বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ ও ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়

অনেকে জানতে চায় বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ সম্পর্কে। তাই কি কাজের জন্য সুইজারল্যান্ডে যাবেন তার ওপর নির্ভর করবে ভিসা খরচ। চলুন, সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কত টাকা খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সুইজারল্যান্ড অন্যতম একটি দেশ। এ দেশে যাওয়ার জন্য অনেকেই স্বপ্ন দেখে থাকেন, স্বপ্নের এই দেশে যাওয়ার জন্য কত টাকা খরচ হবে সেটা জানা প্রয়োজন। তাই বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃবাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ ও ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়

বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ

যারা বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যেতে চাচ্ছেন, তারা অনেকেই জানতে চায় বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ সম্পর্কে। তাই এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন, চলুন নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক।

সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার ক্ষেত্রে খরচ নির্ভর করবে আপনি কোন ভিসার মাধ্যমে যেতে চাচ্ছেন তার উপরে। সাধারণত টুরিস্ট এবং স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে কম খরচ হয়ে থাকে। অপরদিকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে খরচ বেশি হবে। বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডের ভ্রমণের ক্ষেত্রে কম খরচ হয়ে থাকে। চলুন, কোন ভিসায় কত টাকা খরচ হবে সে সম্পর্কে জানা যাক।

ট্যুরিস্ট ভিসাঃ টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে যদি সুইজারল্যান্ডে যেতে চান, সেক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকার মত খরচ হবে।

স্টুডেন্ট ভিসাঃ পড়াশোনার উদ্দেশ্যে সুইজারল্যান্ডে যেতে চান, তাহলে স্টুডেন্ট ভিসা করা লাগবে এতে খরচ হবে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মত।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসাঃ আপনি যদি কাজের উদ্দেশ্যে সুইজারল্যান্ডে যেতে চান, সেই ক্ষেত্রে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করা লাগবে। এতে আপনার খরচ হবে প্রায় ৭ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মতো।

বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমেঃ আপনি যদি বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান সেই ক্ষেত্রে খরচ পড়বে প্রায় ৮ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মত।

সুইজারল্যান্ড যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে উপরোক্ত যেকোনো একটি ক্যাটাগরির উপরে ভিসা করা লাগবে। তাই গড় হিসাবে বলা যেতে পারে আপনার ভিসার খরচ হবে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মত। 

বেসরকারিভাবে যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ পড়বে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার মত। তবে ভুলেও কখনো দালালের মাধ্যমে যাবেন না, তাহলে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যদিও তারা অনেক লোভনীয় অফার আপনাকে দিতে পারে।

এছাড়াও আপনি যে কাজগুলোর মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডে যেতে পারবেন, তার মধ্যে যেমন হোটেলের শেফ, ক্লিনার, ড্রাইভিং ও বিভিন্ন ধরনের ফ্যাক্টরিতে কাজ করার ক্ষেত্রে যদি আপনি সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে। তাহলে খরচ হবে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার মত।

সুইজারল্যান্ডে অনেক বড় বড় রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে উন্নতমানের খাবার পাওয়া যায়। এখানে অনেক শ্রমিক লাগে সে ক্ষেত্রে আপনি অল্প পরিশ্রম করে অনেক টাকা বেতন পেতে পারেন। তাই আপনি রেস্টুরেন্ট ভিসায় সুইজারল্যান্ডে যেতে পারেন, এতে আপনার খরচ পড়বে সর্বনিম্ন ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার মত।

বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে যেতে চান সে ক্ষেত্রে কিভাবে ভিসা পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায় সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো।

সুইজারল্যান্ড সেনজেনভুক্ত দেশ তবে এটা ইউরোপে ইউনিয়নের অধিভুক্ত নয়। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই এ দেশে যাওয়ার ইচ্ছা করে থাকেন, এজন্য এখানে আপনার যাওয়ার জন্য সেনজেন ভিসা লাগবে। এ জাতীয় ভিসা পাওয়া যায় তবে সেনজেন ভিসা যদি আপনি পান সে ক্ষেত্রে ভালো সুবিধা হবে। 
আপনার যদি অনেক বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে, তাহলে দেশটিতে ভালোভাবে যেতে পারবেন। এছাড়া আপনার যাওয়া খুবই কষ্টকর হবে, তাছাড়া আপনার যদি কোন কাজের দক্ষতা না থাকে, তাহলে এ দেশের সরকার আপনাকে নেবে না। আপনার উচ্চ যোগ্যতা ও দক্ষতা যেমন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এই ধরনের কাজের অভিজ্ঞতা থাকে।

তাহলে সুইজারল্যান্ডের অনলাইনে জবের জন্য আবেদন করতে পারেন। দেশটির সরকার আপনার যোগ্য মনে হলে তাহলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেওয়ার জন্য অনুমতি দিবেন। তবে বাংলাদেশ থেকে আসলে এই সকল দেশে যাওয়া খুবই কঠিন।

যদি আপনার কোন আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত কোন ব্যক্তি থাকে, তাহলে তাদের মাধ্যমে গেলে সবচাইতে ভালো হবে। এছাড়াও আপনার এ দেশে যাওয়ার জন্য কিছু যোগ্যতা লাগবে বা কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। চলুন কি ধরনের কাগজপত্র লাগতে পারে জেনে নেওয়া যাক।
  • কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদের পাসপোর্ট লাগবে।
  • পাসপোর্ট সাইজের রঙিন সবই প্রয়োজন হবে।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ লাগবে
  • জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে
  • ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং তার সার্টিফিকেট লাগবে।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হবে
  • ভিসা ফি প্রদানের রশিদ লাগবে
  • পুলিশ ভেরিফিকেশনের সার্টিফিকেট প্রয়োজন
  • চিকিৎসা বীমা থাকতে হবে
  • কভার লেটার প্রয়োজন
  • চাকরির অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র লাগবে।

উপরোক্ত এই কাগজপত্র ছাড়াও আপনার যদি কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। আশা করি আপনি ভিসা পাবেন এবং সহজ উপায়ে সুইজারল্যান্ডে যেতে পারবেন।

সুইজারল্যান্ড সর্বনিম্ন বেতন কত

যারা সুইজারল্যান্ডে যেতে চাচ্ছেন তাদের অবশ্যই বেতন ভাতা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই সুইজারল্যান্ড সর্বনিম্ন বেতন কত? আসলে বেতন নির্ভর করে কাজের উপরে, আপনি যে কাজটি করবেন তার উপরে নির্ভর করবে কত টাকা বেতন হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক,

সুইজারল্যান্ডের একজন কর্মী ফুল টাইম যদি কাজ করে থাকে সেক্ষেত্রে সেভাবে বেতন দেওয়া হয়। আবার কেউ যদি দৈনিক ৮ ঘন্টা সপ্তাহে ৫ দিন বা মাসে ২০ দিন নিয়মিত ডিউটি করতে পারে সেক্ষেত্রে মাসিক বেতন ধরা হবে ৩৭৮০ সুইচ ফ্রাঙ্ক।

যা বাংলাদেশী টাকায় ৪ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫৬৬ টাকা মত। তবে সব টাকায় আপনি করতে পারবেন না, কারণ সুইজারল্যান্ডের সরকার আপনার এই ইনকামের প্রতি কয়েক পার্সেন্ট ট্যাক্স বসানো থাকবে। সুইজারল্যান্ডে গিয়ে আপনি যে কাজগুলো করতে পারবেন। চলুন সেই কাজগুলো সম্পর্কে জানা যাক।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ডেভলপার হিসেবে যদি কাজ করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনি প্রতি মাসে বেতন পাবেন ৫ হাজার ৮০০ সুইচ ফ্রাঙ্ক থেকে ৭ হাজার। বাংলাদেশী টাকায় ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মতো বেতন পাবেন। এই সকল কাজগুলো সুইজারল্যান্ডের চাহিদা বেশি।

এছাড়া আরো অনেকগুলো কাজ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো যেমন ডাক্তার, প্লাস্টিক চিকিৎসায় ফার্মাসিস্ট, ড্রাইভিং ও আইনজীবী হিসেবে কাজ করা যাবে। সেক্ষেত্রে আপনার বেতন পড়বে ৩৬০০ ফ্রাঙ্ক থেকে ৫০০০ ফ্রাঙ্ক যা বাংলাদেশী টাকায় ৪ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো।

তাছাড়া আপনি যদি ড্রাইভিং, নার্স, কনস্ট্রাকশন, ক্লিনার ও কৃষক হিসেবে কাজ করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার বেতন ২৫০০ ফ্রাঙ্ক থেকে ৩২০০ ফ্রাঙ্ক। যা বাংলাদেশি টাকায় আপনার বেতন ৩ লক্ষ থেকে ৮০ হাজার টাকা।

সুইজারল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা

বিশ্বের যতগুলো উন্নত শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সুইজারল্যান্ড। এখানে যারা পড়তে যাবে তাদের ভিসা খরচ কেমন হতে পারবে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই সুইজারল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে চলুন নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।

সুইজারল্যান্ডে পড়তে যাওয়ার গেলে আপনি যে সকল বিষয়ে পড়তে পারবেন তা হলো; আন্তর্জাতিক ম্যানেজমেন্ট, ফাইন্যান্স, হোটেল ম্যানেজমেন্ট ট্যুরিজম এগুলো ছাড়া আরও বিভিন্ন বিষয়ে কোর্স আছে।

যেগুলো অনেক উন্নতমানের যেমন ইকোনমিক্স, আইন, সোশ্যাল ওয়ার্ক, একাউন্টিং ব্যাংকিং আর্কিটেকচার, সাইকোলজি, সংস্কৃতি, হেলথ কেয়ার, ভাষা তত্ত্ব, মিডিয়া বিজনেস, ম্যাথমেটিক্স, জার্নালিজম, ফিলোসফি এছাড়া আরো বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করতে পারবেন।

আবেদনের যোগ্যতাঃ সুইজারল্যান্ডে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এর মানদন্ড অনেক ভালো, তাই এই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য সঠিক ও যথার্থ তথ্য আপনাকে জানতে হবে। এদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আপনাকে প্রবেশ করতে হবে অথবা আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন অফিসে গিয়েও যোগাযোগ করতে পারবেন।

সুইজারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ব্যাচেলর ডিগ্রি যা ৩ বছর থেকে ৪ বছরের মধ্যে পড়ানো হয়ে থাকে। এছাড়া মাস্টার্স প্রোগ্রামে দেড় বছর মেয়াদী হয়ে থাকে। পিএইচডি করতে চাইলে আপনার ৫ বছর লাগবে। তাই আপনি যদি ব্যাচেলার ডিগ্রীর জন্য সুইস বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন করতে চান সেক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগবে এইচএসসি অথবা সমমান পর্যায়ে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হওয়া লাগবে।

আর ভাষার ক্ষেত্রে অবশ্যই দক্ষতা থাকতে হবে যে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে যে ভাষা পড়ানো হবে সেই ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করার ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১৬ বছর শিক্ষাজীবনের স্কুলিং থাকতে হবে। ভাষা বিষয়ক দক্ষতার প্রয়োজন আছে।

এজন্য আপনাকে আইইএলটিএস থাকা লাগবে। ৬.৫ স্কর লাগবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আবার জিআরই লাগতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় ইংরেজিতে, ফরাসি, জার্মানি ও ইতালি ভাষায় পড়ানো হয়ে থাকে। তাই আপনার জার্মান ভাষায় বা ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা আছে, তাহলে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্মান ভাষায় পড়ানো হয় সেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হবেন।

তবে শিক্ষার খরচ বেশি হবে তবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন রকম খরচ হবে। শিক্ষার্থীর প্রতিবছর ব্যাচেলার ডিগ্রীর জন্য প্রায় ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকার মত খরচ হতে পারে। আর মাস্টার্স ডিগ্রি কমপ্লিট করার জন্য প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ থেকে ১৪ লাখ টাকার মত লাগবে।

সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি

সুইজারল্যান্ডে যে কাজগুলো চাহিদা রয়েছে সেগুলো আপনাকে জানতে হবে। তাই সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি? এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন, চলুন নিম্নে বিস্তারিত ভাবে জানা যাক।

সুইজারল্যান্ডে কেউ হয়তো পড়াশোনা করতে যায় আবার অনেকে ভ্রমণ করতে যায়, কেউ বিজনেস করার জন্য গিয়ে থাকে আবার অনেকে বিভিন্ন কাজের জন্য ভিসা করে থাকে। তাই যে কাজই করুক না কেন সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে জানতে হবে যে কোন কাজের চাহিদা বেশি থাকে। তাই চলুন কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে জানা যাক।
  • সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অনেক চাহিদা আছে
  • ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার চাহিদা আছে
  • মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অনেক চাহিদা
  • সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর প্রয়োজনীয়তা বেশি
  • ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে কাজ করতে পারেন
  • ডাক্তার অনেক প্রয়োজন
  • প্লাস্টিক বা রাসায়নিক চিকিৎসক হিসেবে কাজ করা যাবে
  • ফার্মাসিস্ট হিসেবে জব করতে পারেন
  • নার্স হিসেবে অনেক চাহিদা
  • ড্রাইভিং এর প্রয়োজন আছে
  • কনস্ট্রাকশনের কাজের অনেক গুরুত্ব আছে
  • ক্লিনার অনেক চাহিদা রয়েছে
  • একজন কৃষক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে তাই এরাও গুরুত্ব আছে
তাহলে আপনারা উপরোক্ত কাজগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করে ভিসা আবেদন করবেন। আপনার সেই অভিজ্ঞতা দক্ষতার সার্টিফিকেট অবশ্যই ভিসার সাথে সংযুক্ত করে দিবেন।

তাহলেই আপনি সুইজারল্যান্ডে যেতে পারবেন, তবে একটি কথা মনে রাখবেন সুজারল্যান্ডের সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা হলো এইচএসসি পাশ থাকতে হবে। আশা করি সুইজারল্যান্ডের কাজগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

সুইজারল্যান্ড নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়

আপনি যদি সুইজারল্যান্ডে নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টা করেন সে ক্ষেত্রে কিছু শর্ত মানতে হবে। তাই সুইজারল্যান্ড নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। চলুক জেনে নেওয়া যাক,

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য সুইজারল্যান্ড পাওয়া যাবে, এক্ষেত্রে তিনটি মাধ্যম আছে ১। দীর্ঘ সময় বসবাস করা লাগবে ২। বংশসূত্রের মাধ্যমে ৩। এই দেশে বিবাহ করার মাধ্যমে। এর বাইরেও একজন বাংলাদেশী ও ভারতীয় নাগরিক যেভাবে সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাবেন।

স্থায়ী বসবাসঃ সুইজারল্যান্ড এর নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ হল স্থায়ীভাবে বসবাস করা লাগবে এবং সেটা অনুমতি পেতে হবে। ভারত এবং বাংলাদেশের নাগরিকরা সাধারণত যে পদ্ধতিতে স্থায়ী হতে পারে চলুন সে সম্পর্কে জানা যাক।

কর্মসংস্থান হিসাবে ভিসাঃ আপনি যদি সুইজারল্যান্ডের দীর্ঘদিন যাবত চাকরি করেন অথবা কাজ করে থাকেন সেক্ষেত্রে স্থায়ী নাগরিকত্ব ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

শিক্ষা ভিসাঃ সুইজারল্যান্ড এর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ পাওয়ার পরে আপনি যদি ভর্তি হন সে ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন করা যেতে পারে এবং সুইজারল্যান্ডের শিক্ষা জীবন শেষ করার পর চাইলে আপনি চাকরি বা কাজের জন্য কর্মসংস্থান এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। স্থায়ী নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
পরিবার পুনর্মিলনঃ যদি আপনার পরিবারে কেউ সুইজারল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করে থাকে তবে আপনি পরিবারের সাথে জীবন যাপন করার জন্য পুনর্মিলন ভিসা আবেদন করতে পারবেন।

স্থায়ী বাসিন্দাঃ স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য আপনাকে দীর্ঘদিন যাবৎ সুজারল্যান্ডের বসবাস করতে হবে। সাধারণত আপনাকে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ বছর সুইজারল্যান্ডে বসবাস করার পরেই আপনি স্থায়ী বাসিন্দা হবেন। এ সময় আপনাকে কিছু শর্ত পূরণ করা লাগবে চলুন জানা যাক।
  • সুইজারল্যান্ডের ভাষা জার্মান, ফ্রেঞ্চ বা ইতালীয় ভাষা শিক্ষার অর্জন করতে হবে।
  • সুইজ সমাজের সাথে একীভূত হওয়া লাগবে এবং স্থানীয় সংস্কৃতি রীতিনীতি মেনে চলা লাগবে।
  • অপরাধমুক্ত থাকা লাগবে আপনার যেন কোন অপরাধের রেকর্ড না থাকে।
নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করাঃ স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার পরে আপনি সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার জন্য আপনাকে অনুসরণ করতে হবে।

আবেদন প্রক্রিয়াঃ সুইজারল্যান্ডের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট নাগরিকত্ব এর জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন পত্রের সাথে পরিচয় পত্র, বাসস্থান, কাজের বিবরণ এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া লাগবে।

ভাষা দক্ষতা পরীক্ষাঃ সুইজারল্যান্ডের সরকারের কাছে আপনার ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা দিতে হবে। তাই স্থানীয় ভাষায় কথা বলার লেখার দক্ষতা প্রদর্শনী করা হবে।

সাক্ষাৎকারঃ কৃষি ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ আপনার সাক্ষাৎকার নিতে পারে তারা নিশ্চিত হবে। যা আপনি আসলে সুইস সমাজের সাথে একীভূত হতে পারবেন কিনা।

নাগরিকত্ব পরীক্ষার সফলতাঃ সুজারল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ আবেদন অনুমোদন করলে আপনি সুইজারল্যান্ডের নাগরিকতা পেয়ে যাবেন।

সুইজারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

আপনি যদি সুইজারল্যান্ডের কাজের উদ্দেশ্যে যান সে ক্ষেত্রে আপনাকে সুইজারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করা লাগবে। সে সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে চলুন নিম্নে আলোচনা করা যাক।

যেভাবে আবেদন করবেনঃ এই ভিসার জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে, তাহলে আবেদন করা খুবই সহজ করে কিছুটা নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করা লাগে। সুইজারল্যান্ডের ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।

এক্ষেত্রে কাগজপত্র জমা দেওয়া লাগবে অফলাইনে সাধারণত হিসাব প্রক্রিয়ার জন্য ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তাই আগে থেকেই আপনাকে আবেদন করে রেখে দেওয়া ভালো। আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করা লাগবে।

ভিসা প্রসেসিংঃ সুইজারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রসেসিং ফি এবং অন্যান্য খরচ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। সাধারণত প্রসেসিং ফি ১০০ থেকে ১৫০ সুইচ ফ্রাঙ্ক আর বাংলাদেশী টাকায় ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো।

এছাড়াও মেডিকেল পরীক্ষা ইন্সুরেন্স ডকুমেন্ট ট্রান্সলেশন মোট খরচ হবে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মত। পেমেন্ট পদ্ধতি অবশ্যই অনলাইনে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন।

ভিসা চেক করার নিয়মঃ ভিসা যখন আবেদন করবেন এরপরে আপনার এটা চেক করার জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করা লাগবে। ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনাকে আবেদন নম্বরটা দিয়ে চেক করা লাগবে। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ইমেইল অথবা এসএমএস এর মাধ্যমে আপনাকে নোটিফিকেশন দিবে। কোন কোন ক্ষেত্রে ভিসা ইন্টারভিউ এর জন্য ডাক পরতে পারে।

সুবিধা সমূহঃ ওয়ার্ক পারমিট ভিসার সুবিধা রয়েছে বৈধভাবে কাজ করতে পারবেন নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করলে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যাবে। ভিসার মেয়াদ শেষ হলে আবার নবায়ন করা যায় এজন্য দীর্ঘদিন বসবাস করতে পারবেন। তাছাড়া সুইজারল্যান্ড এর উন্নত স্বাস্থ্য সেবা শিক্ষা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সামাজিক সুবিধা গুলো আপনি ভোগ করার অনুমতি পাবেন।

ঢাকা টু সুইজারল্যান্ড বিমান ভাড়া

অনেকে জানতে চায় ঢাকা টু সুইজারল্যান্ড বিমান ভাড়া সম্পর্কে। বিমান ভাড়া সম্পর্কে জানা থাকলে আপনার একটি ধারণা থাকবে যে কত টাকা লাগতে পারে। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক,

এখন ঢাকা থেকে সুইজারল্যান্ড বিমান ভাড়া ক্ষেত্রে সাধারণত বিমান দুই ধরনের থাকে। এখনো ভিআইপি লোকাল আপনি যদি ভালো মানের বিমানে যেতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বেশি খরচ পড়বে। লোকাল বিমানে গেলে একটু সময় বেশি লাগবে এবং খরচ কম হবে। চলুন বিভিন্ন ধরনের বিমানের ভাড়া কত সে সম্পর্কে জানা যাক।

টার্কিশ এয়ারলাইন্সঃ ইকোনমিক ক্লাসের বিমানের ভাড়া হবে ৮৯৯০০ থেকে ১ লক্ষ ২২ হাজার ৪০০ টাকা ও বিজনেস ক্লাসের ভাড়া হবে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭৯০ টাকা থেকে ২ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫৯০ টাকার মত।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সঃ ইকোনমিক ক্লাসের ভাড়া হবে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৯০০ টাকা এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়া হবে ২ লক্ষ ১৪ হাজার থেকে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা।

শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সঃ ইকোনমিক ক্লাসের ভাড়া পড়বে ১ লক্ষ ৮ হাজার ৫৬০ টাকা থেকে ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৮৫০ টাকার মত এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়া হবে ২ লক্ষ ৪৮৯০ টাকা থেকে ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৮০০ টাকা।

কুয়েত এয়ারওয়েজঃ ইকোনমিক ক্লাসের জন্য ভাড়া হবে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৪৫০ টাকা এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়া ২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৬০ টাকা থেকে ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৯০ টাকা।

কাতার এয়ারওয়েজঃ ইকোনোমিক ক্লাসের জন্য ভাড়া হবে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৫৯০ টাকা থেকে ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৭৯০ টাকার মত।

উপরোক্ত এই বিমানগুলোর ভাড়া হয়তো কম বেশি হতে পারে, তবে আপনাদেরকে ধারণা দিয়েছি মাত্র আশা করি আপনি একটি ধারণা পাবেন এবং ভাড়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

শেষ কথাঃ বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ ও ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়

পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি সুইজারল্যান্ডে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে কত টাকা খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আসলে খরচ নির্ভর করবে আপনার কাজের ক্যাটাগরের উপরে। তাই আপনি কোন ক্যাটাগরিতে কাজ করতে যাচ্ছেন সেটা উপর নির্ভর করবে কত টাকা খরচ হবে।

তাই বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ সম্পর্কে আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪