গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয় ও দিনে কয়টি খাওয়া উচিত
একজন গর্ভবতী নারীর সাধারণত এই সময় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির প্রয়োজন হয়। তাই কলা খাওয়া যেতে পারে কিন্তু গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে অনেকে হয়তো জানে না। চলুন, কলা খেলে গর্ভবতী নারীর কি উপকার হবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কলার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকে, যা একজন গর্ভবতী নারীর খুবই উপকার করবে এবং গর্ভস্থ শিশু এর বিকাশ বৃদ্ধি করবে। তাই গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃগর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয় ও দিনে কয়টি খাওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয়
কলা এমন একটি ফল যা সবার কাছে প্রিয়, তাই গর্ভবতী মায়েরা কলা খেতে পছন্দ করে কিন্তু গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে হয়তো অনেকে জানে না। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কেননা এতে যদি কোন ক্ষতিকারক কেমিক্যাল থাকে তাহলে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে। তবে আপনি কলা খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হবে, কলার ভিতরে কোন কেমিক্যাল দেওয়া আছে কিনা। চলুন গর্ভবতী মায়েরা কলা খাওয়ার কারণে কি উপকার হতে পারে। সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
মর্নিং সিকনেস দূর করেঃ অনেকের সকালবেলা সাধারণত মাথা ব্যথা, এসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ঘুম থেকে ওঠার পরেই এই ধরনের সমস্যাগুলো হয়ে থাকে। এসব লক্ষণ যদি আপনি দেখতে পান।
সে ক্ষেত্রে কলা খেতে পারেন। কেননা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন কলাতে ভিটামিন বি থাকে। যা গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে খুবই উপকার করে থাকে। বিশেষ করে তাদের যে বমি হয়ে থাকে সেটা কমাতে সাহায্য করবে। তাই আপনি গর্ভাবস্থায় কলা খেতে পারেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত এই সময়ে অনেকেই উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভুগতে থাকে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন খাবারের সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। তবে এই সময় আপনি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কলা খেতে পারেন।
কেননা এর ভিতরে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। কেননা গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময়ে রক্তচাপ কমবেশি হয়ে থাকে। তাই এই সমস্যার সমাধানের জন্য কলা খাওয়া যেতে পারে।
হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করেঃ গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময় আয়রনের ঘাটতি দেখা যায়। তাই এই আয়রনকে বৃদ্ধি করার জন্য কলা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা আপনার শক্তি বৃদ্ধি করবে। এছাড়া এই ফল আয়রনের সম্পূরক হিসেবে কাজ থাকে। তাই আপনার এই হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করার জন্য কলা খেতে পারেন।
গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়ঃ এর মধ্যে ভিটামিন বি-৬, আয়রন, ফলিক এসিড থাকে যা মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে থাকে। এই কলা সাধারণত সারা বছর পাওয়া যায় তাই আপনি নিয়মিতভাবে কলা খেতে পারেন। এতে আপনার সন্তানের মস্তিষ্ক বৃদ্ধি পাবে।
বুক জ্বালাপোড়া কমায়ঃ গর্ভবতীদের সাধারণত এই সময়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বুকে জ্বালাপোড়া, এসিডিটি হয়ে থাকে। তাই এই এসিডিটি, বুকে জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য কলা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এটা পাকস্থলীতে অম্লতা দূর করতে সাহায্য করবে। তাই এই এসিডিটি কমানোর জন্য কলা খাওয়া যেতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ গর্ভাবস্থায় সাধারণত নারীদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা যায়। তাই এই সমস্যা দূর করার জন্য নিয়মিত কলা খেতে পারেন।
কেননা এর মাঝে উচ্চ ফাইবার থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় সাধারণত প্রতিদিন দুইটা কলা খাওয়া যেতে পারে।
বাড়তি ওজন কমাবেঃ গর্ভবতী অবস্থায় অনেকের ওজন বৃদ্ধি পায়, সেক্ষেত্রে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে। এজন্য কলা খাওয়া যেতে পারে, কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। যা খিদা কম লেগে থাকে এজন্য হয়তো প্রয়োজনের অতিরিক্ত আর কোন খাবার খাওয়া হয় না। এর কারণে ওজন আর বৃদ্ধি পায় না এবং নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তাছাড়া কলার মধ্যে রক্তের চিনির পরিমাণ কম থাকে যা ইনসুলিন হরমোনের প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। শরীর যদি ইনসুলিনের প্রতি সমৃদ্ধশীল না থাকে তাহলে গ্লুকোজ ঠিক থাকবে না। তখন আপনার আরো বেশি ইন্সুলিন উৎপাদন হবে।
পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি ঘটায়ঃ কলা সাধারণত গ্যাস্ট্রো ইনটেস্টাইন থাকে যা পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি ঘটাতে পারবে। কলার মধ্যে থাকে এক ধরনের প্রতিরোধই স্টার্টস যা পরিবর্তন ত্বককে সুন্দর রাখতে পারে। স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া খাদ্য পরিণত হবে। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ খনিজ পদার্থ বের হতে থাকে। তাই সেটা পূরণ করার জন্য কলা খাওয়া যেতে পারে।
মানসিক চাপ কমাবেঃ গর্ভাবস্থায় সাধারণত গর্ভবতীরা বিভিন্ন মানসিক চাপে থাকে। কেননা এই সময়ে তাদের হাসিখুশি থাকা দরকার। এজন্য রক্তের সেরাটনিন তৈরি করা প্রয়োজন। তাই কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ এই উপাদানটি থাকে। এছাড়াও একটি কলার মধ্যে প্রায় ২৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। যা মানসিক চাপ অনেকটা কমে যাবে।
ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করেঃ কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ থাকে। যা আমাদের প্রতিদিনের চাহিদা গুলো পূরণ করবে। এছাড়াও এর মধ্যে হিমোগ্লোবিন, অ্যামাইনো এসিড, ইনসুলিন, ভিটামিন বি এগুলো থাকে। যা একজন গর্ভবতী নারীর এই ভিটামিন গুলো খুবই প্রয়োজন।
পেশি গঠন করতে সাহায্য করেঃ গর্ভস্থ শিশুর পেশি গঠন ও হাড়কে মজবুত করা জন্য যে পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন। তা কলার মধ্যে রয়েছে, তাই এই ফলটি নিয়মিতভাবে খাওয়া যেতে পারে।
চোখ ভালো রাখেঃ এর মধ্যে ভিটামিন-এ, রয়েছে যা আপনার চোখকে ভালো রাখবে। এছাড়া দৃষ্টি শক্তি ভালো থাকবে। গর্ভস্থ শিশুর দৃষ্টিশক্তি ভালো এবং প্রতিবন্ধী যেন না হয় সেক্ষেত্রে এই কলা খাওয়ানো যেতে পারে।
শক্তি বৃদ্ধিঃ গর্ভবতী মহিলাদের সাধারণত এই সময় শক্তি কমে যায়। তাই তাদের শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য এই কলা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মধ্যে পটাশিয়াম থাকে যা মাংসপেশিতে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
ত্বকের স্বাস্থ্যঃ গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময় ত্বক নষ্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের ব্রণ এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই ত্বককে সুন্দর রাখার জন্য কলা খেতে পারেন। কেননা এর মধ্যে ভিটামিন সি এছাড়াও সাইট্রাস থাকে যা আপনি ভিটামিন সি কোলাজেন সংশ্লেষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং বার্ধক্য জনিত সমস্যায় ভুগলে এটা প্রতিরোধ করা যাবে।
দিনে কয়টি কলা খাওয়া উপকারী
একজন গর্ভবতী মা বিভিন্ন খাবার এর ক্ষেত্রে নির্দিষ্টতা থাকে। তাই দিনে কয়টি কলা খাওয়া উপকারী সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
পুষ্টিবিদদের মতে কলার মধ্যে গ্লুকোজ ও ক্যালরি আছে। এটা খেলে দীর্ঘক্ষণ সময় পেটে থাকে এবং পেট ভরা মনে হয়। কিন্তু গর্ভবতী মায়েদের জন্য কয়টা খাওয়া যাবে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। সাধারণত গর্ভবতীদের দিনে ১ থেকে ২টি কলা খাওয়া খেতে পারে। তবে একসাথে খাওয়া যাবে না। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে।
তাই মাঝারি সাইজের কলা গর্ভবতীরা সাধারণত দিনে এক থেকে দুইটি খেতে পারবেন এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ১টি খাওয়াই ভালো হবে। তবে খেয়াল করবেন এর ভিতরে রাসায়নিক পদার্থ না থাকে। তাহলে গর্ভবতী মায়ের গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হবে। এজন্য গাছ পাকা কলা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে শরীর স্বাস্থ্যের উপকার হবে।
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম মানতে হবে। তাছাড়া ক্ষতি হবে, তাই গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত কলা খেতে পছন্দ করে। কেননা এটা অত্যন্ত নরম। তবে অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। এতে শরীরে ক্ষতি হবে, কারণ এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে এবং পটাশিয়াম থাকে। যা আপনার পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করবে। অনেকে কলা খাওয়ার নিয়ম এবং সময় সম্পর্কের জানেনা। তাই এ বিষয়ে জানা যাক,
সাধারণত অনেকে সকালের নাস্তার পরে বা নাস্তার সাথে কলা খেয়ে থাকে। তবে এই ক্ষেত্রে সকালের নাস্তায় শুধু কলা খাওয়া ঠিক হবে না। সকালের নাস্তার সাথে কলা খাওয়া যাবে কিন্তু যারা জিমে বা শারীরিক ব্যায়াম করতে যাবেন, তারা শুধু কলা খেতে পারেন।
কারণ এর মাঝে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট এবং গ্লুকোজ রয়েছে, যা ব্যায়াম করার কারণে ক্যালরিটা ব্যয় হয়ে যাবে। শুধুমাত্র কলা খেলে আপনার রক্তের শর্করা বেড়ে যাবে।
এজন্য সকালের নাস্তার ক্ষেত্রে শুধু কলা না খেয়ে এর সাথে আরো অন্য কোন খাবার খাওয়া যেতে পারে। যেমন বেকারির এক টুকরো রুটি খাওয়া যেতে পারে।
এর মধ্যে ফাইবার, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, গ্লুকোজ থাকে, যদি খালি পেটে খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে শরীরে ক্ষতি হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত শর্করা বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়ের যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে এটা খাওয়া গর্ভস্থ শিশুর বিপদজনক হবে।
এই কার্বোহাইড্রেট খাবারের পাশাপাশি অন্য কোন খাবার খাওয়া যেতে পারে, তবে খুবই কম খেতে হবে। এই কলা যদি কোন গর্ভবতী বেশি খায় তাহলে তার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই অতিরিক্ত কলা খাওয়া যাবে না।
যদি আপনি ক্যালরির চাহিদা পূরণ করতে চান, সে ক্ষেত্রে এই ফলটি খাওয়া যেতে পারে। কারণ এর মধ্যে ক্যালোরি, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্য সহায়তা করবে। তবে যারা ক্যালরিটা ব্যয় করতে পারে, তাদের ক্ষেত্রে কলা খাওয়া যেতে পারে।
যেমন যারা জীম বা শারীরিক ব্যায়াম করেন তারা এই কলা খেতে পারেন। এক্ষেত্রে সকালবেলা খেতে পারেন, তাহলে এই ক্যালোরি গুলো অনেকটাই ব্যয় হবে যার কারণে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
গর্ভাবস্থায় বিচি কলা খাওয়া যাবে কি
অনেকে জানতে চায় যে গর্ভাবস্থায় বিচি কলা খাওয়া যাবে কি? এক্ষেত্রে অনেকেই বিচি কলা খেতে পছন্দ করে না, তারপরও এর মাঝে কি উপকারিতা রয়েছে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
গ্রাম অঞ্চলে সাধারণত এই বিচি কলা সবচাইতে বেশি পাওয়া যায়। তাই গ্রাম অঞ্চলের লোকজন এই কলা বেশি খেয়ে থাকেন। এই কলা অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টি রয়েছে, তাই আপনি বিচি কলা খেতে পারেন।
তবে গর্ভাবস্থায় এই কলা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা রয়েছে। কেননা অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। যে সকল গর্ভবতীদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা এই বিচি কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে যা আপনার শক্তি যোগান দেবে। এছাড়াও ভিটামিন-এ, ভিটামিন বি-৬, সি, ডি, পটাশিয়াম থাকে। যা একজন মানুষের প্রতিদিনের এই পুষ্টিগুলোর চাহিদা পূরণ করতে পারে। এর পটাশিয়ামের কারণে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করবে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কম থাকবে।
এছাড়াও শারীরিক ও মানসিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এই কলা সাধারণত ঔষধি হিসেবেও পরিচিত। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, নাইট্রোজেন, ফসফরাস ইত্যাদি থাকে যা গর্ভবতীদের জন্য খুবই প্রয়োজন। তবে গর্ভবতীর যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে সেই ক্ষেত্রে এটা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়াও অনেকের আমাশয়ের ক্ষেত্রে সবচাইতে ভালো কাজ করে থাকে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে যে এর মধ্যে অনেক ক্যালোরি থাকে, যা দিনে দুটি কলা খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার কিছুক্ষণের মধ্যেই শরীরের শক্তি যোগাবে। তাই দিনে ১ থেকে ২ টি কলা খাওয়া যেতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়া যাবে কি
অনেকেই জানতে চায় যে গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়া যাবে কি? আসলে গর্ভাবস্থায় অনেক খাবারের ক্ষেত্রে নিষেধ থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার ক্ষেত্রে কি সমস্যা হতে পারে। সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন চলুন এ বিষয়ে জানা যাক।
কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে, তবে কাঁচা কলার মধ্যে পুষ্টিগুণ গুলো একটু ভিন্ন রয়েছে। কাঁচা কলা সবজি হিসেবে অনেকেই খেয়ে থাকেন। তাই গর্ভাবস্থায় এই কাঁচা কলা খেতে পারেন। আবার বিভিন্ন রোগীরাও সাধারণত কাঁচা কলা খেয়ে থাকে এবং চিকিৎসকরা এই কলা খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ওজন কমায়ঃ ওজন কমানোর জন্য আপনি কাঁচা কলা খেতে পারেন। তবে গর্ভাবস্থায় যদি আপনার ওজন বৃদ্ধি পায় সেক্ষেত্রে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে। এজন্য সবজি হিসেবে কাঁচা কলা খেতে পারেন। কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে এবং মেদ কমাবে।
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ আপনি যদি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাহলে কাঁচা কলা খাওয়া যেতে পারে। অনেক গর্ভবতীর এ সময়ে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে যার কারণে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আপনি কাঁচা কলা খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি-৬ এবং গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।
হার্টের ঝুঁকি কমায়ঃ অনেক গর্ভবতীর সাধারণত হার্টের সমস্যা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে সবজি হিসেবে কাঁচা কলা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মাঝে পটাশিয়াম থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। তবে পটাশিয়াম কিন্তু সবার জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য হবে না। এক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনির সমস্যা থাকলে তাদেরকে কাঁচা কলা খাওয়া যাবেনা।
পেটে ভালো ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন করেঃ যাদের ঘন ঘন ডায়রিয়া বা বদহজমের সমস্যা রয়েছে। তাদের সাধারণত খাদ্য হজমের জন্য ভালো ব্যাকটেরিয়ার প্রয়োজন হয়। এজন্য গর্ভবতীদের কাঁচা কলা খাওয়া প্রয়োজন, কেননা তাদের এই সময় ভালো ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন করা খুবই প্রয়োজন।
তাহলেই তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তবে যে সকল গর্ভবতী কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা সাধারণত এই কাঁচা কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
ডায়রিয়ায় কাঁচা কলাঃ অনেক গর্ভবতীর সাধারণত এ সময় ডায়রিয়া হয়ে থাকে যার কারণে অনেক সময় ওর স্যালাইন খাওয়া যায় না, সে ক্ষেত্রে আপনি কাঁচা কলা খেতে পারেন। কেননা চিকিৎসকরা ডায়রিয়া হলে কাঁচা কলা খেতে বলেন। বিভিন্ন ধরনের পেটের ইনফেকশন যদি হয়ে থাকে সেটা দূর করতে সাহায্য করবে।
শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয় ও দিনে কয়টি খাওয়া উচিত
পরিশেষে বলা যায় যে কলা অত্যন্ত একটি সুস্বাদু ফল। যা ছোট থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই পছন্দ করে থাকে। এমনকি গর্ভবতী মহিলাওরা সাধারণত কলা খেতে পছন্দ করে। তবে এই ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না।
একজন গর্ভবতী মা সাধারণত ১ থেকে ২টি কলা খেতে পারবেন। তাই গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url