আকিকার মাংস কারা খেতে পারবে ও কারা পারবে না জেনে নিন

অনেকে জানেনা আকিকার মাংস কাদের খাওয়া যাবে, তাই আকিকার মাংস কারা খেতে পারবে? সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, আকিকার মাংস কারা খাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
অধিকাংশ মানুষ মনে করেন যে আকিকার মাংস নিজেদের খাওয়া যাবে না, এটা কুসংস্কার মূলক কথা। কারণ তারা হয়তো এই আকিকা সম্পর্কে জানে না। তাই আকিকার মাংস কারা খেতে পারবে? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃআকিকার মাংস কারা খেতে পারবে ও কারা পারবে না জেনে নিন

আকিকার মাংস কারা খেতে পারবে

অনেকে জানতে চায় যে আকিকার মাংস কারা খেতে পারবে? চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক। নিম্নে আকিকার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো,

কোরবানির গোস্ত যেভাবে বন্টন করা হয় ঠিক তেমনি আকিকার গোস্ত ভাগ করা যাবে। একই নিয়মে করতে হবে, কোরবানির গোস্তর মতো আকিকার গোস্ত শিশুর বাবা-মা আত্মীয়-স্বজন সবাই খেতে পারবে।

এতে কোন বাধা নেই কিছু গোস্ত নিজের খাওয়া যাবে এছাড়া আত্মীয়-স্বজনকে দেওয়া যাবে, দরিদ্র কিছু মানুষকে দান করতে পারবেন। তবে এগুলো আপনি না দিলেও চলবে আবশ্যক নয়। আপনার ইচ্ছা হলে আপনি দিবেন না হলে যেভাবে কোরবানির মাংস বন্টন করা হয় সেভাবে বন্টন করে দিলেও চলবে।

সন্তান আল্লাহতালার একটি বড় অবদান আল্লাহতালা আপনাকে যদি সন্তান দান করে তাহলে আপনি বাবা হিসেবে দায়িত্ব হলো আল্লাহ তালার শোকর করা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।

আল্লাহর শোকর ও আনন্দ প্রকাশের জন্য আকিকা করতে হবে। রাসূল সাঃ একটি ছাগল জবাই করে তার নাতি হাসান রাঃ এর আকিকা আদায় করেছেন। সুনানে তিরমিজিঃ ১৬০২
রাসূলে করীম সাঃ বলেছেন সব শিশুর আকিকা করতে হবে, জন্মগ্রহণ করার সপ্তম দিনে তার জন্য পশু জবাই করা লাগবে এবং তার নাম রাখা লাগবে, তার মাথা মন্ডন করে নিতে হবে। সুনানে তিরমিজিঃ ১৫২২

হযরত আয়েশা রাঃ তিনি বলেছেন রাসুল সাঃ পুত্র সন্তানের জন্য দুটি এবং কন্যা সন্তানের জন্য একটি পশু আকিকা করতে হবে। সুনানে তিরমিজি

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল সঃ বলেছেন, ইহুদিরা পুত্র সন্তানের জন্য আকিকা দিছে কিন্তু কন্যা সন্তানের আকিকা দেয়নি। তোমরা পুত্র সন্তান হলে দুটি ছাগল এবং কন্যা হলে একটি ছাগল আকিকা করবে। সুনানে বায়হাকি

জন্মগ্রহণ করার সপ্তম দিনে আকিকা করা মুস্তাহাব, সপ্তম দিন না পারলে ১৪ দিনে সেদিনও যদি না পারেন তাহলে ২১ দিনে অথবা পরবর্তী যে কোন একটি দিনে আকিকা করা যেতে পারে। যে ধরনের পশু কোরবানির জন্য বৈধ করা হয়েছে, ঠিক তেমনি আকিকার জন্য বৈধ পশু দ্বারা আকিকা করতে হবে।

আকিকা কেন করা হয়

আমরা মুসলিম হিসেবে প্রত্যেকের আকিকা করতে হবে কিন্তু আকিকা কেন করা হয়? অনেকে হয়তো জানেন না। তাই কেন করা হয় চলুন, এ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।

সন্তান জন্মগ্রহণ করলে আমরা সবাই খুশি হয়ে থাকি, ঠিক তেমনি আল্লাহকে খুশি করার জন্য আমাদেরকে আকিকা দিতে হবে। হাদীস শরীফে এ সম্পর্কে অনেক আলোচনা রয়েছে এবং উৎসাহিত করেছেন। রাসূল করীম সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন যে ব্যক্তি সন্তানের আকিকা করার ইচ্ছা করলো সে যেন তাড়াতাড়ি পালন করে থাকে।

আরো একটি হাদিসে আছে যে রাসুল সাঃ বলেছেন সন্তানের সাথে আকিকার বিধান আছে, তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত করো অর্থাৎ পশু জবাই করতে হবে এবং সন্তানের শরীরে কষ্টদায়ক বস্তু অর্থাৎ চুলগুলো ফেলে দিতে হবে। সহীহ বুখারী শরীফঃ ৫৪৭২

সন্তানের আকিকা করার জন্য তার পিতাকে দায়িত্ব নিতে হবে, এটা আসলে আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করার জন্যই মূলত আকিকা করা হয়ে থাকে। তাই এখানে তার অভিভাবকের সন্তানের আকিকা দেবে এছাড়াও আকিকার গোস্ত পিতা মাতা সবাই খেতে পারবে।

আসলে অনেকেই বলে থাকে যে নিজেরা আকিকা দিলে হয়ে যাবে কিন্তু সবচেয়ে ভালো হবে তার পিতা মাতা যদি আকিকা করে। কেননা মূলত তাদের ওপরে এটা দায়িত্ব কারন এটা সপ্তম দিনে দেওয়া সবচেয়ে উত্তম বলা হয়ে থাকে। যার কারণেই এটা তার পিতা-মাতা কি দিতে হবে এবং মূলত আল্লাহকে খুশি করার জন্য দেওয়া হয়ে থাকে।

আকিকার গোশত মা-বাবা খেতে পারবে

কিছু কু-সংস্কার মূলক কথা রয়েছে যারা বলে থাকে যে আকিকার গোশত মা-বাবা খেতে পারবে? আসলে আকিকার গোশত সবাই খেতে পারবে। পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজন দাদা দাদি সবাই খেতে পারবে। এতে কোন বাধা নিষেধ নেই, হয়তো অনেকে মনে করে সন্তানের আকিকার গোস্ত পিতা-মাতা খাওয়া যাবে না।

এটা একটি ভুল ধারণা কেননা কোরবানির মাংস যদি পিতা-মাতা খেতে পারে, তাহলে আকিকার মাংস খেতে পারবে। কোন সমস্যা নেই কেননা কোরবানি ও আকিকা মাংস একই পদ্ধতিতে বন্টন করা হয়। দুটো বিষয় আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যই পশু জবাই করা হয় তাই আকিকা এবং কোরবানি নিয়ম একই।

আকিকার মাংসের বিধান

অনেকেই আকিকার মাংস নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় এই মাংস খাবে কিভাবে, তাই আকিকার মাংসের বিধান সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন, এ সম্পর্কে রিতভাবে নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক।
ছবি
ইসলামের বিধান আকিকা করার পর মাংস নিজেরা খাবেন, গরীবদেরকে দান করা যেতে পারে, আকিকার মাংস গরীব মিসকিনকে হাদিয়া হিসেবে দিতে পারবেন। তবে সাধারণত মাংস হাদিয়া দেওয়ার পরিবর্তে রান্না করে খাওয়ালে ভালো হবে।

হযরত আয়েশা রাঃ বলেছেন আকিকার মাংসের বিধান হল টুকরো টুকরো করে কেটে রান্না করে নিজে খাওয়া যাবে এবং অন্য কেউ খাওয়ানো যাবে।
ইবনে কুদামা রঃ বলেন আকিকার মাংস রান্না করে আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত করে খাওয়ানের উত্তম। এক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে যে বর্তমানে বিভিন্ন দাওয়াতের অনুষ্ঠানে আকিকার দাওয়াতের অনুষ্ঠানে দেখা যায় অনেক সময় নারী-পুরুষ একসাথে খাওয়ানো হয়। একই স্থানে বসা উপঢৌকন দেওয়া হয় যা এটা আসলে একদমই ঠিক নয়।

অনেক জায়গায় এটা এখন বাধ্যতামূলক করে ফেলছে অথচ এটা শরীয়তে নিষেধ করা হয়েছে। শরীয়তে এ বিষয় নিষেধ করা হয়েছে, তাই দাওয়াত দিয়ে যদি খাওয়াতে চান সেই ক্ষেত্রে শরীয়তে এমন কিছু নিষিদ্ধ কাজ না হয়। সেটা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং নারী পুরুষ আলাদাভাবে বসার স্থান দিতে হবে। যাতে করে ইসলামবিরোধী কাজ না হয়।

নিজের আকিকা নিজে দিতে পারবে

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে যে নিজের আকিকা নিজে দিতে পারবে? আসলে আকিকা মূলত হাদিস থেকে জানা যায় যে এটা করা সুন্নত আবার অনেকে ওয়াজিব বলেছেন। তবে মূল বক্তব্য হলো আকিকা মূলত অভিভাবক বা তার পিতার উপর ওয়াজিব বা সুন্নত কিন্তু কোন ব্যক্তির উপর সুন্নত বা ওয়াজিব হবে না। 

রাসূল সাঃ বলেছেন পিতার অভিভাবকের পক্ষ থেকে সপ্তম দিনেই আকিকা করা উত্তম। তাই এই আকিকা মূলত তার পিতা অথবা পিতার অবর্তমানে যিনি অভিভাবক রয়েছেন তিনি আকিকা করবেন। সেই ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে এ বিষয়টি নিয়ে মতামত রয়েছে সুতরাং আপনার নিজের আকিকা নিজে করার তেমন প্রয়োজন হবে না।

আকিকার গোস্ত কত ভাগ করতে হয়

আকিকার মাংস বন্টন করা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে তাই আকিকার গোস্ত কত ভাগ করতে হয়? এ সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো।

সাধারণত আকিকার মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে তাহল;

১/৩ অংশ নিজেরা খেতে পারবেন

১/৩ অংশ আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব পাড়া-প্রতিবেশী ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে দেওয়া যাবে।

১/৩ অংশ গরিব মিসকিনের মধ্যে দান করে দিবেন।

আকিকা করার পর গোস্ত নিজেরা খেতে পারবেন এবং আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব ফকির মিসকিন এর মধ্যে ভাগ করে দিয়ে দিবেন। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোনো নিয়ম হাদিসে সুস্পষ্ট প্রমাণ নাই।

যেহেতু এটি সবাইকেই দিয়ে একটি উৎসবের মতো বিষয় আনন্দের বিষয় সেই ক্ষেত্রে যেসব আত্মীয়-স্বজন আছে তাদের সাথে গোস্ত ভাগাভাগি করে খাওয়া উত্তম। এক্ষেত্রে আপনি আকিকার গোস্ত ভাগ করে লোকদের মধ্যে বন্টন করে দিতে পারবেন। আকিকার গোস্ত রান্না করে সবাইকে খাওয়ানো যেতে পারে।

এতে সবাই আত্মীয়-স্বজন মিলে এবং গরীব মিসকিন যারা আছেন সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া করলে একটা আন্তরিকতা সৃষ্টি হয় এবং ভালো লাগে। তাই এই বিষয়ে উত্তম বলেছেন এই পদ্ধতিটাও অনেকটাই তবে আপনার যদি সামর্থ্য না থাকে। সেই হিসেবে আপনি কাঁচা মাংস দিতে পারবেন আর যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে রান্না করে সবাইকে খাওয়ালে সবচাইতে ভালো হয়।

তবে এ বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট বন্টন করার বিষয়ে বা ভাগাভাগি বিষয় তেমন বর্ণনা করা নাই। তবে কোরবানির মাংসের মতই আপনার আকিকার মাংস ভাগ করে দিতে হবে। যদি আপনি কাঁচা মাংস দিতে চান সে ক্ষেত্রে কোরবানির মাংসের মতই তিন ভাগ করে একভাগ আপনার নিজের জন্য আর দুই ভাগ আত্মীয়-স্বজন ফকির মিসকিন সবাইকে দিতে হবে।

আকিকার গুরুত্ব ও ফজিলত

আপনি যখন সন্তান লাভ করবেন তখন আপনার অনেক আনন্দ লাগবে। তাই এই সন্তান যেহেতু মহান আল্লাহতালা আপনাকে দিয়েছেন তার সন্তুষ্টির জন্য আকিকা দিতে হবে। এজন্য আকিকার গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। চলুন এ সম্পর্কে জানা যাক,
ছবি
ইসলামী শরীয়তের মতে নবজাতক ছেলে বা মেয়ে জন্মের সপ্তম দিনে পশুর যে রক্ত প্রবাহিত করা হয় মূলত এটাই আকিকা। নবজাতক সন্তানের পিতা বা অভিভাবকের পক্ষ থেকে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার জন্য আকিকা করা মুস্তাহাব।

রাসূল সাঃ বলেছেন তার নিজের নাতী হযরত হাসান হুসাইন রাঃ এদের আকীকা করেছিলেন। তাই রাসূল সাঃ বলেছেন ছেলে মেয়েদেরকে আকিকা করা লাগবে, এদের পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত করাও এবং এর মাধ্যমে ময়লা বা মাথার চুল দূর করতে হবে। সহীহ বুখারী

আকিকার পশু যাবার সময় হলো সপ্তম দিন এটা মুস্তাহাব। সপ্তাহের যে বারের শিশু জন্মগ্রহণ করে তার আগের দিন আকিকা করতে হবে। মনে করেন শুক্রবারে জন্মগ্রহণ করল বৃহস্পতিবার আকিকার করলে সবচেয়ে ভালো হয়।

এটাই মূলত উত্তম তবে যদি না পারা যায় তাহলে ১৪ দিনে সেদিনও যদি না পারেন তাহলে ২১ দিনে করতে হবে অথবা জীবনে একবার হলেও করা লাগবে। হযরত আনাস রাঃ বর্ণনা করেছেন নবী সাঃ নবুয়ত পাওয়ার পর নিজের আকিকা নিজেই করেছিলেন।

বায়হাকী, তবে এখানে কথা থাকে যে রাসূল সাঃ যখন জন্মগ্রহণ করেছিলেন তখন তার ওপর এই ধরনের বিধান ছিল না, বিধায় তার পিতা-মাতা হয়তো আকিকা করেনি।

যার কারণে রাসূল সাঃ নিজে আকিকা নিজে করেছেন কিন্তু তিনি বলে গেছেন সপ্তম দিনেই করা উত্তম এবং প্রত্যেক পিতা মাতা বা অভিভাবকের এটা দায়িত্ব।
আকিকার উপকারিতা আছে, নবজাতকের নামে রক্ত প্রবাহিত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যেতে পারে। এটা ইসলামী শরীয়তের একটি বিধান ও আল্লাহর হুকুম। 

অনেক পেরেশানি বিপদ মুসিবত অসুস্থতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দুনিয়াবী রোগব্যাধি বা বিভিন্ন অসুস্থতা থেকে সন্তানটা মুক্তি পাবে এবং আখেরাতেও এর ফলাফল পাবে।

একটা সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে পিতা-মাতা অনেক খুশি হয়ে থাকে এটা একটি আল্লাহর বড় নিয়ামত। আকিকার মাধ্যমে এই নিয়ামতের বহিঃপ্রকাশ করতে হবে। আপনি যেমন খুশি হলেন আল্লাহ কেউ তেমন খুশি করতে হবে।

সন্তানের আকিকা করার মাধ্যমে কিয়ামতের দিন পিতা-মাতা সন্তানের সুপারিশ এর উপযুক্ত হবে। এছাড়াও আকিকার মাধ্যমে দানশীলতার বিকাশ প্রভাবিত হয়। গরিব মিসকিন ও আত্মীয়-স্বজনের হক পালন করা হবে। আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকবে। পরস্পরের মাধ্যমে আন্তরিকতা ও ভালোবাসা তৈরি হবে।

এছাড়া আকিকার মাংস কোরবানির মাংস কত বন্টন করে নিজেও খাওয়া যাবে এবং আত্মীয়-স্বজন ফকির মিসকিন সবাইকে দেওয়া যাবে। এছাড়াও কাঁচা মাংস হাদিয়া হিসেবে দিতে পারেন অথবা রান্না করে খাওয়ানো যাবে।

অনেকের হয়তো জানেন না যে মৃত বাচ্চার আকিকা করা যাবে, কারণ বিপদ আপদ বা মুসিবত দূর করার জন্যই মূলত আকিকা দেওয়া হয়ে থাকে। তাই মৃত বাচ্চার পক্ষ থেকে আকিকা করার প্রয়োজন নাই।

কোরবানির মতই আকিকার পশুর চামড়া গরিব মিসকিনকে দিতে পারবেন অথবা নিজেও ব্যবহার করা যাবে কিন্তু বাজারে বিক্রি করে বিক্রয়কৃত টাকা গরিব মানুষের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে। চামড়া বা চামড়ার মূল্য কোনটাই কসাইকে দেওয়া দিবেন না।

অনেকেই মনে করে যে আকিকার গোস্ত দাদা-দাদি বা নানা নানি বাবা-মা কেউ খেতে পারবে না, এটা আসলে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা সবাই খেতে পারবে।

নবজাতকের দুটি কাজ করা প্রয়োজন সেটা হল আকিকা দেওয়া এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া। তবে মাথার চুল আকিকা করার পূর্বেই ফেলে দেওয়া উত্তম এ সম্পর্কে হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে।

হাদিয়া বা উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে বা গ্রহণ করা যাবে কিনা এ বিষয়ে অনেকে জানতে চায়, হাদিয়া বা উপহার দেওয়া যাবে, এতে কোন সমস্যা নেই কিন্তু জোরপূর্বক করে কারো উপর চাপানো যাবে না। যার ইচ্ছা হবে দেবে, না হলে দেবে না।

আকিকার উপলক্ষে নবজাতকের নানার বাড়ির পক্ষ হতে কিছু পোশাক খাবার দাবার সহায়ক সামগ্রী প্রেরণ করার বিষয়ে অনেকেই জরুরি মনে করে যে দিতেই হবে। এটা একটি কুসংস্কার কথা নানা বাড়ি থেকে যে তার পোশাক আশাক বা অন্য কিছু দিতেই হবে এরকম কোন শর্ত নাই।

শেষ কথাঃ আকিকার মাংস কারা খেতে পারবে ও কারা পারবে না জেনে নিন

পরিশেষে বলা যায় যে নবজাতকের আকিকা করার জন্য সর্বোত্তম দিন সপ্তম দিন। তাই এই দিনেই করার চেষ্টা করবেন আর আকিকার মাংস সবাই খেতে পারবে। তবে বন্টনের ক্ষেত্রে কোরবানির মাংসের মত বন্টন করা যেতে পারে কিন্তু যদি আপনার সামর্থ্য থাকে তাহলে রান্না করে আত্মীয়-স্বজন গরিব ফকির মিসকিন খাওয়ালে ভালো হয়।

তাই আকিকার মাংস কারা খেতে পারবে সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪