মেয়েরা কি পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে ও ইসলামের বিধান জানুন
অনেকে জানতে চায় যে, মেয়েরা কি পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে? তবে এই ক্ষেত্রে ইসলামের বিধি-নিষেধ আছে এবং কখন আপনি পারফিউম ব্যবহার করতে পারবেন সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, নারীরা কখন পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে সে সম্পর্কে জানা যাক।
অধিকাংশ নারী জানে না যে সুগন্ধি ব্যবহার করে বাহিরে গেলে কতটা পাপ হতে পারে কিন্তু রাসূল সাঃ এ বিষয়ে কঠোর ভাবে নিষেধ করেছেন। যেন নারীরা পারফিউম ব্যবহার করে জনসম্মুখে না যায়। তাই মেয়েরা কি পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে? এ সম্পর্কে জানতে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃমেয়েরা কি পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে ও ইসলামের বিধান জানুন
মেয়েরা কি পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে
অনেক মুসলিম নারীরা জানতে চায় যে মেয়েরা কি পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে? এ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সেটা আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে যেন নেওয়া যাক।
নারীরা এটা ব্যবহার করতে পারবে, ইসলামে বৈধ আছে তবে বাড়িতে ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার পরিবারের লোকজনের অর্থাৎ যাদের সাথে দেখা করা জায়েজ আছে তাদের সামনে ব্যবহার করা যাবে। তবে এটা ব্যবহার করে বাহিরে যাওয়া যাবে না।
কেননা রাসূল সাঃ নারীদেরকে পারফিউম লাগিয়ে মসজিদে যাওয়া নিষেধ করেছেন। তাহলে বুঝতে পেরেছেন, মসজিদে গিয়েও এটা ব্যবহার করতে পারবেন না। তাহলে রাস্তা ঘাটে বা জন সমাবেশে গেলে কত বড় ক্ষতি হতে পারে। তাই নারীরা সুগন্ধি ব্যবহার করে বাহিরে জনসম্মুখে যেতে পারবেন না।
নারীরা ঘরের ভিতরে পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে যেমন সেন্ট, পারফিউম, বডি স্প্রে এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এগুলো ব্যবহার না করাই ভালো। কেননা এগুলো সাধারণত অ্যালকোহল বা অপবিত্র জিনিস দ্বারা তৈরি হয়ে থাকে। তবে যেগুলো হালাল উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো ব্যবহার করাতে ক্ষতি নেই।
পারফিউম ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নারীদেরকে সতর্কতা থাকতে হবে, যেন পর পুরুষ গন্ধটা না পায়। এক্ষেত্রে আপনার পর্দার লঙ্ঘন হয়ে যাবে। কারণ ইসলামে নারীদের এটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধ করা হয়েছে। নারীরা পারফিউম ব্যবহার করে শুধুমাত্র তার স্বামী ও মাহরাম ব্যক্তিদের কাছে যেতে পারবে।
কেননা হাদিসে আছে 'যে মহিলা পারফিউম লাগিয়ে লোকজনের পাশ দিয়ে যদি যায়, সে ক্ষেত্রে তার এই সুগন্ধি যদি অন্য পর পুরুষ পায়, তাহলে এই মহিলাকে ব্যভিচারীনি বলা হয়ে থাকে।' নাসাঈঃ ৫০৩৬
ইসলামী শরীয়ত মতে কোন নারী যদি পারফিউম ব্যবহার করে মসজিদে গিয়েও নামাজ পড়ে, সে ক্ষেত্রেও নামাজ হবেনা। কেননা সে এটা ব্যবহার করার কারণে অপবিত্র হয়ে গেছে।
অনেক মহিলা শরীরের দুর্গন্ধের কারণে শরীয়তের নির্দেশনা মোতাবেক পারফিউম ব্যবহার করে থাকে। সেক্ষেত্রে শরীয়ত মোতাবেক যে পারফিউম রয়েছে সেগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু বাহিরে যেন কোন মানুষ এই সুগন্ধি না বুঝতে পারে।
এছাড়া নিজেকে যদি এভাবে না পারেন তাহলে নিজেকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করবেন। নারীরা সব সময় তার স্বামীর কাছে সাজসজ্জা হিসেবে থাকার চেষ্টা করবেন। কেননা ইসলামের নির্দেশনা হলো স্ত্রী যেন তার স্বামীর কাছে সেজেগুজে থাকে, এতে স্বামী তার উপরে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে।
সেই হিসাবে তার কাছে আপনি পারফিউম ব্যবহার করে যেতে পারবেন। তবে বৈধ পারফিউম হতে হবে, সেটা অবশ্যই বৈধ বস্তু দ্বারা তৈরি হতে হবে। এক্ষেত্রে মা-বোনেরা অবশ্যই চেষ্টা করবেন নিজেদের ঘরের মধ্যে থেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করার।
অনেক নারীরা সাধারণত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বা বিভিন্ন বিয়ের উৎসবে বা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে সাধারণত সুগন্ধি বা পারফিউম ব্যবহার করে থাকে কিন্তু এটা আসলে ঠিক নয়। কেননা শুধুমাত্র তার স্বামীর উপস্থিতিতে তাকেই আকর্ষণ করার জন্য পারফিউম ব্যবহার করা যেতে পারে।
বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন ধরনের পারফিউম ব্যবহার করে যা ইসলাম সম্মত না, এমন বস্তু দ্বারা তৈরি করা হয়। তাই এই পারফিউম গুলো ব্যবহার করবেন না। অ্যালকোহল বা নেশা জাতীয় বস্তু থেকে তৈরি করা হয়ে থাকে এই সকল বডি স্প্রে, ব্যবহার করতে পারবেন না।
মহানবী সাঃ বলেছেন যে 'প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী বস্তু হারাম করা হয়েছে।' তাই এই সকল পারফিউম শরীরে যদি লেগে যায়, তাহলে আর পবিত্রতা থাকবে না। তাই এই অবস্থায় নামাজও পড়া জায়েজ হবে না।
তাই কোন নারী যদি পারফিউম দিয়ে বাহিরে যায়, তাহলে তাকে নাপাকি হিসেবে ধরা হয়। এক্ষেত্রে সে যখন বাড়িতে আসবে তখন অবশ্যই গোসল করে নিতে হবে। এরপর তিনি নামাজ পড়তে পারবেন, তাছাড়া নামাজ পড়া যাবে না।
কেননা বর্তমানে বাজারে যে সকল বডি স্প্রে বা পারফিউম পাওয়া যায় সেগুলোতে সাধারণত অ্যালকোহল দেওয়া থাকে। অ্যালকোহল হল এক ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য যা এই পারফিউমের ভিতরে দেওয়া থাকে। তাই এটা আপনার শরীরে বা কাপড়ে ব্যবহার করা যাবে না। যে পারফিউমের ভিতরে অ্যালকোহল যুক্ত করা হয়েছে সেই সকল পারফিউম ব্যবহার করে নামাজ পড়া যাবে না।
তবে হ্যাঁ যদি আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে এই পারফিউমের ভিতরে কোন অ্যালকোহল নাই। তাহলে সেটা আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। অনেক নারী তার শরীর থেকে দুর্গন্ধ কে দূর করার জন্য পারফিউম ব্যবহার করে থাকে কিন্তু এই পারফিউম ব্যবহার করা ঠিক নয়।
তাই এই ব্যাপারে এ ব্যাপারে পরামর্শ হলো আপনার যদি এই ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে ঘনঘন পরিষ্কার হবেন। এক ঘন্টা পর পর পরিষ্কার হতে পারেন অথবা একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কে দেখিয়ে আপনার এই ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পরামর্শ নিতে পারেন।
কেন সুগন্ধি ব্যবহার করবেন
অনেকেই সুগন্ধি পছন্দ করে থাকে, তাই কেন সুগন্ধি ব্যবহার করবেন? সেটা আপনাকে জানতে হবে। কোন সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে আর কোনটা ব্যবহার করা যাবে না। সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন, এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পারফিউম ব্যবহার করলে যেমন ভাল লাগে, ঠিক তেমনি অনেকের আত্মবিশ্বাস যে এটা ব্যবহার করলে মনের মধ্যে প্রশান্তি পাওয়া যাবে। অনেকে এটা ব্যবহার করে থাকে শরীরে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণে, তারা মনে করে যে এটা ব্যবহার করলে দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
অনেক আগে থেকেই মানুষ এই পারফিউম ব্যবহার করে থাকে, তবে নিয়মিতভাবে এটা ব্যবহার করা ঠিক নয়। এগুলো ব্যবহার করে শরীরের দুর্গন্ধ কখনোই দূর হবে না। এটা আসলে সাময়িকের জন্য সুগন্ধি হবে কিন্তু দুর্গন্ধ কখনোই দূর করতে পারবে না।
সুবাসঃ পারফিউম ব্যবহার করলে আপনার শরীরে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে। মানুষ আগে থেকেই ঘামের কারণে শরীর থেকে দুর্গন্ধ আসলে, তারা দুর্গন্ধ কে দূর করার জন্য বিভিন্ন পারফিউম ব্যবহার করে। এজন্য শরীরে দুর্গন্ধ অনেকটাই কমে কিন্তু এই পারফিউম মুলত দুর্গন্ধ কে নষ্ট করে দেয়, তাই নিজের কাছে সাময়িক ভালো লাগে।
মন প্রফুল্ল থাকেঃ পারফিউম ব্যবহার করার কারণে শরীর থেকে সুঘ্রাণ বের হয়, যার কারণে মনের শান্তি লাগে বা প্রফুল্ল আসে। কেননা একজন মানুষের শরীর থেকে যদি দুর্গন্ধ বের হয়, তখন তার বিব্রতকর অবস্থা মনে হয় এবং খুবই খারাপ লাগে। যার কারণে এটা ব্যবহার করে বাহিরে বের হয়। যখন পারফিউম ব্যবহার করবেন অবশ্যই এলকোহল মুক্ত হতে হবে সে দিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে।
আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়ঃ ভালো পোশাক পড়লে যেমন আপনার ভালো লাগবে ঠিক তেমনি সুগন্ধি ব্যবহার করলে আপনার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। কেননা এর মাধ্যমে শরীরে দুর্গন্ধ থেকে আপনি দুশ্চিন্তা মুক্ত হবেন। যাতে আপনার খারাপ লাগবে না এবং মানুষের সাথে মিশতে পারবেন। আপনার মনে হবে যে শরীর থেকে দুর্গন্ধ আসছে, এটাই মূলত আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে।
মানসিক চাপ থেকে মুক্তঃ অনেকের শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হয় যা মানুষের সামনে যেতে বিব্রতকর অবস্থা মনে হয়। এটা নিয়ে একটা মানসিক টেনশন এ থাকে, যার কারণে তার শরীরের উপর এই প্রভাবটা ফেলে। এতে স্বাস্থ্যের অনেকটাই ক্ষতি হয়।
কেননা মনে যদি শান্তি থাকে তাহলে অবশ্যই স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। তাই আপনার শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য পারফিউম ব্যবহার করতে পারেন, তবে অবশ্যই হালাল পারফিউম হতে হবে।
পারফিউমের যত উপকার
অনেকেই জানে না, পারফিউম ব্যবহার করলে কি উপকার পাওয়া যায়। তাই পারফিউমের যত উপকার রয়েছে। এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন, চলুন এ বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
পারফিউম দিলে আমাদের শরীর থেকে সুগন্ধি বের হয়, তাই শরীরকে অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ মনে হয়। গরমের কারণে অনেক সময় ঘামের দুর্গন্ধ বের হতে পারে। কিন্তু পারফিউম ব্যবহার করলে শরীরের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।
নারীদের ক্ষেত্রে এটা ব্যবহার করা ইসলামে বিধি নিষেধ আছে। তাই তারা পারফিউম ব্যবহার করে ঘরের বাহিরে যেতে পারবে না। এটা শুধু আপনার ঘরের ভিতরেই ব্যবহার করতে পারবেন।
কেননা অনেক নারীর শরীর থেকে দূর্গন্ধ আসে যেখানে তার স্বামীর কাছে খারাপ লাগতে পারে। তাই সে যদি পারফিউম ব্যবহার করে তার স্বামীর কাছে যায় তাহলে সে দুর্গন্ধ তা নষ্ট হয়ে যাবে এবং সুগন্ধ বের হবে। এতে তার প্রতি অনেকটাই ভালো লাগবে এবং সংসারের শান্তি আসবে।
সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি পারফিউম ব্যবহার করতে পারেন। তবে ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না, এটা একদম নাপাক হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তবে পারফিউমটা হালাল হওয়া লাগবে।
এই পারফিউম ব্যবহার করলে আপনার মনে প্রশান্তি পাবেন এবং আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিবে। মেজাজ ভালো থাকবে, এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুল বা মসলা জাতীয় পারফিউম ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যখন নিয়মিত ভাবে একটি পারফিউম ব্যবহার করবেন সে ক্ষেত্রে আপনার ঘ্রাণটা আনেক ভালো লাগবে।
আপনার কাছের মানুষ যিনি রয়েছেন অর্থাৎ আপনার স্বামী যখন ঘরের ভিতরে আসবে, তখন তার কাছে এই সুগন্ধি অনেক ভালো লাগবে। আবার অনেকে বলে থাকে যে, কিছু পারফিউমের ভিতরে ঘুমের কিছু উপাদান দেওয়া আছে।
যা রাত্রিতে ভাল ঘুম হয়ে থাকে, তাই অনেক জনপ্রিয় ব্যক্তিরা ও এই পারফিউম ব্যবহার করে রাত্রিতে ঘুমাতে যায়। এতে তার মনের প্রশান্ত সৃষ্টি হয়, এছাড়াও এই পারফিউমের বিশেষ কিছু উপাদানের কারণে ভালো ঘুম হয়ে থাকে।
পারফিউম ব্যবহারে কি কি সমস্যা হতে পারে
অনেকে জিজ্ঞেস করে থাকে যে, পারফিউম ব্যবহারে কি কি সমস্যা হতে পারে? আসলে এটা বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন অ্যালকোহল দ্বারা তৈরি করা হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। যে অসুবিধা গুলো হয় সে সম্পর্কে জানা যাক।
অফিস বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমরা সাধারণত পারফিউম বা সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকি। এতে নিজের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ বা মনের প্রশান্তি সৃষ্টি হয়, এই সুগন্ধি ব্যবহার করে নিজের কাছে প্রফুল্ল লাগতে পারে এবং নিজের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। নিজের শরীরের সুগন্ধিটা অনেকটাই ভালো লাগে। তবে এতে আপনার ক্ষতি হতে পারে বা বিভিন্ন রোগের ও ঝুঁকি থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান থাকে। এগুলো শরীরে যখন দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে ইথানল ও আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয়, এ ক্ষেত্রে দেখা যাবে বিভিন্ন ধরনের চর্ম রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন চুলকানি, লাল ফুসকুড়ি এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের চুলকানি দেখা দিতে পারে।
কারো কারো এটা ব্যবহার করার কারণে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ দেখা যায়, যেমন চুলকানি যাকে বলা হয় তাৎক্ষণিক চুলকানি। এ ধরনের এলার্জি সাধারণত দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে দেখা যেতে পারে। এটা এক ধরনের সাময়িক চর্মরোগ বলা হয়ে থাকে। তাই অ্যালকোহলমুক্ত পারফিউম ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
আসলে পারফিউম কতটা ক্ষতি করতে পারে এবং কি কি সমস্যা হতে পারে চলুন, সে সম্পর্কে জানা যাক।
আপনি যদি একটি ঘড়ি পড়েন সেই ক্ষেত্রে যদি আপনার ঘড়ি উপরে এটা ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে ঘড়ির রংটা নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এটা ব্যবহার করার কারণে আপনার ত্বকের অনেক ক্ষতি হতে পারে।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা প্রায় সবাই ঘড়ি অথবা গয়না ব্যবহার করি। এর পরে যদি সুগন্ধি ব্যবহার করি, যার কারণে চর্ম রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কখনো কখনো ফোস্কা পড়তে পারে বা সেই জায়গাটি ফুলে যেতে পারে।
আবার এমন কিছু অ্যালকোহল যুক্ত পারফিউম থাকে যেটা ব্যবহার করলে এর গন্ধে অন্য জনের মাথা ঘুরাতে পারে বা নিজেরই মাথা ঘুরাতে পারে, কেউ কেউ আবার বুমিও করে ফেলে। এই ক্ষেত্রে পারফিউম লাগানোর সময় অবশ্যই আরো একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যেন এটা মুখে না যায়। যদি মুখের ভিতর যায় তাহলে অনেকের পেট খারাপ হতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে সতর্কতা থাকতে হবে কেননা তারা যদি এটা খেয়ে ফেলে, তাহলে অনেকের বমি হতে পারে বা ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পারফিউম ব্যবহার করার সময় অবশ্যই শিশুদেরকে দিবেন না। কেননা তারা যদি খেয়ে ফেলে তাহলে রক্তের শর্করা কমে গিয়ে অসুস্থ বোধ করতে পারে এবং পয়জেনিং এর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আমরা সাধারণত গ্রীষ্মকালে ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য এটা ব্যবহার করে থাকি কিন্তু যদি আপনার শরীরে কোথাও দাদ এবং একজিমার মত সমস্যা থাকে, তাহলে এই ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। পারফিউম ব্যবহার করলে এই ক্ষেত্রে সেখানে ইনফেকশন হতে পারে। তাই ভুলেও যাদের এই ধরনের সমস্যা রয়েছে তারা এটা ব্যবহার করবেন না।
পারফিউম এর মধ্যে আগ্নেয়গিরি জৈব যৌগ থাকার কারণে রাসায়নিক কনা পেইন্ট দেখা যেতে পারে। এই কণা গুলো যাদের ফুসফুস দুর্বল রয়েছে, তাদের অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া যাদের হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট এর মত সমস্যা আছে, তারা পারফিউম ব্যবহার করবেন না। এতে ফুসফুস নষ্ট করে দিতে পারে।
এছাড়াও বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সুগন্ধি জিনিসগুলো ব্যবহার করলে হরমোনের ক্ষতি করতে পারে। এর সুগন্ধ শ্বাসের সাথে মস্তিষ্কে গিয়ে উপস্থিত হয়ে থাকে এবং নিউরনগুলো এন্ড্রোক্রাইন সিস্টেম এর সংকেত দিতে থাকে, এর ফলে হরমোন গুলো দ্রুত নিঃসরণ হয়।
পারফিউম ব্যবহার করার কারণে অনেকের শরীরে হরমোন অত্যাধিক ওঠানামা করতে থাকে তখন ভারসাম্যহীন হতে পারে। এর কারণে ক্লান্তি লাগতে পারে এবং থাইরয়েড এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এইজন্য অনেক পুরুষ অথবা নারী বর্তমানে বন্ধ্যাত্তার দিকেও চলে যাচ্ছে।
শরীরের যেখানে পারফিউম লাগাবেন না
অনেকেই জানে না যে শরীরের কোথায় পারফিউম ব্যবহার করতে হবে। তাই শরীরের যেখানে পারফিউম লাগাবেন না। এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
প্রায় সবাই পারফিউমের সুগন্ধটা পছন্দ করে থাকে বা নিজের কাছে ভালো লাগে। তাই তারা এটা ব্যবহার করে থাকে কিন্তু শরীরের পারফিউম ছিটানো ঠিক হবে না। কারণ এতে স্বাস্থ্যগত সমস্যা হবে। শরীরের কোন জায়গায় এটা ব্যবহার করা যাবে না। সে সম্পর্কে জানার প্রয়োজন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
চোখঃ শরীরের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা হল চোখ। এটা একটি স্পর্শকাতর জায়গা, যেখানে আপনি এই সুগন্ধি জাতীয় কোন বস্তু ছিটানো যাবে না। কেননা এর মধ্যে অ্যালকোহল বা ইথানল থাকে, যার কারণে অধিকাংশই পারফিউমের মধ্যে ইথানল এবং অ্যালকোহল থাকে যা চোখে জ্বালাপোড়া হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
চুলে ব্যবহারঃ চুলের ক্ষেত্রে কখনোই এটা ব্যবহার করবেন না, কেননা এর মধ্যে রাসায়নিক পদার্থ থাকার কারণে চুলকে শুষ্ক করে ফেলবে। তাই এক্ষেত্রে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।
হাতে ব্যবহারঃ অনেকেই হাতের উপর বা হাতের কব্জিতে পারফিউম ব্যবহার করে থাকে। এই ক্ষেত্রে যে কোন সমস্যা হতে পারে। কেননা এর মধ্যে অ্যালকোহল বেইজড যেগুলো পারফিউম রয়েছে, সেগুলো ত্বককে শুষ্কতা করতে পারে। এর কারণে ত্বকে ফাটল ধরবে এবং রক্ত ক্ষরণ হতে পারে। আপনি যদি এটা লাগানোর পর সেই হাত দিয়ে চোখে চুলকানো বা কসলাতে থাকেন, তাহলে চোখ জ্বালাপোড়া হতে পারে।
বগলে ব্যবহারঃ এটা সাধারণত বগলে বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কেননা এখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায় বেশি কিন্তু বগলে এটা ব্যবহার করলে জ্বালাপোড়া হতে পারে এবং চুলকানি হতে পারে।
সুগন্ধি দীর্ঘদিন ভালো রাখার উপায়
অনেকেই জানেনা সুগন্ধি দীর্ঘদিন ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে। চলুন, কিভাবে আপনি এই সুগন্ধি ভালো রাখবেন। সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
অনেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করে কিন্তু এটা কিভাবে ব্যবহার করবে এবং কতদিন ব্যবহার করা যাবে, এই ধরনের হয়তো অনেক কিছুই জানেনা। এজন্য আপনার সুগন্ধিটা বা পারফিউম টা কেনার পরে সেটা ভালো রাখার জন্য আপনাকে ভালো পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে।
সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে আপনার পারফিউম টা সুগন্ধি অনেক দিন থাকবে কিন্তু যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারেন তাহলে এই সুগন্ধি টা চলে যাবে।
অধিকাংশ পারফিউমের গায়ে লেখা থাকে শুষ্ক এবং ঠান্ডা স্থানে রাখার জন্য অর্থাৎ আর্দ্রতা তাপমাত্রা এবং আলোর উপস্থিতিতে সুগন্ধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এজন্য আপনাকে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। চলুন, জেনে নেওয়া জানা যাক।
যেখানে সূর্যের আলো পড়ে সেখানে পারফিউম রাখবেন না। অতিরিক্ত আলো যেখানে পড়ে সেখানে পারফিউম রাখলে এর গুনাগুন নষ্ট হবে। এছাড়াও এর সুগন্ধ টা পরিবর্তন হতে পারে। এজন্য এটা জামাকাপড়ের পিছনে এবং সরাসরি সূর্যের আলো যেখানে না পড়ে সেখানে রাখতে হবে। পারফিউম ব্যবহার করার সময় কখনোই বোতল ঝাঁকাবেন না, এতে সুগন্ধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
পারফরমের বোতল কখনোই ফ্রিজে রাখা যাবে না, এতে অক্সাইডাইজের মাধ্যমে এর সুগন্ধি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এজন্য পারফিউম রাখার জন্য বক্সসহ কাপড়ের মধ্যে সোজাসুজি করে রেখে দিবেন। প্রয়োজনমতো বের করে ব্যবহার করবেন, এতে আপনার সুগন্ধি পরিবর্তন হবে না এবং নষ্ট হবে না।
শেষ কথাঃ মেয়েরা কি পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে ও ইসলামের বিধান জানুন
পরিশেষে বলা যায় যে যদি কোন নারী পারফিউম ব্যবহার করতে চায়, সেক্ষেত্রে তাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা ইসলামের দৃষ্টি কোণে অ্যালকোহল যুক্ত পারফিউম ব্যবহার করা নিষেধ করেছেন। নারীরা সাধারণত এটা ব্যবহার করে বাহিরে যাওয়া যাবে না, এদিকে আপনাকে সতর্কতা থাকতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনি ঘরের ভিতরে ব্যবহার করতে পারবেন, তাই মেয়েরা কি পারফিউম ব্যবহার করতে পারবে? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url