বাচ্চাদের মুখের ঘা এর চিকিৎসা ও ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিন

বাচ্চারা এই সময় বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকে যার কারণে মুখে ঘা হয়। তাই বাচ্চাদের মুখের ঘা এর চিকিৎসা সম্পর্কে জানলে আপনি ঘরে বসেই চিকিৎসা করতে পারবেন। চলুন, কিভাবে মুখের ঘা সেরে তোলা যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বাচ্চাদের মুখের ঘা এর চিকিৎসা ও ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিন
যে সকল শিশু সাধারনত জন্ম থেকেই পুষ্টির অভাব রয়েছে এবং ভিটামিন খনিজ পদার্থের অভাব রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে সাধারণত ওজন কম হয়ে থাকে। তাই বাচ্চাদের মুখের ঘা এর চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃবাচ্চাদের মুখের ঘা এর চিকিৎসা ও ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিন

বাচ্চাদের মুখের ঘা এর চিকিৎসা

শিশুদের সাধারণত বিভিন্ন কারনে মুখের ঘা হয়ে থাকে, তাই বাচ্চাদের মুখের ঘা এর চিকিৎসা সম্পর্কে জানলে আপনার শিশুর মুখে দিলে সাড়িয়ে তুলতে পারবেন। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

শিশুরা সাধারণত খেলাধুলার সময় বা এমনি বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র মুখে দিয়ে থাকে, যার কারণে তাদের মুখে জীবাণু প্রবেশ করে। তাছাড়া শিশুরা বিভিন্ন জিনিস হাত দিয়ে ধরে এর কারনেও মুখে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে, এজন্য মুখের ঘা হতে পারে। এছাড়া আরো অনেক কারণেই মুখে যা হয়ে থাকে যেমন বিভিন্ন আঘাতের কারণে ভিটামিন, খনিজ পদার্থের অভাবে শিশুদের মুখে ঘা হয়ে থাকে।

দুর্ঘটনা জনিত কারণে বিভিন্ন কীটনাশক কামড় দিলে আবার ব্রাশ এর আঘাতে অনেক সময় মুখে ঘা হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ভাইরাস এর আক্রমণ হলে যেমন হারপিস, সিম্প্লেক্স ভাইরাসের কারণে মুখে ঘা হয়ে থাকে। এছাড়াও শিশুদের ভিটামিন বি-১২, আয়রন ও ফলেট এর অভাবের কারণেও হতে পারে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে মসলাদার খাবার বা এসিডিটি বৃদ্ধি করে এ ধরনের খাবার গুলো খাওয়ার কারণে মুখে ঘা হতে পারে।

চলুন, বাচ্চাদের মুখে ঘা এর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্ক জেনে নেওয়া যাক।

মধুঃ এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটা জীবাণু নাশক হিসেবে উপকার করে থাকে। তাই ১ থেকে ৩ বছর বয়সী শিশুদের মুখে যদি ঘা হয়, সে ক্ষেত্রে মধুর ব্যবহার করতে পারেন। কেননা এটা খুবই কার্যকরী একটি ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে।

এর মধ্যে জীবাণু ধ্বংস করার জন্য যে উপাদান থাকে তা ক্ষতস্থান শুকাতে দ্রুত কাজ করে থাকে। এছাড়াও এটা মিষ্টি হওয়ার কারণে অত্যন্ত স্বাদ লাগে এবং সুস্বাদু হয়ে থাকে। এর কারণে অনেকে পছন্দ করে। যাহোক একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন ১ বছরের চেয়ে কম বয়সে শিশুদেরকে মধু খাওয়াবেন না।

হলুদঃ এটাকে প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক বলা হয়ে থাকে যার কারণে কোনো শিশুদের মুখে ঘা হয়ে থাকে, তাহলে এই পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে এই হলুদটা ব্যবহার করতে হবে। কেননা এর মাঝে আছে এন্টিফাঙ্গাল অ্যান্টিসেপটিক এবং এন্টিব্যাকটেরিয়া যা দ্রুত আপনার ক্ষত দূর করবে। তবে শিশুকে দেওয়ার আগে অবশ্যই মধুর সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।

নারকেলের দুধঃ এই দুধ দিয়ে আপনি গার্গল করতে পারেন, কুলি করতে পারেন। এতে আপনার ব্যথা এবং জ্বালাপোড়া অনেকটাই কমে যাবে। তাছাড়া জমে থাকা বিভিন্ন ধরনের দূষিত আবহাওয়া গুলো দূর করতে সাহায্য করে থাকে। এটা মুখের আকৃতি বা মুখের কাজ করার জন্য যেতে পারে। তাই আপনার শিশুকে নারকেলের দুধ খাওয়াতে পারেন অথবা কুলকুচি করা যেতে পারে। তাছাড়া শুধু ক্ষত এর জায়গায় নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।

দইঃ দইকে বলা হয় এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক যা শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। পাশাপাশি এর মধ্যে ল্যাকটিক এসিড যা আপনার ঘা শুকাতে এবং ক্ষত শুকাতে কাজ করে থাকে। কেননা শিশুদের মুখের ঘা যদি দূর করতে চান সে ক্ষেত্রে দই আপনার উপকার করবে। কেননা এর মাঝে ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে।
তুলসী পাতাঃ এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকার করে থাকে, এটা বিশেষ করে ঠান্ডায় কারণে যে জ্বর হয়ে থাকে তার ভিতরে এটা ব্যবহার করে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে ২ থেকে ৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে তারা তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। এতে অনেকেরই মুখের ঘা সেরে গেছে। এরপর যদি আবার মুখে ঘা হয় বা যদি আপনার শিশুর মুখে ঘা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনি প্রস্তু দানা ও নারিকেলের ক্যান্ডি খেতে পারেন।

ঘিঃ ঘি একটা প্রাকৃতিক উপাদান যা আপনার মুখের ঘা দূর করতে সাহায্য করবে। শিশুর যদি আক্রান্ত স্থানে আপনি ঘি ব্যবহার করতে পারেন। কেননা এটা দ্রুত নিরাময় করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এজন্য আপনার শিশুর ১ বছর পর পার হলেই আস্তে আস্তে অল্প পরিমাণ দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন।

অ্যালোভেরার জেলঃ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান যা আপনি পানিতে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করবেন। দেখবেন অনেক ভালো উপকার পাবেন, দিনে ৩ থেকে ৪ বার ব্যবহার করবেন, এরপর মুখ ধূয়ে ফেলবেন। এছাড়াও একটি গবেষণায় দেখা গেছে ২০ জন বাচ্চাদের মুখের আলসার নিরাময়ের জন্য এটা ভালো কাজ করবে। কেননা এর মধ্যে থাকে ব্যাকটেরিয়া বিরোধী উপাদান এবং দাঁতের মাড়িকেও সুস্থ রাখতে কাজ করে থাকে।

যষ্টি মধুঃ অল্প পরিমাণ পানি নিবেন এর মাঝে এক চামচ যষ্টিমধু ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এই পানি দিয়ে শিশুকে প্রতিদিন কুলকুচি করাবেন, এতে মুখের আলসার সেরে যাবে। আপনার সন্তানকে প্রতিদিন কয়েক বার এই পানি দিয়ে কুলকুচি করাবেন। এর মধ্যে আছে কিছু এন্টিবায়োটিক উপাদান যা আপনার শরীর গরম রাখবে এবং উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়।

আইসক্রিমঃ বিভিন্ন ধরনের আলসার রয়েছে তার মধ্যে আপনার শিশু যদি সাধারণ আলচার হয়ে থাকে দেখবেন ওষুধ না খেয়েও একা একা সেরে গেছে। এজন্য ঠান্ডা আইটেম ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে যদিও এটা শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ঠিক হবে না। কেননা ঠান্ডা লাগতে পারে তবে ব্যথা অনুভূতি হলে এটা অত্যন্ত কাজ করবে এবং দ্রুত সেরে তুলবে।

লবণ পানি দিয়ে কুলিঃ অল্প পরিমাণ পানি নিবেন এবং পানির মধ্যে কিছু পরিমাণ লবণ দিতে পারেন। এরপর এই পানিটুকু দিয়ে আপনার সন্তানকে কুলি করাবেন, এতে অনেক উপকার পাবেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ঠান্ডা পানি দিয়ে কুলকুচি করাই ভালো হবে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগারঃ এর মধ্যে যে উপাদানটি রয়েছে তা মুখের ঘা বা দূর করতে সাহায্য করবে। এজন্য সন্তানের মুখে ঘা তৈরি হলে এটা ব্যবহার করতে পারেন। এর মধ্যে যে এক ধরনের এসিড থাকে তা আপনার শরীরের ক্ষত দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

শক্ত কিছু মুখে দেওয়াবেন নাঃ যদি আপনার আঘাত লাগে কোথাও যখন ঘা হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে নরম ব্রাশ দিয়ে ধীরে ধীরে ব্রাশ করা যেতে পারে।

পুষ্টিকর খাদ্যঃ যাদের পুষ্টির অভাব রয়েছে তারা ভিটামিন ও খনিজ জাতীয় খাদ্যগুলো খেতে পারেন। এছাড়াও বাচ্চাদের মুখের ঘা হলে ভেজা নরম সুতি কাপড় দিয়ে আক্রান্ত স্থান হালকা ও পরিষ্কার করে নিবেন। পরিষ্কার করার পর ওষুধ ব্যবহার করতে হবে, এজন্য আক্রান্ত স্থান সব সময় পরিষ্কার করে রাখতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪