব্যবহার করবেন এবং এটার কি উপকার সে সম্পর্কে চলুন নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক।

নিয়মিত ব্রাশ করা এর পাশাপাশি মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে দাঁতে হলুদ আস্তরণ নারীর রোগ মাড়িতে রোগ ব্যাধি ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে। বেশিরভাগ ডেন্টিস্ট দাঁত ব্রাশের পর এক ঘন্টা অপেক্ষা করতে বলে, যার কারণে টুথপেস্টের প্রোটেকটিভ ক্লোরাইড ধুয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। মাউথ ওয়াশ কেনার আগে নিশ্চিত হওয়া লাগবে যে কোন উদ্দেশ্য আপনি ব্যবহার করবেন।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে মাউথ ওয়াশ ব্যবহারঃ মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করলে মুখের দুর্গন্ধ কমবে। আবার মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করার কারণে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা উৎপাদন সালফারের গন্ধ কে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে। মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার কারণে এতে সিটাইল পাইরি ডেনিয়ামের মত অ্যান্টিসেপটিক এবং হাই থাইমল এর মত এসেনশিয়াল থাকে।

এই ধরনের মাউথ ওয়াশ আপনাকে ব্যবহার করা লাগবে, মুখের শুষ্কতা সৃষ্টি করতে পারে মুখের লালার কমে গেলে মুখের ভিতরে স্তরে ড্যামেজ হয়ে যায় এবং দাঁত ক্ষয় হয় এর ফলে দুর্গন্ধ হতে পারে এজন্য কিছু স্প্রে অথবা ময়েশ্চারিং মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়

আপনি যদি প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে মুখের দুর্গন্ধ এর চিকিৎসা করতে চান, মুখের দুর্গন্ধের চিকিৎসা করতে চান তাহলে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই এই ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পারবেন চলুন সম্পর্কে জানা যাক।
ছবি
লবঙ্গঃ লবঙ্গ আমাদের রান্নাঘরে সাধারণত পাওয়া যায় যা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এবং দাঁতের মাড়ি ফোলা যাদের সমস্যা আছে তারা এই লবঙ্গ খেতে পারেন। এর মধ্যে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকে।

যা মুখের ব্যাকটেরিয়া সংখ্যা কমাতে পারবে এবং অন্যান্য দাঁতের সমস্যা যেমন রক্ত পড়া, দাঁতের ক্ষয় হওয়া এই ধরনের সমস্যাগুলো দূর করতে পারে। বিশেষ করে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কয়েক টুকরো লবঙ্গ মুখে চিবিয়ে নিতে পারেন।

দারুচিনিঃ এক ধরনের মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে এটা যদি খান তাহলে আপনার নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ সমস্যাটা দূর করতে সাহায্য করবে। লবঙ্গের মতো দারচিনিতেও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকে যা মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া কমাতে পারবে। মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য মুখে রেখে দিয়ে দেখতে পারেন, দেখবেন কিছুক্ষণ পরেই এটা আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।

লবণ পানির গার্গলঃ হালকা কুসুম গরম পানির মধ্যে একটু লবণ দিবেন এটা নিয়ে মুখের ভিতরে কুলকুচি করবেন। এতে আপনার খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলো কমাতে সাহায্য করবে এবং মুখের গন্ধ কে দূর করবে।
লবণ পানি মুখের মধ্যে গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে দূর করতে সাহায্য করবে। আপনি এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ লবণ নিবেন এবং যখন আপনি বাহিরে যাবেন তখন এই পানি দিয়ে গারগল করতে পারেন।

মধু ও দারুচিনিঃ এ দুটিই মিষ্টি জাতীয় খাবার যা আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি এবং এন্টিব্যাক্টরিয়াল বৈশিষ্ট্য যা আপনার মুখের ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করবে এবং দাঁতের মাড়িকে সুস্থ রাখবে।

দাঁত এবং দাঁতের মাড়ি এর মধ্যে নিয়মিত মধু এবং পেস্ট লাগাতে পারেন। এতে দাঁতের ক্ষয় ও দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া এমন কি নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।

পুদিনা পাতাঃ এটি একটি প্রাকৃতিক মাউন্ট ফ্রেশনার বলা হয় তাই মুখে দুর্গন্ধ হলে দুই থেকে তিনটি পুদিনা পাতা নিয়ে মুখে চিবাতে পারেন এতে দুর্গন্ধ দূর হবে।

লেবুর রসঃ মুখের দুর্গন্ধ যখন বেড়ে যাবে তখন আপনি লেবুর রস খেতে পারেন। লেবু পানি মুখের জীবাণুগুলোকে মেরে ফেলতে পারে, এজন্য মুখের দুর্গন্ধ কমে যায়। তাই খাওয়ার পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে এতে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।

পানিঃ সারাদিন যদি পানি কম খান তাহলে মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে ,কারণ মুখে লালা কমে গেলে তখন ব্যাকটেরিয়া গুলো বৃদ্ধি পায়। এতে আপনার মুখে দুর্গন্ধ হবে। তাই দিনে প্রচুর পরিমাণে পানি খাবেন কমপক্ষে তিন লিটার পানি খেতে পারে।

শেষ কথাঃ মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি ও কারণ সম্পর্কে জেনে নিন

পরিশেষে বলা যায় যে যদি আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে চান, তাহলে উপরোক্ত আজকের এই আলোচনা মাধ্যমে যে উপাদান গুলোর কথা বলা হয়েছে, এগুলো আপনি যদি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার মুখে দুর্গন্ধ দূর হবে।

তাই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি? সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪