বর্তমানে ইতালি যেতে কত টাকা খরচ হবে জেনে নিন
বাংলাদেশের অনেকের কাছে স্বপ্নের দেশ ইতালি। তাই ইতালি যেতে কত টাকা খরচ হবে? এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায় কিন্তু এটা নির্ভর করবে আপনার কাজের উপরে। চলুন,যাওয়ার জন্য আপনার খরচ কত হতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ইতালিতে যদি আপনি বৈধভাবে যেতে চান সেক্ষেত্রে একটু খরচ বেশি হবে তবে নিশ্চিন্তে যেতে পারবেন, তা না হলে আপনি বিপদে পড়তে পারেন। তাই ইতালি যেতে কত টাকা খরচ হবে? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃবর্তমানে ইতালি যেতে কত টাকা খরচ হবে জেনে নিন
ইতালি যেতে কত টাকা খরচ হবে
বাংলাদেশ থেকে অধিকাংশ মানুষ এখানে যেতে পছন্দ করে থাকে। তাই ইতালি যেতে কত টাকা খরচ হবে? সম্পর্কে হয়তো অনেকে জানেন না। চলুন, কোন ভিসায় কত টাকা খরচ হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি ইতালিতে যেতে চান সে ক্ষেত্রে এখন খরচ বেশি হবে। কেননা আগে যে টাকা খরচ হয়েছে তার চেয়ে বেশি বর্তমানে খরচ হচ্ছে। যেখানে বিমান ভাড়া লাগতো ৫০ হাজার টাকা বর্তমানে এর চেয়ে বেশি লাগতে পারে। বর্তমানে ইতালির রোমে পৌঁছাতে হলে বিমান ভাড়া ৬২ হাজার টাকা লাগে। তাছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরীর উপর ভিত্তি করে বিমান ভাড়া আরো বেশি লাগতে পারে।
এছাড়া ইতালিতে পৌঁছাতে হলে আরও বিভিন্ন ধরনের খরচা রয়েছে, সেটা নির্ভর করবে আপনার ভিসার ধরন, মেয়াদ তবে সব মিলিয়ে আপনার ইতালি যেতে খরচ হতে পারে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। আবার সর্বোচ্চ খরচ ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা হতে পারে কিন্তু আপনি যদি কোন পরিচিত এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে যেতে চান সেই ক্ষেত্রে ২০ লক্ষ টাকার মত লাগতে পারে।
তাই এই বিষয়ে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে তবে আপনার ভিসা খরচটা নির্ভর করবে কোন কাজের উপর আপনি যাচ্ছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে বিভিন্ন পেশায় মানুষজন যাচ্ছে, সে অনুযায়ী খরচও ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে দুটি ধরনের ভিসার প্রচলিত থাকে তাহলো,
সিজোনাল ভিসাঃ এটা স্বল্পমেয়াদি একটি ভিসা যা তিন মাস সময়ের জন্য করা হয়ে থাকে। এ ভিসায় মানুষ জন কৃষি বা পর্যটন হিসেবে কাজ করে থাকে। এই ভিসায় যদি আপনি ইতালিতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে ৪ লক্ষ টাকার মত। এছাড়াও বিমান ভাড়া এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচ এর মধ্যে থাকবে।
নন সিজোনাল ভিসাঃ এই ভিসা একটি দীর্ঘমেয়াদী ভিসা বলা হয়ে থাকে, যা দীর্ঘদিন যাবত কাজ করতে পারবেন। এই ভিসাটি যদি আপনি পেয়ে যান তাহলে সেখানে স্থায়ীভাবে থাকতে পারবেন। সেই হিসাবে এই ভিসার খরচ হতে পারে ৯ থেকে ১৫ লাখ টাকার মত। এর মধ্যে আপনার বিমান ভাড়া এবং ইতালিতে পৌঁছানো যাবতীয় খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
স্টুডেন্ট ভিসা খরচঃ যেহেতু এটি একটি উন্নত রাষ্ট্র তাই অনেকেই এখানে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্বল্পমেয়াদি স্টুডেন্ট ভিসা অথবা দীর্ঘমেয়াদি কোর্স করার জন্য ইতালিতে গিয়ে থাকে। তবে সাধারণত ইতালির স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ পাঁচ বছরের মত হয়ে থাকে। এর খরচ আনুমানিক ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মত। সরকারিভাবে স্কলারশিপ নিয়ে যদি যেতে পারেন, তাহলে আরো অনেক টাকা খরচ কম পাবেন।
ট্যুরিস্ট ভিসা খরচঃ ইতালি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পরিপূর্ণ দেশ এখানে টুরিস্টরা যেতে খুবই উৎসাহিত বোধ করে। তাই এখানে টুরিস্ট ভিসার খরচ তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম রয়েছে। তবে সময় এবং ভিসার উপর নির্ভর করবে আপনার খরচ। এইজন্য নূন্যতম আপনার খরচ হতে পারে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার মতো এবং সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো।
স্পন্সর ভিসা খরচঃ এই দেশের সরকার সাধারণত স্পন্সর করে থাকে, প্রতি বছর হাজার হাজার লোক তারা নিয়োগ দেয়। বিভিন্ন দেশ থেকে এ ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করে। বর্তমান আমাদের দেশেও এই ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করে থাকে। সেক্ষেত্রে খরচা হবে ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকার মতো। তবে কখনো কম বেশি দেখা যেতে পারে। এই ভিসা যদি পেয়ে যান সে ক্ষেত্রে একটি কাজের অনুমতি পাবেন।
তবে এই ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের স্পন্সরের দরকার হবে। এতে অনেকে ইতালি কাজের জন্য ভিসা করে থাকে। আপনি যদি সরকারি অথবা সরকারের মাধ্যমে যদি ভিসা তৈরি করতে চান, তবে এই ভিসায় আবেদন করা লাগবে। এতে আপনি যে কাজের জন্য যাচ্ছেন সে কাজের বেতন কত? তাছাড়া কাজের উদ্দেশ্যে যেহেতু যাবেন এদের সাথে আরো একটু পরিষ্কার ধারণা সম্পর্কে জেনে নিবেন।
এগ্রিকালচার ভিসা খরচঃ এদেশের কোম্পানিগুলো বিভিন্ন দেশ থেকে কৃষি কাজের জন্য লোক নিয়োগ দিয়ে থাকে। এজন্য সরকারি মাধ্যমে তারা নিয়োগ দেবে। বাংলাদেশের লোকজনও আবেদন করতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনার এগ্রিকালচার ভিসায় বেসরকারিভাবে খরচ হতে পারে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মতো।
সরকারি উপায়ে যদি যেতে চান সে ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার মতো খরচ হতে পারে। তবে একটা কথা জেনে রাখা ভালো যে ইতালিতে আপনি যদি কৃষি কাজের জন্য যেতে চান, সে ক্ষেত্রে অবশ্য আগের থেকে অভিজ্ঞতা থাকলে আপনি ভালো বেতনের চাকরি করতে পারবেন এবং ভালো একটি সেলারি পাবেন।
কাজের ভিসাঃ আপনি যদি কাজের ভিসায় ইতালিতে যেতে চান, সেক্ষেত্রে কোম্পানি থেকে আপনার আগে অফার আসতে হবে। এর পরে কোম্পানি চাকরির যদি প্রস্তাব দেয় সে ক্ষেত্রে আপনি এই প্রস্তাব ইতালির দূতাবাসে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করা লাগবে। এরপরে কাজের ভিসা যদি পেয়ে যান সে ক্ষেত্রে অনুমতি পেয়ে যাবেন।
পারিবারিক ভিসাঃ আপনি যদি পরিবারের সদস্য নিয়ে ইতালিতে থাকার ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন। সেক্ষেত্রে পরিবারিক ভিসার জন্য আবেদন করা লাগবে। আপনার পরিবারের সদস্যদের ইতালির বৈধ বাসিন্দা হওয়া লাগবে এবং তাদের পক্ষে আপনাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসাঃ এই ভিসায় আপনি গেলে যেকোন কাজ করতে পারবেন, এতে কোন অসুবিধা হবে না। এজন্য ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মত লাগতে পারে। আবার অনেকের থেকে ১৩ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা দালালরা হাতিয়ে নিতে পারে।
কনস্ট্রাকশন ভিসাঃ এই কাজটির অত্যন্ত মূল্য রয়েছে, কেননা এ দেশটির সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য তারা কনস্ট্রাকশনের কাজগুলো বেশি করে থাকে। তাই বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তারা লোক নিয়োগ দিয়ে থাকে। এজন্য আপনার এই ভিসার খরচ হতে পারে ১০ থেকে ১৪ লাখ টাকার মত।
ভারত থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য খরচ হবেঃ আপনি যদি ভারত থেকে সরাসরি ইতালিতে যেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার খরচ হবে ১০ লক্ষ টাকার মতো। তাছাড়া ভারত থেকে ইতালিতে যেতে খরচ হতে পারে ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মত। তাছাড়া এর চেয়ে কম বেশিও হতে পারে।
দুবাই থেকে ইতালি যাওয়ার খরচঃ অনেকেই দুবাই থেকে ইতালি যেতে চায় সেক্ষেত্রে আপনার সর্বনিম্ন খারচ হতে পারে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো। তাছাড়া কম বেশি খরচ হতে পারে। যদি পরিবার সাথে যেতে চায় সেক্ষেত্রে একটু বেশি খরচ হতে পারে।
এক্ষেত্রে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মতো খরচ হতে পারে। তাই আপনি ভিসা করার সময় খুবই কাছের মানুষ ছাড়া করবেন না, পরিচিত বা বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি না হলে আপনার অনেক টাকা লাগতে পারে।
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url