গর্ভাবস্থায় শসা খেলে কি হয় ও ওজন কমাতে যেভাবে সাহায্য করে
অনেক গর্ভবতী জানতে চায় যে, গর্ভাবস্থায় শসা খেলে কি হয়? আসলে শসার বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার করবে। চলুন, শসার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
গর্ভাবস্থায় সাধারণত বিভিন্ন ধরনের সবজি এবং ফল খেতে হয়। তার মধ্যে আপনি শশা খেতে পারেন। কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে এবং যা আপনার গর্ভস্থ শিশুর পুষ্টির পূরণ করবে। তাই গর্ভাবস্থায় শসা খেলে কি হয়? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগী করুন মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃগর্ভাবস্থায় শসা খেলে কি হয়, উপকারিতা ও ঝুঁকি সম্পর্কে জানুন
গর্ভাবস্থায় শসা খেলে কি হয়
গর্ভবতী মায়ের সাধারণ শসা খেতে পছন্দ করে। তাই গর্ভাবস্থায় শসা খেলে কি হয়? শসার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে। তাই এই সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন এ বিষয়ে নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক।
গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময়ে শরীরে তাপমাত্রা বেশি থাকে। তাই তারা বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে শরীরের তাপমাত্রা কমাতে চায়। এজন্য শসা খাওয়া যেতে পারে, এতে আপনার শরীর ঠান্ডা করবে। এছাড়াও গর্ভবতী নারীদের সাধারণত তাজা ফল খাওয়া প্রয়োজন। কেননা বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে অনেক পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এর মধ্যে আছে ভিটামিন সি, বি, কে এবং পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক খনিজ পদার্থ ইত্যাদি। এই পুষ্টিগুলো একজন গর্ভবতীর গর্ভস্থ শিশুর জন্য খুবই উপকার করে থাকবে এবং এই ভ্রনটি বৃদ্ধির জন্য উপকার করবে।
এর মধ্যে ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন বি-৯ থাকার কারণে গর্ভবতীর মানসিক চাপ এবং তার মনে আনন্দ বৃদ্ধির কাজ করবে। কেননা এই সময়ে গর্ভবতীদের সাধারণত মানসিকভাবে অনেক চাপ থাকে। এছাড়াও আনন্দ থাকে না, তাই তাদের এই পরিবর্তনের জন্য শসা খাওয়া যেতে পারে। যা অনেক উপকার করবে।
এর মধ্যে পটাশিয়াম এর মত ইলেকট্রোলাইট রয়েছে, যা গর্ভবতীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এমনকি গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের ফলে রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে, তাই এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য শসা খাওয়া যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে অনাগত শিশুর অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন কারো কারো ক্ষেত্রে শসা খাওয়ার ফলে ঘন ঘন প্রসাবের মত সমস্যা হতে পারে। কারণ এতে লবণ ও পানির পরিমাণ প্রচুর পরিমাণে থাকে আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এলার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রী রেডিকেল ও দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে আন্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার খেতে হবে। তাই আপনি শসা খেতে পারেন, কেননা এর মধ্যে এন্টিঅক্সিডেন্ট সহ ভিটামিন সি ও আরো অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা আপনার এ ধরনের রোগ থেকে প্রতিরোধ করতে পারবে।
গবেষণায় দেখা গেছে এর মধ্যে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ও ট্যানিন এই দুইটি উপাদান শরীরের ফ্রি রেডিকেলগুলোকে ব্লক করতে সাহায্য করে থাকে। আর এই দুইটি উপাদান শসার মধ্যে পাওয়া যায়, তাই আপনি শসা খেতে পারেন।
শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য পানি খাওয়া খুবই প্রয়োজন। কেননা সঠিক হাইড্রেশন শারীরিক কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। এজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়ার পাশাপাশি খাদ্য খেতে হবে। সে ক্ষেত্রে শসা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মাঝে ৯৬ শতাংশ পানি থাকে। ফলে এই গরমে হিট স্ট্রোক থেকে মানুষকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।
এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান আছে, যা দূষিত পদার্থকে বা টক্সিনকে বের করতে সাহায্য করবে। তাই আপনি নিয়মিতভাবে এটা খেতে পারেন।
এর মধ্যে ক্যালরি কম থাকে যার কারণে বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এজন্য খাদ্য তালিকায় শসা রাখতে পারেন।
কেননা গবেষণায় দেখা গেছে গর্ভবতী মায়েদের এই সময়ে কম পানি খাওয়ার কারণে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে। তাই আপনি শসা খেতে পারেন কেননা এর মাঝে অতিরিক্ত পানি এবং কম ক্যালরিযুক্ত খাবার হওয়ার কারণে মেদ কমানোর জন্য খুবই ভালো কাজ করে থাকে।
এর মধ্যে আছে ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-৫, এছাড়াও ভিটামিন জাতীয় পুষ্টি আছে। তাই শসা খাওয়ার কারণে আপনার শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি পাবে।
গবেষণায় দেখা গেছে শসা রক্তের শর্করার মতো কমাতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে ভালো ভূমিকা পালন করে। যার কারণে ডায়াবেটিস জটিলতা কমাতে সাহায্য করবে।
গর্ভবতী নারীদের সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা যায়, এছাড়া ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দূর করার জন্য আপনি শসা খেতে পারেন। তাছাড়া এর মধ্যে আছে ফাইবার যা পেটের ভিতরে খাদ্য হজম করে এবং এর মধ্যে থাকে এক ধরনের পেকটিন যা আপনার অন্ত্রের পেশি গুলোকে নড়াচড়া করতে সাহায্য করবে।
এর মধ্যে ভিটামিন কে, কপার সালফেট, ফসফরাস, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এর মত পদার্থগুলো থাকে এবং এর সাথে ভিটামিন বি, সি পাওয়া যেতে পারে। তাই গর্ভবতীর এই সময়ে এই ভিটামিন ও পুষ্টিগুলো প্রয়োজন, এজন্য শসা খেতে পারেন।
গর্ভবতীদের সাধারণ ত্বক ও চুলের সমস্যা দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন শসা খেলে এই সমস্যাগুলো দূর হবে।
এই সময় সুষম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন, কেননা গর্ভবতীদের এ সময় খাবারের প্রতি নির্ভর করতে হবে। কেননা নড়াচড়া করতে পারে না, তাই সুষম খাবার খাওয়াবেন যাতে ভারসাম্য বজায় থাকে। এছাড়াও শসা বীজে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে থাকে। এতে হৃদ রোগের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
এর মধ্যে যে ভিটামিন থাকে তা আপনার হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখবে, এছাড়া রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করবে। তাছাড়া শসা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিবে।
এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে। কেননা এ সময় গর্ভবতীদের ত্বক নষ্ট হয়ে যায়, বিভিন্ন ধরনের ব্রণ উঠে সে ক্ষেত্রে শসা ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও রোদে অনেকের ত্বক পুড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে এটা ভালো কাজ করে।
তাছাড়া যদি কারো চামড়ায় ইনফেকশন হয় বা একজিমা সমস্যা দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে নিরাময় করার জন্য শসা কেটে নিবেন এবং ১০ মিনিট দুই চোখে ব্যবহার করবেন, এতে অনেকটাই ফোলা ভাব কমে যাবে।
এর মধ্যে যে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে তা ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিবে। এছাড়াও শসার মধ্যে বিদ্যমান পানি আমাদের দেহের বর্জ্য পদার্থের বিষাক্ত পদার্থ গুলো বের করতে সাহায্য করবে এবং রক্তকে পরিষ্কার করবে। এছাড়াও আলসার, গ্যাস্ট্রিক, এসিডিটির সমস্যা দূর করবে।
শসা খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, কারণ আমরা সাধারণত এর সাথে লবন দিয়ে খেতে পছন্দ করি কিন্তু লবণ দিয়ে খেলে স্বাস্থ্য উপকারিতা নষ্ট হয়ে যাবে। তাই লবণ ছাড়া খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়ার অপকারিতা
শসা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে, তবে অতিরিক্ত খেলে ক্ষতি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
প্রতিদিন আপনার খাবারের সাথে শসার সালাদ খেতে পারেন, এতে ওজন কমানো থেকে শুরু করে শরীরের ঠান্ডা ইত্যাদি সকল ধরনের উপকার করে থাকে। তবে অতিরিক্ত খেলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে যদি আপনি বেশি শসা খান, তাহলে চুলকানি, সাইনোসাইটিস এ ছাড়া আরো অনেক ধরনের রোগ ব্যাধি দেখা দিতে পারে। শসা যদিও শরীরের জন্য অনেক উপকার করে কিন্তু এর ক্ষতিও আছে। চলুন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বিষাক্ত উপাদান আছেঃ এর মধ্যে কিউকারবিটাসিন আর টেট্রাসাইক্লিক, ট্রাইটারপেনয়েডের টক্সিন থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে এই উপাদান গুলো শাক সবজির ক্ষেত্রে তিক্ত করতে পারে। তাছাড়া এটা পরিমাণের চেয়ে যদি বেশি খাওয়া হয়, তাহলে যে কোন ক্ষতি হতে পারে।
অত্যাধিক তরল ক্ষতিকরঃ এর বীজগুলো কিউকারবিটিন থাকার কারণে যদি কেউ অতিরিক্ত শসা খায়, তাহলে অতিরিক্ত তরল বের হয়ে যাবে। যার কারণে শরীরের ইলেকট্রোলাইটিক ভারসাম্য বাধা দিতে পারে। যার কারণে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে।
অতিরিক্ত ভিটামিন সি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ এর মধ্যে ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে, ফ্লু সহ আরো অনেক ধরনের রোগ।
এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি থাকে যা খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে, এতে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল বেড়ে যায়। যার কারণে ক্যান্সার, ব্রণ ও অকালে বার্ধক্যর সমস্যা দেখা যায়।
রেনাল সিস্টেমের জন্য ক্ষতিকরঃ উচ্চ পটাশিয়াম যদি আপনার শরীরে থাকে সে ক্ষেত্রে হাইপার ক্যালিমিয়া হতে পারে। এজন্য প্রাথমিকভাবে পেটের ফোলা ভাব, ব্যথা এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। এর সাথে আরো বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে যেমন কিডনি নষ্ট হবে, যার কারণে রেনাল সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।
হৃদযন্ত্রে চাপ ফেলেঃ এর মধ্যে ৯০% পানি থাকে, এত বেশি পানি খাওয়ার কারণে রক্তের পরিমাণের চেয়ে পানি বেশি হয়। যার কারণে রক্তনালী ও হৃদপিন্ডের উপর চাপ পড়তে পারে। এর কারণে হৃদযন্ত্র ও রক্তনালীতে ক্ষতিকর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শসার মধ্যে অতিরিক্ত পানি থাকার কারণে রক্তের ইলেকট্রোলাইট স্তরে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়। যার ফলে কোষের ক্ষয় হতে পারে। এজন্য ঘন ঘন মাথাব্যথা ও শ্বাস-প্রশ্বাসের বাধা সৃষ্টি হয়।
পেট ফাঁপাঃ এর মধ্যে কিউকারবিটাসিন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে, তাই গর্ভবতীর যেহেতু এ সময় পেটে গ্যাস্টিকের এবং পেট ফাঁপা দিয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে শসা না খাওয়া ভালো। এটা খাওয়ার কারণে বদ হজম হতে পারে, পেট ফুলে যায়, ফাপা দিতে পারে এবং ত্বকে ফুসকুড়ি উঠতে পারে। আপনি যদি পেঁয়াজ বাঁধাকপি অথবা ব্রকলি খাওয়ার পরে পেটে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়। তাহলে শসা খেলেও আপনার এই সমস্যা দেখা দেবে।
ওরাল ও স্কিন এলার্জিঃ এক গবেষণায় দেখা গেছে এলার্জি অ্যাজমা ও যাদের চামড়ায় এলার্জি আছে। যদিও রান্না করার ক্ষেত্রে তেমন একটা হয় না।
সায়োনোসাইটিসের সমস্যাঃ আপনার যদি আগে থেকেই এই ধরনের সমস্যা থাকে ও দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা যদি থাকে, তাহলে আপনার শসা খাওয়া যাবে না। কারণ এই সবজির মধ্যে শীতল প্রভাব থাকার কারণে এই সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে এবং জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় শশাঃ গর্ভাবস্থায় সাধারণত শসা খাওয়া নিরাপদ তবে যদি শসা খেলে পেটের সমস্যা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে না খাওয়াই ভালো।
ওজন কমাতে শসার উপকারিতা
আপনি যদি ওজন কমাতে চান সে ক্ষেত্রে শসা খেতে পারেন, কারণ ওজন কমাতে শসার উপকারিতা রয়েছে। তাই এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
এর মধ্যে ভিটামিন-এ' ভিটামিন-বি, বিটামিন-কে, ফোলেট আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে। এছাড়াও এর মধ্যে ক্যালোরি খুবই কম থাকে, যার কারণে ওজন কমতে থাকে। যদি কোন গর্ভবতীর গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন হয় সে ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো শসা খাওয়া যেতে পারে। এতে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
যদি কেউ ওজন কমাতে চাচ্ছেন সে ক্ষেত্রে হজম প্রক্রিয়ার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই শসা খাওয়ার কারণে আপনার হজম প্রক্রিয়া ভালো থাকবে। কেননা এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এর কারণে ভালো উপকার পাবে। তবে আপনি অতিরিক্ত খাবেন না, পরিমাণ মত খেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
আপনি যদি প্রাকৃতিক গতভাবে ওজন কমাতে চান সেই ক্ষেত্রে শসা খাওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি নিয়মিতভাবে যদি খেতে থাকেন, সেই ক্ষেত্রে আপনি নিজেই পরিবর্তন দেখতে পারবেন। শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে। যেমন মাছ, মাংস, মুরগি, ডাল ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
এর মধ্যে ফাইবার থাকে যা আপনার পেট ভরা মনে হবে যার কারণে প্রেগন্যান্সি অথবা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে ডায়েট করা যেহেতু ঠিক নয় সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খুব বেশি একটা শসা খাওয়া যাবে না।
ওজন নিয়ন্ত্রণ এর জন্য অবশ্যই খাদ্য খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। শুধু শশা খেলেই আপনার ওজন কমবে তা কিন্তু নয় অন্যান্য খাদ্য কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে তাহলে আপনার ওজন কমবে। এছাড়া শসা সবজি এবং সরাসরি খেলেও উপকার পাবেন।
শসার মধ্যে খুবই কম ক্যালরি থাকে, মাত্র ১৬ গ্রাম এর মত থাকে। যা আপনার অন্যান্য সবজি বা ফলের তুলনায় খুবই কম হয়ে থাকে। যা আপনার শরীর থেকেই ক্যালোরি টা অনায়াসে বের করতে পারবেন। যার কারণে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে না।
এই জন্যই শসা খেলে শরীরের উপকার হয়। শসার ভিতরে প্রচুর পরিমাণ পানি থাকে যার কারণে অপ্রয়োজনীয় কোন খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। বিধায় ওজন কমতে পারে।
ক্যালরির পরিমাণ কমঃ গর্ভবতীদেরকে সাধারণত এই সময় ওজন বৃদ্ধি করার কথা বলা হয় কিন্তু আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন হয়ে থাকে যার কারণে সমস্যা হতে পারে, সেই ক্ষেত্রে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য শসা খেতে পারেন। কারণ এর মাঝে ক্যালরি খুবই কম থাকে এবং ফাইবার থাকে অনেক বেশি যার কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।
রাতে শসা খেলে কি হয়
অনেকে রাত্রিতে বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে পছন্দ করেন, তার মাঝে শসা হয়ত অন্যান্য খাবারের সাথে খেয়ে ফেলেন। তাই রাতে শসা খেলে কি হয়? চলুন, রাত্রিতে শসা খেলে কি হতে পারে সে সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
শসা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার কিন্তু অতিরিক্ত খেলে ক্ষতি হতে পারে। কেননা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। সেই সঙ্গে এটা খাওয়ার কারণে হাইড্রেট করতে পারে অনেকেই ভুল করে শসা বেশি খেতে থাকেন।
পুষ্টিবিদরা বলেন রাত্রিতে শসা খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতি হবে। এখন কখন ভুল সময় সেটা হয়তো আমরা জানিনা, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উপকারী হলেও রাতের বেলা এটা খাওয়া যাবেনা সমস্যা হতে পারে।
হজম সমস্যাঃ এর মধ্যে কিউকারবিটাসিন থাকার কারণে হজম শক্তির ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য রাত্রিতে শসা খেলে সাধারণত হজম সমস্যা হবে কারণ রাত্রিতে কোন খাবার হজম হতে সময় লাগে।
সেক্ষেত্রে এই শসা খেলে আরো হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং ঘুমেরও সমস্যা হতে পারে। কেননা রাত্রিতে এমনি পেট ভারি থাকে যার কারণে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য বা হজম এর সমস্যা দেখা দিতে পারে, এজন্য রাত্রিতে শসা না খাওয়াই ভালো।
ঘুমের সমস্যাঃ আপনি যদি শসা খেয়ে ঘুমিয়ে যান, সেই ক্ষেত্রে রাতের বেলায় পেট ভারী মনে হবে। যার কারণে শুয়ে থাকতে অস্বস্তিকর লাগবে এবং হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে, গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এইসব কারণেই স্বাস্থ্যবিদরা বলেছেন দিনের বেলায় শসা খাবেন, রাত্রিতে কখনও শসা খাবেন না।
শসা খেলে কি ঠান্ডা লাগে
শসার মধ্যে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যার কারণে অনেকে মনে করেন ঠান্ডা লাগতে পারে। তাই শসা খেলে কি ঠান্ডা লাগে? এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, আসলে ঠান্ডা লাগে কিনা সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
গরমের দিনে সাধারণত মানুষ পানির পিপাসার কারণে অনেকেই শসা খেয়ে থাকে, রাস্তাঘাটে, গাড়িতে হলেও মানুষ খেয়ে থাকে। কারণ এ সময় পানির তৃষ্ণা লাগে যার কারণে শসা খাওয়ার মাধ্যমে পানির তৃষ্ণা পূরণ করে থাকে। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং ৯০% এর মতো পানি থাকে।
যা আপনার ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে। শীতকালে যেহেতু আবহাওয়া ঠান্ডা হয় এজন্য অনেকেই শসা খেতে চায় না। কারণ, মনে করে যে শসা খেলে মনে হয় ঠান্ডা লাগবে কিন্তু আসলে এটা একটা ভুল ধারণা। কারণ বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ যদি কমে যায় সে ক্ষেত্রে পানির পরিমাণ কিন্তু কমতে থাকবে।
সে জন্য আপনার শরীরে পানি কমতে থাকবে, এই ক্ষেত্রে আপনার প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। আর এই পানির চাহিদা পূরণ করার জন্য আপনি শসা খেতে পারেন। এক্ষেত্রে কখনোই ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা নেই , যেহেতু শশার মধ্যে প্রচুর পানি আছে সে ক্ষেত্রে এই ধারণাটা ভুল। তাই পুষ্টিবিদরা বলেছেন যে শসা খেলে কখনোই ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা নাই।
বরং শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে শরীর থেকে পানি কিন্তু চলে যায়। যার কারণে ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে এজন্য মানুষের শরীর চামড়া গুলো কিন্তু কুঁচকে যায়। এটা মূলত পানির কারণেই হয়ে যায় কারণ শীতকালে মানুষজন পানি কম খেয়ে থাকে।
কিন্তু শীতকালেও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে, তাহলেই শরীরের চামড়া গুলো কুঁচকে যাবে না এবং ফেটে যাবে না। এদিক বিবেচনা করেও শসা খাওয়া যেতে পারে। তাই শসা খেলে ঠান্ডা লাগবে এটা একটা ভুল ধারণা, বরঞ্চ এটা আপনার আরো পানির চাহিদা পূরণ করে।
খোসাসহ শসা খেলে কি হয়
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি গর্ভাবস্থায় শসা খেলে কি হয়? এখন জানবো খোসা সহ শসা খাওয়ার কারণে কি উপকার হয়। এ সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
শসা একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য যা আপনার শরীরের উপকার করবে, কমবেশি সবারই ধারণা আছে যে শসার খোসার মধ্যেও উপকার আছে। কিন্তু অনেক সময় খোসা ছাড়িয়ে খেয়ে থাকি, এটা আসলে ঠিক নয়। অনেকেই ভাবে যে শসার খোসার সহ খেলে শরীরে ক্ষতি হতে পারে।
যার কারণে শসার খোসা ফেলে দেই অথচ এই ক্ষেত্রে বাস্তব চিত্রটা হল উল্টে যাবে। পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন শসা খাওয়ার সময় অবশ্যই খোসা সহ খাবেন চমৎকার উপকার পাবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য পেটের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
কিন্তু অনেকের কাছে বিব্রতকর এবং সমস্যা মনে হতে পারে তাই খোসা সহ অনেকেই খান না কিন্তু আজকে থেকে খোসাসহ এই শসা খাবেন এর এতে অনেক উপকার পাবেন। কেননা এটা একটি দ্রবণীয় আশ যা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শুরু করে পেটের বিভিন্ন সমস্যাগুলো দূর করবে।
চোখের সমস্যা দূর করবেঃ এর মধ্যে ভিটামিন-এ, বিটা ক্যারোটিন উপাদান আছে, এটা স্বাস্থ্য বা চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। তবে এটা খোসা ফেলে দিলে ভিটামিন-এ, এর অভাব পূরণ হবে না।
মেদ ও চর্বি কমবেঃ অনেকে অতিরিক্ত খাবার খেতে পছন্দ করে এক্ষেত্রে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরিবর্তে খোসা সহ কয়েক টুকরা শসা খেতে পারেন। এতে যেহেতু ক্যালোরি নেই, সেজন্য শসা খেতে পারেন এতে আপনার পেটের চর্বি সহ মেয়াদ কমে যাবে।
বার্ধক্য দূর করেঃ ত্বকের ভিটামিন সি এর অভাবে বার্ধক্য এর ছাপ পড়ে, এই সমস্যার সমাধানের জন্য শসা খেতে পারেন। যেহেতু এটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্যালেন্স করে তাই ত্বকে বার্ধক্য এর ছাপ প্রতিরোধ করার জন্য খোসা সহ শসা খেতে পারেন। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ভিটামিন বা পুষ্টি বা অ্যাসক্যারোবিক অ্যাসিড থাকে যা বার্ধক্য দূর করতে সাহায্য করবে।
রক্ত জমাট বাধতে সাহায্য করেঃ রক্ত জমাট বাধার ক্ষেত্রে ভিটামিন কে এর প্রয়োজন হয়। তাই আপনি শসা খেতে পারেন কারণ এর মাঝে ভিটামিন কে থাকে। যা আপনার রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করবে, এছাড়াও হাড়ের পুষ্টি জোগাবে এছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে।
তবে খাওয়ার সময় একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে অবশ্যই এটা লবণ পানির মিশ্রনে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তাহলে খোসায় যে লেগে থাকা জীবাণুগুলা আছে বা রাসায়নিক ফরমালিন আছে সেগুলো দূর হবে।
গরমে শসা খাওয়ার উপকারিতা
গরমে সাধারণত মানুষ পানি বেশি খেয়ে থাকে, তাই গরমে শসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা এর মাঝে প্রচুর পরিমাণ পানি থাকে। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন গরমের তীব্রতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শসা খেতে পারেন। কেননা পানির পরিবর্তে শসা খেলে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করবে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পানি, ফাইবার, আয়রণ, সোডিয়াম, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ফলেট, লিউটিন, ভিটামিন কে, বিটা ক্যারোটিন এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা খেলে এনার্জি পাবেন এবং সে সঙ্গে শরীর অনেক ঠান্ডা হয়ে যাবে।
পানির ঘাটতি পূরণঃ গরমের সময় সাধারণত শরীরে প্রচুর পরিমাণ পানি বের হয়ে যায়। সেই সাথে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য এলোমেলো হতে পারে। যার কারণে শরীরে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়। এমন অবস্থায় উপকারী হিসেবে আপনি শসা খেতে পারেন। এর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি রয়েছে। তাই শসা খেতে পারেন কেননা শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করবে, পানি শূন্যতা হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।
আপনার অত্যন্ত পানির তৃষ্ণা পেলে শসা খেতে পারেন, চাইলে লেবু পানি ও পুদিনা পাতা দিয়েও এই ড্রিংকস তৈরি করে খেতে পারেন। চাইলে গর্ভবতীরা এটা খেতে পারবেন। কেননা তাদেরও এই সময় প্রচুর পরিমাণ পিপাসা লাগতে পারে, তাই শসা খাওয়া যেতে পারে তবে অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। এতে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হজমের সমস্যা দূর করেঃ গর্ভবতীদের সাধারণত এই সময় পেটের সমস্যা এবং বদহজম দেখা যায়। এই সমস্যা দূর করার জন্য পরিমাণ মতো শসা খাওয়া যেতে পারে, এতে আপনার অনেক উপকার হবে।
কেননা এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা আপনার বদহজমের সমস্যা, পেট ফাঁপা, এসিডিটির গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করবে। কাজেই নিয়মিত ভাবে পরিমাণ মতো যদি গরমকালে গর্ভবতী মায়েরা শসা খেতে পারেন।
হাড় মজবুত রাখেঃ গর্ভবতীদের সাধারণত এই সময় গর্ভস্থ শিশুর হাড় গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেতে হয়। তাই শসা খাওয়া যেতে পারে, কেননা এর মাঝে ক্যালসিয়াম রয়েছে পরিমাণ মতো খেতে হবে।
অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না, এতে অসুবিধা হতে পারে। এছাড়াও গর্ভবতীরা এ সময় ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয় এবং শিশুর হাড় গঠনের জন্য প্রয়োজন, তাছাড়া বয়স্ক লোকেরাও তাদের হাড় কে মজবুত করার জন্য শসা খেতে পারেন।
শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় শসা খেলে কি হয় ও ওজন কমাতে যেভাবে সাহায্য করে
পরিশেষে বলা যায় যে শসা অত্যান্ত একটি উপকারী সবজি যা অনেকেই খেতে পছন্দ করে। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও আরো পুষ্টি উপাদান আছে। যা আমাদের শরীরে সকল পুষ্টির চাহিদাগুলো পূরণ করে থাকে।
তাই গর্ভাবস্থায় শসা খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে পোস্টে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url